Banner

শীতের তীব্রতা বাড়লেও উষ্ণ হলো মন পর্যটন আর অতিথি পাখির ভিড়ে মুখর এখন বাংলাদেশ

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৫ ০৮:৫০:১৬
শীতের তীব্রতা বাড়লেও উষ্ণ হলো মন পর্যটন আর অতিথি পাখির ভিড়ে মুখর এখন বাংলাদেশ
প্রকৃতিতে এখন হেমন্তকাল, টের পাওয়া যাচ্ছে শীতের আমেজ। বিশেষ করে গ্রামবাংলার এই শুষ্ক প্রকৃতি, ভোর ও সন্ধ্যায় নেমে আসা হালকা কুয়াশা জানান দিচ্ছে শীত আসছে। ছবিটি রাজধানীর অদূরে কেরানীগঞ্জের কলাতিয়া গ্রাম থেকে তোলা। ছবি: আব্দুল গনি

বাতাসে এখন হিম হিম স্পর্শ। শিশির ভেজা ঘাসের ডগায় মুক্তোর দানা। সন্ধ্যা-সকাল কুয়াশার চাদর মুড়ে দিচ্ছে চারপাশ। প্রকৃতির শীতল পরশ নিয়ে আসছে শীত। পৌষ-মাঘ শীতকাল হলেও অগ্রহায়ণ বা হেমন্ত হলো শীতের মোহনা। এই সময় রিক্ত প্রকৃতিকে আমরা নতুন করে আবিষ্কার করি। দিনের সূর্য ঢেলে দেয় মায়াবি রোদ, আর রাতের আকাশে থাকে বুকভরা রূপালি তারাখচিত শুভ্রতা।

শীতের আগমনী বার্তা ও গ্রামীণ উৎসব

ষড়ঋতুর বাংলাদেশে শীত পঞ্চম ঋতু। শরতের স্নিগ্ধতা পেরিয়ে আসে হেমন্ত, আর এই নবান্নের ঋতুর হাত ধরেই আসে শীতকাল। খালবিল থেকে বর্ষার জল শুকাতে শুরু করেছে। গ্রামাঞ্চলে শুরু হয় মাছ ধরার উৎসব।

মাঠে মাঠে সোনালি ধান গোলায় ভরার উৎসবে মেতে থাকা মানুষের শরীরে লাগে শীতের কাঁপন। নতুন ধানের পিঠা-পায়েস, খেজুরের মিষ্টি রস আর পাটালি গুড় এই ঋতুর অনিবার্য অংশ। লেপ-কম্বলের উত্তাপ, কুয়াশাঢাকা ভোরে আনন্দ-কষ্টের মিশেল নিয়ে শীতকাল আমাদের জীবনে উপস্থিত হয়।

খেজুরের রসে পাটকাঠি ডুবিয়ে গ্রামের ছেলেমেয়েদের চুকচুক করে রস খাওয়ার সেই দৃশ্য আজও বদলায়নি।

জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্ভোগ

সামপ্রতিক বছরগুলোতে পঞ্জিকার অনুশাসন মানছে না প্রকৃতি। গ্রিনহাউজ এফেক্টের কারণে শীত-গ্রীষ্মকে আলাদা করে চেনা কঠিন হয়ে উঠছে। শীত জেঁকে বসতে না বসতেই বসন্ত এসে প্রকৃতিকে অধিকার করে নিচ্ছে। তবে শীতের প্রচণ্ড দাপট কখনো কখনো আমাদের জীবনকে আড়ষ্ট করে তুললেও বাড়িয়ে দেয় মনের সজিবতা।

শীতের সময় তুমুল শৈত্যপ্রবাহ মানুষের জীবনে বয়ে আনে দুর্ভোগ। মাঘ মাসের তীব্র শীতের দিনগুলোতে তাপমাত্রা অস্বাভাবিক হারে কমে যায়। এ সময় উত্তরাঞ্চলসহ কয়েকটি জেলায় তীব্র শৈত্যপ্রবাহ দেখা যায়, যার ফলে খেটে খাওয়া মানুষের জীবনে অবর্ণনীয় দুর্ভোগ নেমে আসে।

শীতের তীব্রতা থেকে বাঁচার জন্য মানুষজন গরম পোশাক পরিধান করলেও দরিদ্র মানুষের জীবনে শীত আসে অভিশাপ হয়ে। শীত নিবারণের জন্য তাদের তেমন গরম পোশাক থাকে না।

সাহিত্যে শীতের প্রভাব

বাংলা কবিতায় শীত প্রবেশ করেছে মধ্যযুগে বিশেষ করে মঙ্গলকাব্যে নায়িকার কষ্টের বর্ণনায়। আধুনিক কবিরাও শীতকালের বন্দনা করেছেন।

কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখেছেন 'শীতের হাওয়া হঠাত্ ছুটে এলো...'। জসীম উদ্দীনের 'রাখাল ছেলে' কবিতায় শীতকে আমরা পাই আমাদের একান্ত নিজস্ব ঋতুরূপে।

প্রকৃতির কবি জীবনানন্দ দাশের কবিতায় ঘুরে ঘুরে আসে 'পউষের ভেজা ভোর', 'ঝরিছে শিশির' এবং 'পউষের শেষরাতে নিমপেঁচাটি'।

পিঠা-পুলি ও শাকসবজির প্রাচুর্য

বাঙালির শখের পিঠা-পুলি শুধু স্বাদে নয়, সংস্কৃতিরও ধারক। শীতকালে পাটিসাপটা, দুধকলি, ভাপা, চিতই, নকশীপিঠাসহ নানা ধরনের পিঠা খাওয়ার ধুম পড়ে যায়। খেজুরের রস, পাটালি গুড়, মোয়া, মুড়কি ছিল এক সময়ের অনিবার্য পদ।

শীতকাল মানেই গ্রামের জমিতে শীতকালীন শাক-সবজির প্রাচুর্য। এ সময় বাজার ফুলকপি, বাঁধাকপি, মুলা, শিম, টম্যাটো, পালং শাক, লাল শাকসহ নানা জাতের টাটকা শাকসবজিতে ভরপুর থাকে।

বেড়ানো ও পরিযায়ী পাখির ভিড়

প্রকৃতিতে শীতের আগমনী বার্তার সঙ্গে সঙ্গে দেশের পর্যটন এলাকাগুলো মুখরিত হয়ে ওঠে। পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত কক্সবাজার, সেন্ট মার্টিন, কুয়াকাটা, রাঙ্গামাটি ও বান্দরবানের মতো পর্যটনস্পটগুলো এই মৌসুমে মুখর থাকে।

এছাড়াও উত্তর গোলার্ধের বরফে আচ্ছাদিত দেশসমূহ থেকে অতিথি পাখির আনাগোনায় মুখরিত হয়ে ওঠে বাংলার নদনদী, হাওর, ঝিল ও চরাঞ্চল। এদের মধ্যে নীলশির, লালশির, কালো হাঁসসহ প্রায় ১৫০ প্রজাতির পাখি রয়েছে।

শীতে রোগ-বালাইয়ের প্রকোপ

শীতকাল উপভোগ্য হলেও এই মৌসুমটাতে নানা রোগব্যাধির প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। ঠান্ডাজনিত সমস্যা যেমন সর্দি-কাশি, গলায় খুশখুশ ভাব, ভাইরাসজনিত জ্বরসহ ত্বকের রোগ একজিমা, চুলকানি ও স্ক্যাবিসের মতো চর্মরোগ দেখা দেয়।

সূত্র:ইত্তেফাক


শীতের মধ্যে বৃষ্টির পূর্বাভাসে সতর্কতা জারি

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ৩০ ১৩:০৩:৫২
শীতের মধ্যে বৃষ্টির পূর্বাভাসে সতর্কতা জারি
ছবি: সংগৃহীত

সারা দেশে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হালকা থেকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর। তবে এই সময়ের মধ্যে দিন ও রাতের তাপমাত্রায় বড় ধরনের কোনো পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই বলেও জানিয়েছে সংস্থাটি।

মঙ্গলবার (সকাল) প্রকাশিত সর্বশেষ আবহাওয়া পূর্বাভাসে জানানো হয়, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিক্ষিপ্তভাবে হালকা বৃষ্টিপাত হতে পারে। কোথাও কোথাও এই বৃষ্টি খুবই সামান্য হলেও আর্দ্রতা বাড়িয়ে তুলতে পারে পরিবেশে।

পূর্বাভাসে আরও বলা হয়েছে, মধ্যরাত থেকে ভোর পর্যন্ত দেশের বহু এলাকায় মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। কিছু কিছু অঞ্চলে এই কুয়াশা দুপুর পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। ঘন কুয়াশার কারণে বিমান চলাচল, অভ্যন্তরীণ নৌপথ এবং সড়ক যোগাযোগে সাময়িক বিঘ্ন ঘটতে পারে বলে সতর্ক করেছে আবহাওয়া অফিস।

তাপমাত্রা প্রসঙ্গে আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় একই রকম থাকবে। তবে দীর্ঘ সময় কুয়াশাচ্ছন্ন পরিবেশ বজায় থাকায় শীতের অনুভূতি আরও প্রকট হয়ে উঠতে পারে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, বর্তমানে উপমহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় অবস্থান করছে। একই সঙ্গে মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে, যার একটি বিস্তৃত অংশ উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত প্রসারিত রয়েছে। এই দুটি আবহাওয়াগত ব্যবস্থার প্রভাবেই কুয়াশা ও বৃষ্টির সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।

এদিকে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রার তালিকায় টানা তৃতীয় দিনের মতো শীর্ষে রয়েছে কিশোরগঞ্জের নিকলী উপজেলা। আজ হাওরবেষ্টিত এই এলাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা শীতপ্রবণ অঞ্চলের মানুষের ভোগান্তি আরও বাড়িয়েছে।

-রাফসান


সাবেক প্রধানমন্ত্রীর প্রয়াণে বুধবার সাধারণ ছুটি ঘোষণা

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ৩০ ১২:১৪:২৮
সাবেক প্রধানমন্ত্রীর প্রয়াণে বুধবার সাধারণ ছুটি ঘোষণা

বিএনপি চেয়ারপারসন ও তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। আগামীকাল বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) থেকে শুরু হয়ে এই শোক চলবে আগামী শুক্রবার (২ জানুয়ারি) পর্যন্ত। একই সাথে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর সম্মানে বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) সারাদেশে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) দুপুরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আব্দুর রশীদ সরকারের এই সিদ্ধান্তের কথা জানান। তিনি বলেন, “সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে সরকার অত্যন্ত শোকাতুর। তাঁর বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবন এবং দেশের উন্নয়নে তাঁর অবদানের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সরকার আগামীকাল থেকে তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই সময়ে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হবে।”

মন্ত্রিপরিষদ সচিব আরও নিশ্চিত করেছেন যে, শোক পালনের প্রথম দিন অর্থাৎ বুধবার সারাদেশে সাধারণ ছুটি কার্যকর থাকবে। এই ছুটির ফলে সকল সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। তবে জরুরি সেবাসমূহ এই ছুটির আওতামুক্ত থাকবে। উল্লেখ্য, মঙ্গলবার সকাল ৬টায় রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৮০ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বেগম খালেদা জিয়া।

সরকারের এই ঘোষণার পর দেশের সকল সরকারি ভবনে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, একজন সাবেক সরকার প্রধানের প্রয়াণে সরকারের এই দ্রুত সিদ্ধান্ত এবং সম্মান প্রদর্শন ইতিবাচক রাজনৈতিক শিষ্টাচারের বহিঃপ্রকাশ। সাধারণ ছুটির কারণে ব্যাংক-বীমাসহ সকল আর্থিক প্রতিষ্ঠানও বুধবার বন্ধ থাকবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র নিশ্চিত করেছে।


প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রীর প্রয়াণে মোদির আবেগঘন বার্তা

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ৩০ ১২:০৫:৫৯
প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রীর প্রয়াণে মোদির আবেগঘন বার্তা
ছবি : সংগৃহীত

বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ (সাবেক টুইটার) দেওয়া এক বিশেষ শোকবার্তায় তিনি মরহুমার শোকসন্তপ্ত পরিবার এবং বাংলাদেশের জনগণের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানান। নরেন্দ্র মোদি তাঁর বার্তায় বেগম খালেদা জিয়াকে বাংলাদেশের ইতিহাসের এক অবিচ্ছেদ্য এবং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে বর্ণনা করেন।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী তাঁর বার্তায় উল্লেখ করেন যে, বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেশটির সামগ্রিক উন্নয়ন এবং ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রীর বন্ধন আরও দৃঢ় করতে বেগম খালেদা জিয়ার অবদান অনস্বীকার্য। তিনি বিশেষভাবে ২০১৫ সালে তাঁর ঢাকা সফরের সময় বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে অনুষ্ঠিত সেই ‘উষ্ণ ও ফলপ্রসূ’ সাক্ষাতের কথা স্মরণ করেন। মোদি আশা প্রকাশ করেন যে, বেগম জিয়ার রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি ও উত্তরাধিকার ভবিষ্যতে দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় অংশীদারিত্বকে আরও সমৃদ্ধ করতে পথপ্রদর্শক হিসেবে কাজ করবে।

শোকবার্তার শেষাংশে নরেন্দ্র মোদি পরম করুণাময় সৃষ্টিকর্তার কাছে বেগম খালেদা জিয়ার আত্মার শান্তি কামনা করেন এবং তাঁর পরিবারকে এই কঠিন শোক সইবার শক্তি দান করার প্রার্থনা জানান। উল্লেখ্য, মঙ্গলবার ভোর ৬টায় রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৮০ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনবারের এই সাবেক প্রধানমন্ত্রী। তাঁর মৃত্যুতে ভারতের রাজনৈতিক মহলেও শোকের ছায়া নেমে এসেছে এবং অনেক সিনিয়র ভারতীয় রাজনীতিক তাঁর বর্ণাঢ্য কর্মজীবনের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করছেন।


দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতির নক্ষত্রপতন: খালেদা জিয়াকে নিয়ে যা বলছে বিশ্বমিডিয়া

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ৩০ ১০:২৪:০৯
দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতির নক্ষত্রপতন: খালেদা জিয়াকে নিয়ে যা বলছে বিশ্বমিডিয়া
ছবি : সংগৃহীত

বাংলাদেশের তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার প্রয়াণে বিশ্বজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) ভোর ৬টায় রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৮০ বছর বয়সে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন এই মহীয়সী নেত্রী। তাঁর এই জীবনাবসানের খবরটি বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যমগুলো অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে ও বিশদভাবে প্রকাশ করেছে।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি তাদের প্রতিবেদনে খালেদা জিয়াকে ‘বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী’ হিসেবে উল্লেখ করে জানিয়েছে, তিনি দীর্ঘ লড়াইয়ের পর ৮০ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেছেন। বিবিসি আরও জানায়, সোমবার রাত থেকেই তাঁর অবস্থা অত্যন্ত সংকটাপন্ন ছিল এবং তিনি লাইফ সাপোর্টে ছিলেন। একইভাবে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা তাদের কাভারেজে উল্লেখ করেছে যে, অন্তর্বর্তীকালীন নেতা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস জাতির প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন বেগম জিয়ার জন্য দোয়া করতে, যাকে তিনি ‘জাতির অনুপ্রেরণার উৎস’ হিসেবে বর্ণনা করেছিলেন। আল জাজিরা আরও গুরুত্ব দিয়েছে ১৭ বছর নির্বাসনে থাকার পর তাঁর বড় ছেলে তারেক রহমানের সম্প্রতি দেশে ফিরে আসার বিষয়টি।

আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা রয়টার্স তাদের প্রতিবেদনে লিখেছে, ২০০৬ সালের পর থেকে ক্ষমতার বাইরে থাকলেও এবং দীর্ঘ সময় জেল ও গৃহবন্দি কাটানোর পরেও বেগম খালেদা জিয়া ও তাঁর দল বিএনপি দেশের রাজনীতিতে বিপুল জনসমর্থন ধরে রেখেছে। রয়টার্সের মতে, ২০২৬ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপিকে সবচেয়ে এগিয়ে থাকা দল হিসেবে দেখা হচ্ছিল। তারা খালেদা জিয়ার বর্ণাঢ্য জীবনের রূপরেখাও তুলে ধরেছে—কীভাবে ১৯৮১ সালে স্বামী জিয়াউর রহমানের হত্যাকাণ্ডের পর এক ‘লাজুক গৃহবধূ’ থেকে তিনি রাজপথের অকুতোভয় নেত্রী হয়ে উঠেছিলেন।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এবং টাইমস অব ইন্ডিয়া তাদের বিশেষ প্রতিবেদনে জানিয়েছে, বেগম জিয়ার হাত ধরেই বাংলাদেশে সংসদীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রবর্তিত হয়েছিল। এছাড়া মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন এবং দ্য গার্ডিয়ান তাঁর মৃত্যুকে ‘একটি বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক মহাকাব্যের সমাপ্তি’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। প্রতিবেশী রাষ্ট্র পাকিস্তানের ডন এবং জিও নিউজ ফজরের নামাজের পর তাঁর ইন্তেকালের খবরটি গুরুত্বের সঙ্গে প্রকাশ করেছে। সব মিলিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বেগম খালেদা জিয়াকে দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতির অন্যতম প্রধান এক স্তম্ভ হিসেবে স্মরণ করছে, যাঁর অনুপস্থিতি বাংলাদেশের সামনের নির্বাচনের সমীকরণে বিশাল প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছেন বিশ্ব বিশ্লেষকরা।


বেগম জিয়ার বিদায়ে গভীর শোক প্রকাশ চীনের, এল বিশেষ বার্তা

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ৩০ ১০:১৭:৪৮
বেগম জিয়ার বিদায়ে গভীর শোক প্রকাশ চীনের, এল বিশেষ বার্তা
ছবি : সংগৃহীত

বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে গভীর শোক ও সমবেদনা জানিয়েছেন চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াং। মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে পাঠানো এক আনুষ্ঠানিক শোকবার্তায় তিনি এই শোক প্রকাশ করেন। ঢাকায় অবস্থিত চীনা দূতাবাসের পক্ষ থেকে এই গুরুত্বপূর্ণ বার্তাটি নিশ্চিত করা হয়েছে। শোকবার্তায় লি কিয়াং বেগম খালেদা জিয়াকে বাংলাদেশের একজন প্রবীণ ও প্রভাবশালী রাজনীতিক এবং চীনা জনগণের একজন "ঘনিষ্ঠ ও পুরোনো বন্ধু" হিসেবে অভিহিত করেছেন।

চীনের প্রধানমন্ত্রী তাঁর বার্তায় উল্লেখ করেন যে, বেগম খালেদা জিয়া তাঁর প্রধানমন্ত্রিত্বকালে চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি বন্ধুত্ব, সমতা এবং পারস্পরিক কল্যাণের ভিত্তিতে একটি শক্তিশালী অংশীদারিত্ব গড়ে তুলেছিলেন। তাঁর দূরদর্শী নেতৃত্বের কারণেই দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সাধিত হয়েছিল। লি কিয়াং বিশেষভাবে জোর দিয়ে বলেন যে, চীন-বাংলাদেশ সম্পর্কের এই মজবুত ভিত্তি স্থাপনে বেগম খালেদা জিয়ার যে অনবদ্য অবদান, তা চীনা সরকার ও জনগণ অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে এবং উচ্চ মর্যাদায় মূল্যায়ন করে।

শোকবার্তায় চীনের পক্ষ থেকে আরও জানানো হয় যে, বেইজিং সবসময়ই বাংলাদেশের সঙ্গে বিদ্যমান এই দীর্ঘদিনের ঐতিহাসিক বন্ধুত্বকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেয়। ভবিষ্যতে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করে দ্বিপক্ষীয় এই সম্পর্ককে আরও উচ্চতর পর্যায়ে নিয়ে যেতে চীন প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। লি কিয়াং আশা প্রকাশ করেন যে, দুই দেশের এই সহযোগিতা আগামীতে উভয় দেশের জনগণের জন্য আরও বেশি সুফল বয়ে আনবে। উল্লেখ্য, মঙ্গলবার ভোর ৬টায় রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৮০ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনবারের এই সাবেক প্রধানমন্ত্রী।


জাতি এক মহান অভিভাবককে হারাল: প্রধান উপদেষ্টা

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ৩০ ০৯:৩৬:১৪
জাতি এক মহান অভিভাবককে হারাল: প্রধান উপদেষ্টা
প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া।

বাংলাদেশের তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী, গণতান্ত্রিক আন্দোলনের আপোষহীন প্রতীক এবং বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) এক বিশেষ শোকবার্তায় প্রধান উপদেষ্টা উল্লেখ করেন যে, বেগম খালেদা জিয়ার ইন্তেকালে জাতি তার এক মহান অভিভাবককে হারাল। এই বরেণ্য নেত্রীর প্রয়াণে তিনি ব্যক্তিগতভাবে গভীরভাবে শোকাহত ও মর্মাহত বলে জানান।

প্রফেসর ইউনূস তাঁর বার্তায় বেগম খালেদা জিয়াকে বাংলাদেশের ইতিহাসের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও অবিচ্ছেদ্য অধ্যায় হিসেবে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন যে, বেগম জিয়া কেবল একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের নেত্রী ছিলেন না, বরং তাঁর দীর্ঘ সংগ্রাম এবং জাতির প্রতি অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বর্তমান সরকার চলতি মাসেই তাঁকে 'রাষ্ট্রের অতিগুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি' হিসেবে ঘোষণা করেছিল। প্রধান উপদেষ্টা তাঁর শোকবার্তায় বেগম খালেদা জিয়ার বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের বিভিন্ন মাইলফলক তুলে ধরেন এবং বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও জনগণের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে তাঁর ভূমিকা চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে বলে মন্তব্য করেন।

প্রধান উপদেষ্টা বিশেষভাবে উল্লেখ করেন যে, ১৯৮২ সালে স্বামী ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর একজন সাধারণ গৃহবধূ থেকে রাজনীতির মাঠে এসে তিনি ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন। স্বৈরশাসক এরশাদের ৯ বছরের দুঃশাসনের পতন ঘটাতে তিনি প্রধান ভূমিকা পালন করেন। নারী শিক্ষার প্রসারে তাঁর অবদানের কথা স্মরণ করে প্রফেসর ইউনূস বলেন, মেয়েদের জন্য অবৈতনিক শিক্ষা ও উপবৃত্তি চালু করা ছিল দেশের নারী শিক্ষার অগ্রগতির ক্ষেত্রে একটি ঐতিহাসিক মাইলফলক। এছাড়া ১৯৯১ সালে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর অর্থনৈতিক উদারীকরণের মাধ্যমে তিনি দেশের অর্থনীতির একটি মজবুত ভিত্তি স্থাপন করেছিলেন।

রাজনৈতিক সাফল্যের এক অনন্য নজির হিসেবে বেগম খালেদা জিয়া তাঁর পুরো জীবনে কোনো নির্বাচনে পরাজিত হননি বলে প্রধান উপদেষ্টা উল্লেখ করেন। তিনি স্মরণ করিয়ে দেন যে, ১৯৯১ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত প্রতিটি নির্বাচনে তিনি পাঁচটি পৃথক সংসদীয় আসন থেকে এবং ২০০৮ সালে তিনটি আসন থেকে জয়লাভ করেছিলেন। প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, বিগত ফ্যাসিবাদী শাসনামলে খালেদা জিয়া ছিলেন সংগ্রাম ও প্রতিরোধের এক অনন্য প্রতীক এবং রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়েও তিনি তাঁর আদর্শ থেকে বিচ্যুত হননি। এই অপূরণীয় ক্ষতির দিনে প্রধান উপদেষ্টা মরহুমার শোকসন্তপ্ত পরিবার ও নেতাকর্মীদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান এবং দেশবাসীকে শান্ত থেকে তাঁর জন্য প্রার্থনা করার অনুরোধ করেছেন।


নির্বাচন সামনে রেখে পুলিশে বড় রদবদল

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২৯ ২১:০০:১২
নির্বাচন সামনে রেখে পুলিশে বড় রদবদল
ছবি : সংগৃহীত

বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে যেকোনো মূল্যে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ সদস্যদের নির্দেশ দিয়েছেন ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ (আইজিপি) বাহারুল আলম। সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে অনুষ্ঠিত মাসিক অপরাধ পর্যালোচনা সভায় তিনি এই কঠোর নির্দেশনা প্রদান করেন। আইজিপি স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেন, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কোনো গোষ্ঠী বা ব্যক্তি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করলে তাৎক্ষণিকভাবে কঠোর আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

সভায় আইজিপি প্রাক-নির্বাচনী নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশের দৃশ্যমান উপস্থিতি এবং টহল বাড়ানোর ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেন। তিনি বলেন, সন্দেহভাজন গতিবিধি নিয়ন্ত্রণে চেকপোস্টের মাধ্যমে তল্লাশি কার্যক্রম আরও জোরদার করতে হবে। বাহারুল আলম দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “পুলিশের আইনি কাজে কেউ বাধা সৃষ্টি করলে তাকে তাৎক্ষণিক গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠাতে হবে। অপরাধী যেই হোক, তাকে ছাড় দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।”

পুলিশের লুণ্ঠিত অস্ত্র উদ্ধার প্রসঙ্গে আইজিপি মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের বিশেষ তৎপরতা চালানোর নির্দেশ দেন। তিনি উল্লেখ করেন, লুণ্ঠিত অস্ত্র উদ্ধারে সরকারের পক্ষ থেকে পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে এবং এর ব্যাপক প্রচারের মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে তথ্য প্রদানে উৎসাহিত করতে হবে। সভায় নভেম্বর মাসের অপরাধ চিত্র পর্যালোচনা করে সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের গ্রেপ্তার ও বিচারাধীন মামলাগুলোর দ্রুত নিষ্পত্তির বিষয়েও দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়। এই ভার্চুয়াল সভায় দেশের সকল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার, রেঞ্জ ডিআইজি এবং জেলা পুলিশ সুপারগণ যুক্ত ছিলেন।


ভোট নিয়ে কোনো বিশৃঙ্খলা সহ্য নয়, ড. ইউনূসের কঠোর বার্তা

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২৯ ১৮:৩৬:১৩
ভোট নিয়ে কোনো বিশৃঙ্খলা সহ্য নয়, ড. ইউনূসের কঠোর বার্তা
ছবি : সংগৃহীত

আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের আগে দেশের স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে এবং শান্তি বিঘ্নিত করার যেকোনো অপচেষ্টা রুখতে কঠোর অবস্থান ঘোষণা করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) দুপুরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় যুক্তরাষ্ট্রের বিদায়ী চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসনের সঙ্গে এক বৈঠকে তিনি এই হুঁশিয়ারি দেন। প্রধান উপদেষ্টা সাফ জানিয়ে দেন, আগামী বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠেয় জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট সফলভাবে সম্পন্ন করতে সরকার সম্পূর্ণ প্রস্তুত এবং নির্বাচনের স্বচ্ছতা নিশ্চিতে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা সহ্য করা হবে না।

সাক্ষাতে দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক, বাণিজ্য, বেসামরিক বিমান চলাচল এবং অন্তর্বর্তী সরকারের নেওয়া বিভিন্ন সংস্কারমূলক পদক্ষেপ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। বাংলাদেশে ১৭ মাসের দায়িত্বকাল শেষে বিদায় নিতে যাওয়া ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসন গত দেড় বছরে ড. ইউনূসের বলিষ্ঠ নেতৃত্বের প্রশংসা করেন। তিনি আসন্ন নির্বাচন আয়োজনে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের পূর্ণ সমর্থনের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন উপহার দেওয়া আমাদের সরকারের মূল অঙ্গীকার এবং সেই লক্ষ্যেই গণভোটসহ সব প্রস্তুতি চূড়ান্ত করা হচ্ছে।”

শ্রমিক অধিকার ও সংস্কার প্রসঙ্গে মার্কিন চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স অন্তর্বর্তী সরকারের নেওয়া নতুন শ্রম অধ্যাদেশকে ‘অসাধারণ ও ব্যতিক্রমধর্মী’ হিসেবে বর্ণনা করেন। তিনি বিশ্বাস করেন, এই যুগান্তকারী আইনটি বাংলাদেশে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ (FDI) আকর্ষণে শক্তিশালী ভূমিকা রাখবে। এছাড়াও বিগত সরকারগুলোর আমলে শ্রমিক নেতাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা ৪৬টি রাজনৈতিক মামলার মধ্যে ৪৫টি প্রত্যাহারের সাহসী সিদ্ধান্তের ভূয়সী প্রশংসা করেন জ্যাকবসন। জবাবে ড. ইউনূস জানান, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) কনভেনশন অনুসরণ করেই এই সংস্কার করা হয়েছে এবং শ্রমিক নেতারাও একে সানন্দে গ্রহণ করেছেন।

আলোচনায় রোহিঙ্গা ইস্যুটিও বিশেষ গুরুত্ব পায়। প্রধান উপদেষ্টা রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তায় একক বৃহত্তম দাতা দেশ হিসেবে পাশে থাকায় যুক্তরাষ্ট্রকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, “দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের শরণার্থী শিবিরগুলোতে বসবাসরত ১০ লাখের বেশি বাস্তুচ্যুত মানুষের জীবন বাঁচাতে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা অতুলনীয়।” বৈঠক শেষে ড. ইউনূস ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসনকে বাংলাদেশের একজন পরম ‘বন্ধু’ হিসেবে অভিহিত করেন এবং ভবিষ্যতে আবারও বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানিয়ে তাঁর বিদায়লগ্নে শুভকামনা জানান।


অপরাধী পালানো রুখতে সীমান্তে লাল সতর্কতা: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২৯ ১১:১১:৩৯
অপরাধী পালানো রুখতে সীমান্তে লাল সতর্কতা: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
ছবি : সংগৃহীত

বাংলাদেশ থেকে কোনো চিহ্নিত অপরাধী বা সন্ত্রাসী যেন সীমান্ত ব্যবহার করে পার্শ্ববর্তী দেশে পালিয়ে যেতে না পারে, সে বিষয়ে বিজিবিকে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর পিলখানায় বিজিবি সদর দপ্তরে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এই কঠোর হুঁশিয়ারি প্রদান করেন। তিনি স্পষ্ট করে বলেন, দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে অনেক অপরাধী আত্মগোপন থেকে পালানোর চেষ্টা করছে, তাদের আটক করা বিজিবির নৈতিক ও পেশাগত দায়িত্ব।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা তাঁর বক্তব্যে বিজিবি কর্মকর্তাদের জেলা প্রশাসনের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ বজায় রাখার পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, “সীমান্ত সুরক্ষায় কোনো শিথিলতা বরদাশত করা হবে না। প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক রক্ষা করতে হবে মেধা ও কৌশলের পরিচয় দিয়ে, কিন্তু দেশের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে কোনো আপস চলবে না।” বিশেষ করে মাদকের বিরুদ্ধে বিজিবিকে অতন্দ্র প্রহরীর মতো জেগে থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, যদি কোনো বিজিবি কর্মকর্তা মাদক কারবারি বা চোরাচালানিদের সহায়তা করে ধরা পড়েন, তবে তাকে কঠোর শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে।

আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিজিবির ভূমিকার গুরুত্ব তুলে ধরে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, একটি সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের পরিবেশ নিশ্চিত করতে বিজিবিকে এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে হবে। সীমান্ত দিয়ে অবৈধ অস্ত্রের প্রবেশ রোধ এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা নির্বাচনের পূর্বশর্ত। তিনি বিজিবি সদস্যদের মনোবল অটুট রেখে দেশপ্রেমের সাথে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার এই কঠোর নির্দেশনা বিশেষ করে আত্মগোপনে থাকা সাবেক প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা ও কর্মকর্তাদের পালানোর পথ বন্ধ করতে একটি বড় পদক্ষেপ।

পাঠকের মতামত:

ব্যক্তিগত দায় বনাম প্রাতিষ্ঠানিক দায়: দায়মুক্তির এক রাজনৈতিক সংস্কৃতি

চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জের ঘটনা কাগজে পড়লে প্রথমে মনে হয় এটা যেন কোনো যুদ্ধের খবর। এক তরুণকে বিদ্যুতের খুঁটিতে বেঁধে হাত–পা প্রায়... বিস্তারিত