ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে হাদির মরদেহ: কড়া পাহারায় সেনাবাহিনী

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২০ ১১:০৩:২৩
ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে হাদির মরদেহ: কড়া পাহারায় সেনাবাহিনী
ছবি : সংগৃহীত

জুলাই অভ্যুত্থানের অন্যতম সংগঠক ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শহীদ শরিফ ওসমান হাদির মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য আজ শনিবার (২০ ডিসেম্বর) সকালে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে নেওয়া হয়েছে। সকাল ৯টা ৪০ মিনিটের দিকে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের হিমঘর থেকে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে মরদেহটি মর্গে স্থানান্তর করা হয়। এ সময় সেনাবাহিনী, বিজিবি ও পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুল সংখ্যক সদস্য নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা বলয় তৈরি করে রাখেন। হাদির স্বজন, সহকর্মী এবং রাজনৈতিক সহযোদ্ধারাও এই সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

ভোর থেকেই প্রিয় এই নেতাকে শেষবারের মতো দেখার জন্য দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা শত শত মানুষ হাসপাতালের সামনে ভিড় করেন। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে যে ময়নাতদন্ত শেষে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তার মরদেহ গোসল করানোর জন্য নিয়ে যাওয়া হবে। এরপর ধর্মীয় ও অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা শেষে কফিন নিয়ে যাওয়া হবে জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায়। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে জানানো হয়েছে যে আজ দুপুর ২টায় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় শহীদ ওসমান হাদির জানাজা অনুষ্ঠিত হবে যা মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ সংলগ্ন এলাকাতেও সম্প্রসারিত হতে পারে।

জানাজা উপলক্ষে সরকারের পক্ষ থেকে কঠোর নিরাপত্তা নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। যারা জানাজায় অংশগ্রহণ করবেন তাদের কোনো প্রকার ভারী ব্যাগ বা সন্দেহজনক বস্তু সাথে না আনার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা হয়েছে। এছাড়া নিরাপত্তার স্বার্থে সংসদ ভবন ও এর আশপাশের পুরো এলাকায় ড্রোন ওড়ানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে প্রশাসন। শুক্রবার সন্ধ্যা পৌনে ৬টায় সিঙ্গাপুর থেকে হাদির মরদেহ ঢাকায় পৌঁছানোর পর বিমানবন্দর থেকে সরাসরি তা হিমাগারে রাখা হয়েছিল। ইনকিলাব মঞ্চের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে সংসদ ভবনে জানাজা শেষে বিকেল ৪টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে এবং জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের সমাধির পাশেই তাকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করা হবে।


বিজিবি এখন সীমান্ত নিরাপত্তায় আরও পেশাদার: প্রধান উপদেষ্টা

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২০ ০৯:০৯:৪০
বিজিবি এখন সীমান্ত নিরাপত্তায় আরও পেশাদার: প্রধান উপদেষ্টা
ছবি : সংগৃহীত

দেশের ভৌগোলিক অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্ব অক্ষুণ্ন রাখার পাশাপাশি সীমান্ত সুরক্ষায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বা বিজিবির ভূমিকার প্রশংসা করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। শনিবার (২০ ডিসেম্বর) ‘বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ দিবস-২০২৫’ উপলক্ষে দেওয়া এক বিশেষ বাণীতে তিনি বিজিবি সদস্যদের ‘সীমান্তের অতন্দ্র প্রহরী’ হিসেবে অভিহিত করেন। চোরাচালান বন্ধ, মাদক নির্মূল এবং নারী ও শিশু পাচার রোধে বাহিনীর নিরলস পরিশ্রমের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন যে বিজিবি দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা রক্ষা এবং যেকোনো জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় জনগণের জানমালের নিরাপত্তায় প্রশংসনীয় ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে।

প্রধান উপদেষ্টা তার বাণীতে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পরবর্তী সময়ের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে বলেন যে সাম্প্রতিক সময়ে দেশের সার্বভৌমত্ব ও সীমান্তের নিরাপত্তা রক্ষায় বিজিবি অত্যন্ত পেশাদারিত্বের পরিচয় দিয়েছে। বিশেষ করে সীমান্ত উত্তেজনা প্রশমন এবং পুশইন রোধসহ বিভিন্ন ধরনের জাতীয় নিরাপত্তা ঝুঁকি মোকাবিলায় বাহিনীর সদস্যরা সাহসিকতার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন। বিজিবি দিবস উপলক্ষে তিনি বাহিনীর সকল স্তরের সদস্য ও তাদের পরিবারকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানান। ড. ইউনূস উল্লেখ করেন যে এই বাহিনী এ অঞ্চলের এক সুদীর্ঘ ইতিহাস ও অত্যন্ত গৌরবময় ঐতিহ্যের উত্তরাধিকার বহন করছে।

মুক্তিযুদ্ধে বিজিবির অবদানের কথা স্মরণ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন যে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে দুজন বীরশ্রেষ্ঠসহ এই বাহিনীর ১১৯ জন সদস্য খেতাব পেয়েছেন এবং ৮১৭ জন সদস্য দেশের জন্য প্রাণ উৎসর্গ করেছেন। তাদের এই বিশাল আত্মত্যাগ বিজিবির ইতিহাসকে চিরকাল মহিমান্বিত করে রাখবে। তিনি মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে দেশমাতৃকার সেবায় নিয়োজিত থেকে বিভিন্ন সময়ে যারা প্রাণ দিয়েছেন তাদের আত্মার শান্তি কামনা করেন। বাণীর শেষে তিনি বিজিবি দিবস-২০২৫ উপলক্ষে আয়োজিত সকল কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন এবং বাহিনীকে আরও গতিশীল করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।


আয়ের চেয়ে ব্যয় বেশি: মূল্যস্ফীতির চাপে দিশাহারা সাধারণ মানুষ

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২০ ০৯:০৩:১৯
আয়ের চেয়ে ব্যয় বেশি: মূল্যস্ফীতির চাপে দিশাহারা সাধারণ মানুষ
ছবি : সংগৃহীত

উচ্চ মূল্যস্ফীতি এবং ক্রমবর্ধমান বেকারত্বের দ্বিমুখী চাপে গত তিন বছর ধরে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা চরম সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। ২০২৪ সালের জুলাই মাসে সাধারণ মূল্যস্ফীতির হার ১১ দশমিক ৬৬ শতাংশে পৌঁছানোর পর তা বিগত ১৫ মাসে কিছুটা কমলেও এখনো উদ্বেগজনক পর্যায়ে রয়েছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী ২০২৫ সালের নভেম্বরে সার্বিক মূল্যস্ফীতির হার দাঁড়িয়েছে ৮ দশমিক ২৯ শতাংশে যা আগের মাসের চেয়ে বেশি। বিশেষ করে খাদ্য মূল্যস্ফীতি এখনো ৭ শতাংশের ওপরে থাকায় নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবারগুলোর সঞ্চয় শেষ হয়ে যাচ্ছে এবং তারা ঋণের জালে জড়িয়ে পড়ছে।

অর্থনীতিবিদদের মতে বাংলাদেশ বর্তমানে একটি ‘স্ট্যাগফ্লেশন’ বা স্থবিরতা ও মূল্যস্ফীতির ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। একদিকে দ্রব্যমূল্য আকাশচুম্বী অন্যদিকে কর্মসংস্থানের সুযোগ সংকুচিত হয়ে আসছে। সরকারের সংকুচিত মুদ্রানীতি এবং নীতি সুদ হার ১০ শতাংশে উন্নীত করার ফলেও বাজারে এর ইতিবাচক প্রভাব খুব একটা দৃশ্যমান হচ্ছে না। এর মূল কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে সরকারের দ্বৈত আচরণকে। একদিকে বাজারে অর্থের সরবরাহ কমাতে সুদ হার বাড়ানো হচ্ছে অন্যদিকে রুগ্ণ ব্যাংকগুলোকে বাঁচিয়ে রাখতে এবং সরকারি কর্মচারীদের বেতন-ভাতাসহ পরিচালন ব্যয় মেটাতে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে উদারহস্তে অর্থ সরবরাহ ও ঋণ নেওয়া হচ্ছে। ফলে মুদ্রা সরবরাহ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হচ্ছে না এবং মূল্যস্ফীতি উচ্চ স্তরেই ঘুরপাক খাচ্ছে।

এরই মধ্যে দেশের শ্রমবাজারে বড় ধরনের ধস নেমেছে। রাজনৈতিক অস্থিরতা, জ্বালানি সংকট এবং কাঁচামালের দাম বাড়ার কারণে শিল্পোদ্যোগ থমকে দাঁড়িয়েছে। এক হিসাবে দেখা যায় বর্তমানে দেশে প্রায় এক কোটি মানুষ বেকার যার মধ্যে শিক্ষিত বেকারের হার সবচেয়ে বেশি। গত দুই বছরে প্রায় ২০ লাখ মানুষ চাকরি হারিয়েছেন এবং চলতি অর্থবছরে আরও আট লাখ মানুষ বেকার হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছেন। বিশেষ করে তৈরি পোশাক খাত বা গার্মেন্টস সেক্টরে এর প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়েছে। বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি ১০ শতাংশ থেকে কমে ৬ শতাংশে নেমে আসায় নতুন কর্মসংস্থান তৈরি হচ্ছে না। এর বিপরীতে সরকারের ঋণ গ্রহণের প্রবণতা বেড়েছে আশঙ্কাজনকভাবে যা বিনিয়োগের পরিবেশকে আরও জটিল করে তুলছে।

সামগ্রিক এই অর্থনৈতিক অস্থিরতার ফলে দারিদ্র্যের হার আবারও বাড়ছে। বিশ্বব্যাংকের সতর্কবার্তা অনুযায়ী চলতি বছর দারিদ্র্যের হার ২১ শতাংশ ছাড়িয়ে যেতে পারে এবং প্রায় সোয়া ছয় কোটি মানুষ দারিদ্র্যের উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছেন। জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৩ দশমিক ৯৭ শতাংশে নেমে আসায় কৃষি ও শিল্প—উভয় উৎপাদনশীল খাতেই স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে হলে কেবল মুদ্রানীতি দিয়ে হবে না বরং উৎপাদন বৃদ্ধি ও বাজারে পণ্য সরবরাহ নির্বিঘ্ন করতে হবে। একই সঙ্গে সিন্ডিকেটের কারসাজি ও চাঁদাবাজি বন্ধ করা এবং সরকারের বিলাসজাত পরিচালন ব্যয় কমিয়ে উৎপাদনশীল খাতে বিনিয়োগ বাড়ানো এখন সময়ের দাবি।


হাদি হত্যার বিচার দাবিতে উত্তাল দেশ: দিকে দিকে বিক্ষোভ

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২০ ০৮:৫০:১০
হাদি হত্যার বিচার দাবিতে উত্তাল দেশ: দিকে দিকে বিক্ষোভ
ছবি : সংগৃহীত

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও জুলাই অভ্যুত্থানের সম্মুখসারির যোদ্ধা শরিফ ওসমান হাদিকে হত্যার প্রতিবাদে ও খুনিদের দৃষ্টান্তমূলক বিচারের দাবিতে দেশজুড়ে নজিরবিহীন বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাদির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর রাজধানী ঢাকাসহ দেশের প্রায় প্রতিটি বড় শহরে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভের দাবানল ছড়িয়ে পড়ে। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে দিনভর ‘আগ্রাসনবিরোধী সমাবেশ’ করেছে ছাত্র-জনতা। সমাবেশের এক পর্যায়ে ডাকসু ভিপি সাদিক কায়েম ঘোষণা দেন যে এখন থেকে শাহবাগ মোড়ের নাম হবে ‘শহীদ ওসমান হাদি চত্বর’। সমাবেশ থেকে হাদির খুনিদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত রাজপথ না ছাড়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে এবং স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি করে গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

রাজধানীর উত্তাল পরিস্থিতির জেরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদের ‘ক’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে যে স্থগিত পরীক্ষার নতুন সূচি শিগগিরই ঘোষণা করা হবে। জুমার নামাজের পর জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম এলাকায় খেলাফত মজলিসসহ বিভিন্ন সংগঠন বিক্ষোভ মিছিল বের করে। তবে সার্বিক নিরাপত্তা এবং জুলাইবিরোধী শক্তির নাশকতার আশঙ্কায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম শাহবাগের অবস্থান কর্মসূচি সাময়িকভাবে স্থগিত করার ঘোষণা দেন। তিনি এক বিবৃতিতে সাধারণ মানুষকে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন যাতে জনগণের ক্ষোভকে ব্যবহার করে কোনো হঠকারী গোষ্ঠী অগ্নিকাণ্ড বা ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড চালাতে না পারে।

ঢাকার বাইরেও বিক্ষোভের আগুন ছড়িয়ে পড়েছে ব্যাপকভাবে। রাজশাহীতে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা বুলডোজার দিয়ে মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যালয় গুঁড়িয়ে দিয়েছে এবং ভারতীয় সহকারী হাইকমিশন উচ্ছেদের হুঁশিয়ারি দিয়েছে। ঝিনাইদহে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টু ও সাবেক চেয়ারম্যান কনক কান্তি দাসের বাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। বান্দরবানে সাবেক পার্বত্য মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈ সিংয়ের বাসভবনে আগুন দেওয়া হলে সেখানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়। এছাড়া গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ‘জয় বাংলা চত্বর’ এর নাম পরিবর্তন করে ‘শহীদ হাদি চত্বর’ নামকরণ করেছে।

দেশের প্রতিটি প্রান্তে এখন হাদি হত্যার বিচারের দাবি ও শোকের আবহ বিরাজ করছে। লক্ষ্মীপুর ও নওগাঁয় কফিন মিছিল বের করা হয়েছে এবং ফেনী, খুলনা, নীলফামারী, রংপুরসহ বিভিন্ন জেলায় হাদির গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বরাবর চার দফা দাবিতে স্মারকলিপি পেশ করেছে। তাদের দাবির মধ্যে রয়েছে হাদি হত্যার পরিকল্পনাকারীদের দ্রুত শনাক্তকরণ এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড রোধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জবাবদিহি নিশ্চিত করা। হাতিয়ায় বিক্ষুব্ধ জনতা থানা ঘেরাও করে খুনিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে। চট্টগ্রাম, সিলেট ও রাজশাহীসহ সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও এই আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল অব্যাহত রেখেছেন।


বেরিয়ে এলো ওসমান হাদি হত্যার ভয়ংকর পরিকল্পনা

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২০ ০৮:৪১:৪৫
বেরিয়ে এলো ওসমান হাদি হত্যার ভয়ংকর পরিকল্পনা
ছবি : সংগৃহীত

জুলাই অভ্যুত্থানের অন্যতম সংগঠক ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী বা মাস্টারমাইন্ড হিসেবে ঢাকার কেরানীগঞ্জ উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান শাহীন আহমেদ ওরফে ‘শাহীন চেয়ারম্যান’-এর নাম উঠে এসেছে। গোয়েন্দা সংস্থার দায়িত্বশীল সূত্রের বরাত দিয়ে জানা গেছে, চাঞ্চল্যকর এই ‘কিলিং মিশন’ বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় অর্থ এবং অস্ত্রের জোগানদাতা ছিলেন খোদ শাহীন চেয়ারম্যান নিজেই। তদন্তসংশ্লিষ্টরা জানতে পেরেছেন, এই হত্যাকাণ্ডে শাহীনের সহযোগী হিসেবে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের বেশ কয়েকজন নেতা সরাসরি যুক্ত ছিলেন।

গোয়েন্দা সূত্র ও তদন্তকারী কর্মকর্তাদের তথ্যানুযায়ী, শাহীন চেয়ারম্যান ছাড়াও হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে গোপালগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আব্দুল হামিদকে হন্যে হয়ে খুঁজছে পুলিশ। হাদির ওপর হামলার পর ঘাতকদের ঢাকা থেকে সীমান্ত পর্যন্ত নিরাপদে পালিয়ে যেতে এই হামিদই সহায়তা করেছিলেন বলে প্রমাণ মিলেছে। মূলত জুলাই বিপ্লবে শরিফ ওসমান হাদির অকুতোভয় ভূমিকা এবং ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে তার আওয়ামী লীগ বিরোধী কঠোর অবস্থানের কারণে তাকে ‘হিটলিস্টের’ এক নম্বরে রাখা হয়েছিল। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ হাদিকে তাদের দলের অস্তিত্বের জন্য বড় বিপদ হিসেবে চিহ্নিত করেই এই হত্যার ছক কষে।

অভিযুক্ত শাহীন আহমেদ দীর্ঘদিন ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন এবং সাবেক বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপুর ডানহাত হিসেবে পরিচিত ছিলেন। এলাকায় ‘মাফিয়া ডন’ হিসেবে পরিচিত শাহীনের বিরুদ্ধে বহু আগে থেকেই পুলিশের খাতায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ থাকলেও রাজনৈতিক প্রভাবে তিনি ছিলেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। ৫ আগস্ট সরকারের পতন হলে তিনি ভারতে পালিয়ে যান। সেখানে কিছুদিন চুপচাপ থাকলেও গত তিন-চার মাস ধরে তিনি আবারও সক্রিয় হয়ে ওঠেন এবং বিভিন্ন অ্যাপস ব্যবহার করে দেশে থাকা আওয়ামী লীগের ‘স্লিপার সেল’-এর সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেন।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, কয়েকটি হোয়াটসঅ্যাপ কল এবং এসএমএস-এর সূত্র ধরে হাদি হত্যায় শাহীন চেয়ারম্যানের প্রত্যক্ষ সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। হত্যার আগে ও পরে কিলারদের সঙ্গে পলাতক ছাত্রলীগ নেতা হামিদের একাধিকবার যোগাযোগের ডিজিটাল প্রমাণও তদন্তকারীদের হাতে এসেছে। এছাড়া তদন্তে কয়েকজন রাজনীতিকের নামও উঠে এসেছে, যা যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) শফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, তারা সবদিক বিবেচনায় রেখে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে মামলাটি তদন্ত করছেন এবং খুব শিগগিরই মাস্টারমাইন্ডসহ পরিকল্পনাকারীদের সবার নাম জনসম্মুখে প্রকাশ করা সম্ভব হবে।


হাদির জানাজা উপলক্ষে রাজধানীতে বিশেষ ট্রাফিক নির্দেশনা

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৯ ২১:৩০:২৭
হাদির জানাজা উপলক্ষে রাজধানীতে বিশেষ ট্রাফিক নির্দেশনা
ছবি: সংগৃহীত

আগামীকাল শনিবার (২০ ডিসেম্বর) বাদ জোহর জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদ যোদ্ধা শরীফ ওসমান হাদির নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এই জানাজাকে কেন্দ্র করে বিপুলসংখ্যক মানুষের সমাগমের আশঙ্কা থাকায় রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক মানিক মিয়া এভিনিউতে যান চলাচল সাময়িকভাবে সীমিত থাকবে বলে জানিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।

ডিএমপি জানায়, জানাজা অনুষ্ঠান সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার স্বার্থে শনিবার সকাল থেকেই খেজুর বাগান ক্রসিং থেকে মানিক মিয়া এভিনিউ পর্যন্ত যান চলাচল বন্ধ রাখা হবে। এ কারণে নগরবাসীকে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বিকল্প সড়ক ব্যবহার করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা হয়েছে।

ট্রাফিক নির্দেশনা অনুযায়ী, মিরপুর রোড দিয়ে উত্তর দিক থেকে ফার্মগেট বা সোনারগাঁও অভিমুখে যাতায়াতকারী যানবাহনকে গণভবন ক্রসিং হয়ে লেক রোড, উড়োজাহাজ ক্রসিং ও বিজয় সরণি হয়ে ফার্মগেটের দিকে যেতে হবে। একইভাবে ফার্মগেট থেকে ইন্দিরা রোড হয়ে মানিক মিয়া এভিনিউমুখী যানবাহনকে খেজুর বাগান ক্রসিং হয়ে উড়োজাহাজ ক্রসিং ও লেক রোড ব্যবহার করতে বলা হয়েছে।

ধানমন্ডি এলাকা থেকে ফার্মগেটগামী যানবাহনের জন্য আসাদগেট ও গণভবন ক্রসিং হয়ে বিকল্প রুট নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া আসাদগেট থেকে ফার্মগেটগামী যানগুলোকে লেক রোড ও বিজয় সরণি ব্যবহার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে অথবা ইন্দিরা রোড থেকে ধানমন্ডিগামী যানবাহনগুলোকে খেজুর বাগান ক্রসিং হয়ে উড়োজাহাজ ক্রসিং, লেক রোড ও আসাদগেট হয়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে জানাজা চলাকালীন সময়ে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের ফার্মগেট এক্সিট র‌্যাম্প ব্যবহার না করে এফডিসি (হাতিরঝিল) র‌্যাম্প ব্যবহারের জন্য চালকদের অনুরোধ জানিয়েছে ডিএমপি।

ডিএমপি আরও জানায়, জানাজা ও দাফন কার্যক্রম শেষ না হওয়া পর্যন্ত মানিক মিয়া এভিনিউ এলাকা এড়িয়ে চলাই সর্বোত্তম হবে। এতে নগরবাসীর ভোগান্তি কমবে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা সম্ভব হবে।

-রফিক


ওষুধের বাজার নিয়ন্ত্রণে নেই সরকারের, ভাঙেনি পুরোনো সিন্ডিকেট

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৯ ১১:১৫:৫৫
ওষুধের বাজার নিয়ন্ত্রণে নেই সরকারের, ভাঙেনি পুরোনো সিন্ডিকেট
ছবি : সংগৃহীত

রাজধানীর উত্তরায় বসবাসকারী বেসরকারি চাকরিজীবী শামীমের মাসিক আয় পঁচাত্তর হাজার টাকা হলেও মায়ের ক্যানসারের চিকিৎসার খরচ মেটাতে গিয়ে তিনি এখন পুরোপুরি বিপর্যস্ত। ক্যানসার আক্রান্ত মায়ের জন্য প্রতি মাসে অত্যাবশ্যকীয় ইনজেকশন পেগফিলগ্রাস্টিম কিনতে হয় তাকে, যার দাম গত এক বছরের ব্যবধানে আট হাজার টাকা থেকে বেড়ে পনেরো হাজার টাকায় ঠেকেছে। শামীমের মতো হাজারো মধ্যবিত্ত পরিবারের জন্য এখন প্রধান দুশ্চিন্তার নাম ওষুধের লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যমতে, বাংলাদেশে প্রতি বছর প্রায় এক লাখ সাতষট্টি হাজার মানুষ নতুন করে ক্যানসারে আক্রান্ত হচ্ছেন এবং মারা যাচ্ছেন লক্ষাধিক মানুষ। গবেষণায় দেখা গেছে, অর্থাভাবে চিকিৎসা মাঝপথে বন্ধ করে দেওয়ার কারণেই বেশিরভাগ রোগীর মৃত্যু হচ্ছে।

এক সময় ক্যানসারের ওষুধের জন্য বাংলাদেশ পুরোপুরি আমদানিনির্ভর থাকলেও বর্তমানে স্থানীয় কোম্পানিগুলো চাহিদার প্রায় পঁচানব্বই শতাংশ ওষুধ উৎপাদন করছে। সরকার কাঁচামাল আমদানিতে শুল্ক ছাড় দিলেও ওষুধের দাম সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরেই রয়ে গেছে। পেগফিলগ্রাস্টিমের মতো জীবনদায়ী ওষুধের দাম কোম্পানিভেদে ১০ থেকে ২০ হাজার টাকা রাখা হচ্ছে, অথচ পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে একই ওষুধের দাম মাত্র দেড় হাজার রুপি বা বাংলাদেশি মুদ্রায় দুই হাজার টাকার কিছু বেশি। আন্তর্জাতিক বাজারের তুলনায় বাংলাদেশে ওষুধের দামের এই বিশাল পার্থক্যের জন্য বিশেষজ্ঞরা ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের ব্যর্থতা এবং কোম্পানিগুলোর সিন্ডিকেটকে দায়ী করছেন। অভিযোগ রয়েছে, গত ১৫ বছর ধরে সালমান এফ রহমানের নেতৃত্বে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট ওষুধের দাম নিয়ন্ত্রণ করত এবং সরকার পরিবর্তনের পরও সেই প্রভাবে ভাটা পড়েনি।

গত পাঁচ বছরে দেশে সব ধরনের ওষুধের দাম অন্তত তিন গুণ বেড়েছে। গ্যাস্ট্রিক, অ্যান্টিবায়োটিক, ডায়াবেটিসসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় ওষুধের দাম গত দেড় বছরেও কমার কোনো লক্ষণ দেখা যায়নি। গেঁটে বাতের ওষুধ অ্যানাফ্লেক্স ম্যাক্স কিংবা দাঁত ব্যথার ওষুধ মারভ্যানের দাম প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। অ্যাজমা রোগীদের জন্য জরুরি ডক্সোমা ট্যাবলেটের দামও বেড়েছে প্রায় ষাট শতাংশ। বিক্রেতারা বলছেন, কোম্পানিগুলো ডলারের মূল্যবৃদ্ধি ও পরিচালন ব্যয় বাড়ার অজুহাত দেখিয়ে দাম বাড়াচ্ছে। তবে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার কাছ থেকে মেধাস্বত্বে ছাড় পাওয়ার পরেও বাংলাদেশে ওষুধের উৎপাদন খরচ কম হওয়া উচিত। কিন্তু কোম্পানিগুলোর অতিমুনাফার প্রবণতা এবং খুচরা বাজারে তদারকির অভাবে সাধারণ মানুষের পকেট কাটা যাচ্ছে।

ওষুধের এই উচ্চমূল্য কেবল স্বাস্থ্যগত সমস্যাই নয়, বরং বড় ধরনের অর্থনৈতিক সংকটও তৈরি করছে। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইকিউভিআইএ-র তথ্যমতে, বাংলাদেশে স্বাস্থ্য খাতে ব্যয়ের ৪৪ শতাংশই খরচ হয় শুধু ওষুধ কিনতে, যেখানে বৈশ্বিক গড় মাত্র ১৫ শতাংশ। ২০২২ সালের খানা আয়-ব্যয় জরিপে উঠে এসেছে এক ভয়াবহ চিত্র, যেখানে দেখা গেছে ওষুধের অতিরিক্ত ব্যয়ের ভার সইতে না পেরে প্রতি বছর প্রায় ৬১ লাখ মানুষ নতুন করে দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে যাচ্ছে। সরকার গত আগস্টে অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের দাম নির্ধারণের উদ্যোগ নিলেও বাস্তবে তার কোনো প্রতিফলন বাজারে দেখা যাচ্ছে না।

সূত্র : বাংলাদেশ প্রতিদিন।


হাদির প্রথম জানাজা কোথায় ও কখন? জানাল ইনকিলাব মঞ্চ

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৯ ০৯:৩৩:১১
হাদির প্রথম জানাজা কোথায় ও কখন? জানাল ইনকিলাব মঞ্চ
ছবি : সংগৃহীত

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম নায়ক ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির মরদেহ আজ শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় দেশে এসে পৌঁছাবে। ইনকিলাব মঞ্চের পক্ষ থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে জানানো হয়েছে, সিঙ্গাপুরে প্রথম জানাজা শেষে বাংলাদেশ বিমানের একটি বাণিজ্যিক ফ্লাইটে স্থানীয় সময় বিকেল ৩টা ৫০ মিনিটে হাদির মরদেহ নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হবে স্বজনরা। সব ঠিক থাকলে সন্ধ্যা ৬টা ০৫ মিনিটে ফ্লাইটটি ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করার কথা রয়েছে।

এর আগে শুক্রবার সকাল ১০টায় সিঙ্গাপুরের দ্য আঙ্গুলিয়া মসজিদে (The Angullia Mosque) শহীদ ওসমান হাদির প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা জানিয়েছে ইনকিলাব মঞ্চ। দেশে ফেরার পর আগামীকাল শনিবার বাদ জোহর রাজধানীর মানিক মিয়া এভিনিউতে তার দ্বিতীয় ও প্রধান জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। আততায়ীর গুলিতে বিদ্ধ হয়ে টানা সাত দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ার পর বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ সময় রাত পৌনে ১০টার দিকে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের এই সম্মুখসারির যোদ্ধা।

হাদির মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস গভীর শোক প্রকাশ করেন। ভাষণে তিনি বলেন, তিনি অত্যন্ত হৃদয়বিদারক সংবাদ নিয়ে হাজির হয়েছেন এবং জাতি জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সম্মুখভাগের অকুতোভয় যোদ্ধা শরিফ ওসমান হাদিকে হারিয়েছে। হাদির মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন, প্রধান উপদেষ্টা, বিএনপি, জামায়াত, এনসিপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন গভীর শোক জানিয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে আজ শুক্রবার সারাদেশে দোয়া মাহফিল এবং আগামীকাল শনিবার রাষ্ট্রীয় শোক পালনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে এই নির্মম হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতার আনার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে সরকার।


হাদি মৃত্যুতে জ্বলছে দেশ: মিডিয়া অফিস ও হাই কমিশনে হামলা

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৯ ০৯:১৪:০৭
হাদি মৃত্যুতে জ্বলছে দেশ: মিডিয়া অফিস ও হাই কমিশনে হামলা
ছবি : সংগৃহীত

জুলাই অভ্যুত্থানের অন্যতম নায়ক ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর ক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে সারা দেশ। পাহাড় থেকে সমতল পর্যন্ত সবখানেই হাদি হত্যার বিচারের দাবিতে রাজপথে নেমে এসেছেন সাধারণ ছাত্র-জনতা। বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাতেই রাজধানীর শাহবাগ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ করেন জুলাইয়ের সম্মুখসারির যোদ্ধারা। এসময় তারা পতিত আওয়ামী লীগ ও ভারতীয় আধিপত্যবাদের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে স্লোগান দেন এবং নিরাপত্তার ব্যর্থতার দায় নিয়ে অবিলম্বে অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি করেন। ছাত্র-জনতার সঙ্গে এক কাতারে মাঠে নেমেছেন জুলাই অভ্যুত্থানের নেতা ও সরকারের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এবং মাহফুজ আলম। তারা শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) জুমার নামাজের পর দেশব্যাপী কঠোর বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দিয়েছেন।

হাদির মৃত্যুর প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার রাত ১০টা থেকে ৩টা পর্যন্ত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের যাত্রাবাড়ী ও শনিরআখড়া এলাকায় ছাত্র-জনতা ব্লকেড কর্মসূচি পালন করে। এর ফলে ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-মাওয়া ও ঢাকা-ডেমরা সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয় এবং চরম ভোগান্তিতে পড়েন শত শত রোগী ও যাত্রী। রাজধানীর উত্তরা ও মিরপুরেও সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ চলে। বিক্ষোভের এক পর্যায়ে উত্তেজিত জনতা কারওয়ান বাজারে দৈনিক প্রথম আলো এবং ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টার কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ করে। ডেইলি স্টার কার্যালয়ে আগুন ছড়িয়ে পড়লে ভেতরে বেশ কয়েকজন কর্মী আটকা পড়েন, যাদের পরে দমকল বাহিনীর সহায়তায় উদ্ধার করা হয়। এছাড়া ধানমন্ডি ৩২ নম্বর এবং ছায়ানট ভবনেও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।

শুধু রাজধানী ঢাকাতেই নয়, ওসমান হাদির মৃত্যুর খবরে মুহূর্তের মধ্যে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। চট্টগ্রামে ভারতীয় সহকারী হাইকমিশন অফিস ঘেরাও করে বিক্ষুব্ধ জনতা এবং সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। রাজশাহীতে নগর আওয়ামী লীগের অফিস গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া সিলেট, বরিশাল, নেত্রকোনা ও জামালপুরেও রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। হাদির নিজ জেলা ঝালকাঠিতেও বিক্ষুব্ধ জনতা রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে যান চলাচল বন্ধ করে দেয় এবং হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানায়। ডাকসু নেতৃবৃন্দ ও বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, হত্যা করে আধিপত্যবিরোধী লড়াই বন্ধ করা যাবে না।


ধ্বংস নয়, পুনর্গঠনেই বাঁচবেন হাদি: হাসনাত আবদুল্লাহ

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৯ ০৮:৩৪:৪২
ধ্বংস নয়, পুনর্গঠনেই বাঁচবেন হাদি: হাসনাত আবদুল্লাহ
ছবি : সংগৃহীত

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, কোনো কিছু ধ্বংস করে নয়, বরং পুনর্গঠনের মাধ্যমেই শরিফ ওসমান হাদিকে ধারণ করতে হবে। ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র হাদির মৃত্যুর পর বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত ২টার পর নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এই মন্তব্য করেন। হাসনাত আবদুল্লাহ তার অনুসারী ও দেশবাসীর উদ্দেশে বলেন, হাদিকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নিয়ে, একটি শক্তিশালী কালচারাল এস্টাবলিশমেন্ট গড়ে তুলে, আজাদির প্রশ্নে আপসহীন থেকে এবং জনতার প্রশ্নে সৎ ও স্বচ্ছ থেকে।

আবেগঘন ওই পোস্টে এনসিপির এই নেতা নেতাকর্মীদের শান্ত ও ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান। তিনি স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেন, আমাদের পথ ধ্বংসের নয়, আমাদের পথ পুনর্গঠনের। কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা বা ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে হাদির আদর্শকে সম্মান জানানো সম্ভব নয় বলে তিনি সতর্ক করে দেন। এর আগে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান গুলিবিদ্ধ শরিফ ওসমান হাদি। তার এই অকাল প্রয়াণে সহযোদ্ধা ও রাজনৈতিক অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

উল্লেখ্য, গত ১২ ডিসেম্বর নির্বাচনী প্রচারণা শেষে রিকশায় ফেরার পথে রাজধানীর বিজয়নগর এলাকায় দুর্বৃত্তদের গুলিতে গুরুতর আহত হন হাদি। প্রথমে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয় এবং পরে অবস্থার অবনতি হলে ওই দিনই এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানেও শারীরিক পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় গত সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে সিঙ্গাপুরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, যেখানে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

পাঠকের মতামত:

ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গড়তে হলে রাষ্ট্রকে অবশ্যই তার সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা পুনরুদ্ধার করতে হবে

ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গড়তে হলে রাষ্ট্রকে অবশ্যই তার সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা পুনরুদ্ধার করতে হবে

রাষ্ট্রের ধারণাটি একসময় কেবল প্রশাসনিক ক্ষমতা, আইনের শাসন এবং নিরাপত্তা প্রদানের সঙ্গে সম্পর্কিত ছিল। কিন্তু আধুনিক বিশ্বে রাষ্ট্রের ভূমিকা এখন... বিস্তারিত