শাহবাগে ‘জুলাই ঐক্য’: ভারতীয় হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে গর্জন

রাজধানীর শাহবাগে ভারতীয় হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে অবস্থান ও জাতীয় ঐক্য গঠনের প্রত্যয়ে এক বর্ণাঢ্য প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে সামাজিক-রাজনৈতিক সংগঠনগুলোর প্ল্যাটফর্ম ‘জুলাই ঐক্য’। শনিবার (২৫ মে) বিকেলে জাতীয় জাদুঘরের সামনে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে শরিক সংগঠনগুলোর বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা সমবেত হতে থাকেন শাহবাগ চত্বরে। জনসমাগমে মুখর হয়ে ওঠে এলাকা, স্লোগানে স্লোগানে গর্জে ওঠে অংশগ্রহণকারীরা ‘ইনকিলাব ইনকিলাব, জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ’, ‘দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা’ প্রভৃতি শ্লোগান ছড়িয়ে পড়ে চারপাশে। অংশগ্রহণকারীদের হাতে ‘ভারতীয় আগ্রাসন রুখে দাও জনগণ’, ‘মুক্তি চাইলে ছাড়ো ভারতভক্তি’ লেখা সম্বলিত ব্যানার ও ফেস্টুন ছিল।
সমাবেশে বক্তারা ২০২৪ সালের আলোচিত ‘জুলাই অভ্যুত্থান’-কে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ মোড় হিসেবে উল্লেখ করেন। তারা বলেন, এই অভ্যুত্থান একটি ভারত-নির্ভর ফ্যাসিবাদী শাসনের বিরুদ্ধে জনরোষের ফলাফল, যেখানে সাধারণ জনগণ, ছাত্র, আলেম-ওলামা, প্রবাসী তরুণ, ও রাজনৈতিক কর্মীরা একত্রিত হয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলে।
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান বিন হাদী বলেন, “ড. ইউনূস বাংলাদেশের স্বার্থে অবস্থান নিচ্ছেন, এটিই আমাদের জন্য আশার বার্তা। তবে, সরকারে যারা এখনো বাংলাদেশপন্থী আছেন, তাদের পাশে থাকা আমাদের ‘জুলাই শপথ’। আর একটি এক-এগারো বা বিদেশী প্রভাবিত পরিবর্তন বাংলাদেশে চলবে না।”
তিনি ঘোষণা দেন, “যতক্ষণ না পর্যন্ত ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ আসবে, ‘জুলাই গণহত্যা’র বিচার হবে না, ততক্ষণ আন্দোলন চলবে। জুলাই চলছে, জুলাই চলবে।”
সমাবেশে ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক আবু সাদিক কায়েম বলেন, “গত ১৬ বছরে সরকার ভারতের প্রেসক্রিপশনে বিচার বিভাগ, শিক্ষা ও সংস্কৃতি ধ্বংস করেছে। সাঈদীসহ অসংখ্য আলেম-ওলামা শহীদ হয়েছেন।” তিনি অভিযোগ করেন, “জুলাইয়ের কিছু ‘ঠিকাদার’ ঐক্যকে ভেঙে দিয়েছে, আলেম সমাজ ও প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের বঞ্চিত করেছে।”
তিনি আরও বলেন, “জুলাইয়ের শহীদদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা একটি ইনসাফভিত্তিক রাষ্ট্রের স্বপ্ন দেখেছিলাম, কিন্তু সেই পথ রুদ্ধ করা হয়েছে। এখন সময় এসেছে আওয়ামী লীগের ১৬ বছরের শাসন ও জুলাইয়ের হত্যাকাণ্ডের বিচার নিশ্চিত করার।”
গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান প্রশ্ন করেন, “জনগণ যদি আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার ম্যান্ডেট দিয়ে থাকে, তাহলে কেন এখনো দলটি রাজনীতির মঞ্চে সক্রিয়? কেন আবার জনগণকে আন্দোলনে নামতে হচ্ছে?”
তিনি অভিযোগ করেন, “একটি পক্ষ জুলাইয়ের শক্তিকে পাশ কাটিয়ে কথিত মাস্টারমাইন্ডদের পরামর্শে সরকার গঠনের চেষ্টা করেছে, যা জনগণের প্রত্যাশা পূরণ করেনি।” তিনি সাবধান করে বলেন, “জুলাই যোদ্ধাদের উপেক্ষা করে সরকার গঠন হলে সেই সরকারের স্থায়িত্ব প্রশ্নবিদ্ধ হবে।”
সমাবেশে শহীদ নিয়াজের বাবা আব্দুর রব বলেন, “আমার ছেলে পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারিয়েছে। ইউনূস সাহেব, শহীদদের রক্তের ওপর আপনাকে ক্ষমতায় বসানো হয়েছে—তাই আপনার প্রথম কাজ ‘জুলাই স্বীকৃতি’ ঘোষণা করা। দ্বিতীয়ত, আন্তর্জাতিক আদালতে দায়ীদের বিচার নিশ্চিত করা।”
‘জুলাই ঐক্য’-এর সমাবেশ ছিল রাজনৈতিক পুনর্গঠন, ইতিহাসের দায় শোধ এবং জাতীয় স্বার্থে ঐক্য প্রতিষ্ঠার আহ্বান। বক্তারা জানান, এটা কেবল একটি সমাবেশ নয় একটি ধারাবাহিক আন্দোলনের সূচনা। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ‘জুলাই আন্দোলন’ চলবে বলেও তারা ঘোষণা দেন।
-রফিক, নিজস্ব প্রতিবেদক
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে চার্জ দাখিল, বিটিভিতে সরাসরি সম্প্রচার
- চীন না ভারত? উন্নয়ন না আনুগত্য? বুলেট ট্রেন বলছে স্পষ্ট জবাব
- অবশেষে বিসিবি সভাপতি ফারুককে নিয়ে মুখ খুললেন আসিফ
- বিশ্বশক্তির নজর এখন বাংলাদেশে: খনিজ ভাণ্ডারের নতুন মানচিত্র
- তারেক-ইউনুস উত্তপ্ত ফোনালাপ: যা জানা গেল
- শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান: রাষ্ট্র নির্মাণের এক উজ্জ্বল প্রতিমূর্তি
- নতুন বিসিবি সভাপতিবুলবুলের কাছে আশরাফুলের চাওয়া
- হালদা নদীতে ডিম ছাড়ল রুই জাতীয় মা মাছ, সংগ্রহ প্রায় ১৪ হাজার কেজি নিষিক্ত ডিম
- ঈদের দিন বৃষ্টি হবে কি?
- চট্টগ্রাম বন্দরে নতুন ভোর: দক্ষিণ এশিয়ার তেলের ‘রাজসিংহাসন’ দখলের পথে বাংলাদেশ?
- ধ্বংস থেকে নেতৃত্ব: ৫ আগস্ট থেকে যেভাবে শুরু হলো অর্থনীতির পুনর্জাগরণ
- ভারতের গর্ব এস-৪০০ ধ্বংস: বাস্তবতা নাকি প্রচারযুদ্ধ?
- জবি’র সাবেক অধ্যাপক আনোয়ার বেগম হত্যাচেষ্টা মামলায় সুত্রাপুরে আটক
- ধর্ম-সংস্কৃতি উপেক্ষা নয়: সংবিধান সংশোধনে ১৮০ শিক্ষকের সরব প্রতিবাদ
- সোনাক্ষীর ‘নিকিতা রায়’-এর মুক্তি পেছাল, ঘোষণা দিলেন নতুন তারিখ