এবার এনসিপি নেতা হান্নান মাসউদকে মেরে ফেলার হুমকি

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক এবং নোয়াখালী-৬ (হাতিয়া) আসনে শাপলা কলি প্রতীকের প্রার্থী আব্দুল হান্নান মাসউদকে প্রকাশ্যে হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ সংক্রান্ত একাধিক স্ক্রিনশট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক উদ্বেগ ও প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। ঘটনার প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার রাতে হাতিয়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) দায়ের করা হয়েছে।
জিডিটি করেছেন আব্দুল হান্নান মাসউদের চাচা ও এনসিপির হাতিয়া উপজেলা সমন্বয় কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী হেডমাস্টার শামছল তিব্রিজ। জিডিতে উল্লেখ করা হয়, ১৮ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৭টা ৪ মিনিটে ‘রুপক নন্দী’ নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে হান্নান মাসউদকে প্রকাশ্যে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়। একই সঙ্গে ওই হুমকির স্ক্রিনশট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে, যা এলাকায় উত্তেজনা সৃষ্টি করে।
জিডিতে আরও বলা হয়, একই দিন বিকেল ৪টা ৫৫ মিনিটে ‘Israt Raihan Ome’ নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে এনসিপির এক কর্মীর মেসেঞ্জারে বার্তা পাঠিয়ে আব্দুল হান্নান মাসউদ ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে ভয়ভীতি প্রদর্শন এবং প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়। এসব বার্তায় স্পষ্টভাবে সহিংসতার ইঙ্গিত পাওয়া যায় বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
সাধারণ ডায়েরিতে মোট সাতজনের নাম উল্লেখ করে বলা হয়েছে, তারা বিভিন্ন সময়ে ও নানা কৌশলে আব্দুল হান্নান মাসউদ এবং তার সহকর্মীদের হত্যার হুমকি দিয়ে আসছে। জিডিতে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয় যে, অভিযুক্তরা যেকোনো সময় বড় ধরনের ক্ষতি সাধনে সক্ষম হতে পারে।
অভিযোগে যাদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে তারা হলেন হাতিয়া উপজেলার কান্তি লালের ছেলে রুপক নন্দী (২৫), চরঈশ্বর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল হালিম আজাদ (৪৬), তার ছেলে ইসরাত রায়হান অমি (২৭), সংকর চন্দ্রের ছেলে প্রেম নাল (২৫), তোফায়েল সেরাংয়ের ছেলে নুর হোসেন রহিম (২৬), সংকর চন্দ্র দাসের ছেলে বাবুলাল (৩২) এবং বেলায়েত হোসেনের ছেলে ওমর ফারুক (৩২)।
জানা গেছে, ভাইরাল হওয়া স্ক্রিনশটগুলো মূলত চরঈশ্বর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল হালিম আজাদের ছেলে ইসরাত রায়হান অমি এবং তার অনুসারী রুপক নন্দীর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম অ্যাকাউন্ট থেকে ছড়ানো হয়েছে। স্ক্রিনশটগুলোতে হুমকিমূলক ও উসকানিমূলক বক্তব্য দেখা যায়, যা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির জন্য উদ্বেগজনক বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
আব্দুল হান্নান মাসউদের চাচা শামছল তিব্রিজ বলেন, দীর্ঘদিন ধরে তার ভাতিজাকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ্যে হত্যার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এতে পরিবার ও রাজনৈতিক সহকর্মীরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। তিনি প্রশাসনের কাছে অবিলম্বে কার্যকর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানান।
এদিকে হাতিয়া উপজেলা যুবশক্তির আহ্বায়ক মো. ইউসুফ রেজা বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে একটি চা-দোকানে সাবেক এক জনপ্রতিনিধির বক্তব্য থেকেই এই হুমকির সূচনা হয়েছে বলে তারা মনে করছেন। এরপর থেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পরিকল্পিতভাবে ভয়ভীতি প্রদর্শন করা হচ্ছে। তিনি দ্রুত আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান।
বাগছাসের কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক হাফিজুর রহমান বলেন, ন্যায় ও ইনসাফের পথে থাকার কারণেই জুলাইয়ের সহযোদ্ধাদের মতো আব্দুল হান্নান মাসউদকেও হত্যার হুমকির মুখে পড়তে হচ্ছে। তিনি প্রশাসনের নীরবতাকে চরম ব্যর্থতা হিসেবে উল্লেখ করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান।
এ বিষয়ে আব্দুল হান্নান মাসউদ বলেন, হত্যার হুমকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন একটি গুরুতর অপরাধ এবং এটি সরাসরি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ও আইনশৃঙ্খলার ওপর আঘাত। তিনি দোষীদের দ্রুত শনাক্ত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইফুল আলম বলেন, বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখা হচ্ছে। একটি সাধারণ ডায়েরি গ্রহণ করা হয়েছে এবং প্রাপ্ত স্ক্রিনশট যাচাই করে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
-রফিক
প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারে হামলার প্রতিবাদে মির্জা ফখরুল
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সম্মুখসারির যোদ্ধা ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শহীদ শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে জাতীয় দৈনিক প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টারের কার্যালয়ে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি এই ঘটনাকে দেশের জন্য গভীরভাবে উদ্বেগজনক উল্লেখ করে এর সম্পূর্ণ দায় সরকারের ওপর বর্তায় বলে মন্তব্য করেছেন।
শুক্রবার ১৯ ডিসেম্বর ভোরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজের ভেরিফায়েড অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক বিবৃতিতে মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশ একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র এবং এখানে বসবাসরত প্রতিটি নাগরিকের জানমাল রক্ষার দায়িত্ব বর্তমান সরকারের। তিনি উল্লেখ করেন, শহীদ হাদির মৃত্যুর পর যখন জাতি শোকাহত অবস্থায় তার আত্মার মাগফিরাত কামনায় প্রার্থনা করছে, ঠিক সেই সময় প্রথম আলো, ডেইলি স্টারসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এবং বরেণ্য সাংবাদিক নূরুল কবীরসহ একাধিক ব্যক্তির ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে, যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
এই ঘটনাকে ন্যক্কারজনক উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, সংকটময় পরিস্থিতিকে পুঁজি করে যারা সহিংসতা ও ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়, তারা দেশের শত্রু। তার ভাষায়, একটি শোকাবহ মুহূর্তকে ব্যবহার করে যারা সমাজকে অস্থিতিশীল করতে চায়, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি। তিনি এই ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে স্পষ্ট ভাষায় প্রতিবাদ জানান এবং সরকারকে অবিলম্বে দায়িত্ব গ্রহণের আহ্বান জানান।
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে মব সন্ত্রাস দেশের সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিবেশকে গভীরভাবে বিভক্ত করে ফেলেছে। তিনি স্মরণ করিয়ে দেন যে, শহীদ শরিফ ওসমান হাদি একজন নির্বাচনী প্রার্থী ছিলেন এবং জনগণের কাছে গিয়ে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়েছিলেন। তার মতে, বাংলাদেশে নির্বাচন হবে এবং জনগণের ভোটে একটি গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে। সেই সঙ্গে তিনি হাদির হত্যাকারীদের বিচার এবং প্রতিটি মব সন্ত্রাসের ঘটনায় জড়িতদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান।
বিবৃতির শেষাংশে বিএনপি মহাসচিব বলেন, স্বৈরাচারী আওয়ামী সরকারের পতনের পর নতুন সরকারের প্রথম ও প্রধান দায়িত্ব হলো জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করা এবং একটি গণতান্ত্রিক, স্থিতিশীল ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ গড়ে তোলা। তিনি সকল রাজনৈতিক ও সামাজিক পক্ষকে দায়িত্বশীল আচরণের মাধ্যমে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান।
উল্লেখ্য, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম সংগঠক শরিফ ওসমান হাদি গত ১২ ডিসেম্বর রাজধানীর বিজয়নগর এলাকায় গণসংযোগকালে চলন্ত রিকশায় থাকা অবস্থায় দুর্বৃত্তের গুলিতে গুরুতর আহত হন। গুলিটি তার মাথায় লাগে। পরবর্তীতে ঢাকায় এবং পরে সিঙ্গাপুরে দীর্ঘ চিকিৎসা শেষে বৃহস্পতিবার রাতে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তার মৃত্যুর পর রাজধানী ঢাকায় রাজনৈতিক উত্তেজনা ও অস্থিরতা স্পষ্টভাবে লক্ষ করা যাচ্ছে।
-শরিফুল
যখন দেশে ফিরছে শরিফ ওসমান হাদির মরদেহ
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সম্মুখসারির সাহসী কর্মী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির মরদেহ শুক্রবার সন্ধ্যায় সিঙ্গাপুর থেকে বাংলাদেশে আনা হচ্ছে। সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যুর পর প্রয়োজনীয় আনুষ্ঠানিকতা শেষে মরদেহ দেশে পাঠানোর ব্যবস্থা সম্পন্ন করা হয়েছে।
এনসিপির স্বাস্থ্য সেলের প্রধান এবং হাদির চিকিৎসা কার্যক্রমে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক ডা. আব্দুল আহাদ সাংবাদিকদের জানান, বাংলাদেশ বিমানের একটি বাণিজ্যিক ফ্লাইটে শুক্রবার স্থানীয় সময় বিকাল ৩টা ৫০ মিনিটে সিঙ্গাপুর থেকে মরদেহটি ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হবে। নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী ফ্লাইটটি সন্ধ্যা আনুমানিক ৬টা ৫ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের কথা রয়েছে।
বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার রাত ৯টা ৪৫ মিনিটে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন শরিফ ওসমান হাদি। তার মৃত্যুতে রাজনৈতিক অঙ্গনসহ বিভিন্ন মহলে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
এর আগে গত শুক্রবার রাজধানীর বিজয়নগরের বক্স কালভার্ট রোড এলাকায় রিকশায় চলাচলের সময় মোটরসাইকেলে আসা দুর্বৃত্তদের গুলিতে গুরুতর আহত হন তিনি। মাথায় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তাকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং পরবর্তীতে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য গত সোমবার তাকে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষণ ও চেষ্টা সত্ত্বেও বৃহস্পতিবার তার মৃত্যু হয়। তার মৃত্যুকে কেন্দ্র করে হামলার তদন্ত ও নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে।
-রাফসান
সব জুলাইযোদ্ধাকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখছি: সামান্তা শারমিন
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সম্মুখসারির যোদ্ধা জান্নাত আরা রুমীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে তীব্র ক্ষোভ ও শঙ্কা প্রকাশ করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ মর্গে মৃত রুমীর পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে তিনি মন্তব্য করেন, সহকর্মী রুমীর ঝুলন্ত মরদেহ দেখে মনে হচ্ছে যেন দেশের সব জুলাইযোদ্ধাকেই ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পাচ্ছেন তিনি। ওসমান হাদির মস্তিষ্ক ভেদ করা বুলেট যেমন তাদের ছিন্নবিচ্ছিন্ন করেছে, রুমীর এই ঘটনাও তেমনই এক ভয়াবহ বার্তা দিচ্ছে বলে মনে করেন এই নেত্রী।
সামান্তা শারমিন অভিযোগ করেন, ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের সম্মুখসারির যোদ্ধা জান্নাত আরা রুমীর মৃত্যুকে এনসিপি কোনোভাবেই স্বাভাবিক হিসেবে নিচ্ছে না। রুমীকে বিভিন্ন সময় হুমকি দেওয়া হয়েছিল এবং তিনি ভয়ানক বুলিংয়ের শিকার হয়েছিলেন। জুলাই ঘোষণাপত্রে যোদ্ধাদের নিরাপত্তার কোনো সুনির্দিষ্ট ব্যবস্থা না থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, জুলাইযোদ্ধাদের চোখ থেকে আড়াল করা যাবে না, তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। রুমীর এই ঘটনা সবাইকে সতর্ক করার পাশাপাশি নতুন করে সাহস জোগাচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
নির্বাচন ব্যবস্থা ও বর্তমান প্রশাসনের কড়া সমালোচনা করে এনসিপির এই নেত্রী বলেন, নির্বাচন কমিশন কোনোভাবেই নিরপেক্ষ নয় এবং প্রশাসনেরও নির্দিষ্ট কোনো রূপরেখা নেই। তিনি অভিযোগ করেন, সরকার দিল্লি, রাওয়ালপিন্ডি ও আমেরিকার স্বার্থ রক্ষা করে চলছে এবং তাদের আচরণ পক্ষপাতমূলক। নারীরা প্রতিনিয়ত সাইবার বুলিংয়ের শিকার হচ্ছেন, অথচ সরকার এ বিষয়ে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে না। নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে না পারলে ‘নতুন বাংলাদেশ’ গড়া সম্ভব নয় উল্লেখ করে তিনি আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে আসা হুমকির বিষয়েও সতর্ক করে দেন এবং জানান যে এ বিষয়ে দলগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তুতি চলছে।
তারেক রহমানের ফেরা: ৭ রুটে স্পেশাল ট্রেন চায় বিএনপি
আগামী ২৫ ডিসেম্বর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে প্রত্যাবর্তনকে কেন্দ্র করে ব্যাপক প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ৭টি রুটে বিশেষ ট্রেন ও বগি রিজার্ভ চেয়েছে বিএনপি। সারাদেশ থেকে নেতাকর্মী ও সমর্থকদের ঢাকায় আসার সুবিধার্থে বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রেল মন্ত্রণালয়কে আনুষ্ঠানিকভাবে এই চিঠি পাঠিয়েছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, তারেক রহমানকে সংবর্ধনা জানাতে সারাদেশ থেকে বিপুলসংখ্যক ছাত্র-জনতা ঢাকায় আগমন করবেন। তাদের যাতায়াতের সুবিধার্থে বিএনপি সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী নির্দিষ্ট ভাড়া পরিশোধ সাপেক্ষে এই বিশেষ ট্রেন বা বগি বরাদ্দ নিতে ইচ্ছুক।
বিএনপির পক্ষ থেকে ২৪ ডিসেম্বর দিবাগত রাতের জন্য কক্সবাজার-ঢাকা, সিলেট-ঢাকা, জামালপুর-ময়মনসিংহ-ঢাকা, টাঙ্গাইল-ঢাকা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-রাজশাহী-ঢাকা, পঞ্চগড়-নীলফামারী-পার্বতীপুর-ঢাকা এবং কুড়িগ্রাম-রংপুর-ঢাকা—এই সাতটি রুটে একটি করে স্পেশাল ট্রেন অথবা অতিরিক্ত বগি বরাদ্দের অনুরোধ জানানো হয়েছে। দীর্ঘ ১৮ বছরের নির্বাসিত জীবন শেষে আগামী ২৫ ডিসেম্বর মেয়ে জাইমা রহমানকে সঙ্গে নিয়ে দেশে ফিরছেন তারেক রহমান। ওইদিন বেলা ১১টা ৫৫ মিনিটের দিকে তাদের বহনকারী বাংলাদেশ বিমানের নিয়মিত ফ্লাইটটি ঢাকায় অবতরণ করার কথা রয়েছে।
তারেক রহমানের দেশে ফেরাকে স্মরণীয় করে রাখতে ইতিমধ্যে একটি শক্তিশালী অভ্যর্থনা কমিটি গঠন করেছে বিএনপি। বৃহস্পতিবার গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ের সামনে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে কমিটির সদস্যসচিব ও বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, তারেক রহমানের দেশে ফেরাটা হবে ঐতিহাসিক। এই দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে কমিটি নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে এবং তারই অংশ হিসেবে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে এই লজিস্টিক সহায়তা চাওয়া হয়েছে।
২৫ ডিসেম্বর ঐতিহাসিক শোডাউন: অভ্যর্থনার প্রস্তুতি নিয়ে সালাহউদ্দিনের বার্তা
দীর্ঘ প্রায় ১৭ বছরের প্রবাস জীবন শেষে আগামী ২৫ ডিসেম্বর দেশে ফিরছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তার এই ঐতিহাসিক প্রত্যাবর্তনকে কেন্দ্র করে দলটির নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা বিরাজ করছে। তাকে রাজকীয় অভ্যর্থনা জানাতে এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ইতিমধ্যে স্থান যাচাই-বাছাই ও রুট ম্যাপ তৈরির কাজ শুরু করেছে বিএনপি। বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ জানান, তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকে কেন্দ্র করে অভ্যর্থনা টিমের সদস্য ও নিরাপত্তা প্রধানকে নিয়ে বিমানবন্দরে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সালাহউদ্দিন আহমদ জানান, তারেক রহমান হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সরাসরি এভারকেয়ার হাসপাতালে যাবেন, যেখানে তার মা ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া চিকিৎসাধীন আছেন। বিমানবন্দর থেকে হাসপাতাল পর্যন্ত পুরো সড়কপথের নিরাপত্তা ও অন্যান্য লজিস্টিক বিষয় নিয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সঙ্গেও বৈঠকের পরিকল্পনা করছে বিএনপি। বর্তমানে অভ্যর্থনার জায়গাগুলো চূড়ান্ত করার জন্য যাচাই-বাছাই চলছে। বৈঠকে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, তারেক রহমানের আগমনে যে সমাবেশ হবে, তা ঐতিহাসিক রূপ নেবে এবং এই আয়োজন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে কমিটির সদস্যরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।
এর আগে গত ১৬ ডিসেম্বর যুক্তরাজ্যে অনুষ্ঠিত বিজয় দিবসের এক অনুষ্ঠানে তারেক রহমান নিজেই ঘোষণা দেন যে তিনি ২৫ ডিসেম্বর বাংলাদেশে ফিরছেন। এছাড়া গত ১২ ডিসেম্বর এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও তারেক রহমানের দেশে ফেরার বিষয়টি নিশ্চিত করেছিলেন। লন্ডনে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকের পরই এই দিনক্ষণ চূড়ান্ত হয়েছে বলে জানা গেছে। এদিকে তারেক রহমানের সহধর্মিণী ডা. জোবাইদা রহমান বর্তমানে ঢাকায় অবস্থান করছেন এবং শাশুড়ি খালেদা জিয়ার চিকিৎসার তদারকি করছেন। উল্লেখ্য, ওয়ান-ইলেভেনের পটপরিবর্তনের পর ২০০৭ সালে গ্রেপ্তার হন তারেক রহমান এবং ২০০৮ সালে জামিনে মুক্তি পেয়ে চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমান। এরপর থেকে তিনি সেখানেই অবস্থান করছিলেন।
পদত্যাগের পরও সরকারি বাসায় আসিফ-মাহফুজ: কারণ কী?
অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ থেকে পদত্যাগ করলেও নিরাপত্তাজনিত কারণে এখনো সরকারি বাসভবনেই অবস্থান করছেন দুই ছাত্র প্রতিনিধি আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও মাহফুজ আলম। সরকারের উচ্চ পর্যায়ের নির্দেশেই তারা সেখানে থাকছেন বলে বৃহস্পতিবার সকালে নিশ্চিত করেছেন সাবেক উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ। সম্প্রতি গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয় যে পদত্যাগের এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও এই দুই তরুণ নেতা সরকারি বাসা ছাড়েননি এবং কবে ছাড়বেন সে বিষয়েও সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য নেই।
এ বিষয়ে আসিফ মাহমুদ স্পষ্ট করেছেন যে, তাদের সরকারি বাসায় অবস্থানের মূল কারণ নিরাপত্তা শঙ্কা। সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকেই তাদের সেখানে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া নিয়ম অনুযায়ী পদত্যাগের পর দুই মাস পর্যন্ত ‘গ্রেস পিরিয়ড’ হিসেবে সরকারি বাসায় থাকার ক্ষেত্রে কোনো আইনি বাধা নেই বলেও উল্লেখ করেন তিনি। গত ১০ ডিসেম্বর বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় গিয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন আসিফ মাহমুদ ও মাহফুজ আলম। এরপর ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই তাদের পদত্যাগপত্র কার্যকর হয় এবং পরদিন উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে তারা আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় নেন।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে শেখ হাসিনা সরকারের পতনে এই দুই ছাত্র নেতার ভূমিকা ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আসিফ মাহমুদ ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচি ঘোষণার মাধ্যমে আন্দোলনের গতিপথ বদলে দিয়েছিলেন এবং সরকার গঠনের শুরু থেকেই যুব ও ক্রীড়া এবং পরে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেন। অন্যদিকে মাহফুজ আলম শুরুতে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী এবং পরে উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নিয়েছিলেন। জাতিসংঘের অধিবেশনে প্রধান উপদেষ্টার সফরসঙ্গী হিসেবে গিয়ে ‘মাস্টারমাইন্ড’ হিসেবে বিশ্বমঞ্চে পরিচিতি পান তিনি। সরকারের এই দুই গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্বের নিরাপত্তা বিবেচনায় তাই এখনো তাদের সরকারি বাসভবনে রাখার সিদ্ধান্ত বহাল রাখা হয়েছে। সব মিলিয়ে আসিফ মাহমুদ ১৫ মাস এবং মাহফুজ আলম ১৩ মাস উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
ভারত বাংলাদেশের সন্ত্রাসীদের ট্রেনিং দিচ্ছে: হাসনাত
পাসপোর্ট এবং ভিসা ছাড়াই ৩০ হাজার আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীকে ভারত আশ্রয় দিয়েছে বলে দাবি করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ। তিনি অভিযোগ করেছেন, সেখানে বসেই বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে এবং ভারত তাদের ‘ট্রেনিং’ দিচ্ছে।
বুধবার সন্ধ্যায় কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলার এলাহাবাদ এলাকায় এক উঠান বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় তিনি ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের ভিত্তি এবং সীমান্ত হত্যা নিয়েও কড়া হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।
শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দেওয়ার তীব্র সমালোচনা করে হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, “খুনি হাসিনাকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দেওয়ার কারণে ভারতের হাই কমিশনারকে বাংলাদেশ থেকে বের করে দেওয়া দরকার ছিল।”
তিনি স্পষ্ট ভাষায় বলেন, যারা দেশের ‘ফ্যাসিস্ট’ এবং সন্ত্রাসীদের আশ্রয় দিচ্ছে, তাদের সঙ্গে সম্পর্ক রাখার কোনো দায়বদ্ধতা বা ‘ঠেকা’ বাংলাদেশের নেই।
ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক কেবল ন্যায্যতার ভিত্তিতেই হতে পারে উল্লেখ করে এনসিপি নেতা বলেন, “আপনারা যদি সীমান্তে আমাদের দেখামাত্রই গুলি করেন, তাহলে আমরা আপনাদের সালাম দেওয়ার নীতিতে থাকব না। আমাদের গুলি করার সামর্থ্য না থাকলেও অন্তত ঢিল মেরে হলেও এর প্রতিবাদ করব।”
তিনি ভারতকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ভারত যদি বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বকে সম্মান করে, তবেই বাংলাদেশ ভারতের সার্বভৌমত্বকে সম্মান করবে। সন্ত্রাসীদের আশ্রয় না দেওয়ার বিষয়েও তিনি পারস্পরিক নীতির কথা উল্লেখ করেন।
হাসনাত আব্দুল্লাহ অভিযোগ করেন, টেলিভিশন ও সিনেমার মাধ্যমে দেশে ভারতীয় সংস্কৃতি বা ‘কালচার’ ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় তিনি দেশবাসীকে আত্মনির্ভরশীল হওয়ার আহ্বান জানান।
তরুণ প্রজন্মের ওপর আস্থা রেখে তিনি বলেন, “লড়াই এই তরুণ প্রজন্মকেই করতে হবে। আমাদের আগের প্রজন্ম লড়াই করবে না। তারা গোপনে যোগাযোগ রাখে, প্রকাশ্যে রাখে না।”
জোটের জট আর আসনের অংক: ভোটের মাঠে শেষ মুহূর্তের নাটক
আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গন এখন সরগরম। ৩০০ আসনে প্রার্থী চূড়ান্ত করা এবং জোটের শরিকদের সন্তুষ্ট রাখা নিয়ে বড় দলগুলো শেষ মুহূর্তের জটিল সমীকরণে পড়েছে।
বিশেষ করে আওয়ামী লীগ নির্বাচনের বাইরে থাকায় ছোট-বড় প্রায় অর্ধশতাধিক দল সংসদে জায়গা করে নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। আসন ভাগাভাগি, ক্ষমতার সমীকরণ ও নেতৃত্বের দ্বন্দ্বে বিরোধী জোটগুলোতে দেখা দিয়েছে তীব্র ক্ষোভ ও অভিমান।
বিএনপির শরিকদের ক্ষোভ ও ভাঙন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে বিএনপি। দলটি ইতিমধ্যে ২৭২টি আসনে নিজস্ব বা দলীয় প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে। তবে দীর্ঘদিনের আন্দোলনের সঙ্গী শরিক দলগুলোর জন্য আসন ছাড় দিতে গিয়ে বেকায়দায় পড়েছে তারা। মাত্র ২৮টি আসন শরিকদের জন্য বরাদ্দ রাখা হলেও তা নিয়ে সন্তুষ্ট নয় মিত্ররা।
সম্প্রতি গুলশানে অনুষ্ঠিত বিএনপি ও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির বৈঠকটি অস্বস্তিকর পরিবেশে শেষ হয়। আলোচনা ফলপ্রসূ না হওয়ায় বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক ক্ষুব্ধ হয়ে বৈঠকস্থল ত্যাগ করেন। অন্যদিকে, কাঙ্ক্ষিত আসন না পেয়ে বিএনপির সঙ্গে সব সম্পর্ক ছিন্ন করেছে লেবার পার্টি। দলটির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান অভিযোগ করেছেন, ‘বিএনপি বেইমানি করেছে।’
গণঅধিকার পরিষদের নুরুল হক নুরও আসন সমঝোতা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। ২৯টি সমমনা দল বিএনপিকে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছিল। পরিস্থিতি সামাল দিতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মিত্রদের সঙ্গে বৈঠক করে ভুল বোঝাবুঝি অবসানের আশ্বাস দিয়েছেন। তবে বিএনপির ভেতরেও ঘোষিত ২৭২ আসনের মধ্যে অন্তত ৫০টি আসনে প্রার্থী পরিবর্তন চেয়ে বিক্ষোভ করছেন স্থানীয় নেতাকর্মীরা।
জামায়াতের ‘ওয়ান বক্স পলিসি’ ও নতুন জোট জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী আন্দোলনসহ আটটি দল মিলে রাজনীতিতে একটি ‘বিকল্প শক্তি’ হিসেবে আবির্ভূত হতে চাইছে। তারা ‘ওয়ান বক্স পলিসি’ বা প্রতি আসনে জোটের একজন একক প্রার্থী দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। তবে জামায়াত বেশি আসন নিজেদের দখলে রাখতে চাওয়ায় ছোট দলগুলোর মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। একাধিক বৈঠক হলেও আসন বণ্টন নিয়ে চূড়ান্ত সুরাহা এখনো হয়নি।
তরুণ ও বামদের নতুন মেরুকরণ জুলাই অভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে গঠিত নতুন দলগুলোও পিছিয়ে নেই। এনসিপি, এবি পার্টি ও রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন মিলে গঠন করেছে ‘গণতান্ত্রিক সংস্কার জোট’। এনসিপি ইতিমধ্যে ১২৫ আসনে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে। অন্যদিকে জাতীয় পার্টির একটি অংশ এবং বাম দলগুলো আলাদা আলাদা জোট গঠন করে ভোটের মাঠে থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, আগামী ২৯ ডিসেম্বর (সোমবার) পর্যন্ত মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া যাবে। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ২০ জানুয়ারি এবং প্রতীক বরাদ্দ হবে ২১ জানুয়ারি। নিবন্ধিত দলগুলোকে এবার নিজস্ব প্রতীকেই ভোট করতে হবে। নিরাপত্তাসহ নানা শঙ্কা থাকলেও দেশজুড়ে নির্বাচনী হাওয়া বইছে জোরেশোরে।
তারেক রহমানের ফ্লাইটে টিকিট নিয়ে হুলুস্থুল: সব ‘সোল্ড আউট’!
দীর্ঘ ১৭ বছরের নির্বাসিত জীবনের অবসান ঘটিয়ে অবশেষে দেশে ফিরছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। আগামী ২৫ ডিসেম্বর সকালে তিনি ঢাকায় পা রাখবেন। মঙ্গলবার এক আলোচনা সভায় তিনি নিজেই এই ঘোষণা দিয়েছেন।
তারেক রহমানের দেশে ফেরার খবরে দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উচ্ছ্বাস দেখা দিয়েছে। জানা গেছে, তিনি বাংলাদেশ বিমানের বিজি-২০২ ফ্লাইটে দেশে ফিরবেন। এই খবর ছড়িয়ে পড়ার পর ওই নির্দিষ্ট ফ্লাইটের টিকিট কাটার জন্য নেতাকর্মীদের মধ্যে রীতিমতো হিড়িক পড়ে যায়।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, অনেক নেতা তাদের প্রিয় নেতার সফরসঙ্গী হতে চেয়েছিলেন। কিন্তু অল্প সময়ের মধ্যেই ওই ফ্লাইটের সব টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে। লন্ডন সময় ২৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬টা ২০ মিনিটে হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে তিনি ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেবেন। তার সঙ্গে অন্তত ৫০ জন নেতাকর্মী থাকতে পারেন।
এদিকে দেশে ফেরার সময় লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দরে ভিড় না করার জন্য যুক্তরাজ্য বিএনপির নেতাকর্মীদের অনুরোধ জানিয়েছেন তারেক রহমান। তিনি বলেন, বিমানবন্দরে ভিড় করলে হট্টগোল সৃষ্টি হতে পারে, যাতে দেশের ও দলের সুনাম নষ্ট হবে। তাই কাউকে বিমানবন্দরে না যাওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
তারেক রহমানের আগেই তার স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমান ঢাকায় পৌঁছেছেন। তাদের একমাত্র মেয়ে ব্যারিস্টার জাইমা রহমানও বাবার সঙ্গে একই ফ্লাইটে দেশে ফিরতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
গুলশান এভিনিউয়ের ১৯৬ নম্বর বাসভবনটি তারেক রহমানের বসবাসের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে। বাড়ির সংস্কারকাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বসানো হয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরা ও পুলিশ বক্স। দেয়াল রং করা হয়েছে এবং গেট বড় করা হয়েছে।
বিএনপির মিডিয়া সেল জানিয়েছে, কোনো কারণে গুলশানের বাসা পুরোপুরি প্রস্তুত না হলে তিনি মা বেগম খালেদা জিয়ার ভাড়া বাসা ‘ফিরোজা’য় উঠবেন। দেশে ফিরে তিনি গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে অফিস করবেন।
এছাড়া বিএনপি চেয়ারপারসন ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তাদের ‘প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা’ হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এ কে এম শামছুল ইসলামকে।
উল্লেখ্য, ২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমিয়েছিলেন তারেক রহমান। এরপর রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের কারণে দীর্ঘ দেড় যুগ তাকে দেশের বাইরে অবস্থান করতে হয়।
পাঠকের মতামত:
- এবার এনসিপি নেতা হান্নান মাসউদকে মেরে ফেলার হুমকি
- হাদির মৃত্যুতে শায়খ আহমাদুল্লাহ ও আজহারীর আবেগঘন বার্তা
- দিল্লি না ঢাকা? স্লোগানে স্লোগানে কাঁপছে শাহবাগ চত্বর
- শুক্রবার কেমন থাকবে ঢাকার আকাশ? জেনে নিন
- রাজধানীতে আজ কেমন থাকবে আবহাওয়া, জানাল অধিদপ্তর
- প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারে হামলার প্রতিবাদে মির্জা ফখরুল
- ধ্বংস নয়, পুনর্গঠনেই বাঁচবেন হাদি: হাসনাত আবদুল্লাহ
- যুব এশিয়া কাপসহ আজকের পূর্ণ ক্রীড়া সূচি
- আজ বাংলাদেশ–পাকিস্তান সেমিফাইনাল এর সময় জানুন
- আজকের নামাজের সময়সূচি: ১৯ ডিসেম্বর
- যখন দেশে ফিরছে শরিফ ওসমান হাদির মরদেহ
- সবাইকে কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে শরিফ ওসমান হাদি
- ৭১-এর পর ভারতের বড় কৌশলগত চ্যালেঞ্জ এখন বাংলাদেশ
- টাকার চিন্তায় ঘুম নেই জেন-Z প্রজন্মের: গবেষণায় চমকপ্রদ তথ্য
- শীতে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কেন বাড়ে? জানুন বাঁচার উপায়
- বক্স অফিসে রণবীরের তাণ্ডব: আয়ের অংক শুনলে চমকে যাবেন
- সব জুলাইযোদ্ধাকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখছি: সামান্তা শারমিন
- রিজার্ভের নতুন মাইলফলক: একদিনেই বাড়ল বড় অংক
- ১৪ জানুয়ারি ঢাকায় আসছে বিশ্বকাপ ট্রফি
- তারেক রহমানের ফেরা: ৭ রুটে স্পেশাল ট্রেন চায় বিএনপি
- ২৫ ডিসেম্বর ঐতিহাসিক শোডাউন: অভ্যর্থনার প্রস্তুতি নিয়ে সালাহউদ্দিনের বার্তা
- ভারত থেকে হত্যার হুমকি দিচ্ছেন হাসিনা: আসিফ নজরুল
- দুই দশকের আক্ষেপ ঘুচল: ২৭তম বিসিএসে বড় নিয়োগ
- গুম পরিবারের জন্য ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত: সম্পদ ব্যবহারে বাধা নেই
- ১৮ ডিসেম্বর শেয়ারবাজারের পূর্ণাঙ্গ বিশ্লেষণ
- ১৮ ডিসেম্বরের বাজারে লুজার শেয়ারের তালিকা
- ১৮ ডিসেম্বর ডিএসই টপ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- পদত্যাগের পরও সরকারি বাসায় আসিফ-মাহফুজ: কারণ কী?
- মহাবিশ্বের ‘ডাইনোসর’ নক্ষত্রের খোঁজ পেল জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ
- ফ্রিজে রাখলে বিষ হতে পারে যেসব খাবার: সতর্ক থাকুন
- শীতে দিনে কত লিটার পানি পান করা জরুরি? জেনে নিন
- বিপাকে ৩,৫০০ শিক্ষক-সাংবাদিক: হাই কোর্টে যাওয়ার প্রস্তুতি
- সাময়িক বন্ধের পর আজ স্বাভাবিক ভারতীয় ভিসা সেন্টার
- জুলাই যোদ্ধা হাদির অবস্থা সংকটাপন্ন: সিঙ্গাপুর থেকে জরুরি বার্তা
- ভেনেজুয়েলাকে ঘিরে ফেলেছে যুক্তরাষ্ট্রের বিশাল নৌবহর
- ডলার ও পাউন্ডের দাম কত? জেনে নিন আজকের মুদ্রা বিনিময় হার
- জাপানিদের মতো সুন্দর ত্বক চান? ব্যবহার করুন চালের পানি
- ১৮ ডিসেম্বর টিভিতে খেলার সময়সূচি: মিস করবেন না যে ম্যাচগুলো
- ঢাকার আকাশ আজ কেমন থাকবে? জানাল আবহাওয়া অফিস
- বাজুসের নতুন ঘোষণা: আজ থেকে কার্যকর স্বর্ণের বর্ধিত দাম
- ভারত বাংলাদেশের সন্ত্রাসীদের ট্রেনিং দিচ্ছে: হাসনাত
- ১৮ ডিসেম্বর: আজকের নামাজের সময়সূচি জেনে নিন
- ঢাকা-দিল্লি সম্পর্কে বরফ গলছে না: টানাপোড়েন এখন প্রকাশ্যে
- হাদির ওপর হামলা চালিয়ে মহারাষ্ট্রে আয়েশে ফয়সাল
- রাস্তায় নামার আগে দেখুন রাজধানীর আজকের কর্মসূচি
- ঝড়ে লণ্ডভণ্ড সব: গাজার সংকট পৌঁছাল চরমে
- জোটের জট আর আসনের অংক: ভোটের মাঠে শেষ মুহূর্তের নাটক
- ওমরাহ ভিসায় গিয়ে ভিক্ষা: পাকিস্তানের ভাবমূর্তি সংকট
- বৃহস্পতিবার টানা ১০ ঘণ্টা বিদ্যুৎ বন্ধ থাকবে যেসব এলাকায়
- তারেক রহমানের ফ্লাইটে টিকিট নিয়ে হুলুস্থুল: সব ‘সোল্ড আউট’!
- দুইদিন বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকবে যেসব এলাকায়
- বুধবার টানা ১০ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকবে না যেসব এলাকায়
- চিকিৎসক জানাল ওসমান হাদীর বর্তমান অবস্থা
- শনি-রবিবার বিদ্যুৎ থাকবে না বহু এলাকায়
- মাধ্যমিক স্কুলে ভর্তি শুরুর সময়সূচি প্রকাশ
- এমপি হওয়ার আগেই ভিআইপি প্রোটোকল পেলেন হাদি: ডা. মাহমুদা মিতু
- রোববার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত বিদ্যুৎহীন যেসব এলাকা
- মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা আজ শুরু, একটি আসনের জন্য লড়াই যতজনের
- ১২ ফেব্রুয়ারি জাতীয় নির্বাচন ঘোষণা
- দেশের বাজারে স্বর্ণের দামের নতুন রেকর্ড
- বাজুসের নতুন ঘোষণা: আজ থেকে কার্যকর স্বর্ণের বর্ধিত দাম
- শীতে ত্বক শুষ্ক ও র্যাশ কেন হয়, জানুন সমাধান
- ১৬ অক্টোবর ২০২৫: জেনে নিন আজকের মুদ্রা বিনিময় হার
- দক্ষিণ আফ্রিকার দাপটে ভারতের বড় হার চণ্ডীগড়ে
- ইনকিলাব মঞ্চের ওসমান হাদি গুলিবিদ্ধ








