ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচনের প্রেক্ষাপট

বগুড়া-২ আসনে ধানের শীষ নিয়ে জল্পনা জোটের মাহমুদুর রহমান মান্না বনাম নতুন মুখ স্নিগ্ধ

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১১ ২০:২৫:১০
বগুড়া-২ আসনে ধানের শীষ নিয়ে জল্পনা জোটের মাহমুদুর রহমান মান্না বনাম নতুন মুখ স্নিগ্ধ
মাহমুদুর রহমান মান্না ও মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ। ছবি: সংগৃহীত

আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের জন্য রাজশাহী বিভাগের ৩৯টি আসনের মধ্যে বিএনপি ৩৪টি আসনে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করলেও, বগুড়া-২ (শিবগঞ্জ) সহ মোট পাঁচটি আসন এখনো ফাঁকা রেখেছে। এই গুরুত্বপূর্ণ আসনটিতে কে ধানের শীষের মনোনয়ন পাবেন, তা নিয়ে স্থানীয় রাজনীতিতে তীব্র আলোচনা চলছে। আসনটি জোটের শরিক দলকে ছেড়ে দেওয়া হবে, নাকি নতুন কোনো স্থানীয় নেতাকে দেওয়া হবে—এই প্রশ্নে দ্বিধাবিভক্ত স্থানীয় নেতৃত্ব।

কেন্দ্রীয় বৈঠকে মান্নার নাম

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ১১ অক্টোবর বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বগুড়ার সাতটি আসনের সম্ভাব্য মনোনয়নপ্রত্যাশীদের নিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এই বৈঠকে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

ওই বৈঠকে বগুড়া-২ আসন নিয়ে আলোচনার একপর্যায়ে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্নার নাম উঠে আসে।

বৈঠকে উপস্থিত জেলা বিএনপির নেতারা এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের ভার দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ওপর ছেড়ে দেন।

দলীয় একাধিক নেতার মতে, আগামী নির্বাচনে সম্ভাব্য জোট গঠনের ক্ষেত্রে বিএনপি বগুড়া-২ আসনটি নাগরিক ঐক্যের জন্য ছেড়ে দিতে পারে। ফলে মাহমুদুর রহমান মান্না ধানের শীষের প্রতীকেই প্রার্থী হওয়ার সুযোগ পেতে পারেন।

স্থানীয় নেতাদের ভিন্নমত

তবে বিএনপির স্থানীয় নেতাদের একাংশ মনে করছেন, এই আসনটি শরিক দলের কাছে ছেড়ে দেওয়া হলে তা সংগঠনের জন্য হতাশাজনক হবে এবং প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিএনপি দুর্বল অবস্থানে পড়বে। স্থানীয় নেতাকর্মীরা নিজেদের প্রার্থীর পক্ষেই অবস্থান নিতে আগ্রহী।

নতুন করে স্নিগ্ধের আবির্ভাব

সম্প্রতি বগুড়া-২ আসনে নতুন করে আলোচনায় এসেছেন শহীদ মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধর ভাই মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ। তিনি সম্প্রতি বিএনপিতে যোগ দিয়েছেন এবং এই আসনে বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন।

গত রোববার ৯ নভেম্বর মহাস্থান এলাকা থেকে দলীয় কার্যক্রমে অংশ নিয়ে স্নিগ্ধ বলেন, ঐতিহাসিক শিবগঞ্জের মহাস্থান থেকেই বিএনপির সঙ্গে তাঁর পথচলা শুরু হলো। তিনি শিবগঞ্জের মানুষের সঙ্গে থাকবেন এবং তাদের জন্য কাজ করবেন।

বিএনপির স্থানীয় নেতাদের মতে, স্নিগ্ধের পারিবারিক রাজনৈতিক ঐতিহ্য এবং তরুণ নেতৃত্বের ভাবমূর্তি তাঁকে এলাকায় দ্রুত জনপ্রিয় করে তুলছে। ফলে তিনিও বগুড়া-২ আসনে ধানের শীষের সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকায় উঠে এসেছেন।


গণভোট নিয়ে টালবাহানা যারা করছেন তারা পালাবেন কোথায়: চরমোনাই পীর

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১১ ১৮:৫৯:১৩
গণভোট নিয়ে টালবাহানা যারা করছেন তারা পালাবেন কোথায়: চরমোনাই পীর
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম

ক্ষমতাপ্রেমীরা পালাবেন কোথায় বঙ্গোপসাগর ছাড়া জায়গা নেই হুঁশিয়ারি চরমোনাই পীরেরইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির ও চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেছেন, বাংলাদেশে এখন দুই শ্রেণির মানুষ দুই মেরুতে অবস্থান করছে—এক শ্রেণি দেশপ্রেমিক এবং অন্য শ্রেণি ক্ষমতাপ্রেমী। তিনি মন্তব্য করেন, সাবেক আওয়ামী লীগ সরকার দেশপ্রেমিক ছিল না, তারা ছিল ক্ষমতাপ্রেমী। সেই ক্ষমতাপ্রেমীরাই একপর্যায়ে বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে ভারতে অবস্থান করছেন।

মঙ্গলবার ১১ নভেম্বর বিকেলে রাজধানীর পুরানা পল্টন মোড়ে পাঁচটি দাবিতে আটটি রাজনৈতিক দলের সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ক্ষমতাপ্রেমীদের প্রতি প্রশ্ন ও হুঁশিয়ারি

মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম ফ্যাসিস্ট মানসিকতার এবং গণভোট নিয়ে টালবাহানা সৃষ্টিকারীদের প্রতি প্রশ্ন রাখেন। তিনি বলেন যারা ফ্যাসিস্ট হওয়ার চিন্তা করছেন, যারা গণভোট নিয়ে টালবাহানা করছেন—আপনারা পালাবেন কোথায়? আপনাদের জন্য অপেক্ষা করছে সেই দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর। এছাড়া কিন্তু আপনাদের পালানোর কোনো জায়গা নেই।

গণভোট নিয়ে গড়িমসির কারণ

চরমোনাই পীর বলেন, বাংলাদেশের মানুষ বুঝে গেছে যে বর্তমান ক্ষমতাসীনদের উদ্দেশ্য ভালো নয়। তিনি গণভোট নিয়ে গড়িমসির কারণ জানতে চান

"যদি আপনাদের উদ্দেশ্য ভালোই হয়ে থাকে, যেখানে আইনি ভিত্তির ব্যাপারে আপনারা একমত পোষণ করেছেন। সেখানে গণভোটে এত গড়িমসি কেন? এটা জাতির কাছে পরিষ্কার হয়ে গেছে।"

তিনি অন্তর্বর্তী সরকারকে শান্তিপ্রিয় উল্লেখ করে বলেন, বারবার রাস্তায় রোদে আমাদের পোড়াচ্ছেন—আর কত রাস্তায় নামতে হবে?

কঠোর কর্মসূচির ইঙ্গিত

ইসলামী আন্দোলনের আমির কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, গণভোটের দাবি আদায় না হলে তাঁরা কঠিন কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবেন।

"এরপর আমরা বাংলাদেশের সর্বস্তরের মানুষ নিয়ে এমন কর্মসূচি ঘোষণা করবো, আপনি গণভোট নির্বাচনের আগে দিতে বাধ্য হবেন। আমাদের ওই পথে আপনারা হাঁটাবেন না। আমরাও ওই পথে হাঁটতে চাই না।"

তিনি আজকের জাতীয় সমাবেশের মাধ্যমে বারবার অনুরোধ করার কথা জানিয়ে বলেন, এরপরও যদি শুভবুদ্ধির উদয় না হয়, তাহলে পরে কঠিন কর্মসূচি দেওয়া হবে।


ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিপক্ষে জোট এনসিপি : হাসনাত আব্দুল্লাহ

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১১ ১৮:৪৪:৩৭
ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিপক্ষে জোট এনসিপি : হাসনাত আব্দুল্লাহ
এনসিপির জেলা কার্যালয় উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ

জাতীয় নাগরিক পার্টির বা এনসিপি দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেছেন, তাঁর দল সংস্কারের পক্ষে, ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির পক্ষে থাকা দলগুলোর সঙ্গেই নির্বাচনি জোট গঠন করতে পারে। যারা সংস্কারের বিপক্ষে, সংস্কার কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করেছে এবং চব্বিশের জনআকাঙ্ক্ষার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে, তাদের সঙ্গে এনসিপি'র কোনো নির্বাচনি এলায়েন্স সম্ভব নয়।

মঙ্গলবার নারায়ণগঞ্জে জেলা সমবায় ভবনের নবম তলায় এনসিপির জেলা কার্যালয় উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি এসব কথা বলেন।

জোটের শর্ত ও ছাড় দেওয়ার কৌশল

হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, এনসিপি ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের পর গঠিত হয়েছে। তিনি নির্বাচনে এলায়েন্স, গণভোট এবং দেশের সামগ্রিক স্বার্থে এনসিপি সব সময় ছাড় দিয়ে এসেছে বলে জানান।

"সংস্কার, ঐকমত্যের প্রশ্নে যে দলগুলো আসতে চায় তাদের নিয়ে পরবর্তী নির্বাচন কার্যক্রম পরিচালনা করব।"

তিনি জানান, নভেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহের মধ্যে এনসিপির প্রাথমিক প্রার্থীর তালিকা প্রকাশ করা হবে।

আওয়ামী লীগ অপ্রাসঙ্গিক ও নিষিদ্ধের দাবি

আওয়ামী লীগের ১৩ নভেম্বরের লকডাউন প্রসঙ্গে হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, আওয়ামী লীগ বাংলাদেশে এখন অপ্রাসঙ্গিক। তিনি অভিযোগ করেন, পেইড কিছু বুদ্ধিজীবী আওয়ামী লীগের পক্ষে বৈধতা উৎপাদন করেছে।

তিনি বলেন, "আওয়ামী লীগের পতন নিয়মতান্ত্রিকভাবে হয়নি। এটি কিন্তু ব্যালটের মাধ্যমে হয়নি যে নিয়মতান্ত্রিকভাবে রাজনীতির মাঠে ফিরিয়ে নিয়ে আসা হবে। আওয়ামী লীগের পতন হয়েছে একটি গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে।"

তিনি মন্তব্য করেন, গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে যে রাজনৈতিক দলের পতন হয়, সেই দলের রাজনীতি করার সুযোগ নেই।

তিনি মনে করিয়ে দেন, আগুন সন্ত্রাস, জ্বালাও-পোড়াও অতীতে ও বর্তমানে কারা করছে—এটা মানুষ জানে।

নারায়ণগঞ্জের রাজনীতি ও নির্বাচন

হাসনাত আব্দুল্লাহ নারায়ণগঞ্জের রাজনীতিকে কলুষিত করার বিষয়ে ইঙ্গিত করে মন্তব্য করেন। শামীম ওসমানকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জের গডফাদার রাজনীতিতে এই জেলার ইতিহাসকে কলুষিত করেছে। তিনি চান না আর কেউ এ জেলার রাজনীতি কলুষিত করুক।

নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলোকে সুসংহত করতে না পারলে আগামী নির্বাচন কোনো অবস্থাতেই সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব নয়।

অনুষ্ঠানে তাঁর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলার আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট আল আমিন, যুগ্ম আহ্বায়ক আহমেদুর রহমান তনুসহ এনসিপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।


ক্ষমতায় গেলে আওয়ামী লীগের সব মামলা তুলে নেব মির্জা ফখরুল

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১১ ১৮:০৫:৫০
ক্ষমতায় গেলে আওয়ামী লীগের সব মামলা তুলে নেব মির্জা ফখরুল
ঠাকুরগাঁওয়ে মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি : কালবেলা

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, তাঁর দল প্রতিশোধের রাজনীতিতে বিশ্বাসী নয় এবং ক্ষমতায় গেলে আওয়ামী লীগের মতো মামলা করতে চায় না। তিনি মন্তব্য করেন, যত মামলা আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে আছে, তার সবই তুলে নেওয়া হবে।

মঙ্গলবার ১১ নভেম্বর বিকেলে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের শাপলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

জামায়াত ও পিআর-গণভোট প্রসঙ্গে মন্তব্য

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জুলাই সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে জামায়াতসহ কয়েকটি দলের ভিন্ন অবস্থানের কঠোর সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, জামায়াত ও কয়েকটি দল জোরজবরদস্তি করে তাদের দাবি মানাতে চায়। তিনি স্পষ্ট করে বলেন:

"তারা পিআর-গণভোট চায়, আমরা এটা বুঝি না। এসব আমরা মেনে নেব না।"

এই বক্তব্যের মাধ্যমে বিএনপি মহাসচিব পিআর বা সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব এবং গণভোটের সময় নিয়ে জামায়াতের অনড় অবস্থানের সরাসরি বিরোধিতা করলেন।

আওয়ামী লীগ ও লকডাউন বিষয়ে বক্তব্য

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আওয়ামী লীগের ডাকা লকডাউন প্রসঙ্গে কড়া মন্তব্য করেন এবং দলটির কাছে জনগণের কাছে ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানান।

"আর পাগলামি করবেন না। জনগণের কাছে মাফ চান। এখনো মাফ চাননি।"

তিনি বলেন, "ছোট বাচ্চা-ছেলেগুলোকে গুলি করে মেরেছেন। আমরা প্রতিশোধ-প্রতিহিংসার রাজনীতি করতে চাই না। শান্তির রাজনীতি করতে চাই। এজন্য আমরা নির্বাচন চেয়েছি।"

প্রতিশোধের রাজনীতি না করার অঙ্গীকার করে তিনি বলেন, "যত মামলা আছে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে সব মামলা তুলে নেব।"

এ সময় জেলা বিএনপির সভাপতি মির্জা ফয়সল আমিন, সাধারণ সম্পাদক পয়গাম আলীসহ জেলা ও উপজেলার নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।


আগে গণভোট চাই জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি ছাড়া নির্বাচন অসম্ভব জামায়াত আমির

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১১ ১৬:৫৮:৪৭
আগে গণভোট চাই জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি ছাড়া নির্বাচন অসম্ভব জামায়াত আমির
ছবিঃ সংগৃহীত

আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোটের দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলেছেন, যারা 'জুলাই বিপ্লব' মানবেন না, তাদের জন্য ২০২৬ সালের নির্বাচন নয়।

মঙ্গলবার ১১ নভেম্বর রাজধানীর পল্টনে আট দলের এক সমাবেশে জামায়াত আমির এই কঠোর অবস্থান ব্যক্ত করেন।

জুলাই বিপ্লবের স্বীকৃতি ও নির্বাচন

জামায়াত আমিরের বক্তব্য অনুযায়ী, তাঁদের প্রধান এবং এক নম্বর দাবি হলো জুলাই বিপ্লবকে স্বীকৃতি দিতে হবে। তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন

"যারা জুলাই বিপ্লব মানবেন না তাদের জন্য ২০২৬ সালে কোনো নির্বাচন নেই। ২৬-এ নির্বাচন দেখতে হলে আগে জুলাই বিপ্লবের স্বীকৃতি লাগবে। আর জুলাই বিপ্লবের স্বীকৃতি দিতে হলে জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দিতেই হবে।"

তিনি জোর দিয়ে বলেন, এই আইনি ভিত্তি ছাড়া কোনো নির্বাচন অনুষ্ঠান হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।

গণভোটের দাবি ও সময় নিয়ে প্রশ্ন

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, এ দেশের মুক্তিকামী মানুষের দাবি একটাই, তা হলো জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে গণভোট হতেই হবে।

তিনি বলেন, "গণভোটের ব্যাপারে সব দল একমত। তাহলে তারিখ নিয়ে এই বাইনাবাজি কেন? একমত হয়ে যেহেতু সবাই স্বাক্ষর করেছি তখন গণভোট আগে হওয়াই যুক্তিযুক্ত।"

জামায়াত আমির মনে করেন, আগে গণভোট অনুষ্ঠিত হওয়ার মধ্য দিয়েই আইনি ভিত্তির পাটাতন তৈরি হবে এবং এর ভিত্তিতেই আগামীর জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ওই নির্বাচন যখন অনুষ্ঠিত হবে, তখন কোনো সংশয় সন্দেহ থাকবে না।

নির্বাচনের সময়সীমা

ডা. শফিকুর রহমান আগামী নির্বাচনের সময়সীমা নিয়েও তাঁর প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।

তিনি বলেন আমরা চাই আগামী ফেব্রুয়ারিতে রোজার আগে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক। এটা নিয়ে কেউ ধূম্রজাল সৃষ্টির পাঁয়তারা চালাবেন না। উদর পিণ্ডি বুদোর ঘাড়ে ফেলবেন না।


জুলাই সনদের বাইরে কোনো সিদ্ধান্ত মানা হবে না দায় বর্তাবে সরকারের ওপর হুঁশিয়ারি বিএনপির

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১১ ১৪:৪৬:৪৫
জুলাই সনদের বাইরে কোনো সিদ্ধান্ত মানা হবে না দায় বর্তাবে সরকারের ওপর হুঁশিয়ারি বিএনপির
সংবাদ সম্মেলন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। ছবি: সংগৃহীত

জুলাই জাতীয় সনদে উল্লেখিত বিষয়াদির বাইরে সরকার যদি কোনো সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে, তবে সনদে স্বাক্ষরকারী কোনো দল তা মানতে বাধ্য থাকবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডক্টর খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি স্পষ্ট করে বলেছেন, এমন কিছু ঘটলে এর সম্পূর্ণ দায় সরকারের ওপরই বর্তাবে।

মঙ্গলবার ১১ নভেম্বর বেলা ১২টায় রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

স্থায়ী কমিটির বৈঠকে গৃহীত প্রস্তাব

দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানাতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এর আগে গতকাল রাতে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে যুক্তরাজ্য থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে সভাপতিত্ব করেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

ডক্টর খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, সোমবার ১০ নভেম্বর রাতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে দলের স্থায়ী কমিটির সভায় আলোচনাক্রমে একটি প্রস্তাব গৃহীত হয়। সেই প্রস্তাবটি তুলে ধরতেই আজকের এই সংবাদ সম্মেলন।

সনদের বাইরে সিদ্ধান্ত না নেওয়ার সতর্কতা

জুলাই সনদের বাইরে সরকারের কোনো সিদ্ধান্ত ঘোষণার যে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে, তা নিয়ে বিএনপি তীব্র আপত্তি জানিয়েছে। ডক্টর মোশাররফ বলেন

"আমরা স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই যে, জুলাই জাতীয় সনদে উল্লেখিত বিষয়ের বাইরে সরকার কোনো সিদ্ধান্ত ঘোষণা করলে সনদে স্বাক্ষরকারী কোনো দলের জন্য তা মান্য করার বাধ্যবাধকতা থাকবে না।"

তিনি সরকারকে সতর্ক করে দিয়ে বলেন, এমন কিছু ঘটলে এর দায়িত্ব সরকারের ওপরই বর্তাবে। বিএনপি এই ব্যাপারে সতর্ক পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।

ঐকমত্য অগ্রাহ্য করার অভিযোগ

স্থায়ী কমিটির এই সদস্য অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের বক্তব্যের সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দীর্ঘ প্রায় এক বছর যাবত আলোচনার ভিত্তিতে কতিপয় নোট অব ডিসেন্টসহ ঐকমত্যের ভিত্তিতে রচিত জুলাই সনদ বিগত ১৭ অক্টোবর স্বাক্ষরিত হয়। দেশের সংবিধান ও আইন অনুযায়ী তা বাস্তবায়নে সবাই অঙ্গীকারবদ্ধ।

ডক্টর মোশাররফ অভিযোগ করেন

"সম্প্রতি অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের মধ্যে কেউ কেউ জুলাই জাতীয় সনদের বাইরে কোনো কোনো বিষয়ে সরকারের সিদ্ধান্ত ঘোষণার ক্ষেত্রে যেসব বক্তব্য দিচ্ছেন, তা বিভ্রান্তিকর এবং ঐকমত্যের ভিত্তিতে গৃহীত সিদ্ধান্ত অগ্রাহ্য করার শামিল।"

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, ডক্টর আবদুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহউদ্দিন আহমদ এবং মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ।


ভয় পাচ্ছে জামায়াত ভোট হলে অস্তিত্ব থাকবে না সাফ জানালেন ফখরুল

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১১ ১৪:২৭:৩০
ভয় পাচ্ছে জামায়াত ভোট হলে অস্তিত্ব থাকবে না সাফ জানালেন ফখরুল
ছবিঃ সংগৃহীত

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ভোট হলে নিজেদের অস্তিত্ব থাকবে না। সে কারণেই তারা ভয় পায়। ফলে জামায়াত নানা অজুহাতে নির্বাচন পেছাতে চায়।

মঙ্গলবার ১১ নভেম্বর দুপুরে সদর উপজেলার কে কে বাড়ি লক্ষ্মীরহাট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি হুঁশিয়ারি

জুলাই সনদ বাস্তবায়নের বিষয়ে চলমান অচলাবস্থা প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অন্তর্বর্তী সরকারকে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

তিনি বলেন দীর্ঘ নয় মাস সংস্কারের নামে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপ আলোচনার পরও অমীমাংসিত বিষয়গুলো চাপিয়ে দিতে চাইলে এর দায় অন্তর্বর্তী সরকারকে নিতে হবে।

এই বক্তব্যের মাধ্যমে বিএনপি মহাসচিব পরোক্ষভাবে ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী সনদ বাস্তবায়নের কোনো আদেশ জারির চেষ্টার বিরোধিতা করেছেন।

এনসিপি এবং পিআর পদ্ধতি নিয়ে মন্তব্য

জাতীয় নাগরিক পার্টি বা এনসিপি প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এলাকায় একটিও এনসিপি নেই। সে কারণে তারা জামায়াতের সঙ্গে সুর মেলায়। তিনি পিআর বা সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতির সংস্কার প্রস্তাবের কঠোর সমালোচনা করে বলেন:

"তারা পিআর চায়, জনগণ পিআর বোঝে না। এসবের কারণ হলো ভোট পেছানো।"

বিএনপি মহাসচিবের এই বক্তব্য জুলাই সনদ বাস্তবায়নে জামায়াত এবং এনসিপি’র কিছু প্রস্তাব (বিশেষ করে পিআর পদ্ধতিতে সংসদের উচ্চকক্ষ গঠন) নিয়ে বিএনপির তীব্র ভিন্নমতের প্রতিফলন ঘটায়।

সভায় উপস্থিত নেতৃবৃন্দ

মতবিনিময় সভায় জেলা বিএনপির সভাপতি মির্জা ফয়সল আমিন, সাধারণ সম্পাদক পয়গাম আলী, সদর সভাপতি আব্দুল হামিদসহ স্থানীয় অন্যান্য নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।


"জিয়াউর রহমানের আদর্শে বিশ্বাসীরা চাঁদাবাজ হতে পারে না"

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১১ ১২:০৮:৫৪
"জিয়াউর রহমানের আদর্শে বিশ্বাসীরা চাঁদাবাজ হতে পারে না"
ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, “যারা পাড়া-মহল্লায় রমরমা চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত, তাদের সঙ্গে জোট করে নির্বাচন করার চাইতে মরে যাওয়া অনেক ভালো।” তিনি আরও বলেন, বিএনপি অনেক কষ্ট করে দলটি টিকিয়ে রেখেছে, কিন্তু এখন তাদের কিছু নেতাকর্মী নিজেদের দলের ভেতরেই কোনঠাসা হয়ে পড়েছেন।

সোমবার (১০ নভেম্বর) রাতে চাঁদপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে এনসিপি জেলা কমিটির সমন্বয় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, “বিএনপির মধ্যে অনেক ভালো মানুষ আছেন, যারা কোনো অপরাধমূলক কাজে জড়িত নন। আমরা তাদের আমাদের দলে স্বাগত জানাবো। যারা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আদর্শে বিশ্বাসী, তারা কখনো চাঁদাবাজ হতে পারেন না।”

নিজ দল সম্পর্কে তিনি বলেন, “অনেকেই এখন চায়ের দোকানে বসে বলে, এনসিপি করে লাভ নেই ভোটের পর টিকবে না। কিন্তু আমি বলি, ভালো কাজ সবসময় অল্প সংখ্যক লোক দিয়েই শুরু হয়। সমাজে সংখ্যাগরিষ্ঠরা কল্যাণকামী হয় না; বরং প্রকৃত কল্যাণকামীরা সবসময়ই সংখ্যালঘু। শেখ হাসিনার সময় যাঁরা সংগ্রাম করেছেন, তাঁদের সংখ্যাও ছিল কম।”

দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “অনেকেই শুধু কোরাম পূরণের জন্য আসছেন। আজ দেখা যাচ্ছে, ৮ উপজেলার জনপ্রতিনিধিদের অনেকে উপস্থিত নেই। যারা শুধু কোরাম করতে আসে, তাদের আমাদের দরকার নেই। ভালো ১০ জন দিয়েই এনসিপির শক্তিশালী কমিটি গড়া হবে।”

জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, “আমরা মনে করি ভালো নির্বাচন হবে। কিন্তু কেউ কেউ ব্যালটের পরিবর্তে বুলেটের পথ বেছে নিয়েছেন। তারা ভাবছেন, ভয় দেখিয়ে জনগণকে ফ্যাসিবাদী শাসনের দিকে ঠেলে দেওয়া যাবে। ইতোমধ্যে অনেকেই বাড়ি বাড়ি গিয়ে বলছেন, এনসিপিতে ভোট দিলে পরে ‘খবর আছে’। আমরা জনগণকে আশ্বস্ত করতে চাই যারা ভয় দেখায়, তারাই সবচেয়ে বেশি ভয় পায়। যারা সত্যিকারের সাহসী, তারা জনগণের সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করে।”

তিনি আরও বলেন, “আজ একটি দল অস্তিত্ব সংকটে ভুগছে। তারা ভয় দেখিয়ে টিকে থাকতে চায়, কিন্তু জনগণের ভালোবাসা ছাড়া কোনো দল বাঁচতে পারে না।”

সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় যুগ্ম মুখ্য সংগঠক ও কুমিল্লা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আতাউল্লাহ, কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্য সচিব মুহাম্মদ মিরাজ মিয়া, কেন্দ্রীয় যুগ্ম মুখ্য সংগঠক মো. আরিফ তালুকদার, কেন্দ্রীয় যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক ও কুমিল্লা অঞ্চল তত্ত্বাবধায়ক নাভিদ নাওরোজ শাহ, কেন্দ্রীয় যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক মো. মাহবুব আলম এবং কেন্দ্রীয় সদস্য মো. সাইফুল ইসলাম।

-রাফসান


আওয়ামী লীগারদের উদ্দেশ্যে নুরের বিস্ফোরক ফেসবুক স্ট্যাটাসে তোলপাড়

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১১ ১০:২২:২৬
আওয়ামী লীগারদের উদ্দেশ্যে নুরের বিস্ফোরক ফেসবুক স্ট্যাটাসে তোলপাড়
ছবি: সংগৃহীত

গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর দেশে অবস্থানরত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে ‘চুপচাপ থাকার’ পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি হুঁশিয়ার করে বলেছেন, আওয়ামী লীগের আমলে বিরোধীরা যেভাবে নির্যাতনের শিকার হয়েছে, এবার যদি তারা উৎপাত করে তবে নিজেদের বিপদ নিজেরাই ডেকে আনবেন।

সোমবার দিবাগত রাতে নিজের ফেসবুক স্ট্যাটাসে নুর লেখেন, “দেশে অবস্থানরত লীগের ভাইদের বলবো স্ত্রী-সন্তান নিয়ে বিদেশে নিরাপদে পালিয়ে থাকা শত-সহস্র কোটি টাকার মালিক নেতাদের কথায় হুজুগে রাস্তায় নেমে নিজেকে ও পরিবারকে অনিরাপদ করবেন না। রাস্তায় নেমে বিপ্লবী জনতার ধোলাই খেলে নেতা হাসপাতালে আসবে না, গ্রেফতার হলে জেলখানায় কলা-রুটিও পাঠাবে না।” তিনি আরও লেখেন, “কি দরকার গ্রেফতার ও গণধোলাইয়ের ঝুঁকি নিয়ে মুখোশ পরে ঝটিকা বা গুপ্ত মিছিল করার? ধরা পড়লে পাবলিকের মাইর দুনিয়ায় বাইর!”

নুর তার স্ট্যাটাসে উল্লেখ করেন, আওয়ামী লীগের আমলে বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীরা যেভাবে জেল-জুলুম ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, তার তুলনায় বর্তমানে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা অনেক ভালো আছেন। তার মতে, “চুপচাপ থাকলে আরও ভালো থাকবেন, উৎপাত করলে বিপদে পড়বেন।” তিনি দাবি করেন, “পালিয়ে থাকা নেতাদের কথায় লাফালাফি করে লাভ নাই, আওয়ামী লীগ আগামী ৫০ বছরেও রাজনীতিতে ফিরবে না। ৭৫-এ শেখ মুজিবের পর ২৪-এ তার মেয়ে হাসিনা আওয়ামী লীগের রাজনীতির মৃত্যু ঘটিয়ে ভারত পালিয়েছে। আওয়ামী লীগ এখন মরা লাশ। বিচারিক প্রক্রিয়ায় এখন এর দাফন-কাফন সম্পন্ন হবে।”

নুর আহ্বান জানান নতুন দিনের রাজনীতির দিকে। তিনি লেখেন, “মরা লাশের পেছনে ছুটে হয়রান না হয়ে নতুন বাংলাদেশের সাথে থাকুন— যেখানে কোনো ক্ষমতালোভী খুনি শাসক তৈরি হবে না, ফ্যাসিবাদের ছায়া থাকবে না, থাকবে মানুষের ভয়হীন চিত্তে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, দেশপ্রেম, সততা, দায় ও দরদের রাজনীতি।”

এদিকে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে জুলাই-আগস্টে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার রায় আগামী ১৩ নভেম্বর ঘোষণা করবে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এ রায়কে কেন্দ্র করে নিষিদ্ধ রাজনৈতিক সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ঘোষণা দিয়েছে ‘ঢাকা লকডাউন’ কর্মসূচি। দলটির কেন্দ্রীয় নির্দেশে ইউনিয়ন পর্যন্ত নেতাকর্মীদের প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। এর আগে ১০ থেকে ১২ নভেম্বর পর্যন্ত সারাদেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে তারা।

রায়ের তারিখ ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে দেশের বিভিন্ন স্থানে বাসে অগ্নিসংযোগ ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটছে। ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ায় আলম এশিয়া পরিবহনের একটি বাসে অগ্নিসংযোগে জুলহাস নামের একজন নিহত হয়েছেন। অন্যদিকে ঢাকায় ঝটিকা মিছিল ও নাশকতার পরিকল্পনার অভিযোগে নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের ৩৪ নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ডিএমপির উপকমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

-রফিক


সাবেক মিত্র জামায়াত ও বিএনপি এবার পারিবারিক প্রতিদ্বন্দ্বী কুড়িগ্রামের ৪ আসনে মুখোমুখি দুই ভাই

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১০ ২০:৪৩:০৩
সাবেক মিত্র জামায়াত ও বিএনপি এবার পারিবারিক প্রতিদ্বন্দ্বী কুড়িগ্রামের ৪ আসনে মুখোমুখি দুই ভাই
বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী বড় ভাই আজিজুর রহমান (বাঁয়ে) ও ছোট ভাই জামায়াতের প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান (ডানে)

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে কুড়িগ্রাম-৪ আসনে (চিলমারী, রৌমারী ও রাজীবপুর উপজেলা) সাবেক দুই মিত্র দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এবং জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থীরা একে অপরের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অবতীর্ণ হয়েছেন। এই আসনটি ঐতিহাসিকভাবেই বিএনপি ও জামায়াত উভয়ের শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। তবে, এবারের প্রতিযোগিতা আরও কৌতূহলোদ্দীপক হয়ে উঠেছে কারণ এই আসনে দুই দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা সহোদর দুই ভাই।

কুড়িগ্রাম-৪ আসনের সমীকরণ

কুড়িগ্রাম-৪ আসনে বিএনপি’র সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে দলটির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আজিজুর রহমান এবং জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী হিসেবে তার ছোট ভাই মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক-এর নাম ঘোষণা করা হয়েছে। দুই ভাইয়ের এই সরাসরি লড়াইয়ের কারণে স্থানীয় রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে।

বিএনপি প্রার্থী আজিজুর রহমান: তিনি রৌমারী উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এবং বর্তমানে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য হিসেবে রাজনীতিতে সক্রিয়। দীর্ঘদিন ধরে তিনি এই এলাকার জনগণের জন্য কাজ করে আসছেন।

জামায়াত প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক: তিনি রৌমারী উপজেলা জামায়াতের সাবেক আমির এবং এই নির্বাচনে জামায়াত মনোনীত প্রার্থী। জামায়াত নেতারা মনে করেন, তাঁর জনপ্রিয়তা এই আসনে দলের অবস্থানকে আরও সুসংহত করবে।

প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও দুই পক্ষের বক্তব্য

দলীয়ভাবে জোট ভেঙে যাওয়ার পর, এই আসনে বিএনপি ও জামায়াত উভয়েই নিজ নিজ প্রার্থীর জয় নিশ্চিত করতে সর্বশক্তি নিয়োগ করেছে। দুই ভাই একে অপরের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও কেউই নির্বাচন থেকে সরে আসতে রাজি নন।

মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক দৃঢ়ভাবে বলেছেন, তাঁর বড় ভাই যদি শেষ পর্যন্ত বিএনপির মনোনয়ন পানও, তবুও তাঁকে পরাজিত করা সম্ভব হবে না। তিনি দাবি করেছেন, এই অঞ্চলে জামায়াতের জনপ্রিয়তা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে এবং দুই ভাই প্রার্থী হলেও নির্বাচনে এর কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না।

অন্যদিকে, বিএনপি নেতা আজিজুর রহমান জানিয়েছেন, তাঁর ছোট ভাই একসময় বিএনপি’র রাজনীতি করতেন এবং তাঁর হাত ধরেই রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠা লাভ করেন। পরবর্তীতে জামায়াতে যোগ দিয়ে তিনি এখন সেই দলের প্রার্থী হয়েছেন। তবে, পারিবারিক সম্পর্ক ছাপিয়ে নির্বাচনী লড়াইয়ে জয়ী হওয়ার ব্যাপারে তিনি আত্মবিশ্বাসী।

ভোটারদের ভাবনা

স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, দুই ভাইয়ের এই প্রতিদ্বন্দ্বিতা কুড়িগ্রাম-৪ আসনের ভোটারদের জন্য এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে। এখানে মোট ভোটার সংখ্যা প্রায় ৩ লাখ ৩৮ হাজার ৪১২। এর মধ্যে নারী ভোটারের সংখ্যা কিছুটা বেশি। উভয় দলের দীর্ঘদিনের সাংগঠনিক শক্তি এবং প্রার্থীদের ব্যক্তিগত পরিচিতি এই প্রতিদ্বন্দ্বিতাকে আরও জটিল করে তুলেছে। ভোটাররা তাদের ব্যক্তিগত সম্পর্ক এবং দলীয় আনুগত্যের মধ্যে কাকে বেছে নেবেন, তা জানতে নির্বাচনের চূড়ান্ত ফলাফলের জন্য অপেক্ষা করতে হবে।

পাঠকের মতামত:

ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গড়তে হলে রাষ্ট্রকে অবশ্যই তার সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা পুনরুদ্ধার করতে হবে

ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গড়তে হলে রাষ্ট্রকে অবশ্যই তার সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা পুনরুদ্ধার করতে হবে

রাষ্ট্রের ধারণাটি একসময় কেবল প্রশাসনিক ক্ষমতা, আইনের শাসন এবং নিরাপত্তা প্রদানের সঙ্গে সম্পর্কিত ছিল। কিন্তু আধুনিক বিশ্বে রাষ্ট্রের ভূমিকা এখন... বিস্তারিত

মশলা কিনতে এসে দেশ দখল: যেভাবে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি হয়ে উঠেছিল পৃথিবীর সবচেয়ে ভয়ঙ্কর প্রাইভেট আর্মি!

মশলা কিনতে এসে দেশ দখল: যেভাবে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি হয়ে উঠেছিল পৃথিবীর সবচেয়ে ভয়ঙ্কর প্রাইভেট আর্মি!

কল্পনা করুন এমন একটি প্রাইভেট কোম্পানির কথা, যা এতটাই শক্তিশালী যে সে তার গ্রাহকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করতে পারে, দেশ... বিস্তারিত