এক ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দিতে নারাজ ইসরায়েল, কে এই ব্যক্তি?

গাজায় যুদ্ধবিরতির অংশ হিসেবে বন্দি বিনিময়ের চুক্তিতে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনিরা রাজি হলেও, ইসরায়েল এই মুক্তির তালিকা থেকে একজন ব্যক্তিকে বাদ দিয়েছে—তিনি হলেন ফিলিস্তিনিদের কাছে ‘নিজেদের নেলসন ম্যান্ডেলা’ বলে আখ্যায়িত মারওয়ান বারঘুতি।
বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) এক সংবাদ সম্মেলনে ইসরায়েল সরকারের মুখপাত্র শোশ বেদ্রোসিয়ান নিশ্চিত করেছেন, “এই বন্দি বিনিময়ের অংশ হবেন না মারওয়ান বারঘুতি।”
বারঘুতির গুরুত্ব ও ইসরায়েলের অবস্থান
যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় সম্পন্ন হওয়া এই চুক্তি অনুযায়ী, গাজায় আটক ইসরায়েলি নাগরিকদের মুক্তির বিনিময়ে ইসরায়েল প্রায় ২,০০০ ফিলিস্তিনি বন্দিকে ছেড়ে দেবে।
ফিলিস্তিনিদের অবস্থান: ১৯৫৯ সালে পশ্চিম তীরের রামাল্লার কোবারা গ্রামে জন্ম নেওয়া বারঘুতি ফাতাহ দলের শীর্ষ নেতা এবং ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলনের অন্যতম মুখ্য সংগঠক। তিনি ২০০২ সাল থেকে কারাবন্দি। জনমত জরিপে দেখা গেছে, বারঘুতিকে মুক্তি দেওয়া হলে তিনি ফিলিস্তিনের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হওয়ার সবচেয়ে সম্ভাবনাময় প্রার্থী।
ইসরায়েলের অবস্থান: তেল আবিব স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে—বারঘুতির মুক্তি কোনোভাবেই সম্ভব নয়। ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের মতে, তিনি শুধু একজন বন্দি নন, বরং ‘ফিলিস্তিনি প্রতিরোধের প্রতীক’, আর তাকে মুক্তি দিলে ফিলিস্তিনিদের আন্দোলন নতুন গতি পেতে পারে।
কূটনৈতিক তৎপরতা
কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে, কাতার ও মিসরসহ কয়েকটি দেশ বারঘুতির মুক্তি নিশ্চিত করতে তৎপর ছিল। কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি এবং মিসরের গোয়েন্দা প্রধান মেজর জেনারেল হাসান মাহমুদ রশাদ ব্যক্তিগতভাবে এই বিষয়ে আলোচনায় যুক্ত ছিলেন।
ইসরায়েলের এই অবস্থান ফিলিস্তিনি সমাজে গভীর হতাশা ও ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, বারঘুতিকে বাদ দিয়ে কোনো বন্দি বিনিময় চুক্তিই প্রকৃত অর্থে পূর্ণাঙ্গ হতে পারে না, কারণ তিনি ফিলিস্তিনের আত্মত্যাগ ও স্বাধীনতার প্রতীক।
সূত্র : টাইমস অব ইসরায়েল ও মিডল ইস্ট আই
পশ্চিমতীরে ইব্রাহিমি মসজিদ বন্ধ করে দিল ইসরায়েলি সেনারা
ইহুদিদের ধর্মীয় উৎসব সুক্কোট উপলক্ষে ফিলিস্তিনের পশ্চিমতীরের ঐতিহাসিক ইব্রাহিমি মসজিদ বন্ধ করে দিয়েছে ইসরায়েলি সেনারা। বুধবার (৮ অক্টোবর) সকালে ইসরায়েলি সেনারা মসজিদে যাওয়ার সব প্রবেশপথ ও রাস্তা বন্ধ করে দেয়।
ইব্রাহিমি মসজিদ মুসলমানদের কাছে একটি অত্যন্ত পবিত্র স্থান। বিশ্বাস করা হয়, এখানেই হজরত ইব্রাহিম (আ.), ইসহাক (আ.), ইয়াকুব (আ.), ইউসুফ (আ.) ও তাদের স্ত্রীরা সমাধিস্থ আছেন।
ধর্মীয় অধিকার লঙ্ঘন ও কারফিউ
ফিলিস্তিনি বার্তা সংস্থা ওয়াফা জানিয়েছে, মসজিদটি বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। হেবরনের আল-আওকাফ বিভাগের পরিচালক আমজাদ কারাজেহ এই সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, এটি পবিত্র স্থান অবমাননা ও মুসল্লিদের ধর্মীয় অধিকার লঙ্ঘনের স্পষ্ট উদাহরণ।
ইসরায়েলি সেনারা মসজিদে যাওয়ার সব চেকপয়েন্ট বন্ধ করে হেবরনের কয়েকটি এলাকায় কারফিউ জারি করেছে। এর ফলে স্থানীয় বাসিন্দারা ঘর থেকে বের হতে পারছেন না, এমনকি শিক্ষার্থীরাও স্কুলে যেতে পারছে না।
আল-আকসা নিয়ে বেন-গিভিরের উসকানি
এর মধ্যেই ইসরায়েলের উগ্রপন্থি জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রী ইতামার বেন-গিভির নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে আল-আকসা মসজিদে প্রবেশ করেন এবং বলেন, “এখন আল-আকসার মালিক ইসরায়েল।” তার এই ঘোষণার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
সূত্র : দ্য নিউ আরব
গাজায় যুদ্ধবিরতির ঘোষণা সত্ত্বেও হামলা অব্যাহত
হামাস এবং ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনায় সম্মত হওয়ার ঘোষণার পরও বৃহস্পতিবার গাজায় বেশ কয়েকটি হামলার ঘটনা ঘটেছে। গাজার সিভিল ডিফেন্স সংস্থার এক কর্মকর্তা মোহাম্মদ আল-মুগাইয়ির বলেন, "গত রাতে গাজায় প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতি কাঠামোতে একমত হওয়ার ঘোষণা দেওয়ার পর থেকে উত্তর গাজার বেশ কিছু এলাকায় বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে।" এএফপি’র বরাত দিয়ে আল জাজিরা এই খবর জানিয়েছে।
তিনি জানান, গাজা সিটিতে তীব্র বিমান হামলার একটি ধারাবাহিকতা চালানো হয়েছে।
পুনর্গঠনে ট্রাম্পের আশ্বাস
অন্যদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গাজায় শান্তি প্রতিষ্ঠা ও পুনর্গঠনে সহায়তা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, “আমরা তাদের সফল হতে সাহায্য করব এবং শান্তিপূর্ণ থাকতে সহায়তা করব।”
এর কয়েক ঘণ্টা আগেই তিনি ঘোষণা দেন যে ইসরায়েল ও হামাস তার শান্তি পরিকল্পনার প্রথম ধাপে সম্মত হয়েছে। ট্রাম্প আরও বলেন, মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি আসবে বলে তিনি খুবই আত্মবিশ্বাসী।
গাজায় শান্তি ফেরায় উৎসব: হামাস-ইসরায়েল চুক্তিতে আনন্দ-উচ্ছ্বাস
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত শান্তি পরিকল্পনার প্রথম পর্যায় বাস্তবায়নে সম্মত হয়ে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে ইসরায়েল ও হামাস। এই ঐতিহাসিক চুক্তির ঘোষণা দিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে লিখেছেন, “ইসরায়েল ও হামাস উভয়ই আমাদের শান্তি পরিকল্পনার প্রথম পর্যায়ে স্বাক্ষর করেছে। এর অর্থ হলো খুব শিগগিরই সব জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হবে এবং ইসরায়েল নিজেদের সেনাদের নির্ধারিত একটি লাইনে সরিয়ে আনবে।”
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই চুক্তিকে "ইসরায়েলের জন্য একটি মহান দিন" বলে অভিহিত করেছেন। চুক্তিটি অনুমোদনের জন্য আজ বৃহস্পতিবার তার সরকারের একটি বৈঠক আহ্বান করেছেন তিনি। হামাসও গাজায় যুদ্ধ বন্ধে চুক্তিতে পৌঁছানোর কথা নিশ্চিত করেছে।
গাজা ও ইসরায়েলে উচ্ছ্বাস
শান্তি চুক্তি সই হওয়ার খবরে গাজাবাসীর মধ্যে তীব্র উচ্ছ্বাস দেখা গেছে। ইসরায়েলেও অনেকে আনন্দ প্রকাশ করেছেন। ফিলিস্তিনি সাংবাদিক সাঈদ মোহাম্মদ ইনস্টাগ্রামে রাতের একটি ভিডিও ফুটেজ পোস্ট করেছেন। এতে দেখা গেছে, প্রধান শহর দেইর আল বালাহতে আল-আকসা হাসপাতালের বাইরে পুরুষ ও মহিলাদের ব্যাপক সমাগম। তারা সঙ্গীতের তালে তালে নেচে, শিস এবং হাততালি দিয়ে উদযাপন করছেন। একইসঙ্গে 'আল্লাহু আকবর' রব তুলতেও দেখা গেছে। আরেক সাংবাদিক মোহাম্মদ আল-হাদ্দাদের ভিডিওতে গাজার অন্য একটি স্থানের রাস্তায় তরুণদের একটি ছোট দলকে নাচতে দেখা গেছে।
বিশ্বনেতাদের স্বাগত বার্তা
এই শান্তি চুক্তির জন্য বিশ্বনেতারা শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। জাতিসংঘের সেক্রেটারি জেনারেল অ্যান্তোনিও গুতেরেস সব পক্ষকে এই চুক্তির সব শর্ত মেনে চলতে আহ্বান জানিয়েছেন। গুতেরেস বলেছেন, “এই দুর্ভোগের অবসান হওয়া উচিত।”
যুক্তরাজ্য: যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ের স্টারমার এই খবরকে "একটি গভীর স্বস্তিকর মুহূর্ত" বলে উল্লেখ করেছেন এবং ট্রাম্পের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন।
অস্ট্রেলিয়া: অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি অ্যালবানিজ বলেছেন, “দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে সংঘাত, জিম্মি এবং বেসামরিক মানুষের প্রাণহানির পর, চুক্তিটি শান্তির দিকে একটি অত্যন্ত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ। আমরা সকল পক্ষকে পরিকল্পনার শর্ত মেনে চলার আহ্বান জানাচ্ছি।”
তিনি ট্রাম্পের কূটনৈতিক প্রচেষ্টা এবং সমঝোতা আলোচনায় মিশর, কাতার ও তুরস্কের ভূমিকার জন্য ধন্যবাদ জানান।
অষ্টম প্রধানমন্ত্রী নিয়োগের পথে ফ্রান্স: ক্ষমতায় টিকে থাকার লড়াইয়ে ম্যাক্রোঁ
ফ্রান্সে রাজনৈতিক সংকট ক্রমেই গভীর হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী সেবাস্তিয়ান লেকর্নুর পদত্যাগের পর দেশটি আবারও অস্থিরতার মুখে পড়েছে। এই পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রপতি ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ দেবেন বলে বুধবার রাতে এলিসি প্রাসাদ থেকে জানানো হয়েছে। অর্থাৎ, সর্বশেষ শুক্রবার সন্ধ্যার মধ্যে ফ্রান্স নতুন প্রধানমন্ত্রীর নাম জানতে পারবে।
লেকর্নু ফরাসি টেলিভিশনে এক সাক্ষাৎকারে জানান, চলমান রাজনৈতিক অচলাবস্থা কাটাতে নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগই হবে সবচেয়ে বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ। তিনি বলেন, “এটি এমন সময় নয় যখন রাষ্ট্রপতিকে পদত্যাগ করতে হবে বা আগাম নির্বাচনের পথে যেতে হবে; বরং এখন প্রয়োজন কার্যকর নেতৃত্ব।”
গত তিন দিনে ফ্রান্সে ঘটে যাওয়া ঘটনাপ্রবাহ দেশটির রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে গভীর উদ্বেগ তৈরি করেছে। লেকর্নু সোমবার পদত্যাগপত্র জমা দেন—মাত্র এক মাসেরও কম সময় দায়িত্বে থাকার পর। তবে রাষ্ট্রপতি ম্যাক্রোঁ তাকে বুধবার পর্যন্ত সময় দিয়েছিলেন অর্থনীতি সংকোচন (austerity budget) নিয়ে পার্লামেন্টের অচলাবস্থা নিরসনের জন্য।
লেকর্নুর আগের দুই প্রধানমন্ত্রীও একই বাজেট নিয়ে সংসদের বিরোধিতায় পদচ্যুত হন। ফলে ম্যাক্রোঁর সামনে এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ—সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতার অভাবে কীভাবে বাজেট পাস করানো সম্ভব হবে। এলিসি প্রাসাদ থেকে জানানো হয়েছে, রাষ্ট্রপতি মনে করেন বছরের শেষ নাগাদ বাজেট নিয়ে একটি সমঝোতার পথ তৈরি করা সম্ভব।
যদি লেকর্নু পুনরায় নিয়োগ না পান, তবে এটি হবে ম্যাক্রোঁর সাত বছরের শাসনামলের অষ্টম প্রধানমন্ত্রী। অর্থাৎ, ফরাসি রাজনীতিতে স্থিতিশীলতা এখন কার্যত বিলাসিতা।
‘রাষ্ট্রপতি পরিবর্তনের সময় নয়’
লেকর্নু স্পষ্ট করে বলেন, “এখন রাষ্ট্রপতি পরিবর্তনের সময় নয়। জনগণকে ভুল ধারণা দেওয়া উচিত নয় যে বাজেট রাষ্ট্রপতি ভোট দেন।” তিনি আরও জানান, সংসদের নিম্নকক্ষে বেশিরভাগ দল আগাম নির্বাচনের বিপক্ষে, তাই সংসদ ভেঙে দেওয়ার সম্ভাবনা আপাতত নেই।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী এদুয়ার ফিলিপ সম্প্রতি ম্যাক্রোঁর পদত্যাগ ও আগাম প্রেসিডেন্ট নির্বাচন আহ্বানের দাবি তুলেছিলেন। তবে লেকর্নু বলেছেন, ম্যাক্রোঁকে ২০২৭ পর্যন্ত তাঁর মেয়াদ পূর্ণ করতেই হবে।
‘মিশন শেষ’ ঘোষণা করে বিদায়
নিজের পদত্যাগের সময় লেকর্নু বলেন, “আমি সবকিছু চেষ্টা করেছি। আজ রাতে আমার মিশন শেষ।” তিন বছর প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করা এই নেতা নিজেকে বর্ণনা করেছেন “একজন যোদ্ধা সন্ন্যাসী” হিসেবে।
তিনি ইঙ্গিত দেন যে প্রযুক্তিনির্ভর (technocratic) একটি নতুন মন্ত্রিসভা গঠিত হতে পারে, যেখানে সদস্যদের ২০২৭ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার উচ্চাকাঙ্ক্ষা থাকবে না। তাঁর মতে, “দেশের সমস্যা সমাধানই এখন একমাত্র লক্ষ্য হওয়া উচিত।”
পেনশন সংস্কার ইস্যুতে লেকর্নু বলেছেন, অবসর গ্রহণের বয়স বৃদ্ধি সিদ্ধান্তটি পুনর্বিবেচনার দরজা খুলে দেওয়া যেতে পারে, তবে তা স্থগিত করলে ২০২৭ সালের মধ্যে কমপক্ষে ৩ বিলিয়ন ইউরো ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। এ বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী এলিজাবেথ বর্ন—যিনি সংস্কারটি ভোট ছাড়াই সংসদে পাস করিয়েছিলেন—এরই মধ্যে স্থগিত রাখার পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন।
‘সবকিছুর বিরুদ্ধেই ভোট দেব’
ফ্রান্সের সংসদীয় রাজনীতির বাস্তবতা আরও জটিল। ২০২২ সালের নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারানোর পর ম্যাক্রোঁর দল ডানপন্থী রিপাবলিকানদের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক নয় এমন একটি সমঝোতায় সরকার চালিয়ে আসছে। কিন্তু এই জোটও সংসদে সংখ্যালঘু অবস্থায়। ফলে যে কোনো নতুন প্রধানমন্ত্রীকে আবারও অবিশ্বাস প্রস্তাবের মুখোমুখি হতে হতে পারে।
অন্যদিকে, চরম ডানপন্থী নেতা মেরিন ল্য পেন ঘোষণা দিয়েছেন, “নতুন সরকার যাই করুক, আমি তার বিরুদ্ধেই ভোট দেব।” তাঁর দল ন্যাশনাল র্যালি এখন ২০২৭ সালের নির্বাচনে ক্ষমতায় যাওয়ার সবচেয়ে বড় সুযোগ দেখছে, কারণ সংবিধান অনুযায়ী ম্যাক্রোঁ তৃতীয় মেয়াদে প্রার্থী হতে পারবেন না।
এ অবস্থায় রাজনৈতিক ভারসাম্য রক্ষার দায়িত্ব এখন পুরোপুরি ম্যাক্রোঁর কাঁধে। তাঁর পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের সিদ্ধান্তই নির্ধারণ করবে—ফ্রান্স স্থিতিশীলতার পথে ফিরবে, নাকি আরও গভীর রাজনৈতিক অচলাবস্থায় নিমজ্জিত হবে।
-আলমগীর হোসেন
তহবিল সংকটে জাতিসংঘ: শান্তিরক্ষী বাহিনী কমছে ২৫ শতাংশ
জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা কার্যক্রম বড় ধাক্কায় পড়তে যাচ্ছে। তহবিল সংকটের কারণে বিশ্বজুড়ে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনীর সংখ্যা প্রায় ২৫ শতাংশ কমানোর সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হচ্ছে সংস্থাটি। এই আর্থিক ঘাটতির মূল কারণ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের বৃহৎ পরিমাণ অনুদান হ্রাসকে চিহ্নিত করেছেন জাতিসংঘের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা।
বুধবার (স্থানীয় সময়) এক গোপন বৈঠকে ওই কর্মকর্তা জানান, অর্থ সংকটের ফলে ১৩ থেকে ১৪ হাজার সেনা ও পুলিশ সদস্যসহ তাদের সরঞ্জামাদি নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে হবে। শুধু সামরিক বা পুলিশ সদস্যরাই নন, শান্তিরক্ষা মিশনে কর্মরত অনেক বেসামরিক কর্মকর্তা-কর্মচারীকেও এই সংকোচনের প্রভাবে পড়তে হবে।
জাতিসংঘের ২০২৫-২৬ অর্থবছরের শান্তিরক্ষা বাজেট দাঁড়িয়েছে ৫ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অবদান রাখার কথা ছিল প্রায় ১ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার। কিন্তু ওয়াশিংটন সম্প্রতি জাতিসংঘকে জানিয়েছে, তারা এই বাজেটের অর্ধেকেরও কম—মাত্র ৬৮২ মিলিয়ন ডলার প্রদান করবে। এর মধ্যেও ৮৫ মিলিয়ন ডলার হাইতির নতুন আন্তর্জাতিক অ্যান্টি-গ্যাং মিশনের জন্য বরাদ্দ, যা মূল বাজেটে অন্তর্ভুক্ত ছিল না।
অন্যদিকে, চীন ২০২৫-২৬ অর্থবছরে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা তহবিলে ১ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার অবদান রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে—যা যুক্তরাষ্ট্রের নতুন বরাদ্দের চেয়ে বেশি।
একজন জাতিসংঘ কর্মকর্তা বলেন, “এই ঘাটতির সরাসরি প্রভাব পড়বে যুদ্ধবিরতি পর্যবেক্ষণ, সাধারণ নাগরিকদের সুরক্ষা, মানবিক সহায়তার কার্যক্রম ও অন্যান্য শান্তিরক্ষা মিশনের ওপর। এসব ক্ষেত্রে কার্যকারিতা বজায় রাখা কঠিন হবে।”
বর্তমানে জাতিসংঘের ১১টি শান্তিরক্ষা মিশনে প্রায় ৭০ হাজার সেনা ও পুলিশ সদস্য কাজ করছেন। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় মিশনগুলো রয়েছে গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের পূর্বাঞ্চল, দক্ষিণ লেবানন, মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র, দক্ষিণ সুদান ও পশ্চিম সাহারাতে। এখন এই ১১টি মিশনের মধ্যে থেকে ধাপে ধাপে সৈন্য ও কর্মী সংখ্যা কমানো হবে।
বিশ্লেষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পুনরায় ক্ষমতায় ফেরার পর থেকে ওয়াশিংটন বৈদেশিক সহায়তা ও আন্তর্জাতিক অংশীদারিত্বে বড় ধরনের কাটছাঁট চালিয়ে যাচ্ছে। এর ধারাবাহিক প্রভাব পড়ছে জাতিসংঘের মতো আন্তর্জাতিক সংস্থার তহবিলেও। এর ফলে বৈশ্বিক শান্তিরক্ষা কাঠামো নতুন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে।
বিশ্বে সংঘাতপ্রবণ অঞ্চলে শান্তি রক্ষা, মানবিক সহায়তা ও পুনর্গঠনের ক্ষেত্রে জাতিসংঘের ভূমিকা অনন্য। তবে অর্থনৈতিক চাপ ও রাজনৈতিক টানাপোড়েনের কারণে এই ভূমিকা এখন ধারাবাহিক সংকোচনের ঝুঁকিতে। বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, এতে বহু সংঘাতমুখর দেশে সহিংসতা ও মানবিক বিপর্যয় বেড়ে যেতে পারে, যা আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা ব্যবস্থার জন্য একটি উদ্বেগজনক সংকেত।
-নাজমুল হাসান
নোবেল শান্তি পুরস্কার: আগামীকাল ঘোষণা, ট্রাম্পের ভাগ্য নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে
এ বছর পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার পাচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের তিন বিজ্ঞানী জন ক্লার্ক, মিশেল এইচ ডেভোর ও জন এম মার্টিনেস। এ বছর পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পেলেন যুক্তরাষ্ট্রের ৩ বিজ্ঞানী জন ক্লার্ক, মিশেল এইচ ডেভোর ও জন এম মার্টিনেস। এবার আলোচনার কেন্দ্রে রয়েছে নোবেল শান্তি পুরস্কার। আগামীকাল শুক্রবার (১০ অক্টোবর) নরওয়ের অসলোতে ঘোষণা হবে এ বছরের নোবেল শান্তি পুরস্কারের। বাংলাদেশ সময় বেলা ৩টায় বিজয়ীর নাম জানাবে নোবেল কমিটি। তবে পুরস্কারটি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পাচ্ছেন কি না, সেটি নিয়ে শুরু হয়েছে জল্পনা-কল্পনা। যদিও বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ট্রাম্প কোনোভাবেই এই পুরস্কার পাবেন না।
ট্রাম্পের দাবি ও সমালোচনার কারণ
ট্রাম্প দাবি করেছেন, তিনি আটটি সংঘাত সমাধানে কাজ করেছেন এবং ভারত-পাকিস্তানকে পারমাণবিক যুদ্ধের দ্বারপ্রান্ত থেকে ফিরিয়ে এনেছেন। কিন্তু সুইডিশ অধ্যাপক পিটার ওয়ালেনস্টিন মনে করেন, তার এসব প্রচেষ্টা অতিরঞ্জিত এবং অনেক নীতি আলফ্রেড নোবেলের শান্তি, সহযোগিতা ও নিরস্ত্রীকরণের আদর্শের বিপরীতে যায়। গাজা সংকটসহ নানা বিতর্ক এখনো তাজা থাকায় ট্রাম্পকে এবার বেছে নেওয়া হবে না।
অসলোর পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের প্রধান নিনা গ্রেগারও বলেন, আন্তর্জাতিক সংস্থা থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নেওয়া, বাণিজ্য যুদ্ধ শুরু এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ—এসব কর্মকাণ্ড ট্রাম্পের শান্তির দাবির সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
সম্ভাব্য বিজয়ী কারা?
এ বছর শান্তি নোবেলের জন্য ৩৩৮ জন ব্যক্তি ও সংস্থা মনোনীত হয়েছেন। যদিও তালিকা গোপন, তবুও আলোচনায় রয়েছে:
সুদানের স্বেচ্ছাসেবী নেটওয়ার্ক ইমার্জেন্সি রেসপন্স রুমস।
প্রয়াত রুশ নেতা আলেক্সেই নাভালনির স্ত্রী ইউলিয়া নাভালনায়া।
নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থা অফিস ফর ডেমোক্রেটিক ইনস্টিটিউশনস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস।
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।
নরওয়েজিয়ান বিশেষজ্ঞ হালভার্ড লাইরা বলেন, নোবেল কমিটি মানবাধিকার, গণতন্ত্র, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও নারী অধিকারে জোর দিচ্ছে। তাই এবারও অবিতর্কিত প্রার্থী বেছে নেওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।
ট্রাম্পের শান্তি পরিকল্পনার প্রথম পর্যায়ে সই করল ইসরায়েল-হামাস
দুই বছর ধরে সংঘাতে লিপ্ত ইসরায়েল এবং গাজা নিয়ন্ত্রণকারী সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী হামাস—উভয়েই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনার প্রথম পর্যায় বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দিয়ে স্বাক্ষর করেছে। এই ঐতিহাসিক চুক্তির ঘোষণা দিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।
বুধবার (৮ অক্টোবর) নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে এক বার্তায় ট্রাম্প এই ঘোষণা দেন।
চুক্তি কী বলছে?
ট্রাম্প তার বার্তায় বলেছেন:
“আমি খুবই গর্বের সঙ্গে ঘোষণা করছি যে ইসরায়েল এবং হামাস উভয়েই আমাদের প্রস্তাবিত শান্তি পরিকল্পনার প্রথম পর্যায় বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দিয়ে স্বাক্ষর করেছে। খুব শিগগিরই সব জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হবে এবং সমঝোতার ভিত্তিতে ইসরায়েলও গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহার করবে।”
ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধের অন্যতম মধ্যস্থতাকারী দেশ কাতারও যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাজেদ আল আনসারি এক্স-এ (সাবেক টুইটার) পোস্ট করা এক বার্তায় বলেছেন, “আজ রাতে গাজায় শান্তি স্থাপন সংক্রান্ত নতুন পরিকল্পনার প্রথম পর্যায়ের সমস্ত শর্ত ও বিধান বাস্তবায়নে একটি চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে।”
তিনি আরও জানান, এই চুক্তি স্বাক্ষরের জেরে গাজায় যুদ্ধের অবসান ঘটবে, সমস্ত ইসরায়েলি জিম্মি ও ফিলিস্তিনি কারাবন্দিরা মুক্তি পাবে এবং গাজায় ত্রাণ সামগ্রী প্রবেশে আর কোনো বাধা থাকবে না। তবে চুক্তির বিস্তারিত বিষয়গুলো পরবর্তীতে ঘোষণা করা হবে।
আলোচনার প্রেক্ষাপট
গত ২৯ সেপ্টেম্বর সোমবার হোয়াইট হাউসে ট্রাম্প গাজায় যুদ্ধবিরতি সংক্রান্ত নতুন একটি পরিকল্পনার ব্যাপারে ঘোষণা দিয়েছিলেন। সেই সময় তিনি বলেছিলেন, তার পরিকল্পনার কপি ইসরায়েল, হামাস এবং অপর দুই মধ্যস্থতাকারী দেশ মিসর ও কাতারকে পাঠানো হয়েছে এবং হামাস ব্যতীত বাকি সবাই তাতে সম্মতি দিয়েছে।
পরে ৩ অক্টোবর হামাস সম্মতি জানানোর পরদিন ৪ অক্টোবর ট্রাম্প ইসরায়েলকে গাজায় বোমাবর্ষণ বন্ধ করতে বলেন। এরপর ৬ অক্টোবর মিসরের শারম আল শেখ-এ ইসরায়েল, হামাস, মিসর, যুক্তরাষ্ট্র ও কাতারের প্রতিনিধিদের মধ্যে বৈঠক শুরু হয়। দুই দিনেরও বেশি সময়ের আলোচনার পর চুক্তির প্রাথমিক পর্যায় বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতিতে ইসরায়েল-হামাস স্বাক্ষর করল।
এই চুক্তি স্বাক্ষরের কয়েক ঘণ্টা আগে ট্রাম্প ইঙ্গিত দিয়েছিলেন যে, তিনি ‘এ সপ্তাহের শেষের দিকে, সম্ভবত রোববার, মধ্যপ্রাচ্যে যেতে পারেন।’
সূত্র: এএফপি
১৬তম মুসলিম হিসেবে নোবেল পুরস্কার জিতলেন ওমর এম ইয়াগি
রসায়নে বিশেষ অবদানের জন্য এ বছর নোবেল পুরস্কার জিতেছেন ফিলিস্তিনি বংশোদ্ভূত বিজ্ঞানী ওমর এম ইয়াগি। বুধবার (৮ অক্টোবর) রয়্যাল সুইডিশ অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেসের ঘোষণা অনুযায়ী, জাপানের সুসুমু কিতাগাওয়া এবং যুক্তরাজ্যের রিচার্ড রবসনের সঙ্গে যৌথভাবে তিনি এই সম্মান অর্জন করেছেন। এই তিন বিজ্ঞানী ধাতু-জৈব কাঠামো বা ‘মেটাল অর্গানিক ফ্রেমওয়ার্ক’ (MOFs) উদ্ভাবনের জন্য যৌথভাবে এ পুরস্কার পেয়েছেন। এই স্বীকৃতির মাধ্যমে ওমর এম ইয়াগি হলেন নোবেল পুরস্কার জেতা ষোড়শ মুসলিম বিজ্ঞানী।
নোবেল জয়ের কারণ ও তাৎপর্য
রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি অব সায়েন্সেস জানিয়েছে, এই তিন বিজ্ঞানী এমন এক নতুন ধরনের আণবিক স্থাপত্য তৈরি করেছেন, যার মধ্যে গ্যাস ও রাসায়নিক পদার্থ সহজে চলাচল করতে পারে। এই কাঠামো পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তির ক্ষেত্রে এক বৈপ্লবিক সম্ভাবনা তৈরি করেছে।
এই কাঠামো ব্যবহার করে:
মরুভূমির বাতাস থেকে পানি আহরণ।
কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্যাস ধরে রাখা।
বিষাক্ত গ্যাস জমিয়ে রাখা এবং বিভিন্ন রাসায়নিক বিক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করা যায়।
ওমর এম ইয়াগির জীবন ও কর্ম
ওমর মওয়ানেস ইয়াগি ১৯৬৫ সালে জর্ডানের আম্মানে এক ফিলিস্তিনি শরণার্থী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা-মা পড়তে বা লিখতে পারতেন না এবং পরিবারের আর্থিক অবস্থা ছিল দুর্বল। মাত্র ১৫ বছর বয়সে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান। তিনি হাডসন ভ্যালি কমিউনিটি কলেজ এবং ইউনিভার্সিটি অ্যাট অ্যালবানি থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন এবং ১৯৯০ সালে ইউনিভার্সিটি অব ইলিনয় থেকে পিএইচডি লাভ করেন।
অ্যাকাডেমিক ক্যারিয়ারে তিনি হার্ভার্ড, অ্যারিজোনা স্টেট ইউনিভার্সিটি ও ইউনিভার্সিটি অব মিশিগানের মতো প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ছিলেন। ২০১২ সালে তিনি ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, বার্কলেতে যোগ দেন এবং বর্তমানে সেখানে জেমস ও নেলজে ট্রেটার প্রফেসর অব কেমিস্ট্রি পদে রয়েছেন। ২০২১ সালে সৌদি আরবের রাজার রিয়াল ডিক্রি অনুযায়ী তিনি সৌদি নাগরিকত্ব পান।
নোবেল জেতার পর প্রথম প্রতিক্রিয়ায় ওমর বলেন, “আমার বাবা-মা খুব একটা পড়তে বা লিখতে পারতেন না। এটা কঠিন একটা যাত্রা ছিল, বিজ্ঞানই এটা করে দেখানোর সুযোগ দিয়েছে।”
সূত্র: নোবেল কমিটি, উইকিপিডিয়া
রসায়নে নোবেল: জল সংগ্রহ ও গ্যাস নিয়ন্ত্রণে বিজ্ঞানীদের যুগান্তকারী আবিষ্কার
রসায়ন বিজ্ঞানে বিশেষ অবদানের জন্য এ বছর নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন তিন বিজ্ঞানী—সুসুমু কিতাগাওয়া, রিচার্ড রবসন এবং ওমার এম ইয়াগি। তারা ‘মেটাল অর্গানিক ফ্রেমওয়ার্ক’ (Metal Organic Frameworks - MOFs) নামক এক যুগান্তকারী উপাদান তৈরি করার স্বীকৃতিস্বরূপ এই নোবেল পেয়েছেন।
বুধবার (৮ অক্টোবর) বাংলাদেশ সময় বিকেল পৌনে ৪টার দিকে সুইডেনের স্টকহোমে রয়্যাল সুইডিশ অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেস বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করে।
আবিষ্কার ও তার তাৎপর্য
নোবেল কর্তৃপক্ষের তথ্যমতে, নোবেল পাওয়া এই তিন বিজ্ঞানী এমন কিছু আণবিক কাঠামো তৈরি করেছেন, যেগুলোর মধ্য দিয়ে বিভিন্ন গ্যাস এবং অন্যান্য রাসায়নিক পদার্থ সহজে চলাচল করতে পারে। এই ছিদ্রযুক্ত পদার্থগুলোকেই মেটাল-অর্গানিক ফ্রেমওয়ার্কস বলা হয়।
তাদের উদ্ভাবিত এই কাঠামো ব্যবহার করে:
জল সংগ্রহ: মরুভূমির বাতাস থেকেও পানি সংগ্রহ করা যায়।
গ্যাস নিয়ন্ত্রণ: কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্যাস ধরে রাখা বা বিষাক্ত গ্যাস জমিয়ে রাখা সম্ভব।
রাসায়নিক বিক্রিয়া: বিভিন্ন রাসায়নিক বিক্রিয়াকে দ্রুত (ত্বরান্বিত) করা যায়।
এই কাঠামোতে ধাতব আয়নগুলো কোণার খুঁটির মতো কাজ করে এবং সেগুলোকে লম্বা লম্বা জৈব (কার্বনভিত্তিক) অণু বা মলিকিউল দিয়ে যুক্ত করা হয়। এই ধাতব আয়ন ও অণুগুলো একসঙ্গে মিলে এমন এক ধরনের স্ফটিক তৈরি করে, যার ভেতরে অনেক বড় বড় গহ্বর বা ছিদ্র থাকে।
নোবেল পুরস্কারের ইতিহাস
এখন পর্যন্ত রসায়নে ১১৬ বার নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। এই ক্যাটাগরিতে সবচেয়ে বয়স্ক ব্যক্তি হিসেবে ২০১৮ সালে ৯৭ বছর বয়সে নোবেল জেতেন জন বি গুডএনাফ। অপরদিকে, ১৯৩৫ সালে মাত্র ৩৫ বছর বয়সে সম্মানজনক এই পদক জেতেন ফেদ্রিক জোলিয়ট।
পাঠকের মতামত:
- এক ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দিতে নারাজ ইসরায়েল, কে এই ব্যক্তি?
- শহিদুল আলমসহ আটক কর্মীদের কঠোর কারাগারে পাঠাচ্ছে ইসরায়েল
- শাপলা না পেলে ধানের শীষসহ সব প্রতীক বাতিলের দাবি
- বড় দরপতনে সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস শেয়ারবাজারে নেতিবাচক ধারা
- ৯ অক্টোবরের ডিএসই লেনদেনে শীর্ষ লুজার তালিকা প্রকাশ
- ৯ অক্টোবরের ডিএসই লেনদেনে শীর্ষ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- সহজে ভিডিও ডাউনলোডের ৭টি সেরা অ্যাপ
- রান্নাঘর থেকে রূপচর্চা: এক টুকরো ফিটকিরির ১০টি বিস্ময়কর ব্যবহার
- খুলনায় প্রকাশ্য দিবালোকে ব্যবসায়ী খুন
- পশ্চিমতীরে ইব্রাহিমি মসজিদ বন্ধ করে দিল ইসরায়েলি সেনারা
- কেউ কিছু জানে না, এমনও অনেক মিটিং হচ্ছে: আমির খসরু
- শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ ৩০ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি
- গাজায় যুদ্ধবিরতির ঘোষণা সত্ত্বেও হামলা অব্যাহত
- বিশ্বসংগীতে নতুন রেকর্ড গড়লেন রোজে
- পুরুষের বন্ধ্যত্ব কেন হয়? যে ৫টি খাবার শুক্রাণুর পরিমাণ বাড়ায়
- সকালে এই ৪টি অভ্যাস হার্টের ক্ষতি বাড়াতে পারে
- ইউনেসকোর সাধারণ সম্মেলনের সভাপতি বাংলাদেশ: কূটনৈতিক অগ্রযাত্রায় নতুন মাইলফলক
- শেখ হাসিনার ভারত থেকে রাজনৈতিক বক্তব্য বন্ধে পদক্ষেপ নিচ্ছে দিল্লি
- সমন্বিত যোগাযোগ ব্যবস্থার পথে বাংলাদেশ: বহুমাত্রিক পরিবহন পরিকল্পনা প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে
- র্যাঙ্কিংয়ে ৩৮ ধাপ এগিয়ে থাকা হংকংয়ের বিপক্ষে আজ লড়বে বাংলাদেশ
- গাজায় শান্তি ফেরায় উৎসব: হামাস-ইসরায়েল চুক্তিতে আনন্দ-উচ্ছ্বাস
- অষ্টম প্রধানমন্ত্রী নিয়োগের পথে ফ্রান্স: ক্ষমতায় টিকে থাকার লড়াইয়ে ম্যাক্রোঁ
- শুক্রবার ১৬ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না যেসব এলাকায়
- তহবিল সংকটে জাতিসংঘ: শান্তিরক্ষী বাহিনী কমছে ২৫ শতাংশ
- নোবেল শান্তি পুরস্কার: আগামীকাল ঘোষণা, ট্রাম্পের ভাগ্য নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে
- শেখ হাসিনার সঙ্গে পাঁচজন উপদেষ্টা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে: রাশেদ খান
- রাশিফল: ৯ অক্টোবর আপনার জীবনের চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা
- শর্ত লঙ্ঘনের বিশাল অভিযোগ: বিসিবি নির্বাচন নিয়ে কেন এত বিতর্ক?
- নির্বাচন সামনে রেখে এনসিপিকে নিয়ে বিএনপি-জামায়াতে নীরব প্রতিযোগিতা
- ট্রাম্পের শান্তি পরিকল্পনার প্রথম পর্যায়ে সই করল ইসরায়েল-হামাস
- ওমানে ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনা: নিহত ৭ বাংলাদেশি
- জেনে নিন ০৯ অক্টোবর ঢাকা ও অন্যান্য বিভাগের নামাজের সময়সূচি
- অল্প রানে অলআউট বাংলাদেশ, আফগানদের বিপক্ষে কঠিন চ্যালেঞ্জ
- মানসিক চাপ ও হতাশা দূর করুন: প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় রাখুন এই ১০ খাবার
- শহিদুল আলমের আটক নিয়ে অপপ্রচার: বাংলাফ্যাক্ট যা জানাল
- স্মার্টফোন ব্যবহারে কঠোর আইন, দিনে ২ ঘণ্টার বেশি ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা
- জুলাই সনদ বাস্তবায়ন: চূড়ান্ত ঐকমত্যের পথে কমিশন
- কন্যা হত্যা ও গোত্রীয় সংঘাতের যুগে এক বিশ্বস্ত শিশুর বেড়ে ওঠা
- নতুন দুটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলের অনুমোদন, নেপথ্যে এনসিপি ও বিএনপি’র নেতা
- ২১ শতকের নীরব ঘাতক: কোলোরেক্টাল ক্যানসারে ঝুঁকি বাড়াচ্ছে যে খাবার
- হোয়াটসঅ্যাপে আর লাগবে না নম্বর,ইউজার নেম দিয়েই করা যাবে যোগাযোগ
- ১৬তম মুসলিম হিসেবে নোবেল পুরস্কার জিতলেন ওমর এম ইয়াগি
- আল-আকসা ও শাম: কেন এই ভূখণ্ডকে পৃথিবীর সভ্যতার কেন্দ্র বলা হয়?
- স্বনির্ভরতা অর্জনেই জোর প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের
- সতর্কতা জারি: ঢাকাসহ ২০ জেলার ওপর দিয়ে ৬০ কিমি বেগে ঝোড়ো হাওয়ার শঙ্কা
- উপদেষ্টাদের ‘সেফ এক্সিট’ নিয়ে বিতর্ক, রিজওয়ানা হাসান চাইলেন নাম
- ৫টি বিশেষ ধরনের মধু, যা আপনার স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী
- শেখ হাসিনাসহ ২৮ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি
- রসায়নে নোবেল: জল সংগ্রহ ও গ্যাস নিয়ন্ত্রণে বিজ্ঞানীদের যুগান্তকারী আবিষ্কার
- সঙ্গী কি আপনাকে এড়িয়ে চলছেন? এই ৬টি লক্ষণ দেখলেই বুঝবেন
- মেথি কি সত্যিই ‘সুপারফুড’? বিজ্ঞান, উপকার, ঝুঁকি ও খাওয়ার সেরা সময়
- সর্ব রোগের ঔষধ কালিজিরা’র আদ্যপ্রান্ত: ঐতিহ্য, বিজ্ঞান, ব্যবহার ও সতর্কতা
- ম্যালেরিয়া: কারণ, লক্ষণ, ঝুঁকি, প্রতিরোধ ও চিকিৎসা
- শ্বাসরুদ্ধকর জয়: শেষ মুহূর্তের নাটকীয়তায় আফগানিস্তানকে হারিয়ে সিরিজ নিশ্চিত করল বাংলাদেশ
- ঘৃতকুমারী বা অ্যালোভেরা: কাঁটাযুক্ত পাতার ভেতর লুকানো আরোগ্যের জেল
- “বিবেকের গর্জন”—গাজা ফ্লোটিলায় শহিদুল আলমকে প্রশংসা করলেন তারেক রহমান
- কোরআন অবমাননা: নর্থ সাউথ থেকে শিক্ষার্থী অপূর্ব পাল স্থায়ীভাবে বহিষ্কার
- ল্যাপটপে পানি পড়লে কী করবেন? যে ৭টি কাজ ভুলেও করা উচিত নয়
- আন্দেসের হৃদয়ে এক বিপ্লবী দেশ: বলিভিয়ার ইতিহাস, সংস্কৃতি ও ভবিষ্যতের সম্ভাবনা
- স্বনির্ভরতা অর্জনেই জোর প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের
- আফ্রিকার হৃদয়ে পাথরের রাজ্য: জিম্বাবুয়ের প্রকৃতি, সংস্কৃতি ও আত্মার গল্প
- গাজা যুদ্ধের অবসানে আলোচনায় রাজি হামাস, ট্রাম্পের ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনা প্রকাশ
- ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন: প্রস্তুতির সার্বিক চিত্র ও টাইমলাইন
- সালাহউদ্দিন আহমদ: প্রার্থী বাছাইয়ের কাজ চলছে, শিগগিরই মাঠে নামবে একক প্রার্থী
- জিরো-ওয়েস্ট কুকিং’: সবজির খোসাও হবে সুস্বাদু রেসিপি