দুই কারণ সামনে রেখে গাজীপুরে সাংবাদিক হত্যা ঘটনায় তদন্ত

সারাদেশ ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ০৯ ০৯:৩৪:২৭
দুই কারণ সামনে রেখে গাজীপুরে সাংবাদিক হত্যা ঘটনায় তদন্ত
গাজীপুরে সাংবাদিক আসাদুজ্জামানের স্ত্রী মুক্তা বেগম স্বামী হত্যার বিচার চাইতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন।ছবি: প্রথম আলো

গাজীপুরে সাংবাদিক আসাদুজ্জামানকে কুপিয়ে হত্যা করার ঘটনায় দুই সম্ভাব্য কারণ নিয়ে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। একদিকে রয়েছে গাজীপুরের সন্ত্রাসী ও ছিনতাইকারী দলের বিরুদ্ধে ভিডিও ধারণের ঘটনা, অন্যদিকে পূর্বশত্রুতার বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে হত্যাকারীদের শনাক্ত করা হয়েছে এবং তাদের মধ্যে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের নাম মো. মিজান ওরফে কেটু মিজান, তার স্ত্রী গোলাপি, মো. স্বাধীন ও আল আমিন। সিসিটিভির মাধ্যমে তাদের শনাক্ত করার পর গত কয়েক দিনে বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়েছে।

পুলিশের বরাত দিয়ে জানা গেছে, আসাদুজ্জামানের হত্যাকাণ্ডের পর স্থানীয় একটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান থেকে সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়। সেটি দেখে হত্যাকারীদের চিহ্নিত করে তিনটি পুলিশের টিম ভিন্ন ভিন্ন এলাকায় অভিযান চালায়। গাজীপুর সদর উপজেলার ভবানীপুর থেকে মিজান ও তার স্ত্রী, শহরের পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে স্বাধীন এবং রাজধানীর তুরাগ থেকে আল আমিনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গাজীপুর মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ) তাহেরুল হক চৌহান জানিয়েছেন, হত্যাকাণ্ডে জড়িত অন্য ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

ঘটনার পর আসাদুজ্জামানের বড় ভাই মো. সেলিম গাজীপুর বাসন থানায় মামলা করেছেন। আসাদুজ্জামান গত বৃহস্পতিবার রাত আটটার দিকে চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় ধারালো অস্ত্র নিয়ে ছিনতাইকারী ও সন্ত্রাসীদের দ্বারা কুপিয়ে নিহত হন। তিনি দৈনিক ‘প্রতিদিনের কাগজ’ এর স্টাফ রিপোর্টার ছিলেন এবং ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার ভাটিপাড়া গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন।

গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপকমিশনার রবিউল হাসান জানিয়েছেন, সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, ছিনতাইকারী দল ধারালো দেশি অস্ত্র নিয়ে এক ব্যক্তিকে ধাওয়া করছে। সেই সময় সাংবাদিক আসাদুজ্জামান ওই দৃশ্য ভিডিও করছিলেন। প্রাথমিক তদন্তে ধারণা করা হচ্ছে, ভিডিও করার কারণেই তাকে হত্যা করা হয়েছে।

ভিডিওতে দেখা যায়, চান্দনা চৌরাস্তা মসজিদ মার্কেটের পশ্চিম পাশে, সন্ধ্যা ৬টা ৫৮ মিনিটে একটি নারী ও পুরুষের ধস্তাধস্তির দৃশ্য। নারীকে টেনে ধরছে একজন পুরুষ, যিনি পরে তার উপর চড়াও হন। তখন পাশ থেকে ধারালো অস্ত্র হাতে কিছু যুবক ওই ব্যক্তিকে কোপানোর চেষ্টা করেন। ওই ব্যক্তি পালাতে সক্ষম হন।

আসাদুজ্জামান হত্যাকাণ্ডের সময় তিনি এবং তাঁর সহকর্মী শামীম হোসেন চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় একসঙ্গে হাঁটছিলেন। শামীম বলেন, কয়েকজন ধারালো অস্ত্রধারী ওই পুরুষকে তাড়া করছিল। আসাদুজ্জামান মোবাইল ফোন বের করে তাদের ভিডিও করতে থাকেন। পরে চায়ের দোকানে ঢুকে পালানোর চেষ্টা করলেও তারা ঢুকে তাকে কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায়। শামীম পরে পুলিশকে খবর দেন।

ধস্তাধস্তির সময় আহত ব্যক্তি বাদশা মিয়া হাসপাতালে ভর্তি আছেন। তিনি বলেন, তাদের একটি দল তার কাছ থেকে টাকা নিয়েছে।

পুলিশ জানায়, গাজীপুর বাসন, ভোগরা ও চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় ছিনতাইকারী একটি চক্র সক্রিয়। ভিডিওতে ধরা পড়ে ছিনতাইকারীদের মধ্যে এক নারীও রয়েছে, যিনি ওই চক্রের সদস্য বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এই ঘটনার প্রতিবাদে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও পেশাজীবী সংগঠন গতকাল চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছে। গাজীপুর প্রেসক্লাবের সামনে সাংবাদিক ইউনিয়নের আয়োজনে কর্মসূচিতে হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানানো হয়। ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সাংবাদিকরা হত্যার নিন্দা জানিয়ে বিচার ও নিরাপত্তা দাবি করেন।

এছাড়া জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও গণ অধিকার পরিষদ ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়ে হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানায়। গণ অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা বাসন থানায় মিছিল করে থানা ঘেরাও করে।

আসাদুজ্জামানের জানাজা গতকাল চান্দনা মসজিদ মাঠে অনুষ্ঠিত হয়। এরপর সন্ধ্যায় তার গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ায় পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। পরিবারের সদস্যরা শোকাহত।

এদিকে গাজীপুরের সাহাপাড়া এলাকায় সাংবাদিককে মারধরের ঘটনায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে মো. ফরিদ নামের এক যুবককে। গত বুধবার চাঁদাবাজির সংবাদ সংগ্রহকালে ওই সাংবাদিকের ওপর হামলা হয়। মামলার বাদী তার মা। গ্রেপ্তারকৃত ফরিদকে আদালত কারাগারে পাঠিয়েছে। পুলিশ অন্যান্য আসামিদের ধরতে অভিযান চালাচ্ছে।

/আশিক


রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে উদ্বেগ: আইএইএ’র প্রতিবেদন কী বলছে?

সারাদেশ ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ২৪ ১১:১১:২৫
রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে উদ্বেগ: আইএইএ’র প্রতিবেদন কী বলছে?
রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্র। পুরোনো ছবি (সংগৃহীত)

বিদ্যুৎ উৎপাদনের চূড়ান্ত পর্যায়ে থাকা রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে একের পর এক নেতিবাচক খবরে উদ্বেগ বাড়ছে। প্রকল্পের নিরাপত্তা ও আন্তর্জাতিক আণবিক সংস্থা (আইএইএ)-এর প্রতিবেদনের ব্যাখ্যা বিকৃতভাবে উপস্থাপন করে এই উদ্বেগ ছড়ানো হচ্ছে বলে দাবি করেছে প্রকল্প কর্তৃপক্ষ। তারা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন ও বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়া এবং আইএইএ-এর নিরাপত্তার শর্ত পূরণ না করে উৎপাদনে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।

নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেডের (এনপিসিবিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মো. জাহেদুল হাছান বলেন, "নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। প্রয়োজন হলে কাজ সম্পন্ন হতে বিলম্ব হলেও এনপিসিবিএল-এর কোনো তাড়াহুড়ো নেই।"

আইএইএ-এর সুপারিশ এবং প্রকল্পের অবস্থান

গত ১০ থেকে ২৭ আগস্ট পর্যন্ত আইএইএ-এর একটি বিশেষজ্ঞ দল রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্রে প্রি-ওসার্ট মিশন পরিচালনা করে। এরপর সংস্থাটি তাদের ওয়েবসাইটে প্রেস নোটের মাধ্যমে কিছু সুপারিশ ও মতামত দেয়। এর মধ্যে অগ্নি-নিরাপত্তা, প্লান্ট অপারেশনের মান এবং যন্ত্রপাতি সংরক্ষণের বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

অগ্নি-নিরাপত্তা: অগ্নি-নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা ও প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ আরও উন্নত করার সুপারিশ।

প্লান্ট অপারেশন: প্লান্ট অপারেশনের মান ও তত্ত্বাবধানের গুণগত মান জোরদার করার কথা বলা হয়েছে।

যন্ত্রপাতি সংরক্ষণ: কমিশনিং চলাকালীন যন্ত্রপাতি সংরক্ষণের বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলা হয়েছে।

প্রকল্প সূত্র জানিয়েছে, আইএইএ তিন মাসের মধ্যে রূপপুর প্রকল্প নিয়ে পর্যবেক্ষণের চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করবে। এই সুপারিশগুলো যথাযথভাবে বাস্তবায়নের পর এবং নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ বায়রা-এর অনুমোদন সাপেক্ষে চুল্লিতে জ্বালানি লোডিং করা সম্ভব হবে।

‘অপপ্রচার ও ভুল তথ্য’ ছড়ানোর অভিযোগ

আইএইএ-এর গোপন প্রতিবেদনকে সূত্র হিসেবে উল্লেখ করে কিছু গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে যে, নিরাপত্তা নিশ্চিত না করেই তাড়াহুড়ো করে বিদ্যুৎকেন্দ্র চালুর চেষ্টা চলছে। এসব প্রচারের কারণে প্রকল্প এলাকাজুড়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে। তবে প্রকল্প কর্মকর্তারা এটিকে ‘পরিকল্পিত চক্রান্ত’ হিসেবে উল্লেখ করে অপপ্রচার বলে দাবি করেছেন।

প্রকল্প কর্মকর্তারা আরও জানান, রূপপুর প্রকল্পে প্রায় ১,৫০০টি নন-নিউক্লিয়ার টেস্ট সম্পন্ন করার প্রয়োজন রয়েছে, যার মধ্যে ৯০০টি ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। বাকি পরীক্ষাগুলো নির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী ফুয়েল লোডিংয়ের আগেই শেষ করতে কাজ চলছে।

ড. জাহেদুল হাছান আরও বলেন, "অন্য দেশের প্রি-ওসার্ট মিশনের প্রতিবেদনের চেয়ে বাংলাদেশের জন্য আইএইএ যে প্রতিবেদন দিয়েছে, তা অনেক ভালো। তাই দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই।"


তারেক রহমানের নির্দেশে: পূজামণ্ডপ পাহারা দেবে বিএনপি নেতাকর্মীরা

সারাদেশ ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ২৩ ২২:০২:১৮
তারেক রহমানের নির্দেশে: পূজামণ্ডপ পাহারা দেবে বিএনপি নেতাকর্মীরা
মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখছেন মো. ফখরুল ইসলাম। ছবি : কালবেলা

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপি নেতা ও ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির চেয়ারম্যান মো. ফখরুল ইসলাম বলেছেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে এলাকার সব পূজামণ্ডপ পাহারা দেবেন দলের নেতাকর্মীরা।

‘সনাতন ধর্মাবলম্বীরা এখন নিরাপদ’

মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় বসুরহাটে নোয়াখালী-৫ আসনের দুর্গাপূজামণ্ডপের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা ও অনুদান বিতরণের সময় এসব কথা বলেন তিনি।

ফখরুল ইসলাম বলেন, “ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উপর অন্যায়-অত্যাচার করে পালিয়ে গেছে। সনাতন ধর্মাবলম্বীরা এখন আগের চেয়ে বেশি নিরাপদ। কারণ সনাতন ধর্মাবলম্বীদের নিরাপত্তার নির্দেশ দিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।”

তিনি আরও বলেন, “এখন আমাদের দায়িত্ব প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় আয়োজিত দুর্গাপূজামণ্ডপের নিরাপত্তা দেওয়া। কারণ তারা আমাদের ভাই, তাদের উৎসবে যাতে কেউ বাধার সৃষ্টি করতে না পারে। এখন বিএনপি নেতাকর্মীদের একমাত্র দায়িত্ব এলাকার শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখা।”

‘সন্ত্রাসী কাদের মির্জার জন্ম আর না হয়’

বিএনপির এ নেতা বলেন, “কোম্পানীগঞ্জে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকদের ওপর অত্যাচার করেছে পলাতক ওবায়দুল কাদেরের ভাই সন্ত্রাসী কাদের মির্জা। এ এলাকায় যাতে কাদের মির্জার মতো আর কোনো সন্ত্রাসীর জন্ম আর না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।”

সভায় বৃন্দাবন মহাজন বাড়ি দুর্গা মন্দিরের সভাপতি সন্তোষ কুমার মজুমদারের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন- কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পূজা উদযাপন ফ্রন্টের আহ্বায়ক শ্যামল দাস, সদস্য সচিব অসীম মজুমদার, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক অমিত মজুমদার, বসুরহাট জগন্নাথ মন্দিরের সভাপতি নির্মল চন্দ্র দে।

এ সময় উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক আফতাব আহমেদ বাচ্চু, আনিছুল হক, বিএনপি নেতা একরামুল হক মিলন মেম্বার, সাবেক ছাত্রদল নেতা আবু তোয়াহা, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. মহিউদ্দিন ছোটন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।


ঐক্য ধরে রাখতে এক ব্যতিক্রমী উদ্যোগ: বিএনপি নেতার ‘খিচুড়ি কূটনীতি’

সারাদেশ ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ২৩ ২১:৪২:১৬
ঐক্য ধরে রাখতে এক ব্যতিক্রমী উদ্যোগ: বিএনপি নেতার ‘খিচুড়ি কূটনীতি’
কিশোরগঞ্জে তৃণমূল নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ রাখতে খিচুড়ি বিতরণ। ছবি : কালবেলা

কিশোরগঞ্জে তৃণমূল নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ রাখতে ব্যতিক্রমী এক আয়োজন করেছে স্থানীয় এক বিএনপি নেতা। নিজ ওয়ার্ডের সাধারণ মানুষ ও তৃণমূল নেতাকর্মীদের মাঝে খিচুড়ি রান্না করে বিতরণ করা হয়। মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সকালে কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার রশিদাবাদ ইউনিয়নের শ্রীমন্তপুর গ্রামে এ আয়োজন করা হয়।

আয়োজক ও উদ্দেশ্য

রশিদাবাদ ইউনিয়নের বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও সদর উপজেলা বিএনপি ত্রাণ ও পুনর্বাসন সম্পাদক মো. বিল্লাল এ আয়োজন করে।

এ বিষয়ে ২নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মো. শাহাবুদ্দিন বলেন, “আমাদের তৃণমূলের সব নেতাকর্মীকে ঐক্যবদ্ধভাবে চলার জন্য আজকে এ আয়োজন। সবাইকে একসঙ্গে নিয়ে খাওয়া-দাওয়া হয়েছে। আমাদের মধ্যে সম্পর্ক ধরে রাখার জন্য এটি একটি সুন্দর আয়োজন। আমরা এ উদ্যোগের ধারাবাহিকতা ধরে রাখব।”

‘তারেক রহমানের নির্দেশ বাস্তবায়ন’

কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম সুমন বলেন, “এ উদ্যোগটি ভালো লেগেছে। তারেক রহমানের নির্দেশ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এ আয়োজন। বিএনপির সব পরিবারের সদস্যদের বলব আমরা হিংসা-বিদ্বেষ ভুলে একতাবদ্ধ হয়ে ওয়ার্ড পর্যায়ে মাঝে মাঝে নেতাকর্মীদের নিয়ে এমন করে ভালো কিছু করা প্রয়োজন। তাহলে সবার খোঁজখবর নেওয়া ও ঐক্যবদ্ধ ঠিক থাকবে।”

ঐক্য ও নির্বাচনের প্রস্তুতি

আয়োজক রশিদাবাদ ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. বিল্লাল বলেন, “তারেক রহমান বলেছেন আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। এ জন্য খিচুড়ি খাওয়ার আয়োজন করা হয়েছে। আমি মনে করি আমাদের প্রত্যেকের গোষ্ঠী, মহল্লা ও ওয়ার্ড পর্যায়ে প্রতিটি নেতাকর্মী যদি উদ্যোগ নিই আমরা মাঝে মাঝে একসাথে এইভাবে খাওয়ার আয়োজন করব। সবাই একসাথে খাব। তাহলে এর মাধ্যমে প্রত্যেকের সাথে ভালো সম্পর্ক থাকবে, ঐক্যবদ্ধ থাকা যাবে।”

তিনি বলেন, “তারেক রহমানের আশা ব্যর্থ হবে না। সামনে নির্বাচনে আমাদের ভোট ও সমর্থনের কোনো সমস্যা হবে না। এ উদ্দেশ্যে মূলত আমার আজকের এ আয়োজন।”


কড়া নিরাপত্তা ফাঁকি দিয়ে জোড়া খুনের আসামি পালালো বগুড়া আদালত থেকে

সারাদেশ ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ২৩ ১১:৩২:৩১
কড়া নিরাপত্তা ফাঁকি দিয়ে জোড়া খুনের আসামি পালালো বগুড়া আদালত থেকে
ছবি: সংগৃহীত

বগুড়ার আদালতের কড়া নিরাপত্তা বেষ্টনী ফাঁকি দিয়ে জোড়া খুন মামলার অন্যতম আসামি রফিকুল ইসলাম (৪০) পালিয়ে গেছেন। এ ঘটনার পর থেকে আদালতপাড়ায় ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক ও উত্তেজনা। তবে এখন পর্যন্ত আসামিকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি।

হাজতখানা থেকে পলায়ন ও আসামির পরিচয়

সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) বিকেল সোয়া ৪টার দিকে বগুড়া জেলা ও দায়রা জজ আদালতের হাজতখানার সামনে থেকে তিনি পালিয়ে যান।

পলাতক আসামি রফিকুল ইসলাম বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলার চকপাড়া গ্রামের নছির আকন্দের ছেলে।

বগুড়ার পুলিশের আদালত পরিদর্শক (কোর্ট ইন্সপেক্টর) মোসাদ্দেক হোসেন সোমবার সন্ধ্যায় এসব তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, দুপচাঁচিয়া উপজেলার জিয়ানগরের লক্ষ্মীমণ্ডপ এলাকায় গত ৯ জুলাই শ্বশুর ও পুত্রবধূকে শ্বাসরোধে হত্যা ও ডাকাতি মামলার অন্যতম আসামি ছিলেন রফিকুল ইসলাম।

পুলিশের নজর এড়িয়ে পালানো ও তদন্ত কমিটি গঠন

আদালত পুলিশের এই কর্মকর্তা জানান, আসামি রফিকুল ইসলামকে আদালতে হাজিরা দেওয়ার জন্য সকাল ১০টায় জেলা কারাগার থেকে আদালতের হাজতখানায় আনা হয়। তবে আদালতের কাজ শেষে হাজতখানা থেকে কারাগারে ফেরত পাঠানোর সময় আদালতের গেটে হাজতখানার সামনে থেকে কৌশলে পুলিশের নজর এড়িয়ে পালিয়ে যায় সে।

পুলিশের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, পলাতক আসামিকে ধরতে এরই মধ্যে একটি বিশেষ টিম কাজ শুরু করেছে। পাশাপাশি, দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে সংশ্লিষ্ট পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে।

বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও মিডিয়া মুখপাত্র আতোয়ার রহমান জানান, আদালতে হাজিরা শেষে প্রিজনভ্যানে নেওয়ার পথে রফিকুল ইসলাম পালিয়ে যান। তাকে গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

তিনি আরও জানান, জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কারও গাফিলতি পাওয়া গেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


টঙ্গীতে কেমিক্যাল গোডাউনে ভয়াবহ আগুন: ফায়ার সার্ভিসের সদস্যদের সাহসী প্রচেষ্টা

সারাদেশ ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ২২ ১৯:৩১:১৯
টঙ্গীতে কেমিক্যাল গোডাউনে ভয়াবহ আগুন: ফায়ার সার্ভিসের সদস্যদের সাহসী প্রচেষ্টা
দগ্ধদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়/ছবি-সংগৃহীত

গাজীপুরের টঙ্গীতে একটি কেমিক্যাল গোডাউনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। আগুন নেভাতে গিয়ে ফায়ার সার্ভিসের পাঁচ সদস্য ও তিন শ্রমিক দগ্ধ হয়েছেন। সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে টঙ্গীর সাহারা সুপার মার্কেটের পাশে এ অগ্নিকাণ্ড ঘটে।

আগুন নিয়ন্ত্রণে, দগ্ধ ৮

খবর পেয়ে টঙ্গী ফায়ার সার্ভিসের পাঁচটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। সন্ধ্যা ৬টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।

টঙ্গী ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার মোহাম্মদ শাহিন আলম জানান, আগুন নেভাতে গিয়ে ফায়ার সার্ভিসের পাঁচজন সদস্য ও তিনজন শ্রমিক দগ্ধ হয়েছেন। দগ্ধ আটজনকে প্রথমে টঙ্গী সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে তাদের জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে স্থানান্তর করা হয়।

অগ্নিকাণ্ডের কারণ ও ক্ষয়ক্ষতি

তিনি আরও জানান, আগুন কীভাবে লেগেছে তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তদন্ত শেষ হলে প্রকৃত কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যাবে। তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, গোডাউনের ভেতরে থাকা দাহ্য কেমিক্যাল থেকেই এ দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।


সরকারি অফিসে ঢুকে হামলা: মানববন্ধনকারীদের পেটালেন বিএনপি নেতাকর্মীরা

সারাদেশ ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ২২ ১৯:০১:৩৮
সরকারি অফিসে ঢুকে হামলা: মানববন্ধনকারীদের পেটালেন বিএনপি নেতাকর্মীরা
ছবি : কালের কণ্ঠ

পাবনার সাঁথিয়া উপজেলা ভূমি অফিসে ঢুকে মানববন্ধনকারীদের ওপর হামলা ও মারধরের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় ইউনিয়ন বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় সোহেল রানা নামের এক যুবক আহত হয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।

দুর্নীতির প্রতিবাদে মানববন্ধন ও হামলা

সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সাঁথিয়া উপজেলা ভূমি অফিসে এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগীরা ইউনিয়ন ভূমি অফিসের পরিচ্ছন্নতাকর্মীর বিরুদ্ধে দুর্নীতিসহ নানা অভিযোগে মানববন্ধন করছিলেন। আহত সোহেল রানা ছোট পাথাইলহাট গ্রামের মৃত নুরুজ্জামানের ছেলে।

সূত্র জানায়, উপজেলার নাগডেমরা ইউনিয়ন ভূমি অফিসের পরিচ্ছন্নতাকর্মী (ঝাড়ুদার) তারেক। পদে পরিচ্ছন্নতাকর্মী হলেও নিয়মবহির্ভূতভাবে অতিরিক্ত টাকা নিয়ে ভূমিসংক্রান্ত বিভিন্ন কাজ করে থাকেন তিনি। সম্প্রতি তার এই অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে বিভিন্ন অফিসে লিখিত অভিযোগ করে এলাকাবাসী। আজ সোমবার উপজেলা ভূমি অফিসে সেসব অভিযোগের শুনানি ছিল।

এর আগে এলাকাবাসী উপজেলা ভূমি অফিসের সামনে ওই পরিচ্ছন্নতাকর্মীর বিরুদ্ধে মানববন্ধনে দাঁড়ান। কিন্তু মানববন্ধনে দাঁড়ানোর কিছুক্ষণের মধ্যেই পরিচ্ছন্নতাকর্মী তারেক, নাগডেমরা ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক নুরুজ্জামান, সদস্যসচিব ফকরুল ইসলাম তাদের নেতাকর্মীদের নিয়ে মানববন্ধনকারীদের ওপর হামলা ও মারধর চালান।

ভূমি অফিসের ভেতরেও মারধর

এ সময় মানববন্ধনে অংশ নেওয়া সোহেল রানা নিরাপত্তার জন্য উপজেলা ভূমি অফিসের ভেতর আশ্রয় নেন। কিন্তু তাতেও রেহাই পাননি তিনি। ভূমি অফিসের ভেতর ঢুকেই সোহেল রানাকে বেধড়ক মারধর করা হয় এবং তাকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। পরে পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিতে সহযোগিতা করেন।

আহত সোহেল রানা বলেন, “একজন অসৎ ও দুর্নীতিবাজ পরিচ্ছন্নতাকর্মীর বিচারের দাবিতে আমরা শান্তিপূর্ণ মানববন্ধনে দাঁড়াই। কিন্তু পরিচ্ছন্নতাকর্মী তারেকের সঙ্গে যোগসাজশ করে ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক নুরুজ্জামান, সদস্যসচিব ফকরুল ইসলাম তাদের নেতাকর্মীদের নিয়ে আমাদের ওপর হামলা চালিয়েছে। অনেককেই মারধর ও লাঞ্ছিত করেছে। প্রাণ রক্ষার্থে আমি উপজেলা ভূমি অফিসের ভেতর গিয়েও রেহাই পাইনি। ভূমি অফিসের সিসিটিভি ফুটেজ দেখলেই মারধরের সত্যতা মিলবে। অন্যায়ের বিপক্ষে দাঁড়িয়ে আমাকে মারধরের শিকার হতে হলো। আমি এর বিচার চাই।”

প্রশাসনের বক্তব্য

এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্তদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাদের পাওয়া যায়নি।

এ ব্যাপারে সাঁথিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনিসুর রহমান বলেন, “খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ফোর্স পাঠানো হয়েছিল। তবে এ বিষয়ে এখনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

সাঁথিয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোছা. সাদিয়া সুলতানা বলেন, “আজ সোমবার পরিচ্ছন্নতাকর্মীর বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগের শুনানি ছিল। কিন্তু এর আগেই উভয়পক্ষের মধ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। আমি অফিসের ভেতর ছিলাম। কে কাকে মেরেছে বা হামলা করেছে জানি না। তবে আমার অফিসের কয়েকটা কম্পিউটার ভেঙেছে। আমি ঊর্ধ্বতনদের জানিয়েছি। নির্দেশ পেলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”


মৃত্যুর মুখে ডেঙ্গু রোগী: হাসপাতালে ভর্তির ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই অর্ধেকের বেশি মৃত

সারাদেশ ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ২২ ১৬:২৭:১৪
মৃত্যুর মুখে ডেঙ্গু রোগী: হাসপাতালে ভর্তির ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই অর্ধেকের বেশি মৃত
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সভাকক্ষে সংবাদ সম্মেলনে তুলে ধরা হয় ডেঙ্গু বিষয়ক তথ্য

চলতি বছর ডেঙ্গুতে মারা যাওয়া রোগীদের মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই মারা গেছেন। মোট ১৭৯ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে সোমবার বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সভাকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।

দেরিতে হাসপাতালে আসা বাড়াচ্ছে মৃত্যুর ঝুঁকি

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবু জাফর বলেন, “মৃত্যুর পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ডেঙ্গুতে যারা মারা গেছেন, তাদের অনেকেই হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই মৃত্যুবরণ করেছেন।”

তিনি বলেন, “রোগীরা অনেক সময় দেরিতে হাসপাতালে আসছেন। খারাপ অবস্থায় ভর্তি হচ্ছেন। ফলে চিকিৎসা দেওয়ার সুযোগ কমে যাচ্ছে। এই ভয়াবহ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে সবার সচেতন হওয়া জরুরি। সময়মতো চিকিৎসা না পাওয়ার কারণে বাড়িয়ে দিচ্ছে মৃত্যুর ঝুঁকি।”

ডা. আবু জাফর বলেন, “ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার পরপরই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া দরকার। প্রয়োজনে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি হলে কমতে পারে মৃত্যুর হার।”

সেপ্টেম্বরেই সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত ও মৃত্যু

সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, গত কয়েক দিনে ডেঙ্গুর প্রকোপ কিছুটা বেড়েছে। প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে এমনটা দেখা যায়। গত বছরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, জুনে মারা যান ৮ জন, জুলাইয়ে ১৪ জন, আগস্টে ৩০ জন এবং সেপ্টেম্বরে মারা যান ৮৭ জন। সে বছরের জুনে রোগী ভর্তি হয়েছিলেন ৭৯৮ জন, জুলাইয়ে ২,৬৬৯, আগস্টে ৬,৫২১ এবং সেপ্টেম্বরে ১,৮৯৭ জন। এ পরিসংখ্যান দেখে বলা যায়, সেপ্টেম্বরেই সবচেয়ে বেশি রোগী আক্রান্ত হয়েছে এবং মৃত্যুও ঘটেছে বেশি।

তিনি বলেন, “বর্তমানে যে পরিস্থিতি চলছে এবং আমরা যে ব্যবস্থাপনা নিচ্ছি, সেটি আপনাদের সামনে তুলে ধরার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে, জনগণকে সচেতন এবং ব্যবস্থাপনার সঙ্গে তাদের সম্পৃক্ত করা। কারণ, যত ব্যবস্থাপনাই নেওয়া হোক না কেন, জনগণ যদি সচেতন না হয়, তাহলে ডেঙ্গুর মতো সংক্রামক রোগ থেকে পরিত্রাণ পাওয়া খুব কঠিন।”

কিট মজুদ ও তথ্য প্রকাশে বিভ্রান্তি

সাংবাদিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “এই রোগ যদি শুরুতেই চিহ্নিত করা না যায়, সময়মতো চিকিৎসা শুরু না হয়, তাহলে মৃত্যুর ঝুঁকি বহুগুণ বেড়ে যায়। আপনারা যেভাবে অতীতে আমাদের সহযোগিতা করেছেন, আশা করি মানুষের সচেতনতা বাড়াতে ভবিষ্যতেও আমাদের পাশে থাকবেন।”

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক জানান, ডেঙ্গু শনাক্তে ব্যবহৃত এনএস১–কিট সব জায়গায় রয়েছে এবং পর্যাপ্ত মজুদ আছে। তিনি বলেন, “আমাদের কাছে প্রকাশিত খবরে এসেছে, ২৪ ঘণ্টায় ১২ জন মারা গেছেন। প্রকৃতপক্ষে এর ৯ জনই মারা যান বৃহস্পতিবার। কিন্তু শুক্রবার সরকারি ছুটি থাকায় মৃত্যুর সঠিক সংখ্যা সেদিন প্রকাশ পায়নি। এতে বিভ্রান্তি তৈরি হচ্ছে। এটা আমাদের ব্যর্থতা বলেই মনে করি।”


সুদের টাকার জন্য মরদেহের দাফনে বাধা, চুয়াডাঙ্গায় অমানবিক ঘটনা

সারাদেশ ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ২২ ১৪:৩৮:১৬
সুদের টাকার জন্য মরদেহের দাফনে বাধা, চুয়াডাঙ্গায় অমানবিক ঘটনা
টাকার জন্য মরদেহ দাফনে বাধা। ছবি : সংগৃহীত

চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদায় সুদের টাকা আদায় করতে এক মরদেহের দাফনে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে মর্জিনা খাতুন নামের এক নারীর বিরুদ্ধে। রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) উপজেলার চিৎলা গ্রামের নতুনপাড়ায় এই অমানবিক ঘটনা ঘটে। অবশেষে টাকা পরিশোধ করেই দাফন করতে বাধ্য হয়েছে পরিবার।

হৃদয়বিদারক ঘটনা

নিহত হারুন (পেশায় রাজমিস্ত্রি) চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার চিতলা গ্রামের নতুন পাড়ার নিয়ামত আলীর ছেলে। মেয়ের বাড়ি মেহেরপুরের মহাজনপুরে বেড়াতে গিয়ে রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান তিনি। মরদেহ নিজ গ্রামে আনা হলে পরিবারের কান্নায় ভারী হয়ে ওঠে পরিবেশ। এদিন আসরের নামাজের পর তার দাফনের প্রস্তুতি চলছিল। গোসল করানোর সময় সেখানে হাজির প্রতিবেশী মর্জিনা খাতুন।

মর্জিনা নামে ওই নারীর দাবি, হারুনের কাছে তিনি ১৫ হাজার টাকা পাবেন—আসল নয়, সুদের টাকা! মর্জিনার একটাই কথা, সুদবাবদ ওই ১৫ হাজার টাকা না পেলে হারুনকে দাফন করতে দেবেন না। উপস্থিত সবাই হতবাক হন এবং কেউ কেউ বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। শেষমেশ হারুনের পরিবারের লোকজন দাবিকৃত সুদের টাকা পরিশোধ করলে পথ ছাড়েন মর্জিনা।

গ্রামবাসীর ক্ষোভ ও প্রশাসনের তৎপরতা

টাকা কুড়িয়ে নেওয়ার সময় উপস্থিত কেউ কেউ রাগে ও ক্ষোভে ফেটে পড়েন। মরদেহ আটকে সুদের টাকা আদায়ের ঘটনায় হতবাক গ্রামবাসী। ওই ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দার ঝড় ওঠে।

দামুড়হুদা ইউপি চেয়ারম্যান হযরত আলী বলেন, “এটি অমানবিক ও ন্যক্কারজনক ঘটনা। এ ঘটনায় জড়িত সুদ কারবারিদের বিচার হওয়া উচিত।”

এ বিষয়ে দামুড়হুদা ইউএনও তিথী মিত্র বলেন, “ঘটনাটি শুনেছি। ভিডিও দেখেছি। এটি অমানবিক। আমি আরও খোঁজখবর নেব।


রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্রে বাড়ছে রহস্যজনক মৃত্যু: এবার রাশিয়ান ইলেক্ট্রিশিয়ানের মরদেহ উদ্ধার

সারাদেশ ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ২১ ২১:০১:৪৭
রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্রে বাড়ছে রহস্যজনক মৃত্যু: এবার রাশিয়ান ইলেক্ট্রিশিয়ানের মরদেহ উদ্ধার
কারপোভ ক্রিল

পাবনার ঈশ্বরদীতে নির্মাণাধীন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন প্রকল্পে কর্মরত কারপোভ ক্রিল (২৬) নামে রাশিয়ার এক নাগরিকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) রাত ৮টার দিকে পৌর শহরের পূর্ব টেংরি জিগাতলা এলাকার একটি ভাড়া বাসা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। কারপোভ ক্রিল রূপপুর প্রকল্পে রুশ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ইএসকেএম কোম্পানির ইলেক্ট্রিশিয়ান ছিলেন।

যেভাবে মরদেহ উদ্ধার হলো

ঈশ্বরদী থানা সূত্র জানায়, কারপোভ শহরের জিগাতলা এলাকার একটি পঞ্চমতলার ফ্ল্যাটে একাই ভাড়া থাকতেন। শনিবার রাশিয়া থেকে তার পরিবারের সদস্যরা কারপোভের মোবাইল ফোনে বারবার কল করেও সাড়া পাননি। পরে তারা ইএসকেএম কোম্পানির এক কর্মকর্তাকে বিষয়টি জানান। ওই কর্মকর্তা কারপোভের ফ্ল্যাটে থাকা প্রতিবেশীদের খবর নেওয়ার জন্য বলেন। দোভাষী নিরাপত্তা কর্মকর্তা আনোয়ারুল ইসলাম পাশের ফ্ল্যাটের আরেক রাশিয়ান নাগরিককে নিয়ে ফ্ল্যাটের দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে কারপোভকে বিছানায় উপুড় হয়ে পড়ে থাকতে দেখেন। খবর দেওয়া হলে রাশিয়ান চিকিৎসক এসে ক্রিলকে মৃত ঘোষণা করেন।

চলতি বছরে এটি তৃতীয় মৃত্যু

ঈশ্বরদী থানার ওসি আ স ম আব্দুন নূর বলেন, রাশিয়ার ওই নাগরিকের মৃত্যুর কারণ এখনো জানা যায়নি। ময়নাতদন্ত ও আনুষঙ্গিক কার্যক্রম শেষে তার মরদেহ রাশিয়ায় পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে।

এ নিয়ে চলতি বছর রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্রে কর্মরত রাশিয়ার তিন নাগরিকের মৃত্যু হলো। এর আগে রূপপুর প্রকল্পে কর্মরত নারী কর্মকর্তা কেসেনিয়া পোস্তারু (৩৯) গত ৫ জানুয়ারি গ্রিনসিটির চারতলা থেকে পড়ে মারা যান। অন্যজন ইভান কাইটাজোভের (৪০) লাশ গ্রিনসিটি আবাসিকের একটি বাড়ির শৌচাগার থেকে গত ৯ জানুয়ারি উদ্ধার করা হয়। ঈশ্বরদী থানা ও রূপপুর প্রকল্পের স্থানীয় কার্যালয় সূত্র এই তথ্য নিশ্চিত করে।

পাঠকের মতামত: