ইরান ইসরাইলের যুদ্ধ

আল উদেইদ ঘাঁটি: মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন উপস্থিতির হৃদপিণ্ডে আঘাত?

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুন ২৪ ১৬:০৬:১৪
আল উদেইদ ঘাঁটি: মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন উপস্থিতির হৃদপিণ্ডে আঘাত?

মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও বৃহৎ মার্কিন সামরিক ঘাঁটি ‘আল উদেইদ’-এ ইরান সম্প্রতি সরাসরি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। কাতারে অবস্থিত এই ঘাঁটিটি শুধু যুক্তরাষ্ট্রের নয়, বরং পুরো মধ্যপ্রাচ্যের সামরিক কৌশলের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে বিবেচিত হয়। এখান থেকেই পরিচালিত হয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নানা বিমান ও যুদ্ধ মিশন।

সোমবারের হামলায় ইরান একটি স্পষ্ট বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করেছে বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকেরা। কারণ আল উদেইদ ঘাঁটি হলো যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট্রাল কমান্ডের আঞ্চলিক সদর দপ্তর। বর্তমানে এখানে প্রায় ১০ হাজার মার্কিন সেনা অবস্থান করছেন এবং রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান, ড্রোন, বোমারু ও জ্বালানি সরবরাহকারী ট্যাংকার বিমানসহ নানা আধুনিক সামরিক উপাদান।

২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বরের সন্ত্রাসী হামলার পর যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তানে যে সামরিক অভিযান শুরু করেছিল, তার একটি প্রধান ভিত্তি ছিল এই ঘাঁটি। পরবর্তী দুই দশক ধরে ইরাক, আফগানিস্তান ও সিরিয়ায় পরিচালিত বহু সামরিক মিশনের মূল সমন্বয়কেন্দ্র হয়ে উঠেছে এটি।

ঘাঁটির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ হলো "কোম্বাইন্ড এয়ার অপারেশন্স সেন্টার" বা সিএওসি, যা মধ্যপ্রাচ্য থেকে শুরু করে উত্তর-পূর্ব আফ্রিকা এবং দক্ষিণ এশিয়ার ২১টি দেশের ওপর বিমান অভিযানের পরিকল্পনা ও নজরদারি করে থাকে।

ঘাঁটিটির নির্মাণ শুরু হয়েছিল কাতারের উদ্যোগে ১৯৯০-এর দশকে। ১৯৯৬ সালে নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রকে সেখানে সামরিক অবস্থান নিতে আহ্বান জানায় কাতার। সেই থেকে শুরু—আজ পর্যন্ত দেশটি এই ঘাঁটিতে প্রায় ৮ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে। এটি শুধুমাত্র যুক্তরাষ্ট্র নয়, বরং কাতারের নিজস্ব সেনাবাহিনী ও ব্রিটিশ রয়্যাল এয়ার ফোর্স-এর ব্যবহারের জন্যও উন্মুক্ত।

২০১৩ সালে মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী চাক হ্যাগেল ঘাঁটির অবস্থান আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ্যে আনেন, যদিও এর আগে পর্যন্ত এটি অত্যন্ত গোপনীয় ছিল। আর ২০২৫ সালের মে মাসে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প উপসাগরীয় সফরের অংশ হিসেবে এই ঘাঁটি পরিদর্শন করেন, যেখানে তিনি সেনাদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলেন ও মনোবল বাড়ানোর উদ্যোগ নেন।

তবে সম্প্রতি ইরানের এই হামলার পর ঘাঁটিটির নিরাপত্তা ও ভবিষ্যৎ ব্যবহার নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। যদিও যুক্তরাষ্ট্র এই ঘাঁটির প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা অত্যন্ত উন্নত ও শক্তিশালী বলে দাবি করে থাকে, তথাপি এই হামলা মধ্যপ্রাচ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার নতুন অধ্যায় শুরু করতে পারে বলে মনে করছেন আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বিশ্লেষকেরা।

সূত্র : দ্য নিউইয়র্ক টাইমস।

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

আমেরযত কাহিনি

আমেরযত কাহিনি

নিজস্ব প্রতিবেদক: স্বাদ, গন্ধ ও পুষ্টিগুণে পরিপূর্ণ ‘আম’ শুধু একটি ফল নয়, বরং এটি ইতিহাস, সংস্কৃতি ও অর্থনীতিতে গভীরভাবে প্রোথিত এক... বিস্তারিত