সড়ক নয় যেন মরণফাঁদ অক্টোবর মাসের চিত্র উদ্বেগের জন্ম দিল

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১২ ১৪:৩৬:৫৯
সড়ক নয় যেন মরণফাঁদ অক্টোবর মাসের চিত্র উদ্বেগের জন্ম দিল
ছবিঃ সংগৃহীত

গত অক্টোবর মাসে সারাদেশে ৪৬৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪৬৯ জন নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন ১ হাজার ২৮০ জন। এটি গড়ে প্রতিদিন প্রায় ১৫ জনের মৃত্যুর হার।

বুধবার ১২ নভেম্বর বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো মোজাম্মেল হক চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়। সংগঠনটি জাতীয়, আঞ্চলিক ও অনলাইন সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে এই তথ্য সংগ্রহ করেছে।

যাত্রী কল্যাণ সমিতির তথ্য অনুযায়ী, গত অক্টোবর মাসে সড়ক, রেল ও নৌপথে মোট ৫৩২টি দুর্ঘটনায় ৫২৮ জন নিহত এবং ১ হাজার ৩১০ জন আহত হয়েছেন।

ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এখানে ১২৬টি ঘটনায় ১৩০ জন নিহত এবং ৩৪৩ জন আহত হয়েছেন।

ময়মনসিংহ বিভাগে সবচেয়ে কম দুর্ঘটনা রেকর্ড করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৭০টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১৭৬ জন নিহত এবং ১৩৭ জন আহত হয়েছেন। এই সংখ্যা মোট দুর্ঘটনার ৩৬ শতাংশ, যা মোটরসাইকেলের ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থার ইঙ্গিত দিচ্ছে।

দুর্ঘটনায় নিহতদের মধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, বিভিন্ন যানবাহনের চালক, শিক্ষার্থী, নারী ও শিশুসহ সমাজের নানা শ্রেণির মানুষ রয়েছেন।

যাত্রী কল্যাণ সমিতির প্রতিবেদনে দুর্ঘটনার প্রধান কারণ হিসেবে নিম্নলিখিত বিষয়গুলো উল্লেখ করা হয়েছে:

সড়কের গর্ত ও ফিটনেসবিহীন যান

অদক্ষ চালক ও উল্টোপথে যানবাহন চলাচল

সড়কে প্রয়োজনীয় রোড ডিভাইডার না থাকা

ভবিষ্যতে সড়ক দুর্ঘটনা কমাতে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ করেছে

ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক-মহাসড়ক দ্রুত মেরামত করা

দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ নেওয়া

সড়কে প্রয়োজনীয় রোড সাইন স্থাপন করা

সড়ক পরিবহন আইন কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করা


নতুন পে স্কেলের কাঠামো দেবে অন্তর্বর্তী সরকার: অর্থ উপদেষ্টা

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১২ ১৪:০৮:৫৪
নতুন পে স্কেলের কাঠামো দেবে অন্তর্বর্তী সরকার: অর্থ উপদেষ্টা
অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। ফাইল ছবি

পে কমিশনের জন্য গঠিত আলাদা কমিশন কাজ করছে জানিয়ে অর্থ উপদেষ্টা ডক্টর সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার নতুন পে স্কেল বাস্তবায়নের জন্য একটি ফ্রেমওয়ার্ক বা কাঠামো তৈরি করবে। তবে চূড়ান্তভাবে এটি বাস্তবায়নের দায়িত্ব থাকবে পরবর্তী নির্বাচিত সরকারের ওপর।

বুধবার ১২ নভেম্বর সচিবালয়ে ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা জানান।

পে কমিশন নিয়ে সরকারের উদ্যোগ

ডক্টর সালেহউদ্দিন বলেন, পে কমিশনের জন্য একটি আলাদা কমিশন কাজ করছে। তিনটি রিপোর্ট পাওয়ার পর তা যাচাই-বাছাই করে কমিশন দেওয়া হবে।

তিনি বলেন, "গত আট বছরে পে কমিশন নিয়ে কোনো অগ্রগতি হয়নি। তাই আমরা এ উদ্যোগ নিয়েছি।"

"বর্তমান সরকার কেবল একটি কাঠামো তৈরি করবে, যা পরবর্তী সরকার বাস্তবায়ন করবে।" তিনি আরও বলেন, বাজেট ও সামাজিক খাতের অন্যান্য দিকও বিবেচনায় রাখতে হবে। পরবর্তী সরকার পে কমিশন বাস্তবায়ন করবে এটা যৌক্তিক।

বাজারে সরবরাহ ও নির্বাচন প্রস্তুতি

অর্থ উপদেষ্টা একইসঙ্গে বাজারে সরবরাহ স্বাভাবিক রাখা এবং আসন্ন নির্বাচন প্রস্তুতি সংক্রান্ত কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের বিষয়েও জানান।

তিনি জানান, রোজার আগে বাজারে সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে তেল ও চিনি আমদানি করা হবে।

এ ছাড়া আসন্ন নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তা ও পর্যবেক্ষণের জন্য ৪০ হাজার 'বডি অন ক্যামেরা' কেনার প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আগামী ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির বৈঠকে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

পুরোনো গাড়ি স্ক্র্যাপ করার নির্দেশ

ডক্টর সালেহউদ্দিন আহমেদ আরও জানান, পরিবেশের ক্ষতি এড়াতে বন্দরে আটকে থাকা পুরোনো গাড়িগুলো স্ক্র্যাপ করে বা ধ্বংস করে বিক্রি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।


শুল্কমুক্ত সুবিধায় আনা ৩১ বিলাসবহুল গাড়ি যাচ্ছে সরকারি যানবাহন অধিদপ্তরে

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১২ ১৪:০৪:২১
শুল্কমুক্ত সুবিধায় আনা ৩১ বিলাসবহুল গাড়ি যাচ্ছে সরকারি যানবাহন অধিদপ্তরে
ছবিঃ সংগৃহীত

বিলুপ্ত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ সদস্যদের জন্য বিশেষ শুল্কমুক্ত সুবিধায় আমদানি করা ৩১টি বিলাসবহুল গাড়ি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অধীন সরকারি যানবাহন অধিদপ্তরে হস্তান্তরের নির্দেশ দিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বা এনবিআর। বুধবার ১২ নভেম্বর এই সংক্রান্ত একটি বিশেষ আদেশ জারি করেছে এনবিআর।

শুল্কমুক্ত সুবিধা বাতিল ও নিলামে ব্যর্থতা

এনবিআর জানায়, বিলুপ্ত দ্বাদশ সংসদ সদস্যদের জন্য বিশেষ শুল্কমুক্ত সুবিধায় এই উচ্চমূল্যের গাড়িগুলো আমদানি করা হয়েছিল। সংসদ ভেঙে যাওয়ার পর চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস এনবিআরের কাছে এই সুবিধা প্রযোজ্য হবে কি না, তা জানতে চেয়েছিল।

২০২৪ সালের ৮ ডিসেম্বর এনবিআর জানায়, এসব গাড়ির ক্ষেত্রে শুল্কমুক্ত সুবিধা প্রযোজ্য নয় এবং আমদানিকারকদের স্বাভাবিক হারে শুল্ককর পরিশোধ করে গাড়িগুলো খালাস করতে হবে।

সংশ্লিষ্ট আমদানিকারকরা শুল্ক-কর পরিশোধ না করায় কাস্টমস আইন, ২০২৩ এর ধারা ৯৪ (৩) অনুযায়ী গাড়িগুলো নিলামে তোলা হয়। তবে কোনো নিলামকারী গাড়িগুলোর যৌক্তিক মূল্য প্রস্তাব না করায় সেগুলো বিক্রি করা সম্ভব হয়নি।

হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত ও কারণ

বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, পরে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জনস্বার্থে এসব উচ্চমূল্যের গাড়ি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অধীন সরকারি যানবাহন অধিদপ্তরে হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

এনবিআরের তথ্যানুযায়ী, শুল্কমুক্ত সুবিধায় আমদানি করা এই ৩১টি গাড়ির মোট প্রদেয় শুল্ক ও করের পরিমাণ ২৬৯ কোটি ৬১ লাখ ৮৯ হাজার ৬০০ টাকা। এর মধ্যে একক গাড়ির সর্বোচ্চ শুল্ক-কর ৯ কোটি ৪৪ লাখ ৮৩ হাজার ৩০০ টাকা এবং সর্বনিম্ন ৮ কোটি ৬২ লাখ ৬৭ হাজার ৪০০ টাকা।

ভবিষ্যতের ব্যবস্থা

এনবিআর জানিয়েছে, ভবিষ্যতে সংশ্লিষ্ট আমদানিকারকরা যদি আইন অনুযায়ী প্রযোজ্য শুল্ক-কর পরিশোধ করেন, তাহলে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস শুল্কায়ন সম্পন্ন করে গাড়িগুলো তাদের অনুকূলে খালাস দিতে পারবে। সেক্ষেত্রে সরকারি যানবাহন অধিদপ্তর সংশ্লিষ্ট গাড়িগুলো কাস্টমস কর্তৃপক্ষের কাছে ফেরত দেবে।

চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস সূত্রে জানা গেছে, এই গাড়িগুলো দীর্ঘদিন বন্দর এলাকায় খালাসহীন অবস্থায় পড়ে ছিল। ২০২৪ সালে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের পর এই গাড়িগুলো শুল্কমুক্ত সুবিধায় আমদানি করেছিলেন তৎকালীন সংসদ সদস্যরা। ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর গত বছরের ৬ আগস্ট সংসদ ভেঙে দেওয়া হলে শুল্কমুক্ত সুবিধাও বাতিল করে এনবিআর।

এর আগে সেপ্টেম্বরে এক অনুষ্ঠানে এনবিআর চেয়ারম্যান মো আবদুর রহমান খান বলেছিলেন, দ্বাদশ সংসদ সদস্যদের জন্য আমদানি করা ৩০টি গাড়ি সরকারকে দেওয়া হচ্ছে। নিলামে ভালো দর না পাওয়ায় এসব গাড়ি এখন সরকারকে দিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড।


রাজধানীতে ১৪ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন: লকডাউন ঘিরে কড়া নিরাপত্তা

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১২ ১১:৫১:২৭
রাজধানীতে ১৪ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন: লকডাউন ঘিরে কড়া নিরাপত্তা
ছবিঃ সংগৃহীত

রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের জেলাগুলোতে ১৪ প্লাটুন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) মোতায়েন করা হয়েছে। উদ্দেশ্য—যেকোনো ধরনের নাশকতা, সহিংসতা বা বিশৃঙ্খলা প্রতিরোধ এবং জননিরাপত্তা নিশ্চিত করা।

বিজিবির এই মোতায়েনের সিদ্ধান্ত আসে এমন এক সময়ে, যখন নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগ আগামী ১৩ নভেম্বর রাজধানীতে “লকডাউন” কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। এই কর্মসূচিকে ঘিরে রাজধানীতে সম্ভাব্য সহিংসতা বা অস্থিতিশীলতা মোকাবিলায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রাখা হয়েছে।

বিজিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরীফুল ইসলাম বুধবার জানান, “রাজধানী ঢাকা শহরের ভেতরে ১২ প্লাটুন এবং পার্শ্ববর্তী জেলাগুলোতে আরও ২ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত এই মোতায়েন কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।”

বিজিবির মূল দায়িত্ব হবে রাজধানী ও আশপাশের এলাকায় গ্রেনেড হামলা, যানবাহন অগ্নিসংযোগসহ যেকোনো নাশকতা রোধ করা, এবং প্রয়োজনে পুলিশ ও প্রশাসনকে সহায়তা প্রদান করা। ইতোমধ্যে নিরাপত্তা বাহিনী সম্ভাব্য ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলোতে অতিরিক্ত টহল ও নজরদারি কার্যক্রম জোরদার করেছে।

এই পদক্ষেপের সঙ্গে মিলে গেছে ১৩ নভেম্বর ঘোষিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার রায় ঘোষণার সময়সূচি—যা গত বছরের জুলাই মাসের সহিংস “অভ্যুত্থান”-এর সঙ্গে জড়িত তিন আসামির বিরুদ্ধে দায়ের করা হয়েছিল। ওই মামলার অন্যতম অভিযুক্ত ছিলেন চ্যুতপ্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ এই রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে রাজধানী অবরোধ ও লকডাউন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। এরই প্রেক্ষিতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অক্ষুণ্ন রাখতে বিজিবির পাশাপাশি পুলিশ, র‍্যাব ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকেও উচ্চ সতর্ক অবস্থায় রাখা হয়েছে।

নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের মতে, এই পদক্ষেপ সরকারের একটি প্রতিরোধমূলক কৌশল, যা সম্ভাব্য সংঘর্ষ বা সহিংসতা ঠেকাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে রাজনৈতিক অস্থিরতা, বিক্ষোভ ও সহিংসতার পুনরাবৃত্তি দেশের স্থিতিশীলতার ওপর চাপ সৃষ্টি করেছে। ফলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সক্রিয় উপস্থিতি এখন অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা।

রাজধানীতে এখন সর্বত্রই টহল জোরদার করা হয়েছে; প্রধান সড়ক, সরকারি স্থাপনা ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানে চলছে নজরদারি। জনসাধারণকেও সতর্ক থাকতে এবং গুজবে কান না দিতে অনুরোধ করেছে প্রশাসন।

-আলমগীর হোসেন


লন্ডনের কমনওয়েলথ ফেয়ারে বাংলাদেশ: ঐতিহ্যের রঙে মুগ্ধ বিশ্ব

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১২ ১১:২৬:৫০
লন্ডনের কমনওয়েলথ ফেয়ারে বাংলাদেশ: ঐতিহ্যের রঙে মুগ্ধ বিশ্ব
ছবিঃ বি এস এস

লন্ডনের কেনসিংটন টাউন হলে আয়োজিত কমনওয়েলথ ফেয়ার ২০২৫-এ বাংলাদেশের সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও হস্তশিল্প ঐতিহ্য ঝলমল করে উঠেছে। কমনওয়েলথ কান্ট্রিজ লীগ (CCL)-এর শতবর্ষ উদযাপন এবং ৫৬টি সদস্যদেশের সংস্কৃতি ও ঐক্যের প্রতীক হিসেবে আয়োজিত এই মেলায় বাংলাদেশ হাইকমিশনের প্যাভিলিয়ন বিশেষ আকর্ষণ সৃষ্টি করে।

শনিবার অনুষ্ঠিত এই উৎসবে বাংলাদেশের প্যাভিলিয়নে প্রদর্শিত হয় দেশীয় কারুশিল্পের নান্দনিক সংগ্রহ—হাতে তৈরি পাটজাত ও টেক্সটাইল পণ্য, চামড়াজাত দ্রব্য এবং সুনিপুণ মুক্তার অলংকার। প্রতিটি প্রদর্শনী বাংলাদেশের ঐতিহ্য, শিল্পকুশলতা ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের জীবন্ত প্রতিচ্ছবি হয়ে উঠেছিল। দর্শনার্থীরা প্রশংসা করেন বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী শিল্পরুচি, সৃজনশীলতা ও পরিবেশবান্ধব হস্তশিল্পের প্রতি সরকারের সমর্থনকে।

শুধু প্রদর্শনীই নয়, মেলায় আগত অতিথিরা উপভোগ করেন আসল বাংলাদেশি খাবারের স্বাদ—বিরিয়ানি, সামুচা, পিঠা ও মিষ্টান্নে ভরপুর ছিল রুচিকর আয়োজন। এ সুযোগে কমনওয়েলথভুক্ত বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা একে অপরের সংস্কৃতি, খাবার ও ঐতিহ্যের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে পরিচিত হন, যা পারস্পরিক সৌহার্দ্য ও সাংস্কৃতিক বিনিময়কে আরও জোরদার করে।

মেলার আয়োজক কমনওয়েলথ কান্ট্রিজ লীগ (CCL) জানায়, এ বছরের অনুষ্ঠানটি তাদের শতবর্ষ পূর্তি উপলক্ষে বিশেষ তাৎপর্য বহন করে। মেলা থেকে প্রাপ্ত আয় প্রদান করা হবে কমনওয়েলথ গার্লস এডুকেশন ফান্ড (CGEF)-এ—যা কমনওয়েলথভুক্ত দেশের অনগ্রসর মেয়েদের শিক্ষা ও উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

বাংলাদেশ হাইকমিশনের কর্মকর্তারা বলেন, এই মেলার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক মঞ্চে বাংলাদেশের সংস্কৃতি, কারুশিল্প ও খাদ্য ঐতিহ্যকে তুলে ধরার পাশাপাশি নারী শিক্ষা ও মানবিক উদ্যোগে অবদান রাখার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এমন আয়োজন শুধু বাংলাদেশের ভাবমূর্তিকেই উজ্জ্বল করে না, বরং কমনওয়েলথ পরিবারের সঙ্গে বাংলাদেশের বন্ধনকেও আরও দৃঢ় করে।

-আলমগীর হোসেন


রোহিঙ্গা সহায়তায় কোরিয়ার নতুন চাল অনুদান: বাংলাদেশের পাশে সিউল

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১২ ১১:১৭:১৪
রোহিঙ্গা সহায়তায় কোরিয়ার নতুন চাল অনুদান: বাংলাদেশের পাশে সিউল
ছবিঃ বি এস এস

বাংলাদেশ ও জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় দক্ষিণ কোরিয়ার নতুন চাল অনুদানকে স্বাগত জানিয়েছে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে ঢাকায় সিউলের অব্যাহত সংহতি ও মানবিক দায়িত্ববোধের পুনঃপ্রতিশ্রুতি দৃঢ়ভাবে প্রতিফলিত হয়েছে।

চট্টগ্রামের আলংকার গুদামঘরে মঙ্গলবার আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এই চাল আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করা হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণসচিব মো. মোস্তাফিজুর রহমান, বাংলাদেশে নিযুক্ত দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত ইয়ং সিক পার্ক এবং ডব্লিউএফপির বাংলাদেশ প্রতিনিধি ও কান্ট্রি ডিরেক্টর ডম স্ক্যালপেলি। অনুষ্ঠানে কোরিয়ান কৃষকদের শ্রম ও অবদানের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়—কারণ তাঁদের কঠোর পরিশ্রমেই এই মানবিক সহায়তা সম্ভব হয়েছে।

এটি দক্ষিণ কোরিয়ার পক্ষ থেকে দ্বিতীয়বারের মতো রোহিঙ্গা সহায়তায় চাল অনুদান। দেশটি তাদের কৃষি, খাদ্য ও গ্রামীণ বিষয়ক মন্ত্রণালয় (MAFRA)-এর মাধ্যমে এবার ২০ হাজার ২৬৫ মেট্রিক টন চাল দিয়েছে। এর আগে ২০২৪ সালে তারা ১৫ হাজার মেট্রিক টন চাল অনুদান দিয়েছিল।

শুধু চালই নয়, এবার কোরিয়া পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ ফর্টিফায়েড রাইস কার্নেলও সরবরাহ করেছে, যাতে রয়েছে ভিটামিন এ, বি১, বি১২, জিঙ্ক, আয়রন ও ফোলিক অ্যাসিডের মতো প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান। স্থানীয়ভাবে এই কার্নেলগুলো ১:১০০ অনুপাতে সাধারণ চালের সঙ্গে মিশিয়ে কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবিরে বিতরণের আগে প্রস্তুত করা হবে।

ডব্লিউএফপির তথ্য অনুযায়ী, এই অনুদানটি ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গাকে প্রায় দুই মাস পর্যন্ত খাদ্য সহায়তা দিতে সক্ষম হবে। এটি কোরিয়ার বৈশ্বিক মানবিক সহায়তার অংশ—যার আওতায় দেশটি ১৭টি দেশে মোট ১ লাখ ৫০ হাজার মেট্রিক টন চাল দিয়েছে।

দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত ইয়ং সিক পার্ক বলেন, “রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের ক্রমবর্ধমান মানবিক চাহিদা মোকাবিলায় আমরা বাংলাদেশ সরকার ও ডব্লিউএফপির সঙ্গে একযোগে কাজ চালিয়ে যেতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”

রোহিঙ্গা সংকট নবম বছরে প্রবেশ করেছে। এখনো কক্সবাজারে ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছে। ২০২৪ সালের শুরুর দিক থেকে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে নতুন করে সংঘাত শুরু হওয়ায় আরও এক লাখ ৩০ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশে এসেছে।

২০২৫ সালের ইন্টিগ্রেটেড ফুড সিকিউরিটি ফেজ ক্লাসিফিকেশন (IPC) প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রায় ৪ লাখ ৪৬ হাজার রোহিঙ্গা—অর্থাৎ মোট জনসংখ্যার প্রায় ৪০ শতাংশ—তীব্র খাদ্য সংকটে রয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ২ লাখ ২৩ হাজার মানুষ জরুরি পর্যায়ের খাদ্য অনিরাপত্তায় ভুগছে।

ডব্লিউএফপি সতর্ক করেছে যে, আন্তর্জাতিক সহায়তা কমে গেলে ২০২৬ সালের এপ্রিল থেকেই রোহিঙ্গাদের জন্য জীবনরক্ষাকারী খাদ্য সরবরাহ কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হতে পারে।

রোহিঙ্গা সংকটের মানবিক মাত্রা যতই জটিল হচ্ছে, ততই বাংলাদেশের কূটনৈতিক ও মানবিক প্রচেষ্টায় আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সহায়তা অপরিহার্য হয়ে উঠছে। দক্ষিণ কোরিয়ার এ ধারাবাহিক সহযোগিতা নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের মানবিক প্রচেষ্টাকে আরও শক্তিশালী করেছে।

-নাজমুল হাসান


ইউনেস্কোর সভাপতি নির্বাচিত হওয়া আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে বাংলাদেশের বড় অর্জন: শিক্ষা উপদেষ্টা

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১১ ২১:৩০:০৫
ইউনেস্কোর সভাপতি নির্বাচিত হওয়া আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে বাংলাদেশের বড় অর্জন: শিক্ষা উপদেষ্টা

জাতিসংঘ শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি বিষয়ক সংস্থার বা ইউনেস্কো ৪৩তম সাধারণ সম্মেলনের সভাপতি নির্বাচিত হওয়াকে আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে বাংলাদেশের জন্য অনেক বড় অর্জন বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ডক্টর চৌধুরী রফিকুল আবরার।

মঙ্গলবার ১১ নভেম্বর বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থাকে বা বাসস দেওয়া এক একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি এই মন্তব্য করেন।

শক্তিশালী রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বিজয়

শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, জাপানের মতো শক্তিশালী রাষ্ট্রকে পেছনে ফেলে বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতির টানাপোড়নে ইউনেস্কোর মতো জাতিসংঘের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ প্রতিষ্ঠানে নেতৃত্ব দেওয়া বাংলাদেশের জন্য বড় ধরনের অর্জন।

তিনি জানান, সম্মেলনে বেশ কয়েকটি দেশের রাষ্ট্রপ্রধান ও ডেলিগেশন প্রধান, যাদের অনেকেই মন্ত্রী পর্যায়ের, তারা বাংলাদেশকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। আফ্রিকান ও আরব দেশ ছাড়াও পশ্চিমা দেশগুলোও বাংলাদেশকে অভিনন্দন জানিয়েছে।

অধ্যাপক রফিকুল আবরার মনে করেন, এই নেতৃত্ব পাওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সফট পাওয়ার এবং নিজস্ব সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য বিশেষ করে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। তিনি বলেন, সবকিছু মিলিয়ে সেখানে বাংলাদেশের একটা অবস্থান তৈরি হয়েছে।

নির্বাচন ও সম্মেলনের তথ্য

গত ৭ অক্টোবর প্যারিসে অনুষ্ঠিত ইউনেস্কোর নির্বাহী বোর্ডের ২২২তম অধিবেশনে ভোটের মাধ্যমে সভাপতি নির্বাচন করা হয়।

এতে জাপানের বিপক্ষে ৩০-২৭ ভোটে জয়লাভ করে বাংলাদেশ। এই পদে দক্ষিণ কোরিয়া ও ভারতেরও প্রার্থী ছিল, কিন্তু পরে দেশ দুটি প্রার্থীতা প্রত্যাহার করে নেয়।

এই জয়কে বাংলাদেশের জন্য একটি বড় ধরনের কূটনৈতিক সাফল্য ও সাংস্কৃতিক মর্যাদার বিষয় হিসেবে দেখা হচ্ছে। ইউনেস্কোর সাধারণ সম্মেলন বিশ্বের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি সম্পর্কিত নীতি নির্ধারণের বড় মঞ্চ। এটির সভাপতিত্বের দায়িত্ব পাওয়া যেকোনো দেশের জন্য মর্যাদাপূর্ণ অর্জন।

উজবেকিস্তানের সামারকান্দ শহরের সিল্ক রোড কনফারেন্স সেন্টারে গত ৩০ অক্টোবর ইউনেস্কোর ৪৩তম সম্মেলন শুরু হয় এবং চলবে আগামী ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত। সভায় সভাপতিত্ব করেন শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ডক্টর চৌধুরী রফিকুল আবরার।

এর আগে ২০১৭ সালে প্রথমবারের মতো ইউনেস্কোর সম্মেলনে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিল বাংলাদেশ।

সম্মেলনে অংশগ্রহণ শেষে গত ৭ নভেম্বর দেশে ফেরেন শিক্ষা উপদেষ্টা। ইউনেস্কোতে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি খন্দকার এম তালহা ছাড়াও বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।


সংবিধান কোনো ম্যাজিক নয় সব সংস্কার এখনই করা সম্ভব না আসিফ নজরুল

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১১ ১৯:২০:৫৪
সংবিধান কোনো ম্যাজিক নয় সব সংস্কার এখনই করা সম্ভব না আসিফ নজরুল
ছবিঃ সংগৃহীত

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেছেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের বিষয়ে সরকার আগামী তিন থেকে চার দিনের মধ্যে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবে। তিনি আশা প্রকাশ করেছেন, সরকারের নেওয়া সিদ্ধান্ত সব রাজনৈতিক দল মেনে নেবে।

মঙ্গলবার ১১ নভেম্বর সন্ধ্যায় রাজধানীতে এক মতবিনিময়সভায় তিনি এসব তথ্য জানান।

সংস্কার প্রক্রিয়া নিয়ে সরকারের অবস্থান

দেশের সংস্কারপ্রক্রিয়া নিয়ে চলমান রাজনৈতিক বিতর্ক এবং কিছু দলের দ্রুত সংস্কারের দাবির জবাবে আইন উপদেষ্টা সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করেন।

তিনি বলেন, "রাতারাতি সব সংস্কার শেষ করা সম্ভব নয়। বাস্তবে এত বড় ধরনের সংস্কার করা সহজসাধ্য নয়। ক্রমান্বয়ে সংস্কার করলে ভালো জায়গায় পৌঁছাতে পারব।"

তিনি স্বীকার করেন, "সবাই মনে করেন সব সংস্কার এখনই করে ফেলতে হবে। বিষয়টা এত সহজ নয়। আমরা যখন অ্যাকটিভিজম করেছি তখন ভেবেছি কত সহজ, কিন্তু এখন বুঝতে পারছি কত কঠিন।"

তিনি প্রশ্ন তুলে বলেন, "সব সংস্কার যেন সংবিধানে আটকে গেছে। অন্য কোনো সংস্কার কারো চোখেই পড়ে না।"

সংবিধান ম্যাজিক নয়

আসিফ নজরুল মনে করেন, সংবিধান বা আইনি পরিবর্তন সমস্যার একমাত্র সমাধান নয়। জনগণের অভ্যাস ও রাজনৈতিক সংস্কৃতি পরিবর্তন না হলে কোনো কিছু পরিবর্তন হবে না।

"সংবিধান কোনো ম্যাজিক নয়, যে লিখে দিলেই সমাধান হয়ে গেল। রাজনৈতিক সংস্কৃতি, জনগণের অভ্যাস বাদ না দিলে কোনো কিছু পরিবর্তন হবে না।"

সাংবিধানিক ব্যর্থতার একটি উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, "সংবিধানে তো লেখা আছে রাষ্ট্রপতি স্বাধীনভাবে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দেবেন। কখনো কি হয়েছে?"

বিচার বিভাগ সংস্কারের অগ্রগতি

বিচার বিভাগ সংস্কার প্রসঙ্গে আইন উপদেষ্টা জানান, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের দেওয়া বেশির ভাগ প্রস্তাবই ইতোমধ্যে বাস্তবায়িত হয়েছে।

তিনি দাবি করেন বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের দেওয়া ৭০-৮০ ভাগ সংস্কার প্রস্তাব ইতোমধ্যে বাস্তবায়ন হয়ে গেছে। অথচ অপপ্রচার করে বলা হয় কোথায় সংস্কার, কোথায় সংস্কার?

ভবিষ্যৎ সরকারের কাছে অনুরোধ

আইন উপদেষ্টা ভবিষ্যতে নির্বাচিত সরকারের কাছে সংস্কারগুলো ধরে রাখার অনুরোধ জানিয়েছেন। তিনি বলেন, "আমাদের একটা ভীতি কাজ করে যে নির্বাচিত সরকার আসবে তারা এটা ধরে রাখবে কি না।"

তিনি নতুন সরকারের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে বলেন, যারা আসবেন, তারা যেন সংস্কারগুলো ধরে রাখেন এবং আরও শক্ত অবস্থানে নিয়ে যান।


নির্বাচন সামনে বিশেষ ক্ষমতা পেলেন সামরিক কর্মকর্তারা

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১১ ১৬:৩২:১৫
নির্বাচন সামনে বিশেষ ক্ষমতা পেলেন সামরিক কর্মকর্তারা
ছবিঃ সংগৃহীত

বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীতে কর্মরত সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন ও তার চেয়ে ঊর্ধ্বতন সমপদমর্যাদার কমিশনপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের (কোস্টগার্ড ও বিজিবিতে প্রেষণে নিয়োজিত সমপদমর্যাদার কর্মকর্তাসহ) বিশেষ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা ২০২৫ সালের ১২ নভেম্বর থেকে ২০২৬ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাড়িয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এই বর্ধিত সময়সীমা আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথম ভাগে অনুষ্ঠেয় জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে বিশেষ তাৎপর্য বহন করছে।

আজ মঙ্গলবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে সরকারের এই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, জনস্বার্থে জারি করা এই আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।

ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের পদমর্যাদা ও সময়সীমা

এই বিশেষ ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছে সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন ও তদূর্ধ্ব সমপদমর্যাদার কমিশনপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের। কোস্টগার্ড ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বা বিজিবিতে প্রেষণে নিয়োজিত সমপদমর্যাদার কর্মকর্তারাও এই ক্ষমতার অধিকারী হবেন।

কার্যকর সময়সীমা: ২০২৫ সালের ১২ নভেম্বর থেকে ২০২৬ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।

কোন কোন ধারায় ক্ষমতা প্রয়োগ

প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে, ক্ষমতাপ্রাপ্ত বিশেষ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা ফৌজদারি কার্যবিধির নিম্নলিখিত ধারার অধীন অপরাধগুলো আমলে নিতে পারবেন:

ফৌজদারি কার্যবিধির ধারা ৬৪, ৬৫, ৮৩, ৮৪, ৮৬, ৯৫ (২), ১০০, ১০৫, ১০৭, ১০৯, ১১০, ১২৬, ১২৭, ১২৮, ১৩০, ১৩৩ ও ১৪২।

ক্ষমতা বৃদ্ধির প্রেক্ষাপট

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয় এবং ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। দেশে উদ্ভূত আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি মোকাবেলায় গত বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর সশস্ত্র বাহিনীকে (সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনী) বিশেষ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা দেওয়া হয়।

এর পর থেকে এই ক্ষমতার মেয়াদ সরকার প্রতিবার দুই মাস করে বাড়িয়ে আসছিল। এবার একবারে দীর্ঘ সময়ের জন্য, অর্থাৎ ২০২৫ সালের ১২ নভেম্বর থেকে ২০২৬ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এই বিশেষ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা বাড়ানো হলো।


আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসী কার্যক্রম করছে তারা নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করছে: প্রেস সচিব

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১১ ১৪:৩৬:৪৪
আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসী কার্যক্রম করছে তারা নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করছে: প্রেস সচিব
ছবি : কালবেলা

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম অভিযোগ করেছেন যে আওয়ামী লীগ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করছে। তিনি বলেছেন, ফ্যাসিস্ট এই রাজনৈতিক দলটি দেশে জ্বালাও-পোড়াও চালিয়ে প্রমাণ করছে তাদের নেশাই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড। তবে তিনি জোর দিয়ে বলেন, ফেব্রুয়ারির প্রথম ভাগেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং দেশি-বিদেশি কোনো শক্তিই এই নির্বাচন বানচাল করতে পারবে না।

মঙ্গলবার ১১ নভেম্বর সকাল ১১টায় কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার কুলিয়ারা উচ্চ বিদ্যালয়ের নতুন ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে অভিযোগ ও প্রমাণ

শফিকুল আলম আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ঘোষিত সন্ত্রাসী দল হিসেবে আখ্যায়িত করে তাদের কার্যক্রমের প্রমাণ হিসেবে সাম্প্রতিক সহিংসতার কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন:

"১৩ নভেম্বরকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগ এক ধরনের বিশৃঙ্খলা এবং সন্ত্রাসী কার্যক্রম করার চেষ্টা করছে।"

"এখন পর্যন্ত সারা দেশে সাতটি বাসে আগুন দিয়েছে। আমাদের ধারণা, এটা আওয়ামী লীগের লোকজন করেছে।"

"একজনকে হাতেনাতে ধরা হয়েছে ডেমরা এলাকা। তার বাড়ি গোপালগঞ্জে।"

"এছাড়াও ময়মনসিংহে একজন বাস চালককে ঘুমন্ত অবস্থায় আগুনে পুড়িয়ে মেরেছে। সব নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগের কাজ।"

তিনি মন্তব্য করেন, এই কার্যক্রমের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ প্রমাণ করেছে কেন তাদের নিষিদ্ধ করা হয়েছে এবং আওয়ামী লীগ একটি টেরোরিস্ট দল। পুলিশ এই বিষয়ে খুবই সতর্ক অবস্থানে আছে বলেও তিনি জানান।

নির্বাচনের সময় ও প্রস্তুতি

প্রেস সচিব নিশ্চিত করেন যে সরকার একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজনের জন্য প্রস্তুত।

"নির্বাচনের কাউন্টডাউন শুরু হয়েছে। তিন মাসের মধ্যেই কিংবা কমের মধ্যেও নির্বাচন হতে পারে। ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে নির্বাচন।"

"প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ডক্টর মুহাম্মদ ইউনূস প্রমিজ করেছে, বাংলাদেশের ইতিহাসের বেস্ট ইলেকশন হবে।"

তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতবিরোধ থাকতে পারে, তবে সবাই নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। "এরই মধ্যে বিএনপি ২৩৭ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে, জামায়াতে ইসলামীও তাদের মতো করে প্রার্থী দিচ্ছে। বড় দলগুলো নির্বাচনমুখী।"

উৎসবমুখর নির্বাচনের প্রত্যাশা

শফিকুল আলম বলেন, মতপার্থক্য থাকলেও সবাই একটি উৎসবমুখর ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চাইছে।

"খুব সুন্দর একটা ইলেকশন দেখতে পাবেন। যেটা ফ্রি, ফেয়ার ও এক্সক্লুসিভ হবে। সমস্ত জনগণ যেখানে অংশগ্রহণ করবে। খুবই উৎসবমুখর পরিবেশে ইলেকশন হবে।"

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের যখন খুবই ভালো নির্বাচন হয়েছে বিশেষ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলের কয়েকটি নির্বাচন, তখন ছেলে-মেয়ে, বাবা-মা সবাই একসঙ্গে ভোটকেন্দ্রে ভোট দিয়েছে।

রাজনৈতিক মতবিরোধ গুরুত্বহীন

রাজনৈতিক দলগুলোর মতবিরোধ প্রসঙ্গে প্রেস সচিব বলেন, রাজনৈতিক দল থাকলে মতভেদ থাকবেই। এটাকে সরকার সিরিয়াস কিছু হিসেবে নিচ্ছে না। তিনি মনে করেন:

"তারা পলিটিক্যাল পার্টি, তারা ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে কথা বলেছেন। নয় মাস ধরে খুব সুন্দরভাবে সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে ইতিহাসের সবচেয়ে বৃহত্তম আলোচনা করেছে।"

তিনি আশা করেন, কিছু কিছু বিষয়ে যে মতবিরোধ সেটা কিছু সময়ের মধ্যে ঐক্যে পরিণত হবে।

ভিত্তিপ্রস্তর অনুষ্ঠানে উপস্থিতি

ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে কুলিয়ারা উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি দেলোয়ার হোসেন মজুমদারের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার, চৌদ্দগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জামাল হোসেন, ওসি মো. হিলাল উদ্দিন এবং বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, সহকারী শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রীরা।

পাঠকের মতামত:

ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গড়তে হলে রাষ্ট্রকে অবশ্যই তার সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা পুনরুদ্ধার করতে হবে

ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গড়তে হলে রাষ্ট্রকে অবশ্যই তার সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা পুনরুদ্ধার করতে হবে

রাষ্ট্রের ধারণাটি একসময় কেবল প্রশাসনিক ক্ষমতা, আইনের শাসন এবং নিরাপত্তা প্রদানের সঙ্গে সম্পর্কিত ছিল। কিন্তু আধুনিক বিশ্বে রাষ্ট্রের ভূমিকা এখন... বিস্তারিত

মশলা কিনতে এসে দেশ দখল: যেভাবে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি হয়ে উঠেছিল পৃথিবীর সবচেয়ে ভয়ঙ্কর প্রাইভেট আর্মি!

মশলা কিনতে এসে দেশ দখল: যেভাবে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি হয়ে উঠেছিল পৃথিবীর সবচেয়ে ভয়ঙ্কর প্রাইভেট আর্মি!

কল্পনা করুন এমন একটি প্রাইভেট কোম্পানির কথা, যা এতটাই শক্তিশালী যে সে তার গ্রাহকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করতে পারে, দেশ... বিস্তারিত

কেবিপিপিডব্লিউবিআইএল দেখাল সাফল্যের নতুন দৃষ্টান্ত

কেবিপিপিডব্লিউবিআইএল দেখাল সাফল্যের নতুন দৃষ্টান্ত

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রকাশিত তথ্যানুযায়ী, কেবিপিপিডব্লিউবিআইএল (KBPPWBIL) কোম্পানির ২০২৫ সালের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই–সেপ্টেম্বর) টার্নওভার উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। আগের বছরের... বিস্তারিত