আগামীকালের সেহরি, ইফতার ও নামাজের সময়সূচী

ধর্ম ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ৩০ ২২:০৫:১১
আগামীকালের সেহরি, ইফতার ও নামাজের সময়সূচী
ছবি: সংগৃহীত

ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ এবং অন্যান্য নির্ভরযোগ্য আন্তর্জাতিক সূত্রের তথ্যের ভিত্তিতে, বাংলাদেশের স্ট্যান্ডার্ড সময় অনুযায়ী আগামী ১ অক্টোবর, ২০২৫ (বুধবার)-এর সেহরি, ইফতার, তাহাজ্জুদ এবং পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের সম্ভাব্য সময়সূচী নিচে দেওয়া হলো।

বিস্তারিত সময়সূচী (ঢাকা):

তাহাজ্জুদ: রাত ১:০০ AM থেকে ফজরের আজানের পূর্ব পর্যন্ত।(ইসলামিক রীতি অনুযায়ী, রাতের শেষ তৃতীয়াংশ তাহাজ্জুদ নামাজের জন্য সর্বোত্তম সময় হিসেবে গণ্য হয়।)

সেহরির শেষ সময়: ভোর ৪:৩৬ AM(রোজা রাখার জন্য এই সময়ের পূর্বেই পানাহার শেষ করতে হবে।)

ফজর: ভোর ৪:৩৬ AM

সূর্যোদয়: সকাল ৫:৪৯ AM

যোহর: দুপুর ১১:৪৮ AM

আসর: বিকাল ৩:০৮ PM

ইফতার ও মাগরিব: সন্ধ্যা ৫:৪৫ PM(সারাদিনের রোজা শেষে এই সময়ে ইফতার করতে হবে।)

ইশা: সন্ধ্যা ৭:০০ PM

গুরুত্বপূর্ণ নোট:

এই সময়সূচীটি রাজধানী ঢাকার জন্য প্রযোজ্য। চট্টগ্রাম বা সিলেট বিভাগের সময় ঢাকার চেয়ে ৫-৭ মিনিট আগে এবং রাজশাহী বা খুলনা বিভাগের সময় ঢাকার চেয়ে ৫-১০ মিনিট পরে হতে পারে।

সবচেয়ে সঠিক সময়ের জন্য আপনার স্থানীয় মসজিদের সময়সূচী অনুসরণ করা উত্তম।


যে সাগরে কেউ ডুবে না, কেন সেখানে লুকিয়ে আছে এক অভিশপ্ত ইতিহাস?

ধর্ম ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ৩০ ২০:৪২:৪১
যে সাগরে কেউ ডুবে না, কেন সেখানে লুকিয়ে আছে এক অভিশপ্ত ইতিহাস?
মৃত সাগর/ছবি: সংগৃহীত

ভূগোলের এক অপার বিস্ময় মৃত সাগর, যা পৃথিবীর সর্বনিম্ন বিন্দুতে অবস্থিত এক লবণাক্ত হ্রদ। কিন্তু এর পরিচয় শুধু ভূগোলের পাতায় সীমাবদ্ধ নয়। এটি এক ঐতিহাসিক নিদর্শন, যা প্রায় চার হাজার বছর আগে ঘটে যাওয়া এক ঐশ্বরিক আযাবের নীরব সাক্ষী। এই সাগর সেই কওমে লুত বা লুতের জাতির ধ্বংসের কথাই স্মরণ করিয়ে দেয়, যাদেরকে তাদের সীমালঙ্ঘনের জন্য এক ভয়াবহ পরিণতি বরণ করতে হয়েছিল।

যেসব পাপে লিপ্ত ছিল কওমে লুত:

ঐতিহাসিক এবং ধর্মীয় বর্ণনা অনুযায়ী, হযরত ইব্রাহিম (আঃ)-এর ভাতিজা হযরত লুত (আঃ)-কে সদোম জাতির প্রতি নবী হিসেবে পাঠানো হয়েছিল। এই জাতি ইতিপূর্বে মানব ইতিহাসে দেখা যায়নি এমন সব পাপে লিপ্ত ছিল।

তাদের প্রধান তিনটি পাপ ছিল:

১. প্রকাশ্যে অশ্লীল কর্মকাণ্ড ও বেহায়াপনা।

২. ডাকাতি ও রাহাজানি, যা তাদের অভ্যাসে পরিণত হয়েছিল।

৩. সমকামিতা, যা ছিল তাদের সবচেয়ে বড় সীমালঙ্ঘন।

হযরত লুত (আঃ) তাদের এই পথ থেকে সরে আসার জন্য বারবার আহ্বান জানান, কিন্তু তারা তার কথায় কর্ণপাত না করে উল্টো তাকেই শহর থেকে বের করে দেওয়ার হুমকি দেয়।

ঐশ্বরিক আযাব এবং ধ্বংসের বিবরণ:

যখন তাদের অবাধ্যতা চরমে পৌঁছায়, তখন আল্লাহর পক্ষ থেকে আযাব চূড়ান্ত হয়। ফেরেশতারা মানুষের রূপ ধরে হযরত লুত (আঃ)-এর কাছে আসেন এবং তাকে রাতের আঁধারে তার অনুসারীদের নিয়ে শহর ছেড়ে চলে যেতে বলেন। তাকে কঠোরভাবে নির্দেশ দেওয়া হয় যে, "চলার পথে কেউ যেন পেছনে ফিরে না তাকায়।"

ঐতিহাসিক বর্ণনা অনুযায়ী, হযরত জিবরাইল (আঃ) তার ডানা দিয়ে পুরো শহরটিকে শূন্যে তুলে ফেলেন, এরপর সেটিকে উল্টে জমিনে নিক্ষেপ করেন এবং আকাশ থেকে তাদের উপর প্রস্তর বৃষ্টি বর্ষণ করা হয়। এই মহাধ্বংসে লুত (আঃ)-এর স্ত্রীও ধ্বংস হয়েছিলেন, কারণ তিনি আল্লাহর নির্দেশ অমান্য করে পেছনে ফিরে তাকিয়েছিলেন।

শেষ নবীর নির্দেশনা:

সহীহ বুখারী শরীফের হাদিসের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়েছে যে, মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এই ধরনের আযাবের স্থান অতিক্রম করার সময় অনুশোচনার সাথে, ক্রন্দনরত অবস্থায় প্রবেশ করতে বলেছেন। কারণ, এই স্থানগুলো অহংকার প্রদর্শনের জায়গা নয়, বরং শিক্ষা গ্রহণের স্থান।

আজও মৃত সাগর কোনো প্রাণের অস্তিত্ব ছাড়াই এক নীরব সাক্ষী হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে, যা মানুষকে তার সৃষ্টিকর্তার অবাধ্যতার ভয়াবহ পরিণতির কথা স্মরণ করিয়ে দেয়।


ইসলামী ব্যাংকিংয়ের লভ্যাংশ হালাল নাকি সুদ? জানুন প্রকৃত সত্য

ধর্ম ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ৩০ ০৮:০১:১৫
ইসলামী ব্যাংকিংয়ের লভ্যাংশ হালাল নাকি সুদ? জানুন প্রকৃত সত্য

বাংলাদেশসহ মুসলিম বিশ্বের অনেক দেশে ইসলামী ব্যাংকিং ব্যবস্থার প্রতি মানুষের আগ্রহ বাড়ছে। কিন্তু একটি প্রশ্ন প্রায়ই সামনে আসে—ইসলামী ব্যাংকে টাকা রেখে আমরা লভ্যাংশ বা মুনাফা খেতে পারব কিনা। এ বিষয়ে ভিন্ন ভিন্ন ওলামায়ে কেরামের পর্যবেক্ষণ রয়েছে।

ইসলামী ব্যাংক ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ

আমাদের দেশের ইসলামী ব্যাংকগুলো বাংলাদেশ ব্যাংকের অধীনে পরিচালিত হয়। অর্থাৎ, ইসলামী ব্যাংকগুলোকে অন্যান্য সব ব্যাংকের মতোই দেশের ব্যাংকিং আইন, বিধি-বিধান ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিমালা মেনে চলতে হয়। যেহেতু বাংলাদেশ ব্যাংক নিজেই একটি সুদভিত্তিক প্রতিষ্ঠান, তাই ইসলামী ব্যাংকের কার্যক্রম শতভাগ সুদমুক্ত রাখা বাস্তবে কঠিন হয়ে পড়ে। এ কারণে অনেকে মনে করেন, ইসলামী ব্যাংককে পুরোপুরি শরিয়াহ–সম্মত বলা যায় না।

শরিয়াহ বোর্ডের ভূমিকা

তবে প্রতিটি ইসলামী ব্যাংকের একটি স্বতন্ত্র শরিয়াহ বোর্ড থাকে। এই বোর্ডের দায়িত্ব হলো ব্যাংকের সব কার্যক্রম ইসলামী শরিয়াহ অনুযায়ী হচ্ছে কি না তা তদারকি করা, প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া এবং শরিয়াহভিত্তিক নীতিমালা প্রণয়ন করা।সহজভাবে বললে, শরিয়াহ বোর্ডের মূল দায়িত্ব হলো—

  • ব্যাংকের বিনিয়োগ ও লেনদেন সুদমুক্ত রাখা
  • শরিয়াহসম্মত বিনিয়োগপদ্ধতি অনুসরণ নিশ্চিত করা
  • প্রয়োজনে গ্রাহকদের জন্য নির্দেশনা প্রদান করা

যেহেতু শরিয়াহ বোর্ডে দেশ-বিদেশের প্রখ্যাত আলেমগণ থাকেন, তাই সাধারণ মানুষ তাদের নির্দেশনা অনুসারে ইসলামী ব্যাংকের লভ্যাংশ গ্রহণকে বৈধ মনে করতে পারেন।

টাকা রাখা বনাম লভ্যাংশ গ্রহণ

ইসলামী ব্যাংকে টাকা জমা রাখা এবং সেখান থেকে মুনাফা গ্রহণ করা দুটি ভিন্ন বিষয়। টাকা জমা রাখা শুধু বৈধ নয়, বরং জরুরি। কারণ, যদি কেউ সুদী ব্যাংকে টাকা রাখে তবে তার অর্থ দিয়ে ব্যাংক সুদভিত্তিক কার্যক্রম পরিচালনা করবে, যা পরোক্ষভাবে সুদের কারবারকে সমর্থন করার সমান অপরদিকে ইসলামী ব্যাংকে টাকা রাখলে অন্তত নিশ্চিত হওয়া যায় যে, আপনার অর্থ সুদভিত্তিক লেনদেনে ব্যবহার করা হবে না।

লভ্যাংশ বা মুনাফা গ্রহণের বৈধতা

শরিয়াহ বোর্ড অনুমোদিত ইসলামী ব্যাংকের মুনাফা গ্রহণ করা বৈধ, তবে কিছু শর্তসাপেক্ষে।

  • শরিয়াহ–সম্মত বিনিয়োগ পদ্ধতি:ইসলামী ব্যাংকগুলো সাধারণত মুদারাবা (লাভ-লোকসানের অংশীদারিত্ব) ও মুশারাকা (অংশীদারিত্ব) ভিত্তিক বিনিয়োগ করে থাকে। এ পদ্ধতিগুলো সুদমুক্ত এবং শরিয়াহ–সম্মত।
  • সুদ নয়, বরং লাভ:প্রচলিত ব্যাংকের মতো নির্দিষ্ট সুদের হার এখানে নেই। বরং ব্যাংক যে ব্যবসা বা বিনিয়োগ থেকে লাভ করবে, সেই লাভের একটি অংশ গ্রাহককে প্রদান করবে। ফলে এটিকে সুদ বলা যাবে না।
  • শরিয়াহ বোর্ডের তদারকি:ইসলামী ব্যাংকের প্রতিটি বিনিয়োগ ও লেনদেন শরিয়াহ বোর্ড দ্বারা অনুমোদিত হতে হবে। এতে গ্রাহক নিশ্চিত হতে পারবেন যে প্রাপ্ত মুনাফা সুদের আওতাভুক্ত নয়।

গ্রাহকের করণীয়

  • ব্যাংক যাচাই করুন: নিশ্চিত করুন যে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক বা ব্যাংকিং উইন্ডো একটি পূর্ণাঙ্গ শরিয়াহ বোর্ড দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে।
  • বিনিয়োগ পদ্ধতি জানুন: ব্যাংক কোন কোন প্রকল্পে বিনিয়োগ করছে তা জানার চেষ্টা করুন এবং শরিয়াহ অনুমোদিত কিনা তা খোঁজ নিন।
  • সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে পরামর্শ করুন: যদি সন্দেহ থাকে তবে সরাসরি ব্যাংকের শরিয়াহ বোর্ড বা কোনো ইসলামী অর্থনীতি বিষয়ক বিশেষজ্ঞের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।

সারকথা হলো, ইসলামী ব্যাংকে টাকা জমা রাখা এবং লভ্যাংশ গ্রহণ করা বৈধ, যদি সেই ব্যাংকটি সত্যিকার অর্থে শরিয়াহ বোর্ড দ্বারা অনুমোদিত হয় এবং তাদের বিনিয়োগ ও লেনদেন শরিয়াহসম্মত পথে পরিচালিত হয়। ইসলামী ব্যাংকের লভ্যাংশ আসলে সুদ নয়, বরং লাভ-লোকসানভিত্তিক অংশীদারিত্বের ফলাফল। তবে গ্রাহকের সচেতন থাকা জরুরি, যাতে তারা নিশ্চিত হতে পারেন যে তাদের অর্থ সত্যিকার অর্থেই শরিয়াহ–সম্মত উপায়ে ব্যবহার হচ্ছে।


মৃত্যু কেন মুমিনের কাছে প্রিয়? হাদিসের আলোকে ব্যাখ্যা

ধর্ম ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ২১ ১১:৪৬:২৬
মৃত্যু কেন মুমিনের কাছে প্রিয়? হাদিসের আলোকে ব্যাখ্যা
ছবি: সংগৃহীত

মৃত্যু মানবজীবনের এক অবশ্যম্ভাবী সত্য, যা নিয়ে মানুষের মনে ভয়, আশা ও আকাঙ্ক্ষার দোলাচল থাকে। কেউ মৃত্যুকে জীবনের শেষ মনে করে আতঙ্কিত হয়, আবার মুমিনের কাছে এটি হয় আল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাতের এক মহাসুযোগ। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর উম্মতকে শিক্ষা দিয়েছেন যে মৃত্যুর মুহূর্তে মানুষের আসল চেহারা প্রকাশ পায়।

হাদিসের শিক্ষা

عَنْ عُبَادَةَ بْنِ الصَّامِتِ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ مَنْ أَحَبَّ لِقَاءَ اللهِ أَحَبَّ اللهُ لِقَاءَهُ وَمَنْ كَرِهَ لِقَاءَ اللهِ كَرِهَ اللهُ لِقَاءَهُ قَالَتْ عَائِشَةُ أَوْ بَعْضُ أَزْوَاجِهِ إِنَّا لَنَكْرَهُ الْمَوْتَ قَالَ لَيْسَ ذَاكِ وَلَكِنَّ الْمُؤْمِنَ إِذَا حَضَرَهُ الْمَوْتُ بُشِّرَ بِرِضْوَانِ اللهِ وَكَرَامَتِهِ فَلَيْسَ شَيْءٌ أَحَبَّ إِلَيْهِ مِمَّا أَمَامَهُ فَأَحَبَّ لِقَاءَ اللهِ وَأَحَبَّ اللهُ لِقَاءَهُ وَإِنَّ الْكَافِرَ إِذَا حُضِرَ بُشِّرَ بِعَذَابِ اللهِ وَعُقُوبَتِهِ فَلَيْسَ شَيْءٌ أَكْرَهَ إِلَيْهِ مِمَّا أَمَامَهُ كَرِهَ لِقَاءَ اللهِ وَكَرِهَ اللهُ لِقَاءَهُ

উবাদাহ ইবনু সামিত (রা.) হতে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

"যে ব্যক্তি আল্লাহর সাক্ষাৎ লাভ পছন্দ করে, আল্লাহও তার সাক্ষাৎ পছন্দ করেন। আর যে ব্যক্তি আল্লাহর সাক্ষাৎ পছন্দ করে না, আল্লাহও তার সাক্ষাৎ পছন্দ করেন।"

এই হাদিসের ব্যাখ্যায় আয়িশাহ (রা.) অথবা তাঁর অন্য কোনো স্ত্রী যখন মৃত্যুকে অপছন্দ করার কথা বলেন, তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্পষ্ট করে দেন যে, স্বাভাবিকভাবে মৃত্যুকে ভয় পাওয়া বা কষ্টকর মনে করা আল্লাহর সাক্ষাৎ অপছন্দ করা এক বিষয় নয়।

মুমিনের ক্ষেত্রে যখন মুমিনের মৃত্যু উপস্থিত হয়, তখন ফেরেশতারা তাকে আল্লাহর সন্তুষ্টি ও জান্নাতের সুসংবাদ দেন। এই সময় পৃথিবীর কষ্ট ও মৃত্যুর যন্ত্রণা তার কাছে গৌণ হয়ে যায়। তার হৃদয় আল্লাহর সঙ্গে মিলিত হওয়ার আকাঙ্ক্ষায় পূর্ণ হয়। এ কারণেই সে মৃত্যুকে পছন্দ করতে শুরু করে, কারণ তার সামনে জান্নাত ও আল্লাহর সাক্ষাতের সুখবর থাকে।

কাফিরের ক্ষেত্রে কাফিরের যখন মৃত্যু উপস্থিত হয়, তখন তাকে আল্লাহর গজব, শাস্তি ও অভিশাপের কথা জানানো হয়। আখিরাতের ভয়ংকর আজাব তার চোখের সামনে ভেসে ওঠে। সে তখন মৃত্যু ও পরবর্তী জীবনের সাক্ষাৎ ভীষণ ঘৃণা করতে থাকে। ফলে আল্লাহও তার সাক্ষাৎকে অপছন্দ করেন, অর্থাৎ আল্লাহ তার জন্য আখিরাতে সুখ বা সন্তুষ্টি নয়, বরং গজব নির্ধারণ করে রেখেছেন।

এই হাদিস থেকে আমরা যে শিক্ষা পাই তা হলো:

আল্লাহর সাক্ষাৎ পছন্দ করতে হলে আল্লাহর সন্তুষ্টিমূলক জীবনযাপন করতে হবে।

পাপাচার, কুফর ও বিদআতের জীবন আল্লাহর সাক্ষাৎকে ভীতিকর করে তুলবে।

আখিরাতের জন্য প্রস্তুত থাকা মানেই মৃত্যুকে ভয় না পাওয়া।

মৃত্যু আসলে মুমিনের জন্য প্রিয় আল্লাহ তায়ালার সঙ্গে মিলনের সেতু, আর কাফিরের জন্য এটি ভয়ংকর আজাবের দরজা।


জুমার দিনে মসজিদে কাঁধ ডিঙিয়ে সামনে যাওয়া কেন নিষিদ্ধ?

ধর্ম ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ১৯ ১১:০০:১৫
জুমার দিনে মসজিদে কাঁধ ডিঙিয়ে সামনে যাওয়া কেন নিষিদ্ধ?

সপ্তাহের দিনগুলোর মধ্যে জুমা মুসলমানদের জন্য সবচেয়ে পবিত্র ও মর্যাদাপূর্ণ। আল্লাহ তায়ালা এই দিনটিকে বিশেষভাবে সম্মানিত করেছেন এবং রাসুল (সা.) একে সূর্য উদিত হওয়া দিনগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বরকতময় দিন হিসেবে ঘোষণা করেছেন। এ দিনে মুসলিম উম্মাহর জন্য কিছু বিশেষ করণীয় রয়েছে, যা পালন করলে অপার সওয়াব লাভ করা যায়।

জুমার নামাজে আগে যাওয়ার গুরুত্ব

জুমার দিনে একটি গুরুত্বপূর্ণ আমল হলো আজানের সঙ্গে সঙ্গে আগেভাগে মসজিদে গমন করা। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেছেন, ‘হে ঈমানদারগণ! জুমার দিনে যখন নামাজের জন্য আহ্বান জানানো হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণে দ্রুত ছুটে চলো এবং ব্যবসা-বাণিজ্য ত্যাগ করো। এটা তোমাদের জন্য উত্তম—যদি তোমরা বুঝতে পারো।’ (সুরা জুমআ: ৯)

হাদিসেও আগেভাগে মসজিদে যাওয়ার ব্যাপারে বিশাল প্রতিদান ও সওয়াবের কথা বলা হয়েছে। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিন ফরজ গোসলের মতো গোসল করে এবং প্রথম প্রহরে মসজিদে যায়, সে যেন একটি উট কোরবানি করল। দ্বিতীয় প্রহরে গেলে গরু কোরবানির সওয়াব, তৃতীয় প্রহরে গেলে ভেড়া, চতুর্থ প্রহরে গেলে মুরগি এবং পঞ্চম প্রহরে গেলে ডিম কোরবানির সওয়াব পাবে। এরপর যখন ইমাম খুতবা দিতে মিম্বারে ওঠেন, তখন ফেরেশতারা আর আমল লেখেন না, তারা খুতবা শুনতে থাকেন।’ (বোখারি: ৮৮১)

কাঁধ ডিঙিয়ে সামনে যাওয়ার বিষয়ে শরিয়তের বিধান

অভিযোগ আছে, আমাদের দেশে অনেক মুতাওয়াল্লি বা স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা জুমার দিন আগে থেকেই মসজিদের সামনের কাতারে নিজেদের জন্য জায়গা দখল করে রাখেন। পরে তারা দেরিতে আসলেও অন্যদের কাঁধ ডিঙিয়ে সেই জায়গায় গিয়ে বসেন।

এ প্রসঙ্গে বিশিষ্ট ইসলামি স্কলার শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন, এই ধরনের কাজ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। মানুষকে কষ্ট দিয়ে সামনে যাওয়াকে নবী করিম (সা.) জাহান্নামের ব্রিজ অতিক্রম করে জাহান্নামে যাওয়ার সঙ্গে তুলনা করেছেন। তিনি বলেন, “মসজিদ ইবাদতের জায়গা। এখানে সবাই সমান। কে মুতওয়াল্লি আর কে সাধারণ মুসল্লি, কোনো পার্থক্য নেই। মানুষকে কষ্ট দিয়ে ইমামের পেছনে সামনের কাতারে জায়নামাজ দিয়ে জায়গা জুড়ে রাখা জাহেলি বর্বরতা। এটা কোনো সভ্যতা নয়।”

শায়খ আহমাদুল্লাহ আরও বলেন, মসজিদে যে আগে আসবে সে আগে বসবে। আগে থেকে জায়গা দখল করে রাখা বা কাউকে ডিঙিয়ে সামনে বসা সম্পূর্ণ নাজায়েজ ও গুনাহের কাজ। হাদিস শরিফে এসেছে, একবার রাসুল (সা.) জুমার খুতবা দিচ্ছিলেন। তিনি এক ব্যক্তিকে অন্যদের কাঁধ ডিঙিয়ে সামনে যেতে দেখে বললেন, ‘বসে পড়, তুমি দেরি করে এসেছ, মানুষকে কষ্টও দিচ্ছো।’ (আবু দাউদ: ১১১৮)

সুতরাং ইমামের কাছাকাছি বসার জন্য মসজিদে দ্রুত উপস্থিত হতে হবে। যদি কোনো কারণে দেরি হয়ে যায়, তাহলে যেখানে খালি জায়গা পাওয়া যায়, সেখানেই বসে পড়া উচিত। অন্যদের কষ্ট দিয়ে সামনে গেলে সওয়াবের বদলে গুনাহের ভাগিদার হতে হবে।


ঢাকা ও বিভাগীয় শহরের নামাজের সময়সূচি প্রকাশিত

ধর্ম ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ১৬ ১০:২৭:৪২
ঢাকা ও বিভাগীয় শহরের নামাজের সময়সূচি প্রকাশিত
ছবি: সংগৃহীত

আজ মঙ্গলবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ এবং ২৩ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭ হিজরি। রাজধানী ঢাকা এবং এর আশপাশের এলাকার জন্য আজকের নামাজের সময়সূচি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়েছে।

নামাজের সময়সূচি (ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকা)

  • ফজর: ভোর ৪টা ৩০ মিনিটে আদায় করা যাবে।
  • জোহর: দুপুর ১১টা ৫৭ মিনিটে শুরু হবে।
  • আসর: বিকেল ৪টা ১৯ মিনিটে পড়তে হবে।
  • মাগরিব: আজ সূর্যাস্তের পর ৬টা ০৬ মিনিটে মাগরিবের নামাজের সময় হবে।
  • ইশা: রাত ৭টা ২০ মিনিট থেকে ইশার নামাজ আদায় করা যাবে।

এছাড়া, আজকের সূর্যোদয়ের সময় সকাল ৫টা ৪৫ মিনিট, আর সূর্যাস্তের সময় সন্ধ্যা ৬টা ০১ মিনিট।

বিভাগীয় শহরের জন্য সময় পরিবর্তন

ঢাকার প্রকাশিত নামাজের সময়সূচির সঙ্গে দেশের অন্যান্য বিভাগীয় শহরের জন্য কিছুটা সময় যোগ বা বিয়োগ করতে হবে।

বিয়োগ করতে হবে:

  • চট্টগ্রাম: ৫ মিনিট
  • সিলেট: ৬ মিনিট
  • যোগ করতে হবে:
  • খুলনা: ৩ মিনিট
  • রাজশাহী: ৭ মিনিট
  • রংপুর: ৮ মিনিট
  • বরিশাল: ১ মিনিট

অর্থাৎ, সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় শহরের মুসল্লিদের জন্য নির্দিষ্ট সময়সূচি অনুসারে কয়েক মিনিটের তারতম্য ঘটবে।


ঢাকা ও বিভাগীয় শহরের নামাজের সময় ঘোষণা

ধর্ম ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ১৩ ০৮:২০:৪৯
ঢাকা ও বিভাগীয় শহরের নামাজের সময় ঘোষণা
ছবি: সংগৃহীত

আজ শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ইংরেজি, ২৯ ভাদ্র ১৪৩২ বাংলা এবং ১৯ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭ হিজরি। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী ঢাকা ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকার আজকের নামাজ ও সূর্যোদয়-সূর্যাস্তের সময়সূচি প্রকাশ করা হয়েছে।

ঢাকায় আজ ফজরের নামাজের সময় ভোর ৪টা ২৯ মিনিটে, জোহরের নামাজ দুপুর ১১টা ৫৮ মিনিটে, আসরের নামাজ বিকেল ৪টা ২১ মিনিটে, মাগরিবের নামাজ সন্ধ্যা ৬টা ৮ মিনিটে এবং ইশার নামাজ রাত ৭টা ২৩ মিনিটে আদায় করা হবে। আজ সূর্যোদয়ের সময় নির্ধারিত হয়েছে সকাল ৫টা ৪৩ মিনিটে এবং সূর্যাস্তের সময় সন্ধ্যা ৬টা ৪ মিনিটে।

বিভাগীয় শহরগুলোর জন্য নির্দিষ্ট সময়সূচিতে কিছুটা যোগ-বিয়োগ করতে হবে। চট্টগ্রামের নামাজের সময় থেকে ৫ মিনিট এবং সিলেটের সময় থেকে ৬ মিনিট কমাতে হবে। অপরদিকে খুলনায় নামাজের সময় ৩ মিনিট, রাজশাহীতে ৭ মিনিট, রংপুরে ৮ মিনিট এবং বরিশালে ১ মিনিট যোগ করতে হবে।

ইসলামিক ফাউন্ডেশন জানিয়েছে, প্রতিদিন নামাজের সময়সূচি পরিবর্তিত হয় সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে। তাই মুসল্লিদের উচিত সঠিক সময়ে নামাজ আদায়ের জন্য সরকারি ঘোষিত সময়সূচি অনুসরণ করা।

তথ্যসূত্র: ইসলামিক ফাউন্ডেশন


শির্কের ভয়াবহতা বুঝতে সহজ উদাহরণ

ধর্ম ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ১১ ১১:৫৯:১৮
শির্কের ভয়াবহতা বুঝতে সহজ উদাহরণ
ছবি: সংগৃহীত

শির্ক- আল্লাহর সাথে অন্য কাউকে শরিক করা ইসলামের দৃষ্টিতে সবচেয়ে ভয়াবহ অপরাধ। কুরআনে একে “মহা জুলুম” বলা হয়েছে এবং স্পষ্টভাবে ঘোষণা করা হয়েছে যে, আল্লাহ শির্ককে ক্ষমা করবেন না, যদিও এর বাইরে অন্য সব গুনাহ তিনি ইচ্ছামতো ক্ষমা করতে পারেন। এই গুরুতর বিষয়টি কীভাবে সন্তানদের বা অন্য কাউকে বোঝানো যায়, তা ব্যাখ্যা করেছেন ইসলামি চিন্তাবিদ ড. আবু বকর যাকারিয়া।

তিনি শির্কের ভয়াবহতা বোঝাতে একটি বাস্তব উদাহরণ টেনে আনেন। তিনি বলেন, সন্তানকে প্রথমে মনে করিয়ে দেওয়া উচিত শৈশব থেকে বার্ধক্য পর্যন্ত তার বাবা কত যত্ন, ত্যাগ ও ভালোবাসা দিয়ে তাকে বড় করেছেন। সন্তানের কর্তব্য হলো সেই বাবাকে সম্মান করা, মর্যাদা দেওয়া এবং সেবা করা।

এরপর সন্তানকে প্রশ্ন করা যেতে পারে যদি সে প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে ইচ্ছাকৃতভাবে কোনো হত্যাকাণ্ড ঘটায়, পরে সেটা মীমাংসা হয় বা অন্য কোনো উপায়ে শেষ হয়ে যায়, তবে কি পিতা-মাতার সঙ্গে তার সম্পর্ক স্বাভাবিক হতে পারে? উত্তর অবশ্যই হবে হ্যাঁ, সম্পর্ক ফিরে আসতে পারে।

কিন্তু যদি সেই সন্তান তার বাবাকে বলে, “হে বাবা, অমুক আমার কাছেও তোমার সমান মর্যাদা ও ভালোবাসার অধিকারী” তাহলে পিতার অনুভূতি কেমন হবে? পরিবারের অন্য সদস্যদের প্রতিক্রিয়া কী হবে? এটি কি সহজে ভোলা যাবে? নিশ্চয়ই না। এখানে সন্তান একজন সাধারণ মানুষকে পিতার সমান মর্যাদায় বসিয়েছে এটুকুই এমন এক অপরাধ, যা ক্ষমার অযোগ্য।

ড. যাকারিয়া বলেন, যদি সন্তান পিতার সমান মর্যাদা দিয়ে দেয় কোনো তুচ্ছ সৃষ্টিকে যেমন প্রাণী, মূর্তি বা অন্য কোনো তুচ্ছ বস্তুকে তাহলে সেটা হবে ভয়ংকর অপমান এবং অতি বড় অন্যায়। এটি আসলে ঋণীর পক্ষ থেকে এমন এক ঋণদাতাকে অস্বীকার করা, যার ঋণ কোনোদিন শোধ করা সম্ভব নয়। এই কাজ তাকে পরিবারের ভালোবাসা ও সম্পর্ক থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেবে।

তিনি ব্যাখ্যা করেন, আল্লাহর জন্যই সর্বোত্তম দৃষ্টান্ত। যিনি মানুষকে দিয়েছেন বাবা-মা, জীবনধারণের জন্য জমিন, খাদ্য, বুদ্ধি ও অসংখ্য নিয়ামত যদি সেই আল্লাহর সমকক্ষ হিসেবে মানুষ অন্য কাউকে ভালোবাসা, আশা, ভয় বা ইবাদতের আসনে বসায়, তবে তা হবে সবচেয়ে ভয়ংকর অপরাধ। এ কারণেই কুরআনে আল্লাহ বলেন: “নিশ্চয়ই শির্ক এক মহা জুলুম।” আবার অন্য আয়াতে বলেন: “আল্লাহ তাঁর সাথে শির্ককে ক্ষমা করেন না; তবে এর বাইরে যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করেন।”

ড. আবু বকর যাকারিয়া মনে করিয়ে দেন, মুসলিমের অবস্থান শির্ককারীর প্রতি হবে সেই অপরাধীর ভাইদের অবস্থানের মতো, বরং তার চেয়েও কঠোর, যেমন ছিলেন ইবরাহীম (আ.) ও তাঁর সঙ্গীরা। তারা নিজেদের সম্প্রদায়কে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছিলেন আমরা আল্লাহ ছাড়া অন্য সব ইলাহ ও উপাস্য থেকে মুক্ত এবং কেবল আল্লাহর প্রতি ঈমান আনলেই এই বিভেদ শেষ হতে পারে।

শির্কের ভয়াবহতা বোঝাতে হলে মানুষকে সহজ উদাহরণ দিয়ে বুঝাতে হবে, যেন তারা উপলব্ধি করতে পারে পিতার অবমাননার তুলনায় আল্লাহর সাথে শির্ক করা কত বড় অপরাধ। এটি কেবল অকৃতজ্ঞতাই নয়, বরং এক মহা জুলুম, যা মানুষের সমস্ত সম্পর্ক, মর্যাদা এবং আখিরাতের মুক্তি নষ্ট করে দেয়।


স্ত্রীকে আদর করে ‘আপু’ বা ‘বোন’ বলার বিধান

ধর্ম ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৬ ১১:৪৯:৩৭
স্ত্রীকে আদর করে ‘আপু’ বা ‘বোন’ বলার বিধান
ছবি: সংগৃহীত

প্রশ্ন: জনৈক ব্যক্তি তার স্ত্রীকে ভালোবাসা থেকে ‘আপু মনি’ বলে ডাকেন। শরীয়তের দৃষ্টিতে এতে কোনো সমস্যা আছে কি? এই কারণে তাদের বৈবাহিক সম্পর্ক কি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে? স্ত্রীকে বোন বা আপু বলে ডাকার বিধান কী, এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চাই।

উত্তর:

ইসলামী শরীয়তের দৃষ্টিকোণ থেকে স্ত্রীকে ‘আপু’ বা ‘বোন’ বলে সম্বোধন করা মাকরূহ বা অনুচিত। এটি একটি গুনাহের কাজ। এ ধরনের সম্বোধন থেকে বিরত থাকা উচিত।

হাদিস শরিফে এ বিষয়ে একটি বর্ণনা এসেছে। সুনানে আবু দাউদে (হাদিস: ২২০৪) উল্লেখ আছে, একজন ব্যক্তি তার স্ত্রীকে ‘বোন’ বলে ডেকেছিলেন। রাসূলুল্লাহ (সা.) এই সম্বোধন শুনে তাকে তা থেকে নিষেধ করেন।

তবে এই ধরনের সম্বোধনের কারণে স্বামী-স্ত্রীর বৈবাহিক সম্পর্কের কোনো ক্ষতি হবে না। এটি সরাসরি তালাকের কারণ হয় না বা সম্পর্ককে হারাম করে দেয় না। শুধুমাত্র নৈতিক ও শরীয়তের দৃষ্টিকোণ থেকে এ ধরনের সম্বোধন অনুচিত এবং তা থেকে বিরত থাকা আবশ্যক।


দান করার যত ফজিলত

ধর্ম ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৫ ১২:৫৮:৩৪
দান করার যত ফজিলত
ছবি: সংগৃহীত

ইসলামে দান বা সদকার গুরুত্ব অপরিসীম। এটি এমন একটি ইবাদত যা মানুষকে শুধু দুনিয়াতে নয়, আখেরাতেও কল্যাণ এনে দেয়। কুরআন ও হাদিসে দানের অসংখ্য ফজিলত বর্ণিত হয়েছে। দান মানুষকে দুঃখ-কষ্ট থেকে মুক্ত করে, সম্পদে বরকত আনে, গুনাহ মাফের কারণ হয় এবং কিয়ামতের দিন আল্লাহর আরশের ছায়ায় আশ্রয় পাওয়ার অন্যতম উপায় হিসেবে বিবেচিত।

গুনাহ মাফ ও জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তি

দান-সদকা মানুষের গুনাহ মুছে দেয়। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, সদকা যেমন পানি আগুনকে নিভিয়ে ফেলে, তেমনি এটি মানুষের পাপও ধ্বংস করে দেয়। এ কারণে দানকে গুনাহ মাফের গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হিসেবে ধরা হয়। একই সঙ্গে এটি জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচার সুরক্ষাও প্রদান করে।

বিপদাপদ ও বালা-মুসিবত দূর করে

দান মানুষের জীবনের নানা বিপদ ও দুর্যোগ থেকে রক্ষা করে। হাদিসে উল্লেখ রয়েছে, যে ব্যক্তি সদকা করে, আল্লাহ তার জন্য অদৃশ্য থেকে বিপদ দূর করেন। অর্থাৎ দান শুধু আখেরাতেই নয়, দুনিয়ার জীবনেও নিরাপত্তা ও সুরক্ষার কারণ হয়।

সম্পদে বরকত বৃদ্ধি

দানের অন্যতম উপকার হলো আল্লাহ সম্পদে বরকত দান করেন। দান করার মাধ্যমে সম্পদ কমে না, বরং বাড়ে। এটি আর্থিক জীবনে স্থিতিশীলতা এবং মনোবল জাগিয়ে তোলে।

কিয়ামতের দিন আরশের নিচে আশ্রয়

গোপন দানের বিশেষ মর্যাদা রয়েছে। হাদিসে এসেছে, কিয়ামতের দিন যখন আল্লাহর আরশের ছায়া ছাড়া আর কোনো আশ্রয় থাকবে না, তখন সাত শ্রেণির মানুষকে আল্লাহ সেই ছায়ায় রাখবেন। গোপনে দানকারীরা এর মধ্যে অন্যতম। ফলে দান আখেরাতের মুক্তি ও নিরাপত্তার নিশ্চয়তা প্রদান করে।

দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যাণ

দান দুনিয়াতে প্রশান্তি ও শান্তি আনে, আবার আখেরাতে মুক্তি ও নাজাতের কারণ হয়। এভাবে এটি মানুষের উভয় জীবনের কল্যাণের মাধ্যম হয়ে দাঁড়ায়।

সহানুভূতি ও ভালোবাসা সৃষ্টি

দান মানুষকে অভাবীদের প্রতি সহানুভূতিশীল করে তোলে। এটি সমাজে ভালোবাসা, ভ্রাতৃত্ববোধ এবং পারস্পরিক সহযোগিতার পরিবেশ তৈরি করে। অভাবী মানুষের পাশে দাঁড়ানো সমাজের নৈতিক ভিত্তি শক্তিশালী করে।

রিজিক বৃদ্ধি

রমজানসহ বিশেষ সময়ে দান করলে আল্লাহ রিজিক বৃদ্ধি করেন। ইসলামি শিক্ষায় বলা হয়েছে, দান দারিদ্র্য কমায় না, বরং রিজিক বাড়ায় এবং সম্পদে বরকত আনে।

সৃষ্টিকর্তার নৈকট্য ও সন্তুষ্টি

দান হলো আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের অন্যতম উপায়। অসহায় ও অভাবীদের সাহায্য করা মানে সৃষ্টিকর্তার প্রতি কর্তব্য পালন করা। এভাবে দানকারীরা আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করে এবং তাঁর সন্তুষ্টি লাভ করে।

দান শুধু একটি ইবাদত নয়, এটি মানবিকতা, সহানুভূতি এবং সামাজিক দায়বদ্ধতার প্রতীক। এর মাধ্যমে মানুষ দুনিয়ার শান্তি ও আখেরাতের মুক্তি লাভ করে। দান মানুষের অন্তরকে নির্মল করে, সম্পদে বরকত আনে এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের পথ তৈরি করে। তাই দানকে জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশে পরিণত করা প্রত্যেক মুসলমানের কর্তব্য।

পাঠকের মতামত: