বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্র হওয়া থেকে বাঁচাতে গণতন্ত্রের বিকল্প নেই: মির্জা ফখরুল

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৯ ১৪:৫০:২৯
বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্র হওয়া থেকে বাঁচাতে গণতন্ত্রের বিকল্প নেই: মির্জা ফখরুল
ছবিঃ সংগৃহীত

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মন্তব্য করেছেন, বাংলাদেশকে যদি ব্যর্থ রাষ্ট্র হওয়া থেকে বাঁচাতে হয়, তবে অবিলম্বে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, গণতন্ত্রের পাশাপাশি বিচার বিভাগ, রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এবং গণমাধ্যমের স্বাধীনতাও নিশ্চিত করা জরুরি।

বুধবার (১৯ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর একটি হোটেলে ‘চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানে বিএনপি’ শীর্ষক একটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

দেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট নিয়ে সতর্কবার্তা উচ্চারণ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তিগুলোর মধ্যে সচেতনভাবে কোনো একটি মহল বিভক্তি সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে কি না, তা গভীরভাবে খতিয়ে দেখা দরকার। তিনি সাম্প্রতিক কিছু ঘটনার প্রতি ইঙ্গিত করে প্রশ্ন রাখেন, শেখ হাসিনার রায়কে কেন্দ্র করে যে ধরনের 'মবোক্রেসি' বা বিশৃঙ্খলা দেখা গেছে, তা কি মূল রায় থেকে মানুষের দৃষ্টি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য করা হয়েছে? এই বিষয়টি নিয়ে ভাবার অবকাশ রয়েছে।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আরও বলেন, গণতন্ত্র মানে কেবল একটি নির্বাচন আয়োজন করা নয়। নির্বাচনের পরেও গণতন্ত্রকে একটি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে হবে, যাতে রাষ্ট্রের ভিত্তি মজবুত থাকে। তিনি মনে করেন, রাষ্ট্রকে সঠিকভাবে পরিচালনা করতে হলে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের চর্চা অপরিহার্য।

অনুষ্ঠানে তিনি ২৪-এর গণ-অভ্যুত্থানে দলের নেতাকর্মীদের ভূমিকার কথাও স্মরণ করেন এবং দেশের ভবিষ্যৎ রাজনীতিতে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান।


যে আসন থেকে লড়বেন নুরুল হক নুর

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৯ ০৮:০৪:২৭
যে আসন থেকে লড়বেন নুরুল হক নুর
ছবি: সংগৃহীত

পটুয়াখালী–৩ (দশমিনা–গলাচিপা) আসন থেকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর। মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে ৪টায় দশমিনা উপজেলা গণঅধিকার পরিষদের আয়োজনে এক জনসভায় তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে এ ঘোষণা দেন। ট্রাক মার্কা নিয়েই তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামবেন বলে জানান এবং উপস্থিত জনতার সমর্থন কামনা করেন।

জনসভায় নুর বলেন, সাম্প্রতিক গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে দেশের মানুষের মধ্যে নতুন প্রত্যাশা তৈরি হয়েছে। এই স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য জাতীয় সরকার গঠনের কোনো বিকল্প নেই। তার মতে, জাতীয় সরকারই দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে পারে এবং একটি কার্যকর রাজনৈতিক সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম।

তিনি দাবি করেন, দেশ–বিদেশে তার যে পরিচিতি ও গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে, তা কাজে লাগিয়ে পটুয়াখালী–৩ আসনের উন্নয়নই হবে তার মূল লক্ষ্য। দীর্ঘ অবহেলা, যোগাযোগব্যবস্থার দুরবস্থা এবং পিছিয়ে পড়া জনজীবনের উন্নয়নে তিনি একটি সমন্বিত পরিকল্পনা হাতে নিতে চান।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার রায় ঘোষণার পরদিন নিজের নির্বাচনী এলাকায় এসে নুর বলেন, এ রায় রাজনৈতিক দলগুলোকে গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা দিয়েছে। অতীতের নির্যাতন, গুম, খুন, দখলবাজি ও একনায়কতান্ত্রিক আচরণ আর কোনো দলের মুখোশ হয়ে উঠলে জনগণকে ঐক্যবদ্ধভাবে দাঁড়াতে হবে বলেও তিনি সতর্ক করেন।

তিনি আরও বলেন, দেশে আবারও ফ্যাসিবাদের আলামত দেখা যাচ্ছে। কোনো রাজনৈতিক নেতা বা দল যদি ক্ষমতার দাপটে দখলদারিত্ব বা জুলুম চালায়, তাহলে জনগণের আদালতে তাদের কোনো গ্রহণযোগ্যতা থাকবে না। এ ধরনের পরিস্থিতি রোধ করতে জনগণকে সজাগ ও ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান তিনি।

অঞ্চলভিত্তিক কিছু নেতার অতিউৎসাহী অবস্থান জাতীয় ঐক্যকে বিঘ্নিত করছে উল্লেখ করে নুর বলেন, দেশকে আর নতুন সংকটের মুখোমুখি করা যাবে না। সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে ঐকমত্যের নির্বাচনই দেশের জন্য কল্যাণকর। দলগুলোর পারস্পরিক আলোচনার মাধ্যমে আসন ভাগাভাগি করলে স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নের পথ সুগম হবে বলেও তিনি মত দেন।

নুর ঘোষণা দেন, নির্বাচিত হতে পারলে জামায়াত, বিএনপি, ইসলামী আন্দোলনসহ সব রাজনৈতিক দলের নেতাদের নিয়ে বসে চর এলাকার উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হবে। তিনি বলেন, বছরের পর বছর অবহেলার ফলে এলাকার সড়ক–যোগাযোগ, বাজারব্যবস্থা, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা পিছিয়ে পড়েছে। এসব খাতে নবজাগরণ ঘটানোই হবে তার অঙ্গীকার।

জনসভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা গণঅধিকার পরিষদের আহ্বায়ক লিয়ার হোসেন এবং সঞ্চালনা করেন সদস্য সচিব মিলন মিয়া। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন ঢাকা মহানগর উত্তর গণঅধিকার পরিষদের সহসভাপতি মিজান হাওলাদার, জেলা কমিটির আহ্বায়ক সৈয়দ নজরুল ইসলাম লিটু, যুগ্ম আহ্বায়ক আবু কালামসহ অন্যান্য নেতারা।

-রাফসান


পটুয়াখালী-৩: জোটের বলি নাকি দলের প্রার্থী? হাসান মামুন ও ভিপি নুরের অঘোষিত লড়াই

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৮ ১৬:৪৮:২২
পটুয়াখালী-৩: জোটের বলি নাকি দলের প্রার্থী? হাসান মামুন ও ভিপি নুরের অঘোষিত লড়াই
ছবিঃ সংগৃহীত

পটুয়াখালী-৩ (দশমিনা-গলাচিপা) আসনে বিএনপির দলীয় প্রার্থী ঘোষণা না হওয়ায় স্থানীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে চরম হতাশা ও উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। আগামী নির্বাচনে তারা ধানের শীষ প্রতীকে ভোট দিতে পারবেন কি না, তা নিয়ে তাদের মনে সংশয় তৈরি হয়েছে। মূলত জোটের কোনো শরিক দলকে এই আসনটি ছেড়ে দেওয়া হতে পারে—এমন গুঞ্জনে তৃণমূল বিএনপির নেতাকর্মীরা মানসিকভাবে বেশ ভেঙে পড়েছেন। তাদের আশঙ্কা, স্থানীয়ভাবে জনপ্রিয় নেতা হাসান মামুন মনোনয়ন না পেলে এবারও আসনটি দলের হাতছাড়া হতে পারে।

দশমিনা ও গলাচিপা নিয়ে গঠিত এই আসনটি শেষ পর্যন্ত জোটের কোনো অংশীদার পাবে, নাকি বিএনপি তাদের নিজস্ব প্রার্থী দেবে, তা নিয়ে দিনরাত হিসাব-নিকাশ করছেন স্থানীয় নেতারা। স্বাধীনতার পর থেকে কোনো প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচনেই বিএনপি এই আসনে জয়লাভ করতে পারেনি। এর পেছনে যোগ্য প্রার্থী বাছাইয়ে ভুল এবং জনগণের আস্থা অর্জনে ব্যর্থতাকে প্রধান কারণ মনে করা হয়। ভোটারদের মধ্যেও আলোচনা চলছে যে, আওয়ামী লীগের আধিপত্য থাকা এই আসনটিতে বিএনপি কি আদৌ কোনোদিন জিততে পারবে না?

গত ৩ নভেম্বর বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ২৩৭টি আসনে দলের প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করলেও পটুয়াখালী-৩ আসনের বিষয়টি স্থগিত রাখা হয়। কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তে নেতাকর্মীদের সন্দেহ আরও গভীর হয়েছে।

স্থানীয় নেতাকর্মী ও সাধারণ ভোটারদের মতে, এই আসনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে যোগ্যতার বিচারে সবচেয়ে এগিয়ে আছেন হাসান মামুন। তিনি বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি। স্থানীয় বিএনপি তাকে ঘিরেই ঐক্যবদ্ধ এবং তাকেই প্রার্থী হিসেবে চায়। মনোনয়ন প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে তাকে ঢাকায় সাক্ষাৎকার দেওয়ার জন্যও ডাকা হয়েছিল।

তবে এই আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের তালিকায় আরও নাম রয়েছে। দশমিনা উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাওলাদার মো. ইফতিয়াস উদ্দিন জয় মনোনয়ন চাইছেন। এছাড়া আওয়ামী লীগের (বর্তমানে নিষিদ্ধ ঘোষিত) সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মাওলা রনিও এই আসন থেকে নির্বাচন করতে পারেন বলে গুঞ্জন রয়েছে। অন্যদিকে, জামায়াতে ইসলামী থেকে অধ্যাপক মুহাম্মদ শাহ-আলম এবং ইসলামী আন্দোলন থেকে হাফেজ মাওলানা মুফতি আবু বকর সিদ্দীককে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে।

বিএনপির দুশ্চিন্তার মূল কারণ হলো গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর। দীর্ঘদিনের গুঞ্জন রয়েছে যে, জোটের সমীকরণে বিএনপি এই আসনটি ভিপি নুরকে ছেড়ে দিতে পারে। এই গুঞ্জনকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি এলাকায় সহিংসতাও ছড়িয়েছে। মিত্র দল হিসেবে পরিচিত হলেও স্থানীয় বিএনপি ও গণঅধিকার পরিষদের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি ঘটেছে এবং গলাচিপায় দুই পক্ষের নেতাকর্মীদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে।

২০১৮ সালের নির্বাচনের স্মৃতি এখনও নেতাকর্মীদের মনে দগদগে। সেবার হাসান মামুনের মনোনয়ন প্রায় নিশ্চিত ছিল, কিন্তু শেষ মুহূর্তে আওয়ামী লীগ ছেড়ে আসা গোলাম মাওলা রনিকে বিএনপি মনোনয়ন দেয়। এর প্রতিবাদে তখন দশমিনা-গলাচিপায় নেতাকর্মীদের মধ্যে পদত্যাগের হিড়িক পড়ে গিয়েছিল। স্থানীয় নেতাদের দাবি, এবারও যদি দলের বাইরের কাউকে মনোনয়ন দেওয়া হয়, তবে একই পরিস্থিতির পুনরাবৃত্তি ঘটবে।

দশমিনা-গলাচিপা আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ৫২ হাজার ২৬১ জন। আনোয়ার হোসেন নামে এক স্থানীয় ভোটার জানান, এই এলাকার মানুষ একসময় নৌকায় ভোট দিলেও হাসান মামুনের কারণে স্থানীয় রাজনীতিতে পরিবর্তন এসেছে। তার ব্যক্তিগত ইমেজের কারণে অনেকেই বিএনপির দিকে ঝুঁকেছেন এবং তিনি মনোনয়ন পেলে জয়ের সম্ভাবনা প্রবল।

বিএনপি নেতা হাওলাদার মো. ইফতিয়াস উদ্দিন জয় নিজেও মনোনয়নপ্রত্যাশী হলেও তিনি হাসান মামুনের পক্ষে মত দিয়েছেন। তিনি বলেন, "মনোনয়ন ভাগ্যের ব্যাপার। তবে এই আসনে জোটের কাউকে নয়, হাসান মামুনকে ধানের শীষের প্রার্থী করা হোক। তার ত্যাগ আমার চেয়েও বেশি। ছাত্রনেতা থাকাকালে তিনি যুবকদের কর্মসংস্থান করেছেন এবং নিজ খরচে অসহায়দের চিকিৎসা ও সাহায্য করেছেন। এই আসনে জয়ের জন্য তার বিকল্প নেই।" তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন যে, হাসান মামুন বাদে অন্য কাউকে বা জোটকে আসন দিলে জামায়াত প্রার্থীর জয়ের সম্ভাবনা বেড়ে যাবে।

দশমিনা উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি মো. মোফাজ্জেল হোসেন বলেন, "হাসান মামুন দলের দুর্দিনে রক্ষাকবচ হিসেবে ছিলেন। যখন কেউ ছিল না, তখন তিনিই নেতাকর্মীদের আগলে রেখেছিলেন। আমরা ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী চাই এবং হাসান মামুনই এর যোগ্য।"

এদিকে, গণঅধিকার পরিষদের ঢাকা উত্তরের সহ-সভাপতি ও ভিপি নুরের ভগ্নিপতি মিজান হাওলাদার জানিয়েছেন, জোটের বিষয়ে এখনও চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি এবং তারা আপাতত এককভাবেই প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।


ওয়াশিংটন–সিউল চুক্তিতে তীব্র প্রতিক্রিয়া পিয়ংইয়ংয়ের: এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরে অস্থিরতার ইঙ্গিত

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৮ ১১:৫০:২১
ওয়াশিংটন–সিউল চুক্তিতে তীব্র প্রতিক্রিয়া পিয়ংইয়ংয়ের: এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরে অস্থিরতার ইঙ্গিত
ছবিঃ সংগৃহীত

দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে পারমাণবিকচালিত সাবমেরিন নির্মাণ নিয়ে হওয়া নতুন চুক্তির কড়া নিন্দা জানিয়েছে উত্তর কোরিয়া। মঙ্গলবার দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম কেসিএনএ-তে প্রকাশিত মন্তব্যে পিয়ংইয়ং দাবি করেছে, এই চুক্তি এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে “পারমাণবিক ডোমিনো” সৃষ্টি করবে এবং সামগ্রিক নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে অস্থিতিশীল করে তুলবে।

গত সপ্তাহে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট লি জে মিয়ং বহু প্রতীক্ষিত যুক্তরাষ্ট্র-দক্ষিণ কোরিয়া নিরাপত্তা ও বাণিজ্য চুক্তির চূড়ান্তকরণ ঘোষণা করেন। চুক্তির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো পারমাণবিক শক্তিচালিত সাবমেরিন উন্নয়ন পরিকল্পনা এগিয়ে নেওয়া। সিউল জানিয়েছে, তারা ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ এবং ব্যবহৃত জ্বালানি পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণে তাদের সক্ষমতা ও সিদ্ধান্তগ্রহণের পরিধি বাড়ানোর বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন পেয়েছে—যা দীর্ঘদিন ধরেই তাদের লক্ষ্য ছিল।

চুক্তির প্রথম প্রতিক্রিয়ায় উত্তর কোরিয়া একে “বিপজ্জনক সংঘাত-প্ররোচনামূলক উদ্যোগ” হিসেবে বর্ণনা করে বলেছে, এটি শুধু কোরীয় উপদ্বীপ নয়, বরং গোটা এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের নিরাপত্তাকে গভীরভাবে অস্থির করে তুলবে। কেসিএনএ-র ভাষ্য অনুযায়ী, এই উদ্যোগ বৈশ্বিক অ-প্রসারণ কাঠামোকেও দুর্বল করে “নিউক্লিয়ার নিয়ন্ত্রণহীনতার” পরিবেশ সৃষ্টি করবে।

পিয়ংইয়ং আরও সতর্ক করে জানায়, দক্ষিণ কোরিয়ার হাতে পারমাণবিকচালিত সাবমেরিন গেলে তা এলাকায় একটি “পারমাণবিক ডোমিনো ঘটনার সূত্রপাত” করবে এবং নতুন করে অস্ত্র প্রতিযোগিতা উসকে দেবে। উত্তর কোরিয়া যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার “সামরিক মোকাবেলার অভিপ্রায়” উদ্ধৃত করে বলেছে, তারা “ন্যায্য ও প্রয়োজনীয় প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ” নিতে বাধ্য হবে।

অক্টোবর মাসে উত্তর কোরিয়া একটি ব্যালিস্টিক রকেট ইঞ্জিনের নবম ও চূড়ান্ত পরীক্ষার কথা জানায়, যা দ্রুতই নতুন আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র (আইসিবিএম) পরীক্ষার ইঙ্গিত দেয়। এমন পরিস্থিতিতে পারমাণবিকচালিত সাবমেরিন ইস্যুটি অঞ্চলজুড়ে আরও উত্তেজনা ছড়াচ্ছে।

দক্ষিণ কোরিয়ার নতুন মন্তব্যটি এসেছে এমন সময়, যখন সিউল সাত বছর পর প্রথমবারের মতো আন্তঃসীমান্ত সামরিক উত্তেজনা কমাতে পিয়ংইয়ং-কে আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছে। প্রেসিডেন্ট লি কঠোর অবস্থানের জন্য পরিচিত তার পূর্বসূরীর নীতির বিপরীতে শর্তহীনভাবে আলোচনায় বসার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন।

সিউলের নর্থ কোরিয়ান স্টাডিজ ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ইয়াং মু-জিন এএফপিকে বলেন, উত্তর কোরিয়ার উদ্বেগের মূল কারণ হলো—দক্ষিণ কোরিয়ার পারমাণবিকচালিত সাবমেরিন অর্জন “তাদের আংশিক পারমাণবিক শক্তিধর রাষ্ট্রে পরিণত হওয়ার সোপান হয়ে উঠতে পারে।” তার মতে, এই পরিস্থিতি আন্তঃকোরীয় সামরিক আলোচনার সম্ভাবনাকেও ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।

উত্তর কোরিয়া এখনো দক্ষিণ কোরিয়ার আলোচনার প্রস্তাবে সাড়া দেয়নি।

এদিকে চীনও ওয়াশিংটন-সিউল পারমাণবিক সাবমেরিন সহযোগিতা নিয়ে সতর্কবার্তা দিয়েছে। সিউলে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত দাই বিং বলেন, এই অংশীদারিত্ব “শুধু বাণিজ্যিক প্রকল্পের বাইরে গিয়ে বৈশ্বিক অ-প্রসারণ ব্যবস্থাকে সরাসরি প্রভাবিত করে, যা কোরীয় উপদ্বীপ ও বৃহত্তর অঞ্চলের স্থিতিশীলতার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।”

-নাজমুল হাসান


যুক্তরাষ্ট্র–সৌদি সম্পর্ক পুনর্গঠনে কূটনৈতিক দেনদরবার ও আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৮ ১১:৩৮:৩৬
যুক্তরাষ্ট্র–সৌদি সম্পর্ক পুনর্গঠনে কূটনৈতিক দেনদরবার ও আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা
ছবিঃ সংগৃহীত

মঙ্গলবার ওয়াশিংটনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকের মাধ্যমে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের নতুন অধ্যায় সূচনার লক্ষ্য নিয়ে হোয়াইট হাউসে পৌঁছেছেন সৌদি আরবের প্রভাবশালী ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান। গত কয়েক দশকের তেলনির্ভর সহযোগিতা ও নিরাপত্তা অংশীদারিত্ব আরও গভীর করার পাশাপাশি বাণিজ্য, প্রযুক্তি, প্রতিরক্ষা এবং সম্ভাব্যভাবে বেসামরিক পারমাণবিক শক্তি উন্নয়ন—এই বিস্তৃত ক্ষেত্রগুলোতে সম্পর্ক আরও সম্প্রসারণ করাই সফরের মূল ফোকাস।

২০১৮ সালে ইস্তাম্বুলে সৌদি সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যাকাণ্ডের পর এটি এমবিএস–এর প্রথম যুক্তরাষ্ট্র সফর। ওই হত্যাকাণ্ড বিশ্বব্যাপী তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছিল এবং মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো উপসংহারে এসেছিল—মোহাম্মদ বিন সালমান অভিযানটির অনুমোদন দিয়েছিলেন। তিনি অবশ্য সরাসরি কোনও নির্দেশ দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেন, তবে দেশের কার্যত শাসক হিসেবে দায় স্বীকার করেছিলেন।

সাত বছরের বেশি সময় পর ভিন্ন প্রেক্ষাপটে আবারও ঘনিষ্ঠতায় ফিরতে চায় উভয় দেশ—একদিকে বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতি, অন্যদিকে বৈশ্বিক জ্বালিবাজারের শীর্ষ উৎপাদক।

ট্রাম্প তার গত সফরে সৌদি আরবের করা ৬০০ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ অঙ্গীকারকে সামনে রেখে নতুন অর্থনৈতিক সুযোগ উন্মোচনে আগ্রহী। মানবাধিকার ইস্যু তিনি আগে এড়িয়ে গিয়েছিলেন, এবারও সেই ধারা বজায় রাখার ইঙ্গিত দিয়েছেন। অন্যদিকে সৌদি নেতৃত্ব আঞ্চলিক অস্থিরতার মধ্যে শক্তিশালী নিরাপত্তা নিশ্চয়তা, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তিতে প্রবেশাধিকার এবং বেসামরিক পারমাণবিক কর্মসূচির লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা চায়।

সোমবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প নিশ্চিত করেন যে, রিয়াদকে উন্নত মার্কিন এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান বিক্রি করতে তিনি অনুমোদন দেবেন। এই বিক্রয় অনুমোদন মধ্যপ্রাচ্যের সামরিক ভারসাম্যে বড় ধরনের পরিবর্তন এনে দিতে পারে এবং দীর্ঘদিন ধরে ইসরায়েলের প্রতিবেশীদের ওপর ‘গুণগত সামরিক সুবিধা’ বজায় রাখার মার্কিন নীতিকে নতুন করে প্রশ্নের মুখে ফেলতে পারে।

সৌদি বিশ্লেষক আজিজ আলঘাশিয়ান বলেন, খাশোগি হত্যাকাণ্ডের অধ্যায় “এখন কার্যত পেছনে ফেলে এগিয়ে যাচ্ছে” ওয়াশিংটন ও রিয়াদ।

প্রতিরক্ষা অংশীদারিত্বে নতুন সমীকরণ

দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্র–সৌদি সম্পর্কের ভিত্তি ছিল তেলের স্থিতিশীল সরবরাহ এবং বিনিময়ে মার্কিন নিরাপত্তা নিশ্চয়তা। তবে ২০১৯ সালে ইরানের হামলায় সৌদি তেল স্থাপনাগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হলেও ওয়াশিংটনের কার্যকর প্রতিক্রিয়া না পাওয়া দুই দেশের সম্পর্কে অস্বস্তি তৈরি করে। সাম্প্রতিক সময়ে হামাস সদস্যদের লক্ষ্য করে ইসরায়েলের দোহা বোমা হামলা এই উদ্বেগ নতুন করে উসকে দেয়।

এ প্রেক্ষাপটে ট্রাম্প নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে কাতারের সঙ্গে একটি প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষর করেছেন। অনেক পর্যবেক্ষক মনে করেন, সৌদি আরবও এ ধরনের সুবিধা পাবে।

রিয়াদ সবশেষ আলোচনায় কংগ্রেস অনুমোদিত পূর্ণাঙ্গ প্রতিরক্ষা চুক্তির দাবি জানালেও, ওয়াশিংটন এটিকে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার শর্তসাপেক্ষে বিবেচনা করছে।সৌদি নেতৃত্ব আবার ইসরায়েলের কাছ থেকে একটি দৃশ্যমান ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি না পাওয়া পর্যন্ত সেই পদক্ষেপ নিতে রাজি নয়।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সম্প্রতি গাজায় যুদ্ধবিরতির পরও ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার বিপক্ষে তার অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেছেন। ফলে প্রতিরক্ষা চুক্তির পথ আপাতত জটিল হয়ে আছে।

পাশাপাশি আলঘাশিয়ান মনে করেন, কাতারের মডেলের মতো যে কোনও নির্বাহী আদেশ পূর্ণাঙ্গ চুক্তি না হলেও “প্রক্রিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ” হবে।

এক পশ্চিমা কূটনীতিক সংক্ষেপে বলেন, “ট্রাম্প চান স্বাভাবিকীকরণ, সৌদি চায় পূর্ণ প্রতিরক্ষা চুক্তি—কিন্তু দুই পক্ষই পুরোটা পাবে না; এটিই বাস্তবকথা, এটিই কূটনীতি।”

বিশেষজ্ঞ ডেনিস রস মনে করেন, সম্ভাব্য নির্বাহী আদেশ যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরবকে যে কোনো নিরাপত্তা হুমকির ক্ষেত্রে তাৎক্ষণিক পরামর্শ ও সহযোগিতার কাঠামো দেবে। এতে অস্ত্র প্রতিস্থাপন থেকে শুরু করে থাড বা প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা মোতায়েন, এমনকি আঞ্চলিক নৌবাহিনী পাঠানোর মতো বিস্তৃত সহায়তা থাকতে পারে।

নিউক্লিয়ার ও এআই এজেন্ডা: আঞ্চলিক প্রতিযোগিতা তুঙ্গে

সৌদি আরবের ভিশন ২০৩০ পরিকল্পনার লক্ষ্য—তেলনির্ভরতা কমিয়ে প্রযুক্তি, জ্বালানি, উদ্ভাবন ও শিল্পায়নে নিজেদের শক্তিশালী অবস্থানে স্থাপন করা। এ কারণেই তারা এআই প্রযুক্তি এবং উন্নত চিপস অ্যাক্সেসকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মনে করছে। তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী সংযুক্ত আরব আমিরাত সম্প্রতি উন্নতমানের মার্কিন চিপস ব্যবহারের সুযোগ পেয়েছে, যা রিয়াদের ওপর প্রতিযোগিতার চাপ বাড়িয়েছে।

এছাড়া সৌদি নেতৃত্ব একটি পূর্ণাঙ্গ বেসামরিক পারমাণবিক কর্মসূচির স্বপ্ন দেখছে। তবে এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের শর্ত—ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ বা ব্যবহৃত জ্বালানির পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণের অধিকার না রাখার অঙ্গীকার—রিয়াদ গ্রহণে অনীহা প্রকাশ করেছে। কারণ এই দুটি প্রক্রিয়া পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির প্রযুক্তিগত পথ উন্মুক্ত করতে পারে।

ডেনিস রস আশা করেন, আলোচনায় কিছু অগ্রগতি হবে এবং অন্তত একটি পারমাণবিক সহযোগিতা চুক্তি—অথবা এ নিয়ে আশাবাদী বিবৃতি—ঘোষণা হতে পারে।

-আলমগীর হোসেন


হামাসের আপত্তি সত্ত্বেও গাজা পুনর্গঠনে জাতিসংঘে বড় সিদ্ধান্ত

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৮ ১১:২২:২৪
হামাসের আপত্তি সত্ত্বেও গাজা পুনর্গঠনে জাতিসংঘে বড় সিদ্ধান্ত
ছবিঃ সংগৃহীত

জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ যুক্তরাষ্ট্রের প্রণীত এবং প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ২০ দফা গাজা শান্তি পরিকল্পনাকে সমর্থন জানিয়ে যে প্রস্তাবটি পাস করেছে, সেটিকে মধ্যপ্রাচ্যের অস্থির পরিস্থিতিতে এক গুরুত্বপূর্ণ মোড় হিসেবে দেখা হচ্ছে। এই প্রস্তাবে গাজায় একটি আন্তর্জাতিক স্থিতিশীলতা বাহিনী—ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যাবিলাইজেশন ফোর্স (আইএসএফ)—গঠনের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের দাবি অনুযায়ী বেশ কিছু দেশ ইতোমধ্যেই অংশগ্রহণে আগ্রহ জানিয়েছে।

১৩টি দেশ—যাদের মধ্যে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও সোমালিয়া উল্লেখযোগ্য—এই প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয়, যদিও রাশিয়া ও চীন ভোটদানে বিরত থাকে। কোনো দেশই প্রস্তাবটির বিরুদ্ধে যায়নি। জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের মুখপাত্র জানান, এই প্রস্তাব গাজায় কার্যকর যুদ্ধবিরতির অগ্রগতি দৃঢ় করার পথে “গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ” হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। তবে হামাস প্রস্তাবটিকে প্রত্যাখ্যান করেছে, কারণ তাদের দাবি অনুযায়ী এটি ফিলিস্তিনিদের মৌলিক অধিকার ও রাজনৈতিক দাবি পূরণ করে না।

টেলিগ্রামে দেওয়া বিবৃতিতে হামাস অভিযোগ করে, প্রস্তাবটি গাজায় “আন্তর্জাতিক অভিভাবকত্ব” চাপিয়ে দেয়, যা গাজার জনগণ ও তাদের বিভিন্ন গোষ্ঠীর জন্য অগ্রহণযোগ্য। তাদের দাবি, আন্তর্জাতিক বাহিনীর ভূমিকাকে গাজার ভেতরে প্রসারিত করে প্রতিরোধ শক্তিকে নিরস্ত্র করার পরিকল্পনা আইএসএফ-কে নিরপেক্ষতার বাইরে নিয়ে যাবে এবং সংঘাতে ইসরায়েলের পক্ষে কার্যকর পক্ষ হিসেবে দাঁড় করাবে।

প্রস্তাব অনুযায়ী, আইএসএফ ইসরায়েল ও মিসরের পাশাপাশি নতুন করে প্রশিক্ষিত ও যাচাইকৃত একটি ফিলিস্তিনি পুলিশ বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে সীমান্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে এবং হামাসসহ সকল অ-রাষ্ট্রীয় সশস্ত্র গোষ্ঠীর স্থায়ী নিরস্ত্রীকরণে ভূমিকা রাখবে। বর্তমানে গাজায় কার্যরত পুলিশ বাহিনী হামাসের অধীনেই পরিচালিত হয়।

জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মাইক ওয়াল্টজ জানান, আইএসএফ গাজায় নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণ, সন্ত্রাসী কাঠামো ভাঙন, অস্ত্র অপসারণ এবং ফিলিস্তিনি বেসামরিক মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিতে দায়িত্ব পালন করবে। পাশাপাশি গাজায় একটি অন্তর্বর্তীকালীন প্রশাসনিক কাঠামো—বোর্ড অব পিস (বিওপি)—গঠনেরও অনুমোদন দেওয়া হয়। এই বোর্ড একটি প্রযুক্তিনির্ভর, অরাজনৈতিক ফিলিস্তিনি কমিটির তত্ত্বাবধান করবে এবং যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজার পুনর্গঠন, শাসনব্যবস্থা এবং মানবিক সহায়তার সামগ্রিক তদারকি করবে।

দুই বছরের যুদ্ধের ক্ষয়ক্ষতির পর গাজা পুনর্গঠনের অর্থায়ন বিশ্বব্যাংকের তত্ত্বাবধানে একটি বিশেষ ফান্ডের মাধ্যমে পরিচালিত হবে। আইএসএফ ও বিওপি দু’টিই ফিলিস্তিনি কমিটি ও নতুন পুলিশ বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করবে।

প্রস্তাব পাসের পর ট্রাম্প একে “ঐতিহাসিক” আখ্যা দিয়ে দাবি করেন, এই সিদ্ধান্ত বিশ্বজুড়ে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে। তিনি বলেন, বোর্ড অব পিসের চূড়ান্ত সদস্যদের নাম শিগগিরই ঘোষণা করা হবে এবং তিনি নিজেই এর নেতৃত্ব দেওয়ার পরিকল্পনা করছেন।

নতুন খসড়া প্রস্তাবে প্রথমবারের মতো ফিলিস্তিনিদের আত্মনিয়ন্ত্রণ ও ভবিষ্যৎ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার একটি “বিশ্বাসযোগ্য পথরেখা” উল্লেখ করা হয়েছে—যা নিরাপত্তা পরিষদের বেশ কয়েকটি সদস্য দেশের জোরালো দাবির প্রতিফলন। তবে ইসরায়েল প্রকাশ্যেই ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠনের বিরোধিতা করে আসছে, যা ভবিষ্যৎ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার বাস্তব প্রয়োগে বড় বাধা হিসেবে দেখা হচ্ছে। গুরুত্বপূর্ণ আরব রাষ্ট্রগুলোও প্রস্তাবে আত্মনিয়ন্ত্রণের বিষয়টি স্পষ্টভাবে অন্তর্ভুক্ত করতে চাপ প্রয়োগ করেছে।

জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র আবারও জোর দিয়ে বলেন, প্রস্তাবটির ভাষা কাগজে সীমাবদ্ধ না রেখে দ্রুত বাস্তবে রূপান্তর জরুরি, যাতে দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের লক্ষ্যে একটি কার্যকর রাজনৈতিক প্রক্রিয়া শুরু হয়।

যুক্তরাষ্ট্র, ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ (পিএ) এবং মিসর, সৌদি আরব ও তুরকিসহ বেশ কয়েকটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ প্রস্তাবটির দ্রুত বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়েছে। পিএ এক বিবৃতিতে বলেছে, প্রস্তাবের ধারাগুলো “অবিলম্বে ও জরুরি ভিত্তিতে” কার্যকর করতে হবে।

রাশিয়া ও চীন ভেটো ব্যবহার না করলেও প্রস্তাবের অস্পষ্ট কাঠামো, জাতিসংঘের প্রতিফলনের সীমাবদ্ধতা এবং দুই রাষ্ট্র সমাধানের বিষয়ে দৃঢ় প্রতিশ্রুতি না থাকার কারণে তারা ভোটদানে বিরত থাকে। তাদের মতে, প্রস্তাবের গুরুত্বপূর্ণ অংশগুলো এখনও অস্পষ্ট এবং বাস্তবায়ন নিয়ে যথেষ্ট নিশ্চয়তা নেই।

এর আগে প্রস্তাবের প্রথম ধাপ—ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি এবং আটক ব্যক্তিদের বিনিময়—চলতি বছরের ১০ অক্টোবর কার্যকর হয়। ওয়াল্টজ এটিকে “অত্যন্ত ভঙ্গুর প্রথম ধাপ” হিসেবে উল্লেখ করেন। ট্রাম্পের পরিকল্পনা ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস-নেতৃত্বাধীন হামলার পর শুরু হওয়া ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধে এক ধরনের সাময়িক বিরতি সৃষ্টি করে। ওই হামলায় ১,২০০ মানুষ নিহত এবং ২৫১ জন জিম্মা হন। এর পরবর্তী ইসরায়েলি অভিযানগুলোতে এখন পর্যন্ত ৬৯,৪৮৩-এর বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে বলে হামাস-নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় দাবি করেছে।

-নাজমুল হাসান


প্রকাশ্যে যুবদল নেতাকে হত্যা নিয়ে বেরিয়ে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৮ ১০:৫৯:০৭
প্রকাশ্যে যুবদল নেতাকে হত্যা নিয়ে বেরিয়ে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য
ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর পল্লবীতে প্রকাশ্যে গুলি করে যুবদল নেতা ও পল্লবী থানা যুবদলের সদস্যসচিব গোলাম কিবরিয়াকে হত্যার ঘটনা এলাকাজুড়ে ব্যাপক উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে। সোমবার সন্ধ্যা পৌনে সাতটার দিকে সেকশন-১২ ব্লক-সি এলাকায় বিক্রমপুর হার্ডওয়্যার অ্যান্ড স্যানিটারি দোকানে বসে থাকা অবস্থায় হেলমেট পরা তিন দুর্বৃত্ত দোকানে ঢুকে খুব কাছ থেকে পরপর সাত রাউন্ড গুলি ছোড়ে। গুলির আঘাতে কিবরিয়া মাটিতে লুটিয়ে পড়লে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নিয়ে যান, যেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, মোটরসাইকেলে করে আসা দুর্বৃত্তরা দ্রুতগতিতে দোকানের ভেতরে ঢুকে মুহূর্তেই গুলি চালিয়ে পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থলে উপস্থিত লোকজনের সহায়তায় একজন হামলাকারীকে আটক করে পুলিশে দেয়া হয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে সাতটি গুলির খোসা উদ্ধার করে এবং ঘটনাটির পেছনে রাজনৈতিক বিরোধ না অন্য কোনো উদ্দেশ্য রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানায়।

হত্যাকাণ্ডের পরপরই আরেকটি নৃশংসতা প্রকাশ পায়। খুনি দল দোকান থেকে বের হয়ে দ্রুত পালাতে একটি ব্যাটারি চালিত রিকশায় ওঠে। কিন্তু রিকশার চার্জ কম থাকায় চালক আরিফ দ্রুত রিকশা চালাতে না পারায় ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে কোমরে গুলি করে পালিয়ে যায়। আহত রিকশাচালক আরিফকে পথচারী পিয়ারুল ইসলাম প্রথমে স্থানীয় ইসলামী হাসপাতালে এবং পরে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করেন। আহত আরিফ জানান, দুজন হেলমেটধারী ব্যক্তি তাকে দ্রুত রিকশা চালাতে চাপ দিচ্ছিলেন; কিন্তু রিকশার ব্যাটারি দুর্বল থাকায় তিনি গতি বাড়াতে পারেননি, এতে তারা গুলি করে পালিয়ে যায়।

এই হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে যুবদল ও বিএনপির নেতা-কর্মীরা হাসপাতালে ও পল্লবী এলাকায় বিক্ষোভ করেন এবং দাবি করেন যে এটি পরিকল্পিত রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড। তাদের অভিযোগ, ক্ষমতাসংগ্রামের বিদ্বেষ থেকেই এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে এবং হত্যাকারীদের দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে হবে।

পুলিশ জানায়, এই হত্যাকাণ্ড দলীয় কোন্দল, ব্যক্তিগত শত্রুতা নাকি বড় কোনো গোষ্ঠীর ছক সব দিকই তদন্ত করা হচ্ছে। আটক দুর্বৃত্তকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে এবং তার তথ্যের ভিত্তিতে বাকি হামলাকারীদের ধরতে অভিযান চলছে। এখনো মামলা হয়নি, তবে নিহতের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে।

-শরিফুল


মতিঝিল-পল্টনের আসনে হেভিওয়েট বনাম নবাগত: আলোচনায় ঢাকা-৮

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৭ ২১:৩৯:৩৫
মতিঝিল-পল্টনের আসনে হেভিওয়েট বনাম নবাগত: আলোচনায় ঢাকা-৮
সত্য নিউজ গ্রাফিক্স

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে সারাদেশের মানুষের আগ্রহ বাড়তে শুরু করেছে। বিভিন্ন আসনে নানা ধরনের রাজনৈতিক সমীকরণ নিয়ে আলোচনা চলছে। এর মধ্যে রাজধানীর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ও রাজনৈতিকভাবে সংবেদনশীল আসন ঢাকা-৮ (শাহবাগ, মতিঝিল, রমনা, পল্টন ও শাহজাহানপুর) এবার ভিন্ন কারণে আলোচনায় এসেছে। এই আসনে অভিজ্ঞতার বিপরীতে তারুণ্য এবং প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থীর এক জমজমাট লড়াই দেখার অপেক্ষায় আছেন ভোটাররা।

কেন গুরুত্বপূর্ণ ঢাকা-৮

ঢাকা-৮ আসনকে প্রায়শই রাজধানীর 'রাজনৈতিক স্নায়ুকেন্দ্র' বা 'হার্ট' হিসেবে বিবেচনা করা হয়। দেশের প্রধান প্রশাসনিক কেন্দ্র সচিবালয়, প্রধান বাণিজ্যিক এলাকা মতিঝিল, রাজনৈতিক সমাবেশের কেন্দ্রবিন্দু পল্টন ময়দান এবং দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি বড় অংশ এই আসনেই পড়েছে। তাই এই আসনের নির্বাচনী ফলাফল সব সময়ই একটি বিশেষ তাৎপর্য বহন করে।

বিএনপির 'হেভিওয়েট' প্রার্থী মির্জা আব্বাস

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এই গুরুত্বপূর্ণ আসনে তাদের অন্যতম শীর্ষ নেতা ও দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস উদ্দিন আহমেদকে (মির্জা আব্বাস) প্রাথমিক মনোনয়ন দিয়েছে। তিনি ঢাকার সাবেক মেয়র এবং বিএনপির একজন পোড় খাওয়া রাজনীতিবিদ হিসেবে পরিচিত। ঢাকার রাজনীতিতে তার দীর্ঘদিনের বিচরণ এবং দলের ভেতরে ও ভোটারদের মধ্যে তার একটি শক্ত ভিত্তি রয়েছে। মির্জা আব্বাসের মতো একজন 'হেভিওয়েট' প্রার্থীর অংশগ্রহণ এই আসনের নির্বাচনকে স্বাভাবিকভাবেই গুরুত্বের শীর্ষে নিয়ে এসেছে।

স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় হাদি

অন্যদিকে, বিএনপির এই হেভিওয়েট প্রার্থীর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে মাঠে নেমেছেন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি। তিনি এই আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে লড়ছেন। একজন তরুণ মুখ হিসেবে এবং স্বতন্ত্র পরিচয়ে তিনি ভোটারদের, বিশেষত নতুন প্রজন্মের ভোটারদের, নজর কাড়ার চেষ্টা করছেন।

শরিফ ওসমান হাদি এরই মধ্যে তার নির্বাচনী প্রচারণার মাধ্যমে আলোচনায় এসেছেন। গত ১৫ নভেম্বর মতিঝিলের এ জি বি কলোনিতে প্রচারণা চালানোর সময় তার গায়ে দুর্বৃত্তরা ময়লা পানি ছুড়ে মারে বলে অভিযোগ ওঠে। এই ঘটনার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে, যেখানে হাদিকে বলতে শোনা যায়, "ভাই ময়লা পানি যে মারছেন আরও মারতে পারেন, সমস্যা নেই মারেন...।" প্রচারণার শুরুতেই এই ধরনের বাধার শিকার হওয়ায় তিনি ভোটারদের সহানুভূতির পাশাপাশি তার দৃঢ় মনোবলের কারণেও আলোচনায় থাকছেন।

অভিজ্ঞতা বনাম নতুন ধারার রাজনীতি

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ঢাকা-৮ আসনের এই লড়াইটি হতে যাচ্ছে 'অভিজ্ঞতা বনাম নতুন মুখ'-এর এক আদর্শ উদাহরণ। একদিকে মির্জা আব্বাস তার দীর্ঘ রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা এবং দলের শক্তিশালী সাংগঠনিক কাঠামোর ওপর নির্ভর করে লড়বেন। অন্যদিকে, শরিফ ওসমান হাদি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত দলগুলোর বাইরের ভোটারদের এবং পরিবর্তনের পক্ষে থাকা তরুণদের ভোট টানার চেষ্টা করবেন।

মতিঝিল, পল্টন ও শাহবাগের মতো বৈচিত্র্যময় এলাকার ভোটাররা কাকে বেছে নেবেন, তা নিয়ে এখনই জল্পনা-কল্পনা শুরু হয়ে গেছে। এই আসনে যেমন ব্যবসায়ী ও সরকারি চাকরিজীবীদের একটি বড় ভোটব্যাংক রয়েছে, তেমনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার তরুণ শিক্ষার্থী ও প্রগতিশীল ভোটারদেরও একটি বড় প্রভাব রয়েছে। সব মিলিয়ে, ঢাকা-৮ আসনের এই প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ লড়াইটি এবারের নির্বাচনের অন্যতম আকর্ষণীয় একটি ইভেন্ট হতে চলেছে।


২৮ নেতার বহিষ্কারাদেশ তুলে নিল বিএনপি, রিজভীর বিজ্ঞপ্তিতে ঘোষণা

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৭ ২১:১৯:৩০
২৮ নেতার বহিষ্কারাদেশ তুলে নিল বিএনপি, রিজভীর বিজ্ঞপ্তিতে ঘোষণা
ছবিঃ সংগৃহীত

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) তাদের ২৮ জন নেতার ওপর থেকে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে নিয়েছে। এর আগে, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ এবং দলের নীতি ও আদর্শের পরিপন্থী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে তাদের বহিষ্কার করা হয়েছিল। নেতারা আবেদন করার পর, দলীয় সিদ্ধান্তে তাদের বহিষ্কারাদেশ তুলে নেওয়া হয়। সোমবার (১৭ নভেম্বর) দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এই ২৮ জনের মধ্যে একটি বড় অংশই গাজীপুর মহানগর এলাকার। তাদের মধ্যে রয়েছেন গাজীপুর মহানগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. তানভীর আহম্মেদ, সাবেক অর্থবিষয়ক সম্পাদক মো. ছবদের হাসান, সাবেক সদস্য মো. আবুল হাশেম, খায়রুল আলম এবং মো. মনির হোসেন (মাটি মুনির)।

আরও রয়েছেন বাসন মেট্রো থানা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. মনির হোসেন মনির, বাসন থানা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোসলেম উদ্দিন চৌধুরী মুসা, বাসন থানার ১৭ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সভাপতি মো. রফিকুল ইসলাম রাতা এবং গাজীপুর মেট্রো থানা বিএনপির সাবেক সদস্য আনোয়ার সরকার।

একই এলাকার ১১, ১২ ও ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ফিরোজা আক্তার এবং ২৮, ২৯ ও ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হাসিনা আক্তার বীথিও দলে ফিরেছেন। এছাড়া ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডের বিএনপি নেতা মো. মাহাফুজুর রহমান, ১৯ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহীন আলম এবং ১১ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট আলমের বহিষ্কারাদেশও প্রত্যাহার করা হয়েছে।

গাজীপুর ছাড়াও দেশের অন্যান্য জেলার বেশ কয়েকজন নেতার প্রাথমিক সদস্যপদ ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই তালিকায় আছেন বরিশাল দক্ষিণ জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলার নিয়ামতি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আব্দুস সালাম মৃধা, দিনাজপুর জেলা বিএনপির উপদেষ্টা মো. রেজওয়ানুল ইসলাম রিজু, কুমিল্লা উত্তর জেলার মেঘনা উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মো. রমিজ উদ্দিন লন্ডনি ও যুগ্ম আহ্বায়ক দিলারা শিরিন এবং সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক সহ স্থানীয় সরকার বিষয়ক সম্পাদক আরিফুল ইসলাম জুয়েল।

আরও রয়েছেন নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সহ সভাপতি এস এম আসলাম ও সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক টি এইচ তোফা, সিরাজগঞ্জ জেলার বেলকুচি উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুর রাজ্জাক মন্ডল, টাঙ্গাইল জেলার মির্জাপুর উপজেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল-মামুন সিদ্দিকী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার ভোলাহাট উপজেলা বিএনপির সাবেক কোষাধ্যক্ষ মো. কামাল উদ্দিন এবং ছাতক উপজেলা বিএনপির সাবেক সদস্য মো. ইজাজুল হক রনি।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও দুটি বিশেষ সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়েছে। হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি সৈয়দ লিয়াকত হাসান, যিনি এর আগে স্বেচ্ছায় দল থেকে পদত্যাগ করেছিলেন, তার সেই পদত্যাগপত্র আবেদনের প্রেক্ষিতে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

এছাড়াও, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে দিনাজপুর জেলার ফুলবাড়ি উপজেলা বিএনপির সভাপতি অধ্যক্ষ মো. খুরশিদ আলমের (মতি) ওপর যে স্থগিতাদেশ ছিল, তা প্রত্যাহার করে তাকে বিএনপির স্বপদে পুনর্বহাল করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, এর আগেও বিভিন্ন সময়ে বিএনপি বহিষ্কৃত বেশ কয়েকজন নেতার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করেছিল।


হাসিনার মৃত্যুদণ্ড: আওয়ামী লীগের ভবিষ্যৎ কী?

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৭ ২০:৫৩:০৫
হাসিনার মৃত্যুদণ্ড: আওয়ামী লীগের ভবিষ্যৎ কী?
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা। ফাইল ছবি: এএফপি

২০১০ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের সময়েই মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত যুদ্ধাপরাধের বিচার করার উদ্দেশ্যে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়েছিল। এক দশকের বেশি সময় পর, সেই একই আদালতেই জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় দোষী সাব্যস্ত হলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনা।

এই রায়ের পর এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে, এটি কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষিত দল আওয়ামী লীগের ওপর কী ধরনের প্রভাব ফেলবে? শেখ হাসিনা এখনও দলটির প্রধান। এই রায়ের ফলে তার রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ কেমন দাঁড়াবে, তা নিয়েও বিশ্লেষণ শুরু হয়েছে।

গত কয়েক মাস ধরেই বাংলাদেশ সরকার শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনার (প্রত্যর্পণ) জন্য ভারতের কাছে দাবি জানিয়ে আসছে। এর আগে আদালত অবমাননার একটি মামলায় সাজা হওয়ার পরও তাকে প্রত্যর্পণের জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছিল। কিন্তু ভারত সেই অনুরোধে কোনো আনুষ্ঠানিক জবাব দেয়নি।

এই প্রসঙ্গে বিবিসির বাংলা বিভাগের সম্পাদক মীর সাব্বির লিখেছেন, আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। সেই নির্বাচনে যদি একটি নতুন সরকার ক্ষমতায় আসে এবং তারা শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণের বিষয়ে জোরালো দাবি তোলে, অথবা তিনি যেন ভারতে বসে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালাতে না পারেন সেজন্য চাপ সৃষ্টি করে, তবে সেই নির্বাচিত সরকারের অনুরোধ উপেক্ষা করা ভারতের জন্য আরও কঠিন হয়ে উঠতে পারে।

এই রায় ঘোষণার আগেই আদালত গণমাধ্যমে শেখ হাসিনার 'উসকানিমূলক' বক্তব্য প্রচারের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করেছিল, যার নিন্দা জানিয়েছিল আওয়ামী লীগ। এর পাশাপাশি, অন্তর্বর্তী সরকার একটি নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে দল হিসেবে আওয়ামী লীগের কার্যক্রমও নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে।

গণঅভ্যুত্থানে সরকার পতনের পর থেকেই আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিক অঙ্গনে প্রায় 'অদৃশ্য' দেখা যাচ্ছে। দলটির শীর্ষ পর্যায়ের বেশিরভাগ নেতাই বর্তমানে নির্বাসনে রয়েছেন। তাদের কেউ কেউ ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন, আবার অনেকেই দেশে গ্রেপ্তার হয়েছেন।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, আজকের এই রায়ের পর যদি শেখ হাসিনার বক্তব্য প্রচার বা আওয়ামী লীগের কার্যক্রমের ওপর আরও নতুন বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়, তবে দলটি আরও বেশি চাপের মুখে পড়বে। যদিও দলটি দাবি করছে যে, তাদের নেতৃত্ব নিয়ে কোনো অভ্যন্তরীণ বিতর্ক নেই, তবে এখন দেখার বিষয় হলো, এই ক্রমবর্ধমান আইনি সীমাবদ্ধতা এবং প্রত্যর্পণের কূটনৈতিক চাপের মুখে আগামী দিনে দলটি ভিন্ন কোনো কৌশল গ্রহণ করতে বাধ্য হয় কি না।

পাঠকের মতামত:

ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গড়তে হলে রাষ্ট্রকে অবশ্যই তার সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা পুনরুদ্ধার করতে হবে

ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গড়তে হলে রাষ্ট্রকে অবশ্যই তার সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা পুনরুদ্ধার করতে হবে

রাষ্ট্রের ধারণাটি একসময় কেবল প্রশাসনিক ক্ষমতা, আইনের শাসন এবং নিরাপত্তা প্রদানের সঙ্গে সম্পর্কিত ছিল। কিন্তু আধুনিক বিশ্বে রাষ্ট্রের ভূমিকা এখন... বিস্তারিত