ইরান-ইসরায়েল সংঘাত

হরমুজ প্রণালি বন্ধ করার ফলাফল কি হতে পারে?

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুন ১৫ ১৭:১৫:৪০
হরমুজ প্রণালি বন্ধ করার ফলাফল কি হতে পারে?

ইরান যদি পারস্য উপসাগরের গুরুত্বপূর্ণ সামুদ্রিক বাণিজ্যপথ হরমুজ প্রণালি বন্ধ করে দেয়, তবে বৈশ্বিক জ্বালানি বাজারে ভয়াবহ সংকট দেখা দিতে পারে বলে সতর্ক করেছেন খ্যাতিমান জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ও যুক্তরাষ্ট্রের হিউস্টন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এড হির্স।

সম্প্রতি ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম আইআরআইএনএন জানিয়েছে, ইসরায়েলের সামরিক আগ্রাসনের জবাবে হরমুজ প্রণালি বন্ধের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে তেহরান। দেশটির পার্লামেন্টের জাতীয় নিরাপত্তা ও পররাষ্ট্র নীতি বিষয়ক কমিশনের সদস্য এসমাইল কোসারি বলেন, এই প্রণালি বন্ধ করা হতে পারে ইরানের কৌশলগত প্রতিক্রিয়ার অংশ।

এই প্রসঙ্গে অধ্যাপক হির্স বলেন, “প্রতিদিন ১৮ থেকে ২০ মিলিয়ন ব্যারেল তেল হরমুজ প্রণালির মাধ্যমে বিশ্ববাজারে যায় যা বৈশ্বিক তেল সরবরাহের প্রায় ২০ শতাংশ।” তিনি আরও বলেন, “এই প্রণালির ওপর সৌদি আরব, কুয়েতসহ উপসাগরীয় অনেক দেশের রপ্তানি নির্ভর করে। বিকল্প কোনো কার্যকর রুট নেই। এমন পরিস্থিতিতে পরিবহন যদি অর্ধেক পরিমাণেও কমে যায়, তাহলে আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ১২০ ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে, যা বৈশ্বিক অর্থনীতিতে মারাত্মক প্রভাব ফেলবে।”

হির্স সতর্ক করে বলেন, হরমুজ প্রণালি বন্ধের মতো কৌশলগত পদক্ষেপের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (বর্তমানে প্রার্থী হিসেবে সক্রিয়) ইরানবিরোধী সামরিক হস্তক্ষেপের ‘অজুহাত’ পেয়ে যেতে পারেন।

এদিকে চলমান উত্তেজনাকে আরও উসকে দিতে তৎপর ইসরায়েল। দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এক ভিডিওবার্তায় যুক্তরাষ্ট্রকে সরাসরি ইরানবিরোধী অভিযানে সম্পৃক্ত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

শনিবার দেওয়া ভিডিওবার্তায় নেতানিয়াহু মার্কিন জনগণের উদ্দেশে বলেন, “ইরান আমাদের শত্রু, এবং সেই একই শত্রু আপনাদেরও। ইসরায়েল আজ যুদ্ধে জড়িত, কারণ আমরা সবাইকে রক্ষা করতে চাই।”

তিনি বলেন, “আমরা যা করছি, তা শুধু ইসরায়েলের জন্য নয় বিশ্বব্যাপী স্বাধীনতা ও নিরাপত্তা রক্ষার অংশ হিসেবেই করছি।”

ভিডিওর শুরুতেই তিনি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানান এবং যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর ঐতিহাসিক ভূমিকার প্রশংসা করেন। এরপর ইরান সরকারকে “নির্মম ও দমনমূলক” শাসনব্যবস্থা আখ্যা দিয়ে বলেন, যদি ইসরায়েল আক্রমণাত্মক না হতো, তবে ইরান তার মিত্রগোষ্ঠী হিজবুল্লাহ ও হামাসকে পারমাণবিক অস্ত্রে সজ্জিত করত। তবে এই দাবি তিনি কোনো নির্দিষ্ট প্রমাণ ছাড়াই করেন।

বিশ্লেষকদের মতে, এই পরিস্থিতি শুধু মধ্যপ্রাচ্যের স্থিতিশীলতাকেই ঝুঁকিপূর্ণ করছে না, বরং যুক্তরাষ্ট্রকেও সরাসরি যুদ্ধের মুখোমুখি করার চেষ্টা করছে ইসরায়েল। তেলের বাজার, নিরাপত্তা এবং কূটনৈতিক সম্পর্ক সবকিছুই এই সংকটে জড়িয়ে পড়ছে। সূত্র: আল জাজিরা

-ইসরাত, নিজস্ব প্রতিবেদক

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

স্টারমারের নীরবতা: কূটনৈতিক শিষ্টাচার বনাম রাজনৈতিক সংকোচ

স্টারমারের নীরবতা: কূটনৈতিক শিষ্টাচার বনাম রাজনৈতিক সংকোচ

একজন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ, সামাজিক ব্যবসার পথপ্রদর্শক এবং গণতান্ত্রিক উত্তরণের নেতৃত্বদানকারী রাষ্ট্রনায়ক—এই তিনটি পরিচয়ই এখন সমভাবে প্রযোজ্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের... বিস্তারিত