সেন্টমার্টিনে পর্যটন বন্ধ, নিষিদ্ধ মাছ ধরা

একসময় যেখানে প্রতিদিন হাজারো পর্যটকের ভিড়ে মুখর ছিল সেন্টমার্টিন, আজ সেই প্রবালদ্বীপ পরিণত হয়েছে এক নিস্তব্ধ, কর্মহীন জনপদে। পরিবেশ রক্ষার যুক্তিতে ভরা মৌসুমেও পর্যটক যাতায়াত সীমিত করে দেওয়ায় চরম সংকটে পড়েছেন দ্বীপবাসী।
দ্বীপের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি ছিল পর্যটন ও মাছ ধরা। অথচ বর্তমানে দুটিই বন্ধ। ফলে প্রায় ৮০ শতাংশ মানুষ নিঃস্ব, দিশেহারা সময় পার করছেন। বিকেলে সাগরপাড়ে উদাস চোখে বসে থাকা মানুষদের মুখে একটাই প্রশ্ন—এখন কীভাবে চলবে সংসার?
দোকানগুলো খোলা থাকলেও নেই বেচাকেনা, রেস্টুরেন্টগুলো বন্ধ, হোটেলগুলো তালাবদ্ধ। আর জেলেরা বলছেন, নিষেধাজ্ঞার কারণে সাগরে মাছ ধরাও বন্ধ। আয়হীন হয়ে পড়েছেন যারা সারা বছর সঞ্চয়বিহীন দিনযাপন করতেন। কেউ চিকিৎসা করাতে পারছেন না, কেউ কিনতে পারছেন না চাল-ডাল। দ্বীপের একমাত্র সেবা কেন্দ্রেও নেই স্থায়ী চিকিৎসক।
স্থানীয়দের অভিযোগ, সরকার পরিকল্পিতভাবে দ্বীপবাসীকে জীবিকা থেকে বিচ্ছিন্ন করছে। তাদের মতে, প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষার নামে বাস্তবতা বিবর্জিত সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে, যা মানুষকে ধ্বংসের পথে ঠেলে দিচ্ছে। স্থানীয় অনেকেই বলছেন, বর্ষা মৌসুম এলে এমনিতেই প্রকৃতি তার ভারসাম্যে ফিরে আসে, তাই পর্যটন সীমিত করাই পরিবেশ রক্ষার একমাত্র পথ নয়।
তারা আরও বলেন, সরকার বিকল্প কর্মসংস্থান না গড়ে তুলে পর্যটন ব্যবসা দুই মাসের জন্য সীমিত করে দেয়, অথচ এর সুফল দেখা যাচ্ছে না। বরং তা সৃষ্টি করেছে এক মানবিক সংকট। গত মৌসুমে মাত্র ১০ শতাংশ ব্যবসায়ী পর্যটনের সুযোগ পেয়েছেন বলে জানা গেছে।
এদিকে কোস্টগার্ড পূর্ব জোনের কমান্ডার ক্যাপ্টেন শাহীন মজিদ বলেন, পর্যটন সীমিত করায় দ্বীপবাসীর জীবনে দুর্ভিক্ষ নেমে এসেছে, যা কখনোই কাম্য নয়। তিনি জানান, সরকারকে বিকল্প কর্মসংস্থানের পরিকল্পনা উপস্থাপনের পাশাপাশি তারাও নিজ উদ্যোগে কিছু পদক্ষেপ নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
যোগাযোগ ব্যবস্থার দিক থেকেও দ্বীপবাসী সমস্যার মুখে পড়েছেন। টেকনাফ থেকে দ্বীপে পণ্য পরিবহনে কোস্টগার্ড ও প্রশাসনের নানা বিধিনিষেধের কারণে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের সরবরাহ বিঘ্নিত হচ্ছে, যা পরিস্থিতিকে আরও নাজুক করে তুলেছে।
সব মিলিয়ে, সেন্টমার্টিন এখন যেন কর্মহীন মানুষের দ্বীপ। যেখানে সাগরের ঢেউও যেন কেবল হতাশার প্রতিধ্বনি ছড়িয়ে দেয়।
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- শেয়ারবাজারে গেম্বলারদের দৌরাত্ম্য: আস্থা ফেরাতে চাই কঠোর শাস্তি ও কাঠামোগত সংস্কার
- বাংলাদেশে সেনা-সরকার উত্তেজনা ও ‘কু’ এর গুঞ্জন: নেপথ্যে কি?
- নতুন রাজনৈতিক সমীকরণে কারা টিকে থাকবে, কারা হারিয়ে যাবে?
- সেনাপ্রধানের বক্তব্য, জুলকারনাইন তাতে যা বললেন!
- নাহিদের স্পষ্ট বার্তা: এনসিপিতে নেই দুই উপদেষ্টা আসিফ ও মাহফুজ
- তারকা পরিচিতি: রক্ষাকবচ না কি সমাজবিমুখ অব্যাহতি?
- বিএনপির সালাউদ্দিনকে নিয়ে কি লিখলেন প্রেস সচিব শফিকুল?
- সড়ক দুর্ঘটনায় সেনা কর্মকর্তা নিহত
- বাংলাদেশে আন্তর্বর্তী সরকারের পদক্ষেপে মৌলিক অধিকার হুমকিতে
- মুহাম্মদ ইউনূস প্রশাসনের ভবিষ্যৎ কেন অনিশ্চিত
- ডিসেম্বরে নির্বাচন চান সেনাপ্রধান
- "ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি সব রাজনৈতিক দল অকুণ্ঠ সমর্থন জানিয়েছে"
- তিন মাসে ১.১৮ লাখ কোটি টাকার মূলধন ঘাটতি, দেউলিয়াত্বের পথে ২০ ব্যাংক
- স্টারলিংক চালু, সরকারের দ্রুত সিদ্ধান্তের নেপথ্যে কি?
- ভারত-পাকিস্তান সংঘাতের পর চীনের পুরস্কার