মাইগ্রেনের ব্যথা: ১৫ মিনিটে মুক্তি পেতে পারেন যে ঘরোয়া কৌশলে

স্বাস্থ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ২৪ ১৪:৪৩:২৭
মাইগ্রেনের ব্যথা: ১৫ মিনিটে মুক্তি পেতে পারেন যে ঘরোয়া কৌশলে
ছবিঃ সংগৃহীত

কথায় আছে, ‘মাইগ্রেন আছে যার, শত্রুর অভাব নেই তার।’ এই ব্যথা যারা একবার অনুভব করেছেন, তারা জানেন এর যন্ত্রণার কোনো তুলনা হয় না। মাথায় তীব্র ব্যথা শুরু হলে রোদ, শব্দ, আলো—সবকিছু অসহ্য মনে হয়। অনেক সময় অ্যাসিডিটি, মানসিক চাপ বা অতিরিক্ত স্ক্রিন টাইমও মাইগ্রেনের ট্রিগার হয়ে দাঁড়ায়। তবে ভারতের খ্যাতনামা স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. কল্লোল দে একটি সহজ উপায়ে মাত্র ১৫ মিনিটে মাইগ্রেনের যন্ত্রণা কিছুটা উপশম করার কৌশল জানিয়েছেন।

ব্যথা কমানোর কৌশল: কেন গরম পানিতে পা ডুবাবেন?

ডা. কল্লোলের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, মাইগ্রেনের সময় মাথার রক্তনালিতে ব্লাড ফ্লো (রক্তপ্রবাহ) বেড়ে যায়, যা ব্যথার মূল কারণ। তাঁর পরামর্শ হলো, রক্তপ্রবাহকে নিচের দিকে বাড়িয়ে দিয়ে মাথায় সৃষ্ট চাপ কমানো।

পদ্ধতি:

১. স্থান পরিবর্তন: প্রথমেই আলো বন্ধ করুন বা আলো কম এমন অন্ধকার ও নিরিবিলি জায়গায় চলে যান।

২. গরম পানির সেঁক: এক বালতি গরম (সহনীয় তাপমাত্রার) পানিতে এক মুঠো ম্যাগনেশিয়াম সালফেট বা এপসাম সল্ট মিশিয়ে নিন।

৩. পা ডোবান: দুটো পা পুরোপুরি সেই পানিতে (পাতা পর্যন্ত) ডুবিয়ে রাখুন অন্তত ১০-১৫ মিনিট।

ডা. কল্লোল দে জানান, গরম পানিতে পা রাখলে রক্তপ্রবাহ নিচের দিকে বাড়ে। ফলে মাথায় অতিরিক্ত চাপ কিছুটা কমে যায় এবং ব্যথা ধীরে ধীরে উপশম হয়।

সতর্কতা

তবে, মাইগ্রেনের ব্যথা যদি ঘন ঘন হয় বা খুব তীব্র হয়, তাহলে এই পদ্ধতি সাময়িক আরাম দিলেও চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। নিয়মিত চিকিৎসা ও লাইফস্টাইল মেনে চললেই মাইগ্রেন নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।

সূত্র : দ্য ওয়াল


চোখই বলে দেবে হৃদরোগের ঝুঁকি: যে ৫টি লক্ষণ চোখে দেখলে সতর্ক হবেন

স্বাস্থ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ২৩ ২১:৪৪:৩৫
চোখই বলে দেবে হৃদরোগের ঝুঁকি: যে ৫টি লক্ষণ চোখে দেখলে সতর্ক হবেন
ছবিঃ সংগৃহীত

সম্প্রতি প্রকাশিত গবেষণা বলছে, নিয়মিত চোখ পরীক্ষা শুধু দৃষ্টি নয়, হার্টের স্বাস্থ্যও আগেভাগে জানান দিতে পারে। রেটিনায় থাকা ক্ষুদ্র রক্তনালীগুলো কার্ডিওভাসকুলার সমস্যার ইঙ্গিত দিতে পারে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। চোখের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চোখের পেছনের অংশ, অর্থাৎ রেটিনা পর্যবেক্ষণ করে হার্টের রোগের প্রথম সংকেত ধরা সম্ভব, এমনকি বুক ব্যথা, শ্বাসকষ্ট বা উচ্চ রক্তচাপের মতো লক্ষণ প্রকাশের আগেই।

রেটিনায় ধরা পড়ে যে সংকেত

কিডনি যেমন শরীরের নিঃশব্দ কর্মী, হার্টের অসুখও প্রাথমিকভাবে নীরবে শুরু হয়। শরীরের অন্যান্য অংশের চেয়ে চোখের ক্ষুদ্র রক্তনালীর ক্ষতি আগে ধরা পড়ে।

রোগের ইঙ্গিত: হাইপারটেনসিভ রেটিনোপ্যাথি, রেটিনাল ভেইন অক্লুশন বা হোলেনহরস্ট প্ল্যাকের উপস্থিতি উচ্চ রক্তচাপ, অ্যাথেরোসক্লেরোসিস বা স্ট্রোকের ঝুঁকি নির্দেশ করতে পারে।

ক্ষতি: চোখে ছোট ছোট ব্লকেজ বা রেটিনাল ক্ষতি, যেমন মাইক্রোঅ্যানিউরিজম, হেমোরেজ বা সংকুচিত নালী, দীর্ঘমেয়াদে হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।

প্রযুক্তি: উন্নত ইমেজিং প্রযুক্তি যেমন অপটিক্যাল কোহেরেন্স টোমোগ্রাফি (OCT) এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) চোখে সূক্ষ্ম পরিবর্তন শনাক্তে সহায়তা করছে।

রেটিনা বিশেষজ্ঞ ডা. জোসেফ নেজগোডা বলেন, চোখের OCT স্ক্যান শুধু দৃষ্টি নয়, হার্ট, মস্তিষ্ক ও স্নায়ুতন্ত্রের সমস্যার প্রাথমিক সংকেতও দিতে পারে।

কাদের জন্য নিয়মিত পরীক্ষা জরুরি?

প্রাথমিক পর্যায়ে হার্টের সমস্যা ধরা পড়লে জীবন বাঁচানো সম্ভব। নিয়মিত চোখ পরীক্ষা সবার জন্য গুরুত্বপূর্ণ, তবে বিশেষ কিছু ব্যক্তির জন্য আরও প্রয়োজনীয়:

যারা উচ্চ রক্তচাপ বা কোলেস্টেরল সমস্যায় ভুগছেন।

যাদের টাইপ ২ ডায়াবেটিস আছে।

যারা ধূমপায়ী বা অতীতে ধূমপান করেছেন।

যাদের পরিবারের কারো হার্ট সমস্যা আছে অথবা ৪০ বছরের বেশি বয়সী।

চিকিৎসকরা বলেন, চোখ পরীক্ষা করলে হার্টের সমস্যার প্রাথমিক সতর্কতা ধরা সম্ভব। চোখের সুস্থতা মানে হার্টের সুস্থতা। চোখ ও হার্টের স্বাস্থ্যের জন্য সুষম খাদ্য, নিয়মিত ব্যায়াম এবং মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।


পুরুষের কি স্তন ক্যানসার হতে পারে? জেনে নিন চিকিৎসাবিজ্ঞান কী বলছে

স্বাস্থ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ২৩ ১০:০৬:৫০
পুরুষের কি স্তন ক্যানসার হতে পারে? জেনে নিন চিকিৎসাবিজ্ঞান কী বলছে
ছবিঃ সংগৃহীত

স্তন ক্যানসার শুনলেই সবার আগে মনে আসে নারীর নাম। কিন্তু চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় শুধুই নারীদের নয়, পুরুষদেরও হতে পারে স্তন ক্যানসার। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)-এর তথ্যমতে, প্রতি একশ স্তন ক্যানসার রোগীর মধ্যে অন্তত একজন পুরুষ। বাংলাদেশেও এমন একাধিক কেস পাওয়া গেছে, তবে দেরিতে শনাক্ত হওয়ার কারণে চিকিৎসা জটিল হয়ে পড়ে। তাই বিশেষজ্ঞদের দাবি, পুরুষদেরও এই বিষয়ে সচেতন হওয়া জরুরি।

পুরুষের স্তন ক্যানসারের কারণ ও লক্ষণ

পুরুষদের শরীরেও অল্প পরিমাণে স্তন টিস্যু থাকে। হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হলে বা জেনেটিক কারণে সেই টিস্যুতেই ক্যানসার কোষ তৈরি হতে পারে।

ঝুঁকির কারণ: অতিরিক্ত মদ্যপান, স্থূলতা (ওজন বৃদ্ধি), লিভারের সমস্যা, রেডিয়েশন এক্সপোজার এবং BRCA2 জিনে মিউটেশন থাকলে পুরুষের স্তন ক্যানসারের ঝুঁকি অনেকটা বেড়ে যায়।

সতর্ক হওয়ার লক্ষণ: পুরুষের স্তন ক্যানসার হলে প্রাথমিক পর্যায়ে সাধারণত ব্যথা দেখা দেয় না। তবে নিচের পরিবর্তনগুলো দেখা দিলে সতর্ক হওয়া উচিত: ১. স্তনের নিচে বা আশপাশে ছোট শক্ত গাঁট অনুভব করা। ২. নিপল বা তার চারপাশে লালচে দাগ, চুলকানি বা ভেতরে ঢুকে যাওয়া। ৩. নিপল থেকে রক্ত বা অস্বাভাবিক তরল নিঃসরণ। ৪. স্তনের ত্বকে ভাঁজ বা দাগ পড়া।

চিকিৎসা ও সচেতনতা

চিকিৎসকরা বলছেন, পুরুষের স্তন ক্যানসারের চিকিৎসা নারী রোগীদের মতোই। অর্থাৎ, অপারেশন, কেমোথেরাপি, রেডিয়েশন এবং হরমোন থেরাপির মাধ্যমে করা হয়। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, প্রাথমিক অবস্থায় ধরা পড়লে চিকিৎসায় সফলতার হার অনেক বেশি।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পুরুষের স্তন ক্যানসার এখনও অনেকের কাছেই অজানা বিষয়। লজ্জা, সংকোচ বা অবহেলার কারণে অনেকে দেরিতে চিকিৎসা নেন, যা পরিস্থিতি জটিল করে তোলে। নিজের শরীর সম্পর্কে সচেতন থাকা এবং নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাই হতে পারে সবচেয়ে বড় সুরক্ষা।

সূত্র: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO), আমেরিকান ক্যানসার সোসাইটি, ন্যাশনাল ব্রেস্ট ক্যানসার ফাউন্ডেশন


ব্রেস্ট ক্যান্সার: কারণ, লক্ষণ, চিকিৎসা ও প্রতিরোধ—সচেতনতাই বাঁচাতে পারে জীবন

স্বাস্থ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ২৩ ০০:০৩:০৩
ব্রেস্ট ক্যান্সার: কারণ, লক্ষণ, চিকিৎসা ও প্রতিরোধ—সচেতনতাই বাঁচাতে পারে জীবন

ব্রেস্ট ক্যান্সার/ স্তন ক্যান্সার মূলত স্তনের কোষের অনিয়ন্ত্রিত বিভাজন ও বিস্তারকে বোঝায়, যা শুরুতে ক্ষুদ্র পিণ্ড বা টিউমার হিসেবে জন্ম নেয় এবং অনুপযুক্ত সময়ে ধরা না পড়লে লিম্ফনোড হয়ে শরীরের অন্যান্য অঙ্গে ছড়িয়ে যেতে পারে। বিশ্বজুড়ে নারীদের মধ্যে এটি সবচেয়ে বেশি ধরা পড়া ক্যান্সারের একটি; তবে অল্প সংখ্যায় হলেও পুরুষেরাও আক্রান্ত হন। সুখবর হলোপ্রাথমিক পর্যায়ে সনাক্ত ও সঠিক চিকিৎসা শুরু করতে পারলে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আরোগ্য সম্ভব। বাংলাদেশের সমাজ-সংস্কৃতি, খাদ্যাভ্যাস ও চিকিৎসাঅ্যাক্সেসের বাস্তবতায় সচেতনতা, নিয়মিত নিজে পরীক্ষা এবং বয়স/ঝুঁকিভেদে উপযুক্ত স্ক্রিনিংই সবচেয়ে বড় অস্ত্র।

ব্রেস্ট ক্যান্সার কেমন করে শুরু হয়?

স্তনের দুধনালি (ডাক্ট) ও গ্রন্থিল (লোবুল) টিস্যুতে DNA-জনিত ত্রুটি বা জিনগত/পরিবেশগত প্রভাবে কোষের নিয়ন্ত্রণ হারালে ‘ডাক্টাল’ বা ‘লোবুলার’ কার্সিনোমা তৈরি হয়। এই কোষগুলো স্থানীয় টিস্যু ভেঙে ফেলতে পারে (ইনভেসিভ) এবং রক্ত/লসিকা পথে হাড়, লিভার, ফুসফুস বা মস্তিষ্কে ছড়িয়ে পড়তে পারে (মেটাস্টেসিস)। কিছু সাবটাইপ হরমোন-রিসেপ্টর পজিটিভ (ER/PR+), কিছু HER2-পজিটিভ, আবার কিছু ‘ট্রিপল-নেগেটিভ’; প্রতিটি ধরনেই চিকিৎসার কৌশল আলাদা হয়এ কারণেই সঠিক প্যাথোলজি রিপোর্ট অত্যন্ত জরুরি।

ঝুঁকির কারণযেগুলো বদলানো যায়, যেগুলো যায় না

বয়স বাড়া, নারী লিঙ্গ, পরিবারের কাছের আত্মীয়ের (মা/বোন/কন্যা) অল্প বয়সে স্তন ক্যান্সারের ইতিহাস, BRCA1/BRCA2-এর মতো জিন মিউটেশন, ঋতুস্রাব দ্রুত শুরু হওয়া বা দেরিতে মেনোপজ হওয়াএসব ঝুঁকি নিয়ন্ত্রণ করা যায় না।

কিন্তু জীবনযাপনের অনেক উপাদান বদলানো যায়: অতিরিক্ত ওজন, শারীরিক নিষ্ক্রিয়তা, প্রসেসড/অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত খাবার, অ্যালকোহল গ্রহণ, দীর্ঘমেয়াদি হরমোনাল থেরাপি বা জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি (ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া)। দেরিতে সন্তান নেওয়া, সন্তানকে বুকের দুধ না খাওয়ানো ও উচ্চমাত্রার মানসিক চাপও ঝুঁকি বাড়ায়। যাদের পারিবারিক ইতিহাস প্রবল বা জিনগত ঝুঁকি আছে, তাদের ক্ষেত্রে স্ক্রিনিং শুরু হয় সাধারণ নির্দেশনার আগেই এবং ডাক্তার-নির্ধারিত পরিকল্পনা মেনে চলা উচিত।

কোন লক্ষণগুলোকে ‘লাল সিগন্যাল’ ধরবেন?

স্তনে বা বগলের নিচে নতুন পিণ্ড/ঘনভাব, স্তনের আকার/আকৃতি বদলে যাওয়া, ত্বকে ডিম্পলিং বা কমলার খোসার মতো খসখসে চেহারা, লালচে/উষ্ণতা/ফুলে থাকা, বোঁটা ভেতরে ঢুকে যাওয়া বা হঠাৎ বদলানো, বোঁটা দিয়ে রক্তমিশ্রিত বা অস্বাভাবিক স্রাব, বোঁটা-চারপাশের ত্বকে চুলকানি/খসখসে দাগএগুলোর যেকোনোটি দেখা দিলে দেরি না করে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন। মনে রাখবেন, ব্যথা থাকা না-থাকাদুটিই হতে পারে; তাই ব্যথা না থাকলেই তা ‘নিরাপদ’ ভাবা ভুল।

স্ক্রিনিং ও প্রাথমিক শনাক্তকরণবাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বাস্তব কৌশল

বয়স ২০-এর পর থেকেই মাসে একবার নিজের স্তন নিজে পরীক্ষা (Breast Self-Exam) অভ্যাস করুনঋতুস্রাবের শেষ হওয়ার ৩৫ দিন পর আয়নায় দাঁড়িয়ে দেখা, দাঁড়িয়ে/শুয়ে গোলাকারে আঙুল চালিয়ে পিণ্ড/কঠিনভাব খোঁজা, বগল পর্যন্ত পরীক্ষাএসব কয়েক মিনিটেই হয়ে যায়। ৩০৩৫-এর পর ক্লিনিকাল ব্রেস্ট এক্সাম (ডাক্তারের পরীক্ষায়) নিয়মিত করানো ভালো। ম্যামোগ্রামবিশেষ ধরনের এক্স-রেসাধারণভাবে ৪০ থেকে বার্ষিক/দ্বিবার্ষিক শুরু হয়; যাদের ঝুঁকি বেশি, তাদের ক্ষেত্রে আগে শুরু হতে পারে এবং আল্ট্রাসাউন্ড/এমআরআই যুক্ত হতে পারে। পরীক্ষার হার/সময়সূচি বয়স, পারিবারিক ইতিহাস ও ডাক্তারি পরামর্শে নির্ধারিত হওয়া উচিত—‘এক মাপে সবার জন্য’ নয়। সন্দেহজনক চিত্র পাওয়া গেলে সূচিবায়োপসি হলো চূড়ান্ত নির্ণয়ের স্বর্ণমান।

চিকিৎসাব্যক্তি, টিউমার ও পর্যায়ভেদে কাস্টমাইজড

চিকিৎসার মূল স্তম্ভ চারটি: সার্জারি, কেমোথেরাপি, রেডিয়েশন, হরমোন/টার্গেটেড/ইমিউনোথেরাপি। ছোট ও লোকালাইজড টিউমারে লাম্পেক্টমি (টিউমার-সহ আংশিক অপসারণ) + রেডিয়েশন অনেক সময় স্তন সংরক্ষণ করে; বড়/মাল্টিফোকাল রোগে মাস্টেক্টমি দরকার হতে পারে এবং প্রয়োজনমতো রিকনস্ট্রাকশন করা যায়। হরমোন-রিসেপ্টর পজিটিভ রোগে ট্যামক্সিফেন/অ্যারোমাটেজ ইনহিবিটর বহু বছর ধরে পুনরাবৃত্তি কমায়। HER2-পজিটিভ রোগে ট্রাস্টুজুমাব-ভিত্তিক টার্গেটেড থেরাপি প্রাণরক্ষা করে। ট্রিপল-নেগেটিভ সাবটাইপে কেমোথেরাপি/ইমিউনোথেরাপির কম্বিনেশন এগিয়ে রেখেছে। সবচেয়ে জরুরি হলোস্টেজিং, বায়োমার্কার ও রোগীর পছন্দ/সহ্যক্ষমতা বিবেচনায় মাল্টিডিসিপ্লিনারি টিমের সিদ্ধান্ত।

প্রতিরোধঝুঁকি কমানোর বাস্তব ৬ অভ্যাস

ওজন নিয়ন্ত্রণ ও ন্যূনতম সপ্তাহে ১৫০ মিনিট মাঝারি ব্যায়াম; সবজিফলপূর্ণশস্যস্বাস্থ্যকর চর্বিভিত্তিক খাদ্যাভ্যাস; অ্যালকোহল পরিহার; ধূমপান না করা; সন্তানকে বুকের দুধ খাওয়ানো (সম্ভব হলে); দীর্ঘমেয়াদি হরমোনাল থেরাপি হলে ডাক্তারের নিবিড় তত্ত্বাবধানএগুলো মিলেই ঝুঁকি কমায়। উচ্চঝুঁকির পরিবারে জেনেটিক কাউন্সেলিং/টেস্টিং, প্রফাইল্যাক্টিক কৌশল বা ঘন স্ক্রিনিং নিয়েও বিশেষজ্ঞের সাথে খোলামেলা আলোচনা জরুরি।

বাংলাদেশি বাস্তবতায় কী বাধা, কী সমাধান?

সংকোচ, ‘স্তন’ শব্দ উচ্চারণে সামাজিক অস্বস্তি, চিকিৎসাকেন্দ্রের দূরত্ব ও ব্যয়এসব কারণে রোগী দেরিতে আসেন। কম খরচে ম্যামোগ্রাম ক্যাম্প, নার্সকাউন্সেলরের পরিচালনায় BSE শেখানো, প্রাইমারি হেলথকেয়ারে ‘ব্রেস্ট ক্লিনিক’ কর্নার, কর্মজীবী নারীদের জন্য অফিস-ঘনিষ্ঠ স্ক্রিনিংএগুলো প্রাথমিক শনাক্তকরণ বাড়াতে পারে। গণমাধ্যমে তথ্যভিত্তিক কনটেন্ট, পুরুষ পরিবারের সদস্যদের সম্পৃক্ততা, স্তনস্বাস্থ্যের বিষয়ে লজ্জা নয়দায়িত্বএই বার্তা ছড়িয়ে দিতে হবে।

কখনই দেরি করবেন নাএই ৫ পরিস্থিতিতে আজই ডাক্তার দেখান

  • নতুন/বড় হতে থাকা পিণ্ড বা বগলে গাঁট;
  • বোঁটা দিয়ে রক্ত/অস্বাভাবিক স্রাব;
  • ত্বকে ডিম্পলিং বা কমলার খোসার মতো পরিবর্তন;
  • হঠাৎ বোঁটা ভেতরে ঢুকে যাওয়া;
  • মাসের পর মাস একই স্থানে একই পরিবর্তন থাকা।

প্রাথমিক পর্যায়ে একেকটি সপ্তাহ চিকিৎসার ফলাফল পাল্টে দিতে পারে।

শেষকথাছোট বদল, বড় পার্থক্য

ব্রেস্ট ক্যান্সার ‘হঠাৎ’ হয় না; শরীর আগেভাগেই সংকেত পাঠায়। আপনার নিয়মিত স্বপর্যবেক্ষণ, বয়স ও ঝুঁকিভিত্তিক স্ক্রিনিং, সুষম জীবনযাপনএই তিন স্তম্ভই খেলাটা ঘুরিয়ে দিতে পারে। ভয় নয়, তথ্যপরিকল্পনাসময়এই ত্রয়ীই আপনার সবচেয়ে বড় আশ্বাস।


কাশির সিরাপ কি শিশুদের জন্য নিরাপদ? জেনে নিন বিশেষজ্ঞদের সতর্কতা

স্বাস্থ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ২২ ১৯:১৭:০২
কাশির সিরাপ কি শিশুদের জন্য নিরাপদ? জেনে নিন বিশেষজ্ঞদের সতর্কতা
ছবিঃ সংগৃহীত

শীতের শুরুতে শিশুর সর্দি-কাশি খুবই সাধারণ একটি সমস্যা। তবে সম্প্রতি ভারতে কাশির সিরাপ সেবনের পর একাধিক শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় অভিভাবকদের মধ্যে উদ্বেগ বেড়েছে—কাশির সিরাপ আদৌ কি শিশুদের জন্য নিরাপদ? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাজারে বিক্রি হওয়া অনেক কফ সিরাপেই থাকে বিভিন্ন রাসায়নিকের মিশ্রণ, যা শিশুদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।

বিশেষ করে ভারতের ঘটনার পর নতুন করে আলোচনায় এসেছে সিরাপে ব্যবহৃত বিষাক্ত পদার্থ ডাইইথিলিন গ্লাইকল, যা শিশুদের কিডনির মারাত্মক ক্ষতি করে। আফ্রিকা, উজবেকিস্তানসহ আরও কয়েকটি দেশেও এরকম মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।

সিরাপের উপাদান ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

চিকিৎসকদের ভাষায়, বাজারে পাওয়া এসব কফ সিরাপ সাধারণত অ্যান্টিহিস্টামিন, ডিকনজেস্ট্যান্ট এবং এক্সপেক্টোরেন্ট উপাদানের মিশ্রণ। এগুলোর লক্ষ্য হলো শ্লেষ্মা কমানো ও কাশির দমক নিয়ন্ত্রণ করা। তবে গবেষণায় দেখা গেছে, এই সিরাপগুলোর কার্যকারিতা খুব বেশি নয়, বরং পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া তুলনামূলক বেশি।

ঝুঁকি: কাশির সিরাপ সেবনে শিশুর বমি, অস্থিরতা, অতিরিক্ত ঘুম, দুর্বলভাব, মাথাব্যথা, খিঁচুনি, এমনকি শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা দেখা দিতে পারে। অতিরিক্ত মাত্রায় সেবনে মারাত্মক ক্ষতি বা মৃত্যুও হতে পারে।

চিকিৎসক ও AAP-এর সতর্কতা

অভিভাবকদের অনেকেই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই কফ সিরাপ কিনে দেন, আবার কেউ কেউ প্রাপ্তবয়স্কদের সিরাপের মাত্রা কমিয়ে দেন। চিকিৎসকেরা বলছেন, এটি বিপজ্জনক অভ্যাস।

আমেরিকান একাডেমি অব পেডিয়াট্রিকস (AAP)-এর নির্দেশনা:

৪ বছরের নিচে: চার বছরের নিচের শিশুদের কফ সিরাপ দেওয়া সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

৪ থেকে ৬ বছর: চার থেকে ছয় বছরের শিশুদের ক্ষেত্রে কেবল চিকিৎসকের পরামর্শেই দেওয়া যেতে পারে।

নিরাপদ বিকল্প

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাধারণ সর্দি-কাশির ক্ষেত্রে ওষুধ ছাড়াই শিশুকে আরাম দেওয়া সম্ভব। এজন্য—

পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি ও তরল খাবার খাওয়ানো,

নাকে স্যালাইন ড্রপ ব্যবহার,

কুসুম গরম পানিতে ভেজানো পরিষ্কার কাপড় দিয়ে নাক পরিষ্কার করা—এইসব উপায় নিরাপদ হতে পারে।

তবে দীর্ঘদিন কাশি চলতে থাকলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে, কারণ এটি নিউমোনিয়া বা শ্বাসতন্ত্রের অন্য সংক্রমণের লক্ষণ হতে পারে।


৮ ঘণ্টা ঘুমানোর পরও ক্লান্তি? ঘুমের গুণমান নষ্ট করছে ৬টি অভ্যাস

স্বাস্থ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ২২ ১৬:১৫:৪২
৮ ঘণ্টা ঘুমানোর পরও ক্লান্তি? ঘুমের গুণমান নষ্ট করছে ৬টি অভ্যাস
ছবিঃ সংগৃহীত

দিনভর কাজের চাপ ও মানসিক চাপের পর রাতে আট ঘণ্টা ঘুম হলেই শরীর-মন সতেজ হয়ে যাবে—এমনটা অনেকেই মনে করেন। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, ঠিকমতো ঘুমানোর পরও অনেক সময় সকালে উঠেই শরীর ভারী লাগে এবং মন অবসন্ন থাকে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঘুমের পরিমাণ নয়, আসল বিষয় হলো ঘুমের গুণমান। অনেকেই সময়মতো ঘুমালেও ঘুমের মান ভালো না হওয়ায় শরীর পুরোপুরি বিশ্রাম পায় না। এর পেছনে ৬টি সাধারণ কারণ কাজ করে।

ঘুমের গুণমান নষ্ট হওয়ার ৬ কারণ

১. ঘুমের ব্যাঘাত: রাতে বারবার ঘুম ভেঙে গেলে ঘুমের গভীর স্তরে পৌঁছানো যায় না, ফলে ঘুম পরিপূর্ণ হয় না।

২. স্লিপ অ্যাপনিয়া: এটি এমন একটি অবস্থা, যেখানে ঘুমের সময় শ্বাস কিছু সময়ের জন্য বন্ধ হয়ে যায়। এতে ঘুম বারবার ভেঙে যায় এবং সকালে উঠে ক্লান্তি, মাথা ব্যথা বা ঝিমুনি দেখা দেয়।

৩. বিকেল বা রাতে ক্যাফেইন: চা, কফি বা এনার্জি ড্রিংকে থাকা ক্যাফেইন ঘুমের গুণমান কমিয়ে দেয় এবং রাতে ঘুম আসতে দেরি হয়।

৪. অতিরিক্ত স্ক্রিন টাইম: মোবাইল, ট্যাব বা টিভির পর্দা থেকে বের হওয়া নীল আলো মেলাটোনিন হরমোনের নিঃসরণ কমিয়ে দেয়, যা ঘুম আসার প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করে।

৫. ঘুমের সময়সূচিতে অনিয়ম: প্রতিদিন ভিন্ন ভিন্ন সময়ে ঘুমাতে যাওয়া বা ঘুম থেকে ওঠা শরীরের বডি ক্লককে এলোমেলো করে দেয়, ফলে ঘুমের গভীরতা কমে যায়।

৬. ভারী খাবার: রাতে তেল-মসলা বা ভারী খাবার খেলে হজমে সমস্যা হয়, যা ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায়।

ভালো ঘুমের জন্য করণীয়

১. নিয়মিত রুটিন: প্রতিদিন একই সময়ে ঘুমাতে যান ও উঠুন।

২. স্ক্রিন টাইম কমান: ঘুমানোর অন্তত ১ ঘণ্টা আগে মোবাইল, ট্যাব বা টিভি থেকে দূরে থাকুন।

৩. আরামদায়ক পরিবেশ: ঘর যেন ঠাণ্ডা, অন্ধকার ও নিরিবিলি হয়।

৪. হালকা খাবার: রাতে হালকা খাবার খান।

৫. মন শান্ত রাখুন: ঘুমানোর আগে বই পড়া, হালকা ব্যায়াম বা মেডিটেশন করতে পারেন।

বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেছেন, সব নিয়ম মেনে চলার পরও যদি প্রতিদিন সকালে ক্লান্ত অনুভব করেন, ঘুমের মধ্যে নাক ডাকা বা শ্বাস বন্ধ হওয়ার মতো সমস্যা দেখা দেয়, তাহলে দেরি না করে চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।

সূত্র : আজকাল


শুষ্ক কাশির সমাধান: এই ৪টি ঘরোয়া উপাদানই যথেষ্ট

স্বাস্থ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ২২ ১৬:০৮:১৭
শুষ্ক কাশির সমাধান: এই ৪টি ঘরোয়া উপাদানই যথেষ্ট
ছবিঃ সংগৃহীত

শুষ্ক কাশি হলে গলা জ্বালা করে কিন্তু শ্লেষ্মা বা কফ তৈরি হয় না। রাতভর এই অস্বস্তিকর কাশি ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায় এবং গলায় চাপ সৃষ্টি করে। সাময়িক উপশমের জন্য কাশির ওষুধ থাকলেও, বিশেষজ্ঞরা প্রাকৃতিক এবং পরীক্ষিত ঘরোয়া প্রতিকার বেছে নেওয়ার পরামর্শ দেন। মধু, হলুদ, আদা এবং পুদিনা পাতার মতো সহজ উপাদান প্রদাহ কমাতে, শ্বাসনালীকে আর্দ্র করতে এবং দ্রুত সুস্থ হতে সাহায্য করে।

শুষ্ক কাশি দূর করবে যে ৪ ঘরোয়া উপাদান

১. মধু: শুষ্ক কাশি প্রশমিত করার জন্য মধু সবচেয়ে কার্যকরী প্রাকৃতিক প্রতিকার। আর্কাইভস অফ পেডিয়াট্রিক্স অ্যান্ড অ্যাডোলেসেন্ট মেডিসিনে প্রকাশিত গবেষণায় দেখা গেছে, শিশুদের রাতের কাশি কমাতে এটি কিছু ওষুধের চেয়েও বেশি কার্যকর।

উপকারিতা: এর অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য গলায় আবরণ তৈরি করে, জ্বালা কমায় এবং কাশি দমনে সাহায্য করে।

ব্যবহার: দিনে কয়েকবার এক চা চামচ মধু খেতে পারেন অথবা হালকা গরম পানিতে মিশিয়ে খেতে পারেন। (তবে এক বছরের কম বয়সী শিশুদের মধু দেওয়া উচিত নয়)।

২. হলুদ: হলুদে কারকিউমিন থাকে, যা প্রদাহ-বিরোধী, অ্যান্টিভাইরাল এবং অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল গুণসম্পন্ন একটি শক্তিশালী যৌগ। ব্রঙ্কাইটিস এবং হাঁপানির মতো শ্বাসযন্ত্রের সমস্যার চিকিৎসায় এটি ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়।

ব্যবহার: কারকিউমিনের শোষণ সর্বাধিক করার জন্য হলুদ এক চিমটি গোল মরিচের সাথে খাওয়া উচিত। গরম দুধ, চা বা কমলার রসে এক চা চামচ হলুদ এবং অল্প গোল মরিচ যোগ করুন। এটি গলার জ্বালা এবং শুষ্ক কাশির সাথে সম্পর্কিত প্রদাহ কমাতে সাহায্য করবে।

৩. আদা: আদা তার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিকারী, জীবাণুনাশক এবং প্রদাহ-বিরোধী বৈশিষ্ট্যের জন্য পরিচিত। এটি গলার জ্বালা প্রশমিত করতে সাহায্য করে এবং কাশির আক্রমণ থেকে মুক্তি দেয়।

ব্যবহার: আদা চা বিশেষভাবে কার্যকরী। দ্রুত উপশমের জন্য কাঁচা আদা চিবিয়ে খাওয়া বা গরম স্যুপে খাওয়া ভালো। মধু যোগ করলে এর স্বাদ এবং নিরাময় উভয়ই বৃদ্ধি পায়।

৪. পুদিনা পাতা: পুদিনা মেন্থল সমৃদ্ধ, যা প্রাকৃতিক ডিকনজেস্ট্যান্ট এবং কাশি দমনকারী হিসেবে কাজ করে। এটি গলার স্নায়ু প্রান্তকে অসাড় করতে সাহায্য করে, কাশির তাড়না এবং কনজেশন কমায়।

ব্যবহার: পুদিনা চা এই সুবিধাগুলো উপভোগ করার একটি আরামদায়ক উপায়, বিশেষ করে ঘুমানোর আগে। পুদিনা তেল মিশিয়ে তার বাষ্প নিঃশ্বাসের সঙ্গে গ্রহণ করলেও উপশম পাওয়া যায়।


পেটের মেদ কমাবে ৫ পানীয়: সকালে পান করলেই মিলবে চমকপ্রদ ফল

স্বাস্থ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ২২ ১৫:৫৯:৩২
পেটের মেদ কমাবে ৫ পানীয়: সকালে পান করলেই মিলবে চমকপ্রদ ফল
ছবিঃ সংগৃহীত

বাড়তি পেটের চর্বি কমানো কঠিন মনে হলেও, সকালের ছোট ছোট অভ্যাসেই মিলতে পারে চমকপ্রদ পরিবর্তন। নিয়মিত ব্যায়াম ও সুষম খাদ্যের পাশাপাশি কয়েকটি সহজ, ঘরোয়া পানীয় অন্তর্ভুক্ত করলেই পেটের মেদ কমানো সম্ভব। বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত এই ৫টি পানীয় বিপাকক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে এবং শরীরের অতিরিক্ত ক্যালরি দ্রুত পোড়াতে সাহায্য করে।

পেটের মেদ কমানোর ৫টি ডিটক্স পানীয়

১. লেবু-মধুর গরম পানি: ওজন কমানোর জনপ্রিয় এই পানীয় শরীর থেকে টক্সিন দূর করে, বিপাকক্রিয়া সক্রিয় করে এবং চর্বি পোড়াতে সাহায্য করে। সকালে ঘুম থেকে উঠে এক কাপ গরম পানিতে আধা চা চামচ মধু ও এক চা চামচ লেবুর রস মিশিয়ে পান করুন।

২. জিরা পানি: জিরা ওজন নিয়ন্ত্রণের এক জাদুকরী উপাদান। এতে থাকা থাইমোকুইনন শরীরে চর্বি পোড়াতে সাহায্য করে। নিয়মিত পান করলে এটি হজম শক্তি বাড়ায়, বিপাকক্রিয়া ত্বরান্বিত করে এবং পেটের মেদ কমাতে সহায়ক হয়।

৩. মাখন দুধ বা ছাছ (Buttermilk): গরম দিনে শরীর ঠান্ডা রাখতে যেমন কার্যকর, তেমনি পেটের মেদ কমাতেও ছাছ দারুণ। এতে থাকা প্রোবায়োটিক উপাদান হজমে সাহায্য করে, ভিটামিন বি১২ পুষ্টি শোষণ বাড়ায় এবং শক্তি বৃদ্ধি করে।

৪. দারুচিনি চা: সুগন্ধি দারুচিনি চর্বি পোড়াতে কার্যকর। এক কাপ ফুটন্ত পানিতে একটি দারুচিনির টুকরো দিয়ে কিছুক্ষণ রাখলেই তৈরি হবে দারুচিনি চা। সন্ধ্যায় এক কাপ দারুচিনি চা পান করলে মেটাবলিজম বাড়ে এবং শরীর প্রাকৃতিকভাবে ডিটক্স হয়।

৫. গ্রিন টি: গ্রিন টি চর্বি পোড়ানোর জন্য বিশ্বজোড়া পরিচিত। এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ক্যাটেচিন বিপাকক্রিয়া ত্বরান্বিত করে এবং অতিরিক্ত ক্যালরি দ্রুত পোড়াতে সাহায্য করে। খাবারের পর এক কাপ গ্রিন টি পান করলে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে।

সকালের শুরু যদি এই পাঁচটি স্বাস্থ্যকর পানীয়ের যেকোনো একটি দিয়ে হয়, তাহলে সারাদিন শরীর থাকে সতেজ, হজম শক্তি বাড়ে এবং ধীরে ধীরে পেটের মেদ কমতে শুরু করে।


টানা ১০ দিন চিনি না খেলে শরীরে কী হয়?

স্বাস্থ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ২১ ১৮:৪১:৪১
টানা ১০ দিন চিনি না খেলে শরীরে কী হয়?
ছবিঃ সংগৃহীত

ভারতের শহুরে পরিবারের প্রায় অর্ধেকের বেশি মানুষ মাসে অন্তত তিনবার কেক, বিস্কিট, চকলেট ও আইসক্রিম খান, আর প্রতিদিন এসব খাবার খান প্রায় ১৮ শতাংশ মানুষ। আমাদের বাংলাদেশের শহরগুলোতেও হয়তো চিত্রটা কাছাকাছি। গবেষণা বলছে, অতিরিক্ত চিনি খাওয়া শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। কেন চিনি এড়িয়ে চলা উচিত এবং টানা ১০ দিন চিনি না খেলে শরীরে কী ধরনের পরিবর্তন আসে।

চিনির প্রকারভেদ ও ক্ষতিকর প্রভাব: চিনি মূলত দুই প্রকার:

অ্যাডেড সুগার (Added Sugar): এটি খাবার বা পানীয়তে আলাদাভাবে যোগ করা চিনি, যেমন সাদা চিনি, মধু, যা বিস্কিট, সফট ড্রিঙ্কস বা আইসক্রিমের মতো খাবারে থাকে। অতিরিক্ত অ্যাডেড সুগার ডায়াবেটিস, স্থূলতা, ফ্যাটি লিভার, হৃদরোগ এবং দাঁতের ক্ষয়ঝুঁকি বাড়ায়।

প্রাকৃতিক চিনি: যা ফল, দুধ ও শাকসবজিতে থাকে। এই চিনি ক্ষতিকারক নয়, বরং শরীরের জন্য প্রয়োজনীয়।

শরীরের জন্য গ্লুকোজের দরকার, যা মস্তিষ্ক ও শরীরকে শক্তি জোগায়। তবে আলাদা করে চিনি খাওয়ার প্রয়োজন নেই, কারণ শরীর নিজেই কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন ও ফ্যাট ভেঙে গ্লুকোজ তৈরি করে। ফলের চিনি ক্ষতিকারক নয়, কারণ এগুলো ফাইবার, ভিটামিন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর থাকে এবং শরীর এগুলো ধীরে ধীরে হজম করে, ফলে নিয়মিত ও স্বাস্থ্যকরভাবে শক্তি জোগায়।

চিনি বাদ দিলে শরীরে কী হয়? চিনি কমালেই দাঁতের স্বাস্থ্য ভালো হয় এবং ওজনও কমে। যারা বেশি চিনি খেয়ে অভ্যস্ত, তাদের প্রথমে মাথাব্যথা, ক্লান্তি বা মেজাজ খারাপ হতে পারে।

২০১৫ সালে যুক্তরাজ্যে স্থূল শিশুদের উপর এক গবেষণায় দেখা গেছে, টানা ১০ দিন অ্যাডেড সুগার বা চিনি একেবারে না খেলে কোলেস্টেরল ও রক্তচাপের পরিবর্তন দেখা যায়, যদিও ওজনে তেমন পরিবর্তন দেখা যায়নি।

চিকিৎসকদের মতে:

অ্যাডেড সুগার বাদ দিলে ৫-৬ দিনের মধ্যেই হজম প্রক্রিয়ার উন্নতি হয়।

৭-৮ দিনে মেজাজ ভালো হয়।

৯-১০ দিনে ত্বকের উজ্জ্বলতা আসে।

ডায়াবেটিস রোগীরা ৩-৫ দিনের মধ্যেই রক্তে শর্করার ইতিবাচক পরিবর্তন দেখতে পান।

তবে ওজনের পরিবর্তন দেখতে চাইলে অন্তত এক মাস অ্যাডেড সুগার বাদ দিতে হবে এবং এর পাশাপাশি স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে। তবে শুধু এই ভিডিও দেখেই নয়, একজন পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিয়ে চলা উচিত।

প্রতিদিন কতটুকু চিনি নিরাপদ? বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, প্রতিদিনের ক্যালরির ৫ থেকে ১০ শতাংশের বেশি চিনি খাওয়া উচিত নয়। প্রায় ২৫ গ্রাম চিনি, যা প্রায় ৬ চামচের সমান, যথেষ্ট। এর বেশি হলে তা শরীরের ক্ষতি ডেকে আনতে পারে।

যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস (NHS) এর মতে:

প্রাপ্তবয়স্কদের দিনে সর্বোচ্চ ৭ চা চামচ।

৭ থেকে ১০ বছরের শিশুদের সর্বোচ্চ ৫ চা চামচ।

৪ থেকে ৬ বছরের শিশুদের সর্বোচ্চ ৪ চা চামচ।

২ থেকে ৩ বছরের শিশুদের সর্বোচ্চ ৩ চা চামচের বেশি অ্যাডেড সুগার খাওয়া ঠিক নয়।

তবে যত কম, ততই ভালো। অর্থাৎ, পুষ্টিবিদরা যে ২৫ গ্রাম অ্যাডেড সুগারের সীমা বেঁধে দিয়েছেন, তার মধ্যেই কিন্তু দিনের বিস্কিট, কেক, সফট ড্রিঙ্কসের মতো অ্যাডেড সুগারযুক্ত খাবার খেতে হবে। এর বেশি খাওয়া একদম উচিত নয়। চিনি কমানো বা এড়ানো শুধু ১০ দিন বা ৩০ দিনের চ্যালেঞ্জ নয়, বরং আজীবনের অভ্যাসে পরিণত করা উচিত।

সূত্র: বিবিসি


জিরা পানির ম্যাজিক: ত্বক-চুল থেকে ডায়াবেটিস—যেভাবে নিয়ন্ত্রণ করে ৭টি রোগ

স্বাস্থ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ২০ ২১:০০:৫৩
জিরা পানির ম্যাজিক: ত্বক-চুল থেকে ডায়াবেটিস—যেভাবে নিয়ন্ত্রণ করে ৭টি রোগ
ছবিঃ সংগৃহীত

জিরা রান্নাঘরের গুরুত্বপূর্ণ মসলা, যা শুধু খাবারের স্বাদ-গন্ধ বাড়ায় না, স্বাস্থ্যেরও অনেক উপকার করে। জিরাতে রয়েছে আয়রন, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন-এ, ভিটামিন-সি, জিঙ্ক ও পটাশিয়াম। এ কারণে রোজ সকালে জিরাপানি পান করলে অনেক উপকার পাওয়া যায়। এটি বিশেষ করে যারা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় ভোগেন, তাদের জন্য উপকারী। জিরা পানি গ্যাস, পেট ফাঁপা, বদহজম এবং পেট ভার হয়ে থাকার সমস্যাও দূর করতে পারে।

জিরা পানির ৭টি স্বাস্থ্য উপকারিতা

১. হজম ও গ্যাস্ট্রিক সমস্যা: এটি দ্রুত এবং উন্নত হজমে সহায়তা করে। গ্যাস জমে পেট ফুলে যাওয়া, পেট ভার হয়ে থাকা, পেটে অস্বস্তি বা পেট ব্যথা—সবকিছু সারাতে পারে জিরা পানি।

২. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা: জিরা পটাশিয়াম, আয়রন ও ফাইবারের ভালো উৎস। নিয়মিত জিরা পানি পান করলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে এবং ঘন ঘন অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনাও কমে।

৩. ওজন নিয়ন্ত্রণ ও ডিটক্স: জিরা পানি শরীর থেকে টক্সিন বের করতে পারে। পরিপাকক্রিয়া ঠিক রাখায়, শরীর থেকে টক্সিন সহজেই পরিষ্কার হয়, ফলে ওজন হ্রাস এবং ফ্যাট কমাতে সাহায্য করে।

৪. ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ: খালি পেটে জিরা পানি পান ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য উপকারী। জিরা শরীরের ইনসুলিন উৎপাদনকে উদ্দীপিত করে এবং রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে।

৫. হৃদরোগ ও রক্তচাপ: উচ্চ পরিমাণে পটাশিয়াম থাকায় জিরা পানি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে। এটি ট্রাইগ্লিসারাইড এবং কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রেখে হৃদরোগজনিত নানা জটিলতা হ্রাস করে।

৬. ক্যানসার ঝুঁকি হ্রাস: জিরা পানিতে থাকা অ্যান্টি-কার্সিনোজেনিক বৈশিষ্ট্য বিভিন্ন ধরনের ক্যানসারের ঝুঁকি হ্রাস করতে অত্যন্ত কার্যকরী।

৭. ত্বক ও চুলের যত্ন: জিরা পানিতে থাকা উপকারী উপাদানগুলো ত্বক উজ্জ্বল করে। এটি ব্রণের সমস্যা দূর করে, সংক্রমণ থেকে ত্বককে রক্ষা করে এবং চুল পড়া প্রতিরোধ করে।

জিরা পানি তৈরির পদ্ধতি

জিরা পানি তৈরি করার নিয়মটি সহজ:

১. প্রথমে ১ চামচ জিরা পাত্রে সামান্য গরম করে নিন।

২. এরপর জিরা ভালোভাবে ধুয়ে নিন।

৩. এক কাপ কুসুম গরম পানিতে জিরা ঢেলে ঢাকনা দিয়ে ঢেকে দিন।

৪. ৩০ মিনিট অপেক্ষা করুন পানির রং হলদে ভাব আসা পর্যন্ত।

৫. পানি ছেঁকে নিয়ে সকালে খালি পেটে নিয়মিত এই পানীয় পান করলে এক সপ্তাহের মধ্যেই উপকার পাবেন।

পাঠকের মতামত: