৩১ লাখ শিক্ষার্থীর জন্য সপ্তাহে পাঁচ দিন পুষ্টিকর খাবার

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৬ ১১:২০:৩৯
৩১ লাখ শিক্ষার্থীর জন্য সপ্তাহে পাঁচ দিন পুষ্টিকর খাবার
ছবি: সংগৃহীত

বহু প্রতীক্ষা, নীতিগত প্রস্তুতি ও কয়েক দফা সময় পরিবর্তনের পর অবশেষে আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হলো দেশের সবচেয়ে বড় স্কুল–ভিত্তিক পুষ্টিকর্মসূচি ‘সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ফিডিং কর্মসূচি’। শনিবার নাটোরের গুরুদাসপুরের খুবজীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার এই কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। দীর্ঘদিন ধরে আলোচনায় থাকা এই কর্মসূচিটি দেশের প্রাথমিক শিক্ষায় নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে দেবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। শিক্ষা ও পুষ্টির সমন্বয়ে এটি হবে সরকারের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনী।

কর্মসূচির আওতায় ২০২৭ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ১৫০টি উপজেলার ১৯ হাজার ৪১৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩১ লাখ ১৩ হাজার শিক্ষার্থী সপ্তাহে পাঁচ দিন পুষ্টিসমৃদ্ধ খাদ্য পাবে। এ খাদ্যের তালিকায় রয়েছে ফর্টিফায়েড বিস্কুট, মৌসুমি ফল বা কলা, বনরুটি, সেদ্ধ ডিম ও ইউএইচটি দুধ। প্রতিটি খাদ্য উপাদান শিশুর দৈনিক পুষ্টিচাহিদার নির্দিষ্ট অংশ পূরণে সহায়তা করবে। বিশেষ করে ফর্টিফায়েড বিস্কুট ও দুধ শিশুদের শক্তি, আয়রন, ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন ঘাটতি পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, দেশের প্রাথমিক শিক্ষার মান উন্নত করতে হলে পুষ্টিহীনতা দূর করা অত্যন্ত জরুরি। ক্লাস চলাকালে ক্ষুধা শিশুদের মনোযোগ নষ্ট করে এবং শেখার ক্ষমতা কমিয়ে দেয়। এই ফিডিং কর্মসূচি শিক্ষার্থীদের শারীরিক–মানসিক বিকাশে কার্যকর ভূমিকা রাখবে এবং বিদ্যালয়ে উপস্থিতি বাড়াবে। তিনি বলেন, শিশুদের নিয়মিত পুষ্টিকর খাবার পাওয়ার নিশ্চয়তা দিলে বিদ্যালয়ের প্রতি তাদের আগ্রহ বহুলাংশে বৃদ্ধি পাবে।

সরকার ও প্রকল্প সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা আশা করছেন, এই কর্মসূচি বাস্তবায়ন হলে বিদ্যালয়ে নিয়মিত উপস্থিতির হার ৮০ শতাংশের বেশি থাকবে। পাশাপাশি ঝরে পড়ার হার উল্লেখযোগ্যভাবে কমবে। বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন, বিদ্যালয়ে প্রকৃত ভর্তির হার প্রতি বছর কমপক্ষে ১০ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে এবং শিশুদের স্কুলে ধরে রাখার হার ৯৯ শতাংশে উন্নীত হবে। একই সঙ্গে, শিক্ষার্থীদের পুষ্টিকর খাবার গ্রহণের হার ৯০ শতাংশের বেশি বৃদ্ধি পাবে, যা ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সুস্থ করে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

উদ্বোধনের পর উপদেষ্টা নাটোর প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগের উদ্যোগে আয়োজিত ‘প্রাথমিক শিক্ষার গুণগতমান উন্নয়নে শিক্ষা সংশ্লিষ্ট অংশীজনের ভূমিকা’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় অংশ নেন। গুরুদাসপুর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে আয়োজিত এই সভায় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু তাহের মো. মাসুদ রানা, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবু নূর মো. শামসুজ্জামান এবং অতিরিক্ত মহাপরিচালক মোহাম্মদ আতিকুর রহমান বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। সরকারি নীতিমালার প্রয়োগ, মাঠপর্যায়ের চ্যালেঞ্জ এবং শিক্ষার বাস্তব চিত্র তুলে ধরতে এই মতবিনিময় সভাটি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে।

ফিডিং কর্মসূচির ব্যয় বিবেচনায় প্রকল্পটিকে অত্যন্ত বৃহৎ আকারের বলা হচ্ছে। মোট বরাদ্দ রাখা হয়েছে পাঁচ হাজার ৪৫২ কোটি টাকার বেশি, যার ৯৭ শতাংশ ব্যয় হবে খাদ্য সংগ্রহ ও সরবরাহে। ২০২৫–২৬ অর্থবছরেই প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ ধরা হয়েছে দুই হাজার ১৬৪ কোটি টাকার বেশি। দেশের প্রাথমিক শিক্ষাব্যবস্থাকে সহায়তা করা এবং অপুষ্টি রোধে এটি দেশের ইতিহাসে অন্যতম বড় বিনিয়োগ।

তবে কর্মসূচিটি বাস্তবায়নে শুরুতেই কিছু জটিলতা দেখা দেয়। চলতি বছরের জানুয়ারিতে কর্মসূচি উদ্বোধনের পরিকল্পনা থাকলেও প্রশাসনিক ও অর্থনৈতিক জটিলতার কারণে তা কয়েক দফা পিছিয়ে যায়। এরপর সেপ্টেম্বরেও কর্মসূচি শুরু করার কথা ছিল, কিন্তু টেন্ডারজনিত সমস্যার কারণে আবারও তা স্থগিত হয়। সব জটিলতা কাটিয়ে শেষ পর্যন্ত শনিবার এটি আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হওয়ায় স্বস্তি প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবু নূর মো. শামসুজ্জামান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নাটোরের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক আরিফ হোসেন এবং জাতিসংঘের অধীনস্থ ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম–ডব্লিউএফপি বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি ও কান্ট্রি ডিরেক্টর ডোমেনিকো স্কালপেলি। তিনি বলেন, বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশের জন্য স্কুল–ফিডিং কর্মসূচি ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সুস্থ–সবল করতে অত্যন্ত কার্যকর। প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ অনুষ্ঠানের স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন।

-শরিফুল


নির্বাচনের আগে সংলাপ ম্যারাথন- সকালে ৬ দল, বিকেলে আরও ৬ দল

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৬ ১১:১৪:৩১
নির্বাচনের আগে সংলাপ ম্যারাথন- সকালে ৬ দল, বিকেলে আরও ৬ দল
ফাইল ছবি

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে নির্বাচন কমিশন ধাপে ধাপে যে ধারাবাহিক সংলাপ আয়োজন করছে, তার দ্বিতীয় দিনের বৈঠক আজ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। মূলত বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মতামত গ্রহণ, নির্বাচনব্যবস্থার স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা, নির্বাচনী পরিবেশ স্থিতিশীল রাখা এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজনই এই সংলাপের উদ্দেশ্য। নির্বাচন কমিশন মনে করছে, বিস্তৃত পরিসরের রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনায় বসলে নির্বাচন প্রক্রিয়া আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক হবে এবং সম্ভাব্য সংকটগুলো আগেভাগেই শনাক্ত ও সমাধানের পথ সুস্পষ্ট হবে।

রোববার সকালেই নির্বাচন ভবনে প্রথম পর্বের সংলাপ শুরু হয়। সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ছয়টি রাজনৈতিক দল ইসির সঙ্গে আলোচনায় অংশ নেয়। এ সময় গণফোরাম, গণফ্রন্ট, ইসলামীক ফ্রন্ট বাংলাদেশ, ইসলামী ঐক্যজোট, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি (বিএসপি) এবং বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। এসব দল দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে ভিন্ন ভিন্ন আদর্শ, তাত্ত্বিক অবস্থান ও সংগঠনগত কাঠামো নিয়ে কাজ করলেও নির্বাচন প্রসঙ্গে তাদের গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ ও দৃষ্টিভঙ্গি ইসির বিবেচনায় ভূমিকা রাখবে বলে মনে করা হচ্ছে।

বিকেলের দ্বিতীয় অংশে, বেলা ২টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত আরও ছয়টি দলের সঙ্গে ইসির সংলাপ অনুষ্ঠিত হবে। এসব দলের মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (বাংলাদেশ জাসদ), বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (বাংলাদেশ ন্যাপ), তৃণমূল বিএনপি, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। এদের মধ্যে কেউ কেউ জাতীয় রাজনীতিতে দীর্ঘদিন সক্রিয় ভূমিকা পালন করে আসছে, আবার কেউ অপেক্ষাকৃত নতুন হলেও মাঠ পর্যায়ে তাদের জনপ্রিয়তা বিবেচ্য।

রাজনৈতিক দলগুলোর অভিযোগ, প্রত্যাশা, দাবি, নির্বাচনী পরিবেশ, পর্যবেক্ষকের উপস্থিতি, প্রবাসী ভোট, প্রশাসনের ভূমিকা, ইভিএম ব্যবহারের অনিশ্চয়তা, ভোটের নিরাপত্তা ও আস্থা পুনরুদ্ধার—এসবই এই সংলাপের আলোচনার মূল বিষয় হিসেবে উঠে আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কিছু দল আগেই জানিয়েছে যে স্বচ্ছ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে বিরোধী প্রার্থীদের সমান সুযোগ তৈরি করা, প্রশাসনিক নিরপেক্ষতা ও নিরাপত্তা বলয়ের জবাবদিহিতা বাড়ানো জরুরি।

আগামীকাল সোমবারও নির্বাচন কমিশন আরও ১২টি দলের সঙ্গে বৈঠকে বসবে। সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত সংলাপে অংশ নেবে বাংলাদেশ লেবার পার্টি, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি, বিকল্পধারা বাংলাদেশ, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি এবং বাংলাদেশ মুসলিম লীগ (বিএমএল)। এসব দল যদিও আকারে ছোট, তবুও তারা জাতীয় নির্বাচন ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে আসছে।

এদিন বিকেলে দ্বিতীয় দফায় সংলাপে উপস্থিত হবে আরও ছয়টি দল। দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত আলোচনা হবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি), বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, খেলাফত মজলিস এবং জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা)-র প্রতিনিধিদের সঙ্গে। বিশেষ করে জামায়াত ও এবি পার্টির মতো বিতর্কিত রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ নির্বাচনী পরিবেশ নিয়ে নতুন আলোচনা সৃষ্টি করবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।

নির্বাচন কমিশন বলছে, এই সংলাপের মাধ্যমেই তারা নির্বাচনের প্রস্তুতি চূড়ান্ত করবে এবং সব রাজনৈতিক দলের মতামত পর্যালোচনা করে একটি গ্রহণযোগ্য নীতিমালা প্রণয়ন করবে। কমিশনের মতে, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করা তাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। বিভিন্ন দলের দাবি যদি গঠনমূলক হয়, তাহলে সেগুলো নির্বাচনী রোডম্যাপে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।

-শরিফুল


পুলিশের মনোবল ও দক্ষতা বেড়েছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৫ ১৮:৪৯:০৯
পুলিশের মনোবল ও দক্ষতা বেড়েছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার
সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। ছবি : সংগৃহীত

স্বরাষ্ট্র ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, পুলিশের দক্ষতা এবং তাদের মানসিক শক্তি ও মনোভাব আগের চেয়ে উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। শনিবার (১৫ নভেম্বর) বিকেলে কুয়াকাটার ট্যুরিজম পার্ক পরিদর্শনের পর তিনি সাংবাদিকদের কাছে এই মন্তব্য করেন।

দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলতে গিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, দেশের সার্বিক অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে এবং ভবিষ্যতেও এই স্থিতিশীলতা বজায় থাকবে। তিনি একটি সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের ওপর জোর দেন। জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, একটি সফল ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে হলে রাজনীতিবিদ, সাধারণ জনগণ, নির্বাচন কমিশন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং সাংবাদিকসহ সবাইকে সমন্বিতভাবে প্রচেষ্টা চালাতে হবে।

কৃষি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা হিসেবে তিনি দেশের কৃষি খাত নিয়েও কথা বলেন। তিনি জানান, এ বছর দেশে আমনের উৎপাদন ভালো হয়েছে। কৃষকদের 'জাতির মেরুদণ্ড' হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের জীবন-জীবিকা তাদের উৎপাদিত ফসলের ওপরই নির্ভরশীল। তবে তিনি আক্ষেপ করে বলেন, এই কৃষকদের সুখ-দুঃখের কথা অধিকাংশ সময়েই কেউ তুলে ধরে না।

সমুদ্রসীমার নিরাপত্তা বিষয়েও উপদেষ্টা কথা বলেন। তিনি জানান, বাংলাদেশ কোস্টগার্ড এবং নৌবাহিনী সমুদ্র নিরাপত্তায় অত্যন্ত সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে। তবে, অনেক সময় বাংলাদেশি জেলেরা মাছ ধরতে গিয়ে নিজেদের অজান্তেই মিয়ানমারের জলসীমায় ঢুকে পড়েন এবং সেসময় তারা আটক হন বলে তিনি উল্লেখ করেন।

এই সময় তার সাথে পটুয়াখালী জেলা পুলিশ সুপার আনোয়ার জাহিদ, আনসার ও ভিডিপির বিভাগীয় উপ-মহাপরিচালক আব্দুস সামাদ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সমীর সরকার, পটুয়াখালী ব্যাটালিয়নের ব্যাটালিয়ন কমান্ডার (সিও) সদন চাকমা, জেলা কমান্ডার শফিকুর রহমান, সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইয়াসিন সাদেক এবং কুয়াকাটা রিজিয়নের এডিশনাল ডিআইজি অর্নিমান চাকমাসহ স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।


প্রবাসীরাও এবার ভোট দেবেন, জেনে নিন সহজ নিয়ম

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৫ ১২:২১:৩৯
প্রবাসীরাও এবার ভোট দেবেন, জেনে নিন সহজ নিয়ম
ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের নির্বাচন ব্যবস্থায় বড় এক পরিবর্তন আসছে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে। প্রথমবারের মতো বিদেশে অবস্থানরত প্রবাসী বাংলাদেশিরা দেশের নির্বাচনে ভোট দেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে থাকা লাখো প্রবাসীর ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে নির্বাচন কমিশন (ইসি) চালু করছে ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ নামের একটি বিশেষ মোবাইল অ্যাপ। এই অ্যাপের মাধ্যমে নিবন্ধন সম্পন্ন হলেই ডাক বিভাগের মাধ্যমে প্রবাসী ভোটারের ঠিকানায় পাঠানো হবে ব্যালট পেপার।

ইসির ব্যাখ্যা অনুযায়ী, প্রবাসী ভোটাররা যেখানেই থাকুন, তাদের ঠিকানায় ব্যালট পৌঁছানোর পর ভোট দিয়ে রিটার্ন খামের মাধ্যমে সেটি পাঠাতে পারবেন সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে। তবে ভোট দেওয়া থেকে ব্যালট ফেরত পাঠানোর পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে সময় লাগতে পারে ১৫ থেকে ৩০ দিন। এ জন্যই বিদেশে পাঠানো ব্যালটে থাকবে দেশের সব রাজনৈতিক দল ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের জন্য বরাদ্দ ১১৯টি প্রতীক, পাশাপাশি থাকবে ‘না ভোট’ দেওয়ার সুযোগ। কোনো আসনে যদি মাত্র একজন প্রার্থী লড়াই করেন, সেই আসনের প্রবাসী ভোটাররাই শুধুমাত্র ‘না ভোট’ দিতে পারবেন।

ইসির অতিরিক্ত সচিব কে এম আলী নেওয়াজ জানিয়েছেন, অ্যাপে নিবন্ধন সম্পন্ন করলেই ভোটারের তথ্য যাবে সংশ্লিষ্ট আসনের রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে। প্রার্থী চূড়ান্ত হওয়ার পর অ্যাপের মাধ্যমেই ভোটার নিজের আসনের প্রার্থীদের তালিকা দেখতে পাবেন এবং পছন্দের প্রতীকে টিক দিয়ে ব্যালট পাঠাতে পারবেন। ডাক বিভাগ প্রবাসীদের কাছে ব্যালট পাঠানো থেকে শুরু করে রিটার্নিং অফিসে পৌঁছানো পর্যন্ত পুরো দায়িত্ব পালন করবে। ভোটারপ্রতি ব্যয় ধরা হয়েছে ৭০০ টাকা।

নিবন্ধন প্রক্রিয়া শুরু হবে ১৮ নভেম্বর থেকে। অ্যাপে প্রবেশ করতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রয়োজন হবে একটি আন্তর্জাতিক মোবাইল সিমকার্ড, কারণ অ্যাপে জিও–লোকেশন সক্রিয় থাকবে। ফলে বাংলাদেশের ভেতর থেকে কোনভাবেই অ্যাপটি চালানো সম্ভব হবে না। অ্যাপে মোবাইল নম্বর প্রবেশ করালে আসবে একটি ওটিপি, এরপর জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) ও ফেসিয়াল রিকগনিশন মিলিয়ে পরিচয় নিশ্চিত করা হবে। এনআইডির ছবির সঙ্গে ৭০ শতাংশ মিল থাকলেই নিবন্ধন সফল হবে। পাসপোর্ট থাকলে সেটির ছবিও আপলোড করতে বলা হবে, তবে এটি বাধ্যতামূলক নয়।

বিদেশে থাকা ঠিকানা নিশ্চিত করে নিবন্ধন সম্পন্ন হলে ভোটারের তথ্য সরাসরি রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে যায় এবং পৃথক প্রবাসী ভোটার তালিকা প্রস্তুত হয়। ইসির ধারণা, নিবন্ধন চলমান থাকতেই ঘোষণা হবে জাতীয় নির্বাচনের তফসিল, এরপর শুরু হবে ব্যালট পাঠানোর কাজ। খামে পৌঁছানো ব্যালট পেপার পেয়ে ভোটার ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ অ্যাপে প্রবেশ করবেন এবং কিউআর কোড স্ক্যান করে নিজের আসনের প্রার্থী তালিকা দেখবেন। তখনই ভোট দেওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হবে।

ভোট দেওয়ার পর ব্যালট রিটার্ন খামে ভরে নিকটস্থ পোস্ট অফিসে জমা দিতে হবে। ডাকমাশুল আগে থেকেই পরিশোধিত থাকবে। তবে ব্যালট পেপারের সঙ্গে থাকা ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করতে ভুললে সেই ভোট বাতিল হবে। নির্ধারিত ভোটগ্রহণের দিন বিকেল ৪টার আগেই রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে পৌঁছাতে পারলে সেটি বৈধ ধরা হবে। এর পর পৌঁছানো ব্যালট গণনায় আসবে না।

ইসি জানায়, সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো সময়মতো ব্যালট পৌঁছানো, প্রার্থিতা বাতিল বা পুনর্বহাল হলে ব্যালট গণনা বিষয়ক জটিলতা, এবং বিদেশে ব্যালট ডেলিভারির সময় নির্ধারণ। কেউ যদি প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার পর তার প্রার্থিতা বাতিল হয়, কিংবা আদালতের রায়ে পুনর্বহাল হয় সেই আসনের প্রবাসী ভোট গণনা করা হবে না।

প্রবাসীদের পাশাপাশি এবার প্রথমবারের মতো দেশের সরকারি কর্মচারী, ৭১টি কারাগারের বন্দি এবং কয়েদিরাও পোস্টাল ব্যালটে ভোট দেওয়ার সুযোগ পাচ্ছে। এদের জন্যও আলাদা নিবন্ধন প্রক্রিয়া থাকবে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

-রফিক


সংঘাতের ছায়ায় দম্পতির শোচনীয় পরিণতি: কোনাবাড়িতে স্ত্রী নিহত, স্বামী গুরুতর আহত

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৫ ১১:৫৬:০১
সংঘাতের ছায়ায় দম্পতির শোচনীয় পরিণতি: কোনাবাড়িতে স্ত্রী নিহত, স্বামী গুরুতর আহত
ছবিঃ সংগৃহীত

গাজীপুরের কোনাবাড়ি এলাকায় শনিবার ভোরে এক দম্পতির ঘরে ঘটে যাওয়া মর্মান্তিক এক ঘটনার রেশ এখনো স্থানীয়দের মনে প্রচণ্ড শোক ও উদ্বেগ তৈরি করে চলছে। ভাড়া বাসার একটি কক্ষে গলা কাটা অবস্থায় উদ্ধার করা হয় ৩৫ বছর বয়সী রেহিমা খাতুনের নিথর দেহ। তাঁর পাশেই পড়ে ছিলেন রক্তাক্ত অবস্থায় স্বামী ইমরান হোসেন—জীবন-মৃত্যুর সীমানায় লড়াইরত। পারিবারিক ঝগড়া ও মানসিক টানাপোড়েনের জট খুলতে এখন তদন্তে নেমেছে পুলিশ।

নিহত রেহিমা কোনাবাড়ির একটি পোশাক কারখানায় কর্মরত ছিলেন। তাঁর স্বামী ইমরান হোসেন পেশায় কসাই; তিনি ময়মনসিংহের সুরুজ আলীর ছেলে। স্থানীয়দের ভাষ্য ও পুলিশের প্রাথমিক ধারণা—সম্পর্কের ভেতরে থাকা নানা অভিমান, আর্থিক চাপ ও পারিবারিক অস্থিরতা দীর্ঘদিন ধরেই দম্পতিকে ভারাক্রান্ত করে রেখেছিল। সেই অস্থিরতারই বিস্ফোরণ কি এমন ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনল?

কোনাবাড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সালাউদ্দিন জানান, দম্পতি তাঁদের ছোট মেয়েকে নিয়ে ‘একতা ভিলা’ নামে একটি পাঁচতলা ভবনের ওপরতলার ভাড়া বাসায় থাকতেন। পুলিশ ধারণা করছে—পারিবারিক ঝগড়ার এক পর্যায়ে উত্তেজনা চরমে পৌঁছায় এবং তখনই ইমরান ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাঁর স্ত্রীকে আঘাত করেন। পরে একই অস্ত্র দিয়ে নিজের গলায় আঘাত করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন বলেও প্রাথমিক তথ্য পাওয়া যাচ্ছে।

শনিবার সকালে ভবনের ভেতর থেকে চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা দৌড়ে এসে রক্তাক্ত অবস্থায় দুজনকে দেখতে পান। পরে পুলিশে খবর দিলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে রেহিমার দেহ উদ্ধার করে এবং গুরুতর আহত ইমরানকে হাসপাতালে ভর্তি করায়। রেহিমার মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাস্থল থেকে বেশ কিছু আলামত জব্দ করা হয়েছে। তদন্তের অংশ হিসেবে প্রতিবেশী, স্বজন এবং ভাড়া বাসার মালিকের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে। তবে ইমরান সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত ঘটনার পূর্ণ বিবরণ পাওয়া সম্ভব হবে না।

এই নির্মম ঘটনা শুধু একটি পরিবারের দুর্ভাগ্যজনক ভাগ্যকেই সামনে আনে না; বরং সাম্প্রতিক সময়ে দেশজুড়ে বাড়তে থাকা দাম্পত্য উত্তেজনা, মানসিক অবসাদ, আর্থিক অস্থিরতা এবং যোগাযোগহীনতার ভয়াবহ পরিণতি সম্পর্কে নতুন করে সতর্ক করে। বিশেষজ্ঞদের মতে, সম্পর্কের ভেতর লুকিয়ে থাকা মানসিক চাপ দীর্ঘদিন ধরে উপেক্ষিত হলে তা কখনো কখনো ভয়ংকর রূপ নেয়।

গাজীপুরের কোনাবাড়ির এই ট্র্যাজেডি সেই কঠিন বাস্তবতার আরেক নির্মম উদাহরণ।

-আলমগীর হোসেন


ইতিহাস বিকৃতির বিরুদ্ধে সোচ্চার সোহেল তাজ

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৫ ১১:৫৪:১১
ইতিহাস বিকৃতির বিরুদ্ধে সোচ্চার সোহেল তাজ
ছবি: সংগৃহীত

ইতিহাস বিকৃত করে বা সত্য গোপন রেখে নতুন করে ইতিহাস রচনা করে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নির্মাণের যে অপচেষ্টা করা হচ্ছে, তা দেশের মানুষ কখনোই মেনে নেবে না বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তানজিম আহমেদ সোহেল তাজ। শুক্রবার ১৪ নভেম্বর রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এই দৃঢ় অবস্থান প্রকাশ করেন। জাতির মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা সংগ্রাম, জাতীয় সংগীত ও জাতীয় পতাকাকে বাদ দিয়ে অথবা সেগুলোকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করে নতুন প্রজন্মের সামনে ভিন্ন ইতিহাস দাঁড় করানোর যে ঝুঁকিপূর্ণ প্রবণতা দেখা যাচ্ছে, তার কঠোর বিরোধিতা করেন তিনি।

পোস্টে সোহেল তাজ লিখেছেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম, মহান মুক্তিযুদ্ধ, জাতীয় সংগীত এবং জাতীয় পতাকা—এগুলো দেশের রাষ্ট্রীয় অস্তিত্ব ও জাতীয় পরিচয়ের ভিত্তি। সুতরাং এগুলোকে আড়াল করে বা বিকৃত করে নতুন ইতিহাস নির্মাণের প্রচেষ্টা জনগণ কখনো মেনে নেবে না। তিনি উল্লেখ করেন, ইতিহাসের বিপর্যস্ত রূপ প্রজন্মকে ভুল পথে পরিচালিত করতে পারে এবং এটি স্বাধীনতার চেতনা ও জাতির পরিচয়কে দুর্বল করে।

এর আগে ১২ নভেম্বর বিকেল ৩টা ৫১ মিনিটে তিনি কাতার এয়ারওয়েজের কিউআর ৬৩৯ ফ্লাইটে করে দোহা হয়ে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করেন। বিমানবন্দরে তার ইমিগ্রেশন সম্পন্ন হয় বিভিন্ন সংস্থা, বিশেষ করে ইমিগ্রেশন প্রসিকিউশন এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের যাচাই–বাছাই ও ক্লিয়ারেন্সের পর। ক্লিয়ারেন্স পাওয়ার পর তিনি যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন।

যুক্তরাষ্ট্রগামী যাত্রাপথে দোহা হামাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছে সোহেল তাজ নিজের ফেসবুকে আরও একটি পোস্ট দেন। সেখানে তিনি লেখেন, আলহামদুলিল্লাহ, দোহায় পৌঁছেছি। ৩ ঘণ্টার ট্রানজিট শেষে ১৫ ঘণ্টার দীর্ঘ ফ্লাইটে যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছাবো। তিনি স্মরণ করেন গত ১৫ বছর ধরে এই বিমানবন্দরের সঙ্গে তার যাতায়াতের অভিজ্ঞতা। সেই সময়ে এই বিমানবন্দরটি ঢাকার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের চেয়েও ছোট ছিল, আর এখন এটি বিশ্বের সবচেয়ে ব্যস্ত, বৃহৎ এবং উন্নত বিমানবন্দরগুলোর একটি।

-রাফসান


'ভাড়াটে টোকাই' দিয়ে চলে দল? আওয়ামী লীগ নিয়ে প্রেস সচিবের ফেসবুক পোস্ট

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৫ ১১:৪২:৫১
'ভাড়াটে টোকাই' দিয়ে চলে দল? আওয়ামী লীগ নিয়ে প্রেস সচিবের ফেসবুক পোস্ট
ছবিঃ সংগৃহীত

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এখন একটি ফেসবুক-নির্ভর প্রতিবাদী দলে পরিণত হয়েছে, যাদের মাঠে প্রকৃত সাংগঠনিক শক্তি খুবই কম। শনিবার সকালে তিনি নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এক পোস্টে এই মন্তব্য করেন।

ওই পোস্টে তিনি লেখেন, সাম্প্রতিক তিনটি ঘটনা ফেব্রুয়ারির নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হবে বলে তার বিশ্বাসকে আরও শক্তিশালী করেছে। তিনি এমনও মনে করেন যে, এই নির্বাচন সাম্প্রতিক ইতিহাসে সবচেয়ে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

শফিকুল আলম তার প্রথম যুক্তি হিসেবে বিএনপির মনোনয়ন প্রক্রিয়ার কথা উল্লেখ করেন। তিনি লেখেন, বিএনপির সংসদীয় প্রার্থীদের তালিকা ঘোষণা শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়েছে। যদিও একটি ব্যাপক আশঙ্কা ছিল যে, তালিকা ঘোষণার পর দলে বড় ধরনের বিশৃঙ্খলা দেখা দিতে পারে। অনেকের ধারণা ছিল, শত শত বিদ্রোহী প্রার্থী দলের এই সিদ্ধান্ত মেনে নেবেন না এবং তারা বিক্ষোভে নামতে পারেন। এমনকি, আনুষ্ঠানিকভাবে মনোনীত প্রার্থীদের সমর্থকদের সাথে তাদের সংঘর্ষও হতে পারে।

কিন্তু প্রেস সচিবের মতে, এক-দুটি ছোট ঘটনা ছাড়া পুরো প্রক্রিয়াটি আশ্চর্যজনকভাবে শান্ত ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে। তিনি মনে করেন, এটি প্রমাণ করে যে বিএনপি নেতৃত্ব যথেষ্ট প্রস্তুতি নিয়ে এবং পরিকল্পনা করেই এগিয়েছে। মনোনয়নের এই ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা ইঙ্গিত দেয় যে, নির্বাচনী প্রচারণা বা নির্বাচনের সময় দলের ভেতরে বড় ধরনের সংঘর্ষের সম্ভাবনা খুবই কম।

দ্বিতীয় যুক্তিতে শফিকুল আলম আওয়ামী লীগের সক্ষমতা নিয়ে পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেন। তিনি লেখেন, তিনি আওয়ামী লীগের সক্ষমতার একটি স্পষ্ট সীমা দেখতে পাচ্ছেন, যা তার মতে 'বেশ ছোট'। তিনি উল্লেখ করেন, আওয়ামী লীগ দীর্ঘদিন ধরে দাবি করে আসছে যে তাদের একটি বিস্তৃত তৃণমূল নেটওয়ার্ক রয়েছে, যা যেকোনো নির্বাচন ব্যাহত করার মতো শক্তিশালী। কিন্তু তার মতে, গত কয়েক দিনের ঘটনাপ্রবাহ প্রমাণ করে দিয়েছে যে দলটির বাস্তব সংগঠিত শক্তি আসলে কতটা সীমিত।

শফিকুল আলম মনে করেন, দলটি এখন 'ভাড়াটে টোকাই-ধরনের' ক্ষুদ্র দুষ্কৃতকারী গোষ্ঠীর ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে, যারা শুধু ফাঁকা বাসে আগুন দেওয়া, ৩০ সেকেন্ডের 'ঝটিকা মিছিল' করা, কিংবা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে 'এআই শাটডাউন'-এর মতো প্রচারণা চালাতে পারে।

তিনি আরও যোগ করেন, "প্রকৃত অর্থে, যার (আওয়ামী লীগের) মাঠে প্রকৃত সাংগঠনিক শক্তি খুব কম।" শফিকুল আলম তার দীর্ঘদিনের পর্যবেক্ষণ তুলে ধরে বলেন, দলটির তৃণমূল কাঠামো হয় ভেঙে পড়েছে অথবা প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বারা নিমজ্জিত হয়েছে। এই বাস্তবতা বিবেচনা করে, তিনি আসন্ন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের পক্ষে কোনো অস্থিরতা বা বিঘ্ন সৃষ্টি করার সম্ভাবনা 'অত্যন্ত ক্ষীণ' বলে মনে করেন।

সবশেষে, তৃতীয় যুক্তি হিসেবে প্রেস সচিব পুলিশ, নিরাপত্তা বাহিনী ও স্থানীয় প্রশাসনের প্রস্তুতির কথা উল্লেখ করেন। তিনি লেখেন, সাম্প্রতিক সময়ের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির স্থিতিশীলতা দেখেই বোঝা যায় যে, পুলিশ, নিরাপত্তা বাহিনী এবং স্থানীয় প্রশাসন (ডিসি, এসপি, ইউএনও, ওসি) এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী ও সংগঠিত।

শফিকুল আলম জানান, সবচেয়ে দক্ষ ও সক্ষম কর্মকর্তাদের নির্বাচন প্রক্রিয়া তদারকির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি দৃঢ় বিশ্বাস প্রকাশ করে বলেন, "আমার দৃঢ় বিশ্বাস, তারা জাতির প্রত্যাশিত শান্তিপূর্ণ ও সুশৃঙ্খল নির্বাচন সম্পন্ন করতে সক্ষম হবে।"


অস্বাস্থ্যকর বায়ুতে ঢাকা আবারও শীর্ষের কাতারে

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৫ ১১:১৫:১৭
অস্বাস্থ্যকর বায়ুতে ঢাকা আবারও শীর্ষের কাতারে
ছবি: সংগৃহীত

বিশ্বজুড়ে দ্রুতগতিতে বাড়তে থাকা বায়ুদূষণের বিস্তার থেকে রেহাই পাচ্ছে না বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা। বহু বছর ধরেই মেগাসিটিটি বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত নগরগুলোর মধ্যে একটি হিসেবে চিহ্নিত।

সাম্প্রতিক সময়ে বায়ুমান কিছুটা উন্নতি দেখা গেলেও গত দুই দিন ধরে ঢাকার আকাশে আবারও ঘনিয়ে এসেছে দূষণের স্তর। শনিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে আন্তর্জাতিক বায়ুমান পর্যবেক্ষণ সংস্থা আইকিউএয়ারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ১৭৯ একিউআই স্কোর নিয়ে বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকায় ঢাকার অবস্থান চতুর্থ।

‘অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ এই মাত্রা নাগরিকদের শ্বাসতন্ত্র, চোখ ও হৃদ্‌যন্ত্রের ওপর তাৎক্ষণিক এবং দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করতে পারে। একই সময়ে ৫১১ স্কোর নিয়ে শীর্ষ দূষিত শহরের তালিকায় রয়েছে ভারতের রাজধানী দিল্লি, যা ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ মাত্রার বায়ুদূষণ নির্দেশ করে। দ্বিতীয় স্থানে পাকিস্তানের লাহোর (২৭৪), তৃতীয় স্থানে ভারতের কলকাতা (১৯৯) এবং পঞ্চমে ইরাকের বাগদাদ (১৭৫)। একিউআই স্কোর ১৫১ থেকে ২০০ ‘অস্বাস্থ্যকর’, ২০১–৩০০ ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ এবং ৩০১-এর ওপরে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ যা সরাসরি জনস্বাস্থ্যের ওপর গুরুতর প্রভাব ফেলতে পারে।

বিশেষজ্ঞরা শিশু, প্রবীণ, শ্বাসতন্ত্রের রোগী এবং দৈনিক বাইরে কাজ করা জনগোষ্ঠীকে এই পরিস্থিতিতে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দিচ্ছেন। দ্রুত নগরায়ণ, যানবাহনের নির্গমন, নির্মাণকাজের ধুলা এবং শিল্পকারখানার অনিয়ন্ত্রিত কার্যক্রম এই বহুমুখী কারণগুলো প্রতিদিন ঢাকার বায়ুমানকে আরও সংকটগ্রস্ত করে তুলছে। ফলে দূষণ কমাতে সমন্বিত নীতিমালা, কঠোর নিয়ন্ত্রণ এবং টেকসই নগর ব্যবস্থাপনার প্রয়োজনীয়তা এখন আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।


নির্বাচনী ট্রেন্ড শুরু ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন নিয়ে সব সংশয় কাটল

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৫ ০৯:০৪:২৭
নির্বাচনী ট্রেন্ড শুরু ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন নিয়ে সব সংশয় কাটল
ছবিঃ সংগৃহীত

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ডক্টর মুহাম্মদ ইউনূসের ভাষণের মাধ্যমে দেশের জাতীয় নির্বাচন নিয়ে বিদ্যমান সংশয় অনেকটা কেটে গেছে। জুলাই সনদের গেজেট প্রকাশিত হওয়া এবং নির্বাচনের দিনেই গণভোট অনুষ্ঠানের বিষয়টি চূড়ান্ত হওয়ায় আপাতদৃষ্টিতে নির্বাচন নিয়ে আর কোনো ধোঁয়াশা নেই। সবকিছু মিলে দেশবাসীর সামনে এখন শুধুই নির্বাচন। রাজনৈতিক দলগুলোর নেতারাও একমত হয়েছেন যে দেশ ও জাতি এখন 'নির্বাচনি ট্রেনে' উঠেছে।

ধোঁয়াশা কাটল ঘোষণা চূড়ান্ত

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ডক্টর মুহাম্মদ ইউনূসের ভাষণের মাধ্যমে নির্বাচনের সব ধোঁয়াশা কেটে গেছে। মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য তাদের সরাসরি ভোটে জনগণের কাছে জবাবদিহিমূলক সরকার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্র প্রস্তুত হতে যাচ্ছে।

সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান পরিষ্কার ভাষায় বলেছেন, ফেব্রুয়ারির জাতীয় নির্বাচন ছাড়া অন্য কিছুতে জনমানুষের আগ্রহ নেই। অন্তর্বর্তী সরকার দেশে আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচনের সময় নির্ধারণ করেছে।

বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, "জাতি এখন নির্বাচনি ট্রেনে উঠে গেছে। ইনশাআল্লাহ ফেব্রুয়ারিতেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ নিয়ে আর কোনো সংশয় নেই।"

দলগুলোর নির্বাচনি প্রস্তুতি

প্রতিটি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলকে এখন জনগণের মুখোমুখি হওয়ার প্রস্তুতি নিতে হবে। সারা দেশে নির্বাচনি ঢেউ শুরু হয়েছে।

ইতিমধ্যে ঘোষিত বিএনপির ২৩৭ জন প্রার্থী তাঁদের নির্বাচনি এলাকায় মাঠে নেমে গেছেন এবং ভোটারদের মন জয় করতে চষে বেড়াচ্ছেন। বাকি ৬৩টি আসনে প্রার্থী চূড়ান্তের বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। জোটের শরিক ও সমমনাদের সঙ্গে আসন সমঝোতার প্রক্রিয়াও শেষের পথে।

জামায়াতে ইসলামী আগে থেকেই মাঠে আছে। নানা ইস্যু নিয়ে মাঠ গরমের চেষ্টা করলেও ভিতরে ভিতরে নির্বাচনি প্রস্তুতির কাজ শুরু করেছে এই ইসলামি দলটি।

জাতীয় নাগরিক পার্টিও (এনসিপি) বিভিন্ন এলাকায় তাদের দলীয় মনোনয়ন দেওয়া শুরু করেছে। ইতোমধ্যেই দলীয় প্রধান নাহিদ ইসলামসহ শীর্ষস্থানীয় কয়েকজন নেতার মনোনয়ন চূড়ান্ত করা হয়েছে।

অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতারাও তাঁদের স্ব-স্ব জোট থেকে নিজেদের মনোনয়ন চূড়ান্ত করার পথে এবং অনেকে নির্বাচনি মাঠে নেমে গেছেন।

নেতাদের প্রতিক্রিয়া

অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান (বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা) বলেন, "রাজনৈতিক দল এবং দেশের জনগণ এখন নির্বাচনমুখী। তারা এখন নির্বাচন ছাড়া অন্য কিছু নিয়ে চিন্তা করছে না। বিগত আঠারোটি বছর মানুষ তাদের ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত ছিল। মানুষ এখন ফ্যাসিস্টমুক্ত বাংলাদেশে স্বস্তিতে নিঃশ্বাস নিতে পারছে। তারা জাতীয় নির্বাচনে উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট দিতে উদগ্রীব হয়ে আছে।"

মাহমুদুর রহমান মান্না (নাগরিক ঐক্যের সভাপতি) বলেন, "জাতীয় নির্বাচন নিয়ে মেঘ অনেকাংশেই কেটে গেছে। আমরা বিএনপির সঙ্গে যৌথভাবে নির্বাচন করছি। জোট আমাকে বগুড়া-২ এলাকার প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেছে। বগুড়ার উন্নয়নে এলাকার কৃতী সন্তান তারেক রহমানের হাত ধরে কাজ করে যাব।"

সাইফুল হক (বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক) বলেন, জাতীয় নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তা অনেকাংশেই কেটে গেছে। তবে ষড়যন্ত্র এখনো থামেনি, এ ব্যাপারে সবাইকে সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে।

জোনায়েদ সাকি (গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী) বলেন, "জাতীয় নির্বাচন ফেব্রুয়ারির মধ্যেই হতে হবে। যারা নির্বাচন, সংস্কার, বিচারের পথরেখাকে ভূলুণ্ঠিত করতে চান, তারা বাংলাদেশের জাতীয় স্বার্থের বিরুদ্ধে যাবেন।"

নুরুল হক নুর (গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি) বলেন, "জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট নিয়ে সব সংশয় কেটে গেছে। একই দিনে নির্বাচন ও গণভোট আয়োজনই সঠিক সিদ্ধান্ত। তাই ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন প্রশ্নে সব দলকে এক থাকা জরুরি।"


শীতের তীব্রতা বাড়লেও উষ্ণ হলো মন পর্যটন আর অতিথি পাখির ভিড়ে মুখর এখন বাংলাদেশ

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৫ ০৮:৫০:১৬
শীতের তীব্রতা বাড়লেও উষ্ণ হলো মন পর্যটন আর অতিথি পাখির ভিড়ে মুখর এখন বাংলাদেশ
প্রকৃতিতে এখন হেমন্তকাল, টের পাওয়া যাচ্ছে শীতের আমেজ। বিশেষ করে গ্রামবাংলার এই শুষ্ক প্রকৃতি, ভোর ও সন্ধ্যায় নেমে আসা হালকা কুয়াশা জানান দিচ্ছে শীত আসছে। ছবিটি রাজধানীর অদূরে কেরানীগঞ্জের কলাতিয়া গ্রাম থেকে তোলা। ছবি: আব্দুল গনি

বাতাসে এখন হিম হিম স্পর্শ। শিশির ভেজা ঘাসের ডগায় মুক্তোর দানা। সন্ধ্যা-সকাল কুয়াশার চাদর মুড়ে দিচ্ছে চারপাশ। প্রকৃতির শীতল পরশ নিয়ে আসছে শীত। পৌষ-মাঘ শীতকাল হলেও অগ্রহায়ণ বা হেমন্ত হলো শীতের মোহনা। এই সময় রিক্ত প্রকৃতিকে আমরা নতুন করে আবিষ্কার করি। দিনের সূর্য ঢেলে দেয় মায়াবি রোদ, আর রাতের আকাশে থাকে বুকভরা রূপালি তারাখচিত শুভ্রতা।

শীতের আগমনী বার্তা ও গ্রামীণ উৎসব

ষড়ঋতুর বাংলাদেশে শীত পঞ্চম ঋতু। শরতের স্নিগ্ধতা পেরিয়ে আসে হেমন্ত, আর এই নবান্নের ঋতুর হাত ধরেই আসে শীতকাল। খালবিল থেকে বর্ষার জল শুকাতে শুরু করেছে। গ্রামাঞ্চলে শুরু হয় মাছ ধরার উৎসব।

মাঠে মাঠে সোনালি ধান গোলায় ভরার উৎসবে মেতে থাকা মানুষের শরীরে লাগে শীতের কাঁপন। নতুন ধানের পিঠা-পায়েস, খেজুরের মিষ্টি রস আর পাটালি গুড় এই ঋতুর অনিবার্য অংশ। লেপ-কম্বলের উত্তাপ, কুয়াশাঢাকা ভোরে আনন্দ-কষ্টের মিশেল নিয়ে শীতকাল আমাদের জীবনে উপস্থিত হয়।

খেজুরের রসে পাটকাঠি ডুবিয়ে গ্রামের ছেলেমেয়েদের চুকচুক করে রস খাওয়ার সেই দৃশ্য আজও বদলায়নি।

জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্ভোগ

সামপ্রতিক বছরগুলোতে পঞ্জিকার অনুশাসন মানছে না প্রকৃতি। গ্রিনহাউজ এফেক্টের কারণে শীত-গ্রীষ্মকে আলাদা করে চেনা কঠিন হয়ে উঠছে। শীত জেঁকে বসতে না বসতেই বসন্ত এসে প্রকৃতিকে অধিকার করে নিচ্ছে। তবে শীতের প্রচণ্ড দাপট কখনো কখনো আমাদের জীবনকে আড়ষ্ট করে তুললেও বাড়িয়ে দেয় মনের সজিবতা।

শীতের সময় তুমুল শৈত্যপ্রবাহ মানুষের জীবনে বয়ে আনে দুর্ভোগ। মাঘ মাসের তীব্র শীতের দিনগুলোতে তাপমাত্রা অস্বাভাবিক হারে কমে যায়। এ সময় উত্তরাঞ্চলসহ কয়েকটি জেলায় তীব্র শৈত্যপ্রবাহ দেখা যায়, যার ফলে খেটে খাওয়া মানুষের জীবনে অবর্ণনীয় দুর্ভোগ নেমে আসে।

শীতের তীব্রতা থেকে বাঁচার জন্য মানুষজন গরম পোশাক পরিধান করলেও দরিদ্র মানুষের জীবনে শীত আসে অভিশাপ হয়ে। শীত নিবারণের জন্য তাদের তেমন গরম পোশাক থাকে না।

সাহিত্যে শীতের প্রভাব

বাংলা কবিতায় শীত প্রবেশ করেছে মধ্যযুগে বিশেষ করে মঙ্গলকাব্যে নায়িকার কষ্টের বর্ণনায়। আধুনিক কবিরাও শীতকালের বন্দনা করেছেন।

কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখেছেন 'শীতের হাওয়া হঠাত্ ছুটে এলো...'। জসীম উদ্দীনের 'রাখাল ছেলে' কবিতায় শীতকে আমরা পাই আমাদের একান্ত নিজস্ব ঋতুরূপে।

প্রকৃতির কবি জীবনানন্দ দাশের কবিতায় ঘুরে ঘুরে আসে 'পউষের ভেজা ভোর', 'ঝরিছে শিশির' এবং 'পউষের শেষরাতে নিমপেঁচাটি'।

পিঠা-পুলি ও শাকসবজির প্রাচুর্য

বাঙালির শখের পিঠা-পুলি শুধু স্বাদে নয়, সংস্কৃতিরও ধারক। শীতকালে পাটিসাপটা, দুধকলি, ভাপা, চিতই, নকশীপিঠাসহ নানা ধরনের পিঠা খাওয়ার ধুম পড়ে যায়। খেজুরের রস, পাটালি গুড়, মোয়া, মুড়কি ছিল এক সময়ের অনিবার্য পদ।

শীতকাল মানেই গ্রামের জমিতে শীতকালীন শাক-সবজির প্রাচুর্য। এ সময় বাজার ফুলকপি, বাঁধাকপি, মুলা, শিম, টম্যাটো, পালং শাক, লাল শাকসহ নানা জাতের টাটকা শাকসবজিতে ভরপুর থাকে।

বেড়ানো ও পরিযায়ী পাখির ভিড়

প্রকৃতিতে শীতের আগমনী বার্তার সঙ্গে সঙ্গে দেশের পর্যটন এলাকাগুলো মুখরিত হয়ে ওঠে। পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত কক্সবাজার, সেন্ট মার্টিন, কুয়াকাটা, রাঙ্গামাটি ও বান্দরবানের মতো পর্যটনস্পটগুলো এই মৌসুমে মুখর থাকে।

এছাড়াও উত্তর গোলার্ধের বরফে আচ্ছাদিত দেশসমূহ থেকে অতিথি পাখির আনাগোনায় মুখরিত হয়ে ওঠে বাংলার নদনদী, হাওর, ঝিল ও চরাঞ্চল। এদের মধ্যে নীলশির, লালশির, কালো হাঁসসহ প্রায় ১৫০ প্রজাতির পাখি রয়েছে।

শীতে রোগ-বালাইয়ের প্রকোপ

শীতকাল উপভোগ্য হলেও এই মৌসুমটাতে নানা রোগব্যাধির প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। ঠান্ডাজনিত সমস্যা যেমন সর্দি-কাশি, গলায় খুশখুশ ভাব, ভাইরাসজনিত জ্বরসহ ত্বকের রোগ একজিমা, চুলকানি ও স্ক্যাবিসের মতো চর্মরোগ দেখা দেয়।

সূত্র:ইত্তেফাক

পাঠকের মতামত:

ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গড়তে হলে রাষ্ট্রকে অবশ্যই তার সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা পুনরুদ্ধার করতে হবে

ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গড়তে হলে রাষ্ট্রকে অবশ্যই তার সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা পুনরুদ্ধার করতে হবে

রাষ্ট্রের ধারণাটি একসময় কেবল প্রশাসনিক ক্ষমতা, আইনের শাসন এবং নিরাপত্তা প্রদানের সঙ্গে সম্পর্কিত ছিল। কিন্তু আধুনিক বিশ্বে রাষ্ট্রের ভূমিকা এখন... বিস্তারিত

উড়ন্ত সরীসৃপের খাদ্যাভ্যাস নিয়ে ধারণা বদল ৩২০টি ফাইটোলিথ পেলেন গবেষকরা

উড়ন্ত সরীসৃপের খাদ্যাভ্যাস নিয়ে ধারণা বদল ৩২০টি ফাইটোলিথ পেলেন গবেষকরা

ডাইনোসরের যুগে আকাশে রাজত্ব করত বিশাল আকৃতির উড়ন্ত সরীসৃপ 'টেরাসর'। এই রহস্যময় প্রাণীদের বিভিন্ন প্রজাতি আবিষ্কৃত হলেও তাদের খাদ্যাভ্যাস নিয়ে... বিস্তারিত

নাভানা ফার্মাসিউটিক্যালসের দুর্দান্ত Q1

নাভানা ফার্মাসিউটিক্যালসের দুর্দান্ত Q1

ফার্মাসিউটিক্যাল খাতের শীর্ষ কোম্পানি নাভানা ফার্মাসিউটিক্যালস (NAVANAPHAR) চলতি ২০২৫–২৬ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকের (জুলাই–সেপ্টেম্বর ২০২৫) অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনে উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি অর্জনের... বিস্তারিত