বাজার নয়, এবার দই হবে বাড়িতেই

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ মে ১৬ ২২:৫৭:৪০
বাজার নয়, এবার দই হবে বাড়িতেই

দই আমাদের খাবারের তালিকায় একটি পরিচিত ও স্বাস্থ্যকর নাম। প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় দই শুধু স্বাদই যোগ করে না, এটি হজমশক্তি বাড়ায়, শরীর ঠান্ডা রাখে এবং রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়াতে সাহায্য করে। তবে বাজারের দইয়ে অনেক সময়ই অতিরিক্ত চিনি, কৃত্রিম রং বা সংরক্ষক মেশানো থাকে, যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। তাই ঘরেই তৈরি করে নিতে পারেন একেবারে খাঁটি ও স্বাস্থ্যকর দই। এই কাজে সহায়তা করতে রন্ধনশিল্পী মিতা খানম দিয়েছেন একটি সহজ রেসিপি।

উপকরণ:

তরল দুধ – ১ কেজি (ঘন করে জ্বাল দেওয়া)

গুঁড়া দুধ – ১ কাপ

চিনি – ৩ টেবিল-চামচ (স্বাদ অনুযায়ী কম বেশি করা যেতে পারে)

দই – ১ কাপ (টক হতে হবে)

লেবুর রস – ১ টেবিল-চামচ

এই দই তৈরির জন্য প্রথমে এক কেজি তরল দুধ ঘন করে জ্বাল দিয়ে নিতে হবে। এরপর তাতে মেশাতে হবে এক কাপ গুঁড়া দুধ এবং স্বাদ অনুযায়ী তিন টেবিল-চামচ চিনি। দুধের মিশ্রণটি একসঙ্গে ভালোভাবে নাড়তে হবে এবং মাঝারি আঁচে রান্না করে ঘন করে নিতে হবে। চুলা থেকে নামিয়ে কিছুটা ঠান্ডা হলে, যখন দুধ কুসুম গরম অবস্থায় থাকবে, তখন তাতে এক কাপ টক দই মেশাতে হবে। দই মেশানোর সময় আস্তে আস্তে নাড়তে হবে যেন মিশ্রণটি ভালোভাবে একত্রিত হয়।

যে পাত্রে দই জমাবেন, সেটির চারপাশে এক টেবিল-চামচ লেবুর রস ঘষে দিতে হবে। এতে দই সহজে ও সুন্দরভাবে জমে ওঠে। এরপর দুধের মিশ্রণটি ওই পাত্রে ঢেলে গরম কোনো স্থানে রেখে দিতে হবে। সাধারণত দুই থেকে চার ঘণ্টার মধ্যেই দই জমে যাবে। এরপর সেটি ফ্রিজে রেখে ঠান্ডা করে পরিবেশন করতে পারেন।

এই ঘরে তৈরি দই যেমন স্বাস্থ্যকর, তেমনি পরিবারের সবাইকে খুশি করার মতো একটি খাবার। বাজারের কৃত্রিম উপকরণে ভরা দইয়ের চেয়ে এই দই বেশি নিরাপদ ও পুষ্টিকর। চাইলে বিভিন্ন ফল বা মধু মিশিয়ে ভিন্ন স্বাদেও উপভোগ করা যায় এই দই।

ট্যাগ: দই হজমশক্তি

২১ ক্যারেট বনাম ২২ ক্যারেট: কোন সোনার গয়না বেশি টেকসই

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ১৭ ১২:২৯:৩৮
২১ ক্যারেট বনাম ২২ ক্যারেট: কোন সোনার গয়না বেশি টেকসই
ছবি: সংগৃহীত

সোনার গয়না যুগ যুগ ধরে নারীদের কাছে সৌন্দর্য, আভিজাত্য ও আর্থিক নিরাপত্তার প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। সোনার কদর সবসময়ই অন্য ধাতুর তুলনায় বেশি। অনেকেই সোনার গয়না শুধু সাজসজ্জার জন্য নয়, বরং বিনিয়োগ হিসেবেও দেখে থাকেন।

সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্ববাজারে সোনার দাম বেড়েছে প্রায় ৪০-৫০ শতাংশ, যার পেছনে রয়েছে বৈশ্বিক বাজার পরিস্থিতি, বৈদেশিক মুদ্রার অস্থিরতা, আমদানির খরচ বৃদ্ধি এবং আন্তর্জাতিক সোনা বাজারে ওঠানামা। ফলে সোনা কেনার প্রবণতা বেড়েছে, তবে সাধারণ মানুষের মধ্যে ২১ ও ২২ ক্যারেট সোনা নিয়ে বিভ্রান্তি এখনও রয়ে গেছে।

সোনার বিশুদ্ধতা ক্যারেট দিয়ে নির্ধারণ করা হয়। ২৪ ক্যারেট সোনা শতভাগ খাঁটি হলেও তা অতিমাত্রায় নরম হওয়ায় দৈনন্দিন ব্যবহারের জন্য উপযুক্ত নয়। ২১ ক্যারেট সোনায় থাকে ৮৭.৫ শতাংশ খাঁটি সোনা এবং বাকি অংশ তামা বা রূপা, যা গয়নাকে শক্তিশালী ও টেকসই করে।

অন্যদিকে ২২ ক্যারেট সোনায় থাকে ৯১.৬ শতাংশ খাঁটি সোনা, ফলে এর রং আরও গাঢ় হলুদ হয় এবং টেক্সচার নরম হয়। এতে গয়না দেখতে আকর্ষণীয় হলেও দৈনন্দিন ব্যবহারে আঁচড় বা ভাঙার ঝুঁকি বেশি থাকে। তাই ২১ ক্যারেট গয়না নিয়মিত ব্যবহারের জন্য বেশি উপযুক্ত, আর ২২ ক্যারেট গয়না সাধারণত বিশেষ অনুষ্ঠান বা মাঝে মাঝে ব্যবহারের জন্য কেনা হয়।

বাজারে প্রতারণা এড়াতে সোনা কেনার সময় কিছু বিষয় যাচাই করা অত্যন্ত জরুরি। গয়নার গায়ে থাকা হলমার্ক বা স্ট্যাম্প পরীক্ষা করতে হবে; যেমন ২১K, ২২K, ৯১৬ বা ৮৭৫ লেখা থাকতে হবে এবং তা স্পষ্টভাবে খোদাই করা উচিত। খাঁটি সোনার রং সাধারণত গাঢ় হলুদ হয়; অস্বাভাবিক উজ্জ্বলতা বা ফ্যাকাশে রং মিশ্রণের ইঙ্গিত দেয়।

সোনা চুম্বকে আকৃষ্ট হয় না, তাই সহজ একটি ম্যাগনেট টেস্ট করা যেতে পারে। এছাড়া আসল সোনা ভারী হয় এবং পানিতে সহজে ডুবে যায়। সিরামিক প্লেটে ঘষলে খাঁটি সোনা সোনালি রেখা রেখে যায়, নকল হলে কালো বা ধূসর দাগ পড়ে। পেশাদার জুয়েলারিরা নাইট্রিক অ্যাসিড দিয়ে পরীক্ষার মাধ্যমে সোনার খাঁটিতাও যাচাই করেন।

-রফিক


জানুন নিয়মিত সাঁতারের ছয় বড় উপকারিতা

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ১৩ ১১:১২:১৪
জানুন নিয়মিত সাঁতারের ছয় বড় উপকারিতা
ছবিঃ সংগৃহীত

সাঁতার এমন এক ধরনের ব্যায়াম যা একই সঙ্গে শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য উন্নত করে। এটি শুধু খেলা বা বিনোদন নয়, বরং বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত একটি পূর্ণাঙ্গ ফিটনেস কার্যক্রম। নিয়মিত সাঁতার কাটলে শরীর সুস্থ থাকে, মানসিক চাপ কমে এবং জীবনের মান উন্নত হয়।

হৃদযন্ত্র ও রক্ত সঞ্চালনে ইতিবাচক প্রভাব

সাঁতারকে একটি উৎকৃষ্ট কার্ডিওভাসকুলার ব্যায়াম হিসেবে বিবেচনা করা হয়। পানির প্রতিরোধ ক্ষমতা শরীরকে পরিশ্রম করতে বাধ্য করে, যা হৃদপিণ্ডকে আরও শক্তিশালী করে তোলে। নিয়মিত সাঁতার কাটলে রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক থাকে, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে আসে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যায়। একই সঙ্গে এটি ফুসফুসের ক্ষমতা বাড়িয়ে শ্বাস-প্রশ্বাসের কার্যকারিতা উন্নত করে।

পেশি গঠন ও শরীরের নমনীয়তা

সাঁতার এমন একটি ব্যায়াম যা শরীরের প্রায় সব পেশিকে সক্রিয় করে। হাত, পা, কাঁধ, পিঠ ও পেটের পেশি একসঙ্গে কাজ করে শক্তিশালী হয়। এর ফলে পেশি গঠিত হয় এবং শরীরের টোন উন্নত হয়। নিয়মিত সাঁতার কাটলে শরীর নমনীয় হয়, ভঙ্গিমা সুন্দর হয় এবং দীর্ঘমেয়াদি ফিটনেস অর্জন সম্ভব হয়।

ক্যালরি খরচ ও ওজন নিয়ন্ত্রণ

সাঁতার ক্যালরি পোড়ানোর কার্যকর উপায়। পানির মধ্যে চলাফেরায় স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি শক্তি খরচ হয়। এ কারণে এটি দ্রুত অতিরিক্ত মেদ ঝরাতে সাহায্য করে। নিয়মিত সাঁতার কাটলে শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং স্থূলতা কমে।

হাড় ও জোড়ের জন্য নিরাপদ

দৌড়ানো বা ভারোত্তোলনের মতো ব্যায়াম হাড় ও জোড়ের উপর চাপ সৃষ্টি করে। কিন্তু সাঁতার একেবারেই ভিন্ন। পানির ভাসমানতা শরীরের ওজন বহন করে নেয়, ফলে হাড় ও জোড়ের উপর চাপ পড়ে না। এজন্য আর্থ্রাইটিসে আক্রান্ত বা জোড়ের ব্যথায় ভোগা ব্যক্তিদের জন্য সাঁতার একটি আদর্শ ব্যায়াম।

মানসিক চাপ হ্রাস ও ঘুমের উন্নতি

পানিতে ডুবে থাকা ও সাঁতার কাটার সময় শরীর ও মন প্রশান্ত হয়, যা এক ধরনের ধ্যানমূলক প্রভাব তৈরি করে। এটি মানসিক চাপ, দুশ্চিন্তা ও উদ্বেগ কমায়। নিয়মিত সাঁতার কাটলে শরীর স্বাভাবিকভাবে ক্লান্ত হয়, ফলে ঘুমের মান উন্নত হয়। যারা অনিদ্রায় ভোগেন, তাদের জন্য সাঁতার প্রাকৃতিক সমাধান হতে পারে।

হরমোন নিঃসরণ ও মানসিক স্বাস্থ্য

সাঁতারের সময় মস্তিষ্কে এন্ডোরফিন নামক হরমোন নিঃসৃত হয়। এই হরমোনকে “হ্যাপি হরমোন” বলা হয়, কারণ এটি মেজাজ ভালো রাখে, মন প্রফুল্ল করে এবং বিষণ্ণতা দূর করতে সাহায্য করে। ফলে সাঁতার শুধু শারীরিক নয়, মানসিক সুস্থতাও নিশ্চিত করে।

তবে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ হলো, যেকোনো নতুন ব্যায়াম শুরু করার আগে বিশেষ করে যাদের পূর্ব থেকে শারীরিক সমস্যা রয়েছে, তাদের অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। এতে অপ্রত্যাশিত জটিলতা এড়ানো সম্ভব হবে।

সব মিলিয়ে বলা যায়, সাঁতার এক অনন্য ব্যায়াম যা শরীরকে রাখে শক্তিশালী, মনকে রাখে প্রশান্ত এবং জীবনকে করে সুস্থ ও সুন্দর।


দিনের বেলা ভাতঘুম: উপকারী নাকি ক্ষতিকর?

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ১১ ১১:৪৩:৪১
দিনের বেলা ভাতঘুম: উপকারী নাকি ক্ষতিকর?
ছবিঃ সংগৃহীত

আমাদের অনেকের কাছেই দিনের বেলার অল্প সময়ের ঘুম একটি রিসেট বোতামের মতো কাজ করে। দুপুরের খাবারের পর হালকা ভাতঘুম হোক কিংবা বিকেলের সামান্য ঝিমুনি—এ ধরনের ঘুমকে সাধারণত স্বাস্থ্যকর অভ্যাস হিসেবে দেখা হয়। গবেষণায় দেখা গেছে, দিনের বেলার অল্প সময়ের ঘুম স্মৃতিশক্তি উন্নত করে, মেজাজ সতেজ রাখে এবং কাজে মনোযোগ বাড়াতে সাহায্য করে। তবে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, জীবনের অন্যান্য ক্ষেত্রের মতো এখানেও পরিমিতি জরুরি। কারণ অতিরিক্ত কিংবা অপ্রয়োজনীয় ঘুম ভালো করার পরিবর্তে শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

দিনের বেলা ঘুমের উপকারিতা

সঠিক সময়ে এবং স্বল্প সময়ের জন্য ঘুম নিলে এটি শরীর ও মনের জন্য শক্তিশালী পুনরুজ্জীবনের মাধ্যম হতে পারে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ১০ থেকে ২০ মিনিটের একটি পাওয়ার ন্যাপ—

  • মনোযোগ ও প্রোডাক্টিভিটি বাড়ায়
  • শেখার ক্ষমতা ও স্মৃতিশক্তি উন্নত করে
  • মানসিক চাপ ও ক্লান্তি কমাতে সাহায্য করে
  • আবেগ নিয়ন্ত্রণ ও মানসিক ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়ক হয়
  • কখন ভাতঘুম সমস্যার কারণ হয়?

যদি ঘুমের সময় এক ঘণ্টার বেশি হয়, তবে এটি উপকারের চেয়ে ক্ষতিকর হয়ে উঠতে পারে। দিনের বেলা অতিরিক্ত ঘুম শরীরে জড়তা তৈরি করে, ঘুম থেকে ওঠার পর তন্দ্রাচ্ছন্নতা বা দিশেহারা অবস্থার সৃষ্টি করে। একই সঙ্গে এটি শরীরের অভ্যন্তরীণ জৈবঘড়ি বা বায়োলজিক্যাল ক্লক ব্যাহত করে, যার ফলে রাতে ঘুমানো কঠিন হয়ে পড়ে।

এছাড়া গবেষণা বলছে, দীর্ঘ সময়ের ভাতঘুম (৬০ মিনিট বা তার বেশি) ঘন ঘন নেওয়ার সঙ্গে হৃদরোগ, ডায়াবেটিস এবং মৃত্যুঝুঁকি বৃদ্ধির সম্পর্ক থাকতে পারে। যদিও সরাসরি ভাতঘুম এই রোগগুলোর কারণ নয়, তবে এটি অন্য কোনো অন্তর্নিহিত শারীরিক সমস্যা অথবা রাতের নিম্নমানের ঘুমের ইঙ্গিত হতে পারে।

সমাধান কী?

দিনের বেলার স্বল্প সময়ের ঘুম মোটেও ক্ষতিকর নয়; বরং দুপুরের পর অল্প সময়ের একটি ন্যাপ শরীর ও মনকে সতেজ রাখে। তবে যদি ঘুম দীর্ঘ হয় বা ঘন ঘন নেওয়া হয়, তবে তা রাতের ঘুমের মান নষ্ট করে এবং স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে। তাই বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দেন, শরীরের প্রতি মনোযোগী হয়ে দিনের বেলায় পরিকল্পিতভাবে সীমিত সময় ঘুমাতে হবে। দুপুরের খাবারের পর ১০–২০ মিনিটের ভাতঘুম হতে পারে ক্লান্তি দূর করার কার্যকর উপায়, কিন্তু অতিরিক্ত ঘুম সমস্যাকে বাড়িয়ে তুলতে পারে।


হাঁটার জাদু: সপ্তাহে পাঁচ দিনেই দূরে রাখুন হৃদরোগ ও চাপ

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৮ ১১:২৯:১৫
হাঁটার জাদু: সপ্তাহে পাঁচ দিনেই দূরে রাখুন হৃদরোগ ও চাপ
ছবি: সংগৃহীত

সকালের স্নিগ্ধ বাতাসে কিংবা পড়ন্ত বিকেলের নিরিবিলি সময়ে হাঁটা শুধুমাত্র মনকে প্রফুল্ল করে না, বরং শরীরের জন্যও আনে বহুমুখী উপকার। চিকিৎসকরা বলেন, যারা ওজন কমাতে চান কিংবা সুস্থ জীবনযাপন করতে আগ্রহী, তাদের জন্য হাঁটাই হতে পারে সবচেয়ে সহজ ও কার্যকর শরীরচর্চা।

হাঁটা-হৃদযন্ত্র থেকে মানসিক স্বাস্থ্য পর্যন্ত

নিয়মিত হাঁটা এক ধরনের প্রাকৃতিক ওষুধের মতো কাজ করে। এটি হৃদযন্ত্রকে সুরক্ষা দেয়, রক্তচাপ ও কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখে, শরীরকে হালকা রাখে এবং মানসিক চাপ কমিয়ে মনকে করে উজ্জ্বল। তবে প্রশ্ন হচ্ছে প্রতিদিনই কি হাঁটা জরুরি, নাকি নির্দিষ্ট দিনে হাঁটলেই যথেষ্ট উপকার পাওয়া যায়?

পাঁচ দিনের সোনালী নিয়ম

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) ও আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশনের (AHA) সুপারিশ অনুযায়ী, একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের প্রতি সপ্তাহে অন্তত ১৫০ মিনিট মাঝারি মানের শারীরিক অনুশীলন প্রয়োজন। এর সহজতম উপায় হলো সপ্তাহে পাঁচ দিন, প্রতিদিন অন্তত আধা ঘণ্টা দ্রুত হাঁটা। নিয়মিত এ অভ্যাস হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়, ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং সামগ্রিক জীবনমান উন্নত করে। বিশেষজ্ঞরা তাই হাঁটাকে আখ্যা দেন “প্রিভেন্টিভ মেডিসিন” হিসেবে, যা আগেভাগেই নানা রোগকে প্রতিরোধে সাহায্য করে।

সপ্তাহে এক–দুই দিন হাঁটলেও উপকার

সবাই নিয়মিত পাঁচ দিন সময় বের করতে পারেন না। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ক্যানসার ইনস্টিটিউট, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অন এজিং এবং জাপানের কিয়োটো বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৩ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে, সপ্তাহে মাত্র এক বা দুই দিন প্রায় আট হাজার পদক্ষেপ হাঁটলেও হৃদরোগের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পায়। অর্থাৎ ব্যস্ত জীবনে প্রতিদিন হাঁটার সুযোগ না পেলেও সপ্তাহান্তে দীর্ঘ সময় হাঁটলে শরীর ও মন সমানভাবে উপকৃত হয়।

বয়সের ছাপ মুছে ফেলে হাঁটা

হাঁটার রয়েছে বার্ধক্য ঠেকানোর অসাধারণ ক্ষমতা। নিয়মিত হাঁটলে ডায়াবেটিস, ক্যানসারসহ বয়সজনিত নানা রোগের ঝুঁকি কমে যায়। শুধু তাই নয়, হাঁটা মস্তিষ্ককে সক্রিয় রাখে, স্মৃতিশক্তি উন্নত করে এবং মানসিক চাপ কমাতে সহায়তা করে। এ কারণে বিশেষজ্ঞরা হাঁটাকে এক প্রকার অ্যান্টি-এজিং থেরাপি হিসেবেও বর্ণনা করেন।

হাঁটা শুরু করার সহজ উপায়

হাঁটার সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো এটি শুরু করতে বিশেষ কোনো প্রস্তুতি বা বিনিয়োগের প্রয়োজন নেই। দামি জুতা বা জিমে সদস্য হওয়ার দরকার নেই। প্রতিদিন সকালে বা সন্ধ্যায় মাত্র ৩০ মিনিট সময় বের করলেই যথেষ্ট। ব্যস্ততার কারণে প্রতিদিন না পারলেও অন্তত সপ্তাহে এক–দুদিন দীর্ঘ সময় ধরে হাঁটুন। চাইলে বন্ধু বা পরিবারের কাউকে সঙ্গে নিলে হাঁটার সময়টা হয়ে উঠবে আরও আনন্দময়।

হাঁটা এমন এক সহজ অথচ কার্যকর অভ্যাস, যা শরীরকে রাখে ফিট এবং মনকে রাখে প্রফুল্ল। তাই সপ্তাহে নিয়মিত পাঁচ দিন আধা ঘণ্টা করে হাঁটুন, আর যদি তা সম্ভব না হয় তবে অন্তত সপ্তাহে এক–দুদিন দীর্ঘ সময় হাঁটা চালিয়ে যান। সুস্থ ও প্রাণবন্ত জীবনের জন্য হাঁটাকে তাই জীবনের স্থায়ী সঙ্গী করে নেওয়াই শ্রেয়।

সূত্র: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO), আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন (AHA), সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (CDC), জার্নাল অব দ্য আমেরিকান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (JAMA), জার্নাল অব জেরোন্টোলজি


মরুভূমির বুকে এক বিস্ময়: সৌদি আরবের ‘ডেজার্ট রক’ রিসোর্ট

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৬ ০৯:০৭:৩৫
মরুভূমির বুকে এক বিস্ময়: সৌদি আরবের ‘ডেজার্ট রক’ রিসোর্ট
ছবি: সংগৃহীত

সৌদি আরবের লোহিত সাগর উপকূলে পাহাড়ের ভেতর খোদাই করে তৈরি হয়েছে এক অভিনব ফাইভ স্টার রিসোর্ট, যার নাম ‘ডেজার্ট রক’। গত বছর উদ্বোধনের পর সংক্ষিপ্ত সংস্কার শেষে এ গ্রীষ্মে আবারও অবকাশ যাপনকারীদের জন্য এটি খুলে দেওয়া হয়েছে।

এই রিসোর্টে প্রবেশ করতে হয় সরু ও বাঁকানো শিলা কেটে তৈরি গলি পেরিয়ে। ভেতরে ঢুকতেই চোখে পড়ে একটি আকর্ষণীয় ওয়েলকাম প্যাভিলিয়ন, যেখানে সুরেলা সংগীত অতিথিদের স্বাগত জানায়। ডেজার্ট রকে থাকার জায়গা চার ভাগে বিভক্ত। হোটেলের সর্বোচ্চ স্থানে রয়েছে দুই শয্যার একটি ভিলা। এর মাস্টার বেডরুম থেকে দুর্গম পাহাড়ি দৃশ্য ও ব্যক্তিগত ইনফিনিটি পুলের মনোরম দৃশ্য দেখা যায়। অন্যান্য কক্ষে দুটি কুইন বেড, বড় ডাইনিং স্পেস ও শিলার দেওয়ালে সাজানো বসার ঘর রয়েছে। এর বাথরুমেও ফ্লোর-টু-সিলিং জানালা ও ওয়াক-ইন রেইন শাওয়ারের ব্যবস্থা আছে, যা থেকে বাইরের দৃশ্যের স্বাদ নেওয়া যায়।

প্রাকৃতিক পরিবেশ ও ব্যতিক্রমী আয়োজন

রিসোর্টের সাজসজ্জায় সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপাদান ও রঙ ব্যবহার করা হয়েছে, যা মরুভূমির পরিবেশের সঙ্গে মিশে গেছে। খাবারের তালিকায় রয়েছে পেরুভিয়ান, কাশ্মীরি ভেড়ার মাংসসহ বিভিন্ন দেশের সিগনেচার আইটেম।

এখানে অবকাশ যাপনকারীদের জন্য থাকছে ওয়াদি পুল, অবজারভেটরি, ডেজার্ট গেমসসহ নানা ধরনের বিনোদন। পাশাপাশি যারা অ্যাডভেঞ্চার পছন্দ করেন, তাদের জন্য অ্যাবসেইলিং, জিপলাইন, ক্লাইম্বিং, হাইকিং, ই-বাইকিং ও নক্ষত্রদর্শনসহ বিভিন্ন কার্যক্রমের ব্যবস্থা আছে। এখানে সৌদি রান্না শেখানোর ক্লাসও রাখা হয়েছে।

রিসোর্টের স্পা সেন্টারে অতিথিরা সাওনা, স্টিম রুম, হাম্মাম, ভিটালিটি পুল ও কোল্ড প্লাঞ্জসহ নানা ধরনের থেরাপি উপভোগ করতে পারবেন। ডেজার্ট রকে এক রাতের জন্য এক শয্যার ওয়াদি ভিলায় থাকতে হলে সর্বনিম্ন ১,৮৬৬ ডলার খরচ করতে হবে।

খবর : দ্য ন্যাশনাল


জ্বর, মাথাব্যথা, আর্থ্রাইটিস—ভিন্ন ভিন্ন সমস্যায় ভিন্ন ডোজ প্যারাসিটামল

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৬ ০৭:৫৬:২৯
জ্বর, মাথাব্যথা, আর্থ্রাইটিস—ভিন্ন ভিন্ন সমস্যায় ভিন্ন ডোজ প্যারাসিটামল
ছবিঃ সংগৃহীত

জ্বর ও ব্যথা কমানোর ক্ষেত্রে প্যারাসিটামলকে সবচেয়ে নিরাপদ ওষুধগুলোর মধ্যে গণ্য করা হয়। আমাদের দেশে এটি অত্যন্ত জনপ্রিয় এবং অনেকে শরীরে সামান্য তাপমাত্রা বাড়লেই বা গা ব্যথা হলেই দ্রুত প্যারাসিটামল সেবন করেন। তবে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, শরীরের তাপমাত্রা ১০১ ডিগ্রি ফারেনহাইট না হওয়া পর্যন্ত সাধারণত জ্বরের ওষুধ খাওয়ার প্রয়োজন নেই। তাপমাত্রা সামান্য বেড়ে গেলে কিংবা হালকা ব্যথায় অযথা প্যারাসিটামল খাওয়ার অভ্যাস স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।

বিশেষজ্ঞের পরামর্শ

ফিজিক্যাল মেডিসিন ও রিহ্যাবিলিটেশন বিশেষজ্ঞ ডা. তাহমীদ কামাল জানিয়েছেন, প্যারাসিটামলের বিভিন্ন ডোজ এবং ভিন্ন ধরনের সমন্বিত ফর্মুলা রয়েছে। প্রতিটির আলাদা প্রয়োগ ক্ষেত্র, সুবিধা এবং ঝুঁকি রয়েছে। কোন পরিস্থিতিতে কোন প্যারাসিটামল ব্যবহার করতে হবে তা জানা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

প্যারাসিটামলের ধরন ও ব্যবহার

প্যারাসিটামল 500 mg

  • ব্যবহার: জ্বর এবং হালকা থেকে মাঝারি মাত্রার ব্যথা যেমন মাথাব্যথা, দাঁতের ব্যথা, কানের ব্যথা, মাসিকজনিত ব্যথা, শরীর ব্যথা বা মচকে যাওয়া।
  • প্রতিক্রিয়া: সাধারণত নিরাপদ হলেও মাত্রাতিরিক্ত সেবনে লিভার ও কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

প্যারাসিটামল + ক্যাফেইন

  • ব্যবহার: জ্বর, মাথাব্যথা (বিশেষত মাইগ্রেইন), সর্দিজনিত মাথাব্যথা।
  • বিশেষত্ব: ক্যাফেইন শক্তি বৃদ্ধি করে এবং ব্যথা কমাতে বাড়তি সহায়তা দেয়।
  • প্রতিক্রিয়া: অনিদ্রা, গ্যাস্ট্রিক সমস্যা, হাত কাঁপা বা হৃদস্পন্দন বেড়ে যাওয়া।

প্যারাসিটামল 665 mg (Extended Release)

  • ব্যবহার: দীর্ঘস্থায়ী ব্যথা যেমন আর্থ্রাইটিসে কার্যকর। দিনে ২–৩ বার সেবন করা যায়।
  • প্রতিক্রিয়া: মাত্রা অতিক্রম করলে লিভারের ক্ষতি হতে পারে।

প্যারাসিটামল 1000 mg

  • ব্যবহার: তীব্র জ্বর বা ব্যথার ক্ষেত্রে, শুধুমাত্র প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য।
  • প্রতিক্রিয়া: লিভারের ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি করে, মাত্রাতিরিক্ত সেবনে মারাত্মক ক্ষতির আশঙ্কা থাকে।

প্যারাসিটামল + ট্রামাডল

  • ব্যবহার: মাঝারি থেকে তীব্র ব্যথায়, যেমন অস্ত্রোপচারের পরবর্তী ব্যথা বা ক্যানসারজনিত ব্যথা।
  • প্রতিক্রিয়া: মাথা ঘোরা, তন্দ্রাচ্ছন্ন ভাব, বমিভাব দেখা দিতে পারে। দীর্ঘদিন খেলে আসক্তি তৈরি হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।

প্যারাসিটামল 500 mg (Rapid Action Technology)

  • ব্যবহার: সাধারণ প্যারাসিটামলের মতোই, তবে বিশেষ প্রযুক্তির কারণে ২ মিনিটের মধ্যে কাজ শুরু করে।
  • শর্ত: শুধুমাত্র ১৮ বছরের বেশি বয়সীদের জন্য প্রযোজ্য।

সতর্কতা

বিশেষজ্ঞরা কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা দিয়েছেন:

  • একই সময়ে একাধিক ধরনের প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ কখনোই সেবন করবেন না।
  • লিভারের সমস্যায় ভুগলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া প্যারাসিটামল খাবেন না।
  • ট্রামাডলসমৃদ্ধ ওষুধ অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শে নিতে হবে।
  • নির্ধারিত ডোজ না মানলে এমনকি সাধারণ প্যারাসিটামলও বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে।

প্যারাসিটামল নিরাপদ ও বহুল ব্যবহৃত একটি ওষুধ হলেও এটি অবহেলায় ব্যবহার করা উচিত নয়। ডোজ অতিক্রম করলে লিভার, কিডনি এমনকি জীবনের জন্যও হুমকি তৈরি হতে পারে। তাই সামান্য জ্বর বা ব্যথার জন্য অযথা প্যারাসিটামল না খেয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই সবচেয়ে নিরাপদ উপায়।


চুল পড়া কমাতে চাইলে খাদ্যতালিকায় রাখুন ৫ ভিটামিন

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০১ ১২:২২:৫৩
চুল পড়া কমাতে চাইলে খাদ্যতালিকায় রাখুন ৫ ভিটামিন
ছবি: সংগৃহীত

চুল উঠে যাওয়ায় চিন্তিত? শুধু বাহ্যিক যত্ন নয়, ভেতর থেকেও প্রয়োজন সঠিক পুষ্টির। ২০১৮ সালে প্রকাশিত ডার্মাটোলজি অ্যান্ড থেরাপি জার্নালের এক গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছে শরীরে উপযুক্ত ভিটামিন ও খনিজের অভাব হলে চুল ঝরা বাড়তে পারে। তাই খাদ্যতালিকায় সঠিক ভিটামিনসমৃদ্ধ খাবার যুক্ত করলে চুল আরও মজবুত, উজ্জ্বল এবং স্বাস্থ্যকর হবে।

ভিটামিন ‘এ’: রুক্ষ চুলের জন্য অপরিহার্য

যাদের চুল সবসময় শুষ্ক ও রুক্ষ থাকে, তাদের জন্য ভিটামিন ‘এ’ বিশেষ উপকারী। এই ভিটামিন সেবাম নামক প্রাকৃতিক তেল উৎপাদন বাড়ায়, যা চুলকে আর্দ্র রাখে এবং শুষ্কতা দূর করে। ফলে চুল হয় মসৃণ ও নমনীয়। প্রতিদিনের খাবারে গাজর, ডিম, রাঙা আলু ও ক্যাপসিকাম রাখলে সহজেই ভিটামিন ‘এ’-এর ঘাটতি পূরণ হবে।

ভিটামিন ‘সি’: কোলাজেন ও চুলের ঔজ্জ্বল্য রক্ষায়

শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি ভিটামিন ‘সি’ চুলের সুস্থতা বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। চুলের অন্যতম প্রয়োজনীয় উপাদান হলো কোলাজেন, যা বয়স, দূষণ ও অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসে কমে যায়। কোলাজেন উৎপাদন বজায় রাখতে লেবু, বেল পেপার, ব্রকোলি, টমেটো ও বেরিজাতীয় ফল খাওয়া উচিত। এতে চুল যেমন ঘন হবে, তেমনি উজ্জ্বলতাও বাড়বে।

ভিটামিন ‘ডি’: ফলিকল মজবুত করতে কার্যকর

চুল ঝরার অন্যতম কারণ হলো দুর্বল হেয়ার ফলিকল। ভিটামিন ‘ডি’ ফলিকল শক্তিশালী করে এবং নতুন চুল গজাতে সহায়তা করে। বিশেষ করে অ্যালোপেসিয়া এরিয়েটা জাতীয় অবস্থায় এ ভিটামিন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে বলে একাধিক গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে। ভিটামিন ‘ডি’-এর উৎস হলো সূর্যালোক, ডিমের কুসুম, তৈলাক্ত মাছ ও দুধ। নিয়মিত এগুলো গ্রহণ করলে চুল পড়া অনেকটাই কমতে পারে।

ভিটামিন ‘ই’: চুলের সুরক্ষাবর্ম

অক্সিডেটিভ স্ট্রেসের কারণে চুল ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং ভেঙে পড়ে। ভিটামিন ‘ই’ শরীরে তৈরি হওয়া ফ্রি র্যাডিক্যালের প্রভাব কমিয়ে চুলকে সুরক্ষা দেয়। পাশাপাশি এটি কোষ পুনরুজ্জীবিত করে ক্ষতিগ্রস্ত চুল মেরামত করে। বিভিন্ন রকম বাদাম, আম, ব্রকোলি, রাঙা আলু এবং সবুজ শাকসবজি ভিটামিন ‘ই’-এর সমৃদ্ধ উৎস।

ভিটামিন ‘বি৭’ বা বায়োটিন: কেরাটিন উৎপাদনে অপরিহার্য

কেরাটিন নামক প্রোটিন চুলের মূল উপাদান। বায়োটিন বা ভিটামিন ‘বি৭’-এর অভাবে কেরাটিন উৎপাদন ব্যাহত হয়, ফলে চুল দুর্বল হয়ে যায়। এছাড়া বায়োটিন শরীরে গ্লুকোজ, ফ্যাটি অ্যাসিড ও অ্যামাইনো অ্যাসিডের বিপাকে সহায়তা করে। একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের দৈনিক প্রায় ৩০ মাইক্রোগ্রাম বায়োটিন প্রয়োজন। বাদাম, শাক, বীজ, দুধ, দই ও রাঙা আলু নিয়মিত খেলে এ ভিটামিনের ঘাটতি পূরণ হয় এবং চুল থাকে স্বাস্থ্যকর।

চুল ঝরা রোধে শুধু বাহ্যিক প্রসাধনী নয়, শরীরের ভেতর থেকে সঠিক পুষ্টি নিশ্চিত করাই সবচেয়ে জরুরি। ভিটামিন ‘এ’, ‘সি’, ‘ডি’, ‘ই’ ও ‘বি৭’ সমৃদ্ধ খাবার প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় রাখলে চুল হবে আরও মজবুত, উজ্জ্বল ও প্রাণবন্ত।


হাঁড়ি-কলসি থেকে টেরাকোটা: দোয়েল চত্বরে মাটির শিল্পের রঙিন দুনিয়া

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ৩১ ১২:৪৬:৫৫
হাঁড়ি-কলসি থেকে টেরাকোটা: দোয়েল চত্বরে মাটির শিল্পের রঙিন দুনিয়া
ছবিঃ সংগৃহীত

বিকেলের ফিকে আলোয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার দোয়েল চত্বর যেন এক ভিন্ন আবহ তৈরি করে। চারপাশে ব্যস্ত মানুষের ভিড় থাকলেও নজর কাড়ে সারি সারি সাজানো মাটির সামগ্রীর দোকান। লালচে আভায় মোড়া কলসি, হাঁড়ি, ফুলদানি, শোপিস, কাপ-গ্লাস কিংবা ক্রোকারিজের মায়াবী ঝলক বাতাসে মিশে থাকা মাটির গন্ধকে আরও জীবন্ত করে তোলে। শহরের কোলাহলের মাঝেও এখানে এসে যেন মানুষ এক মুহূর্তের জন্য থমকে যায়—এখানকার পসরা কেবল বাজার নয়, এটি আমাদের শেকড়ের টান অনুভব করার এক ছোট্ট আয়োজন।

ঐতিহ্যের উত্তরাধিকার

দোয়েল চত্বরে টানা ২৮ বছর ধরে ব্যবসা করছেন ইব্রাহিম বাবুল। তিনি জানান, মৃৎশিল্প মূলত পাল সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী পেশা। ১৯৮৫–৮৬ সালের দিকে পালরা এখানে আসেন, তাদের দেখে ধীরে ধীরে অন্যরাও এ ব্যবসায় যুক্ত হন। অনেকেই সময়ের স্রোতে হারিয়ে গেছেন, কেউ পেশা বদল করেছেন, তবে এখনো কিছু পরিবার এ পেশায় টিকে আছেন। বাবুলের ভাষায়, “মানুষ যাবে-আসবে, কিন্তু যুগ যুগ ধরে এই ব্যবসা বেঁচে থাকবে।”

হারানো দিন আর বর্তমান বাস্তবতা

একসময় গ্রামবাংলার প্রতিটি ঘরে মাটির হাঁড়ি-কলসি অপরিহার্য ছিল। রান্না, পানি সংরক্ষণ থেকে শুরু করে অতিথি আপ্যায়ন—সব ক্ষেত্রেই মাটির জিনিসপত্র ব্যবহার হতো। বর্তমানে সিরামিক, প্লাস্টিক ও কাচের পণ্যে বাজার ভরে গেলেও রুচিশীল মানুষের কাছে এখনো মাটির সামগ্রীর কদর রয়ে গেছে। কেউ ফুলগাছ সাজাতে টব কিনছেন, কেউ ফুলদানি, কেউবা সৌখিনতার বশে খাবার প্লেট বা ফিল্টার। এভাবে মাটির জিনিসপত্র আজও আভিজাত্য ও শৌখিনতার প্রতীক হয়ে টিকে আছে।

ব্যবসায়ীর অভিজ্ঞতা

বাবুলের মতে, আগের মতো চাহিদা নেই, তবে যারা শিক্ষিত ও রুচিশীল, তারাই বেশি কেনেন। তাদের কাছে মাটির জিনিসের আলাদা মূল্য আছে। মৃৎশিল্প তৈরির জন্য বিশেষ ধরনের এটেল মাটি প্রয়োজন হয়, যা শরীয়তপুর, কুষ্টিয়া, কুমিল্লার বিজয়পুর ও বরিশালের বগাদিয়া-কনদিয়া এলাকা থেকে আনা হয়। ঢাকার মাটি দিয়ে এই শিল্প সম্ভব নয়। এটেল মাটির সঙ্গে বালি, দোয়াশ মাটি এবং কখনো রাসায়নিক মিশিয়ে তৈরি হয় নান্দনিক সামগ্রী।

মাটির শিল্পের বৈচিত্র্য

দোয়েল চত্বরে সাজানো দোকানগুলোয় গেলে চোখ ধাঁধিয়ে যায়। মাটির কাপ, মগ, জগ, ফুলদানি, শোপিস, ফিল্টার, ডিনার সেটের পাশাপাশি পোড়ামাটির টেরাকোটা, দেয়াল সাজানোর শিল্পকর্ম এমনকি নারীদের গহনা—কানের দুল, বালা, গলার মালাও পাওয়া যায়। দাম শুরু হয় ২৫০ টাকা থেকে, আর নিপুণ শিল্পকর্মের জটিলতা ও আকারভেদে তা কয়েক হাজার টাকায় গড়ায়।

ঐতিহ্য ধরে রাখার সংগ্রাম

দীর্ঘদিন ধরে দোয়েল চত্বরে ব্যবসা করছেন আবু তাহেরও। তিনি বলেন, “গ্রামে এখন আর মাটির জিনিসপত্র তেমন চলে না। কিন্তু ঢাকায় যারা শখ করে ঘর সাজান, তারাই আমাদের জিনিস কেনেন। মাটির টব, ফুলদানি আর ফিল্টারের ভালো চাহিদা আছে। অনেকে আবার প্রিয়জনকে উপহার দিতেও কেনেন। আমাদের কাছে এই কাজ কেবল ব্যবসা নয়, এটা জীবনের অংশ।”

দোকানিদের মতে, বর্তমানে মৃৎশিল্প নানা চ্যালেঞ্জের মুখে। একদিকে দামী কাঁচামাল, অন্যদিকে উৎপাদনের সময় বিপুল পরিমাণ ক্ষতি—সব মিলিয়ে ব্যবসা লাভজনক থাকছে না। তবুও মাটির গন্ধ, শেকড়ের টান আর ঐতিহ্যের মায়াই তাদের টিকিয়ে রেখেছে। তাদের বিশ্বাস, প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে পাল সম্প্রদায়ের হাত ধরে আসা এই শিল্প আবারো ফিরে পাবে তার পুরোনো সম্মান।

দোয়েল চত্বরে সাজানো রঙিন হাঁড়ি-কলস আর শিল্পীর নিপুণ হাতে গড়া শোপিসগুলো যেন আজও দর্শনার্থীদের স্মরণ করিয়ে দেয়, “আমরা এখনো শেকড়ে বাঁধা আছি।” মাটির টান যে কখনো হারায় না, এই চত্বর তার জীবন্ত প্রমাণ।


ব্ল্যাকহেড্‌স দূর করার ঘরোয়া উপায়: মাত্র দুটি জিনিস লাগবে

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ৩০ ২২:২৮:৪৩
ব্ল্যাকহেড্‌স দূর করার ঘরোয়া উপায়: মাত্র দুটি জিনিস লাগবে
ছবি: সংগৃহীত

নাক, কপাল ও মুখের যেসব জায়গায় অতিরিক্ত সেবাম জমে ত্বকের রন্ধ্র বন্ধ হয়ে যায়, সেসব জায়গাতেই দেখা যায় ব্ল্যাকহেড্‌স। এগুলো ছোট ছোট কালো রোমের মতো দেখতে। ব্ল্যাকহেড্‌স দূর করতে অনেকে পার্লারে গেলেও, সঠিক পদ্ধতি জানা থাকলে ঘরে বসেই এটি পরিষ্কার করা সম্ভব।

ব্ল্যাকহেড্‌স কেন হয়?

ত্বকে থাকা সূক্ষ্ম রন্ধ্রে ময়লা, তেল বা মৃত কোষ জমলে ব্ল্যাকহেড্‌সের সৃষ্টি হয়। রন্ধ্রের মধ্যে এই ময়লা শুকিয়ে কালো বিন্দুর মতো ব্ল্যাকহেড্‌স তৈরি করে।

দূর করার সহজ কৌশল

ব্ল্যাকহেড্‌স দূর করতে আপনার প্রয়োজন হবে পরিষ্কার তোয়ালে এবং গরম পানি।

পদ্ধতি:

১. প্রথমে ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে।

২. এরপর গরম পানির ভাপ নিতে হবে। একটি তোয়ালে গরম পানিতে ভিজিয়ে পানি নিংড়ে নিন এবং

তা মুখের ওপর বা যেখানে ব্ল্যাকহেড্‌স আছে, সে অংশে চেপে ধরুন।

৩. গরম ভাপের কারণে ত্বকের রন্ধ্রগুলো উন্মুক্ত হবে এবং ব্ল্যাকহেড্‌স নরম হয়ে যাবে।

৪. এবার তোয়ালে দিয়ে আলতো চাপে ঘষাঘষি করলেই ব্ল্যাকহেড্‌স পরিষ্কার হয়ে যাবে। মনে রাখতে

হবে, খুব বেশি জোরে ঘষা যাবে না, এতে ত্বকের ক্ষতি হতে পারে।

৫. সবশেষে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে নিতে হবে, যাতে ত্বক উজ্জ্বল ও সুন্দর দেখায়।

ব্ল্যাকহেড্‌স এড়ানোর উপায়

এক্সফোলিয়েশন: ফেসওয়াশ দিয়ে নিয়মিত মুখ পরিষ্কারের পাশাপাশি সপ্তাহে দুই দিন স্ক্রাবিং করা জরুরি। এক্সফোলিয়েশন করলে ব্ল্যাকহেড্‌স হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়।

পরিচ্ছন্নতা: ক্রিম মেখে ধুলোভরা বা অপরিচ্ছন্ন বালিশ ও বিছানায় ঘুমালে এই সমস্যা বাড়তে পারে। তাই বিছানা সবসময় পরিষ্কার রাখা উচিত।

এছাড়াও, তোয়ালে দিয়ে ব্ল্যাকহেড্‌স পরিষ্কারের এই পদ্ধতিটি মাসে সর্বোচ্চ চারবার করা যেতে পারে, এর বেশি নয়।

সূত্র : আনন্দবাজার ডট কম

পাঠকের মতামত: