ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ
ভারত-পাক উত্তেজনা ঠেকাল ট্রাম্প? যা বলছে ভারত-

সত্য নিউজ: সাম্প্রতিক সময়ে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উদ্ভূত সামরিক উত্তেজনা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে গভীর উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে। ৫ ও ৬ মে রাতে সীমান্ত বরাবর দুই দেশের পাল্টাপাল্টি হামলার পর যে পারমাণবিক সংঘর্ষের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছিল, তা শেষ পর্যন্ত একটি যুদ্ধবিরতিতে পরিণত হয়েছে। তবে এই যুদ্ধবিরতির নেপথ্যে কার ভূমিকা ছিল—তা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক বিতর্ক।
উত্তেজনার উৎস ও সামরিক কার্যক্রম
ঘটনার সূচনা হয় কাশ্মীরের পেহেলগামে একটি প্রাণঘাতী হামলার পর। এর জবাবে ভারত ‘সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানের’ অংশ হিসেবে পাকিস্তানের অভ্যন্তরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়, যার ফলে বেসামরিক নাগরিক ও সামরিক সদস্য হতাহত হন। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তান ‘অপারেশন বুনিয়ান-উম-মারসুস’ পরিচালনা করে, যেখানে তারা নির্দিষ্ট ভারতীয় সামরিক স্থাপনায় আঘাত হানে। এই ঘন ঘন পাল্টা হামলা দু’দেশের মধ্যে দীর্ঘদিনের বৈরিতিকে নতুন মাত্রায় পৌঁছে দেয় এবং একটি পূর্ণমাত্রার যুদ্ধ, এমনকি পারমাণবিক সংঘর্ষের শঙ্কাও প্রকট হয়ে ওঠে।
ট্রাম্পের ‘শান্তির দূত’ হয়ে ওঠার দাবিতে মতভেদ
উত্তেজনার এই পরিপ্রেক্ষিতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ করাচিতে দেওয়া এক বক্তব্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ‘শান্তির মানুষ’ হিসেবে আখ্যায়িত করে বলেন, “তার নেতৃত্বাধীন মার্কিন প্রশাসন আন্তরিকভাবে এই সংকট নিরসনে ভূমিকা রেখেছে এবং যুদ্ধবিরতিতে একটি কেন্দ্রীয় শক্তি হিসেবে কাজ করেছে।”
ট্রাম্প নিজেও হোয়াইট হাউজে এক বিবৃতিতে বলেন, “আমরা একটি ভয়াবহ পারমাণবিক যুদ্ধ থামিয়েছি। লাখ লাখ মানুষ প্রাণ হারাতে পারত। আমি গর্বিত যে আমরা তা ঠেকাতে পেরেছি।”
ভারতীয় পক্ষের দ্ব্যর্থহীন প্রত্যাখ্যান
তবে ভারতের অবস্থান একেবারেই ভিন্ন। দেশটির পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেন, যুদ্ধবিরতি ছিল সম্পূর্ণরূপে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ‘দ্বিপাক্ষিক সিদ্ধান্ত’। তিনি বলেন, “কোনো তৃতীয় পক্ষ বিশেষত যুক্তরাষ্ট্র এই আলোচনায় বা সিদ্ধান্তে জড়িত নয়।”
তিনি আরও জানান, পাকিস্তান থেকে সরাসরি কোনো পারমাণবিক হুমকির ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি এবং ভারতের প্রতিক্রিয়া ছিল শুধুমাত্র জাতীয় নিরাপত্তা ও স্বার্থের আলোকে গৃহীত একটি পদক্ষেপ।
কূটনৈতিক উদ্বেগ ও রাজনৈতিক চাপ
ভারতের সংসদীয় কমিটিতে কয়েকজন আইনপ্রণেতা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বারবার কাশ্মীর ইস্যু ও যুদ্ধবিরতির বিষয়ে মন্তব্য সত্ত্বেও ভারত সরকার নীরব থাকে, যা ‘আন্তর্জাতিক বিবরণী নিয়ন্ত্রণ’ যুক্তরাষ্ট্রের হাতে চলে যাওয়ার শঙ্কা তৈরি করছে।
এ ছাড়া, ভারতীয় বিমানবাহিনীর ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কিত প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র সচিব কিছু বলতে অস্বীকৃতি জানিয়ে একে ‘জাতীয় নিরাপত্তার বিষয়’ বলে অভিহিত করেন।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া ও ভবিষ্যতের বার্তা
এই উত্তেজনা ও সামরিক সংঘাত যে মাত্রায় পৌঁছেছিল, তাতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় গভীরভাবে উদ্বিগ্ন হয় এবং সক্রিয় কূটনৈতিক উদ্যোগ নেওয়া হয়। শেষ পর্যন্ত দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ায় তাৎক্ষণিক বিপর্যয় এড়ানো গেলেও, এই ঘটনা আরও একবার স্পষ্ট করে দিল যে দক্ষিণ এশিয়ার পারমাণবিক ক্ষমতাসম্পন্ন দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা কীভাবে বিশ্বশান্তির জন্য হুমকি হয়ে উঠতে পারে।
বিশ্লেষকদের মতে, এই সংকট রাজনৈতিক বাগ্বিতণ্ডার বাইরে গিয়ে ভবিষ্যতে আরও কার্যকর কূটনৈতিক কাঠামো গঠনের জন্য একটি সতর্কবার্তা হিসেবে কাজ করবে। সেই সঙ্গে তৃতীয় পক্ষের ভূমিকা, মিডিয়া ব্যবস্থাপনা ও স্বচ্ছতার প্রয়োজনীয়তা নতুন করে উপলব্ধি করার সুযোগও এনে দিয়েছে।
কিম জং উনের নতুন সামরিক নীতি: একসাথে পারমাণবিক ও প্রচলিত শক্তি বৃদ্ধির ঘোষণা
উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন জানিয়েছেন, আসন্ন শাসকদল ওয়ার্কার্স পার্টির গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে তিনি এমন এক নীতি ঘোষণা করবেন যা একযোগে দেশটির পারমাণবিক অস্ত্রভাণ্ডার ও প্রচলিত সামরিক শক্তি বৃদ্ধির রূপরেখা দেবে। শনিবার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম কোরিয়ান সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সি (KCNA) এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ব্যর্থ শীর্ষ বৈঠকের পর থেকেই পিয়ংইয়ং বারবার ঘোষণা দিয়ে আসছে যে তারা আর কখনও পারমাণবিক অস্ত্র ত্যাগ করবে না। দেশটি নিজেকে "অপরিবর্তনীয় পারমাণবিক রাষ্ট্র" হিসেবে ঘোষণা করেছে। সম্প্রতি অস্ত্র গবেষণা কেন্দ্র পরিদর্শনের সময় কিম বলেন, "উত্তর কোরিয়া পারমাণবিক বাহিনী এবং প্রচলিত সশস্ত্র বাহিনী – উভয়ের শক্তি বৃদ্ধি করবে।" তিনি প্রচলিত সেনাবাহিনীকে আধুনিকায়নের প্রয়োজনীয়তার ওপরও জোর দেন। তবে বৈঠকের নির্দিষ্ট তারিখ জানাননি।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, কিমের এই পদক্ষেপ প্রমাণ করে যে শুধু পারমাণবিক অস্ত্রই প্রতিরোধ ক্ষমতার একমাত্র ভরসা নয়। উত্তর কোরিয়া এখন তার যুদ্ধ-সক্ষমতা বাড়াতে চায় এবং আধুনিক যুদ্ধের উপযোগী প্রচলিত অস্ত্রভাণ্ডার তৈরি করতে চায়। কোরিয়া ইনস্টিটিউট ফর ন্যাশনাল ইউনিফিকেশনের সিনিয়র বিশ্লেষক হং মিন বলেন, "রাশিয়ার সঙ্গে উত্তর কোরিয়ার সামরিক সহযোগিতা ক্রমেই বাড়ছে, যা কেবল পারমাণবিক প্রযুক্তি নয় বরং প্রচলিত অস্ত্রখাতেও বিস্তৃত হচ্ছে।" তিনি আরও যোগ করেন, আসন্ন বৈঠকে আধুনিক যুদ্ধের উপযোগী দীর্ঘমেয়াদি আধুনিকায়ন পরিকল্পনা ঘোষণা করা হতে পারে।
উত্তর কোরিয়ার এই অবস্থানকে আরও দৃঢ় করেছে ইউক্রেন যুদ্ধ। মস্কোর পাশে দাঁড়িয়ে হাজার হাজার উত্তর কোরীয় সৈন্য পাঠানোর পর পিয়ংইয়ং রাশিয়ার কাছ থেকে রাজনৈতিক ও সামরিক সমর্থন পাচ্ছে। গত বছর রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের পিয়ংইয়ং সফরের সময় দুই দেশ পারস্পরিক প্রতিরক্ষা চুক্তি সই করে।
দক্ষিণ কোরিয়া বারবার সতর্ক করছে যে রাশিয়া উত্তর কোরিয়াকে সংবেদনশীল সামরিক প্রযুক্তি সরবরাহ করতে পারে, যা আঞ্চলিক নিরাপত্তার জন্য বড় হুমকি হতে পারে।
এর আগে ২০২১ সালের জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত পার্টি কংগ্রেসে কিম এক উচ্চাকাঙ্ক্ষী সামরিক এজেন্ডা ঘোষণা করেছিলেন। তখন তিনি সামরিক উপগ্রহ, কঠিন জ্বালানির আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্রসহ উন্নত অস্ত্র তৈরি করার অঙ্গীকার করেছিলেন। বিশ্লেষকদের ধারণা, আসন্ন বৈঠক আগামী বছরের শুরুতেই হতে পারে।
সম্প্রতি বেইজিংয়ে আয়োজিত বিশাল সামরিক কুচকাওয়াজে কিম জং উন, পুতিন ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং একসঙ্গে অংশ নেন। এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে অভিযোগ করেন, এই তিন নেতা যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী পরিকল্পনা করছেন।
-সুত্রঃ এ এফ পি
মোদি বনাম ভাগবত: বিজেপি–আরএসএস সম্পর্কে ফাটল
ভারতের রাজনীতিতে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস) এক অদৃশ্য অথচ অত্যন্ত প্রভাবশালী শক্তি। শাসক দল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) ক্ষমতায় থাকলেও নেপথ্যে আরএসএসকেই নীতি-নির্ধারক হিসেবে দেখা হয়। দীর্ঘদিন ধরে উভয় সংগঠনকে পরস্পরের পরিপূরক ভাবা হলেও সাম্প্রতিক সময়ে তাদের সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। ভারতের প্রভাবশালী গণমাধ্যম দ্য ওয়্যার-এর এক বিশ্লেষণধর্মী প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মধ্যে এক চাপা দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছে।
এই দ্বন্দ্বের কেন্দ্রে রয়েছেন বিজেপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) সঞ্জয় জোশী। একসময় গুজরাটে নরেন্দ্র মোদির ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে পরিচিত হলেও পরবর্তীতে তিনি মোদির প্রতিদ্বন্দ্বীতে পরিণত হন। আরএসএস-এর সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতা এবং বিজেপির সাংগঠনিক কাঠামোয় তার শক্তিশালী অবস্থান মোদিকে অস্বস্তিতে ফেলে। ২০০৫ সালে এক বিতর্কের জেরে জোশীকে পদত্যাগ করতে হয়। এরপর মোদির উত্থানের সময় তিনি ক্রমশ মূল রাজনীতি থেকে ছিটকে পড়েন।
আরএসএস, বিশেষ করে মোহন ভাগবত চাইছিলেন সঞ্জয় জোশীকে কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে ফিরিয়ে আনতে। কিন্তু মোদি সে প্রস্তাবে রাজি হননি। নাড্ডার স্থলাভিষিক্ত হিসেবেও আরএসএস সঞ্জয়কেই দেখতে চেয়েছিল বলে জানা যায়। এ ঘটনাই আরএসএস এবং মোদির মধ্যে সুপ্ত টানাপোড়েনকে স্পষ্ট করে তুলেছে।
এই দ্বন্দ্ব কেবল ব্যক্তিগত নয়, বরং আদর্শগতও। আরএসএস ঐতিহ্যগতভাবে দলীয় নেতৃত্বে সমষ্টিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণকে গুরুত্ব দেয়। কিন্তু মোদির নেতৃত্বে বিজেপি ক্রমেই একক নেতৃত্বনির্ভর হয়ে উঠেছে। এখন দলের নীতি নির্ধারণে মোদির সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। এ ধারা আরএসএস-এর ঐতিহ্যবাহী কাঠামোর সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
এ দ্বন্দ্বে আরেকটি মাত্রা যোগ করেছে বিজেপির অলিখিত ‘৭৫ বছর বয়সে অবসর’ নীতি। এই নিয়ম কার্যকর করে মোদি ও অমিত শাহ লালকৃষ্ণ আদবানী, মুরলী মনোহর জোশীর মতো প্রবীণ নেতাদের sidelined করেছেন। আরএসএস-এর প্রবীণ নেতাদের মতে, অভিজ্ঞদের এভাবে এক পাশে সরিয়ে দেওয়া সংগঠনের জন্য ক্ষতিকর।
বিশ্লেষকরা বলছেন, মোদি বিজেপির সাংগঠনিক কাঠামোকে নিজের মতো করে গড়ে তুলতে চাইছেন, যেখানে আরএসএস-এর প্রভাব সীমিত থাকবে। অন্যদিকে আরএসএস বিজেপির ভেতরে তাদের ঐতিহ্যগত প্রভাব ধরে রাখতে বদ্ধপরিকর। সঞ্জয় জোশীকে মূলস্রোত থেকে সরিয়ে দেওয়াকে তারা নিজেদের ক্ষমতা খর্ব হওয়ার উদাহরণ হিসেবে দেখছে।
ভাগবতের ঘনিষ্ঠ মহল মনে করে, মোদি পরিকল্পিতভাবে বিজেপির সাংগঠনিক শক্তিকে দুর্বল করছেন। মোদির সমর্থকরা পাল্টা যুক্তি দেন—আধুনিক রাজনীতিতে শক্তিশালী একক নেতৃত্ব ছাড়া টিকে থাকা সম্ভব নয়। তাদের মতে, মোদির এই নেতৃত্বের ধরনই বিজেপির টানা নির্বাচনী সাফল্যের অন্যতম কারণ।
-রফিক
বোলসোনারোর ২৭ বছরের কারাদণ্ড: ব্রাজিলের রাজনীতিতে নতুন অনিশ্চয়তা
ব্রাজিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট ও দক্ষিণপন্থী নেতা জাইর বোলসোনারোকে অভ্যুত্থান ষড়যন্ত্রের দায়ে ২৭ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। এ রায়ের পর দেশটির রাজনীতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে এবং আগামী জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে নতুন অনিশ্চয়তার সৃষ্টি হয়েছে।
৭০ বছর বয়সী সাবেক সেনা কর্মকর্তা বোলসোনারো আপাতত সরাসরি কারাগারে যাচ্ছেন না। আইন অনুযায়ী তিনি আপিল প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত কারাগারে বন্দি থাকবেন না। সুপ্রিম কোর্টের রায় সারসংক্ষেপ ২৩ সেপ্টেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে অনুমোদিত হবে এবং এরপর ৬০ দিনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করবে আদালত। এরপরই বোলসোনারোর আইনজীবীরা আপিল করতে পারবেন। তিনি চাইলে স্বাস্থ্যগত কারণ দেখিয়ে গৃহবন্দি অবস্থায় সাজা ভোগের আবেদনও করতে পারেন। উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে নির্বাচনী প্রচারণায় এক ছুরিকাঘাতের ঘটনায় তার গুরুতর পেটের আঘাত লেগেছিল, যার চিকিৎসাজনিত জটিলতা এখনও রয়েছে।
বোলসোনারোর আইনপ্রণেতা পুত্র ফ্লাভিও জানিয়েছেন, তারা সংসদে একটি সাধারণ ক্ষমা আইন পাসের চেষ্টা করবেন যাতে শুধু বোলসোনারো নয়, ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে ব্রাসিলিয়ায় সরকারি ভবন ও সুপ্রিম কোর্টে হামলার দায়ে দণ্ডিত শত শত সমর্থকও মুক্তি পান। তবে বর্তমান প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা চাইলে এই আইন ভেটো করতে পারবেন। সুপ্রিম কোর্টের অন্তত দুই বিচারপতি ইতিমধ্যে জানিয়েছেন, বোলসোনারোর অপরাধ ক্ষমার অযোগ্য।
আগামী ২০২৬ সালের নির্বাচনে ডানপন্থীদের নেতৃত্ব কে দেবেন, তা নিয়েও জল্পনা তৈরি হয়েছে। বোলসোনারো ইতিমধ্যে ২০৩০ সাল পর্যন্ত নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার অযোগ্য ঘোষণা হয়েছেন, যদিও তিনি এই সিদ্ধান্ত পাল্টানোর চেষ্টা করছিলেন। তবুও তার সমর্থকরা বলছেন, বোলসোনারোই তাদের প্রার্থী। তবে আড়ালে আড়ালে নতুন নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে গেছে। সাও পাওলো রাজ্যের গভর্নর ও সাবেক অবকাঠামুমন্ত্রী তারসিসিও দে ফ্রেইতাস এখন সম্ভাব্য উত্তরসূরিদের মধ্যে শীর্ষে আছেন। তিনি নির্বাচিত হলে প্রথম কাজ হিসেবে বোলসোনারোকে ক্ষমা করবেন বলে জানিয়েছেন।
অন্যদিকে, এই রায় বর্তমান প্রেসিডেন্ট লুলার জন্য রাজনৈতিক সুবিধা তৈরি করেছে। সাম্প্রতিক জনমত জরিপে তার জনপ্রিয়তা এক মাসে চার শতাংশ বেড়ে ৩৩ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। লুলা এখনও ঘোষণা দেননি যে তিনি চতুর্থবারের মতো প্রেসিডেন্ট পদে প্রার্থী হবেন কি না, তবে সাম্প্রতিক কার্যকলাপে তিনি স্পষ্ট করেছেন যে তিনি রাজনৈতিক লড়াই চালিয়ে যেতে প্রস্তুত।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বোলসোনারোর শাস্তি ব্রাজিলের রাজনীতিতে বড় ধরনের প্রভাব ফেলবে। এটি শুধু ডানপন্থীদের জন্য নয়, বরং পুরো দেশের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যতের জন্যও একটি মোড় ঘোরানো মুহূর্ত হতে পারে।
-সুত্রঃ এ এফ পি
রাশিয়ার উপকূলে শক্তিশালী ভূমিকম্প, সুনামির আশঙ্কা
রাশিয়ার দূরপ্রাচ্যের কামচাটকা উপকূলে শনিবার স্থানীয় সময় ভোরে শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। যুক্তরাষ্ট্র ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (USGS) জানিয়েছে, ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৭.৪ এবং এর কেন্দ্রস্থল ছিল কামচাটকা অঞ্চলের প্রশাসনিক শহর পেত্রোপাভলোভস্ক-কামচাটস্কি থেকে প্রায় ১১১ কিলোমিটার পূর্বে, ভূগর্ভের প্রায় ৩৯.৫ কিলোমিটার গভীরে।
প্রাথমিকভাবে USGS ভূমিকম্পটির মাত্রা ৭.৫ হিসেবে জানিয়েছিল, পরে তা সামান্য কমিয়ে ৭.৪ ধরা হয়। শক্তিশালী এই ভূমিকম্পের পর প্রশান্ত মহাসাগরীয় সুনামি সতর্কতা কেন্দ্র সতর্ক করে জানিয়েছে, উপকূল থেকে ৩০০ কিলোমিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে “বিপজ্জনক সুনামি তরঙ্গ” আঘাত হানতে পারে।
কামচাটকা অঞ্চল ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকায় অবস্থিত হওয়ায় স্থানীয় কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যে উপকূলীয় এলাকায় বসবাসরত মানুষকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছে। এখনও পর্যন্ত বড় কোনো ক্ষয়ক্ষতি বা হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি, তবে পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে জরুরি বিভাগ।
এ বছরের জুলাই মাসেই কামচাটকা উপকূলে ইতিহাসের অন্যতম শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৮.৮। ভয়াবহ সেই কম্পন প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চার মিটার পর্যন্ত উচ্চতার সুনামি সৃষ্টি করেছিল। তখন হাওয়াই থেকে জাপান পর্যন্ত বিভিন্ন উপকূলীয় এলাকায় ব্যাপক সতর্কতা জারি করা হয় এবং জাপানে প্রায় ২০ লাখ মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রশান্ত মহাসাগরীয় "রিং অফ ফায়ার" এলাকায় অবস্থিত কামচাটকা প্রায়ই ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে থাকে এবং যে কোনো বড় ধরনের কম্পনের পর আফটারশকের সম্ভাবনা থেকেই যায়। স্থানীয় জনগণকে তাই আপাতত নিরাপদ স্থানে থাকতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
-সুত্রঃ এ এফ পি
সংসদ ভেঙে দিলেন নেপালের নতুন নারী প্রধানমন্ত্রী, নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা
নেপালের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নতুন প্রধানমন্ত্রী সুশীলা কার্কির সুপারিশের ভিত্তিতে সংসদ ভেঙে দিয়েছেন দেশটির রাষ্ট্রপতি। নতুন নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ২০২৬ সালের ৫ মার্চ। নেপালের রাষ্ট্রপতির প্রেস উপদেষ্টা কিরণ পোখরেল শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) রাতে এএফপিকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
শুক্রবার রাতে সুশীলা কার্কি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেন। তার নেতৃত্বে একটি ছোট মন্ত্রিসভা গঠিত হয়েছে, যার মেয়াদ থাকবে ছয় মাস। এই সময়ের মধ্যে অন্তর্বর্তী সরকার নতুন নির্বাচন আয়োজন করবে। এর মাধ্যমে তিনি নেপালের ইতিহাসে প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার রেকর্ড গড়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সুশীলার নাম ঘোষণার আগে নেপালের ‘জেন-জি’ বিক্ষোভকারীদের প্রতিনিধি, রাষ্ট্রপতি রামচন্দ্র পাউডেল এবং সেনাবাহিনীর প্রধান অশোক রাজ সিগদেলের মধ্যে আলোচনা হয়। সেই আলোচনাতেই সুশীলাকে প্রধানমন্ত্রী বানানোর বিষয়ে সবাই একমত হন।
অলির পদত্যাগ ও নেপালে অস্থিতিশীলতা
গত সপ্তাহে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধের প্রতিবাদে নেপালের ‘জেন-জি’রা আন্দোলনে নামে। গত সোমবার বিক্ষোভকারীরা পার্লামেন্টে ঢোকার চেষ্টা করলে তাদের ওপর গুলি চালানো হয়। এতে অনেক শিক্ষার্থী নিহত হন। বিক্ষোভ তীব্র হলে মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রিত্ব ছাড়েন কেপি শর্মা অলি। তিনি গা ঢাকা দিলে বিক্ষুব্ধ জনতা সাবেক দুজন প্রধানমন্ত্রীসহ অনেক মন্ত্রীর বাড়িতে হামলা চালায়।
সুশীলা কার্কির পরিচয়
সুশীলা কার্কি ২০১৬ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত নেপালের প্রধান বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি ছিলেন দেশটির প্রথম নারী প্রধান বিচারপতি। বিচারক থাকাকালীন দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানের কারণে ‘জেন-জি’দের কাছে তার জনপ্রিয়তা রয়েছে।
বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচন নিয়ে ভারতের জটিল সমীকরণ
বাংলাদেশের আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে ভারতের অবস্থান ও প্রত্যাশা এখন জটিল অঙ্কের সামনে দাঁড়িয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, জামায়াতে ইসলামী কিংবা মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক অতীতে কখনোই ঘনিষ্ঠ ছিল না। একইভাবে বিএনপির সঙ্গেও অতীতে বিরোধের ইতিহাস রয়েছে। ফলে ভারতের সামনে রয়েছে কঠিন এক কূটনৈতিক হিসাব।
গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকার পরিচালিত হচ্ছে। তবে তাদের সঙ্গে ভারতের আনুষ্ঠানিক যোগাযোগ সীমিত। বরং এ সময়টাতে দুই দেশের সম্পর্কে শীতলতা দৃশ্যমান হয়েছে। বাংলাদেশ বারবার শেখ হাসিনাকে ভারতে আশ্রয় না দেওয়ার এবং দেশে ফেরত পাঠানোর দাবি তুললেও, ভারত সে বিষয়ে কোনো উদ্যোগ দেখায়নি। অন্যদিকে, সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার প্রসঙ্গ ভারত বারবার উত্থাপন করেছে। বাণিজ্য সম্পর্কেও কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে।
অতীতের দিকে তাকালে দেখা যায়, বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল, তখনও ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক খুব উষ্ণ ছিল না। তাই ফেব্রুয়ারি ২০২৬-এ নির্ধারিত জাতীয় নির্বাচন ভারতের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। ভারতের বার্তা স্পষ্ট- তারা নির্বাচিত সরকারের সঙ্গেই আলোচনা করবে, অন্তর্বর্তী প্রশাসনের সঙ্গে নয়।
গত ২০ আগস্ট ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, তারা আশা করে বাংলাদেশে দ্রুত অবাধ, শান্তিপূর্ণ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এখানে “অন্তর্ভুক্তিমূলক” শব্দটি বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ, যা দিয়ে ভারত বোঝাতে চেয়েছে আওয়ামী লীগকেও নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ দেওয়া প্রয়োজন। যদিও বর্তমানে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকায় তাদের পক্ষে ভোটে অংশগ্রহণ সম্ভব নয়।
ভারতের পছন্দ ও অগ্রাধিকার
ওপি জিন্দল বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক শ্রীরাধা দত্তের মতে, আওয়ামী লীগ ছাড়া নির্বাচনের পরিস্থিতিতে ভারতের প্রধান অগ্রাধিকার হবে একটি স্থিতিশীল সরকার প্রতিষ্ঠা। প্রবীণ সাংবাদিক জয়ন্ত রায়চৌধুরীর মতে, ভারতের স্বার্থেই প্রতিবেশী বাংলাদেশে অস্থিরতা নয়, স্থিতিশীল সরকার কাম্য।
শ্রীরাধা মনে করেন, বর্তমান বাস্তবতায় ভারত বিএনপিকেই তুলনামূলকভাবে গ্রহণযোগ্য মনে করবে। জামায়াত বা নতুন দল এনসিপির ওপর তাদের আস্থা নেই। অবসরপ্রাপ্ত আমলা ও রাজ্যসভার সাবেক সাংসদ জহর সরকারও মনে করেন, বিএনপি বাংলাদেশের সবচেয়ে পুরনো রাজনৈতিক দল, তাদের পক্ষে জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। অন্যদিকে, এনসিপির কোনো শক্তিশালী ভিত্তি তৈরি হয়নি, তাদের জেতার সম্ভাবনাও ক্ষীণ। ফলে বিএনপি ও দক্ষিণপন্থি দলগুলোর মধ্যে ভোট বিভাজনই নির্বাচনকে প্রভাবিত করবে।
তবে জহর সরকারের মতে, ভারতের চাওয়া–পাওয়ার গুরুত্ব সীমিত। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের মানুষ যাদের ক্ষমতায় আনবে, ভারতকে তাদের সঙ্গেই সম্পর্ক রাখতে হবে।
ভারতের নীতি: নিরপেক্ষ থাকা নাকি কৌশলগত পছন্দ?
শ্রীরাধা দত্ত মনে করেন, এবারের পরিস্থিতি ১৯৭১, ১৯৭৫ বা ১৯৯৬ সালের নির্বাচনের মতো নয়। বিএনপি ক্ষমতায় এলে ভারতের জন্য তুলনামূলকভাবে অনুকূল পরিবেশ তৈরি হতে পারে। জামায়াতের সঙ্গে ভারতের ঐতিহাসিকভাবে শীতল সম্পর্ক এবং এনসিপির সঙ্গে যোগাযোগের অভাব ভারতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সংকেত।
জয়ন্ত রায়চৌধুরী যোগ করেন, মুহাম্মদ ইউনূস ও তার প্রশাসনের কয়েকজন সদস্য অতীতে ভারতবিরোধী অবস্থান নিয়েছেন। ভারতের সবচেয়ে বড় উদ্বেগ হলো বাংলাদেশের ভূখণ্ড যেন কোনোভাবেই ভারতবিরোধী কাজে ব্যবহার না হয়।
অন্যদিকে, জামায়াত সমর্থিত ছাত্রশিবির সম্প্রতি ডাকসু নির্বাচনে ভালো ফল করায় বিশ্লেষকরা মনে করছেন তারা জাতীয় নির্বাচনে সক্রিয়ভাবে অংশ নেবে। এতে বিএনপি–জামায়াত প্রতিদ্বন্দ্বিতা সরাসরি ভারতের কূটনৈতিক হিসাবকেও প্রভাবিত করবে।
শেখ হাসিনা ফ্যাক্টর
জহর সরকার মনে করেন, শেষ পর্যন্ত শেখ হাসিনার দীর্ঘ স্বৈরাচারী শাসন ও দুর্নীতির ইতিহাস জেনেও ভারত তাকে সমর্থন করেছে। আবার ভারতের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদে ঘনিষ্ঠ থাকার কারণে তাকেও পুরোপুরি পাশ কাটানো ভারতের পক্ষে কঠিন।
সব মিলিয়ে ভারতের জন্য সমীকরণ বেশ জটিল হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশে আসন্ন নির্বাচনের অঙ্কে জড়িয়ে আছেন শেখ হাসিনা, খালেদা জিয়া, মুহাম্মদ ইউনূস, জামায়াত, এনসিপি এবং ভারতের নিজস্ব কৌশলগত স্বার্থ। এ সমীকরণ সমাধান করতে ভারতকে কূটনীতির সূক্ষ্ম ভারসাম্য রক্ষা করতে হবে।
নেপালে অন্তর্বর্তী সরকার, নেতৃত্বে সাবেক প্রধান বিচারপতি সুশীলা কারকি
নেপালের রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রেক্ষাপটে দেশটির নতুন অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন সাবেক প্রধান বিচারপতি সুশীলা কারকি। শুক্রবার প্রেসিডেন্টের কার্যালয় আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁর নাম ঘোষণা করে এবং রাতেই তিনি শপথগ্রহণ করেন। ৭৩ বছর বয়সী এই নারী আইনবিদ ছিলেন নেপালের প্রথম নারী প্রধান বিচারপতি, যিনি দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানের জন্য সুপরিচিত।
প্রধানমন্ত্রী কে.পি. শর্মা অলি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্তের কারণে সৃষ্ট তরুণদের তীব্র আন্দোলনের মুখে গত মঙ্গলবার পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। সরকার ফেসবুক, এক্স, হোয়াটসঅ্যাপসহ ২৬টি প্ল্যাটফর্ম হঠাৎ নিষিদ্ধ করলে তরুণ প্রজন্ম বেকারত্ব ও দুর্নীতির বিরুদ্ধেও ক্ষোভ প্রকাশ করে রাস্তায় নেমে আসে। প্রথম দিনের সংঘর্ষেই প্রাণ হারান অন্তত ১৯ জন, আর টানা সহিংসতায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৫১-এ।
অলির পদত্যাগের পর সেনাবাহিনী আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব নেয়। প্রেসিডেন্ট ও সেনাপ্রধান বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক করে এক অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পথে এগোন। সবার সমর্থন নিয়ে শেষ পর্যন্ত সুশীলা কারকির নাম ঘোষণা করা হয়। বিক্ষোভকারীদের তরফ থেকে বলা হয়, তিনি বর্তমান পার্লামেন্ট ভেঙে নির্দলীয় সরকার গঠন করবেন। আন্দোলনকারীদের অধিকাংশই জেনারেশন জেড, আর তাদের মধ্যেই কারকির প্রতি আস্থার স্রোত প্রবল।
সুশীলা কারকি ২০১৬ সালের জুলাই থেকে ২০১৭ সালের জুন পর্যন্ত নেপালের প্রধান বিচারপতির দায়িত্বে ছিলেন। দায়িত্ব পালনের সময় থেকেই দুর্নীতি দমনে তাঁর কঠোর অবস্থান দেশজুড়ে আলোচিত হয়। যদিও এর ফলে তিনি প্রশংসা ও সমালোচনা—দুটোই কুড়িয়েছিলেন।
এদিকে অলির অবস্থান এখনও অজানা। পদত্যাগের পর তাঁকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে, তবে কোথায় তিনি আছেন তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
বিক্ষোভ চলাকালে সহিংসতার মাত্রা এতটাই বাড়ে যে বন্দিশালা ভেঙে ১৩ হাজার ৫০০ জন কয়েদি পালিয়ে যায়। এর মধ্যে কিছুজন ধরা পড়লেও এখনো ১২ হাজারের বেশি কয়েদি অধরা। পুলিশের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, নিহতদের মধ্যে রয়েছেন ২১ জন বিক্ষোভকারী, ৯ জন কয়েদি, ৩ জন পুলিশ সদস্য এবং আরও ১৮ জন সাধারণ মানুষ। আহত হয়েছেন প্রায় ১ হাজার ৩০০ জন।
দেশব্যাপী সহিংসতার পর কাঠমান্ডুসহ বিভিন্ন শহরে কারফিউ জারি করা হলেও শুক্রবার থেকে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হয়। দোকানপাট খুলতে শুরু করেছে, সড়কে যান চলাচলও দেখা যাচ্ছে। সেনা ও পুলিশ সদস্যরা অস্ত্রের বদলে লাঠি হাতে টহল দিচ্ছেন। যদিও কিছু রাস্তা এখনো বন্ধ, পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্থিতিশীলতার দিকে যাচ্ছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
এফটির তথ্যচিত্র: শেখ হাসিনার আমলে বাংলাদেশের হারানো বিলিয়ন ডলারের গল্প
লন্ডনভিত্তিক প্রভাবশালী দৈনিক ফিন্যান্সিয়াল টাইমস (এফটি) গত বৃহস্পতিবার প্রকাশ করেছে একটি নতুন তথ্যচিত্র— “বাংলাদেশের হারানো বিলিয়ন: চোখের সামনেই চুরি”। এতে মূলত শেখ হাসিনার শাসনামলে (২০০৯–২০২৩) সংঘটিত দুর্নীতি, বিপুল অর্থ পাচার এবং সেই অর্থ পুনরুদ্ধারের চ্যালেঞ্জকে ঘিরে বিশদ অনুসন্ধান তুলে ধরা হয়েছে। তথ্যচিত্রে রাজনীতিক, আন্দোলনকারী, ব্যবসায়ী ও বিশেষজ্ঞদের সাক্ষাৎকারের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটও আলোচিত হয়েছে।
দুর্নীতির ব্যাপ্তি ও অভিযোগ
এফটির ভাষ্যে, শেখ হাসিনার ১৫ বছরের শাসনামলে প্রায় ২৩৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বাংলাদেশ থেকে পাচার হয়েছে—যার পরিমাণ বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ২৮ লাখ ৫৪ হাজার ৮০০ কোটি টাকা। বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ অর্থ পাচারের ঘটনা। তথ্যচিত্রে উল্লেখ করা হয়, “বাংলাদেশে দুর্নীতির পরিমাণ বিশ্বের অন্য যেকোনো দেশের তুলনায় নজিরবিহীন”।
বড় প্রকল্পে দুর্নীতি, ব্যাংক খাতে জালিয়াতি, ভুয়া ঋণ এবং হুন্ডি নেটওয়ার্কের মাধ্যমে এই অর্থ বিদেশে পাচার করা হয়েছে। উল্লেখযোগ্যভাবে, যুক্তরাজ্যকে এই পাচারকৃত অর্থের প্রধান গন্তব্য হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
যুক্তরাজ্যের ভূমিকা ও সম্পদ পুনরুদ্ধার
তথ্যচিত্রে বলা হয়, যুক্তরাজ্যের রিয়েল এস্টেট খাত ও আর্থিক বাজার বাংলাদেশি দুর্নীতিবাজদের কাছে সবচেয়ে আকর্ষণীয় ছিল। জাতীয় অপরাধ দমন সংস্থা (NCA) ইতোমধ্যেই যুক্তরাজ্যে অন্তত ৩৫০টি সম্পদ চিহ্নিত ও ফ্রিজ করেছে, যার অধিকাংশের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রভাবশালী রাজনৈতিক পরিবার ও ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর যোগসূত্র রয়েছে।
উদাহরণ হিসেবে সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর নাম উঠে এসেছে, যিনি একাই যুক্তরাজ্যে ৩০০টিরও বেশি সম্পত্তির মালিক বলে এফটির তদন্তে দাবি করা হয়।
ছাত্র আন্দোলন ও হাসিনার পতন
তথ্যচিত্রে বলা হয়, ২০২৪ সালের জুলাই–আগস্টে কোটা সংস্কার আন্দোলন শেখ হাসিনা সরকারের পতনের টার্নিং পয়েন্টে পরিণত হয়। পুলিশের গুলি, নিখোঁজ, দমননীতি এবং হাজারো হতাহতের ঘটনায় সরকারের প্রতি জনগণের ক্ষোভ বিস্ফোরিত হয়। আগস্টের ৫ তারিখে যখন পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালাতে অস্বীকৃতি জানায়, তখন হাসিনা দেশত্যাগে বাধ্য হন। জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, আন্দোলনে অন্তত ১,৪০০ জন নিহত হন।
পারিবারিক প্রভাব ও আন্তর্জাতিক বিতর্ক
তথ্যচিত্রে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানার পরিবারের সদস্যদের নামও উঠে এসেছে। বিশেষত যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত শেখ রেহানার কন্যা ও লেবার পার্টির সাবেক মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিককে নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে পরোক্ষভাবে দুর্নীতির অর্থে অর্জিত সম্পদ গ্রহণের অভিযোগ ওঠে, যদিও তিনি তা দৃঢ়ভাবে অস্বীকার করেছেন এবং রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র বলে অভিহিত করেছেন।
ব্যাংক খাত দখল ও অর্থ পাচার কৌশল
এফটির অনুসন্ধানে দেখা যায়, আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী অংশ গোয়েন্দা সংস্থা ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স (ডিজিএফআই)-এর সহায়তায় একাধিক ব্যাংক দখল করে নেয়। ব্যাংক পরিচালনা পর্ষদকে বন্দুকের মুখে পদত্যাগে বাধ্য করা হয়, পরে নিজেদের লোক দিয়ে বোর্ড পুনর্গঠন করা হয়। এরপর ভুয়া ঋণ অনুমোদন দিয়ে হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করা হয়।
হুন্ডি বা অবৈধ মানি ট্রান্সফার নেটওয়ার্ক ছিল এ অর্থ পাচারের অন্যতম প্রধান মাধ্যম। আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে ওভার ইনভয়েসিং ও আন্ডার ইনভয়েসিংয়ের মাধ্যমেও বিপুল অর্থ বিদেশে চলে গেছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের ভূমিকা ও সম্পদ পুনরুদ্ধার
শেখ হাসিনার পতনের পর নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নেন। তিনি প্রাক্তন আইএমএফ কর্মকর্তা আহসান মন্সুরকে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ও অ্যাসেট রিকভারি টাস্কফোর্সের প্রধান করেন। তাঁদের নেতৃত্বে ইতোমধ্যেই দেউলিয়া ব্যাংকগুলো পুনর্গঠন এবং বিদেশে পাচার হওয়া অর্থের খোঁজে অভিযান শুরু হয়েছে।
তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এত বিপুল অর্থ ফেরত আনা একটি “ঐতিহাসিকভাবে জটিল প্রক্রিয়া”। প্রমাণ সংগ্রহ, আন্তর্জাতিক সহযোগিতা এবং আইনি প্রক্রিয়াই নির্ধারণ করবে কতটা অর্থ দেশে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে।
ফিন্যান্সিয়াল টাইমস-এর এই তথ্যচিত্র বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে শেখ হাসিনা শাসনামলের দুর্নীতি ও অর্থ পাচারের চিত্রকে নতুনভাবে সামনে এনেছে। এতে যেমন অভ্যন্তরীণ দুর্বলতা ও প্রশাসনিক ব্যর্থতা তুলে ধরা হয়েছে, তেমনি আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে যুক্তরাজ্য ও বৈশ্বিক আর্থিক ব্যবস্থার ভূমিকার দিকেও ইঙ্গিত করা হয়েছে।
বাংলাদেশের জনগণ একটি দীর্ঘ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে যে পরিবর্তন এনেছে, তা এখন পরীক্ষার মুখে—এই হারানো বিলিয়ন ফেরত আনার মাধ্যমে কি সত্যিই দেশ একটি টেকসই ও জবাবদিহিমূলক পথে অগ্রসর হতে পারবে?
হাসিনা, রাজাপাকসে, শর্মা–এর পর কি এবার মোদি? মণিপুরের অস্থিরতায় দিল্লিতে কাঁপন
ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মণিপুরে দীর্ঘ ২৯ মাস ধরে চলমান অস্থিরতা ও সাম্প্রতিক রাজনৈতিক ভাঙন নতুন প্রশ্ন উত্থাপন করেছে—নরেন্দ্র মোদি কি নিজ দেশের ভেতরেই এক অভূতপূর্ব রাজনৈতিক সংকটে পড়তে যাচ্ছেন? প্রতিবেশী দেশগুলোতে একের পর এক মোদি-সমর্থিত শাসকদের পতনের পর, এবার ভারতের ভেতরেও মোদির ভবিষ্যৎ নিয়ে জোরালো আলোচনা শুরু হয়েছে।
প্রতিবেশীদের পতন ও ডমিনো ইফেক্ট
বাংলাদেশে শেখ হাসিনার পতন, শ্রীলঙ্কায় রাজাপাকসে পরিবারের ক্ষমতাচ্যুতি, নেপালে কেপি শর্মা অলির সরে দাঁড়ানো—সবগুলো ঘটনা ভারতের কূটনৈতিক প্রভাব বলয়ের মধ্যেই ঘটেছে। অনেকেই এগুলোকে আলাদা আলাদা গণঅভ্যুত্থান ভেবেছিলেন। কিন্তু আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকদের মতে এগুলো ছিল একটি “ডমিনো ইফেক্ট”—যেখানে একের পর এক শাসক জনরোষে পতিত হয়েছেন, আর সেই শাসকরা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে দিল্লির সমর্থনপুষ্ট ছিলেন। এখন সেই ডমিনো পড়তে পড়তে ভারতের দরজায় এসে ঠেকছে।
মণিপুরের অস্থিরতা: মোদির ভাবমূর্তিতে আঘাত
মণিপুরে টানা ২৯ মাস ধরে দাঙ্গা, সহিংসতা ও অব্যবস্থাপনা মোদি সরকারের জন্য এক বড় ব্যর্থতার প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার শক্তিশালী সেনা ও পুলিশি উপস্থিতি দিয়েও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি। সম্প্রতি বিজেপির তিন প্রভাবশালী নেতা দল ছেড়ে কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন। বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি শুধুমাত্র দলবদল নয়; বরং শাসকদলের ভিত্তি নড়বড়ে হয়ে যাওয়ার স্পষ্ট ইঙ্গিত।
অভ্যন্তরীণ চাপে বিজেপি ও আরএসএসের দ্বন্দ্ব
মোদি ক্ষমতায় আসার পর থেকেই আরএসএস ছিল তাঁর সবচেয়ে বড় শক্তি। কিন্তু বর্তমানে সেই আরএসএসের ভেতর থেকেই মোদির সরে যাওয়ার দাবি উঠছে। বিদ্রূপাত্মকভাবে, বয়সসীমার কারণে যেভাবে তিনি অটল বিহারী বাজপেয়ী বা লালকৃষ্ণ আদভানিকে সরিয়ে দিয়েছিলেন, এখন সেই একই নিয়মের ফাঁদে তিনি নিজেই পড়ছেন। বিজেপির একটি শক্তিশালী অংশ এখন বলছে, “৭৫ বছর হয়ে গেছে, এবার সরে দাঁড়ানোর সময়।”
দক্ষিণ ভারতের নতুন চ্যালেঞ্জ
উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের অস্থিরতার পাশাপাশি দক্ষিণ ভারতে বিজেপি একটি নতুন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। জনপ্রিয় অভিনেতা বিজয় থালাপাতির নতুন রাজনৈতিক দল সেখানে প্রবল সাড়া ফেলছে। দক্ষিণ ভারত বরাবরই বিজেপির জন্য দুর্ভেদ্য অঞ্চল ছিল। নতুন এই শক্তির উত্থান মোদির অজেয় ভাবমূর্তিকে বড় ধাক্কা দিয়েছে।
মোদির ভাবমূর্তি ও আন্তর্জাতিক চাপ
মোদি দীর্ঘদিন ধরে নিজেকে অজেয় নেতা হিসেবে তুলে ধরেছেন। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় কারচুপির অভিযোগ, শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে বিতর্ক, এবং যুক্তরাষ্ট্রসহ কিছু দেশের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েন তাঁর ভাবমূর্তি দুর্বল করে তুলেছে। আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও তাঁর কূটনৈতিক দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রতিবেশীদের সংকট সামাল দিতে ব্যর্থ মোদি এখন নিজের দেশেও স্থিতিশীলতা ধরে রাখতে পারছেন না।
বাংলাদেশের শিক্ষা ও ভারতের প্রশ্ন
বাংলাদেশে শেখ হাসিনার পতন অনেককে বিস্মিত করেছিল। অথচ তার আগে থেকেই দেশের ভেতরে দীর্ঘদিন ধরে ক্ষোভ জমছিল। ঠিক একইভাবে মণিপুরের অস্থিরতা, বিজেপির অভ্যন্তরীণ ভাঙন এবং জনগণের ক্রমবর্ধমান ক্ষোভ ভারতের জন্য এক অনিশ্চিত ভবিষ্যতের ইঙ্গিত বহন করছে।
শ্রীলঙ্কার রাজাপাকসে, বাংলাদেশের শেখ হাসিনা, নেপালের কেপি শর্মা ওলি—সবাই একসময় নিজেদের অজেয় ভাবতেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত জনরোষে তাদের পতন হয়েছে। নরেন্দ্র মোদি কি সেই ধারাবাহিকতার নতুন অধ্যায় হতে যাচ্ছেন? আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, মণিপুরের ভাঙনকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা মনে করার সুযোগ নেই। এটি এক বড় ছবির অংশ—যেখানে ভারতের ভেতরে-বাইরে সবকিছু মিলিয়ে এক নিখুঁত ঝড়ের আবহ তৈরি হচ্ছে।
প্রশ্ন এখন একটাই—রাজাপাকসে, হাসিনা, শর্মার পর এবার কি মোদির পালা? উত্তর সময়ই দেবে।
পাঠকের মতামত:
- অপারেশন থিয়েটারের আলো: ছায়াহীন বিস্ময়ের বৈজ্ঞানিক রহস্য
- আজকের মুদ্রা বিনিময় হারের বিশ্লেষণ
- বিশ্বের সবচেয়ে ভয়ংকর পাখি: সাউদার্ন ক্যাসোয়ারির রহস্যময়তা ও আতঙ্ক
- জাকসু নির্বাচনের ফলাফল দেওয়ার সময় জানা গেল
- দিশা পাটানির বাড়িতে গুলিবর্ষণ: আতঙ্কে পরিবার, কঠোর নিরাপত্তায় বাড়ি ঘিরে ফেলল পুলিশ
- ম্যানচেস্টার ডার্বির আগে রুবেন আমোরিমের হুঁশিয়ারি: "আমরা ভিন্ন দল"
- ওল্ড ট্রাফোর্ডে ইতিহাস: ফিল সল্টের ঝড়ো সেঞ্চুরিতে ইংল্যান্ডের রেকর্ড জয়
- কিম জং উনের নতুন সামরিক নীতি: একসাথে পারমাণবিক ও প্রচলিত শক্তি বৃদ্ধির ঘোষণা
- মোদি বনাম ভাগবত: বিজেপি–আরএসএস সম্পর্কে ফাটল
- বোলসোনারোর ২৭ বছরের কারাদণ্ড: ব্রাজিলের রাজনীতিতে নতুন অনিশ্চয়তা
- ভূমি মন্ত্রণালয়ে বড় নিয়োগ!
- জানুন নিয়মিত সাঁতারের ছয় বড় উপকারিতা
- রাশিয়ার উপকূলে শক্তিশালী ভূমিকম্প, সুনামির আশঙ্কা
- ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ-যুবলীগের ঝটিকা মিছিল
- আজ রাতে এশিয়া কাপে বাংলাদেশের ম্যাচ, টিভিতে আরও যা দেখবেন
- ফিলিস্তিনিদের ওপর আগ্রাসন বন্ধে আন্তর্জাতিক চাপ বৃদ্ধির আহ্বান তারেক রহমানের
- নিহত সাংবাদিক শিবলীর পরিবারের পাশে দাঁড়াল ছাত্রশিবির
- আজ ৮ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকবে না যেসব এলাকায়
- সংসদ ভেঙে দিলেন নেপালের নতুন নারী প্রধানমন্ত্রী, নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা
- ৪ দাবিতে যুগপৎ আন্দোলনে নামছে ৮ রাজনৈতিক দল
- বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে কঠিন অঙ্কে ভারত
- জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতি নিয়ে সংকট
- জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভোট গণনা নিয়ে অনিশ্চয়তা
- গণপরিষদ বা হ্যাঁ-না ভোটের দাবি এবি পার্টির ফুয়াদের
- বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচন নিয়ে ভারতের জটিল সমীকরণ
- ঢাকা ও বিভাগীয় শহরের নামাজের সময় ঘোষণা
- বায়তুল মোকাররমে শুরু হলো মাসব্যাপী ইসলামি বইমেলা
- কুরআন, উপহার ও দিকনির্দেশনা: ভিন্নধর্মী নবীনবরণ বেরোবিতে
- বাংলাদেশে চীনা বিনিয়োগে রেকর্ড প্রবৃদ্ধি
- লন্ডনে মাহফুজ আলমকে লক্ষ্য করে হামলার চেষ্টা
- নেপালে অন্তর্বর্তী সরকার, নেতৃত্বে সাবেক প্রধান বিচারপতি সুশীলা কারকি
- উন্নয়ন, নিরাপত্তা ও ভূরাজনীতি: জাপান–বাংলাদেশ সম্পর্কের ভবিষ্যৎ সমীকরণ
- এফটির তথ্যচিত্র: শেখ হাসিনার আমলে বাংলাদেশের হারানো বিলিয়ন ডলারের গল্প
- ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে জাতীয় নির্বাচন: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব
- হাসিনা, রাজাপাকসে, শর্মা–এর পর কি এবার মোদি? মণিপুরের অস্থিরতায় দিল্লিতে কাঁপন
- ডাকসু নির্বাচন কি জাতীয় রাজনীতির পূর্বাভাস? জানালেন পিনাকী ভট্টাচার্য
- ঢাকার বাজারে নিত্যপণ্যের দাম: কোন পণ্য বেড়েছে, কোথায় মিলছে স্বস্তি
- জাহাঙ্গীরনগরে রাতভর ভোট গণনা, বিক্ষোভ ও বর্জনে উত্তপ্ত ক্যাম্পাস
- নেপালে রক্তক্ষয়ী বিক্ষোভ: নিহত ৩৪, আহত দেড় হাজারের বেশি
- জাকসু ভোট গণনায় ট্র্যাজেডি: দায়িত্ব পালনে এসে সহকারী অধ্যাপকের মৃত্যু
- UNHRC-তে মুখোমুখি ভারত–সুইজারল্যান্ড, পাকিস্তানকে আক্রমণ দিল্লির
- দুর্বল পাঁচ ব্যাংক একীভূতকরণ, উদ্যোক্তাদের সব শেয়ার বাজেয়াপ্ত
- জাকসু নির্বাচনী দায়িত্বে শিক্ষকের মৃত্যু
- লিটনের ব্যাটে স্মার্ট জয়: হংকংকে উড়িয়ে দিল বাংলাদেশ
- ফাউন্ডেশনাল ইলেকশন সামনে: জুলাই সনদ বাস্তবায়নে জোর দিলেন ড. ইউনূস
- ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে ঝড়ের উত্থান: ২৮২ শেয়ার দাম বাড়ল, লেনদেনে রেকর্ড ৭৭৮ কোটি টাকা!
- জুলাই সনদ বাস্তবায়নে রাজনৈতিক দলের অঙ্গীকার জরুরি: বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন
- উটাহে চার্লি কার্ক হত্যা: রাজনৈতিক সহিংসতার নতুন ধাক্কায় আমেরিকার গণতন্ত্র ও নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা
- শিবিরের অভিযোগ, ছাত্রদলের বর্জন—প্রশ্নের মুখে ৩৩ বছর পর জাকসু নির্বাচন
- শির্কের ভয়াবহতা বুঝতে সহজ উদাহরণ
- এফটির তথ্যচিত্র: শেখ হাসিনার আমলে বাংলাদেশের হারানো বিলিয়ন ডলারের গল্প
- উন্নয়ন, নিরাপত্তা ও ভূরাজনীতি: জাপান–বাংলাদেশ সম্পর্কের ভবিষ্যৎ সমীকরণ
- ডাকসু নির্বাচনের ভোট শেষ, ফলাফলের আগে অস্থির ঢাবি—পাল্টাপাল্টি অভিযোগে উত্তপ্ত পরিবেশ
- নেপালে অন্তর্বর্তী সরকার, নেতৃত্বে সাবেক প্রধান বিচারপতি সুশীলা কারকি
- ডিএসইতে আজকের লেনদেন শেষে টপ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- জুলাই সনদ বাস্তবায়নে রাজনৈতিক দলের অঙ্গীকার জরুরি: বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন
- ডাকসু নির্বাচন: ৪৭১ প্রার্থী, ৩৯ হাজার ভোটার, টানটান নিরাপত্তায় উৎসবমুখর ভোটযুদ্ধ
- নেপালে অস্থিরতা: বাংলাদেশি নাগরিকদের ঘরে থাকার নির্দেশ দূতাবাসের
- লিটনের ব্যাটে স্মার্ট জয়: হংকংকে উড়িয়ে দিল বাংলাদেশ
- প্রথমবার আস্থা ভোটে প্রধানমন্ত্রী বিদায়, ইতিহাস গড়ল ফ্রান্স
- শেখ হাসিনার উত্তরাধিকার প্রশ্ন: আওয়ামী লীগের সামনে এক অমীমাংসিত সংকট
- জাকসু নির্বাচন: প্রার্থীদের জন্য আজ বাধ্যতামূলক ডোপ টেস্ট
- ফাউন্ডেশনাল ইলেকশন সামনে: জুলাই সনদ বাস্তবায়নে জোর দিলেন ড. ইউনূস
- উটাহে চার্লি কার্ক হত্যা: রাজনৈতিক সহিংসতার নতুন ধাক্কায় আমেরিকার গণতন্ত্র ও নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা
- নিরাপদ কাতারেও হামলা! দোহায় ইসরাইলি হামলায় তোলপাড় আরব বিশ্ব