সুস্থ জীবন

ঘৃতকুমারী বা অ্যালোভেরা: কাঁটাযুক্ত পাতার ভেতর লুকানো আরোগ্যের জেল

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০৪ ১৪:৩৭:৪০
ঘৃতকুমারী বা অ্যালোভেরা: কাঁটাযুক্ত পাতার ভেতর লুকানো আরোগ্যের জেল

অ্যালোভেরা বা ঘৃতকুমারী হাজার বছর ধরে লোকঔষধ ও সৌন্দর্যচর্চায় ব্যবহৃত। মিসরীয় প্যাপিরাস থেকে ভারতীয় আয়ুর্বেদ, গ্রিক ও আরব চিকিৎসা পর্যন্ত সর্বত্র এর উপস্থিতি দেখা যায়। আধুনিক বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ বলছে পাতার ভেতরের স্বচ্ছ জেল প্যারেনকাইমা, মিউকোপলিস্যাকারাইড, ভিটামিন, খনিজ এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে সমৃদ্ধ। একই পাতা আবার হলুদাভ তিক্ত ল্যাটেক্সও বহন করে যাতে প্রাকৃতিক রেচক অ্যান্থ্রাকুইনোন থাকে। এই দুই স্তরের আলাদা প্রোফাইল বোঝা জরুরি, কারণ জেল তুলনামূলক নরমাল ব্যবহারে নিরাপদ হলেও কাঁচা ল্যাটেক্স বেশি খেলে সমস্যার ঝুঁকি বাড়তে পারে।

পুষ্টিগুণের ভিত

অ্যালোভেরার জেল ভিটামিন এ, সি, ই সহ অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে সমৃদ্ধ। বি গ্রুপের মধ্যে বি১, বি২, বি৩, বি৬ এবং কিছু প্রজাতিতে বি১২ রিপোর্ট করা হয়। খনিজের মধ্যে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, জিঙ্ক, আয়রন, পটাশিয়াম, কপার, ম্যাঙ্গানিজ থাকে। জেলে পলিস্যাকারাইড যেমন অ্যাসেম্যানান, এনজাইম এবং অ্যামিনো অ্যাসিডের একটি ভাল মিশ্রণ থাকে। এই সমন্বয় ত্বককে হাইড্রেট করে, ক্ষতস্থানে স্যুত্র তৈরি সহায়তা করে, মৌখিক শ্লেষ্মা শান্ত করে এবং পরিপাকে স্বস্তি দিতে পারে।

জেল বনাম ল্যাটেক্স

পাতা কাটলে যে স্বচ্ছ জেল বের হয় সেটিই সাধারণত ত্বক, চুল এবং পানীয়ের জন্য ব্যবহৃত। পাতার খোসার ঠিক ভেতরের হলুদাভ তরলটি হলো ল্যাটেক্স, যার ল্যাক্সেটিভ প্রভাব প্রবল। বাজারে ডিকলোরাইজড বা ফিল্টারড জুস বলতে সাধারণত ল্যাটেক্স অপসারিত জেল-ভিত্তিক পণ্য বোঝায়। গৃহে ব্যবহার করলে পাতার সবুজ অংশ ও হলুদ স্তর ভালোভাবে ছেঁটে ফেলে কেবল স্বচ্ছ জেল নিন।

হজম ও ডিটক্স: কীভাবে কাজ করে

জেলে থাকা এনজাইম শর্করা ও চর্বি ভাঙতে সহায়তা করে, যা হজমের আরাম বাড়ায়। পানি ও মিউকোপলিস্যাকারাইড অন্ত্রের মিউকোসা শান্ত করে। ল্যাটেক্সের অল্প মাত্রায় রেচক প্রভাব থাকতে পারে, তবে দীর্ঘ সময় বা বেশি পরিমাণ ল্যাটেক্স খেলে ক্র্যাম্প, ডিহাইড্রেশন এবং পটাশিয়াম কমে যাওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়। তাই দৈনন্দিন সেবনে জেল-ফোকাসড, ল্যাটেক্স-মুক্ত প্রস্তুতি বেছে নেওয়া বুদ্ধিমানের কাজ।

মৌখিক স্বাস্থ্য

অ্যালো জেল মুখের শুষ্কতা কমাতে সাহায্য করে, হালকা জ্বালা ও আলসার শান্ত করতে পারে এবং কিছু ক্ষেত্রে প্লাক কমাতে সহায়ক হয়। টুথপেস্ট বা মাউথওয়াশে অ্যালোর উপস্থিতি তাই জনপ্রিয়। ঘরে জেল ব্যবহার করলে পরিষ্কার হাত দিয়ে আলতোভাবে লাগিয়ে দিন এবং খাবার বা গরম পানীয়ের আগে ধুয়ে ফেলুন।

ত্বকে অ্যালোর বুদ্ধিদীপ্ত ব্যবহার

সূর্যদগ্ধ ত্বকে ঠান্ডা জেল আরাম দেয়, লালভাব কমায় এবং আর্দ্রতা ধরে রাখে। ব্রণপ্রবণ ত্বকে সপ্তাহে দুই থেকে তিনবার পাতলা স্তর হিসেবে ব্যবহার করা যায়। শুষ্ক ত্বকে গ্লিসারিন বা হায়ালুরোনিক অ্যাসিড সিরামের উপর অ্যালো জেল লাগালে জলধারণ ক্ষমতা বাড়ে। সংবেদনশীল ত্বকে আগে কানের পেছনে প্যাচ টেস্ট করুন। পচা গন্ধ, রঙ বদলে যাওয়া বা দূষিত জেল কখনো ব্যবহার করবেন না।

চুল ও স্ক্যাল্প কেয়ার

অ্যালো জেল প্রাকৃতিক কন্ডিশনার হিসেবে স্ক্যাল্পকে হাইড্রেট করে, খুশকি ও চুলকানি কমাতে সাহায্য করে এবং চুলের জট ছাড়াতে সহায়ক। তিনটি সহজ পদ্ধতি চেষ্টা করতে পারেন। এক, শ্যাম্পুর আগে স্ক্যাল্পে জেল লাগিয়ে ১৫ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। দুই, জেল, দই এবং এক চা চামচ নারকেল তেল মিশিয়ে সাপ্তাহিক হেয়ার মাস্ক করুন। তিন, পানি মিশিয়ে স্প্রে করে লিভ ইন কন্ডিশনারের মতো ব্যবহার করুন। অতিরিক্ত ব্যবহার চুল শুষ্ক করতে পারে, তাই ফ্রিকোয়েন্সি নিয়ন্ত্রণ করুন।

কৌতূহল জাগানো ৫টি ব্যবহারযোগ্য রেসিপি

  • সকালের হালকা পানীয়। ২০০ মিলিলিটার পানি, এক টেবিলচামচ তাজা অ্যালো জেল, আধা চা চামচ মধু, কয়েক ফোঁটা লেবু।
  • হজমে স্বস্তি স্মুদি। কিউই বা আনারস, দই, এক টেবিলচামচ অ্যালো জেল, অল্প পুদিনা।
  • সান-সুথিং জেল। অ্যালো জেল, শসার রস, অল্প রোজ ওয়াটার। ফ্রিজে রেখে প্রয়োজনে লাগান
  • স্ক্যাল্প প্যাক। অ্যালো জেল, মেথি বাটা, এক চা চামচ কালোজিরা তেল। ২০ মিনিট।
  • মুখের দাগে স্পট জেল। অ্যালো জেল, হলুদের অতি অল্প গুঁড়া, মধু। রাতের বেলায় স্পটে লাগিয়ে 20 মিনিট পর ধুয়ে নিন।

কতটা খাবেন এবং কীভাবে নেবেন

খাওয়ার ক্ষেত্রে নিরাপদ দিক হলো জেল-ভিত্তিক, ল্যাটেক্স-মুক্ত প্রস্তুতি। সাধারণত দিনে ১৫ থেকে ৩০ মিলিলিটার ডিকলোরাইজড অ্যালো জুস বা এক থেকে দুই টেবিলচামচ তাজা জেল পানি বা স্মুদিতে মেশানো যেতে পারে। টপিক্যাল প্রয়োগে দিনে দুই থেকে তিনবার পাতলা স্তর যথেষ্ট। ক্যাপসুল, টিংচার বা কনসেনট্রেট নিলে পণ্যে উল্লেখিত ডোজ অনুসরণ করুন এবং প্রথম সপ্তাহে অর্ধেক ডোজে সহনশীলতা দেখুন।

কে সাবধান হবেন

গর্ভবতী ও স্তন্যদানকারী নারী, ১২ বছরের কম বয়সী শিশু, কিডনি বা লিভারের ক্রনিক সমস্যা, ইলেক্ট্রোলাইট ইমব্যালান্স, হূদ্‌রোগে ডাইউরেটিক বা কার্ডিয়াক গ্লাইকোসাইড ব্যবহারকারী, অ্যান্টিকোগুল্যান্ট, অ্যান্টিপ্লেটলেট, অ্যান্টিডায়াবেটিক বা স্টেরয়েড ব্যবহারকারী। ল্যাটেক্সের রেচক অংশ এসব ক্ষেত্রে জটিলতা বাড়াতে পারে। অস্ত্রোপচারের আগে পরে নিজের মতো করে কোনো হার্বাল শুরু বা বন্ধ করবেন না। অ্যালার্জিপ্রবণ ত্বকে প্যাচ টেস্ট বাধ্যতামূলক।

ঘরে কেনার সময় কী দেখবেন

ল্যাটেক্স-মুক্ত বা ডিকলোরাইজড লেখা আছে কি না খেয়াল করুন। তৃতীয় পক্ষের গুণমান পরীক্ষার সিল, উৎপাদন ও মেয়াদোত্তীর্ণতার স্পষ্ট তারিখ, গাঢ় কাঁচের বোতল এবং অ্যালো কনটেন্টের শতাংশ উল্লেখ আছে কি না দেখুন। তাজা পাতা নিলে মোটা ও টানটান পাতা নিন। কাটার পর হলুদাভ রস ঝরিয়ে পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে কেবল স্বচ্ছ জেল গ্রহণ করুন।

দ্রুত প্রশ্নোত্তর

অ্যালো কি ওজন কমায়?

-সরাসরি চর্বি পোড়ায় না। জেল-ভিত্তিক পানীয় হাইড্রেশন ও হালকা তৃপ্তি বাড়িয়ে ওজন নিয়ন্ত্রণ প্রচেষ্টায় সহায়ক হতে পারে।

প্রতিদিন খাওয়া যায় কি?

-কম পরিমাণ, জেল-ফোকাসড, ল্যাটেক্স-মুক্ত হলে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে সহনীয়। দীর্ঘমেয়াদি ব্যবহারে মাঝে মাঝে বিরতি নিন এবং শরীরের সাড়া দেখুন।

ব্রণে কি লাগানো যায়?

-হ্যাঁ, পাতলা স্তর, পরিষ্কার ত্বকে, দিনে এক থেকে দুইবার। জ্বালা হলে বন্ধ করুন।চুলে রাতভর রাখা ঠিক কি না। সূক্ষ্ম চুলে শুষ্ক হতে পারে। ২০ থেকে ৩০ মিনিট যথেষ্ট, পরে ধুয়ে ফেলুন।

সাইড ইফেক্ট এবং কখন বন্ধ করবেন

পেটব্যথা, ক্র্যাম্প, ডায়রিয়া, মাথা হালকা লাগা, লালচে ফুসকুড়ি, চুলকানি বা জ্বালা দেখা দিলে ব্যবহার বন্ধ করুন। লাল প্রস্রাব, তীব্র দুর্বলতা, খিঁচুনি বা ত্বকে প্রচণ্ড জ্বালা হলে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যান। কোনো নতুন সাপ্লিমেন্ট শুরু করার আগে আপনার পার্সোনাল মেডিকেল হিস্ট্রি অনুযায়ী পেশাদার পরামর্শ নিন।

অ্যালোভেরা একটি বহুমুখী ভেষজ। জেল ত্বক, চুল, মৌখিক স্বাস্থ্য এবং হালকা হজমে আরাম দিতে পারে। সঠিক অংশ বাছাই, ডোজ নিয়ন্ত্রণ, মানসম্মত পণ্য নির্বাচন এবং সম্ভাব্য ঝুঁকি সম্পর্কে সচেতন থাকলে অ্যালোর উপকার নিরাপদে পাওয়া যায়। রান্নাঘরের সহজ রেসিপি থেকে স্কিন কেয়ার ও হেয়ার কেয়ারের কাস্টম রুটিন পর্যন্ত সবখানেই এর প্রয়োগ সম্ভব। ব্যবহার শুরু করুন কম পরিমাণে, শরীরের সাড়া দেখুন, প্রয়োজনে বিরতি নিন এবং প্রয়োজন হলে বিশেষজ্ঞের সাথে কথা বলুন।


ভাত খেলেই কেন দুচোখ জুড়ে ঘুম নামে? জেনে নিন বৈজ্ঞানিক কারণ

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৯ ১৯:১৩:৪৬
ভাত খেলেই কেন দুচোখ জুড়ে ঘুম নামে? জেনে নিন বৈজ্ঞানিক কারণ
ছবিঃ সংগৃহীত

দুপুর কিংবা রাতে পেট ভরে খাওয়ার পর হঠাৎ করেই শরীরে তীব্র ক্লান্তি বা ঘুম ঘুম ভাব ভর করা অনেকের জন্যই খুব সাধারণ একটি অভিজ্ঞতা। কারও কারও ক্ষেত্রে খাওয়া শেষ হতে না হতেই দুচোখ জুড়ে এমন ঘুম নেমে আসে যে, হাতে কাজ না থাকলে তারা সেই সুযোগে একটু জিরিয়েও নেন। খাওয়ার ঠিক পরপরই এই যে আচ্ছন্ন অনুভূতি, একে সাধারণ ভাষায় বলা হয় ‘ফুড কোমা’, আর চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিভাষায় এর নাম ‘পোস্টপ্র্যান্ডিয়াল সোমনোলেন্স’। বিশেষ করে যারা ভাত বেশি পছন্দ করেন বা প্রধান খাবার হিসেবে ভাত খান, তাদের মধ্যেই এই প্রবণতাটি সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। এর মূল কারণ হলো ভাত কার্বোহাইড্রেট বা শর্করাজাতীয় খাবারের অন্যতম প্রধান উৎস। সম্প্রতি একটি ভারতীয় গণমাধ্যম এই বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, যেখানে এর পেছনের বৈজ্ঞানিক কারণগুলো তুলে ধরা হয়েছে।

ভাত খাওয়ার পর এই ক্লান্তি বা ঝিমুনি আসার পেছনে মূলত দুটি প্রধান বৈজ্ঞানিক কারণ কাজ করে। প্রথমত, ভাতে উচ্চমাত্রায় গ্লাইসেমিক ইনডেক্স থাকে, যা শরীরে প্রবেশ করার পর খুব দ্রুত ভেঙে গ্লুকোজে বা শর্করায় পরিণত হয়। ফলে ভাত খাওয়ার পরপরই রক্তে শর্করার মাত্রা চটজলদি বেড়ে যায়। এই বাড়তি শর্করাকে শরীরের কোষগুলোতে পৌঁছে দেওয়ার জন্য তখন অগ্ন্যাশয় থেকে বেশি পরিমাণে ইনসুলিন হরমোন নিঃসৃত হয়। অতিরিক্ত ইনসুলিন নিঃসরণের ফলে রক্তে বেড়ে যাওয়া শর্করা আবার হঠাৎ করেই কমে যায়। রক্তে শর্করার এই দ্রুত ওঠানামা বা সাডেন ড্রপের কারণেই মূলত শরীরে এক ধরনের দুর্বলতা ও তীব্র ক্লান্তি তৈরি হয়, যা মানুষকে ঘুমের দিকে ঠেলে দেয়।

দ্বিতীয় কারণটি হলো মস্তিষ্কে বিশেষ কিছু হরমোনের প্রভাব। কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার খাওয়ার পর ইনসুলিন রক্তের বেশিরভাগ অ্যামাইনো অ্যাসিডকে পেশিতে পাঠিয়ে দিলেও ‘ট্রিপটোফ্যান’ নামক একটি উপাদানের ওপর এর প্রভাব কম পড়ে। ফলে ট্রিপটোফ্যান সরাসরি মস্তিষ্কে পৌঁছায় এবং সেখানে গিয়ে সেরোটোনিন ও পরবর্তীতে মেলাটোনিন নামের হরমোন উৎপন্ন করে। এই মেলাটোনিন মানুষের ঘুম ও জাগরণের চক্র নিয়ন্ত্রণ করে এবং প্রাকৃতিকভাবেই শরীরে ঘুমের অনুভূতি বাড়িয়ে তোলে। অর্থাৎ, ভাতের কার্বোহাইড্রেট পরোক্ষভাবে মস্তিষ্ককে ঘুমের সংকেত পাঠাতে সাহায্য করে।

তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, খাদ্যাভ্যাসে সামান্য কিছু পরিবর্তন এনেই এই ‘ফুড কোমা’ বা খাওয়ার পরের অলসতা কাটানো সম্ভব। এর জন্য প্রথমেই একবারে অতিরিক্ত পরিমাণে ভাত খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। ভাতের পরিমাণ কমিয়ে পাতে প্রোটিন ও সবজির পরিমাণ বাড়াতে হবে। ভাতের সঙ্গে মাছ, মাংস বা ডিমের মতো প্রোটিন এবং সালাদ বা শাকসবজির মতো ফাইবারযুক্ত খাবার মিশিয়ে খেলে কার্বোহাইড্রেট শরীরে ধীরে ধীরে শোষিত হয়। এর ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা হঠাৎ করে বেড়ে যায় না এবং ক্লান্তিও কম লাগে। এছাড়া খাওয়ার পরপরই শুয়ে না পড়ে ১০ থেকে ১৫ মিনিট হালকা হাঁটাহাঁটি করলে হজম প্রক্রিয়া ভালো হয় এবং রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে, যা শরীরকে ঝরঝরে রাখতে সাহায্য করে।


গ্যাস নাকি ইলেকট্রিক চুলা: মাস শেষে পকেটের টাকা বাঁচবে কোনটিতে?

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৯ ১৮:২৩:১০
গ্যাস নাকি ইলেকট্রিক চুলা: মাস শেষে পকেটের টাকা বাঁচবে কোনটিতে?
ছবিঃ সংগৃহীত

প্রতিটি পরিবারের রান্নাঘরের দৈনন্দিন খরচের হিসাব মেলাতে গিয়ে একটি প্রশ্ন প্রায়ই সামনে আসে—গ্যাস চুলা নাকি ইলেকট্রিক চুলা, কোনটি ব্যবহার করা বেশি লাভজনক? বর্তমান সময়ে শহরের অধিকাংশ পরিবার এলপিজি বা লাইন গ্যাসের ওপর নির্ভরশীল হলেও, বিদ্যুতের সহজল্ভ্যতা এবং আধুনিক প্রযুক্তির কারণে ইলেকট্রিক চুলার জনপ্রিয়তাও বাড়ছে। তবে খরচ, সুবিধা এবং ব্যবহারের উপযোগিতার বিচারে আসলে কোনটি এগিয়ে, তা নিয়ে অনেকেরই স্পষ্ট ধারণা নেই।

খরচের দিক বিবেচনা করলে দেখা যায়, গ্যাস চুলায় রান্নার জন্য সাধারণত এলপিজি সিলিন্ডার বা লাইন গ্যাস ব্যবহার করা হয়। সিলিন্ডারের দাম এককালীন কিছুটা বেশি মনে হলেও এটি দীর্ঘ সময় ধরে ব্যবহার করা সম্ভব। একটি সাধারণ পরিবারের রান্নার জন্য মাসে গড়ে এক থেকে দুটি সিলিন্ডারের প্রয়োজন হয়। অন্যদিকে, ইলেকট্রিক চুলার খরচ সম্পূর্ণ নির্ভর করে বিদ্যুতের ইউনিটের ওপর। একটি উদাহরণ দিলে বিষয়টি পরিষ্কার হবে। যদি ২ কিলোওয়াট ক্ষমতার একটি চুলায় প্রতিদিন ২ ঘণ্টা রান্না করা হয়, তবে মাস শেষে বিদ্যুৎ খরচ হবে প্রায় ১২০ ইউনিট। বর্তমান ইউনিটের গড় দাম ধরলে এর মাসিক খরচ দাঁড়াতে পারে ৯০০ থেকে ১,০০০ টাকা বা তার কিছু বেশি। তুলনায় একই পরিবারের জন্য একটি গ্যাস সিলিন্ডারের দাম প্রায় ১,২০০ টাকা হলেও এটি দিয়ে অনায়াসেই পুরো মাসের রান্না সেরে ফেলা সম্ভব। অর্থাৎ, গ্যাস ও বিদ্যুতের তৎকালীন বাজারদরের ওপর ভিত্তি করেই ঠিক হয় কোনটি ব্যবহার করা সাশ্রয়ী।

সুবিধা ও অসুবিধার দিক থেকেও দুই মাধ্যমের ভিন্নতা রয়েছে। গ্যাস চুলার সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো এতে রান্না দ্রুত হয় এবং খরচ মোটামুটি স্থিতিশীল থাকে। তবে গ্যাসের সংকট দেখা দিলে বড় ধরনের ভোগান্তিতে পড়তে হয়। বিপরীতে, ইলেকট্রিক চুলা ব্যবহারের বড় সুবিধা হলো এতে কোনো ধোঁয়া হয় না, ফলে রান্নাঘর পরিষ্কার ও পরিচ্ছন্ন থাকে। কিন্তু এর বড় অসুবিধা হলো বিদ্যুৎ না থাকলে রান্না পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। এছাড়া তুলনামূলকভাবে এতে বিদ্যুতের খরচও কিছুটা বেশি হতে পারে।

সামগ্রিক পর্যালোচনায় খরচ ও সুবিধার বিচারে এখনও গ্যাস চুলা, বিশেষ করে লাইন গ্যাস ব্যবহার করা তুলনামূলকভাবে সাশ্রয়ী। তবে যেসব এলাকায় গ্যাসের প্রাপ্যতা কম বা সিলিন্ডার সংগ্রহ করা কঠিন, সেখানে ইলেকট্রিক চুলা একটি কার্যকর বিকল্প হতে পারে। তাই নিজের এলাকার পরিস্থিতি, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম এবং প্রাপ্যতার ওপর ভিত্তি করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত কোনটি আপনার পরিবারের জন্য বেশি সুবিধাজনক ও সাশ্রয়ী।


শীতের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সুস্থ থাকার সহজ ১০টি উপায়

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৮ ১৬:০৪:১৩
শীতের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সুস্থ থাকার সহজ ১০টি উপায়
ছবিঃ সংগৃহীত

শীতের ঠান্ডা বাতাস এবং কম তাপমাত্রা প্রায়ই স্বাস্থ্যের জন্য নানা ধরনের চ্যালেঞ্জ নিয়ে আসে। তবে, এই সময়ে সঠিক যত্ন এবং জীবনধারায় কিছু পরিবর্তন আনার মাধ্যমে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে সুস্থ থাকা সম্ভব।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শীতকালে ভারসাম্যপূর্ণ এবং পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় তাজা ফল, শাকসবজি, আস্ত শস্য (whole grains), চর্বিহীন প্রোটিন এবং স্বাস্থ্যকর ফ্যাট অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। বিশেষ করে ভিটামিন সি, ডি এবং জিঙ্ক সমৃদ্ধ খাবার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করে।

ঠান্ডার কারণে পানি পানের প্রবণতা কমে গেলেও শরীরকে হাইড্রেটেড বা আর্দ্র রাখা জরুরি। প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করতে হবে। এর পাশাপাশি উষ্ণ ভেষজ চা, স্যুপ বা ঝোলও শরীরের পানির চাহিদা মেটাতে সাহায্য করে।

সুস্বাস্থ্য এবং শক্তিশালী রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার জন্য প্রতিদিন ৭ থেকে ৯ ঘণ্টা নিরবচ্ছিন্ন ঘুম নিশ্চিত করা প্রয়োজন। ঘুমের মান উন্নত করতে, শোবার আগে মোবাইল বা টিভির স্ক্রিন টাইম কমানো এবং শোবার ঘর আরামদায়ক রাখা উচিত। শীতকালে অনেকেই শারীরিক কার্যকলাপে অলসতা করেন। কিন্তু ফিটনেস বজায় রাখতে এবং মেজাজ ভালো রাখতে নিয়মিত ব্যায়াম চালিয়ে যাওয়া দরকার। ঘরের ভেতরে করা যায় এমন ব্যায়াম, যোগব্যায়াম বা নাচের মতো হালকা ক্রিয়াকলাপও উপকারী।

শীত মৌসুমের সাধারণ রোগ ঠান্ডা ও ফ্লু-এর বিস্তার কমাতে ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা অপরিহার্য। কমপক্ষে ২০ সেকেন্ড ধরে সাবান দিয়ে হাত ধোয়া, প্রয়োজনে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করা এবং অপ্রয়োজনে মুখে হাত দেওয়া এড়িয়ে চলতে হবে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে, প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ভিটামিন ডি, সি বা জিঙ্কের মতো সম্পূরক (supplements) গ্রহণ করা যেতে পারে।

ঠান্ডা আবহাওয়া থেকে শরীরকে সুরক্ষা দেওয়াও খুব জরুরি। হাইপোথার্মিয়া এবং ঠান্ডা লাগাজনিত অন্যান্য অসুস্থতা এড়াতে কয়েক স্তরের (লেয়ার) পোশাক পরা উচিত। বাইরে বের হলে টুপি, গ্লাভস, স্কার্ফ এবং জলরোধী জুতো ব্যবহার করা ভালো। পাশাপাশি ঘর উষ্ণ ও সুরক্ষিত রাখতে হবে।

শীতকাল অনেকের মনে বিষণ্ণতা বা 'উইন্টার ব্লুজ' (মৌসুমী আবেগজনিত ব্যাধি) তৈরি করতে পারে। এই ধরনের মানসিক চাপ মোকাবিলার জন্য ধ্যান, যোগব্যায়াম, শ্বাসপ্রশ্বাসের ব্যায়াম বা নিজের পছন্দের কোনো শখে সময় দেওয়া যেতে পারে। প্রয়োজনে পেশাদার চিকিৎসকের সাহায্য নিতে দ্বিধা করা উচিত নয়।

ঠান্ডা আবহাওয়ার কারণে সামাজিক যোগাযোগ কমিয়ে দেওয়া ঠিক নয়। পরিবার এবং বন্ধুদের সঙ্গে ভার্চুয়ালি বা ব্যক্তিগতভাবে সংযুক্ত থাকা একাকীত্ব কাটাতে এবং মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে।

সবশেষে, ফ্লু এবং অন্যান্য প্রতিরোধযোগ্য রোগ থেকে নিজেকে এবং অন্যদের রক্ষা করার জন্য প্রয়োজনীয় টিকা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এই বিষয়ে বিস্তারিত তথ্যের জন্য স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীর সঙ্গে যোগাযোগ করা যেতে পারে। যাদের বিশেষ কোনো স্বাস্থ্যগত সমস্যা রয়েছে, তাদের জন্য শীতকালীন যত্নের বিষয়ে ব্যক্তিগতকৃত পরামর্শের জন্য চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলা উচিত।


IELTS ছাড়াই অস্ট্রিয়ায় উচ্চশিক্ষার সুযোগ, সাথে সম্পূর্ণ ফ্রি স্কলারশিপ

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৭ ২০:৩৬:১১
IELTS ছাড়াই অস্ট্রিয়ায় উচ্চশিক্ষার সুযোগ, সাথে সম্পূর্ণ ফ্রি স্কলারশিপ
ছবিঃ সংগৃহীত

যারা আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী হিসেবে অস্ট্রিয়ায় উচ্চশিক্ষা অর্জনের স্বপ্ন দেখেন কিন্তু IELTS পরীক্ষার জটিলতার কারণে আবেদন করতে পারছেন না, তাদের জন্য একটি বড় সুখবর এসেছে। ২০২৫ সালের জন্য অস্ট্রিয়ার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় একাধিক বিষয়ে সম্পূর্ণ ফান্ডেড (পুরোপুরি অর্থায়নকৃত) স্কলারশিপের ঘোষণা দিয়েছে, যার জন্য IELTS পরীক্ষার প্রয়োজন হবে না।

এই স্কলারশিপগুলো অস্ট্রিয়ায় পড়তে ইচ্ছুক সব দেশের আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য উন্মুক্ত। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এই স্কলারশিপের আওতায় শিক্ষার্থীরা স্নাতক (Undergraduate), স্নাতকোত্তর (Master’s) এবং ডাক্টরাল (Doctoral) বা পিএইচডি ডিগ্রির জন্য আবেদন করতে পারবেন।

সম্পূর্ণভাবে অর্থায়নকৃত এই স্কলারশিপগুলোর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি, থাকা-খাওয়ার খরচ এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ব্যয়ভার বহন করা হবে। এর ফলে শিক্ষার্থীরা কোনো প্রকার আর্থিক চাপ ছাড়াই পড়াশোনা শেষ করতে পারবেন।

আগ্রহী শিক্ষার্থীদের আলেকজান্দ্রা গ্রান্টস (Alexandra Grants – Scholarships in Austria without IELTS) এর মাধ্যমে আবেদন প্রক্রিয়া এবং অন্যান্য বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানার জন্য বলা হয়েছে। এই স্কলারশিপটি বিশেষ করে সেইসব শিক্ষার্থীদের জন্য একটি বড় সুযোগ, যারা আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষা গ্রহণ করতে চান কিন্তু IELTS পরীক্ষার চাপ এড়িয়ে উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন পূরণ করতে আগ্রহী।

সুত্রঃদৈনিক জনকণ্ঠ


বয়স বাড়লেও তারুণ্য থাকবে অটুট, যদি পাতে থাকে এই শীতের সবজি!

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৬ ১৮:২৯:৪৬
বয়স বাড়লেও তারুণ্য থাকবে অটুট, যদি পাতে থাকে এই শীতের সবজি!
ছবিঃ সংগৃহীত

আজকাল অল্প বয়স থেকেই নানা ধরনের দীর্ঘমেয়াদী বা ক্রনিক রোগের ঝুঁকি বাড়ছে। এসব রোগ প্রতিরোধ করার জন্য সঠিক খাদ্যাভ্যাসের দিকে মনোযোগ দেওয়া অত্যন্ত জরুরি। আমাদের হাতের কাছেই এমন কিছু সহজলভ্য খাবার রয়েছে, যা নিয়মিত খেলে শরীর সুস্থ ও প্রাণবন্ত থাকে। এর মধ্যে মিষ্টি আলু বা রঙিন আলু অন্যতম।

গবেষণায় দেখা গেছে, মিষ্টি আলু খাওয়ার পরও রক্তে শর্করার মাত্রা হঠাৎ করে বেড়ে যায় না। এর প্রধান কারণ হলো এতে থাকা প্রচুর পরিমাণে ফাইবার বা আঁশ। এই ফাইবার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং শরীরে গ্লুকোজের মাত্রা স্থিতিশীল রাখে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নিয়মিত মিষ্টি আলু খেলে তা কোলেস্টেরল কমাতেও সাহায্য করে, যার ফলে হার্টও সুস্থ থাকে।

ফাইবার সমৃদ্ধ এই সবজিটি হজম হয় ধীরে ধীরে। এর ফলে এটি দীর্ঘ সময় পেট ভরা রাখে এবং অপ্রয়োজনীয় বা ঘনঘন ক্ষুধা লাগার প্রবণতা কমায়। একারণে, যারা ওজন কমানোর চেষ্টা করছেন, তাদের জন্য মিষ্টি আলু একটি চমৎকার খাবার হতে পারে। ফাইবার বেশি থাকার কারণে এটি কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা সমাধানেও বেশ কার্যকরী।

মিষ্টি আলুতে থাকা বিটা ক্যারোটিন নামক উপাদান শরীরে যাওয়ার পর তা ভিটামিন এ-তে রূপান্তরিত হয়। এই ভিটামিন এ চোখ এবং ত্বকের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এছাড়া, মিষ্টি আলুতে থাকা পটাশিয়াম স্নায়ুতন্ত্রকে সঠিকভাবে কাজ করতে সাহায্য করে এবং কিডনির স্বাস্থ্য ভালো রাখতেও ভূমিকা রাখে।

এই রঙিন আলুতে আরও রয়েছে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট, ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেশিয়াম। এই উপাদানগুলো হাড় মজবুত করতে এবং শরীরের সামগ্রিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে কার্যকরভাবে কাজ করে।

শীতের এই মৌসুমে নিয়মিত এই রঙিন সবজিটি খাদ্যতালিকায় রাখলে তা শুধু খাবারের স্বাদই বাড়াবে না, স্বাস্থ্যেরও ব্যাপক উন্নতি ঘটাবে। এটি সুস্থতা ও দীর্ঘায়ু—দুটোই অর্জনে সহায়তা করতে পারে।


শীতে ত্বক বাঁচানোর কার্যকর উপায়

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৬ ১১:০২:৩৫
শীতে ত্বক বাঁচানোর কার্যকর উপায়
ছবি: সংগৃহীত

শীতের সময় প্রকৃতির বাতাস হয়ে ওঠে শুষ্ক, ঠান্ডা এবং আর্দ্রতাহীন। এই পরিবর্তিত পরিবেশের কারণে ত্বকের ওপর বাড়তি চাপ পড়ে। ত্বক তার স্বাভাবিক তেল উৎপাদন কমিয়ে ফেলে এবং দ্রুত আর্দ্রতা হারায়, যার ফল হিসেবে দেখা দেয় রুক্ষতা, টানটান অনুভূতি, চুলকানি, খোসা ওঠা, ফাটল এবং নিস্তেজ ভাব। শীতে ত্বকপ্রতিরোধ ক্ষমতাও কমে যায়, ফলে সামান্য ধুলাবালু বা ঠান্ডা বাতাসেই ত্বক সংবেদনশীল হয়ে ওঠে। তাই এই মৌসুমে ঘরে বসেই প্রাকৃতিক উপাদানে ত্বকের যত্ন নেওয়া অত্যন্ত কার্যকর এবং স্বাস্থ্যকর।

শীতকালের প্রথম প্রয়োজন ত্বকের পর্যাপ্ত আর্দ্রতা ধরে রাখা। ত্বকের ভেতরের জলীয় অংশ রক্ষা করার জন্য ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। মধু ত্বকের জন্য একটি অসাধারণ প্রাকৃতিক হিউমেকট্যান্ট হিসেবে কাজ করে। মধু ত্বকের গভীরে আর্দ্রতা ধরে রাখে এবং ত্বকের কোষকে পুনরুজ্জীবিত করে। অ্যালোভেরা জেল ত্বকের জ্বালা কমায়, রুক্ষতা দূর করে এবং ত্বককে নরম রাখে। শিয়া বাটার প্রাকৃতিক চর্বিতে সমৃদ্ধ, যা ত্বকের ওপর একটি সুরক্ষামূলক স্তর তৈরি করে এবং ঠান্ডা বাতাসের ক্ষতি থেকে রক্ষা করে। নারকেল তেল ও অলিভ অয়েল ত্বককে পুষ্টি জোগায় এবং টানটান ভাব দূর করে।

প্রতিদিন পর্যাপ্ত পানি পান করা শুধু শরীরের জন্য নয় বরং ত্বকের স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য অত্যন্ত জরুরি। পানি ত্বকের টিস্যুকে আর্দ্র রাখে এবং ভেতর থেকে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়। এর পাশাপাশি কমলা, শসা, আপেল, তরমুজ, লেটুস এবং সবুজ শাকসবজি খেলে ত্বক প্রাকৃতিকভাবে আর্দ্র থাকে। এসব খাবার ভিটামিন সি, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং পানি সরবরাহ করে, যা ত্বকের প্রাকৃতিক গঠনকে শক্তিশালী করে।

ত্বকের বাড়তি যত্নের জন্য ঘরেই প্রাকৃতিক ফেসমাস্ক প্রস্তুত করা যায়। দই ত্বককে ঠান্ডা রাখে এবং শুষ্কতা দূর করে। মধু ও দই মিশিয়ে মুখে লাগালে ত্বক মসৃণ হয়। অ্যাভোকাডো ম্যাশ করে ত্বকে লাগালে তার ভিটামিন ই এবং প্রাকৃতিক তেল ত্বককে গভীরভাবে পুষ্টি জোগায়। ওটস ও দুধ মিশিয়ে ব্যবহার করলে সংবেদনশীল ত্বকও আরাম পায় এবং রুক্ষতা কমে।

শীতকালে ঘরের ভেতরের বাতাসও ত্বকের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। ঘরে হিটার বা বন্ধ জানালার কারণে বাতাস আর্দ্রতাহীন হয়ে পড়ে। এই শুষ্ক বাতাস ত্বকের আর্দ্রতা শুষে নেয় এবং ত্বক সহজে ফেটে যায়। তাই ঘরে একটি হিউমিডিফায়ার ব্যবহার করলে বাতাসে আর্দ্রতা ফিরে আসে এবং ত্বক নরম থাকে। বিশেষ করে রাতে ঘুমানোর ঘরে হিউমিডিফায়ার ব্যবহার করলে ত্বক রাতে আর্দ্রতা পায়।

শীতে গোসলের সময় ত্বকের বিশেষ যত্ন প্রয়োজন। অনেকেই শীতে গরম পানি দিয়ে দীর্ঘক্ষণ গোসল করতে পছন্দ করেন, কিন্তু এটি ত্বকের ক্ষতি করে। গরম পানি ত্বকের প্রাকৃতিক তেল ধুয়ে ফেলে দেয় এবং ত্বক আরও বেশি শুষ্ক হয়ে যায়। তাই গোসল করতে হবে লুকো উষ্ণ পানিতে এবং সময় সীমিত রাখতে হবে। গোসল শেষে ত্বক শুকানোর সময় তোয়ালে দিয়ে ঘষাঘষি না করে আলতোভাবে চাপ দিয়ে পানি মুছে ফেলা উচিত। এরপর ত্বক একটু ভেজা থাকতে থাকতেই ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করলে তা ভালোভাবে শোষিত হয়।

ত্বক পরিষ্কারের সময়ও কিছু পরিবর্তন দরকার হয়। শীতে সালফেটযুক্ত ক্লিনজার বা ফোমিং ক্লিনজার ব্যবহার ত্বককে আরও শুষ্ক করে তোলে। এর পরিবর্তে ক্রিমি ক্লিনজার বা মৃদু উপাদানযুক্ত ক্লিনজার ব্যবহার করা উচিত। সপ্তাহে একবার বা দুই সপ্তাহে একবার হালকা স্ক্রাব ব্যবহার করলে ত্বকের মৃত কোষ দূর হয় এবং নতুন কোষ তৈরির প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হয়। তবে অতিরিক্ত স্ক্রাবিং করলে ত্বকে জ্বালা, লালচে ভাব এবং রুক্ষতা তৈরি হতে পারে, যা এড়িয়ে চলা প্রয়োজন।

ঠান্ডা বাতাসে বাইরে বের হলে ত্বক সরাসরি ক্ষতির মুখে পড়ে। তাই হাতের ত্বক রক্ষা করতে গ্লাভস পরা উচিত। ঠান্ডা পরিবেশে বারবার হাত ধোয়া বা পানি ব্যবহার করা হাতের ত্বককে দ্রুত শুকিয়ে ফেলে। তাই গ্লাভস ব্যবহার করলে হাতের আর্দ্রতা বজায় থাকে। ঠোঁটের ত্বক খুবই সংবেদনশীল, তাই ঠোঁট ফেটে যাওয়া প্রতিরোধে নিয়মিত লিপবাম ব্যবহার করা জরুরি। সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি শীতেও সক্রিয় থাকে, তাই এসপিএফযুক্ত লিপবাম ও ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত।

গোসল বা মুখ ধোয়ার পর ত্বক মুছতে হবে আলতোভাবে। এরপর সঙ্গে সঙ্গে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করলে ত্বকের ওপর একটি সুরক্ষামূলক স্তর তৈরি হয়, যা পানি ধরে রাখে এবং শুষ্কতা প্রতিরোধ করে।

সব মিলিয়ে শীতকালে প্রাকৃতিক উপাদানভিত্তিক ত্বকচর্চা ত্বককে নরম, উজ্জ্বল, সুস্থ এবং প্রতিরোধী রাখে। নিয়মিত যত্ন, পর্যাপ্ত পানি পান, সঠিক খাদ্যাভ্যাস এবং মৃদু পরিচর্যার মাধ্যমে শীতকালেও ত্বক থাকে প্রাণবন্ত এবং সুন্দর।


শীতে ঘরোয়া উপায়ে চুলের পূর্ণাঙ্গ যত্ন

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৬ ১০:৫২:১৬
শীতে ঘরোয়া উপায়ে চুলের পূর্ণাঙ্গ যত্ন
ছবি: সংগৃহীত

শীতকাল আমাদের চুল এবং ত্বকের জন্য একটি চ্যালেঞ্জপূর্ণ সময়। ঠাণ্ডা হাওয়া, শুষ্ক আবহাওয়া এবং ঘরের গরম পরিবেশ চুলের আর্দ্রতা কমিয়ে চুলকে ভঙ্গুর, রুক্ষ এবং দুর্বল করে তোলে। তাই শীতকালে নিয়মিত ও সচেতন চুলের যত্ন অপরিহার্য। ঘরে বসেই সামান্য যত্নে চুলকে রাখা যায় মসৃণ, কোমল এবং প্রাণবন্ত।

চুলে আর্দ্রতা যোগ করুন

শীতে চুলের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো আর্দ্রতা হারানো। আবহাওয়া যত শুষ্ক হয়, চুল ততই শক্ত, রুক্ষ এবং ভেঙে যায়। তাই নিয়মিত ময়েশ্চারাইজিং পণ্য ব্যবহার করা অত্যন্ত জরুরি।

ময়েশ্চারাইজিং শ্যাম্পু

সাধারণ শ্যাম্পুর বদলে এমন শ্যাম্পু ব্যবহার করুন যা চুলের প্রাকৃতিক আর্দ্রতা অক্ষুণ্ণ রাখে। মৃদু উপাদানযুক্ত শ্যাম্পু চুলকে পরিষ্কার করার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় তেল ধরে রাখতে সাহায্য করে।

সমৃদ্ধ কন্ডিশনার

প্রতিবার চুল ধোয়ার পরে পুষ্টিকর কন্ডিশনার ব্যবহার করুন। এটি চুলের ক্ষতিগ্রস্ত স্তরকে মেরামত করে এবং আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে। এতে চুল থাকে নরম, উজ্জ্বল এবং বাউন্সি।

চুলের মাস্ক

শীতকালে সপ্তাহে এক বা দুইবার গভীর পুষ্টিকর চুলের মাস্ক ব্যবহার করা খুবই উপকারী। বাজারে পাওয়া পুষ্টিকর মাস্কের পাশাপাশি ঘরোয়া মাস্কও বেশ কার্যকর। দই, কলা, মধু এবং নারকেল তেল দিয়ে তৈরি করা ঘরোয়া মাস্ক চুলে গভীর পুষ্টি জোগায় এবং আর্দ্রতা অনেকক্ষণ ধরে রাখে।

চুলের তেল এবং লিভ ইন কন্ডিশনার

হালকা তেল চুলের উজ্জ্বলতা বাড়ায় এবং শুষ্কতা কমায়। লিভ ইন কন্ডিশনার চুলকে সারাদিন নরম এবং আর্দ্র রাখে। বিশেষ করে যাঁরা বেণি বা প্রটেকটিভ স্টাইল করেন তাঁদের জন্য এটি খুবই কার্যকর।

শরীরকে আর্দ্র রাখুন

শীতে পানি খাওয়ার প্রবণতা কমে যায়, ফলে শরীর যেমন শুষ্ক হয়, চুলও তেমন রুক্ষ হয়ে ওঠে। তাই নিয়মিত পানি পান করা চুলের স্বাভাবিক আর্দ্রতা বজায় রাখতে সহায়ক।

চুলকে পরিবেশের ক্ষতি থেকে সুরক্ষা দিন

শীতকালে ঠাণ্ডা হাওয়া, ধুলোবালি এবং ঘরের শুষ্ক গরম পরিবেশ চুলের ক্ষতি বাড়িয়ে দেয়। তাই চুলকে যতটা সম্ভব পরিবেশগত ক্ষতি থেকে সুরক্ষিত রাখা প্রয়োজন।

মাথা ঢেকে রাখুন

বাইরে বের হলে টুপি বা স্কার্ফ ব্যবহার করুন। শীতের শুষ্ক বাতাস চুলের প্রাকৃতিক আর্দ্রতা নষ্ট করে। উলের টুপি ব্যবহার করলে এর ভেতরে সাটিন বা সিল্কের কাপড় লাগিয়ে নিতে পারেন যাতে চুলে ঘর্ষণ কম হয়।

বাড়িতে আর্দ্রতা বৃদ্ধি করুন

শীতের সময় ঘরের গরম পরিবেশ বাতাসকে শুষ্ক করে তোলে। এতে চুল এবং ত্বক আরও শুষ্ক হয়। ঘরে হিউমিডিফায়ার ব্যবহার করলে বাতাসে আর্দ্রতা ফিরে আসে যা চুলের স্বাস্থ্য ধরে রাখতে সাহায্য করে।

কুসুম গরম পানি ব্যবহার করুন

অনেকেই শীতে গরম পানি দিয়ে চুল ধোয়ার অভ্যাস করেন। কিন্তু খুব গরম পানি স্কাল্পের স্বাভাবিক তেল কমিয়ে দেয়। তাই চুল ধোয়ার সময় কুসুম গরম পানি ব্যবহার করা সবচেয়ে ভালো।

ভেজা চুল নিয়ে বাইরে না যাওয়া

শীতকালে ভেজা চুল দ্রুত শক্ত হয়ে যায় এবং এতে চুলের ভেঙে যাওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। তাই বাড়ি থেকে বের হওয়ার আগে চুল পুরোপুরি শুকিয়ে নিন।

ধোয়া এবং স্টাইলিং অভ্যাসে পরিবর্তন আনুন

চুলের যত্নে সঠিক অভ্যাস বজায় রাখা খুব প্রয়োজন। শীতে এই অভ্যাসগুলো আরও সচেতনভাবে পালন করতে হবে।

চুল ধোয়ার সংখ্যা কমান

বারবার শ্যাম্পু করলে চুলের প্রাকৃতিক তেল কমে যায়। তাই সপ্তাহে দুই থেকে তিনবারের বেশি চুল ধোয়া উচিত নয়।

হিট স্টাইলিং কমান

ব্লো ড্রায়ার, স্ট্রেইটনার এবং কার্লিং টুল চুলকে শুষ্ক করে এবং ক্ষতিগ্রস্ত করে। তাই যতটা সম্ভব চুল প্রাকৃতিকভাবে শুকাতে দিন এবং হিট স্টাইলিং কম ব্যবহার করুন।

নিয়মিত চুল কাটুন

শীতকালে চুলের ডগা ছেঁড়া বেশি দেখা যায়। তাই ছয় থেকে আট সপ্তাহ পরপর চুলের ডগা ছেঁটে নিলে চুল থাকে স্বাস্থ্যকর, সুশৃঙ্খল এবং ভঙ্গুরতা কমে।

শীতকালে চুলের জন্য অতিরিক্ত টিপস

  • সাটিন বা সিল্কের বালিশকভার ব্যবহার করুন যাতে ঘর্ষণ কম হয়।
  • চুলে কেমিক্যাল ট্রিটমেন্ট করা কমিয়ে দিন, কারণ এগুলো চুলকে আরও শুষ্ক করে।]
  • অতিরিক্ত চিরুনি ব্যবহার করবেন না, এতে ভঙ্গুরতা বাড়ে।
  • দিনে বেণি বা বান ধরনের স্টাইল করলে চুল কম ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

শীতকালে চুলের যত্ন নেওয়া মানে শুধু এক বা দুইটি পণ্য ব্যবহার করা নয়। বরং এটি একটি সামগ্রিক যত্ন পদ্ধতি যেখানে আর্দ্রতা যোগ করা, সুরক্ষা দেওয়া এবং স্বাস্থ্যকর অভ্যাস বজায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ। এই গাইডে বর্ণিত প্রতিটি ধাপ অনুসরণ করলে শীতেও আপনার চুল থাকবে নরম, উজ্জ্বল, মসৃণ এবং সুস্থ।


শীতে ঠান্ডা পানিতে গোসল? শুনলেই ভয়, কিন্তু এর উপকার জানলে অবাক হবেন

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৫ ১১:৪৯:৫৪
শীতে ঠান্ডা পানিতে গোসল? শুনলেই ভয়, কিন্তু এর উপকার জানলে অবাক হবেন
ছবিঃ সংগৃহীত

শীতকাল মানেই ঠান্ডা হাওয়া, কাঁপুনি আর গরম কম্বলের আরাম। এমন একটি ঋতুতে ঠান্ডা পানি দিয়ে গোসলের কথা মনে হলেই বেশিরভাগ মানুষের গা শিউরে ওঠে। কিন্তু অবাক করা বিষয় হলো, বিশ্বের অনেক দেশেই বহু মানুষ নিয়মিত এই কাজটি করেন। তারা বিশ্বাস করেন, এতে শরীর আরও শক্তিশালী হয় এবং মন সতেজ থাকে।

সাম্প্রতিক সময়ে স্বাস্থ্যসচেতন মানুষদের মধ্যে ‘কোল্ড শাওয়ার’ নামে এই অভ্যাসটি বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। অনেকেই দাবি করেন, ঠান্ডা পানি শরীরকে সক্রিয় রাখতে সাহায্য করে, মনোযোগের ক্ষমতা বাড়ায় এবং মানসিক চাপ কমাতে পারে। তবে প্রশ্ন হলো, শীতের এই সময়ে সবাই কি এই অভ্যাসটি মেনে চলতে পারবেন?

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঠান্ডা পানিতে গোসল করলে শরীরে রক্ত সঞ্চালন বেড়ে যায়। এর ফলে শরীর খুব দ্রুত সক্রিয় হয়ে ওঠে। নিয়মিত ঠান্ডা পানি সহ্য করার অভ্যাস গড়ে তুললে তা রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতেও সাহায্য করতে পারে। ঠান্ডা পানি ত্বকের ছিদ্র (পোরস) টাইট রাখে এবং চুলকেও মজবুত করে। হঠাৎ করে শরীরে লাগা এই ঠান্ডা ঝাঁকুনি মস্তিষ্ককে সজাগ করে তোলে, যার ফলে মন সতেজ হয় এবং এনার্জি বাড়ে।

তবে এই অভ্যাসের যেমন উপকার আছে, তেমনি কিছু ঝুঁকিও রয়েছে। বিশেষ করে যারা দুর্বল, অসুস্থ অথবা সর্দি-জ্বর, অ্যাজমা বা শ্বাসকষ্টের মতো সমস্যায় ভুগছেন, ঠান্ডা পানি তাদের বিপদ আরও বাড়িয়ে দিতে পারে। শীতের আবহাওয়ায় এমনিতেই শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে কম থাকে, তার ওপর ঠান্ডা পানির ব্যবহার শরীরকে আরও দ্রুত ঠান্ডা করে ফেলে। এছাড়া, হঠাৎ ঠান্ডার এই ঝটকা হৃদরোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের ওপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করতে পারে।

সব মিলিয়ে বলা যায়, ঠান্ডা পানিতে গোসল করার বেশ কিছু উপকারিতা থাকলেও শীতকালে এই অভ্যাস সবার জন্য উপযুক্ত নয়। যাদের শরীর সম্পূর্ণ সুস্থ, রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা ভালো এবং ঠান্ডাজনিত কোনো বড় সমস্যা নেই, তারা চাইলে এই অভ্যাসটি চেষ্টা করে দেখতে পারেন। তবে, যাদের শরীর দুর্বল, অসুস্থ বা যাদের হার্ট ও শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা রয়েছে, তাদের জন্য ঠান্ডা পানির গোসল এড়িয়ে চলাই সবচেয়ে নিরাপদ হবে।


শীতে শুষ্ক ঠোঁট নরম থাকবে ঘরোয়া উপায় ও ঐতিহ্যবাহী পদ্ধতির কার্যকারিতায়

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৩ ২১:৩৯:৪২
শীতে শুষ্ক ঠোঁট নরম থাকবে ঘরোয়া উপায় ও ঐতিহ্যবাহী পদ্ধতির কার্যকারিতায়
ছবিঃ সংগৃহীত

শীতকাল এলেই অনেকের ঠোঁট ফাটা ও শুষ্কতার সমস্যা দেখা দেয়। এই সময়ে ঠোঁট ফাটা রোধ করতে নানা ধরনের পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে চলে আসা কিছু ঘরোয়া প্রতিকার এবং ঐতিহ্যবাহী ঠোঁটের যত্নের পদ্ধতি এখনো অত্যন্ত জনপ্রিয়। এই পদ্ধতিগুলো সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক, ব্যবহার করা সহজ এবং ত্বকের জন্য ক্ষতিকারকও নয়।

আসুন জেনে নেওয়া যাক কিভাবে এই শীতে শুষ্ক ও ফাটা ঠোঁট নরম রাখা যায়

১. নাভিতে সরিষার তেলের ম্যাসাজ

বয়স্করা নাভিকে শরীরের অনেক স্নায়ুর কেন্দ্র বলে মনে করেন। এই ঐতিহ্যবাহী পদ্ধতিটি শীতকালে ফাটা ঠোঁটের জন্য বিশেষভাবে কার্যকর।

ঘুমাতে যাওয়ার আগে নাভিতে দুই বা তিন ফোঁটা সরিষার তেল আলতো করে ম্যাসাজ করুন।

এই ঘরোয়া প্রতিকারটি শরীরের আর্দ্রতা ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করে এবং ত্বকের শুষ্কতা ও ফাটার মতো সমস্যা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করে। নিয়মিত এটি অনুসরণ করলে ঠোঁট ফাটার সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।

২. ঘিয়ের ব্যবহার

পাহাড়ি বাড়িতে ব্যবহৃত ঘি কেবল ভোজ্যই নয়, এর ঠোঁটের জন্য অসাধারণ স্বাস্থ্য উপকারিতাও রয়েছে।

ফাটা ঠোঁটে গরম ঘি লাগালে তাৎক্ষণিকভাবে আর্দ্রতা পাওয়া যায়। রাতে ঘুমানোর আগে যদি ঘি লাগান, তাহলে সকালে ঠোঁটের স্তর নরম থাকবে এবং ফাটা কমবে।

৩. মধুর প্রলেপ

মধুতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিসেপটিক ও প্রদাহ-বিরোধী বৈশিষ্ট্য রয়েছে।

আপনার ঠোঁট যদি ফাটা ও শুষ্ক থাকে, তাহলে সামান্য মধু লাগালে তাৎক্ষণিক আরাম পাবেন। মধু কেবল আপনার ঠোঁটকে আর্দ্রতা দেয় না বরং দ্রুত নিরাময়েও সাহায্য করে।

৪. দুধের ক্রিম বা সর

শীতকালে ঠোঁটকে ময়েশ্চারাইজ করার জন্য দুধের ক্রিম বা সর ব্যবহার করা হয়।

এই ক্রিমটি ত্বকে আলতো করে ম্যাসাজ করা উচিত। ক্রিমের প্রাকৃতিক চর্বি ঠোঁটের হারানো রং পুনরুদ্ধার করে এবং নরম করে।

উপরন্তু, ফাটা ঠোঁটের জন্য গুড় ও সরিষার তেলের মিশ্রণ ব্যবহার করাও উপকারী।

সূত্র : নিউজ ১৮

পাঠকের মতামত:

ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গড়তে হলে রাষ্ট্রকে অবশ্যই তার সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা পুনরুদ্ধার করতে হবে

ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গড়তে হলে রাষ্ট্রকে অবশ্যই তার সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা পুনরুদ্ধার করতে হবে

রাষ্ট্রের ধারণাটি একসময় কেবল প্রশাসনিক ক্ষমতা, আইনের শাসন এবং নিরাপত্তা প্রদানের সঙ্গে সম্পর্কিত ছিল। কিন্তু আধুনিক বিশ্বে রাষ্ট্রের ভূমিকা এখন... বিস্তারিত