নোবেলের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও গৃহবন্দি রাখার অভিযোগ: আদালতে স্ত্রী দাবি, প্রমাণ দিতে ব্যর্থ

সারাদেশ ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ মে ২০ ২২:৫০:১৮
নোবেলের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও গৃহবন্দি রাখার অভিযোগ: আদালতে স্ত্রী দাবি, প্রমাণ দিতে ব্যর্থ

ঢাকা: কণ্ঠশিল্পী মাঈনুল আহসান নোবেলের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও সাত মাস ধরে এক নারীকে গৃহবন্দি করে রাখার অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে আজ (মঙ্গলবার) বিকেলে আদালতে হাজির করে। আদালত শুনানি শেষে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।

অভিযোগকারী নারী দাবি করেছেন, ২০২৩ সালের ১২ নভেম্বর ডেমরায় নোবেলের গানের স্টুডিওতে নিয়ে গিয়ে তাকে ধর্ষণ করা হয়। এরপর ভিডিও ধারণ করে তাকে ভয় দেখিয়ে সাত মাস ধরে আটকে রাখা হয়। পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, ঘটনাস্থল ছিল নোবেলের নানাবাড়ির ফ্ল্যাট, যেখানে তার গানের স্টুডিও রয়েছে।

স্ত্রী দাবি করেও কাবিননামা দিতে ব্যর্থ

আদালতে হাজির হয়ে নোবেল দাবি করেন, যিনি মামলা করেছেন, তিনি তার স্ত্রী এবং বর্তমানে চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা। তবে এই দাবির পক্ষে কোনো কাবিননামা বা বৈধ কাগজপত্র আদালতে পেশ করতে পারেননি তার আইনজীবী মো. জসীম উদ্দিন।

রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী বলেন, "যদি বাদী তার স্ত্রী হন, তবে কাবিননামা কোথায়? বিয়ের প্রমাণ না দিয়ে স্ত্রীর দাবি অগ্রহণযোগ্য। বরং প্রাথমিক তথ্য বলছে, নোবেল দিনের পর দিন তাকে ব্ল্যাকমেল করে ধর্ষণ করেছেন।"

ঘটনার পেছনের পটভূমি

পুলিশ জানায়, ভুক্তভোগী নারীর সঙ্গে নোবেলের পরিচয় ঘটে ২০১৮ সালে ফেসবুকে। এরপর সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তিনি মোহাম্মদপুরে ভাড়া বাসায় থাকতেন এবং একটি কলেজে অনার্সের তৃতীয় বর্ষে পড়তেন। ২০২৩ সালের ১২ নভেম্বর নোবেল তাকে স্টুডিও দেখানোর কথা বলে ডেকে নিয়ে যান। রাত আটটার দিকে বাসা থেকে বের হতে চাইলে তার মোবাইল কেড়ে নিয়ে ভেঙে ফেলেন, এরপর তাকে ধর্ষণ করেন এবং ভিডিও ধারণ করেন। সেই ভিডিও একপর্যায়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হলে ভুক্তভোগীর পরিবার পুলিশকে জানায়। পরে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে ওসিসি সেন্টারে ভর্তি করে।

আদালতের কাঠগড়ায় নোবেল

দুপুর তিনটার দিকে আদালতের কাঠগড়ায় নোবেলকে হাতকড়া পরা অবস্থায় আনা হয়। তার পরনে ছিল সাদা টি-শার্ট, কালো প্যান্ট ও পায়ে ছিল স্যান্ডেল। তাকে দেখাচ্ছিল বিমর্ষ। আদালতের শুনানি শেষে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

তদন্ত ও সামাজিক প্রতিক্রিয়া

তদন্ত কর্মকর্তা মুরাদ হোসেন জানান, নোবেল ও ভুক্তভোগী দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তিনি বলেন, “নারী দাবি করেছেন, নোবেল প্রায়ই শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন। নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে তিনি একদিন নোবেলের মামার ফ্ল্যাটে পালিয়ে যান। পরে নোবেল সেখান থেকে তাকে টেনেহিঁচড়ে আবার নিজের ফ্ল্যাটে নিয়ে যান।” অভিযোগকারী নারীর অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার বিষয়েও তদন্ত চলছে। ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য আদালতের অনুমতির আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ। অন্যদিকে নোবেলের এক আত্মীয় দাবি করেছেন, "ওই নারী নোবেলের স্ত্রী এবং স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়াঝাঁটির কারণেই ভুল বোঝাবুঝি তৈরি হয়েছে।"

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

স্টারমারের নীরবতা: কূটনৈতিক শিষ্টাচার বনাম রাজনৈতিক সংকোচ

স্টারমারের নীরবতা: কূটনৈতিক শিষ্টাচার বনাম রাজনৈতিক সংকোচ

একজন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ, সামাজিক ব্যবসার পথপ্রদর্শক এবং গণতান্ত্রিক উত্তরণের নেতৃত্বদানকারী রাষ্ট্রনায়ক—এই তিনটি পরিচয়ই এখন সমভাবে প্রযোজ্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের... বিস্তারিত