পানাম নগরী মুখর ঈদে, ইতিহাসের টানে ছুটছে মানুষ

বাংলার ইতিহাসের এক গৌরবময় অধ্যায় হয়ে থাকা সোনারগাঁ—যা একসময় ছিল সুবর্ণ বাংলার রাজধানী—আজও তার অতীতের ঐশ্বর্যের স্মৃতি বয়ে বেড়াচ্ছে। কালের স্রোতে সেই জৌলুস অনেকটাই ম্লান হলেও হারানো ঐতিহ্যের টানে আজও মানুষ ছুটে আসে এই জনপদে। ঈদুল আজহার ছুটিতে সোনারগাঁয়ের এই ইতিহাসঘেরা স্থানগুলো যেন হয়ে উঠেছে হাজারো দর্শনার্থীর মিলনমেলা।
ঈদের ছুটির অষ্টম দিনেও সরেজমিনে দেখা গেছে, পানাম নগরী, লোক ও কারুশিল্প জাদুঘর এবং বাংলার তাজমহল এলাকায় দেশি-বিদেশি পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড়। বিশেষ করে লোকশিল্প ফাউন্ডেশনের চত্বরে দর্শনার্থীদের উচ্ছ্বাস ছিল চোখে পড়ার মতো। পরিবার-পরিজন নিয়ে এসেছেন অনেকে, কেউ এসেছেন ইতিহাস জানতে, কেউবা প্রকৃতির ছায়ায় প্রশান্তির খোঁজে।
গাজীপুর থেকে ঘুরতে আসা আক্তার বলেন, “আমরা এই প্রথম পানাম নগরীতে এলাম। সন্তানদের সঙ্গে এমন একটি ঐতিহাসিক স্থানে এসে খুব ভালো লাগছে। এখানে ইতিহাসের সঙ্গে আনন্দ মিলেছে একসাথে।”
ঢাকার ওয়ারী থেকে আসা রাকিব বলেন, “প্রতিবার ঈদে কোনো না কোনো দর্শনীয় স্থানে যাই। এবার সোনারগাঁয়ে এসেছি। বাংলাদেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের প্রতীক এই জনপদটি অবশ্যই আরও যত্নের সঙ্গে সংরক্ষণ করা উচিত। ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যেন এটি দেখতে পারে, সেটাই আমাদের কাম্য।”
দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা ও স্বাচ্ছন্দ্যের কথা মাথায় রেখে কর্তৃপক্ষ গ্রহণ করেছে বিশেষ ব্যবস্থা। পানাম নগরী ও প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের সহকারী কাস্টডিয়ান সিয়াম চৌধুরী বলেন, “ঈদের ছুটিকে ঘিরে হাজারো দর্শনার্থী এখানে ভিড় করছেন। নিরাপত্তার জন্য মোতায়েন আছে পর্যাপ্ত আনসার ও ট্যুরিস্ট পুলিশ।”
সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা রহমান জানান, “ঐতিহ্যের এই জনপদে দর্শনার্থীদের নিরাপদ ভ্রমণ নিশ্চিত করতে স্থানীয় প্রশাসন সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে। কর্তৃপক্ষের নিজস্ব নিরাপত্তার পাশাপাশি সরকারি বাহিনীও পর্যাপ্তভাবে দায়িত্ব পালন করছে।”
ইতিহাসবিদদের মতে, সোনারগাঁ নামটির উৎপত্তি ‘সুবর্ণ গ্রাম’ থেকে। ত্রয়োদশ শতকে রাজা দনুজ মাধব দশরথদেব এটিকে শাসনকেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলেন। পরবর্তীতে মুসলিম শাসনে এটি রূপ নেয় বাংলার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক ও অর্থনৈতিক কেন্দ্রে। ঢাকার রাজধানী হবার আগেই সোনারগাঁ ছিল স্বাধীন সুলতানি আমলে বাংলার রাজধানী।
আজকের সোনারগাঁ ইতিহাসের সেই চিত্রকল্পকে ধারণ করে এগিয়ে চলেছে পর্যটন সম্ভাবনার এক নতুন দিগন্তে। ঈদ-উপলক্ষে বেড়াতে আসা মানুষের পদচারণা প্রমাণ করে, অতীত যতই কালের গর্ভে বিলীন হোক না কেন—স্মৃতি ও সংস্কৃতির টানে মানুষ তার শিকড়কে খুঁজে নিতে চায় বারবার।
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- শেয়ারবাজারে এল বড় সুখবর!
- কবে থামবে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বিভেদের রাজনীতি?
- স্টারমারের নীরবতা: কূটনৈতিক শিষ্টাচার বনাম রাজনৈতিক সংকোচ
- ২০২৬ সালের এপ্রিলেই জাতীয় নির্বাচন: জাতির উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণা
- নির্বাচনের ঘোষণায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া: বিএনপি অসন্তুষ্ট, জামায়াত সন্তুষ্ট, এনসিপি শর্তসাপেক্ষে সমর্থন
- রিজার্ভের দাপট: বিদ্যুৎ খাতের ১৪ কোম্পানি বিনিয়োগের নতুন ঠিকানা
- রোজা, পরীক্ষা ও বাজেটের মাঝে নির্বাচন অযৌক্তিক: বিএনপি
- নারায়ণগঞ্জে বিএনপি নেতার বাড়িতে সেনা অভিযান:উদ্ধার ইয়াবা ও ধারালো অস্ত্র!
- দ্বিতীয় দিনেও চলছে কোরবানি, কসাই না পাওয়ায় আজ জবাই অনেকের
- তিন মাসেই যে ১০ বেসরকারি ব্যাংকে ৩২ হাজার কোটি টাকার আমানত বৃদ্ধি!
- তারেক-ইউনূস বৈঠক: উত্তপ্ত রাজনীতিতে সম্ভাব্য টার্নিং পয়েন্ট?
- তারেক রহমানের দেশেফেরার সম্ভাব্য সময় জানালেনমির্জা ফখরুল
- উত্তর-পূর্ব ভারতের ক্ষোভ কি ভারতের কেন্দ্রীয় কূটনীতি পাল্টাবে?
- সাক্ষাৎ চাইলেন শেখ হাসিনার ভাগ্নি, মুখ ফিরিয়ে নিলেন ড. ইউনূস
- ডিএসইতে সাধারণ বীমা খাতের প্রান্তিক বিশ্লেষণ:মুনাফা বৃদ্ধির শীর্ষে কারা?