স্বাস্থ্য শিক্ষা

ক্যান্সার কি আপনার শরীরে বাসা বাঁধছে প্রাথমিক অবস্থায় দেখা যাওয়া ৫টি লক্ষণ

স্বাস্থ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ০২ ১৭:০৬:৫০
ক্যান্সার কি আপনার শরীরে বাসা বাঁধছে প্রাথমিক অবস্থায় দেখা যাওয়া ৫টি লক্ষণ
ছবিঃ সংগৃহীত

ক্যানসার একটি মারাত্মক রোগ; যা প্রাথমিক অবস্থায় শনাক্ত করা না গেলে জীবনহানি ঘটাতে পারে। শরীর যখন ক্যানসারে আক্রান্ত হতে শুরু করে; তখন কিছু সুস্পষ্ট লক্ষণ প্রকাশ পেতে পারে। এই লক্ষণগুলো নারী ও পুরুষ উভয়ের মধ্যেই দেখা যায়; তবে সুনির্দিষ্ট কিছু লক্ষণ আছে যা লিঙ্গভেদে ভিন্ন হয়। সময়মতো এই পরিবর্তনগুলো চিহ্নিত করতে পারলে ক্যানসারের চিকিৎসা অনেক বেশি কার্যকর ও জীবন রক্ষাকারী হতে পারে।

চলুন জেনে নেওয়া যাক, শরীরে ক্যানসারের প্রাথমিক পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ

১. হঠাৎ ওজন হ্রাস ও ক্রমাগত ক্লান্তি

ক্যানসারে আক্রান্ত ব্যক্তিরা প্রাথমিক অবস্থায় হঠাৎ করেই ওজন হারাতে শুরু করেন; যদি সাধারণ ডায়েট বা শরীরচর্চার কারণ ছাড়া এই ওজন কমতে থাকে, তবে সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। এর পাশাপাশি, যদি আপনি কাজ না করেও অব্যাহত ক্লান্তি ও অবসন্নতা অনুভব করেন; তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। কারণ কোলন বা পেটের ক্যানসারে অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষয় হতে পারে; যা শরীরকে দুর্বল করে তোলে।

২. দীর্ঘস্থায়ী ও অস্বাভাবিক ব্যথা

শরীরের কোনো স্থানে দীর্ঘস্থায়ী ব্যথা ক্যানসারের একটি লক্ষণ হতে পারে। যেমন; হাড়ের ক্যানসারে জয়েন্টে ব্যথা দেখা দেয়; মস্তিষ্কে টিউমার থাকলে দীর্ঘস্থায়ী মাথাব্যথা হতে পারে। এছাড়া লিম্ফোমা বা রক্তের অন্যান্য ক্যানসারে হাড়ের ব্যথার সঙ্গে যদি স্বল্প মেয়াদে দীর্ঘস্থায়ী জ্বর থাকে; তবে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত।

৩. দীর্ঘমেয়াদি কাশি ও কণ্ঠস্বরের পরিবর্তন

ফুসফুস ক্যানসারের একটি বড় লক্ষণ হলো দীর্ঘমেয়াদি কাশি; যা সহজে সারে না। এছাড়া কণ্ঠস্বরের পরিবর্তন, ভয়েস বক্স বা থাইরয়েডের সমস্যাও ক্যানসারের কারণে হতে পারে।

৪. অস্বাভাবিক রক্তক্ষরণ ও রক্তশূন্যতা

শরীরের কোনো অঙ্গ থেকে অস্বাভাবিক রক্তক্ষরণ ক্যানসারের অন্যতম প্রধান সতর্কতা। পায়খানার সঙ্গে রক্ত আসা কোলন বা মলদ্বার ক্যানসারের লক্ষণ হতে পারে; মূত্রনালির টিউমার থাকলেও প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত পড়তে পারে। এছাড়া লিউকেমিয়া, লিম্ফোমা ও মেলোমা ক্যানসার অস্থিমজ্জায় প্রভাব ফেলে; ফলে রক্তক্ষরণ হতে থাকে এবং রক্তকণিকার অভাবে রক্তশূন্যতা দেখা দিতে পারে। পুরুষদের মধ্যে প্রোস্টেট ক্যানসারও প্রাথমিকভাবে প্রস্রাবের অসুবিধা বা মূত্রে রক্তের মাধ্যমে প্রকাশ পেতে পারে।

৫. ত্বক ও শরীরের নির্দিষ্ট পরিবর্তন

ত্বকে নতুন তিল (moles), মোলস, বাদামি বা কালচে স্পট দেখা দিলে সতর্ক হওয়া উচিত। ত্বক হলুদ বা লাল হয়ে যাওয়া, চুলকানি বা দীর্ঘস্থায়ী ফুসকুড়ি লিভার, ডিম্বাশয় বা কিডনির ক্যানসারের ইঙ্গিত দিতে পারে; মুখে দীর্ঘদিন ধরে ঘা থাকলে ওরাল ক্যানসারের সম্ভাবনা থাকে। ধূমপান, তামাক বা অতিরিক্ত অ্যালকোহল গ্রহণের সঙ্গে এই ঝুঁকি আরও বেড়ে যায়।

পুরুষদের ক্ষেত্রে: অণ্ডকোষে ব্যথা টেস্টিকুলার ক্যানসারের লক্ষণ হতে পারে।

নারীদের ক্ষেত্রে: স্তন, জরায়ু, ডিম্বাশয় বা ভলভা ক্যানসার বেশি দেখা যায়; যোনি দিয়ে রক্তপাত বা অস্বাভাবিক স্রাব, পেটে ব্যথা, স্তনের পরিবর্তন বা ব্যথা থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।

বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করছেন; শরীরে এই ধরনের পরিবর্তন দেখা দিলে অপেক্ষা না করে ডাক্তার বা অনকোলজিস্টের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন।


মানসিক স্বাস্থ্য সেবার সমস্যাসমূহ: থেরাপি, ওষুধ ও মানসিক রোগ নির্ণয়ের “অযাচিত ক্ষতি”

স্বাস্থ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ০২ ১৮:৩৩:৪১
মানসিক স্বাস্থ্য সেবার সমস্যাসমূহ: থেরাপি, ওষুধ ও মানসিক রোগ নির্ণয়ের “অযাচিত ক্ষতি”
ছবি: সংগৃহীত

বর্তমান মানসিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় একটি গভীর সমস্যার ছাপ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে থেরাপি, ওষুধ এবং নির্ণয় মানুষকে সুস্থতার দিকে নিয়ে যাওয়ার পরিবর্তে নির্ভরশীলতার চক্রে আটকে রাখছে। মানসিক রোগ নির্ণয়, যা প্রাথমিকভাবে নির্ভরযোগ্য নয়, এখন মানুষের পরিচয় হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে, পুনরুদ্ধারের একটি উপায় হিসেবে নয়।

যদিও থেরাপিতে অংশগ্রহণকারী মানুষের সংখ্যা বাড়ছে, সমষ্টিগত মানসিক স্বাস্থ্যের মান উন্নতি হচ্ছে না। বিশেষত ADHD এবং PTSD-এর মতো কিছু সমস্যার ক্ষেত্রে ওষুধকে প্রথম পছন্দ হিসেবে নেওয়া হয়। ফলে মানুষ যে কৌশল ও শিক্ষা পেতে পারত যা তাদেরকে নিজে থেকে সহ্য ও প্রতিরোধ করতে শেখাত, তা আর শিখছে না। এই পরিস্থিতি মানসিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থার “ইয়াট্রোজেনিক প্রভাব” বা অযাচিত ক্ষতির দিকে ইঙ্গিত করে।

সাধারণ আচরণকে রোগ হিসেবে চিহ্নিত করা

মানসিক স্বাস্থ্য পেশাজীবীরা সাধারণ মানসিক অবস্থাকে রোগ হিসেবে চিহ্নিত করার প্রবণতা রাখেন। উদাহরণস্বরূপ, দুঃখ, উদ্বেগ যা আগে স্বাভাবিক অনুভূতি হিসেবে বিবেচিত হত—এখন সমস্যার চিহ্ন হিসেবে দেখা হয়। মানুষেরা বিশ্বাস করতে শুরু করেছে যে, কোনো নেতিবাচক অনুভূতি থাকা মানে ঠিক নয়, অথচ বাস্তবে এসব অনুভূতি আমাদের সুস্থতার সতর্কবার্তা।

পেশাদার মনোবিজ্ঞানে এর ইতিহাসও আছে। উদাহরণস্বরূপ, ১৯৭৩ পর্যন্ত সমকামিতা মানসিক রোগ হিসেবে বিবেচিত হত। সম্প্রতি ২০২২ সালে ‘প্রলম্বিত শোক’ রোগ হিসেবে DSM-এ অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে “সাধারণ মানসিক অভিজ্ঞতাকে অতিরিক্ত রোগ হিসেবে দেখা” বা over-pathologizing-এর প্রবণতা বেড়েছে।

আমাদের দৈনন্দিন কথাবার্তাতেও মানসিক স্বাস্থ্য পরিভাষা ঢুকে পড়েছে। কেউ নিজেকে OCD বা ADHD বলছেন, আবার কেউ শারীরিকভাবে সাধারণ ঘুমের অভাবের জন্য ইন্সোমনিয়া বা সামাজিক অভ্যাসজনিত সমস্যার জন্য ‘সোশ্যাল অ্যাংজাইটি’ হিসেবে চিহ্নিত করছেন।

থেরাপি কি অত্যধিক রুটিন হয়ে গেছে?

সাধারণ অনুভূতিকে রোগ হিসেবে চিহ্নিত করার কারণে অনেকেই মনে করেন তারা থেরাপির প্রয়োজন, এমনকি যাদের প্রকৃত সমস্যা নেই তাদেরও। অনেক গবেষণায় দেখা গেছে, দীর্ঘমেয়াদি থেরাপি প্রায়ই স্বাভাবিক পুনরুদ্ধারের চেয়ে বেশি কার্যকর নয়। বিশেষ করে সিবিটি (কগনিটিভ বিহেভিয়ারাল থেরাপি) রোগীর সমস্যা ব্যবস্থাপনার কৌশল শেখায়, মূল সমস্যার সমাধান নয়।

প্রফেসর রিচার্ড ফ্রিডম্যান বলেন, থেরাপি দীর্ঘমেয়াদে ডিজাইন করা হয়নি। থেরাপির মূল উদ্দেশ্য হলো রোগীকে সমস্যা মোকাবিলার কৌশল শেখানো। তাই, দীর্ঘমেয়াদি থেরাপি কখনও কখনও রোগীকে সমস্যার মধ্যে আটকে রাখে।

মানসিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় আটকে যাওয়া

বর্তমান মানসিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থা পুনর্বাসনের চেয়ে ওষুধে বেশি নির্ভর করে। চিকিৎসকরা প্রায়ই “সহজ” রোগী বা দ্রুত সমাধানযোগ্য সমস্যার দিকে ঝুঁকছেন। এই প্রবণতা গুরুতর রোগীর পূর্ণ সহায়তা পাওয়া কঠিন করে তোলে।

উদাহরণস্বরূপ, PTSD রোগীর ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞরা প্রশ্ন করছেন যে, দীর্ঘমেয়াদি অ্যান্টিডিপ্রেসেন্টস ওষুধ তাদের নিজেকে স্বাভাবিকভাবে সুস্থ হতে বাধা দিচ্ছে কি না। ADHD-এর ক্ষেত্রে দেখা গেছে, যে শিশুদের প্রায় ৩১% বড় হয়ে এই রোগের লক্ষণ হারিয়ে ফেলে, তবুও অনেক ক্ষেত্রে তাদের নিরবিচ্ছিন্নভাবে ওষুধ দেওয়া হয়।

অফবোর্ডিং পরিকল্পনার অভাব

মানসিক স্বাস্থ্য চিকিৎসা, ওষুধ বা থেরাপি শেষ করার একটি নির্ধারিত পরিকল্পনা প্রায়ই নেই। অ্যান্টিডিপ্রেসেন্টস ব্যবহার শেষ করার সঠিক সময় চিকিৎসকরা সঠিকভাবে নির্ধারণ করতে পারেন না। থেরাপির ক্ষেত্রেও এমবিসি (Measurement-Based Care) ব্যবহার খুব কমই করা হয়। প্রায় ৮৪% রোগী থেরাপি শেষ করে নিজে থেকে থেরাপি বন্ধ করেন।

মানসিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় দুর্নীতি ও শোষণ

DSM-এর মানসিক রোগ নির্ণয় প্রক্রিয়া “বৈজ্ঞানিকভাবে অর্থহীন” বলে অনেক গবেষক উল্লেখ করেছেন। ১৯৭৩ সালে স্ট্যানফোর্ডের এক গবেষণায় দেখানো হয়েছে যে, স্বাভাবিক মানুষকে রোগী বানিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করা হলে তাদেরকে গুরুতর মানসিক রোগে আক্রান্ত হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের বড় মানসিক হাসপাতালগুলোর মধ্যে কিছু প্রতিষ্ঠান অভিযোগের মুখে পড়েছে যে, রোগীদের দীর্ঘ সময় ধরে অবৈধভাবে ধরে রাখা হয়েছে, শুধুমাত্র বীমা থেকে সর্বোচ্চ আয় করার উদ্দেশ্যে।

মানসিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ন্যাভিগেশন

মানসিক স্বাস্থ্য সেবা নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ, তবে রোগী ও পরিবারকে সতর্ক থাকতে হবে। চিকিৎসা, থেরাপি এবং ওষুধ শুধুমাত্র রোগ কমানোর জন্য নয়, পুনরুদ্ধারের জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে কি না তা নিশ্চিত করতে হবে।

পরামর্শসমূহ:

১. সতর্ক ও তথ্যনির্ভর রোগী হোন: নির্ণয় বা ওষুধ গ্রহণের আগে তথ্য জানুন, সম্ভাব্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ও বিকল্প চিকিৎসা জানুন।

২. আচরণগত কৌশল শেখা: ওষুধের পাশাপাশি কৌশলমূলক থেরাপি গ্রহণ করুন।

৩. সমর্থন ব্যবস্থা তৈরি করুন: পরিবার, বন্ধু বা সমর্থক গ্রুপের সঙ্গে থাকুন।

৪. সুনির্দিষ্ট পুনরুদ্ধার লক্ষ্য নির্ধারণ করুন: থেরাপি বা ওষুধের মাধ্যমে স্বাভাবিক পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যমাত্রা রাখুন।

মানসিক স্বাস্থ্য সেবা অপরিহার্য, তবে সর্বদা মনে রাখুন, “caveat emptor”—সাবধান হওয়া আপনার অধিকার।


থাইরয়েড ও হরমোন ভারসাম্য বজায় রাখার সহজ উপায়

স্বাস্থ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ০২ ১১:৪৩:১৫
থাইরয়েড ও হরমোন ভারসাম্য বজায় রাখার সহজ উপায়
ছবি: সংগৃহীত

অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাস এবং অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের কারণে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে থাইরয়েড ও স্থূলতার মতো রোগের প্রকোপ উদ্বেগজনকভাবে বেড়ে চলেছে। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, বর্তমান জীবনযাপনের ধারা যদি অপরিবর্তিত থাকে, তাহলে এই সমস্যা ভবিষ্যতে আরও বিস্তৃত হয়ে যাবে।

শরীরের বিপাক প্রক্রিয়া এবং হরমোনের ভারসাম্য রক্ষা করতে আয়োডিন নামক ক্ষুদ্র কিন্তু অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ খনিজ অপরিহার্য। আয়োডিন থাইরয়েড গ্রন্থিকে সহায়তা করে শরীরে এমন হরমোন তৈরি করতে যা শক্তি উৎপাদন, তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ, হৃদস্পন্দন এবং শারীরিক বৃদ্ধির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

যদি শরীরে আয়োডিনের ঘাটতি হয়, তাহলে থাইরয়েড সঠিকভাবে কাজ করতে ব্যর্থ হয়। এর ফলে হাইপোথাইরয়েডিজম, অতিরিক্ত ক্লান্তি, ওজন বৃদ্ধি এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি কেবল শারীরিক স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে না, বরং দৈনন্দিন জীবনের কর্মক্ষমতাকেও প্রভাবিত করে।

শরীরে আয়োডিনের অভাব পূরণ করার সবচেয়ে সহজ উপায় হলো আয়োডিনযুক্ত লবণ গ্রহণ করা। তবে হৃদরোগ বা উচ্চ রক্তচাপের কারণে অনেকে নুন কমিয়ে দেন, যা আয়োডিনের ঘাটতির অন্যতম কারণ। তাই খাদ্যতালিকায় প্রাকৃতিক আয়োডিনের উৎস যুক্ত করা জরুরি।

দুগ্ধজাত পণ্য যেমন দুধ, দই ও চিজে প্রাকৃতিকভাবে আয়োডিন থাকে। লো-ফ্যাট বা অর্গানিক দুধ বেছে নেওয়া যেতে পারে, যা স্বাস্থ্যকর এবং আয়োডিনের পর্যাপ্ত উৎস হিসেবে কার্যকর। এটি শরীরের শক্তি বজায় রাখতে ও বিপাকক্রিয়াকে সঠিক রাখতে সাহায্য করে।

মাছ ও সামুদ্রিক খাবারও আয়োডিনের একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস। কড, টুনা, চিংড়ি, ইলিশ এবং স্যামন প্রভৃতি মাছ আয়োডিনের পাশাপাশি ওমেগা–৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সরবরাহ করে, যা হৃদযন্ত্রের জন্য উপকারী। বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দেন, সপ্তাহে কয়েকবার সামুদ্রিক খাবার খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করলে আয়োডিনের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব।

ডিমও আয়োডিনের ভালো উৎস হিসেবে পরিচিত। বিশেষ করে ডিমের কুসুমে প্রচুর আয়োডিন থাকে। এছাড়া এতে থাকা প্রোটিন ও ভিটামিন ডি শরীরের শক্তি এবং বিপাকক্রিয়া ঠিক রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

আয়োডিনযুক্ত লবণও দৈনন্দিন চাহিদা পূরণের একটি সহজ উপায়। বিশেষজ্ঞরা বলেন, এক চিমটে আয়োডিনযুক্ত লবণ যথেষ্ট। তবে অতিরিক্ত লবণ গ্রহণ এড়িয়ে চলা উচিত, কারণ তা হৃদরোগ ও উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।

সি-উইড বা সামুদ্রিক শৈবাল যেমন কেল্প, নরি বা ওয়াকামে প্রচুর আয়োডিন থাকে। সপ্তাহে এক–দুইবার সামান্য পরিমাণে খেলে দৈনন্দিন চাহিদা পূরণ সম্ভব। তবে অতিরিক্ত খেলে বিপরীত প্রভাব দেখা দিতে পারে, তাই সঠিক পরিমাণে গ্রহণ করা জরুরি।

বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, আধুনিক জীবনযাত্রার মধ্যে থাইরয়েড সমস্যার ঝুঁকি থেকে মুক্ত থাকতে খাদ্যতালিকায় পর্যাপ্ত আয়োডিন রাখা অপরিহার্য। সামান্য সচেতন পরিবর্তনেই শরীরের হরমোন ভারসাম্য বজায় রাখা সম্ভব এবং দৈনন্দিন জীবন আরও প্রাণবন্ত করা সম্ভব।


ওষুধ নয় প্রাকৃতিক উপায়ে অ্যালার্জি কমাবে রান্নাঘরের ৭ সুপারফুড

স্বাস্থ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ০১ ১২:২৩:৪৪
ওষুধ নয় প্রাকৃতিক উপায়ে অ্যালার্জি কমাবে রান্নাঘরের ৭ সুপারফুড
ছবিঃ সংগৃহীত

আজকের ব্যস্ত জীবনযাত্রায় অ্যালার্জি যেন অনেকেরই নিত্যসঙ্গী হয়ে দাঁড়িয়েছে। হাঁচি-কাশি, চোখ-নাক জ্বালা করা কিংবা ত্বকের র‍্যাশ—এসব উপসর্গ নিয়ে প্রায়শই আমরা অস্বস্তিতে ভুগি। অবাক হলেও সত্যি, বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সমস্যার স্থায়ী সমাধানে সব সময় ওষুধের প্রয়োজন হয় না; বরং প্রতিদিনের খাবারেই লুকিয়ে আছে অ্যালার্জি থেকে মুক্তির সহজ উপায়।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কিছু প্রাকৃতিক খাবার রয়েছে যেগুলো শরীরের প্রদাহ কমায়, প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং অ্যালার্জির উপসর্গ উল্লেখযোগ্যভাবে উপশম করতে পারে। নিয়মিত খাদ্যাভ্যাসে এই সুপারফুডগুলো রাখলে শরীর ধীরে ধীরে ফিরে পেতে পারে প্রাকৃতিক ভারসাম্য ও স্বস্তি।

অ্যালার্জি সাধারণত নির্দিষ্ট খাবার (যেমন চিংড়ি, গরুর মাংস, বাদাম, বেগুন) ছাড়াও ধুলাবালি, পশুপাখি বা রাসায়নিক পদার্থের সংস্পর্শে আসার কারণে দেখা দেয়। ত্বকে চুলকানি, ফুসকুড়ি, চোখ ফোলা, শ্বাসকষ্ট বা মুখে জ্বালার মতো লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।

অ্যালার্জি কমাতে কার্যকর ৭টি সুপারফুড

১. মধু – প্রাকৃতিক প্রদাহরোধী শক্তি মধুতে রয়েছে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা শরীরের প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়। প্রতিদিন এক চা চামচ মধু খেলে মৌসুমি অ্যালার্জি, কাশি ও গলা ব্যথা থেকে দ্রুত আরাম পাওয়া যায়।

২. আদা – প্রাকৃতিক অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি আদা শরীরের প্রদাহ কমিয়ে শ্বাসনালী পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। নিয়মিত আদা চা পান করলে শ্বাসকষ্ট ও অ্যালার্জি-জনিত সর্দি-কাশি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আসে।

৩. সামুদ্রিক মাছ ও ওমেগা-৩ সমৃদ্ধ খাবার স্যামন, টুনা মাছ, আখরোট, চিয়াসিড ও সয়াবিনে থাকা ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড শরীরের প্রদাহ কমাতে সহায়তা করে এবং শ্বাসনালীর স্বাস্থ্যে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।

৪. দই – প্রোবায়োটিক শক্তি বাড়ায় দইয়ের প্রোবায়োটিক উপাদান অন্ত্রের ভালো ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি করে, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ বা ইমিউন সিস্টেমকে আরও শক্তিশালী করে তোলে। নিয়মিত দই খাওয়া অ্যালার্জি প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখে।

৫. হলুদ – প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও প্রদাহনাশক হলুদে থাকা কারকিউমিন উপাদান অ্যালার্জির উপসর্গ কমাতে সাহায্য করে। প্রতিদিন খাবারে অল্প পরিমাণে হলুদ ব্যবহার করলে শরীরের সামগ্রিক প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।

৬. টকজাতীয় ফল ও সবুজ শাকসবজি লেবু, কমলা, আনারস, জাম্বুরা, পেঁয়াজ, রসুন ও কুমড়ার বীজের মতো খাবারে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে, যা অ্যালার্জি প্রতিরোধে দারুণ কার্যকর।

৭. মৌরি – রোগ প্রতিরোধে প্রাকৃতিক সহায়ক নিয়মিত মৌরি খেলে হজমশক্তি উন্নত হয় এবং এটি শরীরের অ্যালার্জি প্রতিক্রিয়া অনেকটাই কমিয়ে দেয়। মৌরি ফুসফুস পরিষ্কার রাখতেও সহায়তা করে।

অ্যালার্জি মোকাবেলায় ওষুধই একমাত্র সমাধান নয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রতিদিনের খাদ্যাভ্যাসে সামান্য পরিবর্তন এনে এই সাতটি সুপারফুড যুক্ত করলে শরীরের প্রাকৃতিক প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে এবং প্রদাহ ও শ্বাসকষ্টের মতো উপসর্গগুলো ধীরে ধীরে কমে যাবে।


দীর্ঘমেয়াদি কাশি হতে পারে ফুসফুস ক্যান্সার জেনে নিন সতর্কতার সংকেত

স্বাস্থ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ০১ ১০:৩৮:৪২
দীর্ঘমেয়াদি কাশি হতে পারে ফুসফুস ক্যান্সার জেনে নিন সতর্কতার সংকেত
ছবিঃ সংগৃহীত

সর্দি-কাশি এবং ঠান্ডা লাগার মতো সাধারণ উপসর্গগুলো সাধারণত আমরা গুরুত্ব দিই না। কিন্তু চিকিৎসকরা সতর্ক করছেন যে, কাশি যদি কয়েক সপ্তাহ ধরে স্থায়ী হয়, তবে তা ফুসফুসের ক্যান্সারের প্রাথমিক ইঙ্গিত হতে পারে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) দীর্ঘদিন ধরে থাকা কাশি, বুকে ব্যথা ও শ্বাসকষ্টকে ফুসফুস ক্যান্সারের প্রধান লক্ষণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে।

আমেরিকান ক্যান্সার সোসাইটির মতে, কাশি এবং বুকে ব্যথা একসঙ্গে দেখা দিলে তা ফুসফুস ক্যান্সারের প্রাথমিক পর্যায়ে থাকার ইঙ্গিত দেয়।

সাধারণ কাশি ও ক্যান্সারের কাশির পার্থক্য

সাধারণ কাশি সাধারণত সর্দি, গরম-ঠান্ডা পরিবর্তন বা অ্যালার্জির কারণে দেখা দেয় এবং সাধারণত সাত থেকে দশ দিনের মধ্যে কমে যায়। কিন্তু যদি কাশির সঙ্গে বুকে, কাঁধে বা পিঠে ব্যথা অনুভূত হয়, তবে সেটি সাধারণ কাশি নয়, বরং গভীর কোনো শারীরিক সমস্যার সংকেত হতে পারে।

ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিক জানিয়েছে, কাশির সঙ্গে যদি কাঁধ, পিঠ বা হাতে ব্যথা অনুভব করেন, বিশেষ করে রাতে ব্যথা বাড়ে বা হাতে ঝিনঝিনানি হয়, তবে সেটি ফুসফুসের ওপরের অংশে থাকা টিউমারের লক্ষণ হতে পারে।

যেসব লক্ষণে দেরি না করে চিকিৎসকের কাছে যাবেন

কাশি তিন সপ্তাহের বেশি স্থায়ী হওয়া।

সময়ের সঙ্গে কাশির তীব্রতা আরও বেড়ে যাওয়া।

কাশির সঙ্গে রক্ত বা মরচে রঙের থুতু আসা।

জোরে হাসলে বা শ্বাস নিলে দম ফুরিয়ে যাওয়া।

বারবার ফুসফুসের সংক্রমণ হওয়া।

হঠাৎ ওজন কমে যাওয়া বা কোনো অজানা ক্লান্তি অনুভূত হওয়া।

বিশেষজ্ঞদের মতে, অ্যালার্জি বা ভাইরাসজনিত কাশি ওষুধ ছাড়াই দ্রুত সেরে যায়। কিন্তু কাশি যদি তিন সপ্তাহ বা তার বেশি সময় ধরে স্থায়ী হয়, ওষুধে না কমে এবং সঙ্গে রক্ত আসে বা শ্বাস নিতে কষ্ট হয়, তাহলে তা ক্যান্সারজনিত কাশি হতে পারে।

চিকিৎসকদের পরামর্শ হলো, এমন পরিস্থিতি দেখা দিলে বিলম্ব না করে ফুসফুস বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হওয়া এবং প্রয়োজনে এক্স-রে বা সিটি স্ক্যান করে নিশ্চিত হওয়া। যদিও সব দীর্ঘমেয়াদি কাশিই ক্যান্সারের লক্ষণ নয়, তবুও অবহেলা মারাত্মক হতে পারে। ফুসফুস ক্যান্সার প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা পড়লে চিকিৎসা অনেক সহজ ও কার্যকর হয়।

সূত্র : এবিপি লাইভ


উচ্চ রক্তচাপই স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়: জীবন রক্ষায় প্রতিরোধের উপায়গুলি জেনে নিন

স্বাস্থ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ৩০ ১২:০৬:৫৫
উচ্চ রক্তচাপই স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়: জীবন রক্ষায় প্রতিরোধের উপায়গুলি জেনে নিন
ছবিঃ সংগৃহীত

অ্যাপোলো মাল্টিস্পেশালিটি হাসপাতালের নিউরোসার্জন ডা. দেবর্ষি চট্টোপাধ্যায় সতর্ক করে বলেছেন যে, অনিয়ন্ত্রিত উচ্চ রক্তচাপ বা হাইপারটেনশনের কারণেই যেকোনো সময় স্ট্রোক হতে পারে এবং সময়মতো চিকিৎসা না পেলে এই পরিস্থিতি প্রাণঘাতী হতে পারে।

চিকিৎসক দেবর্ষি জানান, স্ট্রোক মূলত দুই ধরনের হয়—ইস্কেমিক এবং হেমারেজিক। ইস্কেমিক স্ট্রোকে মস্তিষ্কে রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে যায়, অন্যদিকে হেমারেজিক স্ট্রোকে মস্তিষ্কের দুর্বল রক্তনালি ছিঁড়ে গিয়ে রক্তক্ষরণ ঘটে। তিনি গুরুত্বারোপ করেন যে, উভয় ক্ষেত্রেই দ্রুত চিকিৎসা শুরু করা অত্যন্ত জরুরি, অন্যথায় প্রাণহানির ঝুঁকি বহুগুণ বেড়ে যায়।

উচ্চ রক্তচাপই মূল শত্রু

ডা. দেবর্ষি চট্টোপাধ্যায় সতর্ক করে বলেন, "হাইপারটেনশন বা উচ্চ রক্তচাপ থাকলে স্ট্রোকের ঝুঁকি বহুগুণ বেড়ে যায়। প্রেশারের ওষুধ একদিনও বন্ধ করা যাবে না। গর্ভাবস্থা বা অন্য কোনো অসুস্থতার সময় রক্তচাপ বেড়ে গেলেও বিশেষ সতর্ক থাকতে হবে।"

কম বয়সীদের ঝুঁকি বৃদ্ধি

সাম্প্রতিক সময়ে তরুণদের মধ্যেও স্ট্রোকের ঘটনা উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ছে। অনেকেই ৪০ বছর বয়সের আগেই এই মারাত্মক অবস্থার শিকার হচ্ছেন। ডা. দেবর্ষির মতে, "অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনই এর মূল কারণ। যেমন—দীর্ঘক্ষণ বসে থাকা, শরীরচর্চার অভাব এবং অতিরিক্ত মানসিক চাপ—এগুলোই তরুণদের মধ্যে স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে।"

যে অভ্যাসে বাড়ে স্ট্রোকের ঝুঁকি

বিশেষজ্ঞরা কয়েকটি জীবনযাত্রার অভ্যাসের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন, যা স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়:

১. উচ্চ রক্তচাপ: যাদের পরিবারে হাই ব্লাড প্রেশারের ইতিহাস আছে, তাদের নিয়মিত রক্তচাপ পরীক্ষা করা এবং তা নিয়ন্ত্রণে রাখা জরুরি।

২. অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস: লবণ ও সোডিয়ামযুক্ত খাবার কম খেতে হবে। জাঙ্ক ফুড, প্যাকেটজাত এবং অতিরিক্ত লবণযুক্ত খাবার স্ট্রোকের সম্ভাবনা বাড়িয়ে তোলে।

৩. অলস জীবনযাপন: সারাদিন বসে থাকা বা শুয়ে থাকার অভ্যাস এড়িয়ে চলতে হবে। নিয়মিত ব্যায়াম করলে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং রক্তচাপ স্বাভাবিক থাকে।

৪. ধূমপান ও মদ্যপান: এই দুটি অভ্যাস রক্তচাপ বাড়ায় এবং রক্তনালির ক্ষতি করে, ফলে স্ট্রোকের আশঙ্কা বহুগুণ বেড়ে যায়।

বিশেষজ্ঞদের মতে, নিয়মিত রক্তচাপ পরীক্ষা, সঠিক খাদ্যাভ্যাস এবং সক্রিয় জীবনযাপনই স্ট্রোক প্রতিরোধের সবচেয়ে কার্যকর উপায়। তাদের পরামর্শ, স্ট্রোকের কোনো লক্ষণ দেখা দিলে আতঙ্কিত না হয়ে সাড়ে চার ঘণ্টার মধ্যে একজন নিউরোলজিস্টের শরণাপন্ন হওয়াই সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ।

সূত্র : এই সময়


ফিটনেস জগতে আলোড়ন: জনপ্রিয় প্রোটিন পাউডারে ক্ষতিকর সীসার মাত্রা ফাঁস

স্বাস্থ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ৩০ ১০:৩২:২৫
ফিটনেস জগতে আলোড়ন: জনপ্রিয় প্রোটিন পাউডারে ক্ষতিকর সীসার মাত্রা ফাঁস
ছবিঃ সংগৃহীত

শরীরচর্চা বা ফিটনেস ধরে রাখার জন্য প্রোটিন পাউডার বিশ্বজুড়ে একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় খাদ্য সম্পূরক হলেও, সম্প্রতি প্রকাশিত এক গবেষণা এই জনপ্রিয়তায় গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকির আশঙ্কা তৈরি করেছে। গবেষণায় দেখা গেছে, বাজারের বহু জনপ্রিয় প্রোটিন পাউডার এবং শেক-এ ক্ষতিকর মাত্রার সীসা (Lead) বিদ্যমান, যা দীর্ঘমেয়াদে ব্যবহারকারীদের স্বাস্থ্যের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রের একটি স্বাধীন ভোক্তা সংস্থা ‘কনস্যুমার রিপোর্ট’ ২৩টি বহুল প্রচলিত প্রোটিন পাউডার ও শেক পরীক্ষা করে দেখেছে যে, এর প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ ব্র্যান্ডের পণ্যে সীসার মাত্রা নিরাপদ সীমার তুলনায় অনেক বেশি।

সংস্থাটির খাদ্য নিরাপত্তা গবেষণা ও পরীক্ষার প্রধান সানা মুজাহিদ জানান, পর্যাপ্ত স্বাস্থ্যবান প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য তাৎক্ষণিক ক্ষতির সম্ভাবনা না থাকলেও, দীর্ঘদিন ধরে এই পাউডারগুলো ব্যবহার করলে স্বাস্থ্যের ঝুঁকি বাড়তে পারে।

কোন পাউডারে সীসার মাত্রা সর্বাধিক? ‘কনস্যুমার রিপোর্টস’-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, সবচেয়ে বেশি সীসার উপস্থিতি পাওয়া গেছে Naked Nutrition-এর Vegan Mass Gainer পাউডারে (প্রতি সেবায় ৭.৭ মাইক্রোগ্রাম) এবং Huel-এর Black Edition পাউডারে (৬.৩ মাইক্রোগ্রাম/সেবা)। অন্যান্য পরীক্ষিত পাউডারে সীসার মাত্রা ০.৫ থেকে ৩ মাইক্রোগ্রামের মধ্যে ছিল।

বিশেষজ্ঞ ও গবেষকদের উদ্বেগ: স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা বিজ্ঞান অধ্যাপক ড. স্টিফেন লুবি এই ফলাফলকে ‘অত্যন্ত উদ্বেগজনক’ বলে মন্তব্য করেছেন। হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের সহকারী অধ্যাপক ড. পিটার কোহেন সতর্ক করে বলেছেন, প্রোটিন সাপ্লিমেন্টগুলোর মধ্যে সীসা এবং অন্যান্য ভারী ধাতু সহজেই প্রবেশ করতে পারে। তাই ক্রেতাদের এই বিষয়ে সতর্ক থাকা অপরিহার্য।

তিনি আরও পরামর্শ দেন যে, ইউএসপি (USP) বা এনএসএফ (NSF)-এর মতো তৃতীয় পক্ষের মান যাচাইয়ের প্রমাণ রয়েছে—এমন কোম্পানির পণ্য বেছে নিলে তা অপেক্ষাকৃত নিরাপদ হতে পারে।

গর্ভবতী ও শিশুদের জন্য বিশেষ সতর্কতা: স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে সীসা বিষক্রিয়া নিয়ে গবেষণা করা গবেষক জেনা ফোরসাইথ বিশেষভাবে সতর্ক করে বলেছেন, গর্ভবতী বা যারা গর্ভধারণের চেষ্টা করছেন, তাদের এই ধরনের প্রোটিন পাউডার সম্পূর্ণরূপে এড়িয়ে চলা উচিত।

ড. লুবি ভোক্তাদের উদ্দেশে বলেন, প্রোটিনের প্রয়োজনীয়তা পূরণের জন্য পাউডার ব্যবহার করাটা আদৌ কোনো ঝুঁকি তৈরি করছে কি না, তা ভেবে দেখা উচিত। কারণ, প্রোটিনের জন্য অন্যান্য সাধারণ খাবারও প্রয়োজনীয় চাহিদা পূরণ করতে পারে।

সোর্স: নিউইয়র্ক টাইমস


কিসমিসের ম্যাজিক: ভেজানো কিসমিস খেলে যে ৫টি রোগ নিয়ন্ত্রণে থাকে

স্বাস্থ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ২৯ ২০:৫১:৫৩
কিসমিসের ম্যাজিক: ভেজানো কিসমিস খেলে যে ৫টি রোগ নিয়ন্ত্রণে থাকে
ছবিঃ সংগৃহীত

প্রতিদিনের খাবারে কিসমিস অনেকেরই পছন্দ। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাতে পানিতে ভিজিয়ে রাখা কিসমিস সকালে খেলে শরীর পায় অতিরিক্ত পুষ্টিগুণ ও নানা উপকার। এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, আয়রন, ক্যালসিয়াম ও ফাইবার দেহের জন্য বিশেষ উপকারী। সুস্থ থাকতে আজ থেকেই এই অভ্যাস শুরু করা যেতে পারে।

ভেজানো কিসমিস খাওয়ার ৫ উপকারিতা

১. কিসমিসে থাকা গ্লুকোজ ও ফ্রুক্টোজ শরীরকে সকালের কর্মশক্তি দেয় এবং ক্লান্তি দূর করে দিনভর সতেজ রাখে।

২.এতে থাকা ফাইবার কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে এবং হজমে সহায়তা করে, যা পেট পরিষ্কার রাখে।

৩.কিসমিস আয়রনের একটি ভালো উৎস। নিয়মিত ভেজানো কিসমিস খেলে হিমোগ্লোবিন বাড়াতে সাহায্য করে এবং রক্তশূন্যতার ঝুঁকি কমায়।

৪.এটি শরীর থেকে টক্সিন দূর করে লিভারের কার্যকারিতা বাড়ায় এবং অঙ্গকে সুস্থ রাখতে সহায়তা করে।

৫.কিসমিসে থাকা পটাশিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে, যা হৃদযন্ত্রের সুস্থতা বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ

পুষ্টিবিদরা বলছেন, প্রতিদিন সকালে ৮-১০টি ভেজানো কিসমিস খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য যথেষ্ট উপকারী। তবে কিসমিস যেহেতু প্রাকৃতিক শর্করাসমৃদ্ধ, তাই ডায়াবেটিস রোগীদের অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে এটি খাওয়া উচিত।


ভিটামিন সাপ্লিমেন্ট: কখন ও কিভাবে খেলে বেশি উপকার পেতে পারেন,জানালেন বিশেষজ্ঞরা

স্বাস্থ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ২৯ ১৭:১৩:২৬
ভিটামিন সাপ্লিমেন্ট: কখন ও কিভাবে খেলে বেশি উপকার পেতে পারেন,জানালেন বিশেষজ্ঞরা
ছবিঃ সংগৃহীত

ব্যস্ত জীবনে সঠিক খাদ্যাভ্যাস মেনে চলা অনেকের পক্ষেই সম্ভব হয় না। এর ফলে শরীরে ভিটামিনের ঘাটতি দেখা দেয়। অথচ পর্যাপ্ত কার্বোহাইড্রেট, ফ্যাট ও প্রোটিন নিয়ে সচেতন থাকলেও ভিটামিন নিয়ে অবহেলা থেকেই যায়। শুধু সাপ্লিমেন্ট খেলেই হবে না, সঠিক সময়ে ও নিয়মে খেলে তবেই শরীর উপকৃত হয়। বিশেষজ্ঞরা এখন জানাচ্ছেন, ভিটামিনের ধরন অনুযায়ী কখন তা সেবন করা উচিত।

১. পানিতে দ্রবণীয় ভিটামিন (Vitamin C & B Complex)

ভিটামিন সি ও বি কমপ্লেক্স (বি-৬, বি-১২, রাইবোফ্ল্যাভিন, ফোলেট) পানিতে দ্রবণীয়, তাই এগুলো শরীরে জমা থাকে না এবং প্রতিদিন খাওয়া প্রয়োজন।

সেরা সময়: এ ধরনের ভিটামিন খালি পেটে সবচেয়ে ভালোভাবে শোষিত হয়। তাই সকালে বিশেষ করে সকালের নাশতার আগে খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। তবে কারো খালি পেটে অস্বস্তি হলে হালকা খাবারের পর খাওয়া যেতে পারে।

উপকারিতা: বি কমপ্লেক্স শরীরে শক্তি জোগায়, তাই সকালে খেলে সারাদিন ক্লান্তি দূর হয়।

২. ফ্যাট দ্রবণীয় ভিটামিন (Vitamin A, D, E & K)

ভিটামিন এ, ডি, ই ও কে ফ্যাট দ্রবণীয়। এগুলো শরীরের চর্বি ও লিভারে জমা থাকে, তাই প্রতিদিন খাওয়ার দরকার হয় না।

সেরা সময়: এগুলো ফ্যাটযুক্ত খাবারের সঙ্গে খেলে সবচেয়ে ভালোভাবে শোষিত হয়। অলিভ অয়েল, ডিম, বাদাম বা অ্যাভোকাডোর মতো খাবারের সঙ্গে খেলে এই ভিটামিনগুলো বেশি কার্যকর হয়।

উদাহরণ: ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্ট লাঞ্চ বা ডিনারের সঙ্গে খেলে ভালোভাবে শোষিত হয়।

৩. মাল্টিভিটামিন

মাল্টিভিটামিনে জল ও ফ্যাট দ্রবণীয় ভিটামিনের পাশাপাশি আয়রন, ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেশিয়ামের মতো খনিজ থাকে।

সেরা সময়: ফ্যাট ও কার্বোহাইড্রেটসমৃদ্ধ খাবারের সঙ্গে খাওয়াই ভালো। বিশেষজ্ঞরা প্রতিদিন একই সময়ে ব্রেকফাস্ট বা লাঞ্চের পরে মাল্টিভিটামিন খাওয়ার পরামর্শ দেন।

সতর্কতা: সন্ধ্যায় না খাওয়াই ভালো, কারণ এতে থাকা কিছু বি ভিটামিন ঘুমে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে।

৪. আয়রন ও ম্যাগনেশিয়াম

আয়রন: আয়রন সাপ্লিমেন্ট খালি পেটে খেলে সবচেয়ে ভালো কাজ করে। পেটের সমস্যা হলে হালকা খাবারের সঙ্গে খাওয়া যেতে পারে। তবে দুধ বা ক্যালসিয়ামযুক্ত খাবারের সঙ্গে খাওয়া উচিত নয়, কারণ ক্যালসিয়াম আয়রন শোষণে বাধা দেয়।

ম্যাগনেশিয়াম: ম্যাগনেশিয়াম শরীরকে শান্ত করে, তাই রাতে খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। এতে ঘুমও ভালো হয়।

যেকোনো সাপ্লিমেন্ট শুরু করার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই সবচেয়ে নিরাপদ।

সূত্র : আজকাল


শীতের আগে ঠোঁটের যত্ন: রুক্ষতা দূর করে কোমলতা আনবে ৪ ঘরোয়া উপায়

স্বাস্থ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ২৮ ১৭:০৫:২৩
শীতের আগে ঠোঁটের যত্ন: রুক্ষতা দূর করে কোমলতা আনবে ৪ ঘরোয়া উপায়
ছবিঃ সংগৃহীত

প্রকৃতিতে এখন হেমন্তকাল চলছে। শীত আসার আগে এই সময়টায় ত্বকের সঙ্গে অনেকের ঠোঁটেও দেখা দেয় রুক্ষতা। ঠোঁট ফাটছে বা শুষ্ক হয়ে যাচ্ছে—এমন সমস্যা যাদের হচ্ছে, তারা ঘরোয়া কিছু পদ্ধতি অনুসরণ করে এই সমস্যার সমাধান করতে পারেন। নিয়মিত যত্ন নিলে ঠোঁট হয়ে উঠবে উজ্জ্বল ও কোমল।

ঠোঁটের রুক্ষতা দূর করার ৪ উপায়

১. অলিভ অয়েল ও চিনির স্ক্রাব: ঠোঁটের মরা চামড়া তুলতে স্ক্রাব খুবই কার্যকর। এক চা চামচ অলিভ অয়েল, এক চা চামচ চিনি এবং আধা চা চামচ বেসন মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। এই পেস্ট ঠোঁটে মেখে রাখুন। শুকিয়ে গেলে ভেজা হাতে ম্যাসাজ করে তুলে ফেলুন। এটি সপ্তাহে দু-এক দিন করতে পারেন।

২. নারকেল বা ভিটামিন ই তেল: রাতে ঘুমানোর আগে ঠোঁটে নারকেল তেল বা ভিটামিন ই অয়েল লাগিয়ে ঘুমাতে পারেন। সকালে উঠে ধুয়ে ফেলুন। এতে ঠোঁটে আর্দ্রতা বজায় থাকবে।

৩. বিটরুট ও গোলাপের ভ্যাসলিন: ঠোঁটকে নরম রাখতে বিটরুটের রস এবং গোলাপের পাপড়ি একসঙ্গে জ্বাল দিয়ে ঘন মিশ্রণ তৈরি করুন। ঠান্ডা হলে এটি ভ্যাসলিনের সাথে মিশিয়ে নিয়মিত ব্যবহার করলে ঠোঁট নরম থাকবে এবং তার স্বাভাবিক রঙ ধরে রাখবে।

৪. নিয়মিত ভ্যাসলিন/লিপজেল ব্যবহার: শীতকালে ঠোঁটকে নরম ও কোমল রাখতে নিয়মিত ভ্যাসলিন বা ভালো মানের লিপজেল ব্যবহার করতে পারেন।

দৈনন্দিন যত্নে যা জরুরি

পর্যাপ্ত পানি পান: শরীরকে সতেজ রাখতে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা জরুরি।

ধূমপান ও মদ্যপান পরিহার: এই অভ্যাস ঠোঁটের ক্ষতি করে, তাই এড়িয়ে চলুন।

সূর্যের আলো থেকে সুরক্ষা: বাইরে বেরোনোর সময় সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি থেকে সুরক্ষা দিতে এসপিএফ যুক্ত লিপবাম ব্যবহার করুন।

পাঠকের মতামত:

রাজনীতি, নির্বাসন ও নৈতিকতা: শেখ হাসিনার সাক্ষাৎকার দক্ষিণ এশিয়ার বাস্তবতাকে কোথায় নিচ্ছে

রাজনীতি, নির্বাসন ও নৈতিকতা: শেখ হাসিনার সাক্ষাৎকার দক্ষিণ এশিয়ার বাস্তবতাকে কোথায় নিচ্ছে

বাংলাদেশের রাজনীতিতে আবারও এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়েছে শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে। নির্বাসনে থাকা সাবেক প্রধানমন্ত্রী দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট পত্রিকাকে... বিস্তারিত