গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসন

গাজার ত্রাণ প্রার্থীদের রক্তে রঞ্জিত “মানবিকতা”: ইসরায়েলি ড্রোন ও গুলিতে ৮৬ জন নিহত

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুন ২৫ ০৯:০১:৫৪
গাজার ত্রাণ প্রার্থীদের রক্তে রঞ্জিত “মানবিকতা”: ইসরায়েলি ড্রোন ও গুলিতে ৮৬ জন নিহত

অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার জনগণের দুর্দশা প্রতিদিন নতুন মাত্রা নিচ্ছে। এবার মানবিক সহায়তা নিতে আসা অসহায় মানুষদের ওপর ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বর ড্রোন হামলা ও গুলিবর্ষণে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৮৬ জন ফিলিস্তিনি। মঙ্গলবার (২৪ জুন) বিভিন্ন হাসপাতাল ও চিকিৎসা সূত্র নিশ্চিত করেছে, এই হত্যাকাণ্ডের অধিকাংশই সংঘটিত হয়েছে ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রের আশেপাশে—যেখানে ক্ষুধার্ত মানুষ কিছু খাবার ও সহায়তার আশায় জড়ো হয়েছিলেন।

গাজার মধ্যাঞ্চলের সালাহ আল-দিন সড়কে ওয়াদি গাজার দক্ষিণ অংশে চালানো একটি হামলায় একাই নিহত হন অন্তত ২৫ জন। আহত হয়েছেন ১৪০ জনেরও বেশি, যাদের মধ্যে ৬২ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। একই দিনে দক্ষিণাঞ্চলীয় রাফাহ শহরে ত্রাণ সংগ্রহ করতে আসা আরও ২৭ জন মানুষকে ইসরায়েলি সেনারা গুলি করে হত্যা করে। এই তথ্য নিশ্চিত করেছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা ও অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস।

ভয়াবহ এই ঘটনার দৃশ্য ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ইনস্টাগ্রামসহ বিভিন্ন মাধ্যমে দেখা যাচ্ছে, আহত ও নিহতদের মরদেহ স্থানীয় আল-আওদা হাসপাতালসহ আশেপাশের চিকিৎসাকেন্দ্রে আনা হচ্ছে। নিহতদের অনেকেই নুসাইরাত শরণার্থী শিবিরের বাসিন্দা।

উল্লেখযোগ্য যে, গত মাসের শেষদিকে বিতর্কিত ইসরায়েলি-মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত গাজা হিউম্যানিটেরিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ) নামক একটি সংস্থা ত্রাণ বিতরণ পয়েন্ট স্থাপন করে, যেখানে প্রতিদিন হত্যাকাণ্ড ঘটে চলেছে। জাতিসংঘের প্যালেস্টাইন উদ্বাস্তু বিষয়ক সংস্থা (UNRWA) জিএইচএফ পরিচালিত এই বিতরণ কেন্দ্রগুলোকে ‘মৃত্যুর ফাঁদ’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে।

জাতিসংঘের ত্রাণ প্রধান ফিলিপ লাজ্জারিনি বার্লিনে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “নতুন তৈরি তথাকথিত ত্রাণ ব্যবস্থা আসলে একটি জঘন্য অপকর্ম, যা হতাশ মানুষদের অসম্মান ও অবমাননার শিকার বানাচ্ছে। এটি একটি মৃত্যু ফাঁদ যা বাঁচানোর বদলে প্রতিনিয়ত জীবন কেড়ে নিচ্ছে।”

এদিকে, গাজায় ইসরায়েলের অবরোধের ফলে গত দুই মাস ধরে খাদ্য, পানি, জ্বালানি ও চিকিৎসা সরঞ্জামসহ সব ধরনের জরুরি সহায়তা কার্যত বন্ধ রয়েছে। এই অবস্থায় দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা প্রবল হয়ে ওঠে, যার প্রেক্ষিতে জিএইচএফ তাদের বিতরণ কর্মসূচি শুরু করে। কিন্তু শুরু থেকেই এই বিতরণ কেন্দ্রগুলো বিশৃঙ্খলা, দখলদারিত্ব এবং সহিংসতায় পরিণত হয়েছে।

আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ইসরায়েলি বাহিনী ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে হামলা করে সরাসরি মানবিক আইনের চরম লঙ্ঘন করছে। জাতিসংঘের মতে, জিএইচএফ-এর নামে পরিচালিত এই বিতরণব্যবস্থা একটি রাজনৈতিক ও সামরিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত পরিকল্পনা, যা মানবিক সহায়তার নামে নিরীহ জনগণকে নিশানা করছে। এখন পর্যন্ত জিএইচএফ-এর তত্ত্বাবধানে পরিচালিত ত্রাণ কেন্দ্রগুলোর আশেপাশে ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৪০০, আহতের সংখ্যা এক হাজারের বেশি।

এই ঘটনার পর আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো জোরালো প্রতিবাদ জানিয়েছে। ত্রাণ ও মানবাধিকারকর্মীরা বলছেন, গাজার জনগণ আজ এমন এক বাস্তবতার মুখোমুখি যেখানে সাহায্যের আশায় এগিয়ে গেলেও মৃত্যুই তাদের নিয়তি। যুদ্ধবিরতির কোনো সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা ছাড়াই, প্রতিদিন গাজার নাগরিক সমাজ ধ্বংস হয়ে চলেছে ইসরায়েলি সামরিক আগ্রাসনে।


হাসিনা-ইউনূস দ্বন্দ্বে ‘বলির পাঁঠা’ আমি: টিউলিপ

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ১০ ১৯:৪৪:৩০
হাসিনা-ইউনূস দ্বন্দ্বে ‘বলির পাঁঠা’ আমি: টিউলিপ
টিউলিপ সিদ্দিক। ছবি : সংগৃহীত

বাংলাদেশে দুর্নীতি মামলায় অভিযুক্ত হওয়ার পর নিজেকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার বলে দাবি করেছেন ব্রিটিশ পার্লামেন্ট সদস্য ও সাবেক ট্রেজারি মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিক। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগনি টিউলিপ জানান, মামলাটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন এবং তাকে ‘বলির পাঁঠা’ বানানো হয়েছে। বিষয়টি প্রথম গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে উঠে আসে।

৪২ বছর বয়সী লেবার পার্টির এই নেত্রী বলেন, গত সপ্তাহে এক সাংবাদিকের মাধ্যমে জানতে পারেন যে, ঢাকার পূর্বাচলে জমি বরাদ্দে প্রভাব খাটানোর অভিযোগে তাকে এবং আরও ২০ জনকে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযুক্ত করা হয়েছে। মামলার শুনানির তারিখ ১১ আগস্ট নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে এখনো তিনি কোনো আনুষ্ঠানিক সমন বা অভিযোগপত্র পাননি। তার ভাষায়, “আমি যেন এক অদ্ভুত দুঃস্বপ্নের মধ্যে আছি, যেখানে বিচার শুরু হতে যাচ্ছে কিন্তু আমি জানি না আমার বিরুদ্ধে আসল অভিযোগ কী।”

বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের মধ্যে কোনো প্রত্যর্পণ চুক্তি না থাকায় প্রয়োজনে তার অনুপস্থিতিতেই বিচার চলতে পারে।

টিউলিপ বলেন, গত বছরের জুলাইয়ে লেবার পার্টির নির্বাচনী জয়ের পর তিনি অর্থনৈতিক সচিব ও সিটি মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছিলেন। কিন্তু একই সময়ে বাংলাদেশে ছাত্র আন্দোলনের পর শেখ হাসিনার সরকার পতন ঘটে। ক্ষমতা পরিবর্তনের পর অর্থনীতিবিদ ও দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী মুহাম্মদ ইউনূস ক্ষমতায় এলে তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ আনা শুরু হয়।

প্রথমে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পে রাশিয়ার সঙ্গে চুক্তি থেকে ৫ বিলিয়ন ডলার আত্মসাতের অভিযোগ ওঠে, যা টিউলিপ ‘সম্পূর্ণ মিথ্যা’ বলে প্রত্যাখ্যান করেন। এরপর ২০০৪ সালে লন্ডনের কিংস ক্রসে একটি ফ্ল্যাট উপহার পাওয়ার অভিযোগও আসে, যা তিনি ব্যাখ্যা দিয়েছেন। নিরাপত্তাজনিত কারণে অন্যের মালিকানাধীন বাসায় থাকার বিষয়েও সমালোচনা হয়। তবে যুক্তরাজ্যের মন্ত্রীদের নীতিগত আচরণবিধি পর্যালোচনার স্বাধীন উপদেষ্টা স্যার লরি ম্যাগনাস তার আর্থিক বিষয়াদি পর্যালোচনা করে অভিযোগ থেকে তাকে মুক্তি দেন।

টিউলিপের অভিযোগ, বাংলাদেশের ক্ষমতা পরিবর্তনের পর তার বিরুদ্ধে ‘নোংরা রাজনীতি’ চালানো হচ্ছে। তার ভাষায়, “এটি মুহাম্মদ ইউনূস ও আমার খালা শেখ হাসিনার রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের ফল, আর আমি এর বলি হয়েছি। বাংলাদেশে যারা প্রকৃত অপরাধ করেছে, তাদের শাস্তি হওয়া উচিত, কিন্তু আমি তাদের মধ্যে নই।”

/আশিক


‘বর্ণবাদী’ বার্তা প্রচারে চাদের সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে ২০ বছরের কারাদণ্ড

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ১০ ১৯:২৭:৪৭
‘বর্ণবাদী’ বার্তা প্রচারে চাদের সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে ২০ বছরের কারাদণ্ড
চাদের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী সুচেস মাসরা। ছবি: সংগৃহীত

চাদের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধীদলীয় নেতা সুচেস মাসরাকে বিদেশি নাগরিকদের প্রতি বিদ্বেষপূর্ণ ও বর্ণবাদী বার্তা প্রচারের অভিযোগে ২০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। শনিবার রয়টার্সকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন তার আইনজীবী।

মাসরা দেশটির বর্তমান প্রেসিডেন্ট মহামত ইদ্রিস ডেবির কট্টর সমালোচক হিসেবে পরিচিত। চলতি বছরের মে মাসের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তিনি ডেবির একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন। এর আগে প্রায় পাঁচ মাস তিনি ডেবির অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

চাদের প্রসিকিউশন কর্তৃপক্ষ গত মে মাসে দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর মান্দাকাওতে সংঘটিত এক সহিংসতার ঘটনায় মাসরার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে। ওই সংঘর্ষে কয়েক ডজন মানুষের মৃত্যু হয়।

আদালত মাসরাকে ২০ বছরের কারাদণ্ডের পাশাপাশি ১ বিলিয়ন সিএফএ ফ্রাঙ্ক (প্রায় ১.৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) জরিমানা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। তার আইনজীবী জানান, তারা এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার পরিকল্পনা করছেন।

/আশিক


গাজা সিটি দখলকে কেন্দ্র করে ইসরায়েলের বিভিন্ন শহরে  বিক্ষোভ

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ১০ ১৭:০১:৩৬
গাজা সিটি দখলকে কেন্দ্র করে ইসরায়েলের বিভিন্ন শহরে  বিক্ষোভ
গাজায় সামরিক অভিযান বাড়ানো পরিকল্পনার প্রতিবাদে বিক্ষোভে অংশ নেন হাজারো ইসরায়েলি। ছবি: বিবিসি

ইসরায়েলের গাজা উপত্যকা দখল নেওয়ার পরিকল্পনা নিয়ে দেশটিতে ব্যাপক বিরোধিতা ও বিক্ষোভ চলছে। রোববার (১০ আগস্ট) বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, হাজার হাজার মানুষ ইসরায়েলের বিভিন্ন শহরের রাস্তায় নেমে আসেন গাজায় সামরিক অভিযান বাড়িয়ে ‘গাজা সিটি’ দখলের পরিকল্পনার প্রতিবাদে। গত শুক্রবার ইসরায়েলের নিরাপত্তা মন্ত্রীসভা গাজায় যুদ্ধ বন্ধের জন্য পাঁচটি নীতি অনুমোদন দেয়, যার মধ্যে রয়েছে গাজা শহরের ‘নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ’। দেশটির সেনাবাহিনীও গাজা সিটি দখলের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে।

দ্য টাইমস অব ইসরায়েলের রিপোর্ট অনুযায়ী, নিরাপত্তা মন্ত্রিসভার বৈঠকে গাজা শহর দখলের পরিকল্পনা পাস হয়েছে। বর্তমানে গাজায় ৫০ জন জিম্মির মধ্যে আনুমানিক ২০ জন জীবিত রয়েছে বলে ধারণা করা হয়। বিক্ষোভকারীরা আশঙ্কা প্রকাশ করছেন, গাজা সিটি দখল করলে জিম্মিদের জীবন বিপদের মুখে পড়বে। তারা সরকারের প্রতি জিম্মিদের মুক্তির আহ্বান জানাচ্ছেন।

গাজা দখলের পরিকল্পনার খবর প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে জাতিসংঘসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। তবে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, সামরিক অভিযান তাদের জিম্মিদের মুক্ত করতে সাহায্য করবে।

জিম্মিদের পরিবারের এক প্রতিনিধি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে বলেন, গাজায় সামরিক অভিযান যুদ্ধকে আরও বিস্তৃত করবে এবং জিম্মিদের বিপদ বাড়াবে। ইসরায়েলের সাধারণ জনগণও তাদের জীবন ঝুঁকিতে ফেলতে চায় না। জেরুজালেমে বিক্ষোভে অংশ নেওয়া এক ব্যক্তি বিবিসিকে জানান, যুদ্ধ বন্ধ করতে হবে কারণ তাদের জিম্মিরা গাজায় বন্দি ও মৃত্যুর মুখে।

সেনাসদস্য ম্যাক্স ক্রেশ বলেন, তিনি শুরুতে গাজায় যুদ্ধের অংশ ছিলেন, তবে এখন রাজনৈতিক কারণে যুদ্ধে যেতে চান না। তিনি বলেন, নেতানিয়াহুর যুদ্ধ তাদের বিপদে ফেলছে ও নিরীহ ফিলিস্তিনিদের ক্ষতিগ্রস্ত করছে।

তেল আবিবে আইডিএফ সদরদপ্তরের কাছে বিক্ষোভ হয়েছে, যেখানে জিম্মি ও সৈন্য পরিবারের সদস্যরা সামরিক অভিযানের বিস্তারের প্রতিবাদ জানান। একজন জিম্মির মা দেশজুড়ে ধর্মঘট ডাকলেও প্রধান শ্রমিক ইউনিয়ন তা সমর্থন করবে না।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় ইসরায়েলে ১২০০ জন নিহত ও ২৫১ জনকে জিম্মি নেওয়া হয়। এর পর গাজায় ইসরায়েলের সর্বাত্মক হামলা শুরু হয়, যা প্রায় দুই বছর ধরে চলছে। এতে গাজায় অন্তত ৬১ হাজার ৩০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। উপত্যকার প্রায় ২১ লাখ বাসিন্দার অধিকাংশ বাস্তুচ্যুত।

জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনার ফলকার টুর্ক শনিবার বলেন, গাজা দখল পরিকল্পনা অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে, এটি আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থি। ফিলিস্তিন প্রেসিডেন্ট কার্যালয় নেতানিয়াহুর পরিকল্পনাকে গণহত্যা ও পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড আখ্যা দিয়েছে। হামাস হুঁশিয়ারি দিয়েছে, গাজা দখলে ইসরায়েলকে বড় মূল্য দিতে হবে এবং বাকি জিম্মিদেরও হারাতে হবে।

তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে এই পরিকল্পনার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারও ইসরায়েলের সিদ্ধান্তকে ভুল বলে উল্লেখ করেছেন। জার্মানি গাজায় ব্যবহৃত অস্ত্র রপ্তানি স্থগিত করেছে, চীন উদ্বিগ্নতা প্রকাশ করেছে।

সৌদি আরব, অস্ট্রেলিয়া, ফিনল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস এবং ইসরায়েলের বিরোধীদলীয় নেতা ইয়ার লাপিদ নেতানিয়াহুর পরিকল্পনার নিন্দা জানিয়েছেন। মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স গাজা দখলের বিষয়ে মন্তব্য করতে অনিচ্ছুক ছিলেন।

গাজা দখলের ঘোষণা আসার পর গত শনিবার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ জরুরি বৈঠকের সিদ্ধান্ত নেয়। ১৫ সদস্যের পরিষদ থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও পানামা ছাড়া বাকি সবাই বৈঠকের আহ্বান জানায়। জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের মুখপাত্র বলেন, তিনি এই পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বিগ্ন।

/আশিক


ভূপাতিত সু-২৭: ইউক্রেনের আকাশে রাশিয়ার বার্তা

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ১০ ১৩:০৯:২৮
ভূপাতিত সু-২৭: ইউক্রেনের আকাশে রাশিয়ার বার্তা
ছবি: সংগৃহীত

রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতের সর্বশেষ উত্তেজনায়, রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে যে তাদের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ইউক্রেনীয় বিমান বাহিনীর একটি আধুনিক সু-২৭ যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে। শনিবার মস্কো থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়, জাপোরিঝিয়া অঞ্চলে এই বিমানটি গুলি করে নামানো হয়।

রাশিয়ার পক্ষ থেকে আরও দাবি করা হয়েছে, একই দিনে তারা দুটি গাইডেড এরিয়াল বোমা, মার্কিন-নির্মিত হিমারস মাল্টিপল লঞ্চ রকেট সিস্টেম থেকে ছোড়া দুটি রকেট এবং ৪৫৭টি ইউক্রেনীয় ড্রোন ধ্বংস করেছে। মস্কোর মতে, এটি তাদের প্রতিরক্ষা সক্ষমতার স্পষ্ট প্রমাণ।

অন্যদিকে, ইউক্রেনীয় বিমান বাহিনী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানিয়েছে, শুক্রবার রাত থেকে শনিবার ভোর পর্যন্ত তারা রাশিয়ার একটি ইস্কান্দার-কে ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা প্রতিহত করেছে এবং অন্তত ৩১টি রুশ ড্রোন ধ্বংস করেছে। কিয়েভের মতে, এসব আক্রমণ রাশিয়ার অব্যাহত চাপের অংশ, যা ফ্রন্টলাইন ও বেসামরিক এলাকায় সমানভাবে প্রভাব ফেলছে।

বর্তমানে জাপোরিঝিয়া অঞ্চলের প্রায় ৭০ শতাংশ এলাকা রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ভূপাতিত সু-২৭ বিমানের পাইলটের অবস্থান ও অবস্থা সম্পর্কে এখনো কিছু জানা যায়নি।

উল্লেখযোগ্য যে, ২০২২ সালে রাশিয়া খেরসন, দোনেৎস্ক, লুহানস্ক এবং জাপোরিঝিয়া অঞ্চলে বিতর্কিত গণভোটের মাধ্যমে এসব এলাকা নিজেদের সঙ্গে যুক্ত করে। ইউক্রেন ও পশ্চিমা দেশগুলো এই গণভোটকে অবৈধ ঘোষণা করে, যা এখনো বড় রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক বিতর্কের বিষয়।

এদিকে, যুদ্ধ থামাতে নতুন উদ্যোগ হিসেবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আগামী ১৫ আগস্ট রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করবেন বলে জানা গেছে। কিছু পশ্চিমা গণমাধ্যমের দাবি, আলোচনায় ইউক্রেনের কিছু ভূখণ্ড বিনিময়ের প্রস্তাব থাকতে পারে। তবে এ বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক নিশ্চয়তা নেই।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এমন প্রস্তাবের তীব্র বিরোধিতা করে বলেছেন, “ইউক্রেনের এক ইঞ্চি জমিও রাশিয়ার কাছে হস্তান্তর করা হবে না।” তাঁর এই বক্তব্য শুধু রাশিয়ার প্রতি নয়, বরং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছেও স্পষ্ট বার্তা সার্বভৌমত্ব নিয়ে ইউক্রেন কোনো আপস করবে না।


দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের শীতলতা কাটিয়ে উঠতে বাংলাদেশের ও ভারতের পদক্ষেপ

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ১০ ০৯:৫৩:৩০
দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের শীতলতা কাটিয়ে উঠতে বাংলাদেশের ও ভারতের পদক্ষেপ
ছবিঃ সংগৃহীত

গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান এবং বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ঘটে যাওয়া গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের পর থেকে বাংলাদেশ ও ভারতের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক তেমন অগ্রগতি করতে পারেনি। প্রায় এক বছর পার হলেও দুই দেশের সম্পর্ক প্রত্যাশামতো স্থিতিশীল ও উন্নত হয়নি। তবে কূটনৈতিক মহলে এবং দিল্লির বিশেষজ্ঞদের মধ্যে বিশ্বাস আছে, যে এই সম্পর্ক আবারও পুনরুজ্জীবিত হতে পারে যদি দুই দেশ নিজেদের বিশেষ প্রয়োজনগুলোকে যথাযথ গুরুত্ব দিয়ে একে অপরের অবস্থান বুঝতে পারে।

ভারতের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো নিরাপত্তার নিশ্চয়তা, আর বাংলাদেশের জন্য তিস্তা নদীর পানির ন্যায্য ভাগাভাগি অন্যতম স্পর্শকাতর ইস্যু। এই দুই বিষয় যদি আন্তরিকতার সঙ্গে সমাধানের পথে এগোনো হয়, তাহলে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নতুন করে গড়ে উঠতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

পররাষ্ট্রনীতির বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শ্রীরাধা দত্ত বলেন, বাংলাদেশের সামাজিক মাধ্যম ও বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে প্রচলিত অ্যান্টি-ইন্ডিয়া ভাবনা মূলত তরুণ সমাজের মধ্যে বিদ্যমান দূরত্ব ও অসন্তোষ থেকে সৃষ্টি। এটি দূর করা কঠিন হলেও অসম্ভব নয়। বিশেষ করে পানি বিষয়ে ন্যায্য সমঝোতা ঘটানো গেলে সম্পর্কের মধ্যে ইতিবাচক পরিবর্তন আসতে পারে।

তিনি আরও বলেন, “ভারত কেন তিস্তা নদীর পানির ভাগাভাগি নিয়ে এগিয়ে আসেনি এবং কেন আলোচনায় আগ্রহ দেখায়নি তা একটি বড় প্রশ্ন। চীনের একটি প্রস্তাবও আমরা প্রত্যাখ্যান করেছি, কিন্তু আমাদের নিজ উদ্যোগ দেখানো হয়নি।” এ অবস্থায় সম্পর্কের উন্নয়নে আন্তরিক পদক্ষেপ জরুরি।

অন্যদিকে অর্থনৈতিক স্বার্থ এবং বাণিজ্যিক বাস্তবতা অনেক বিশেষজ্ঞের মতে, দুই প্রতিবেশীর পুনর্মিলনের সবচেয়ে শক্তিশালী হাতিয়ার হতে পারে। আগামী বছর বাংলাদেশ এলডিসি থেকে উন্নয়নশীল দেশের পর্যায়ে উত্তরণ করবে। তবে এ সঙ্গে কিছু পুরানো বাণিজ্য সুবিধা বন্ধ হওয়ার কারণে নতুন চ্যালেঞ্জ সামনে আসছে। এই সময় ভারতের সহযোগিতা বাংলাদেশের জন্য অপরিহার্য বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

অর্থনীতিবিদ প্রবীর দে বলেন, ২০২৬ সালে বাংলাদেশের উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে উন্নীত হওয়ার পর অর্থনীতির দ্রুত বিকাশের জন্য ‘থ্রাস্ট’ প্রয়োজন, যা ভারত ছাড়া সম্ভব নয়। তিনি মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দরের উদাহরণ দিয়ে বলেন, এই বন্দর থেকে ৬৫ শতাংশ কার্গো ভারতের পোর্ট থেকে আসবে, যা অর্থনৈতিক সংযোগের প্রমাণ।

প্রবীর দে আরও বলেন, “অর্থনৈতিক ও যোগাযোগ খাতে ভারতের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা থাকলে সম্পর্কের শীতলতা কাটিয়ে উঠা সম্ভব।” দিল্লির অনেক বিশ্লেষকও আশাবাদী যে, দুই দেশের প্রয়োজন ও নির্ভরশীলতা একে অপরকে পুনরায় কাছাকাছি আনবে।

-শরিফুল


ভারত-আমেরিকা বাণিজ্যে শুল্ক যুদ্ধে নতুন ধোঁয়াশা

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ১০ ০৮:৫০:৪৩
ভারত-আমেরিকা বাণিজ্যে শুল্ক যুদ্ধে নতুন ধোঁয়াশা
ছবিঃ সংগৃহীত

আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতের আমদানিকৃত পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন, যা ১ আগস্ট থেকে কার্যকর হয়েছে। নতুন এই শুল্ক নীতি নিয়ে ওয়াশিংটন ও দিল্লির মধ্যে তীব্র দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছে। আমেরিকার পক্ষ থেকে শুল্ক কমানোর শর্ত হিসেবে ভারতের রাশিয়ার তেল আমদানি বন্ধ করার দাবি করা হয়েছে, কারণ ট্রাম্প মনে করেন এই তেল আমদানি মোদি সরকারের বিরুদ্ধে একটি বড় সমস্যা। তবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এই শুল্ক আরোপকে অযৌক্তিক এবং আমেরিকার দ্বিমুখী নীতির প্রকাশ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

একসময় মোদি ও ট্রাম্পের মধ্যে গড়ে ওঠা বন্ধুত্ব এবং তাদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ককে আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক সাফল্য হিসেবে ধরা হত। হিউস্টনের ‘হাউডি মোদি’ এবং আহমেদাবাদের ‘নমস্তে ট্রাম্প’ অনুষ্ঠানগুলি ব্যাপক সাড়া ফেলেছিল। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে বাণিজ্য শুল্ক আরোপের কারণে সেই সম্পর্ক এখন কঠোর বাস্তবতার মুখোমুখি। ভারতের একটি বড় ভুল ছিল ট্রাম্পের সঙ্গে ব্যক্তিগত বন্ধুত্বকে অর্থনৈতিক স্বার্থের ওপর প্রাধান্য দেয়া। যদিও মোদি ট্রাম্পকে ‘মহান বন্ধু’ বলতেন, ট্রাম্প মূলত ব্যবসায়িক স্বার্থে বন্ধুত্বকে গুরুত্ব দেন, যা ভারতের বুঝতে সময় লেগেছে।

ভারতের রাশিয়ার ওপর তেল আমদানির নির্ভরতা ট্রাম্পের বিরক্তির কারণ। মোট তেলের প্রায় ৪০ শতাংশ রাশিয়া থেকে আমদানি করে ভারত, যা ইউক্রেন-রাশিয়া সংকটের প্রেক্ষাপটে আমেরিকার সঙ্গে সম্পর্কের জটিলতা তৈরি করেছে। ট্রাম্প এই তেল আমদানিকে পুতিনের পক্ষে সমর্থন হিসেবে দেখেন এবং ভারতের ওপর বিশ্বাসঘাতকতার অভিযোগ তুলেছেন। ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপকে তিনি শুধু অর্থনৈতিক সিদ্ধান্ত নয়, বরং ভারতের প্রতি সতর্কবার্তা হিসেবে দেখেন। তাছাড়া, ট্রাম্পের পাকিস্তানপন্থী অবস্থান ও জ্বালানি সহযোগিতা ভারতের জন্য কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জ হিসেবে কাজ করেছে।


গাজা দখল রুখতে ওআইসির জরুরি সভার ঘোষণা

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ০৯ ২০:৪২:২৯
গাজা দখল রুখতে ওআইসির জরুরি সভার ঘোষণা
ওআইসিভুক্ত দেশগুলোর পতাকা। ফাইল ছবি

ইসরাইলের গাজা দখলের পরিকল্পনা প্রতিহত করতে জরুরি বৈঠক আহ্বানের ঘোষণা দিয়েছে ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি)। শনিবার তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান এ তথ্য জানান।

মিশরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাদর আবদেলাত্তির সঙ্গে কায়রোতে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ফিদান বলেন, ওআইসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে এই জরুরি বৈঠক ডাকার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

ইসরাইলের পরিকল্পনাকে সরাসরি নাকচ করে তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, গাজা দখলের চেষ্টা ইসরাইলের সম্প্রসারণবাদী ও গণহত্যামূলক নীতির নতুন ধাপ। তিনি জানান, তুরস্ক ও মিশর এই পরিকল্পনার বিরুদ্ধে একসঙ্গে অবস্থান নেবে।

মানবিক সহায়তার প্রসঙ্গে ফিদান বলেন, তুরস্ক এ পর্যন্ত গাজার জন্য প্রায় ১ লাখ ২ হাজার টন সহায়তা পাঠিয়েছে। এই সহায়তা পৌঁছাতে সহযোগিতা করার জন্য তিনি মিশরকে ধন্যবাদ জানান।

২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজায় ইসরাইলের সামরিক অভিযান শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত ৬১ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। অবরুদ্ধ এ এলাকায় ধ্বংসযজ্ঞের পাশাপাশি ক্ষুধা ও অনাহারে বহু মানুষের মৃত্যু ঘটেছে।

গত নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্তের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। একই সময়ে গণহত্যার অভিযোগে ইসরাইলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) মামলাও চলছে।

ফিলিস্তিন ইস্যুতে আঙ্কারার অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে ফিদান বলেন, ফিলিস্তিন ফিলিস্তিনিদেরই ভূমি, এবং তাদের উচ্ছেদের যেকোনো প্রচেষ্টা অবৈধ ও ব্যর্থ হবে। তিনি আরও উল্লেখ করেন, তুরস্ক আন্তর্জাতিক আইন ও মানবিক নীতির ভিত্তিতে ফিলিস্তিনের পাশে থাকবে।

/আশিক


মাত্র ১৯ দিন হাতে, অর্থনৈতিক আঘাত এড়ানোর উপায় খুঁজছে ভারত

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ০৯ ২০:২৫:৪১
মাত্র ১৯ দিন হাতে, অর্থনৈতিক আঘাত এড়ানোর উপায় খুঁজছে ভারত
ছবি: সংগৃহীত

রাশিয়া থেকে তেল কেনার জেরে ভারতের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক বসানোর ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বুধবার (৬ আগস্ট) ঘোষিত এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে ২৭ আগস্ট থেকে। এর আগে তিন সপ্তাহ আগে ট্রাম্প ২৫ শতাংশ শুল্ক বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছিলেন। ফলে ভারতীয় পণ্যের ওপর মোট শুল্ক দাঁড়াবে ৫০ শতাংশ।

ভারত সরকার এ পদক্ষেপকে ‘অন্যায়’ ও ‘অযৌক্তিক’ আখ্যা দিয়েছে। রপ্তানিকারকদের মতে, এত উচ্চ হারে শুল্ক বৃদ্ধিতে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়বে। বেশির ভাগ রপ্তানিকারক জানান, তারা সর্বোচ্চ ১০-১৫ শতাংশ শুল্কবৃদ্ধি সহ্য করতে পারেন, কিন্তু ৫০ শতাংশ বৃদ্ধি ‘পথে বসার’ সমান।

রপ্তানি ও অর্থনীতিতে সম্ভাব্য প্রভাববিশ্লেষকদের মতে, সাম্প্রতিক সময়ে ভারতের রপ্তানি খাতে এটাই সবচেয়ে বড় ধাক্কা। বর্তমানে ভারত বছরে প্রায় ৮৭ বিলিয়ন ডলারের পণ্য যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করে, যা দেশের মোট রপ্তানির ১৮ শতাংশ। এ থেকে ভারতের জিডিপির প্রায় ২.২ শতাংশ আয় হয়। আগে ২৫ শতাংশ শুল্কে জিডিপি ০.২ থেকে ০.৪ শতাংশ হ্রাস পাওয়ার আশঙ্কা ছিল, কিন্তু ৫০ শতাংশ শুল্ক কার্যকর হলে ক্ষতির মাত্রা আরও বাড়বে।

যদিও ইলেকট্রনিকস ও ফার্মাসিউটিক্যালস আপাতত শুল্কমুক্ত থাকছে, তবে টেক্সটাইল ও গয়নার মতো শ্রমনিবিড় খাতগুলো মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তামিলনাডুর তিরুপুর ও গুজরাটের সুরাটের বহু কারখানায় কর্মসংস্থান হুমকিতে পড়তে পারে।

কৌশলগত পরিবর্তনের সম্ভাবনাকিছু পর্যবেক্ষক মনে করছেন, এই পরিস্থিতি ভারতের জন্য কৌশলগত অংশীদারিত্ব পুনর্বিবেচনার সুযোগ তৈরি করেছে। গ্লোবাল ট্রেড রিসার্চ ইনিশিয়েটিভের অজয় শ্রীবাস্তব মনে করেন, রাশিয়া ও চীনের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হতে পারে। এ প্রেক্ষাপটে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আসন্ন সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন সম্মেলনে যোগদানকে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

কিন্তু কিছু বিশ্লেষকের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের চাপ মোকাবিলায় ভারত হয়তো রাশিয়ার সঙ্গে তেল বাণিজ্যে ধীরে ধীরে সীমিতকরণে যাবে। যদিও মোদি-পুতিন টেলিফোন আলাপে দুই দেশের ‘বিশেষ সম্পর্ক’ বজায় রাখার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত হয়েছে এবং পুতিনের ভারত সফরের প্রস্তুতিও চলছে।

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি অনিশ্চিতশুল্কবৃদ্ধির মধ্যেও যুক্তরাষ্ট্র-ভারতের সম্ভাব্য বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনা বন্ধ হয়নি। এ মাসের শেষ দিকে মার্কিন প্রতিনিধিদল দিল্লি সফর করবে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এই পরিস্থিতিতে চুক্তি টিকিয়ে রাখতে হলে ভারতকে দক্ষ কূটনীতির পরিচয় দিতে হবে। কৃষি ও দুগ্ধখাত নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রবেশাধিকারের দাবিই মূল জটিলতা তৈরি করছে।

পাল্টা শুল্কের সম্ভাবনাকিছু রাজনৈতিক নেতা ও বিশ্লেষক যুক্তরাষ্ট্রের ওপর পাল্টা শুল্ক আরোপের পরামর্শ দিচ্ছেন। শশী থারুরের মতে, আত্মমর্যাদাসম্পন্ন দেশ হিসেবে ভারতেরও সমপরিমাণ শুল্ক বসানো উচিত। যদিও বার্কলেস রিসার্চ মনে করে, ভারতের এমন পদক্ষেপ নেওয়ার সম্ভাবনা কম, তবে একেবারে অসম্ভব নয়।

ভারতের রপ্তানিকারকরা এখন সরকারের কাছ থেকে জরুরি প্রণোদনা ও সহায়তার আশায় আছে। নোমুরা বলছে, এত দিন যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা এখন যথেষ্ট নয়।

সূত্র : বিবিসি বাংলা


গাজায় তীব্র খাদ্য সংকটের কারণে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ০৯ ১২:৩৬:২৯
গাজায় তীব্র খাদ্য সংকটের কারণে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে
গাজায় অনাহার এবং অপুষ্টিতে মারা যাচ্ছে বহু মানুষ/ফাইল ছবি: এএফপি

গাজার দীর্ঘদিনের সংঘাতের মধ্যেই তীব্র অনাহারে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আরও চার জনের মৃত্যু হয়েছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ক্ষুধাজনিত মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০১ জনে। সেখানে হাজার হাজার মানুষ অনাহার ও অপুষ্টিতে ভুগছে, বিশেষ করে নারীদের ও শিশুদের ক্ষতি সবচেয়ে বেশি।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস ইসরায়েলের সীমান্তে আকস্মিক হামলা চালায়। এর প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েল গাজার ওপর ব্যাপক পাল্টা আক্রমণ শুরু করে। এই সংঘাতের ফলস্বরূপ, এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ৬১,৩৩০ ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১,৫২,৩৫৯ জন আহত হয়েছে।

অন্যদিকে, ইসরায়েলের নিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রিসভা গাজা সিটি দখলের পরিকল্পনা অনুমোদন করেছে। গাজা সিটি নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার জন্য ইসরায়েলি সেনাবাহিনী প্রস্তুতি নিচ্ছে। মন্ত্রিসভা যুদ্ধ শেষ করার জন্য পাঁচটি নীতি গৃহীত করেছে, যার মধ্যে একটি হলো হামাস বা ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ নয় এমন বিকল্প বেসামরিক সরকার গঠন।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর এই পদক্ষেপ দেশটির ভেতরে বিরোধিতার মুখে পড়েছে। হামাসের হাতে আটক থাকা জিম্মিদের পরিবার এই পরিকল্পনার কারণে তাদের জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন। এছাড়া এই সিদ্ধান্তের ফলে গাজার বেসামরিক জনগণের প্রাণহানির আশঙ্কাও বেড়েছে।

দেশটির সামরিক নেতৃত্ব ও বিরোধী দলও সতর্ক করে দিয়েছে যে, গাজা সিটি দখল নিয়ে এই পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক ক্ষোভ বাড়াতে পারে এবং ইসরায়েলকে আরো বিচ্ছিন্ন করতে পারে।

নেতানিয়াহুর কার্যালয় থেকে প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, যুদ্ধক্ষেত্রের বাইরে থাকা বেসামরিক জনগণের মানবিক সহায়তার সময় আইডিএফ (ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী) গাজা শহরের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। এই পরিকল্পনা মন্ত্রিসভার সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে অনুমোদিত হয়েছে।

/আশিক

পাঠকের মতামত: