লঞ্চে সহিংসতা: তরুণ আটক, স্বীকারোক্তি 'ভুল করেছি

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ মে ১০ ১৬:১০:০৭
লঞ্চে সহিংসতা: তরুণ আটক, স্বীকারোক্তি 'ভুল করেছি

সত্য নিউজ: মুন্সিগঞ্জ লঞ্চঘাটে প্রকাশ্যে দুই তরুণীকে বেল্ট দিয়ে মারধরের ঘটনায় নেহাল আহমেদ ওরফে জিহাদ নামে এক তরুণকে আটক করেছে সদর থানা পুলিশ। শনিবার দুপুরে তাঁকে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। ঘটনাটি শুক্রবার সন্ধ্যায় মুন্সিগঞ্জ লঞ্চঘাটে ঘটে এবং রাতেই মারধরের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।

আটক নেহাল আহমেদ মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলার দক্ষিণ ইসলামপুর এলাকার বাসিন্দা। ভিডিওতে দেখা যায়, ‘এমভি ক্যাপ্টেন’ নামের একটি লঞ্চে দুই তরুণীকে সামনের ডেকে দাঁড় করিয়ে বেল্ট দিয়ে মারধর করছেন এক তরুণ। আশপাশে দাঁড়িয়ে থাকা ব্যক্তিরা মুঠোফোনে সেই দৃশ্য ধারণ করছেন, কেউ কেউ উল্লাস করছেন ও নানা ধরনের স্লোগান দিচ্ছেন।

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনার পরপরই নেহাল আহমেদকে থানায় আসতে বলা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি ঘটনার দায় স্বীকার করে অনুতপ্ত বলে জানান।

নেহাল বলেন, “স্থানীয়রা ওই তরুণীদের আচরণ ও পোশাক দেখে ক্ষিপ্ত হয়ে পড়েন। একপর্যায়ে মব তাদের ওপর আক্রমণ করতে উদ্যত হয়। তখন ওই তরুণীরা আমাকে অনুরোধ করেন পরিস্থিতি থেকে তাদের রক্ষা করতে। আমি বড় ভাই হিসেবে শাসনের মাধ্যমে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করি। তবে এখন বুঝছি, যেটা করেছি সেটা ছিল ভুল। আমি অনুতপ্ত।”

ঘটনার পেছনে একটি পিকনিক দলকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয় বলে জানা গেছে। শুক্রবার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে ঢাকার কেরানীগঞ্জ থেকে প্রায় ২০০-৩০০ জন যাত্রী নিয়ে লঞ্চটি মোহনপুরের উদ্দেশে রওনা দেয়। পথে মুন্সিগঞ্জে নাশতার জন্য বিরতি নেওয়া হয়। সেখানেই স্থানীয়দের সঙ্গে লঞ্চযাত্রীদের কথাকাটাকাটি ও সংঘর্ষ হয়।

পুলিশের ভাষ্য মতে, কিছু স্থানীয় ব্যক্তি লঞ্চে প্রবেশ করে যাত্রীদের মাদকাসক্ত বলে সন্দেহ করেন এবং আপত্তিকর আচরণ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। এতে উত্তেজনা বাড়ে, লঞ্চে ভাঙচুর ও মারধরের ঘটনা ঘটে।

ওসি সাইফুল আলম আরও বলেন, এখন পর্যন্ত কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। ভুক্তভোগী এক তরুণীকে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছিল, কিন্তু তিনি জানান, আর আসবেন না। বর্তমানে তাঁর ফোনও বন্ধ রয়েছে। নৌ পুলিশ ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত করছে এবং লঞ্চ কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হচ্ছে। কেউ মামলা না করলে, পুলিশ নিজে বাদী হয়ে আইনি ব্যবস্থা নিতে পারে।

এ ঘটনায় নারীর প্রতি সহিংসতা ও জনতার স্বেচ্ছাচারিতার বিরুদ্ধে সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর অনেকেই অভিযুক্তদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানায়।

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

আমেরযত কাহিনি

আমেরযত কাহিনি

নিজস্ব প্রতিবেদক: স্বাদ, গন্ধ ও পুষ্টিগুণে পরিপূর্ণ ‘আম’ শুধু একটি ফল নয়, বরং এটি ইতিহাস, সংস্কৃতি ও অর্থনীতিতে গভীরভাবে প্রোথিত এক... বিস্তারিত