ইরান ইসরাইলের যুদ্ধ
যুক্তরাষ্ট্র এগোলে আগুন জ্বলবে চারদিকে—ইরানপন্থী মিলিশিয়ার হুঁশিয়ারি

ইরান-ইসরায়েল চলমান সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি অংশ নিলে মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ঘাঁটিগুলোকে লক্ষ্য করে হামলা চালানো হবে—এমনই হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে ইরান-সমর্থিত ইরাকি শিয়া সশস্ত্র গোষ্ঠী কাতায়েব হিজবুল্লাহ।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) এক আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে সংগঠনটির নিরাপত্তা প্রধান আবু আলী আল-আস্কারি বলেন, “আমরা আবারও স্পষ্ট করে জানিয়ে দিচ্ছি—যদি যুক্তরাষ্ট্র এই যুদ্ধে জড়ায়, তাহলে ট্রাম্প তার ‘ট্রিলিয়ন ডলার আদায়ের স্বপ্ন’ চিরতরে হারাবেন।”
আল-আস্কারির ভাষ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ‘অপারেশনাল পরিকল্পনা’ ইতোমধ্যেই প্রস্তুত রাখা হয়েছে। তাঁর হুঁশিয়ারি, “মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সব সামরিক ঘাঁটি শিকারির লক্ষ্যবস্তু হয়ে উঠবে। আকাশপথেও তাদের জন্য অপেক্ষা করছে অপ্রত্যাশিত চমক।”
তিনি বলেন, যুদ্ধ জিইয়ে থাকলে কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ হরমুজ প্রণালি ও বাব-আল-মানদেব পথ বন্ধ করে দেওয়া হবে। পাশাপাশি, লোহিত সাগরের তীরবর্তী গুরুত্বপূর্ণ তেলবন্দরগুলোও অচল হয়ে পড়বে বলে দাবি করেন তিনি।
এই হুমকি এমন এক সময় এলো, যখন মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি জড়িত হওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে জোর আলোচনা চলছে। হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন—যুক্তরাষ্ট্র ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে সামরিকভাবে সরাসরি অংশ নেবে কি না।
এদিকে সাম্প্রতিক ইতিহাসে যুক্তরাষ্ট্র ও কাতায়েব হিজবুল্লাহর মধ্যে উত্তেজনার নজিরও রয়েছে। ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে জর্দান-সিরিয়া সীমান্তবর্তী মার্কিন সামরিক ঘাঁটি ‘টাওয়ার ২২’-এ চালানো ড্রোন হামলায় তিন মার্কিন সেনা নিহত এবং ৩০ জনের বেশি আহত হন। এই হামলার দায় স্বীকার করে ‘ইসলামিক রেজিস্ট্যান্স ইন ইরাক’ নামের একটি ছাতার নিচে থাকা একাধিক ইরানপন্থী গোষ্ঠী।
এছাড়া, টাওয়ার ২২-এর নিকটবর্তী আল-রুকবান শরণার্থীশিবিরও হামলার লক্ষ্যে পরিণত হয়। এসব হামলার পেছনে ইরানপন্থী গোষ্ঠীগুলোর সামরিক সমন্বয় এবং ‘প্রতিরোধ’ নীতিকে কেন্দ্র করে নতুন যুদ্ধকৌশল ব্যবহারের ইঙ্গিত স্পষ্ট।
বিশ্লেষকরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি এই যুদ্ধে জড়ালে শুধু ইসরায়েল-ইরান সংঘাত নয়, বরং গোটা মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে একটি বিস্তৃত যুদ্ধের সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে। কাতায়েব হিজবুল্লাহর মতো গোষ্ঠীগুলো তেহরানের সমর্থনে অঞ্চলজুড়ে অস্থিরতা বাড়ানোর জন্য সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে পারে, যার প্রভাব পড়বে সাগরপথ, জ্বালানি বাজার ও বৈশ্বিক অর্থনীতিতেও।
—আশিক নিউজ ডেস্ক
পাঠকের মতামত:
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- ভবিষ্যতের গণতন্ত্র না পুরাতনের পুনরাবৃত্তি? ইউনুস-তারেক সাক্ষাৎ পর্যালোচনা
- জুলাই চার্টার ও জাতীয় ঐকমত্য: জামায়াতের অনুপস্থিতি কতটা যুক্তিসঙ্গত?
- রিজার্ভের দাপট: বিদ্যুৎ খাতের ১৪ কোম্পানি বিনিয়োগের নতুন ঠিকানা
- বিশ্ববিদ্যালয় সংকট, বাজেট বৈষম্য ও শিক্ষায় ন্যায্যতার দাবি
- ইউনূস-তারেক ঐতিহাসিক ও সফল বৈঠক: সংস্কার, একতা ও ন্যায়বিচার— এই তিন স্তম্ভে গড়ে উঠুক নতুন বাংলাদেশ
- উৎসব: ঈদের পর্দায় অনবদ্য এক উদযাপন
- Clash of Civilizations: মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধের নতুন রূপরেখা
- মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন ভূ-রাজনৈতিক আধিপত্যের নতুন কৌশল: চীন ও রাশিয়া কী করবে?
- লন্ডনে তারেক-ইউনূসের বৈঠকের পরে পর পর ২টি স্ট্যাটাসে কি বললেন পিনাকী?
- ইসরায়েলে ইরানি মিসাইল, নিহত অন্তত ৭
- তুরস্ক, সৌদি, ইরান-পাকিস্তানের হাতে ‘ইসলামিক আর্মি’ গঠন! কি হতে যাচ্ছে?
- ভোক্তার কষ্ট বুঝছে সরকার:বাণিজ্য উপদেষ্টা
- ইসরায়েল নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে রাশিয়ার সতর্কবার্তা
- ২৮ জুন ঢাকায় জনতার ঢল: সোহরাওয়ার্দী উদ্যান হবে মহাসমুদ্র!
- নির্বাচিত নারী, অলঙ্কার নয়: গণতন্ত্রে নারীর শক্তির সন্ধান