তহবিল সংকটে জাতিসংঘ: শান্তিরক্ষী বাহিনী কমছে ২৫ শতাংশ

জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা কার্যক্রম বড় ধাক্কায় পড়তে যাচ্ছে। তহবিল সংকটের কারণে বিশ্বজুড়ে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনীর সংখ্যা প্রায় ২৫ শতাংশ কমানোর সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হচ্ছে সংস্থাটি। এই আর্থিক ঘাটতির মূল কারণ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের বৃহৎ পরিমাণ অনুদান হ্রাসকে চিহ্নিত করেছেন জাতিসংঘের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা।
বুধবার (স্থানীয় সময়) এক গোপন বৈঠকে ওই কর্মকর্তা জানান, অর্থ সংকটের ফলে ১৩ থেকে ১৪ হাজার সেনা ও পুলিশ সদস্যসহ তাদের সরঞ্জামাদি নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে হবে। শুধু সামরিক বা পুলিশ সদস্যরাই নন, শান্তিরক্ষা মিশনে কর্মরত অনেক বেসামরিক কর্মকর্তা-কর্মচারীকেও এই সংকোচনের প্রভাবে পড়তে হবে।
জাতিসংঘের ২০২৫-২৬ অর্থবছরের শান্তিরক্ষা বাজেট দাঁড়িয়েছে ৫ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অবদান রাখার কথা ছিল প্রায় ১ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার। কিন্তু ওয়াশিংটন সম্প্রতি জাতিসংঘকে জানিয়েছে, তারা এই বাজেটের অর্ধেকেরও কম—মাত্র ৬৮২ মিলিয়ন ডলার প্রদান করবে। এর মধ্যেও ৮৫ মিলিয়ন ডলার হাইতির নতুন আন্তর্জাতিক অ্যান্টি-গ্যাং মিশনের জন্য বরাদ্দ, যা মূল বাজেটে অন্তর্ভুক্ত ছিল না।
অন্যদিকে, চীন ২০২৫-২৬ অর্থবছরে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা তহবিলে ১ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার অবদান রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে—যা যুক্তরাষ্ট্রের নতুন বরাদ্দের চেয়ে বেশি।
একজন জাতিসংঘ কর্মকর্তা বলেন, “এই ঘাটতির সরাসরি প্রভাব পড়বে যুদ্ধবিরতি পর্যবেক্ষণ, সাধারণ নাগরিকদের সুরক্ষা, মানবিক সহায়তার কার্যক্রম ও অন্যান্য শান্তিরক্ষা মিশনের ওপর। এসব ক্ষেত্রে কার্যকারিতা বজায় রাখা কঠিন হবে।”
বর্তমানে জাতিসংঘের ১১টি শান্তিরক্ষা মিশনে প্রায় ৭০ হাজার সেনা ও পুলিশ সদস্য কাজ করছেন। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় মিশনগুলো রয়েছে গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের পূর্বাঞ্চল, দক্ষিণ লেবানন, মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র, দক্ষিণ সুদান ও পশ্চিম সাহারাতে। এখন এই ১১টি মিশনের মধ্যে থেকে ধাপে ধাপে সৈন্য ও কর্মী সংখ্যা কমানো হবে।
বিশ্লেষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পুনরায় ক্ষমতায় ফেরার পর থেকে ওয়াশিংটন বৈদেশিক সহায়তা ও আন্তর্জাতিক অংশীদারিত্বে বড় ধরনের কাটছাঁট চালিয়ে যাচ্ছে। এর ধারাবাহিক প্রভাব পড়ছে জাতিসংঘের মতো আন্তর্জাতিক সংস্থার তহবিলেও। এর ফলে বৈশ্বিক শান্তিরক্ষা কাঠামো নতুন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে।
বিশ্বে সংঘাতপ্রবণ অঞ্চলে শান্তি রক্ষা, মানবিক সহায়তা ও পুনর্গঠনের ক্ষেত্রে জাতিসংঘের ভূমিকা অনন্য। তবে অর্থনৈতিক চাপ ও রাজনৈতিক টানাপোড়েনের কারণে এই ভূমিকা এখন ধারাবাহিক সংকোচনের ঝুঁকিতে। বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, এতে বহু সংঘাতমুখর দেশে সহিংসতা ও মানবিক বিপর্যয় বেড়ে যেতে পারে, যা আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা ব্যবস্থার জন্য একটি উদ্বেগজনক সংকেত।
-নাজমুল হাসান
নোবেল শান্তি পুরস্কার: আগামীকাল ঘোষণা, ট্রাম্পের ভাগ্য নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে
এ বছর পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার পাচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের তিন বিজ্ঞানী জন ক্লার্ক, মিশেল এইচ ডেভোর ও জন এম মার্টিনেস। এ বছর পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পেলেন যুক্তরাষ্ট্রের ৩ বিজ্ঞানী জন ক্লার্ক, মিশেল এইচ ডেভোর ও জন এম মার্টিনেস। এবার আলোচনার কেন্দ্রে রয়েছে নোবেল শান্তি পুরস্কার। আগামীকাল শুক্রবার (১০ অক্টোবর) নরওয়ের অসলোতে ঘোষণা হবে এ বছরের নোবেল শান্তি পুরস্কারের। বাংলাদেশ সময় বেলা ৩টায় বিজয়ীর নাম জানাবে নোবেল কমিটি। তবে পুরস্কারটি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পাচ্ছেন কি না, সেটি নিয়ে শুরু হয়েছে জল্পনা-কল্পনা। যদিও বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ট্রাম্প কোনোভাবেই এই পুরস্কার পাবেন না।
ট্রাম্পের দাবি ও সমালোচনার কারণ
ট্রাম্প দাবি করেছেন, তিনি আটটি সংঘাত সমাধানে কাজ করেছেন এবং ভারত-পাকিস্তানকে পারমাণবিক যুদ্ধের দ্বারপ্রান্ত থেকে ফিরিয়ে এনেছেন। কিন্তু সুইডিশ অধ্যাপক পিটার ওয়ালেনস্টিন মনে করেন, তার এসব প্রচেষ্টা অতিরঞ্জিত এবং অনেক নীতি আলফ্রেড নোবেলের শান্তি, সহযোগিতা ও নিরস্ত্রীকরণের আদর্শের বিপরীতে যায়। গাজা সংকটসহ নানা বিতর্ক এখনো তাজা থাকায় ট্রাম্পকে এবার বেছে নেওয়া হবে না।
অসলোর পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের প্রধান নিনা গ্রেগারও বলেন, আন্তর্জাতিক সংস্থা থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নেওয়া, বাণিজ্য যুদ্ধ শুরু এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ—এসব কর্মকাণ্ড ট্রাম্পের শান্তির দাবির সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
সম্ভাব্য বিজয়ী কারা?
এ বছর শান্তি নোবেলের জন্য ৩৩৮ জন ব্যক্তি ও সংস্থা মনোনীত হয়েছেন। যদিও তালিকা গোপন, তবুও আলোচনায় রয়েছে:
সুদানের স্বেচ্ছাসেবী নেটওয়ার্ক ইমার্জেন্সি রেসপন্স রুমস।
প্রয়াত রুশ নেতা আলেক্সেই নাভালনির স্ত্রী ইউলিয়া নাভালনায়া।
নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থা অফিস ফর ডেমোক্রেটিক ইনস্টিটিউশনস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস।
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।
নরওয়েজিয়ান বিশেষজ্ঞ হালভার্ড লাইরা বলেন, নোবেল কমিটি মানবাধিকার, গণতন্ত্র, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও নারী অধিকারে জোর দিচ্ছে। তাই এবারও অবিতর্কিত প্রার্থী বেছে নেওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।
ট্রাম্পের শান্তি পরিকল্পনার প্রথম পর্যায়ে সই করল ইসরায়েল-হামাস
দুই বছর ধরে সংঘাতে লিপ্ত ইসরায়েল এবং গাজা নিয়ন্ত্রণকারী সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী হামাস—উভয়েই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনার প্রথম পর্যায় বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দিয়ে স্বাক্ষর করেছে। এই ঐতিহাসিক চুক্তির ঘোষণা দিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।
বুধবার (৮ অক্টোবর) নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে এক বার্তায় ট্রাম্প এই ঘোষণা দেন।
চুক্তি কী বলছে?
ট্রাম্প তার বার্তায় বলেছেন:
“আমি খুবই গর্বের সঙ্গে ঘোষণা করছি যে ইসরায়েল এবং হামাস উভয়েই আমাদের প্রস্তাবিত শান্তি পরিকল্পনার প্রথম পর্যায় বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দিয়ে স্বাক্ষর করেছে। খুব শিগগিরই সব জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হবে এবং সমঝোতার ভিত্তিতে ইসরায়েলও গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহার করবে।”
ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধের অন্যতম মধ্যস্থতাকারী দেশ কাতারও যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাজেদ আল আনসারি এক্স-এ (সাবেক টুইটার) পোস্ট করা এক বার্তায় বলেছেন, “আজ রাতে গাজায় শান্তি স্থাপন সংক্রান্ত নতুন পরিকল্পনার প্রথম পর্যায়ের সমস্ত শর্ত ও বিধান বাস্তবায়নে একটি চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে।”
তিনি আরও জানান, এই চুক্তি স্বাক্ষরের জেরে গাজায় যুদ্ধের অবসান ঘটবে, সমস্ত ইসরায়েলি জিম্মি ও ফিলিস্তিনি কারাবন্দিরা মুক্তি পাবে এবং গাজায় ত্রাণ সামগ্রী প্রবেশে আর কোনো বাধা থাকবে না। তবে চুক্তির বিস্তারিত বিষয়গুলো পরবর্তীতে ঘোষণা করা হবে।
আলোচনার প্রেক্ষাপট
গত ২৯ সেপ্টেম্বর সোমবার হোয়াইট হাউসে ট্রাম্প গাজায় যুদ্ধবিরতি সংক্রান্ত নতুন একটি পরিকল্পনার ব্যাপারে ঘোষণা দিয়েছিলেন। সেই সময় তিনি বলেছিলেন, তার পরিকল্পনার কপি ইসরায়েল, হামাস এবং অপর দুই মধ্যস্থতাকারী দেশ মিসর ও কাতারকে পাঠানো হয়েছে এবং হামাস ব্যতীত বাকি সবাই তাতে সম্মতি দিয়েছে।
পরে ৩ অক্টোবর হামাস সম্মতি জানানোর পরদিন ৪ অক্টোবর ট্রাম্প ইসরায়েলকে গাজায় বোমাবর্ষণ বন্ধ করতে বলেন। এরপর ৬ অক্টোবর মিসরের শারম আল শেখ-এ ইসরায়েল, হামাস, মিসর, যুক্তরাষ্ট্র ও কাতারের প্রতিনিধিদের মধ্যে বৈঠক শুরু হয়। দুই দিনেরও বেশি সময়ের আলোচনার পর চুক্তির প্রাথমিক পর্যায় বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতিতে ইসরায়েল-হামাস স্বাক্ষর করল।
এই চুক্তি স্বাক্ষরের কয়েক ঘণ্টা আগে ট্রাম্প ইঙ্গিত দিয়েছিলেন যে, তিনি ‘এ সপ্তাহের শেষের দিকে, সম্ভবত রোববার, মধ্যপ্রাচ্যে যেতে পারেন।’
সূত্র: এএফপি
১৬তম মুসলিম হিসেবে নোবেল পুরস্কার জিতলেন ওমর এম ইয়াগি
রসায়নে বিশেষ অবদানের জন্য এ বছর নোবেল পুরস্কার জিতেছেন ফিলিস্তিনি বংশোদ্ভূত বিজ্ঞানী ওমর এম ইয়াগি। বুধবার (৮ অক্টোবর) রয়্যাল সুইডিশ অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেসের ঘোষণা অনুযায়ী, জাপানের সুসুমু কিতাগাওয়া এবং যুক্তরাজ্যের রিচার্ড রবসনের সঙ্গে যৌথভাবে তিনি এই সম্মান অর্জন করেছেন। এই তিন বিজ্ঞানী ধাতু-জৈব কাঠামো বা ‘মেটাল অর্গানিক ফ্রেমওয়ার্ক’ (MOFs) উদ্ভাবনের জন্য যৌথভাবে এ পুরস্কার পেয়েছেন। এই স্বীকৃতির মাধ্যমে ওমর এম ইয়াগি হলেন নোবেল পুরস্কার জেতা ষোড়শ মুসলিম বিজ্ঞানী।
নোবেল জয়ের কারণ ও তাৎপর্য
রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি অব সায়েন্সেস জানিয়েছে, এই তিন বিজ্ঞানী এমন এক নতুন ধরনের আণবিক স্থাপত্য তৈরি করেছেন, যার মধ্যে গ্যাস ও রাসায়নিক পদার্থ সহজে চলাচল করতে পারে। এই কাঠামো পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তির ক্ষেত্রে এক বৈপ্লবিক সম্ভাবনা তৈরি করেছে।
এই কাঠামো ব্যবহার করে:
মরুভূমির বাতাস থেকে পানি আহরণ।
কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্যাস ধরে রাখা।
বিষাক্ত গ্যাস জমিয়ে রাখা এবং বিভিন্ন রাসায়নিক বিক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করা যায়।
ওমর এম ইয়াগির জীবন ও কর্ম
ওমর মওয়ানেস ইয়াগি ১৯৬৫ সালে জর্ডানের আম্মানে এক ফিলিস্তিনি শরণার্থী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা-মা পড়তে বা লিখতে পারতেন না এবং পরিবারের আর্থিক অবস্থা ছিল দুর্বল। মাত্র ১৫ বছর বয়সে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান। তিনি হাডসন ভ্যালি কমিউনিটি কলেজ এবং ইউনিভার্সিটি অ্যাট অ্যালবানি থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন এবং ১৯৯০ সালে ইউনিভার্সিটি অব ইলিনয় থেকে পিএইচডি লাভ করেন।
অ্যাকাডেমিক ক্যারিয়ারে তিনি হার্ভার্ড, অ্যারিজোনা স্টেট ইউনিভার্সিটি ও ইউনিভার্সিটি অব মিশিগানের মতো প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ছিলেন। ২০১২ সালে তিনি ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, বার্কলেতে যোগ দেন এবং বর্তমানে সেখানে জেমস ও নেলজে ট্রেটার প্রফেসর অব কেমিস্ট্রি পদে রয়েছেন। ২০২১ সালে সৌদি আরবের রাজার রিয়াল ডিক্রি অনুযায়ী তিনি সৌদি নাগরিকত্ব পান।
নোবেল জেতার পর প্রথম প্রতিক্রিয়ায় ওমর বলেন, “আমার বাবা-মা খুব একটা পড়তে বা লিখতে পারতেন না। এটা কঠিন একটা যাত্রা ছিল, বিজ্ঞানই এটা করে দেখানোর সুযোগ দিয়েছে।”
সূত্র: নোবেল কমিটি, উইকিপিডিয়া
রসায়নে নোবেল: জল সংগ্রহ ও গ্যাস নিয়ন্ত্রণে বিজ্ঞানীদের যুগান্তকারী আবিষ্কার
রসায়ন বিজ্ঞানে বিশেষ অবদানের জন্য এ বছর নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন তিন বিজ্ঞানী—সুসুমু কিতাগাওয়া, রিচার্ড রবসন এবং ওমার এম ইয়াগি। তারা ‘মেটাল অর্গানিক ফ্রেমওয়ার্ক’ (Metal Organic Frameworks - MOFs) নামক এক যুগান্তকারী উপাদান তৈরি করার স্বীকৃতিস্বরূপ এই নোবেল পেয়েছেন।
বুধবার (৮ অক্টোবর) বাংলাদেশ সময় বিকেল পৌনে ৪টার দিকে সুইডেনের স্টকহোমে রয়্যাল সুইডিশ অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেস বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করে।
আবিষ্কার ও তার তাৎপর্য
নোবেল কর্তৃপক্ষের তথ্যমতে, নোবেল পাওয়া এই তিন বিজ্ঞানী এমন কিছু আণবিক কাঠামো তৈরি করেছেন, যেগুলোর মধ্য দিয়ে বিভিন্ন গ্যাস এবং অন্যান্য রাসায়নিক পদার্থ সহজে চলাচল করতে পারে। এই ছিদ্রযুক্ত পদার্থগুলোকেই মেটাল-অর্গানিক ফ্রেমওয়ার্কস বলা হয়।
তাদের উদ্ভাবিত এই কাঠামো ব্যবহার করে:
জল সংগ্রহ: মরুভূমির বাতাস থেকেও পানি সংগ্রহ করা যায়।
গ্যাস নিয়ন্ত্রণ: কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্যাস ধরে রাখা বা বিষাক্ত গ্যাস জমিয়ে রাখা সম্ভব।
রাসায়নিক বিক্রিয়া: বিভিন্ন রাসায়নিক বিক্রিয়াকে দ্রুত (ত্বরান্বিত) করা যায়।
এই কাঠামোতে ধাতব আয়নগুলো কোণার খুঁটির মতো কাজ করে এবং সেগুলোকে লম্বা লম্বা জৈব (কার্বনভিত্তিক) অণু বা মলিকিউল দিয়ে যুক্ত করা হয়। এই ধাতব আয়ন ও অণুগুলো একসঙ্গে মিলে এমন এক ধরনের স্ফটিক তৈরি করে, যার ভেতরে অনেক বড় বড় গহ্বর বা ছিদ্র থাকে।
নোবেল পুরস্কারের ইতিহাস
এখন পর্যন্ত রসায়নে ১১৬ বার নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। এই ক্যাটাগরিতে সবচেয়ে বয়স্ক ব্যক্তি হিসেবে ২০১৮ সালে ৯৭ বছর বয়সে নোবেল জেতেন জন বি গুডএনাফ। অপরদিকে, ১৯৩৫ সালে মাত্র ৩৫ বছর বয়সে সম্মানজনক এই পদক জেতেন ফেদ্রিক জোলিয়ট।
পাকিস্তানে আফগান সীমান্তের কাছে সামরিক কনভয়ে বোমা ও বন্দুক হামলা
আফগান সীমান্তের কাছে বুধবার (৮ অক্টোবর) পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর কনভয়ে অতর্কিত হামলা চালিয়েছে জঙ্গিরা। এই হামলায় অন্তত নয়জন সেনা এবং দুইজন অফিসার নিহত হয়েছেন। বার্তা সংস্থা রয়টার্স সূত্রের বরাত দিয়ে এই তথ্য জানিয়েছে।
ইতিমধ্যে এই হামলার দায় স্বীকার করেছে পাকিস্তানি তালেবান, তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান (টিটিপি)।
হামলার ধরন ও সেনাবাহিনীর অভিযান
পাকিস্তানের নিরাপত্তা কর্মকর্তারা রয়টার্সকে জানান, প্রথমে রাস্তার পাশে পুঁতে রাখা বোমা কনভয়ে আঘাত হানে। এরপর বহু সংখ্যক জঙ্গি অতর্কিতে বন্দুক হামলা চালায়। দেশটির উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় কুররাম জেলায় এই ঘটনা ঘটেছে বলে পাঁচজন নিরাপত্তা কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন।
অন্যদিকে, এক বিবৃতিতে পাকিস্তান সেনাবাহিনী জানিয়েছে, কুররাম সংলগ্ন অরাকজাই জেলায় পরিচালিত এক অভিযানে ১৯ জন জঙ্গি নিহত হয়েছে। সেনাবাহিনী বলেছে, এই অভিযানের সময়ই সেনারা নিহত হয়।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পাকিস্তানে সন্ত্রাসী হামলার পরিমাণ অনেক বেড়েছে, বিশেষ করে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীকে লক্ষ্য করে এসব হামলা চালানো হচ্ছে। রয়টার্স জানিয়েছে, টিটিপি দেশটির সরকার উৎখাতের মাধ্যমে কঠোর ইসলামিক শাসন বাস্তবায়ন করতে চায় এবং এই লক্ষ্যে তারা নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর হামলা বাড়িয়েছে।
নোবেল দৌড়ে ‘গ্রিন কেমিস্ট্রি’—জলবায়ু সংকটের যুগে বৈজ্ঞানিক আশার আলো
বিশ্বজুড়ে বৈজ্ঞানিক মহলে জল্পনা চলছে—এবারের নোবেল রসায়ন পুরস্কার কারা পাচ্ছেন? নতুন যৌগ উদ্ভাবন, শক্তি সংরক্ষণের অভিনব প্রযুক্তি এবং পরিবেশবান্ধব রসায়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা গবেষকেরাই এ বছর শিরোপার দৌড়ে রয়েছেন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।
রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি অব সায়েন্সেস বুধবার স্টকহোমে বাংলাদেশ সময় বিকেল ৫টা ৪৫ মিনিটে (স্থানীয় সময় সকাল ১১:৪৫) ২০২৫ সালের রসায়নে নোবেল বিজয়ীর নাম ঘোষণা করবে।
এর আগে মঙ্গলবার পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন ব্রিটেনের জন ক্লার্ক, ফ্রান্সের মিশেল দেভোরে এবং যুক্তরাষ্ট্রের জন মার্টিনিস—যারা কোয়ান্টাম মেকানিকসকে ব্যবহারিক প্রযুক্তির জগতে নিয়ে আসার ক্ষেত্রে যুগান্তকারী ভূমিকা রেখেছেন।
সুইডেনের পাবলিক ব্রডকাস্টার সভারিয়েস রেডিও–এর বিজ্ঞান সম্পাদক লার্স ব্রোস্ট্রম এএফপিকে বলেন, “আমার মনে হয় এবারের রসায়ন পুরস্কার এমন কোনো আবিষ্কারে যাবে, যা জলবায়ু পরিবর্তন বা পরিবেশ সংরক্ষণের সঙ্গে সম্পর্কিত। কারণ এই সময়ে পৃথিবীর সবচেয়ে জরুরি বৈজ্ঞানিক প্রয়োজন সেটাই।”
বহু বছর ধরে আলোচনায় আছেন মার্কিন-জর্ডানিয়ান রসায়নবিদ ওমর ইয়াগি। ব্রোস্ট্রম মনে করেন, ইয়াগির কাজ জলবায়ু ও পরিবেশ দুয়ের ক্ষেত্রেই তাৎপর্যপূর্ণ। তিনি বলেন, “ওই ধরনের রসায়ন নানা ধরনের পরিবেশগত সমস্যার সমাধানে অনুঘটকের ভূমিকা রাখতে পারে।”
ওমর ইয়াগি মেটাল-অর্গানিক ফ্রেমওয়ার্ক (MOF) নামের এক ধরনের ছিদ্রযুক্ত যৌগিক পদার্থ তৈরি করেন, যা বর্তমানে নানা বাণিজ্যিক পণ্যে ব্যবহৃত হচ্ছে—টক্সিন শোষণ ও পরিশোধন, ক্যাটালিস্ট হিসেবে কাজ করা এমনকি মরুভূমির বাতাস থেকে পানি আহরণেও এটি ব্যবহৃত হচ্ছে।
এই ক্ষেত্রের আরও দুই পথপ্রদর্শক—জাপানের সুসুমু কিতাগাওয়া ও মাকোতো ফুজিতা—এর আগেও ইয়াগির সঙ্গে একযোগে নোবেল আলোচনায় এসেছিলেন। পশ্চিম তীরে জন্ম নেওয়া মার্কিন অধ্যাপক ওমর কে. ফারহাও এমওএফ প্রযুক্তির ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য নাম। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের নর্থওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক।
গবেষণা বিশ্লেষণ সংস্থা ক্ল্যারিভেট–এর প্রধান বিশ্লেষক ডেভিড পেন্ডলবুরি মনে করেন, “সবুজ রসায়ন” বা গ্রিন কেমিস্ট্রি–তে অবদানের জন্য এ বছর ফ্রান্সের বিজ্ঞানী জ্যঁ-মারি তারাসকন-ও সম্ভাব্য বিজয়ী হতে পারেন। তিনি ব্যাটারি প্রযুক্তি ও শক্তি সঞ্চয় ও রূপান্তরে মৌলিক অবদান রেখেছেন।
কেমিস্ট্রি ভিউজ–এর প্রতিবেদনে সম্ভাব্য বিজয়ীদের তালিকায় রয়েছেন তাইওয়ানিজ-মার্কিন জীবরসায়নবিদ চি-হুয়ে ওং, যিনি জটিল কার্বোহাইড্রেট ও গ্লাইকোপ্রোটিনের সংশ্লেষণে অভিনব পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছেন। এর ফলে চিকিৎসাবিজ্ঞানে এসব উপাদানের প্রয়োগ সহজ হয়েছে।
তালিকায় আরও রয়েছেন মার্কিন রাসায়নিক প্রকৌশলী রবার্ট ল্যাঙ্গার, যিনি ওষুধ সরবরাহব্যবস্থা, বায়োমেটেরিয়াল ও টিস্যু ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে বিপ্লব ঘটিয়েছেন। একইভাবে, মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ও স্নায়ুবিজ্ঞানী কার্ল ডেইসেরথ–এর নামও এক দশক ধরে আলোচনায় রয়েছে। তিনি আলো ব্যবহার করে কোষ নিয়ন্ত্রণের কৌশল অপ্টোজেনেটিক্স উদ্ভাবনের জন্য পরিচিত।
জার্মান বিজ্ঞানী হারবার্ট ডব্লিউ. রোস্কি, যিনি অজৈব রসায়ন ও নতুন যৌগ সংশ্লেষণে পথিকৃৎ, তাকেও সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে দেখা হচ্ছে।
ব্রোস্ট্রম আরও উল্লেখ করেন, সম্প্রতি আলোচনায় উঠে আসছে মার্কিন রাসায়নিক প্রকৌশলী হ্যারি বি. গ্রে–এর নাম। তিনি জীবন্ত কোষে ইলেকট্রনের গতি নিয়ে কাজ করেছেন, যা আলোকসংশ্লেষণ ও কোষের শক্তি ব্যবহারের মৌলিক প্রক্রিয়ার সঙ্গে সম্পর্কিত। “এই ধরনের মৌলিক গবেষণাই সাধারণত নোবেল পুরস্কারের যোগ্য,” বলেন তিনি।
গত বছর রসায়নে নোবেল পুরস্কার পান যুক্তরাষ্ট্রের ডেভিড বেকার ও জন জাম্পার এবং যুক্তরাজ্যের ডেমিস হাসাবিস। তারা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও কম্পিউটিং প্রযুক্তির সাহায্যে প্রোটিনের গঠন নির্ণয়ে যুগান্তকারী কাজ করেন—যা জীববিজ্ঞানে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করে।
এর আগে সোমবার চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার পান যুক্তরাষ্ট্রের মেরি ব্রাঙ্কো ও ফ্রেড র্যামসডেল এবং জাপানের শিমন সাকাগুচি। তাঁরা মানবদেহের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার “নিরাপত্তা প্রহরী” শনাক্ত করেন।
বৃহস্পতিবার ঘোষণা করা হবে সাহিত্য বিষয়ে নোবেল পুরস্কার, শুক্রবার শান্তিতে এবং ১৩ অক্টোবর অর্থনীতিতে এ বছরের নোবেল মৌসুমের পরিসমাপ্তি ঘটবে।
প্রতি নোবেল পুরস্কারের সঙ্গে থাকে একটি স্বর্ণপদক, একটি ডিপ্লোমা এবং ১২ লাখ মার্কিন ডলারের পুরস্কার অর্থ, যা একাধিক বিজয়ী হলে ভাগাভাগি করা হয়।
বিজয়ীরা তাঁদের পুরস্কার গ্রহণ করবেন ১০ ডিসেম্বর স্টকহোমে সুইডেনের রাজা কার্ল ষোড়শ গুস্তাফের হাত থেকে। এ দিনটি নোবেল পুরস্কারের প্রতিষ্ঠাতা বিজ্ঞানী আলফ্রেড নোবেলের মৃত্যুবার্ষিকী, যিনি ১৮৯৬ সালে মৃত্যুর আগে নিজের উইলেই এই বিশ্বখ্যাত পুরস্কারের ভিত্তি স্থাপন করেন।
-আশিক রহমান
ট্রাম্পের সফর ঘিরে মালয়েশিয়ায় উত্তেজনা, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আসন্ন মালয়েশিয়া সফর বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ করেছে বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী। মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) দুপুরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সামনে এই বিক্ষোভে অংশ নেয় শিক্ষার্থীরা। তারা ‘অপজ ট্রাম্প সেক্রেটারিয়েট’ নামের প্রো–প্যালেস্টাইন ছাত্রজোটের ব্যানারে একত্রিত হয়।
স্লোগান ও স্মারকলিপি
বিক্ষোভকারীরা ড্রাম বাজিয়ে এবং স্লোগান দিতে দিতে ট্রাম্প ও ইসরায়েলবিরোধী ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তাদের হাতে থাকা ব্যানার ও প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল—‘ডাম্প ট্রাম্প’, ‘নো ওয়েলকাম ফর ওয়ার ক্রিমিনালস’ এবং ‘ফ্রি প্যালেস্টাইন’।
পরে বিক্ষোভকারীদের একটি প্রতিনিধিদল প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রবেশ করে প্রধানমন্ত্রী দাতুক সেরি আনোয়ার ইব্রাহিমের কাছে একটি স্মারকলিপি হস্তান্তর করে। স্মারকলিপিতে তারা ট্রাম্পের আমন্ত্রণ বাতিল, ইসরায়েল–সংশ্লিষ্ট বিনিয়োগ থেকে সরকারকে বিচ্ছিন্ন করা এবং ফিলিস্তিনের প্রতি মালয়েশিয়ার ঐতিহ্যগত সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করার আহ্বান জানান।
বিক্ষোভের আয়োজকরা জানান, তারা আগামী দিনগুলোতে আরও কর্মসূচি পালন করবেন। ২৬ অক্টোবর আমপাং পার্ক এলাকায় ‘ডাম্প ট্রাম্প’ নামে এক বৃহৎ সমাবেশ আয়োজন করার কথা রয়েছে, যেদিন ট্রাম্পের মালয়েশিয়া সফরের কথা।
ধর্মীয় ও বুদ্ধিজীবী মহলের প্রতিক্রিয়া
ট্রাম্পের সফর বাতিলের দাবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও জোরালো হচ্ছে। সরকার যুক্তরাষ্ট্রকে আসিয়ানের সংলাপ অংশীদার হিসেবে গুরুত্ব দেওয়ার যুক্তি দিলেও, বিষয়টি নিয়ে ধর্মীয় ও বুদ্ধিজীবী মহলে তীব্র বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে।
ফেডারেল টেরিটোরিজের মুফতি আহমাদ ফাউয়াজ ফাদজিল ট্রাম্পবিরোধী আন্দোলনকে ‘অতি আবেগপ্রবণ ও উগ্র মনোভাবের প্রকাশ’ বলে মন্তব্য করলে মুসলিম সমাজে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। ইসলামিক রেনেসাঁ ফ্রন্টের (আইআরএফ) পরিচালক ড. আহমাদ ফারুক মুসা ওই মন্তব্যের কঠোর নিন্দা জানিয়ে বলেন, ফিলিস্তিনি গণহত্যার মূল পৃষ্ঠপোষককে স্বাগত জানানো প্যালেস্টাইন ইস্যুর প্রতি সবচেয়ে বড় বিশ্বাসঘাতকতা।
বুদ্ধিজীবী চন্দ্র মুজাফফরও প্রধানমন্ত্রীকে ‘ভদ্র ও মর্যাদাপূর্ণ ভাষায় ট্রাম্পের আমন্ত্রণ প্রত্যাহার’ করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর চলমান গণহত্যায় ট্রাম্পের প্রত্যক্ষ ভূমিকা রয়েছে। এই কারণে এমন এক ব্যক্তিকে স্বাগত জানানো মালয়েশিয়ার জনগণের কাছে ঘৃণার কারণ হবে।
মালায়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইউএম) একটি প্রো–প্যালেস্টাইন বিক্ষোভ প্রশাসনের বাধার মুখে পড়ায় শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ আরও তীব্র হয়েছে। সব মিলিয়ে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের সফর ঘিরে মালয়েশিয়ায় রাজনৈতিক অঙ্গন ও জনমনে উত্তেজনা ক্রমেই বাড়ছে।
যুদ্ধ সমাপ্তি ও সেনা প্রত্যাহারের নিশ্চয়তা চাইল হামাস, আলোচনা চলছে মিসরে
ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস যুদ্ধবিরতি চুক্তির জন্য গাজা উপত্যকা থেকে ইসরায়েলি সেনাদের সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাহারের নিশ্চয়তা এবং এর ওপর আন্তর্জাতিক গ্যারান্টি চেয়েছে। মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) মিসরের শারম আল শেখ শহরে দ্বিতীয় দিনের মতো ইসরায়েলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে পরোক্ষ আলোচনায় বসে হামাস।
জিম্মি মুক্তি ও হামাসের শর্ত
জিম্মি মুক্তি: হামাস কর্মকর্তারা ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তির সময়সূচি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। তাদের দাবি, জিম্মি মুক্তির শেষ ধাপের মধ্যেই উপত্যকা থেকে চূড়ান্তভাবে ইসরায়েলি সেনাদের প্রত্যাহার করতে হবে।
আস্থার অভাব: মিসরের রাষ্ট্র-নিয়ন্ত্রিত আল-কাহেরা নিউজের মতে, হামাসের শীর্ষ আলোচক খলিল আল-হায়া বলেছেন, হামাস ‘এক সেকেন্ডের জন্যও দখলদারিত্বের ওপর আস্থা রাখে না’।
স্থায়ী গ্যারান্টি: ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আগের দুটি যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে তিনি বলেন, গাজায় যুদ্ধ শেষ হবে এবং পুনরায় শুরু হবে না—হামাস এর ‘প্রকৃত গ্যারান্টি’ চায়।
এই আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্র, কাতার ও মিসরের প্রতিনিধিরা মধ্যস্থতাকারী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। বুধবার (৮ অক্টোবর) তৃতীয় দিনের আলোচনায় কাতারের প্রধানমন্ত্রীরও অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে।
নেতানিয়াহুর ‘অস্তিত্বের যুদ্ধ’ এবং ট্রাম্পের আশ্বাসমার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জিম্মি মুক্তির পর ‘ইসরায়েল গাজায় পুনরায় হামলা করবে না’ বলে আশ্বাস দিয়েছেন।
তবে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কথায় কোনো নিশ্চয়তার আভাস মেলেনি। হামাসের নেতৃত্বাধীন আক্রমণের বার্ষিকী উপলক্ষে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে তিনি এই সংঘাতকে ‘ইসরাইলের অস্তিত্ব এবং ভবিষ্যতের জন্য যুদ্ধ’ বলে অভিহিত করেন। যুদ্ধবিরতি আলোচনার দিকে সরাসরি ইঙ্গিত না করেই নেতানিয়াহু বলেন, ইসরায়েল ‘সিদ্ধান্তের এক দুর্ভাগ্যজনক দিনে’ প্রবেশ করছে।
নেতানিয়াহুর ভাষায়, ইসরায়েল যুদ্ধের সমস্ত লক্ষ্য অর্জনের জন্য কাজ চালিয়ে যাবে—যার মধ্যে রয়েছে সমস্ত জিম্মিদের ফিরিয়ে আনা, হামাসের শাসনের অবসান ঘটানো এবং গাজা যাতে আর ইসরায়েলের জন্য হুমকি না হয় তা নিশ্চিত করা।
সূত্র: আল জাজিরা।
বাংলাদেশ কিনছে চীনের জে-১০ সিই মাল্টিরোল যুদ্ধবিমান
বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর (বিএএফ) আধুনিকীকরণ এবং জাতীয় আকাশ প্রতিরক্ষা শক্তিশালী করতে বড় ধরনের পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে সরকার। এর অংশ হিসেবে চীনের তৈরি ২০টি জে-১০ সিই মাল্টিরোল যুদ্ধবিমান কেনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ২২০ কোটি মার্কিন ডলার—যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ২৭,০৬০ কোটি টাকা।
সরকারি নথি অনুযায়ী, যুদ্ধবিমানগুলো কেনা, প্রশিক্ষণ, যন্ত্রাংশ ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক খরচ মিলিয়ে এই প্রকল্প ২০২৭ সালের মধ্যে বাস্তবায়িত হবে। প্রকল্পের অর্থ পরিশোধ করা হবে ১০ বছরের কিস্তিতে, যা ২০৩৫-৩৬ অর্থবছর পর্যন্ত চলবে।
জে-১০ সিই: চীনা বিমানবাহিনীর রপ্তানি সংস্করণ
জে-১০ সিই যুদ্ধবিমান মূলত চীনের বিমানবাহিনীতে ব্যবহৃত জে-১০সি-এর রপ্তানি সংস্করণ। এটি একটি ৪.৫ প্রজন্মের মাল্টিরোল কমব্যাট এয়ারক্রাফট, যা আকাশে থেকে আকাশ এবং আকাশ থেকে স্থল—দুই ধরনের যুদ্ধেই সমান পারদর্শী।
আন্তর্জাতিক আলোচনা: গত মে মাসে ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে সংঘাত চলাকালে পাকিস্তান দাবি করেছিল, তাদের জে-১০ সিই যুদ্ধবিমান ভারতের রাফায়েল জেট ভূপাতিত করেছে। এরপর থেকেই জে-১০ সিই বিশ্বজুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে আসে।
বিশ্লেষকদের মতে, জে-১০ সিই সংযোজনের মাধ্যমে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী নতুন প্রযুক্তি, উন্নত প্রশিক্ষণ সুবিধা এবং আকাশ প্রতিরক্ষা সক্ষমতায় নতুন যুগে প্রবেশ করবে।
চুক্তি ও কাঠামো
এই ক্রয় কার্যক্রম বাস্তবায়ন হবে জিটুজি (গভর্নমেন্ট-টু-গভর্নমেন্ট) পদ্ধতিতে চীনের সঙ্গে সরাসরি চুক্তির মাধ্যমে। এর জন্য ১১ সদস্যের একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটি গঠন করা হয়েছে, যার নেতৃত্বে রয়েছেন বিমানবাহিনীর প্রধান।
ব্যয়ের হিসাব:
২০টি জেটের মূল্য: প্রায় ১২০ কোটি ডলার (১৪,৬০০ কোটি টাকা)। প্রতিটি জেটের আনুমানিক মূল্য ৬ কোটি ডলার।
অন্যান্য ব্যয়: প্রশিক্ষণ, যন্ত্রপাতি, ফ্রেইট কস্ট ও আনুষঙ্গিক ব্যয় বাবদ আরও ৮২ কোটি ডলার।
মোট ব্যয়: বিমা, ভ্যাট, কমিশনসহ সব মিলিয়ে মোট ব্যয় ২২০ কোটি ডলার।
এই কমিটি খসড়া চুক্তিপত্র যাচাইবাছাই, ক্রয়পদ্ধতির উপযোগিতা নির্ধারণ এবং মূল্য নির্ধারণের শর্ত চূড়ান্ত করবে। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের গত মার্চের চীন সফরের পর এই ক্রয় নিয়ে প্রাথমিক আলোচনা শুরু হয়েছিল।
সূত্র : দ্য বিজনেস স্টান্ডার্ড
পাঠকের মতামত:
- তহবিল সংকটে জাতিসংঘ: শান্তিরক্ষী বাহিনী কমছে ২৫ শতাংশ
- নোবেল শান্তি পুরস্কার: আগামীকাল ঘোষণা, ট্রাম্পের ভাগ্য নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে
- শেখ হাসিনার সঙ্গে পাঁচজন উপদেষ্টা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে: রাশেদ খান
- রাশিফল: ৯ অক্টোবর আপনার জীবনের চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা
- শর্ত লঙ্ঘনের বিশাল অভিযোগ: বিসিবি নির্বাচন নিয়ে কেন এত বিতর্ক?
- নির্বাচন সামনে রেখে এনসিপিকে নিয়ে বিএনপি-জামায়াতে নীরব প্রতিযোগিতা
- ট্রাম্পের শান্তি পরিকল্পনার প্রথম পর্যায়ে সই করল ইসরায়েল-হামাস
- ওমানে ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনা: নিহত ৭ বাংলাদেশি
- জেনে নিন আগামীকাল ঢাকা ও অন্যান্য বিভাগের নামাজের সময়সূচি
- অল্প রানে অলআউট বাংলাদেশ, আফগানদের বিপক্ষে কঠিন চ্যালেঞ্জ
- মানসিক চাপ ও হতাশা দূর করুন: প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় রাখুন এই ১০ খাবার
- শহিদুল আলমের আটক নিয়ে অপপ্রচার: বাংলাফ্যাক্ট যা জানাল
- স্মার্টফোন ব্যবহারে কঠোর আইন, দিনে ২ ঘণ্টার বেশি ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা
- জুলাই সনদ বাস্তবায়ন: চূড়ান্ত ঐকমত্যের পথে কমিশন
- কন্যা হত্যা ও গোত্রীয় সংঘাতের যুগে এক বিশ্বস্ত শিশুর বেড়ে ওঠা
- নতুন দুটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলের অনুমোদন, নেপথ্যে এনসিপি ও বিএনপি’র নেতা
- ২১ শতকের নীরব ঘাতক: কোলোরেক্টাল ক্যানসারে ঝুঁকি বাড়াচ্ছে যে খাবার
- হোয়াটসঅ্যাপে আর লাগবে না নম্বর,ইউজার নেম দিয়েই করা যাবে যোগাযোগ
- ১৬তম মুসলিম হিসেবে নোবেল পুরস্কার জিতলেন ওমর এম ইয়াগি
- আল-আকসা ও শাম: কেন এই ভূখণ্ডকে পৃথিবীর সভ্যতার কেন্দ্র বলা হয়?
- স্বনির্ভরতা অর্জনেই জোর প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের
- সতর্কতা জারি: ঢাকাসহ ২০ জেলার ওপর দিয়ে ৬০ কিমি বেগে ঝোড়ো হাওয়ার শঙ্কা
- উপদেষ্টাদের ‘সেফ এক্সিট’ নিয়ে বিতর্ক, রিজওয়ানা হাসান চাইলেন নাম
- ৫টি বিশেষ ধরনের মধু, যা আপনার স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী
- শেখ হাসিনাসহ ২৮ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি
- রসায়নে নোবেল: জল সংগ্রহ ও গ্যাস নিয়ন্ত্রণে বিজ্ঞানীদের যুগান্তকারী আবিষ্কার
- সঙ্গী কি আপনাকে এড়িয়ে চলছেন? এই ৬টি লক্ষণ দেখলেই বুঝবেন
- ১৩ গ্রামের ফোন! বিশ্ব কাঁপানো Zanco Tiny T1
- আফগানিস্তান-বাংলাদেশ ওয়ানডে: টিভিতে ছাড়াও মোবাইলে দেখবেন যেভাবে
- যানজটে আটকা পড়ে গাড়ি ছেড়ে মোটরসাইকেলে উপদেষ্টা
- ৮ অক্টোবরের ডিএসই লেনদেনের সারসংক্ষেপ প্রকাশ
- ৮ অক্টোবরের ডিএসই লেনদেনে শীর্ষ লুজার তালিকা প্রকাশ
- ৮ অক্টোবরের ডিএসই লেনদেনে শীর্ষ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- নিবন্ধন ছাড়াই ৫ কোটি শিশুকে টিকা দেবে সরকার
- সরকারের উদ্দেশে মির্জা ফখরুলের আহ্বান: ‘আর বিলম্ব নয়’
- পাকিস্তানে আফগান সীমান্তের কাছে সামরিক কনভয়ে বোমা ও বন্দুক হামলা
- জোরপূর্বক গুমের অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগপত্র
- আর্সেনালের মাঠে লিয়ঁর প্রতিশোধ, বার্সার ঝড়ে উড়ে গেল বায়ার্ন
- চট্টগ্রামে উত্তেজনা: সড়ক দুর্ঘটনায় নেতার মৃত্যু ঘিরে হেফাজতের অবরোধ
- সিরিয়ার বিপক্ষে জয় দিয়ে শুরু বাংলাদেশের অনূর্ধ্ব-১৭ নারী দল
- নোবেল দৌড়ে ‘গ্রিন কেমিস্ট্রি’—জলবায়ু সংকটের যুগে বৈজ্ঞানিক আশার আলো
- রেকর্ড ছুঁয়েছে সোনার দাম: বিশ্ব অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তায় বিনিয়োগকারীদের নিরাপদ আশ্রয় সোনা
- ‘আমাকে অপহরণ করা হয়েছে’—ফেসবুক ভিডিওতে শাহিদুল আলমের দাবি
- নাহিদ ইসলামের বক্তব্যে রাজনৈতিক অঙ্গনে ‘সেফ এক্সিট’ বিতর্ক
- ট্রাম্পের সফর ঘিরে মালয়েশিয়ায় উত্তেজনা, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ
- অন্তর্বর্তী সরকার শেখ হাসিনাকে দেশত্যাগে বাধ্য করেছে: শেখ হাসিনার আইনজীবী
- নুরুল হক নুরের বিস্ফোরক মন্তব্য এনসিপি নেতাদের টিভি মালিকানা নিয়ে
- হাটহাজারীতে হেফাজতের অবরোধ: চট্টগ্রাম-রাঙামাটি মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ
- যুদ্ধ সমাপ্তি ও সেনা প্রত্যাহারের নিশ্চয়তা চাইল হামাস, আলোচনা চলছে মিসরে
- আগামীকাল বুধবার বাংলাদেশের প্রধান অঞ্চলের নামাজের সময়সূচি
- মেথি কি সত্যিই ‘সুপারফুড’? বিজ্ঞান, উপকার, ঝুঁকি ও খাওয়ার সেরা সময়
- সর্ব রোগের ঔষধ কালিজিরা’র আদ্যপ্রান্ত: ঐতিহ্য, বিজ্ঞান, ব্যবহার ও সতর্কতা
- ম্যালেরিয়া: কারণ, লক্ষণ, ঝুঁকি, প্রতিরোধ ও চিকিৎসা
- শ্বাসরুদ্ধকর জয়: শেষ মুহূর্তের নাটকীয়তায় আফগানিস্তানকে হারিয়ে সিরিজ নিশ্চিত করল বাংলাদেশ
- ঘৃতকুমারী বা অ্যালোভেরা: কাঁটাযুক্ত পাতার ভেতর লুকানো আরোগ্যের জেল
- “বিবেকের গর্জন”—গাজা ফ্লোটিলায় শহিদুল আলমকে প্রশংসা করলেন তারেক রহমান
- কোরআন অবমাননা: নর্থ সাউথ থেকে শিক্ষার্থী অপূর্ব পাল স্থায়ীভাবে বহিষ্কার
- ল্যাপটপে পানি পড়লে কী করবেন? যে ৭টি কাজ ভুলেও করা উচিত নয়
- স্বনির্ভরতা অর্জনেই জোর প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের
- আন্দেসের হৃদয়ে এক বিপ্লবী দেশ: বলিভিয়ার ইতিহাস, সংস্কৃতি ও ভবিষ্যতের সম্ভাবনা
- আফ্রিকার হৃদয়ে পাথরের রাজ্য: জিম্বাবুয়ের প্রকৃতি, সংস্কৃতি ও আত্মার গল্প
- গাজা যুদ্ধের অবসানে আলোচনায় রাজি হামাস, ট্রাম্পের ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনা প্রকাশ
- জিরো-ওয়েস্ট কুকিং’: সবজির খোসাও হবে সুস্বাদু রেসিপি
- ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন: প্রস্তুতির সার্বিক চিত্র ও টাইমলাইন
- সালাহউদ্দিন আহমদ: প্রার্থী বাছাইয়ের কাজ চলছে, শিগগিরই মাঠে নামবে একক প্রার্থী