আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না: প্রধান উপদেষ্টা ড ইউনূস

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৪ ১৪:৪৩:৫৪
আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না: প্রধান উপদেষ্টা ড ইউনূস
প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের সঙ্গে ব্রিটিশ মন্ত্রী জেনি চ্যাপম্যান। ছবি: ফেসবুক

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ডক্টর মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, সন্ত্রাসবিরোধী আইনের অধীনে কার্যক্রম স্থগিত থাকার কারণে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না।

বৃহস্পতিবার ১৩ নভেম্বর যুক্তরাজ্যের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন মন্ত্রী ব্যারোনেস জেনি চ্যাপম্যানের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এ মন্তব্য করেন। শুক্রবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।

আওয়ামী লীগের নির্বাচন প্রসঙ্গ

প্রধান উপদেষ্টা ডক্টর ইউনূস জানান, কার্যক্রম স্থগিত হওয়ার পর নির্বাচন কমিশন আওয়ামী লীগকে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের তালিকা থেকেও বাদ দিয়েছে।

তিনি বলেন, আগের ১৬ বছরের 'দুঃশাসনের' সময় যে তিনটি বিকৃত নির্বাচনে অসংখ্য তরুণ ভোট দিতে পারেননি, এবার ১০ লাখ নতুন ভোটার প্রথমবার ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।

ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে উল্লেখ করে ডক্টর ইউনূস বলেন, নির্বাচন হবে অন্তর্ভুক্তিমূলক, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক; ভোটার উপস্থিতিও হবে ব্যাপক।

জুলাই সনদ ও রোহিঙ্গা সংকট

জুলাই সনদের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটি বাংলাদেশের জন্য 'এক নতুন সূচনা', যা গত বছরের জুলাই–আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া লাখো মানুষের আকাঙ্ক্ষা প্রতিফলিত করবে।

রোহিঙ্গা সংকটের প্রসঙ্গে ডক্টর ইউনূস জানান, 'শিবিরের যুবকেরা আশাহীন হয়ে বড় হচ্ছে—রাগান্বিত এবং হতাশ। তাদের জন্য শিক্ষা নিশ্চিত করা জরুরি।' তিনি বলেন, সরকার বৈধ চ্যানেলে বিদেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়াতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

যুক্তরাজ্য মন্ত্রীর মন্তব্য ও দ্বিপাক্ষিক আলোচনা

বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অনুষ্ঠিত বৈঠকে ব্রিটিশ মন্ত্রী জেনি চ্যাপম্যান প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বের প্রশংসা করেন এবং জুলাই সনদকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক সংলাপের গুরুত্ব তুলে ধরেন। তিনি অবৈধ অভিবাসন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে নিরাপদ ও বৈধ অভিবাসন প্রক্রিয়ায় জোর দেওয়ার আহ্বান জানান।

বৈঠকে নির্বাচন ছাড়াও বাণিজ্য সম্প্রসারণ, অভিবাসন নিয়ন্ত্রণ, রোহিঙ্গা সংকট এবং বিমান ও সামুদ্রিক খাতে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে সহযোগিতা জোরদার করার বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।

ইউনূস জানান, উপকূলীয় ও সামুদ্রিক গবেষণার জন্য বাংলাদেশ একটি ব্রিটিশ গবেষণা জাহাজ কিনছে। ব্রিটিশ মন্ত্রী জানান, এয়ারবাস ইন্টারন্যাশনালের প্রধান শিগগিরই বাংলাদেশ সফর করবেন।

বৈঠকে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ডক্টর খলিলুর রহমান, এসডিজি কো-অর্ডিনেটর লামিয়া মোর্শেদ এবং ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক উপস্থিত ছিলেন।


ভোট নিয়ে কোনো বিশৃঙ্খলা সহ্য নয়, ড. ইউনূসের কঠোর বার্তা

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২৯ ১৮:৩৬:১৩
ভোট নিয়ে কোনো বিশৃঙ্খলা সহ্য নয়, ড. ইউনূসের কঠোর বার্তা
ছবি : সংগৃহীত

আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের আগে দেশের স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে এবং শান্তি বিঘ্নিত করার যেকোনো অপচেষ্টা রুখতে কঠোর অবস্থান ঘোষণা করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) দুপুরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় যুক্তরাষ্ট্রের বিদায়ী চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসনের সঙ্গে এক বৈঠকে তিনি এই হুঁশিয়ারি দেন। প্রধান উপদেষ্টা সাফ জানিয়ে দেন, আগামী বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠেয় জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট সফলভাবে সম্পন্ন করতে সরকার সম্পূর্ণ প্রস্তুত এবং নির্বাচনের স্বচ্ছতা নিশ্চিতে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা সহ্য করা হবে না।

সাক্ষাতে দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক, বাণিজ্য, বেসামরিক বিমান চলাচল এবং অন্তর্বর্তী সরকারের নেওয়া বিভিন্ন সংস্কারমূলক পদক্ষেপ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। বাংলাদেশে ১৭ মাসের দায়িত্বকাল শেষে বিদায় নিতে যাওয়া ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসন গত দেড় বছরে ড. ইউনূসের বলিষ্ঠ নেতৃত্বের প্রশংসা করেন। তিনি আসন্ন নির্বাচন আয়োজনে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের পূর্ণ সমর্থনের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন উপহার দেওয়া আমাদের সরকারের মূল অঙ্গীকার এবং সেই লক্ষ্যেই গণভোটসহ সব প্রস্তুতি চূড়ান্ত করা হচ্ছে।”

শ্রমিক অধিকার ও সংস্কার প্রসঙ্গে মার্কিন চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স অন্তর্বর্তী সরকারের নেওয়া নতুন শ্রম অধ্যাদেশকে ‘অসাধারণ ও ব্যতিক্রমধর্মী’ হিসেবে বর্ণনা করেন। তিনি বিশ্বাস করেন, এই যুগান্তকারী আইনটি বাংলাদেশে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ (FDI) আকর্ষণে শক্তিশালী ভূমিকা রাখবে। এছাড়াও বিগত সরকারগুলোর আমলে শ্রমিক নেতাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা ৪৬টি রাজনৈতিক মামলার মধ্যে ৪৫টি প্রত্যাহারের সাহসী সিদ্ধান্তের ভূয়সী প্রশংসা করেন জ্যাকবসন। জবাবে ড. ইউনূস জানান, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) কনভেনশন অনুসরণ করেই এই সংস্কার করা হয়েছে এবং শ্রমিক নেতারাও একে সানন্দে গ্রহণ করেছেন।

আলোচনায় রোহিঙ্গা ইস্যুটিও বিশেষ গুরুত্ব পায়। প্রধান উপদেষ্টা রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তায় একক বৃহত্তম দাতা দেশ হিসেবে পাশে থাকায় যুক্তরাষ্ট্রকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, “দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের শরণার্থী শিবিরগুলোতে বসবাসরত ১০ লাখের বেশি বাস্তুচ্যুত মানুষের জীবন বাঁচাতে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা অতুলনীয়।” বৈঠক শেষে ড. ইউনূস ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসনকে বাংলাদেশের একজন পরম ‘বন্ধু’ হিসেবে অভিহিত করেন এবং ভবিষ্যতে আবারও বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানিয়ে তাঁর বিদায়লগ্নে শুভকামনা জানান।


অপরাধী পালানো রুখতে সীমান্তে লাল সতর্কতা: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২৯ ১১:১১:৩৯
অপরাধী পালানো রুখতে সীমান্তে লাল সতর্কতা: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
ছবি : সংগৃহীত

বাংলাদেশ থেকে কোনো চিহ্নিত অপরাধী বা সন্ত্রাসী যেন সীমান্ত ব্যবহার করে পার্শ্ববর্তী দেশে পালিয়ে যেতে না পারে, সে বিষয়ে বিজিবিকে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর পিলখানায় বিজিবি সদর দপ্তরে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এই কঠোর হুঁশিয়ারি প্রদান করেন। তিনি স্পষ্ট করে বলেন, দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে অনেক অপরাধী আত্মগোপন থেকে পালানোর চেষ্টা করছে, তাদের আটক করা বিজিবির নৈতিক ও পেশাগত দায়িত্ব।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা তাঁর বক্তব্যে বিজিবি কর্মকর্তাদের জেলা প্রশাসনের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ বজায় রাখার পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, “সীমান্ত সুরক্ষায় কোনো শিথিলতা বরদাশত করা হবে না। প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক রক্ষা করতে হবে মেধা ও কৌশলের পরিচয় দিয়ে, কিন্তু দেশের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে কোনো আপস চলবে না।” বিশেষ করে মাদকের বিরুদ্ধে বিজিবিকে অতন্দ্র প্রহরীর মতো জেগে থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, যদি কোনো বিজিবি কর্মকর্তা মাদক কারবারি বা চোরাচালানিদের সহায়তা করে ধরা পড়েন, তবে তাকে কঠোর শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে।

আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিজিবির ভূমিকার গুরুত্ব তুলে ধরে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, একটি সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের পরিবেশ নিশ্চিত করতে বিজিবিকে এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে হবে। সীমান্ত দিয়ে অবৈধ অস্ত্রের প্রবেশ রোধ এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা নির্বাচনের পূর্বশর্ত। তিনি বিজিবি সদস্যদের মনোবল অটুট রেখে দেশপ্রেমের সাথে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার এই কঠোর নির্দেশনা বিশেষ করে আত্মগোপনে থাকা সাবেক প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা ও কর্মকর্তাদের পালানোর পথ বন্ধ করতে একটি বড় পদক্ষেপ।


ভারতে সংখ্যালঘু নির্যাতনে ঢাকার কড়া প্রতিবাদ

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২৮ ১৯:০১:৩৯
ভারতে সংখ্যালঘু নির্যাতনে ঢাকার কড়া প্রতিবাদ
ছবি : সংগৃহীত

প্রতিবেশী দেশ ভারতে মুসলিম ও খ্রিষ্টানসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর অব্যাহত সহিংসতা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় তীব্র উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ সরকার। রোববার (২৮ ডিসেম্বর) বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত এক বিশেষ সংবাদ সম্মেলনে জনকূটনীতি বিভাগের মহাপরিচালক মাহবুবুল আলম এই আনুষ্ঠানিক অবস্থান তুলে ধরেন। তিনি স্পষ্টভাবে বলেন, ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে নৃশংস হত্যাকাণ্ড, গণপিটুনি এবং ধর্মীয় স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপের ঘটনাগুলো বর্তমানে এক উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌঁছেছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ওড়িশায় মুসলিম যুবক জুয়েল রানা এবং বিহারে মুহাম্মদ আতাহার হোসেনের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের কঠোর নিন্দা জানানো হয়। এ ছাড়াও কেরালায় বাংলাদেশি সন্দেহে এক নিরীহ ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনাটিকে ‘ঘৃণাজনিত অপরাধ’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে ঢাকা। মাহবুবুল আলম উল্লেখ করেন, গত সপ্তাহে ভারতজুড়ে বড়দিন উদযাপনকালে খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীদের ওপর যে ধরণের পদ্ধতিগত সহিংসতা চালানো হয়েছে, তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। বাংলাদেশ এই ধরণের ঘটনাকে নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর ওপর ‘লক্ষ্যভিত্তিক সহিংসতা’ হিসেবে দেখছে।

সংবাদ সম্মেলনে ভারতের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি এই সব নৃশংস ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত এবং দোষীদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনার আহ্বান জানানো হয়। মুখপাত্র মাহবুবুল আলম আরও বলেন, “প্রত্যেক রাষ্ট্রের মৌলিক দায়িত্ব তার সংখ্যালঘু নাগরিকদের জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তা এবং মর্যাদা নিশ্চিত করা। আমরা প্রত্যাশা করি ভারত তার সেই আন্তর্জাতিক ও নৈতিক বাধ্যবাধকতা পালন করবে।” বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি নিয়ে ভারতের সাম্প্রতিক বিভিন্ন মন্তব্যের বিপরীতে ঢাকার এই কড়া প্রতিক্রিয়া দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে নতুন এক সমীকরণ তৈরি করবে।


ভারতে ধরা পড়ল হাদির খুনিদের সহায়তাকারীরা

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২৮ ১৩:৫২:৫০
ভারতে ধরা পড়ল হাদির খুনিদের সহায়তাকারীরা
ছবি : সংগৃহীত

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি হত্যাকাণ্ডের প্রধান আসামিদের ভারতে পালিয়ে যেতে সহায়তাকারী দুই ভারতীয় নাগরিককে গ্রেপ্তার করেছে মেঘালয় পুলিশ। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার এস এন নজরুল ইসলাম আজ রোববার (২৮ ডিসেম্বর) ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। গ্রেপ্তারকৃত ভারতীয় নাগরিকদের নাম পুর্তি ও সামী। তারা মূল ঘাতক ফয়সাল করিম মাসুদ ও তার সহযোগী আলমগীর শেখকে মেঘালয়ের তুরা নামক স্থানে আশ্রয় ও পরিবহণ সুবিধা দিয়েছিল বলে জানা গেছে।

পুলিশের তদন্তে বেরিয়ে এসেছে যে, হাদি হত্যাকাণ্ডটি ছিল একটি সুপরিকল্পিত রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র। ঘটনার পর ঘাতক ফয়সাল ও আলমগীর ঢাকা থেকে সিএনজিতে করে আমিনবাজার যায়। সেখান থেকে একাধিক গাড়ি পরিবর্তন করে তারা ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট সীমান্ত এলাকা দিয়ে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করে। মানবপাচারকারী ফিলিপ স্নাল ও সঞ্জয় এই দুই খুনিকে সীমান্ত পার করে মেঘালয়ে নিয়ে যায়। ডিএমপির তথ্যমতে, ভারতীয় নাগরিক পুর্তি আসামিদের রিসিভ করে এবং সামী নামের এক ব্যক্তির গাড়িতে করে তারা অজ্ঞাত স্থানে গা ঢাকা দেয়।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, শরিফ ওসমান হাদি হত্যা মামলায় এ পর্যন্ত ১১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এদের মধ্যে ৬ জন আসামি এবং ৪ জন সাক্ষী আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন, যা মামলার ভিতকে আরও শক্ত করেছে। মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার শফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে থাকা কুশীলবদের শনাক্ত করা হয়েছে এবং একে স্পষ্টভাবে একটি রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। তদন্তের স্বার্থে এখনই মাস্টারমাইন্ডদের নাম প্রকাশ করা না হলেও খুব দ্রুত তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।

ডিএমপি জানিয়েছে, মামলার তদন্ত কার্যক্রম এখন একেবারে শেষ পর্যায়ে। আগামী ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যে আদালতে এই চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ডের অভিযোগপত্র (চার্জশিট) জমা দেওয়া হবে। এদিকে, ভারতীয় দুই নাগরিক গ্রেপ্তার হওয়ার ফলে মূল ঘাতকদের দেশে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া আরও সহজ হবে বলে আশা করছেন তদন্ত কর্মকর্তারা। ছাত্র-জনতার বিপ্লবের অন্যতম মুখ ওসমান হাদির এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচারের দাবিতে সরব রয়েছে পুরো দেশ।


আজ থেকেই বিচার বিভাগে নতুন যুগ

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২৮ ১১:০৫:৫২
আজ থেকেই বিচার বিভাগে নতুন যুগ
ছবি : সংগৃহীত

বাংলাদেশের বিচার বিভাগের অভিভাবক হিসেবে আজ আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব গ্রহণ করলেন বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী। রোববার (২৮ ডিসেম্বর) সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন তাঁকে শপথবাক্য পাঠ করান। এই মহতী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে শপথের সাক্ষী হন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এ সময় উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, তিন বাহিনীর প্রধানগণ এবং সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবীসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। গত ২৩ ডিসেম্বর আইন মন্ত্রণালয় থেকে জারিকৃত প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, আজ শপথ গ্রহণের মধ্য দিয়েই তাঁর এই নিয়োগ কার্যকর হলো।

বিদায়ী প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ গতকাল শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) তাঁর ৬৭ বছর বয়স পূর্ণ হওয়ায় অবসরে যান। তাঁর স্থলাভিষিক্ত হওয়া বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরীর জন্ম ১৯৬১ সালের ১৮ মে। তাঁর পিতা প্রয়াত এ এফ এম আবদুর রহমান চৌধুরীও সুপ্রিম কোর্টের একজন খ্যাতিমান বিচারক ছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি ও এলএলএম ডিগ্রি অর্জনের পর তিনি যুক্তরাজ্য থেকে আন্তর্জাতিক আইন বিষয়ে উচ্চতর স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন।

বিচারক জীবনের দীর্ঘ চড়াই-উতরাই পেরিয়ে আজ তিনি শীর্ষতম পদে আসীন হলেন। ১৯৮৫ সালে জেলা জজ আদালতে আইন পেশা শুরু করার পর ১৯৮৭ সালে তিনি হাইকোর্ট বিভাগের আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। ২০০৩ সালে অতিরিক্ত বিচারক এবং ২০০৫ সালে হাইকোর্টের স্থায়ী বিচারক হিসেবে নিয়োগ পেলেও রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের আগে তিনি দীর্ঘকাল আপিল বিভাগে পদোন্নতি বঞ্চিত ছিলেন। অবশেষে চব্বিশের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর গত ১২ আগস্ট তাঁকে আপিল বিভাগের বিচারপতি হিসেবে পদোন্নতি দেওয়া হয়।

সংবিধানের নিয়ম অনুযায়ী, বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী ২০২৮ সালের ১৭ মে পর্যন্ত প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব পালন করার সুযোগ পাবেন। তাঁর নিয়োগের মাধ্যমে বিচার বিভাগের ওপর সাধারণ মানুষের আস্থা আরও সুসংহত হবে বলে আশা করছেন আইন বিশেষজ্ঞরা। শপথ গ্রহণ শেষে নতুন প্রধান বিচারপতিকে অভিনন্দন জানান বিভিন্ন স্তরের বিচারক ও আইনজীবীরা। আগামীতে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করাই তাঁর সামনে প্রধান চ্যালেঞ্জ বলে মনে করা হচ্ছে।


কর্মকর্তাদের পকেটে বইয়ের টাকা: নতুন বছরেও খালি হাতেই ক্লাসে ছাত্ররা 

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২৮ ০৮:৪৪:৫৪
কর্মকর্তাদের পকেটে বইয়ের টাকা: নতুন বছরেও খালি হাতেই ক্লাসে ছাত্ররা 
ছবি : সংগৃহীত

নতুন শিক্ষাবর্ষের সূচনালগ্নে শিক্ষার্থীদের জন্য এক হতাশাজনক খবর নিয়ে আসছে ২০২৬ সাল। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) চরম অব্যবস্থাপনা এবং একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের কারণে মাধ্যমিক স্তরের সাড়ে ১১ কোটি পাঠ্যবই এখনো ছাপা হয়নি। ফলে আগামী ১ জানুয়ারি বছরের প্রথম দিনে ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির ১ কোটিরও বেশি শিক্ষার্থী খালি হাতেই স্কুলে যেতে বাধ্য হবে। অভিযোগ উঠেছে, এনসিটিবির সদস্য ড. রিয়াদ চৌধুরীর নেতৃত্বে একটি অসাধু চক্র সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করতে এবং বড় অঙ্কের কমিশন বাণিজ্যের লক্ষ্যে বই ছাপার কাজে ধীরগতি সৃষ্টি করেছে।

এনসিটিবির পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৬ সালের জন্য নির্ধারিত ৩০ কোটি বইয়ের মধ্যে মাধ্যমিক স্তরের ২১ কোটি ৪৩ লাখ বই ছাপার কথা থাকলেও বছর শেষে সাড়ে ১১ কোটি বই ছাপার কাজ বাকি। সবচেয়ে খারাপ অবস্থা অষ্টম শ্রেণিতে, যেখানে লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে মাত্র ৪.৫ শতাংশ বই ছাপা হয়েছে। প্রাথমিক ও ইবতেদায়ি স্তরের বই উপজেলা পর্যায়ে পৌঁছালেও মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীদের বই পেতে আগামী মার্চ মাস পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হতে পারে। সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, আওয়ামী লীগের সাবেক মন্ত্রী ও প্রভাবশালী নেতাদের ঘনিষ্ঠ ১৫টি প্রেস মালিককে কাজ দেওয়ার মাধ্যমে এই অচলাবস্থার সূত্রপাত ঘটে। পরবর্তীতে দরপত্র বাতিল ও পুনঃদরপত্র আহ্বানের প্রক্রিয়ায় সিন্ডিকেটভুক্ত দুটি প্রেসকে অবৈধ সুবিধা দিতে কাগজের মানেও বড় ধরনের পরিবর্তন আনা হয়েছে।

তদন্তে জানা গেছে, কাগজের মান নিয়ে ‘বাস্টিং ফ্যাক্টর’ এবং ‘ওবিএ’ মুক্ত হওয়ার যে কঠোর শর্ত শুরুতে ছিল, পছন্দের দুটি প্রেসকে সুবিধা দিতে হঠাৎ করেই তা শিথিল করা হয়। প্রেস মালিকদের দাবি, এনসিটিবির ভাণ্ডার কর্মকর্তা আসাফ-উদ-দৌলা এবং রিয়াদ চৌধুরীর বলয়ে থাকা কর্মকর্তাদের মাধ্যমে ৫টি পেপার মিলের সাথে অঘোষিত চুক্তি করে প্রায় ৪৫ কোটি টাকার কমিশন বাণিজ্য করা হয়েছে। নিম্নমানের কাগজে বই ছাপার মাধ্যমে এই বিশাল অংকের অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এই চক্রের বিরুদ্ধে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় অভিযুক্তদের বদলির চেষ্টা করলেও সচিব দপ্তরের এক কর্মকর্তার হস্তক্ষেপে তা বারবার থমকে যাচ্ছে।

বর্তমান পরিস্থিতিতে এনসিটিবির চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. মাহবুবুল হক পাটওয়ারী স্বীকার করেছেন যে, দরপত্র জটিলতায় ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণির বই পৌঁছাতে দেরি হচ্ছে। তবে জানুয়ারি মাসে সব শিক্ষার্থী বই পাবে না—এ কথা এখন স্পষ্ট। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, শিক্ষার এই মৌসুমে বইয়ের এমন আকাল শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় বড় ধরনের ব্যাঘাত ঘটাবে। এনসিটিবির এই কাঠামোগত দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার কারণে নতুন বছরের বই উৎসব এখন কেবলই একটি ধূসর স্বপ্নে পরিণত হয়েছে।


গণমাধ্যমে যারা আগুন দেয় তারা সরকারেরও প্রতিপক্ষ: তথ্য উপদেষ্টা

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২৭ ১৯:০০:০৫
গণমাধ্যমে যারা আগুন দেয় তারা সরকারেরও প্রতিপক্ষ: তথ্য উপদেষ্টা
ছবি : সংগৃহীত

রাজধানীর সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে আজ ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টারের (বিজেসি) ষষ্ঠ সম্প্রচার সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান গত ১৮ ডিসেম্বরের ঘটনাকে ন্যাক্কারজনক হিসেবে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, সংবাদপত্রের নীতির সাথে মতভেদ থাকলে বুদ্ধিবৃত্তিক প্রতিবাদ হতে পারে, এমনকি চাইলে নতুন পত্রিকাও খোলা যেতে পারে, কিন্তু কার্যালয়ে হামলা ও অগ্নিসংযোগ কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। যারা এই ভয় দেখানোর রাজনীতি করে, তারা মূলত সরকার ও গণমাধ্যম—উভয়েরই অভিন্ন প্রতিপক্ষ।

রিজওয়ানা হাসান জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে প্রথম আলো, ডেইলি স্টার, নিউ এজ এবং যমুনা টিভিসহ একাধিক সংবাদমাধ্যমের সাহসিকতাপূর্ণ ভূমিকার প্রশংসা করেন। তিনি স্বীকার করেন যে, হামলা ঠেকাতে প্রশাসনের যতটুকু 'প্রো-অ্যাকটিভ' বা অগ্রণী ভূমিকা পালনের প্রয়োজন ছিল, সেখানে কিছুটা ঘাটতি ছিল। তবে সরকার এই ক্ষতির গুরুত্ব বুঝতে পারছে এবং দোষীদের আইনের আওতায় আনতে বদ্ধপরিকর। এছাড়া তিনি আগামী দেড় মাসের মধ্যে সম্প্রচার কমিশন ও প্রেস কমিশন অধ্যাদেশ জারি করার মাধ্যমে সাংবাদিকদের পেশাগত নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দেন।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত সম্পাদক পরিষদের সভাপতি ও নিউ এজ সম্পাদক নূরুল কবীর সরকারের কড়া সমালোচনা করেন। তিনি অভিযোগ তোলেন যে, প্রশাসনের কোনো একটি অংশ রহস্যজনকভাবে প্রথম আলো, ডেইলি স্টার ও ছায়ানট ভবনে হামলা ও লুটপাটের ঘটনা ঘটতে দিয়েছে। ১৮ ডিসেম্বরের সেই রাতে ঘটনাস্থলে গিয়ে তিনিও হেনস্তার শিকার হয়েছিলেন। সম্মেলনে উপস্থিত অন্যান্য জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ও সম্পাদকরা এই ঘটনাকে বাংলাদেশের সংবাদপত্রের ইতিহাসের একটি ‘কালো দিন’ হিসেবে উল্লেখ করে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।

সম্মেলনের আলোচনায় গণমাধ্যমকর্মীরা জানান যে, স্বাধীন সাংবাদিকতা বিপন্ন হলে গণতন্ত্রও ঝুঁকির মুখে পড়বে। সারা হোসেন, কামাল আহমেদ এবং ইলিয়াস হোসেনের মতো বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ গণমাধ্যমের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারকে আরও কঠোর হওয়ার পরামর্শ দেন। সব শেষে তথ্য উপদেষ্টা আশ্বস্ত করেন যে, তথ্য কমিশনের চেয়ারম্যান ও কমিশনার নিয়োগের কাজ দ্রুত সম্পন্ন করা হচ্ছে যাতে তথ্য প্রবাহ আরও স্বচ্ছ হয়। গণমাধ্যম এবং সরকার একে অপরের হাত ধরে কাজ করলে যেকোনো অপশক্তিকে রুখে দেওয়া সম্ভব বলে তিনি মনে করেন।


৬ মাসের পরিকল্পনা ও এক মিনিটের অপারেশন: হাদি হত্যার নতুন রহস্য

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২৭ ১৮:৪৬:২৫
৬ মাসের পরিকল্পনা ও এক মিনিটের অপারেশন: হাদি হত্যার নতুন রহস্য
ছবি : সংগৃহীত

রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স-কালভার্ট রোডে গত ১২ ডিসেম্বর প্রকাশ্য দিবালোকে গুলি করে হত্যা করা হয় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদিকে। এই হত্যাকাণ্ডের তদন্তে নেমে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) জানতে পেরেছে, এই মিশনের মূল হোতা ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ গত জুলাই মাসেই সিঙ্গাপুরে গিয়ে পলাতক কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতার সঙ্গে গোপন বৈঠক করেছিলেন। নিজেকে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উদ্যোক্তা হিসেবে পরিচয় দিয়ে তিনি সিঙ্গাপুরে প্রবেশ করেন এবং মালয়েশিয়া সীমান্তে গিয়ে কিলিং মিশনের চূড়ান্ত পরিকল্পনা ও অর্থের জোগান নিশ্চিত করেন। ২৬ জুলাই দেশে ফেরার পর থেকেই তিনি উপযুক্ত সময়ের অপেক্ষায় ছিলেন।

তদন্তে আরও উঠে এসেছে যে, হত্যাকাণ্ডের আগে ফয়সাল তাঁর স্ত্রী সাহেদা পারভীনকে একটি ব্যাংক হিসাবে ৩০ লাখ টাকা জমা রাখার কথা জানান এবং ইঙ্গিত দেন যে ভবিষ্যতে তাঁকে দেশ ছাড়তে হতে পারে। এমনকি হত্যার আগের রাতে সাভারের মধুমতি মডেল টাউনে প্রেমিকা মারিয়া আক্তারের সঙ্গে সময় কাটানোর সময় ফয়সাল দাম্ভিকতার সঙ্গে বলেছিলেন, ‘আগামীকাল এমন কিছু হবে যা পুরো দেশ কাঁপিয়ে দেবে।’ যদিও মারিয়া দাবি করেছেন, তিনি বড় কোনো অপরাধের কথা জানতেন না। হত্যার পর ফয়সাল ও মোটরসাইকেল চালক আলমগীরকে হালুয়াঘাট সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালিয়ে যেতে সহায়তা করেন ঢাকা মহানগর উত্তর যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক কাউন্সিলর তাইজুল ইসলাম চৌধুরী বাপ্পী।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মো. শফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন যে, ফয়সালের বিদেশ ভ্রমণ এবং সীমান্তের দালাল ফিলিপ স্নালের সম্পৃক্ততা নিবিড়ভাবে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ইতিমধ্যে র‍্যাব ও ডিবি অভিযান চালিয়ে এই ঘটনায় ১১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। তদন্তকারীদের ধারণা, হাদিকে রাজনৈতিক ময়দান থেকে সরিয়ে দিতেই এই সুপরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে। হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর ১৮ ডিসেম্বর সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন এবং তাঁকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে দাফন করা হয়।

অন্যদিকে, ওসমান হাদি হত্যার বিচারের দাবিতে রাজধানীর শাহবাগে বিক্ষোভ অব্যাহত রেখেছে ইনকিলাব মঞ্চ। গতকাল জুমার নামাজের পর আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে শাহবাগ মোড়কে ‘শহীদ ওসমান হাদি চত্বর’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। সংগঠনের সদস্য সচিব আবদুল্লাহ আল জাবের সাফ জানিয়েছেন যে, প্রকৃত খুনি ও নেপথ্যের কুশীলবদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত তাঁদের রাজপথের আন্দোলন থামবে না। বর্তমানে এই মামলাটি গোয়েন্দা পুলিশের নিবিড় পর্যবেক্ষণে রয়েছে এবং জড়িত অন্যদের ধরতে অভিযান অব্যাহত আছে।


এনআইডি পেতে তারেক রহমানের হাতে সময় মাত্র ২৪ ঘণ্টা

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২৭ ১৮:২৭:৩৯
এনআইডি পেতে তারেক রহমানের হাতে সময় মাত্র ২৪ ঘণ্টা
ছবি : সংগৃহীত

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং তাঁর কন্যা ব্যারিস্টার জাইমা রহমান বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ার যাবতীয় দাপ্তরিক কাজ আজ শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) সম্পন্ন করেছেন। নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ জানিয়েছেন যে তাঁদের ভোটার করার বিষয়টি চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য আগামীকাল রোববার (২৮ ডিসেম্বর) কমিশনের নিয়মিত বৈঠকে উপস্থাপন করা হবে। বর্তমানে জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হয়ে যাওয়ায় নতুন করে ভোটার করার ক্ষেত্রে কমিশনের বিশেষ অনুমোদনের প্রয়োজন পড়ে, যা এই বৈঠকের মাধ্যমে সম্পন্ন হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

আজ দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (ইটিআই) ভবনে কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে তারেক রহমান ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত হন। সেখানে এনআইডি উইংয়ের ডিজি এ এস এম হুমায়ুন কবীরের উপস্থিতিতে তাঁরা নিজেদের আঙুলের ছাপ, চোখের মণির (আইরিশ) প্রতিচ্ছবি এবং অন্যান্য বায়োমেট্রিক তথ্য প্রদান করেন। এনআইডি উইংয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে তথ্য সংগ্রহের পর ডেটাবেজে এনআইডি নম্বর জেনারেট হতে সর্বোচ্চ ২৪ ঘণ্টা সময় লাগতে পারে। অর্থাৎ, আগামীকাল বিকেলের মধ্যেই তারেক রহমানের হাতে তাঁর জাতীয় পরিচয়পত্র পৌঁছে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

ইসি সচিব আখতার আহমেদ আরও জানান যে ভোটার তালিকা আইন ২০০৯-এর ১৫ ধারা অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন যেকোনো প্রাপ্তবয়স্ক যোগ্য নাগরিককে যেকোনো সময় ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার ক্ষমতা রাখে। সেই আইনি কাঠামোর আওতায় গুলশান এলাকার ভোটার হিসেবে তারেক রহমান ও জাইমা রহমানের আবেদন গ্রহণ করা হয়েছে। উল্লেখ্য যে দীর্ঘ ১৭ বছর প্রবাসে থাকায় তাঁরা ছবিসহ ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হতে পারেননি। আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য ভোটার হওয়া একটি বাধ্যতামূলক শর্ত, যা পূরণের লক্ষ্যেই এই তড়িঘড়ি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ সময় ২৯ ডিসেম্বর হওয়ায় তারেক রহমানের হাতে সময় অত্যন্ত কম। তবে নির্বাচন কমিশনের নমনীয় মনোভাব এবং দ্রুত কাজের গতির কারণে মনে করা হচ্ছে যে তিনি সময়মতোই তাঁর মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারবেন। ইতিমধ্যে বগুড়া-৬ আসন থেকে তাঁর জন্য দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করা হয়েছে। তারেক রহমান ও জাইমা রহমানের এই ভোটার হওয়ার মধ্য দিয়ে জিয়া পরিবারের উত্তরসূরিদের প্রত্যক্ষ নির্বাচনী রাজনীতিতে ফেরার পথ সুগম হলো, যা দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন এক উদ্দীপনার সৃষ্টি করেছে।

পাঠকের মতামত:

ব্যক্তিগত দায় বনাম প্রাতিষ্ঠানিক দায়: দায়মুক্তির এক রাজনৈতিক সংস্কৃতি

চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জের ঘটনা কাগজে পড়লে প্রথমে মনে হয় এটা যেন কোনো যুদ্ধের খবর। এক তরুণকে বিদ্যুতের খুঁটিতে বেঁধে হাত–পা প্রায়... বিস্তারিত