শুধুই গ্যাস নয়, বিদ্যুৎ খাতে আরও ৭ মারাত্মক সংকট!

অর্থনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুন ২৬ ২৩:০৬:২৫
শুধুই গ্যাস নয়, বিদ্যুৎ খাতে আরও ৭ মারাত্মক সংকট!

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে আটটি কাঠামোগত ও নীতিগত সংকটের কথা তুলে ধরেছে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। সংস্থাটির মতে, এসব সংকটের মধ্যে রয়েছে—নিয়ন্ত্রক সংস্থার আর্থিক দুর্বলতা, গ্যাস সরবরাহের ঘাটতি, নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহে ব্যর্থতা, ভুলভাবে জ্বালানির মূল্য সমন্বয় এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানি রূপান্তরে গতি হ্রাস—যা সামগ্রিক অর্থনীতির ওপর বাড়তি চাপ তৈরি করছে।

বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টারে আয়োজিত এক সংলাপে সিপিডির পক্ষ থেকে এসব তথ্য উপস্থাপন করা হয়। সংলাপের মূল প্রতিপাদ্য ছিল—‘২০২৫–২৬ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত’।

অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। বক্তব্য দেন বিজিএমইএর পরিচালক ফয়সাল সামাদ, কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের (ক্যাব) জ্বালানি উপদেষ্টা এম শামসুল আলম, এবং সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন গবেষণা সহযোগী হেলেন মাশিয়াত প্রিয়তি।

মূল প্রবন্ধে হেলেন মাশিয়াত বলেন, “তেল ও গ্যাসের মূল্য সমন্বয় যেভাবে করা হচ্ছে, তা প্রক্রিয়াগতভাবে ভুল। এতে দেশের আর্থিক খাতে নতুন চাপ তৈরি হচ্ছে। অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক ঋণের কিস্তি পরিশোধে সমস্যা দেখা দিচ্ছে।”

তিনি আরও বলেন, “বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে আটটি প্রধান সংকট আছে, যা কার্যকর নীতিমালার অভাব, সুশাসনের ঘাটতি এবং বাজেট কাঠামোর সীমাবদ্ধতায় আরও জটিল হয়ে উঠেছে।”

সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, “বিগত সরকার বিপুল বিনিয়োগ করলেও বিদ্যুৎ ও জ্বালানির গুণমানগত উন্নয়ন হয়নি। বরং সেবার পরিবর্তে লুটপাট, অপচয় ও সুশাসনের বড় ঘাটতি দেখা গেছে। অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে প্রত্যাশা, এই দুর্বলতাগুলো চিহ্নিত করে সংস্কারমূলক পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”

তিনি বলেন, “নীতিনির্ধারণে ভারসাম্য আনতে হবে, এবং দীর্ঘমেয়াদি টেকসই রূপান্তরের পথে এগোতে হবে।”

প্রবন্ধে উল্লেখ করা হয়, অন্তর্বর্তী সরকারের তিনটি রাজনৈতিক আকাঙ্ক্ষা ছিল—শূন্য দারিদ্র্য, শূন্য বেকারত্ব ও শূন্য নেট কার্বন নিঃসরণ। কিন্তু বাজেটে তার প্রতিফলন নেই।

হেলেন মাশিয়াত বলেন, “আমরা এখনো প্রো-ফসিল ফুয়েল বাজেট বাস্তবায়ন করছি। এলএনজি আমদানিতে ভ্যাট ছাড় থাকলেও নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে প্রণোদনা নেই। বরং বরাদ্দ কমেছে। এবারের বাজেটে মাত্র সাতটি প্রকল্পে নবায়নযোগ্য জ্বালানির উল্লেখ রয়েছে, যা অগ্রগতির ইঙ্গিত দিলেও বরাদ্দ অপ্রতুল। ঘোষিত ৭০০ কোটি টাকার বিশেষ তহবিলও পর্যাপ্ত নয়।”

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ