ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ
ভারত-পাক উত্তেজনা ঠেকাল ট্রাম্প? যা বলছে ভারত-

সত্য নিউজ: সাম্প্রতিক সময়ে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উদ্ভূত সামরিক উত্তেজনা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে গভীর উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে। ৫ ও ৬ মে রাতে সীমান্ত বরাবর দুই দেশের পাল্টাপাল্টি হামলার পর যে পারমাণবিক সংঘর্ষের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছিল, তা শেষ পর্যন্ত একটি যুদ্ধবিরতিতে পরিণত হয়েছে। তবে এই যুদ্ধবিরতির নেপথ্যে কার ভূমিকা ছিল—তা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক বিতর্ক।
উত্তেজনার উৎস ও সামরিক কার্যক্রম
ঘটনার সূচনা হয় কাশ্মীরের পেহেলগামে একটি প্রাণঘাতী হামলার পর। এর জবাবে ভারত ‘সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানের’ অংশ হিসেবে পাকিস্তানের অভ্যন্তরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়, যার ফলে বেসামরিক নাগরিক ও সামরিক সদস্য হতাহত হন। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তান ‘অপারেশন বুনিয়ান-উম-মারসুস’ পরিচালনা করে, যেখানে তারা নির্দিষ্ট ভারতীয় সামরিক স্থাপনায় আঘাত হানে। এই ঘন ঘন পাল্টা হামলা দু’দেশের মধ্যে দীর্ঘদিনের বৈরিতিকে নতুন মাত্রায় পৌঁছে দেয় এবং একটি পূর্ণমাত্রার যুদ্ধ, এমনকি পারমাণবিক সংঘর্ষের শঙ্কাও প্রকট হয়ে ওঠে।
ট্রাম্পের ‘শান্তির দূত’ হয়ে ওঠার দাবিতে মতভেদ
উত্তেজনার এই পরিপ্রেক্ষিতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ করাচিতে দেওয়া এক বক্তব্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ‘শান্তির মানুষ’ হিসেবে আখ্যায়িত করে বলেন, “তার নেতৃত্বাধীন মার্কিন প্রশাসন আন্তরিকভাবে এই সংকট নিরসনে ভূমিকা রেখেছে এবং যুদ্ধবিরতিতে একটি কেন্দ্রীয় শক্তি হিসেবে কাজ করেছে।”
ট্রাম্প নিজেও হোয়াইট হাউজে এক বিবৃতিতে বলেন, “আমরা একটি ভয়াবহ পারমাণবিক যুদ্ধ থামিয়েছি। লাখ লাখ মানুষ প্রাণ হারাতে পারত। আমি গর্বিত যে আমরা তা ঠেকাতে পেরেছি।”
ভারতীয় পক্ষের দ্ব্যর্থহীন প্রত্যাখ্যান
তবে ভারতের অবস্থান একেবারেই ভিন্ন। দেশটির পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেন, যুদ্ধবিরতি ছিল সম্পূর্ণরূপে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ‘দ্বিপাক্ষিক সিদ্ধান্ত’। তিনি বলেন, “কোনো তৃতীয় পক্ষ বিশেষত যুক্তরাষ্ট্র এই আলোচনায় বা সিদ্ধান্তে জড়িত নয়।”
তিনি আরও জানান, পাকিস্তান থেকে সরাসরি কোনো পারমাণবিক হুমকির ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি এবং ভারতের প্রতিক্রিয়া ছিল শুধুমাত্র জাতীয় নিরাপত্তা ও স্বার্থের আলোকে গৃহীত একটি পদক্ষেপ।
কূটনৈতিক উদ্বেগ ও রাজনৈতিক চাপ
ভারতের সংসদীয় কমিটিতে কয়েকজন আইনপ্রণেতা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বারবার কাশ্মীর ইস্যু ও যুদ্ধবিরতির বিষয়ে মন্তব্য সত্ত্বেও ভারত সরকার নীরব থাকে, যা ‘আন্তর্জাতিক বিবরণী নিয়ন্ত্রণ’ যুক্তরাষ্ট্রের হাতে চলে যাওয়ার শঙ্কা তৈরি করছে।
এ ছাড়া, ভারতীয় বিমানবাহিনীর ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কিত প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র সচিব কিছু বলতে অস্বীকৃতি জানিয়ে একে ‘জাতীয় নিরাপত্তার বিষয়’ বলে অভিহিত করেন।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া ও ভবিষ্যতের বার্তা
এই উত্তেজনা ও সামরিক সংঘাত যে মাত্রায় পৌঁছেছিল, তাতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় গভীরভাবে উদ্বিগ্ন হয় এবং সক্রিয় কূটনৈতিক উদ্যোগ নেওয়া হয়। শেষ পর্যন্ত দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ায় তাৎক্ষণিক বিপর্যয় এড়ানো গেলেও, এই ঘটনা আরও একবার স্পষ্ট করে দিল যে দক্ষিণ এশিয়ার পারমাণবিক ক্ষমতাসম্পন্ন দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা কীভাবে বিশ্বশান্তির জন্য হুমকি হয়ে উঠতে পারে।
বিশ্লেষকদের মতে, এই সংকট রাজনৈতিক বাগ্বিতণ্ডার বাইরে গিয়ে ভবিষ্যতে আরও কার্যকর কূটনৈতিক কাঠামো গঠনের জন্য একটি সতর্কবার্তা হিসেবে কাজ করবে। সেই সঙ্গে তৃতীয় পক্ষের ভূমিকা, মিডিয়া ব্যবস্থাপনা ও স্বচ্ছতার প্রয়োজনীয়তা নতুন করে উপলব্ধি করার সুযোগও এনে দিয়েছে।
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- শেয়ারবাজারে গেম্বলারদের দৌরাত্ম্য: আস্থা ফেরাতে চাই কঠোর শাস্তি ও কাঠামোগত সংস্কার
- বাংলাদেশে সেনা-সরকার উত্তেজনা ও ‘কু’ এর গুঞ্জন: নেপথ্যে কি?
- নতুন রাজনৈতিক সমীকরণে কারা টিকে থাকবে, কারা হারিয়ে যাবে?
- জবি’র সাবেক অধ্যাপক আনোয়ার বেগম হত্যাচেষ্টা মামলায় সুত্রাপুরে আটক
- তারকা পরিচিতি: রক্ষাকবচ না কি সমাজবিমুখ অব্যাহতি?
- নাহিদের স্পষ্ট বার্তা: এনসিপিতে নেই দুই উপদেষ্টা আসিফ ও মাহফুজ
- সড়ক দুর্ঘটনায় সেনা কর্মকর্তা নিহত
- দেশের ৬ জেলায় ৮০ কিলোমিটার বেগে ঝড়-বৃষ্টির শঙ্কা, নদীবন্দরে ২ নম্বর সতর্কতা
- বিএনপির সালাউদ্দিনকে নিয়ে কি লিখলেন প্রেস সচিব শফিকুল?
- বাংলাদেশে আন্তর্বর্তী সরকারের পদক্ষেপে মৌলিক অধিকার হুমকিতে
- “ভারতের দালালরা ঘাপটি মেরে বসে আছে”: মুফতি রেজাউল করিম
- "ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি সব রাজনৈতিক দল অকুণ্ঠ সমর্থন জানিয়েছে"
- মুহাম্মদ ইউনূস প্রশাসনের ভবিষ্যৎ কেন অনিশ্চিত
- জেনে নিন ঈদের ছুটিতে কোন কোন এলাকায় ব্যাংক খোলা থাকবে
- যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে ট্রাম্পের শুল্কারোপ স্থগিত: ক্ষমতা লঙ্ঘনের অভিযোগ