প্রথমবার ঢাকায় ইতালির প্রধানমন্ত্রী, বৈধ অভিবাসনে অগ্রগতির সম্ভাবনা

সত্য নিউজ:
আগস্টের শেষ সপ্তাহে ঢাকায় সফরে আসছেন ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি। এই প্রথমবারের মতো কোনো ইতালীয় সরকারপ্রধান বাংলাদেশ সফর করতে যাচ্ছেন। কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, তাঁর এই সফরে বৈধ অভিবাসনের বিষয়ে বড় অগ্রগতি হতে পারে। পাশাপাশি ব্যবসা-বাণিজ্য, টেক্সটাইল ও প্রতিরক্ষা সহযোগিতাসহ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের বিভিন্ন দিক নিয়েও আলোচনা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, সফরের সম্ভাব্য সময় ও কর্মসূচি নিয়ে উভয় দেশ কাজ করছে। বিশেষ করে অভিবাসন ইস্যুতে ইতালির অবস্থান এবং সম্প্রতি ঢাকায় ইতালির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরের প্রেক্ষাপট বিবেচনায় নেওয়া হচ্ছে। উল্লেখযোগ্যভাবে, এই সফরে "মাইগ্রেশন অ্যান্ড মবিলিটি" বিষয়ক একটি সমঝোতা স্মারক সই করেছে দুই দেশ।
বিশ্লেষকদের মতে, জর্জিয়া মেলোনির সফর মূলত বৈধ অভিবাসন প্রক্রিয়াকে আরও সুসংহত করার উদ্দেশ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। ইতালিতে কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়ানো, প্রশিক্ষণভিত্তিক অভিবাসন এবং দুদেশের শ্রমবাজারের প্রয়োজন বিবেচনায় নিয়ে নতুন চুক্তির সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
এদিকে, অর্থনৈতিক সহযোগিতা বাড়ানোর লক্ষ্যে ইতালির ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দলেরও ঢাকায় আসার কথা রয়েছে। তারা বাংলাদেশি টেক্সটাইল ও শিল্প খাতে বিনিয়োগের সম্ভাবনা নিয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
প্রতিরক্ষা খাতেও দুই দেশের মধ্যে আলোচনা হতে পারে বলে ইঙ্গিত মিলেছে কূটনৈতিক সূত্রে। বাংলাদেশের সঙ্গে সামরিক প্রশিক্ষণ, প্রযুক্তি স্থানান্তর ও সরঞ্জাম কেনাবেচার বিষয়ে ইতালি আগ্রহ দেখাতে পারে।
ক্ষমতার চূড়ান্ত কেন্দ্রীকরণ: পাকিস্তানের রাজনীতিতে সেনাবাহিনী কি সর্বশক্তিমান?
পাকিস্তানের ২৭তম সাংবিধানিক সংশোধনী নিঃসন্দেহে দেশটির রাজনৈতিক যাত্রাপথে একটি নতুন ও অত্যন্ত বিতর্কিত অধ্যায়। বৃহস্পতিবার আইনে স্বাক্ষর হওয়ার পর থেকেই সংশোধনীটি পাকিস্তানি রাজনীতিকে গভীর আলোচনার কেন্দ্রে নিয়ে এসেছে। কারণ এটি শুধু সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনিরকে আজীবন অ-গ্রেফতারযোগ্য ও অ-অভিযোগযোগ্য করে তুলছে না, বরং তাকে তিন বাহিনীর কার্যত সর্বোচ্চ নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত করছে। পাশাপাশি দেশের বিচারব্যবস্থায় এমন কাঠামোগত পরিবর্তন আনছে যা সমালোচকদের মতে পাকিস্তানকে আরও গভীরভাবে সেনা-প্রধানতন্ত্র বা স্বৈরাচারী শাসনের দিকে ঠেলে দেবে।
এই সংশোধনীটি একদিকে সেনাবাহিনীর জন্য নতুন প্রশাসনিক কাঠামোর যুক্তি তৈরি করেছে, অন্যদিকে আদালতগুলোর স্বাধীনতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলেছে। ফলে পাকিস্তান আবারও সেই পুরনো বিতর্কে ফিরে গেছে, যেখানে বেসামরিক ও সামরিক ক্ষমতার দ্বন্দ্ব রাষ্ট্রশাসনের প্রকৃত চরিত্র নির্ধারণ করে।
সামরিক আধিপত্যের নতুন স্থাপত্য
পাকিস্তানের ইতিহাসে সামরিক বাহিনী সবসময়ই একটি সর্বগ্রাসী প্রভাবশালী শক্তি। কখনো প্রকাশ্যে ক্ষমতা দখল, কখনো নেপথ্য নিয়ন্ত্রণ, আর কখনো ‘হাইব্রিড সিস্টেম’ নামের আংশিক গণতান্ত্রিক কাঠামোর ভেতর দিয়ে সেনাবাহিনী ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে থেকেছে।কিন্তু ২৭তম সংশোধনী নিয়ে বিশ্লেষক মাইকেল কুগেলম্যানের মন্তব্য বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। তিনি বলছেন, পাকিস্তান এখন আর হাইব্রিড নয়, বরং “পোস্ট–হাইব্রিড” বাস্তবতায় প্রবেশ করেছে। তার ভাষায়, “এখন বেসামরিক–সামরিক ভারসাম্য যতটা অসম হতে পারে, ঠিক ততটাই অসম অবস্থায় পৌঁছে গেছে।”
এই সংশোধনী অনুসারে আসিম মুনির শুধু সেনাবাহিনী নয়, নৌ ও বিমানবাহিনীও তত্ত্বাবধান করবেন। তার ফিল্ড মার্শাল উপাধি আজীবন বহাল থাকবে। এমনকি অবসর নিলেও রাষ্ট্রপতির পরামর্শে প্রধানমন্ত্রী তার নতুন দায়িত্ব নির্ধারণ করবেন। অর্থাৎ পাকিস্তানের জনজীবনে তিনি আজীবন একটি কেন্দ্রীয় ও প্রভাবশালী চরিত্র হিসেবে অবস্থান করবেন।
সমর্থকদের মতে, এটি সামরিক কমান্ড কাঠামোকে আধুনিক ও স্পষ্ট করেছে। প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ বলেছেন, এটি “আধুনিক যুদ্ধের প্রয়োজনীয়তা অনুযায়ী প্রতিরক্ষাকে পুনর্গঠন” করার অংশ।কিন্তু বিরোধীরা বলছেন, এটি স্পষ্টতই সামরিক কর্তৃত্বকে সর্বোচ্চ পর্যায়ে নিয়ে গেছে, যেখানে বেসামরিক সমাজ ও গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো আরও দুর্বল হবে। মানবাধিকার কমিশনের সহ-সভাপতি মুনিজায়ে জাহাঙ্গীর সোজাসাপটা বলেছেন, “এটি সামরিক ক্ষমতাকে আরও শক্তিশালী করেছে এমন এক সময়ে, যখন তাদের নিয়ন্ত্রণে আনা জরুরি ছিল।”
বিচারব্যবস্থায় অস্থিরতা: স্বাধীনতার অবসান?
সংশোধনীর দ্বিতীয় ও সবচেয়ে বিতর্কিত দিক হলো বিচারব্যবস্থায় রদবদল। দীর্ঘদিন ধরে পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট সাংবিধানিক প্রশ্নের সর্বোচ্চ বিচারক ছিল। কিন্তু নতুন আইন অনুযায়ী গঠিত হচ্ছে একটি নতুন আদালত, ফেডারেল কনস্টিটিউশনাল কোর্ট (FCC), যার বিচারপতি ও প্রধান বিচারপতি নিয়োগ করবেন রাষ্ট্রপতি। সমালোচকদের মতে, এটি আদালতের স্বাধীনতাকে কার্যত নির্বাসিত করেছে।
জাহাঙ্গীরের ভাষায়,
“রাষ্ট্র যখন বিচারপতি ও সাংবিধানিক বেঞ্চ নির্ধারণ করবে, তখন একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আমি কোন ন্যায়বিচারের আশা করবো?”
অন্যদিকে বিশ্লেষক আরিফা নূর বলছেন, পাকিস্তানের বিচারব্যবস্থা এখন “কার্যত নির্বাহী শাখার অধীনস্থ।” এর ফলে সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক কর্তৃত্ব সংকুচিত হয়ে পড়েছে, আর বিচারকদের স্বাধীনতা গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
সুস্পষ্ট প্রতিক্রিয়া এসেছে বিচারপতিদের দিক থেকেও। আইন স্বাক্ষর হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই দুজন সুপ্রিম কোর্ট বিচারপতি পদত্যাগ করেছেন। জাস্টিস আথার মিনাল্লাহ তার পদত্যাগপত্রে লিখেছেন,
“যে সংবিধান রক্ষা ও প্রতিরক্ষার শপথ নিয়েছিলাম, সেটি আর বিদ্যমান নেই।”
অন্যদিকে জাস্টিস মানসুর আলী শাহ বলেছেন, ২৭তম সংশোধনী “সুপ্রিম কোর্টকে ছিন্নভিন্ন করে দিয়েছে”।
নতুন আইনে বিচারকদের জোরপূর্বক বদলি করা যাবে, আর যদি তারা বদলিতে রাজি না হন, তাহলে তাদের অবসরে পাঠানো হতে পারে। এটি বিচারকদের ওপর চাপ বাড়িয়ে দেবে বলে মনে করেন অনেক আইনজীবী।
কারাচির আইনজীবী সালাহউদ্দিন আহমেদ বলছেন,
“এটি বিচারকদের শাসকের ইচ্ছানুযায়ী পরিচালিত হওয়ার দিকে ঠেলে দেবে। এবং এটি পাকিস্তানের ক্ষমতার ভারসাম্যকে আরও নাজুক করে তুলবে।”
সামাজিক অস্থিরতার ঝুঁকি
বিভিন্ন রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই সংশোধনী শুধু সামরিক প্রতিষ্ঠানের ক্ষমতাই বাড়ায়নি, বরং সাধারণ মানুষের অসন্তোষ, অবিশ্বাস ও বঞ্চনার অনুভূতিও বাড়িয়ে তুলতে পারে। কুগেলম্যান সতর্ক করে বলেছেন, “অবরুদ্ধ ক্ষোভ সামাজিক স্থিতিশীলতার জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক।”
এদিকে পাকিস্তানের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি—ইমরান খানের সঙ্গে সেনাবাহিনীর টানাপোড়েন, আদালতের উপর ক্রমবর্ধমান চাপ, এবং ক্ষমতার নতুন পুনর্বিন্যাস—সবই মিলিয়ে একটি অস্থিরতার ছবি তৈরি করছে।
পাকিস্তান কোথায় যাচ্ছে?
২৬তম সংশোধনীতে সংসদকে প্রধান বিচারপতি নির্বাচনের ক্ষমতা দেওয়ার পর এবার ২৭তম সংশোধনী কার্যত নির্বাহী–সামরিক ক্ষমতার পূর্ণ সমন্বয় ঘটিয়েছে। ইতোমধ্যে ২৮তম সংশোধনী নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে।
এ থেকে স্পষ্ট—বাংলাদেশের মতো প্রতিবেশী গণতন্ত্রগুলো যখন বেসামরিক শাসনের উন্নয়নের পথে হাঁটছে, পাকিস্তান তখন উল্টো দিকে হাঁটছে, আরও শক্তভাবে ‘এস্টাবলিশমেন্ট’-কেন্দ্রিক শাসনের দিকে।
প্রশ্ন হলো, সাধারণ মানুষ, বিচারব্যবস্থা, রাজনৈতিক দল এবং বিশেষ করে তরুণ প্রজন্ম—এই নতুন বাস্তবতার সঙ্গে কিভাবে খাপ খাইয়ে নেবে? ইতিহাস বলছে, পাকিস্তানে ক্ষমতার একচ্ছত্রতা কখনো স্থায়ী স্থিতিশীলতা আনতে পারেনি। বরং অস্থিরতা, অবিশ্বাস এবং রাজনৈতিক সংহতির ভাঙ্গনই সৃষ্টি করেছে।
আজকের পাকিস্তান কি সেই একই ভুলের পুনরাবৃত্তি দেখতে যাচ্ছে?আগামী মাসগুলোই এর উত্তরের ইঙ্গিত দেবে।
তথ্য সূত্র: বিবিসি।
ট্রাম্পের জরুরি ফোনালাপ: থাইল্যান্ড–কম্বোডিয়া উত্তেজনা প্রশমনে মার্কিন হস্তক্ষেপ
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দুটি প্রতিবেশী দেশ—থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া—এর মধ্যে নতুন উত্তেজনা দেখা দেওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শান্তিচুক্তির স্থায়িত্ব রক্ষায় সরাসরি হস্তক্ষেপ করেছেন। শুক্রবার ট্রাম্প জানান, তিনি দুই দেশের নেতাদের সঙ্গে ফোনালাপ করেছেন এবং তাদেরকে শান্তিচুক্তি বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছেন।
গত ২৬ অক্টোবর এশিয়া সফরকালে ট্রাম্প দুই দেশের মধ্যে কো-সাইন করেন একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি, যেটিকে তিনি তাঁর বৈশ্বিক শান্তি প্রচেষ্টার অন্যতম সাফল্য হিসেবে তুলে ধরেছিলেন। সেই সময় তিনি দাবি করেছিলেন, সারা বিশ্বের বিভিন্ন সংঘাত মীমাংসায় তাঁর ভূমিকা তাঁকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের দাবিদার করে তুলেছে।
তবে চুক্তি সইয়ের মাত্র কয়েকদিন পর পরিস্থিতি আবারও অস্থিতিশীল হয়ে ওঠে। সোমবার থাইল্যান্ড চুক্তি স্থগিত করে, অভিযোগ করে যে সীমান্ত এলাকায় একটি স্থলমাইন বিস্ফোরণে তাদের সেনারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এরপর বুধবার দুই দেশের মধ্যে নতুন সংঘর্ষের অভিযোগ উঠে, যেখানে কম্বোডিয়ার পক্ষ থেকে দাবি করা হয় যে গোলাগুলিতে এক বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে।
ফ্লোরিডাগামী এয়ার ফোর্স ওয়ানে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প বলেন, দুই দেশের নেতাদের তিনি ইতোমধ্যে ফোনে কথা বলেছেন। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি দাবি করেন, “আমি আজই একটি যুদ্ধ থামিয়েছি—শুল্ক ও শুল্কের হুমকি ব্যবহার করে।” তাঁর বক্তব্যে স্পষ্ট ছিল, বিষয়টি তিনি সরাসরি নিজের কূটনৈতিক দক্ষতা ও চাপ প্রয়োগের কৌশলের সফল উদাহরণ হিসেবে দেখাতে চান।
হোয়াইট হাউস জানায়, মালয়েশিয়ার সঙ্গেও ট্রাম্প যোগাযোগ করেছেন, যারা থাইল্যান্ড–কম্বোডিয়া সংঘাত নিরসনে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকায় ছিল। কুয়ালালামপুরেই চুক্তিটি যৌথভাবে সই করা হয়েছিল।
এই উত্তেজনার পটভূমি বহু পুরনো। ফ্রান্সের ঔপনিবেশিক আমলে তৈরি সীমান্ত মানচিত্র নিয়ে শতবর্ষের বিরোধ নতুন করে উসকে দেয় দুই দেশের মধ্যে অবিশ্বাস। সীমান্তবর্তী কয়েকটি মন্দিরকে কেন্দ্র করে মালিকানা বিতর্কই সংঘাতের মূল কেন্দ্রবিন্দু। গত গ্রীষ্মে পাঁচ দিনের লড়াইয়ে ৪৩ জন নিহত হয় এবং প্রায় তিন লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়—যা পরিস্থিতির ভয়াবহতার এক কঠিন স্মারক হয়ে আছে।
বিশ্লেষকদের মতে, সাময়িক যুদ্ধবিরতির চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো দুই দেশের ইতিহাস, সীমান্তব্যবস্থা ও রাজনৈতিক অবস্থানের দীর্ঘমেয়াদি সমাধান। নতুবা যে কোনো সময় ছোট একটি ঘটনার সূত্র ধরে বড় সংঘাতে রূপ নিতে পারে পরিস্থিতি। এই প্রেক্ষাপটে ট্রাম্পের ফোনালাপ ও মধ্যস্থতা পরিস্থিতি শান্ত করতে সহায়তা করতে পারে, তবে প্রকৃত সমাধান নির্ভর করছে সীমান্ত বিরোধ নিষ্পত্তির বাস্তব অগ্রগতির ওপর।
-নাজমুল হাসান
নিরাপত্তা পরিষদে সোমবার ভোট: ট্রাম্পের গাজা শান্তি পরিকল্পনা ঘিরে উত্তেজনা
জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে গাজা প্রশ্নে আগামী সোমবার একটি গুরুত্বপূর্ণ ভোট অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। কূটনীতিকদের মতে, এই ভোটের লক্ষ্য হবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত গাজা শান্তি পরিকল্পনাকে আনুষ্ঠানিক সমর্থন দেওয়া এবং দুই বছরের সংঘাত–পরবর্তী শান্তি প্রক্রিয়ায় একটি নতুন ধাপ স্থাপন করা।
গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র নিরাপত্তা পরিষদের ১৫ সদস্যের সঙ্গে টানা আলোচনার মাধ্যমে এমন একটি প্রস্তাবের খসড়া তৈরি করে, যা যুদ্ধবিরতি বজায় রাখা, গাজার নিরাপত্তা কাঠামো পুনর্গঠন এবং মানবিক সহায়তা নির্বিঘ্নে পৌঁছানোর জন্য একটি সমন্বিত নীতি প্রণয়ন করে। খসড়ায় গাজার পুনর্গঠন, জরুরি সেবা ব্যবস্থাপনা, এবং আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থার মতো বিষয়গুলোকে গুরুত্বের সঙ্গে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
প্রস্তাবের অন্যতম দিক হচ্ছে একটি আন্তর্জাতিক স্থায়ী নিরাপত্তা ও পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থার ধারণা, যা গাজার অভ্যন্তরে অস্ত্রবিরতি তদারকি করবে এবং মানবিক সহায়তার পথ খুলে দেবে। একই সঙ্গে, ভবিষ্যৎ প্রশাসনিক কাঠামো ও পুনর্গঠন কার্যক্রমে আন্তর্জাতিক অংশীদারদের ভূমিকা সুসংহত করার কথাও এতে রয়েছে।
এই উদ্যোগকে সমর্থন জানিয়ে দ্রুত ভোট আয়োজনের পক্ষে রয়েছে একাধিক আরব ও মুসলিম-সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ — বিশেষ করে মিশর, সৌদি আরব ও তুরস্ক। তাদের মতে, যুদ্ধবিরতির পর গাজায় স্থায়ী শান্তি নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কার্যকর ভূমিকা এখন অপরিহার্য।
তবে নিরাপত্তা পরিষদের সব সদস্য দেশ সমানভাবে এই প্রস্তাবে সন্তুষ্ট নয়। কেউ কেউ অভিযোগ করছেন, পরিকল্পনাটি এখনও পুরোপুরি ভারসাম্যপূর্ণ নয় এবং গাজার রাজনৈতিক বাস্তবতা ও জনমতের বিষয়টি যথেষ্ট প্রতিফলিত হয়নি। তাই ভোটের আগে পরিষদের অভ্যন্তরে মতানৈক্য দূর করার জন্য চলছে নিবিড় কূটনৈতিক তৎপরতা।
বিশ্লেষকদের মতে, এই ভোট গাজার ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক পথনির্ধারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা। প্রস্তাবটি গৃহীত হলে তা কেবল যুদ্ধবিরতিকে দীর্ঘস্থায়ী করতেই নয়, বরং গাজায় নতুন প্রশাসনিক কাঠামো ও মানবিক পুনর্গঠনের ভিত্তি স্থাপন করতেও ভূমিকা রাখতে পারে। তবে ব্যর্থ হলে তা মধ্যপ্রাচ্যের স্থিতিশীলতা ও আন্তর্জাতিক কূটনীতির জন্য আরেকটি হারানো সুযোগ হিসেবে চিহ্নিত হবে।
-নাজমুল হাসান
জম্মু-কাশ্মীরের শ্রীনগরের থানায় ভয়াবহ বিস্ফোরণ
ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু ও কাশ্মিরের শ্রীনগরে একটি থানায় ভয়াবহ বিস্ফোরণে নয়জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ২৯ জন।
শনিবার ১৫ নভেম্বর মধ্যরাতে নোগাম থানায় জব্দ করা বিস্ফোরকের নমুনা পরীক্ষা করার সময় এই দুর্ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি।
নিহতদের বেশিরভাগই পুলিশ সদস্য এবং ফরেনসিক টিমের সদস্য। বিস্ফোরণে গুরুতর আহত পাঁচজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র। নিহতদের মধ্যে শ্রীনগর প্রশাসনের দুজন কর্মকর্তাও রয়েছেন।
বিস্ফোরণে আহতদের দ্রুত সেনাবাহিনীর ৯২ বেস হাসপাতাল ও শের-ই-কাশ্মির ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনার পরই পুলিশ ও প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা নোগাম থানায় ছুটে যান এবং পুরো এলাকা ঘিরে ফেলা হয়।
পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, নোগাম থানায় জব্দ করা বিস্ফোরকের নমুনা পরীক্ষা করার সময় এই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের উপস্থিতিতে এই পরীক্ষা চলছিল।
ভূমধ্যসাগর আবারও মৃত্যুকূপ-এক বছরে এক হাজার প্রাণহানি
ভূমধ্যসাগর আবারও অভিবাসীদের জন্য ভয়ংকর মৃত্যুকূপে পরিণত হয়েছে। বিপজ্জনক এই রুট পাড়ি দিতে গিয়ে চলতি বছর মৃত্যুর সংখ্যা এক হাজার ছাড়িয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের অভিবাসন সংস্থা আইওএম। সংস্থাটি সতর্ক করে বলেছে, প্রতিটি নতুন দুর্ঘটনার সঙ্গে মৃতের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে, আর এই রুটের ঝুঁকি আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় ভয়াবহ হয়ে উঠেছে।
সর্বশেষ বড় ট্র্যাজেডিটি ঘটে ৮ নভেম্বর লিবিয়ার উপকূলে। আল-বুরি তেলক্ষেত্রের কাছে ৪৯ জন অভিবাসী ও শরণার্থী নিয়ে ডুবে যায় একটি রাবারের নৌকা। আইওএম জানায়, নৌকাটিতে ছিল ৪৭ জন পুরুষ ও দুই নারী। ৩ নভেম্বর লিবিয়ার জুয়ারা শহর থেকে যাত্রা শুরু হলেও যাত্রার ছয় ঘণ্টা পরই প্রচণ্ড ঢেউয়ের কারণে ইঞ্জিন নষ্ট হয়ে যায়। এরপর ছয় দিন ধরে খোলা সমুদ্রে ভেসে থাকার পর মাত্র সাতজন সুদানের চারজন, নাইজেরিয়ার দুইজন এবং ক্যামেরুনের একজন জীবিত উদ্ধার হন। বাকি ৪২ জন এখনো নিখোঁজ, যাদের সবাইকে মৃত বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আইওএম জানিয়েছে, দুর্ঘটনার পর বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের জরুরি চিকিৎসা, খাবার এবং পানি সরবরাহ করা হয়েছে। সংস্থাটি আরও বলেছে, সুরমান ও ল্যাম্পেডুসার কাছে সাম্প্রতিক কয়েকটি মর্মান্তিক ঘটনার পরবর্তী এই ট্র্যাজেডি আবারও প্রমাণ করছে, মধ্য ভূমধ্যসাগরীয় রুট বিশ্বের সবচেয়ে প্রাণঘাতী অভিবাসন পথগুলোর একটি।
আইওএম আঞ্চলিক সহযোগিতা জোরদার, নিরাপদ ও বৈধ অভিবাসন পথ তৈরি এবং শক্তিশালী উদ্ধার অভিযান বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে, যাতে এই মর্মান্তিক প্রাণহানি রোধ করা যায়।
অন্যদিকে ইউনিসেফের ইউরোপ ও মধ্য এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক রেজিনা ডি ডোমিনিসিস জানিয়েছেন, ২০২৪ সালেই ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিতে গিয়ে ২ হাজার ২০০ জনের বেশি মানুষ মারা গেছেন বা নিখোঁজ হয়েছেন। যা এই রুটের মানবিক সংকটকে আরও গভীর করে তুলছে।
-রাফসান
১৩ ঘণ্টার বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা শুরু
দক্ষিণ কোরিয়ায় আবারও শুরু হলো বিশ্বের অন্যতম দীর্ঘ, কঠোর ও মনস্তাত্ত্বিকভাবে চ্যালেঞ্জিং বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা সুনুং বা সিসেট। বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকেই সারাদেশজুড়ে নেমে এসেছে এক বিশেষ নীরবতা। প্রায় ১৩ ঘণ্টাব্যাপী এই পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে গোটা দেশ যেন একদিনের জন্য থমকে দাঁড়ায়। শিক্ষার্থীদের মনোযোগে ন্যূনতম ব্যাঘাত না ঘটানোর জন্য পরীক্ষা শুরুর আগে থেকেই রাস্তাঘাটে যান চলাচল সীমিত করা হয়েছে, অনেক এলাকায় সাময়িকভাবে ফ্লাইট ওঠানামাও নিয়ন্ত্রিত হয়। দোকানপাট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং নির্মাণকাজ পর্যন্ত বন্ধ রাখা হয় দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রচলিত এ ‘পরীক্ষা দিবস’-এ।
এ বছর সাড়ে পাঁচ লাখেরও বেশি শিক্ষার্থী সুনুং পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন। তাদের এক বছরের প্রস্তুতির চূড়ান্ত মূল্যায়ন হয় এই পরীক্ষায়, যার ওপর নির্ভর করে তাদের ভবিষ্যৎ উচ্চশিক্ষার পথ, চাকরির সুযোগ এবং সামাজিক মর্যাদার অবস্থান। দক্ষিণ কোরিয়ার সমাজে এই পরীক্ষার তাৎপর্য এতটাই গভীর যে, অভিভাবকরা সন্তানদের সফলতার জন্য মন্দিরে প্রার্থনা করেন, শিক্ষকরা স্কুলে বিশেষ কাউন্সেলিং সেশন নেন এবং সমাজের সকল শ্রেণির মানুষ পরীক্ষার্থীদের সহায়তায় নীরবতার এক অলিখিত সামাজিক চুক্তি পালন করেন।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও এই দিনটিকে বিশেষ নিরাপত্তা দিবস হিসেবে বিবেচনা করে। পরীক্ষাকেন্দ্রের বাইরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়, প্রতিটি সেন্টারের ভেতরে শব্দ নিয়ন্ত্রণ ও জরুরি সেবা প্রস্তুত রাখা হয়, এবং শিক্ষার্থীরা যেন নিরাপদে ও সময়মতো কেন্দ্রে পৌঁছতে পারে, সেজন্য চলাচল-মূলক সহায়তা প্রদান করা হয়। দক্ষিণ কোরিয়ার জাতীয় জীবনে এই পরীক্ষার অবস্থান কেবল একটি শিক্ষাব্যবস্থার অংশ নয়, বরং এটি এক প্রজন্মের স্বপ্ন, সংগ্রাম ও সামাজিক আকাঙ্ক্ষার প্রতীক।
ট্রাম্পের চিঠি, নেতানিয়াহুকে ক্ষমা করার আহ্বান
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে ক্ষমার আহ্বান জানিয়ে ইসরায়েলের প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হারজগকে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন। ট্রাম্প নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে আনা দুর্নীতির অভিযোগকে রাজনৈতিক ও অযৌক্তিক বলে অভিহিত করেছেন।
বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে। গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার এক মাস পর বুধবার (১২ নভেম্বর) ট্রাম্প এই চিঠিটি পাঠান।
চিঠিতে ট্রাম্পের বক্তব্য
ট্রাম্পের চিঠিটি নেতানিয়াহুর প্রতি তাঁর অব্যাহত সমর্থনের ইঙ্গিত দেয়। চিঠিতে তিনি নেতানিয়াহুকে ‘দৃঢ় ও সিদ্ধান্তমূলক যুদ্ধকালীন প্রধানমন্ত্রী’ হিসেবে উল্লেখ করেন, যিনি এখন ইসরায়েলকে শান্তির পথে নিয়ে যাচ্ছেন।
ক্ষমা এবং শান্তি ট্রাম্প লেখেন, “আমি আপনাকে আহ্বান জানাচ্ছি যেন আপনি বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে সম্পূর্ণভাবে ক্ষমা করেন।” তিনি আরও দাবি করেন, তিনি ‘কমপক্ষে ৩,০০০ বছরের জন্য’ মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠা করেছেন।
গাজা যুদ্ধ চিঠিতে ট্রাম্প উল্লেখ করেন, গাজা যুদ্ধে নেতানিয়াহুর নেতৃত্বে ইসরায়েল যে অভিযান চালিয়েছে, তাতে ৬৯ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, যাদের মধ্যে অন্তত ২০ হাজার শিশু। তবে তিনি এই যুদ্ধের পরও নেতানিয়াহুর প্রতি সমর্থন জানালেন।
আব্রাহাম চুক্তি ট্রাম্প জানান, তিনি নিজেও মধ্যপ্রাচ্যের গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের সঙ্গে কাজ করছেন, যাতে আরও দেশকে ঐতিহাসিক আব্রাহাম চুক্তিতে অন্তর্ভুক্ত করা যায়।
ট্রাম্প সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ডানপন্থি নেতাদের প্রতি সমর্থন বাড়িয়ে চলেছেন।
হারজগের জবাব ও আইনি সীমাবদ্ধতা
ইসরায়েলে রাষ্ট্রপতির পদ মূলত আনুষ্ঠানিক হলেও, রাষ্ট্রপতি ক্ষমা প্রদানের সাংবিধানিক ক্ষমতা রাখেন। তবে নেতানিয়াহুর বিচার কার্যক্রম চলমান থাকায়, রায় ঘোষণার আগে হারজগ কোনো ধরনের ক্ষমা ঘোষণা করতে পারেন না।
বুধবার ট্রাম্পের চিঠির জবাবে প্রেসিডেন্ট হারজগ বলেন, ক্ষমা চাইলে সেটি অবশ্যই নির্ধারিত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে করতে হবে।
প্রক্রিয়া মেনে চলার নির্দেশ প্রেসিডেন্টের কার্যালয় জানায়, “প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা পোষণ করেন এবং ইসরায়েলের প্রতি তার অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।” তবে বিবৃতিতে আরও যোগ করা হয়, রাষ্ট্রপতি একাধিকবার স্পষ্ট করে বলেছেন, যে কেউ ক্ষমা চাইবেন, তাকে প্রতিষ্ঠিত প্রক্রিয়া অনুযায়ী আনুষ্ঠানিক আবেদন দাখিল করতে হবে।
ফিলিস্তিন ভূখণ্ডে জার্মানির নিরস্ত্র পুলিশ কর্মকর্তা মোতায়েন
ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে নিরস্ত্র পুলিশ কর্মকর্তাদের মোতায়েন করেছে জার্মানি। মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি ও স্থিতিশীলতা আনতে এই পদক্ষেপ নিয়েছে দেশটি। জেরুজালেমে অবস্থান করা এই দলটি স্থানীয় নিরাপত্তা বাহিনী পুনর্গঠনে সহায়তা করবে বলে জানিয়েছেন জার্মান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলেকজান্ডার ডব্রিন্ডট।
বুধবার (১২ নভেম্বর) বার্তাসংস্থা আনাদোলু এই তথ্য জানিয়েছে।
শান্তির জন্য অপরিহার্য কার্যকর পুলিশ বাহিনী
জার্মান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলেকজান্ডার ডব্রিন্ডট দেশটির সংবাদ সংস্থা ডিপিএ-কে বলেন, “মধ্যপ্রাচ্যে দীর্ঘস্থায়ী শান্তির জন্য একটি কার্যকর পুলিশ বাহিনী অপরিহার্য।” তিনি জানান, এই কারণে ফেডারেল পুলিশের উচ্চপর্যায়ের একটি দলকে জেরুজালেমে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সহায়তা এই কর্মকর্তারা জেরুজালেমে অবস্থিত অফিস ফর সিকিউরিটি (ওএসসি) থেকে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে স্থানীয় পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনী পুনর্গঠনে সহায়তা করছেন।
মিশনের উদ্দেশ্য সংবাদ সংস্থার তথ্যমতে, চার সদস্যের এই দলটি প্রায় দুই সপ্তাহ আগে ফিলিস্তিন এলাকায় পৌঁছেছে। তাদের মূল দায়িত্ব হলো ফিলিস্তিনের বেসামরিক নিরাপত্তা বাহিনীকে শক্তিশালী করার জন্য জার্মানির দীর্ঘদিনের সহায়তা কর্মসূচিকে আরও সম্প্রসারিত করা।
দীর্ঘদিনের প্রচেষ্টা ডব্রিন্ডট বলেন, “গত ১৫ বছরের বেশি সময় ধরে জার্মান পুলিশ ফিলিস্তিন বাহিনীর সক্ষমতা বৃদ্ধিতে কাজ করছে। নতুন এই মিশন সেই প্রচেষ্টারই ধারাবাহিক অংশ।”
গাজায় ইসরাইলি যুদ্ধযন্ত্রে টাটার জড়িত থাকার চাঞ্চল্যকর তথ্য ফাঁস
ভারতের পুঁজিবাদের ইতিহাসে টাটা গ্রুপকে সবসময় দেখা হয়েছে একটি নীতিনিষ্ঠ ও মানবিক কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানের প্রতীক হিসেবে। ‘টাটা’ নামটি লাখো ভারতীয়ের কাছে আস্থা, দায়িত্ববোধ ও জনকল্যাণের প্রতিশব্দ। কিন্তু এই উজ্জ্বল ভাবমূর্তির আড়ালে লুকিয়ে আছে এক জটিল, অন্ধকার ও রাজনৈতিকভাবে বিস্ফোরক বাস্তবতা। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংগঠন সালাম–এর বিশদ অনুসন্ধান বলছে, টাটা গ্রুপ ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরাইলের সামরিক দখলদারি ও গণহত্যার প্রক্রিয়ায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে যুক্ত—এবং বছরের পর বছর ধরে তারা যুদ্ধযন্ত্রকে সরবরাহ করে চলেছে মূল প্রযুক্তি, অস্ত্রাংশ এবং নজরদারি অবকাঠামো।
সালাম রিপোর্টে টাটা গ্রুপকে “ভারত–ইসরাইল সামরিক জোটের হৃদপিণ্ড” বলা হয়েছে। টাটার সহায় প্রতিষ্ঠান টাটা অ্যাডভান্সড সিস্টেমস লিমিটেড (TASL) বহু বছর ধরে ইসরাইল অ্যারোস্পেস ইন্ডাস্ট্রিজ (IAI)–এর সাথে বারাক–৮ ক্ষেপণাস্ত্রের মূল অংশ তৈরি করছে যে মিসাইল গাজায় ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়েছে। শুধু তাই নয়, TASL F–16 যুদ্ধবিমানের এয়ারফ্রেম এবং অ্যাপাচি হেলিকপ্টারের ফিউজলেজও তৈরি করে এগুলো পশ্চিম তীরে দমন–অভিযানে ইসরাইলের সবচেয়ে ব্যবহৃত যুদ্ধযান।
জাগুয়ার ল্যান্ড রোভার, আরেক টাটা সহযোগী প্রতিষ্ঠান, MDT ডেভিড নামের ইসরাইলি সাঁজোয়া যানটির চ্যাসিস সরবরাহ করে যা পশ্চিম তীরে প্রতিনিয়ত টহল ও অভিযান চালাতে ব্যবহৃত হয়। টাটা কনসালটেন্সি সার্ভিসেস (TCS) ইসরাইলের সরকারি নজরদারি অবকাঠামোতেও যুক্ত, বিশেষ করে বিতর্কিত প্রজেক্ট নিম্বাস যা গুগল, অ্যামাজন ও ইসরাইলি সরকারের যৌথ ক্লাউড–সিস্টেম, এবং ফিলিস্তিনিদের নজরদারি আরও কঠোর করছে।
টাটা তাদের বিজ্ঞাপনে মানবতা, সততা, গান্ধীর অহিংস আদর্শ ও সামাজিক দায়বদ্ধতার কথা বলে। কিন্তু সালাম রিপোর্ট বলছে, এই নীতিকথা কেবলই কর্পোরেট–জাতীয়তাবাদের আড়াল। টাটা তার প্রতিরক্ষা খাতে আয় কত তা কখনো প্রকাশ করে না। জাতিসংঘের মানবাধিকার নীতিমালা অনুযায়ী তাদের সম্মতি ব্যবস্থা নেই, নেই কোনো ইনডিপেনডেন্ট অডিট। তারা যুদ্ধযন্ত্রের অংশ হয়েও জবাবদিহিতার বাইরে রয়ে গেছে।
নরেন্দ্র মোদীর আমলে ভারত–ইসরাইল সম্পর্ক জ্যামিতিক হারে গভীর হয়েছে। ভারত এখন ইসরাইলি অস্ত্রের সবচেয়ে বড় ক্রেতা ইসরাইলের প্রতিরক্ষা রপ্তানির ৪০–৪৫ শতাংশই যায় ভারতে। এতে টাটা হয়ে উঠেছে রাষ্ট্র–কর্পোরেট অংশীদারিত্বের প্রতীক ফিলিস্তিনে যে প্রযুক্তি ব্যবহৃত হচ্ছে, তা একইভাবে ভারত জম্মু–কাশ্মীরে প্রয়োগ করছে। ফলে দুই অঞ্চলের দমন–ব্যবস্থা একধরনের ‘দ্বিপাক্ষিক দখলদারি মডেলে’ যুক্ত হয়ে গেছে।
ভারতীয় মূলধারার মিডিয়া টাটার বিরুদ্ধে তদন্তমূলক প্রতিবেদন প্রকাশ করে না। নাগরিক সমাজও নীরব যে ভারত একসময় ফিলিস্তিনের পক্ষে দৃঢ়ভাবে দাঁড়াত, আজ সেখানে ভয়, চুপচাপ সমর্থন ও দখলদারিত্বের স্বাভাবিকীকরণ। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যেখানে একসময় দখল-রাজনীতি নিয়ে আলোচনা হতো, এখন সেসব নিষিদ্ধপ্রায়।
আন্তর্জাতিক আইনে বলা আছে কোনো কোম্পানি যদি জেনে–বুঝে এমন পণ্য বা প্রযুক্তি সরবরাহ করে যা যুদ্ধাপরাধ সংঘটনে ব্যবহৃত হতে পারে, সেই কোম্পানিও আইনের চোখে অপরাধে জড়িত। তাই গাজায় ব্যবহৃত অস্ত্রের উপাদান তৈরি করার অভিযোগের প্রেক্ষিতে টাটার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক তদন্তের দাবি উঠছে।
পাঠকের মতামত:
- আগের মতো নির্বাচন হলে দুর্ভোগ নামবে: খুলনায় জামায়াত নেতার হুঁশিয়ারি
- ১৫ মাস পর মুখ খুললেন হাসিনা, যুক্তরাষ্ট্রকে নিয়ে হঠাৎ ভিন্ন সুর
- ক্ষমতার চূড়ান্ত কেন্দ্রীকরণ: পাকিস্তানের রাজনীতিতে সেনাবাহিনী কি সর্বশক্তিমান?
- ত্রৈমাসিক আর্থিক প্রতিবেদনে ICB–এর যেমন পারফরম্যান্স
- নষ্ট ছবি ঠিক করতে আর অ্যাপ লাগবে না, গুগল ফটোসেই নতুন 'জাদু'
- প্রবাসীরাও এবার ভোট দেবেন, জেনে নিন সহজ নিয়ম
- ভোটের মাঠে নতুন দল এনসিপি, কারা লড়ছেন কোন আসন থেকে?
- সংঘাতের ছায়ায় দম্পতির শোচনীয় পরিণতি: কোনাবাড়িতে স্ত্রী নিহত, স্বামী গুরুতর আহত
- ইতিহাস বিকৃতির বিরুদ্ধে সোচ্চার সোহেল তাজ
- শীতে ঠান্ডা পানিতে গোসল? শুনলেই ভয়, কিন্তু এর উপকার জানলে অবাক হবেন
- বিজ্ঞান শিক্ষার্থীদের জন্য দেশে প্রথমবার পূর্ণাঙ্গ রোবোটিক্স ডিগ্রি
- ব্যবসায়ীদের সতর্কবার্তা: রাজনৈতিক স্বচ্ছতা না এলে বিনিয়োগ ফিরবে না
- 'ভাড়াটে টোকাই' দিয়ে চলে দল? আওয়ামী লীগ নিয়ে প্রেস সচিবের ফেসবুক পোস্ট
- এক লাল কার্ডে জটিল সমীকরণ: রোনালদোর বিশ্বকাপ স্বপ্ন কি ভাঙবে?
- গলায় সাদা দানা? এটি খাবারের টুকরো নয়, হতে পারে টনসিল স্টোন
- সন্তানদের প্রতি ইনসাফ: রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর অনুপম শিক্ষা
- হানিয়া আমিরের সঙ্গে কাজ নিয়ে মুখ খুললেন শাকিব, জল্পনা কি সত্যি হচ্ছে?
- একাই টানছেন দেশ ও ক্লাব: হালান্ড কি মেসি-রোনালদোর আসল উত্তরসূরি? পরিসংখ্যান কী বলছে?
- ট্রাম্পের জরুরি ফোনালাপ: থাইল্যান্ড–কম্বোডিয়া উত্তেজনা প্রশমনে মার্কিন হস্তক্ষেপ
- তেঁতুলিয়া–চুয়াডাঙ্গায় সর্বনিম্ন ১৪ ডিগ্রি, শীতের ছোঁয়া সারাদেশে
- অস্বাস্থ্যকর বায়ুতে ঢাকা আবারও শীর্ষের কাতারে
- ঢাকার আজকের নামাজের সময়সূচি প্রকাশ
- নিরাপত্তা পরিষদে সোমবার ভোট: ট্রাম্পের গাজা শান্তি পরিকল্পনা ঘিরে উত্তেজনা
- শীতের সবজি এলেও স্বস্তি নেই, বাজারে গিয়ে ক্রেতাদের মাথায় হাত
- রাজধানীতে আজ চারটি গুরুত্বপূর্ণ সভা ও আলোচনা
- ৭ বছরের মধ্যে ইন্টারনেট স্বাধীনতায় সেরা অবস্থানে বাংলাদেশ
- ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে বাসে আগুন
- জরুরি সংস্কার: আজ ১০ ঘণ্টা বিদ্যুৎহীন থাকবে যেসব এলাকা
- বন্ধুকে হত্যা করে ২৬ টুকরো, আশরাফুল হত্যায় মিলছে চাঞ্চল্যকর সব তথ্য
- জলবায়ু সম্মেলন তেল গ্যাস কোম্পানির দখলে আলোচনা এখন দূষণকারীদের হাতে
- জম্মু-কাশ্মীরের শ্রীনগরের থানায় ভয়াবহ বিস্ফোরণ
- নির্বাচনী ট্রেন্ড শুরু ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন নিয়ে সব সংশয় কাটল
- শীতের তীব্রতা বাড়লেও উষ্ণ হলো মন পর্যটন আর অতিথি পাখির ভিড়ে মুখর এখন বাংলাদেশ
- গণভোটে ‘না’–এর ডাক: নোয়াখালীতে বিএনপি নেতা জয়নুল ফারুকের কঠোর অবস্থান ও নির্বাচনী সমীকরণের নতুন বার্তা
- কাদিয়ানী ইস্যু ও পাকিস্তানি সংযোগ: বাংলাদেশের ধর্মীয় রাজনীতিতে বিপজ্জনক অস্থিরতার ইঙ্গিত
- গণভোটের মাধ্যমে সংবিধান সংশোধন সম্ভব নয়: সালাহউদ্দিন আহমদ
- আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না: প্রধান উপদেষ্টা ড ইউনূস
- নভেম্বরেই চারটি সরকারি সিকিউরিটিজে লেনদেন পুনরায় চালু
- ডিম কি সত্যিই কোলেস্টেরল বাড়ায়? নতুন গবেষণার চমক
- আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের শেয়ারে উত্থান
- আবহাওয়া অফিস জানাল আগামী ৫ দিনের আবহাওয়ার চিত্র
- ভূমধ্যসাগর আবারও মৃত্যুকূপ-এক বছরে এক হাজার প্রাণহানি
- আজ ঢাকায় বাতাসের বেগ ঘণ্টায় ১২ কিমি পর্যন্ত
- রাজধানীতে আজ চার সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচি
- “হাসিনার পরিকল্পনায় বিপদে আওয়ামী লীগের নিরপরাধ কর্মীরা”
- স্বর্ণের দাম আবার চড়ল, ২২ ক্যারেটে ভরিতে নতুন রেকর্ড!
- রাজশাহীতে বিএনপির ‘দুই ফ্রন্টে যুদ্ধ’: মনোনীত বনাম বঞ্চিত
- ১৪ নভেম্বরের নামাজের পূর্ণ সময়সূচি: জানুন আজকের সব ওয়াক্ত
- শুক্রবার ঢাকার কোন মার্কেট খোলা থাকবে? জেনে নিন সম্পূর্ণ তালিকা
- শিবালয়ে গভীর রাতে স্কুলবাসে আগুন, ঘুমন্ত চালক দগ্ধ
- সিলেট টেস্টে আয়ারল্যান্ড অলআউট ২৮৬ রানে, দুর্দান্ত সূচনায় বাংলাদেশ
- গোলের রাজা কে, মেসি না রোনালদো? সংখ্যার হিসাবে কে এগিয়ে, কে পিছিয়ে!
- কোরিয়ান ড্রামায় মুগ্ধ বিশ্ব: মিস্ট্রি থ্রিলার থেকে টাইম ট্রাভেল, দেখুন সেরা ১০ সিরিজ!
- সাদমানের পর মুমিনুলকে নিয়ে জয়ী রথ বাংলাদেশের ওপেনিংয়ে রেকর্ড জুটি
- মামলার রেশ না কাটতেই তিশার বিরুদ্ধে প্রাণনাশের অভিযোগ
- বাংলাদেশ নেপাল ম্যাচের আগে জেনে নিন হেড টু হেড পরিসংখ্যানে কারা চালকের আসনে
- ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গড়তে হলে রাষ্ট্রকে অবশ্যই তার সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা পুনরুদ্ধার করতে হবে
- নেপালের বিপক্ষে দুর্দান্ত হামজা জোড়া গোলে ম্যাচ ঘুরিয়ে দিল বাংলাদেশ
- আজ বিশ্ব ব্যাচেলর দিবস: একাকীত্ব নয়, স্বাধীনতার উৎসব
- ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে বড় ধরনের পতন: ৩৮৪ কোম্পানির মধ্যে মাত্র ১৫টি বেড়েছে
- আজকের খেলাধুলা সূচি
- আজ রাজধানীতে রাজনৈতিক যেসব কর্মসূচি, কোথায় কী হচ্ছে জেনে নিন
- রবিবার ঢাকায় বন্ধ থাকবে যেসব মার্কেট ও এলাকা
- বাংলাদেশ–ভারত ফুটবল ম্যাচের টিকিটের দাম প্রকাশ
- লকডাউনের দিনেও দোকান-শপিংমল খোলা থাকবে: মালিক সমিতি








