জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতি নিয়ে সংকট

‘জুলাই জাতীয় সনদ-২০২৫’ চূড়ান্ত করার শেষ পর্যায়ে রয়েছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। ৭ দফার ভিত্তিতে তৈরি চূড়ান্ত খসড়াটি গত বৃহস্পতিবার রাতেই রাজনৈতিক দলগুলোকে দেওয়া হয়েছে। এই সনদে স্বাক্ষর করার জন্য প্রতিটি দলকে দুজন করে নেতার নাম আজ শনিবারের মধ্যে কমিশনকে জানাতে বলা হয়েছে। তবে সনদ ঘোষণা করার চেয়ে এর বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়েই সবচেয়ে বেশি সংকট দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে সংবিধান সম্পর্কিত বিষয়গুলো কীভাবে বাস্তবায়িত হবে, তা নিয়ে দলগুলোর মধ্যে মতবিরোধ ও জটিলতা রয়ে গেছে।
ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, সনদের চূড়ান্ত খসড়ায় সব মতের প্রতিফলন ঘটানো হয়েছে। তবে তিনি স্বীকার করেছেন যে, বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়ে মতভিন্নতা রয়ে গেছে। এই সংকট নিরসনে কমিশন আগামী রোববার দলগুলোর সঙ্গে আবারও আলোচনা করবে।
ভিন্নমত ও বাস্তবায়নের বিকল্প পদ্ধতি
সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতি নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ব্যাপক মতভিন্নতা রয়েছে। বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী এবং জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) তিন ধরনের পদ্ধতির কথা বলছে।
বিএনপি: সংবিধান সম্পর্কিত প্রস্তাবগুলো আগামী জাতীয় সংসদ গঠনের দুই বছরের মধ্যে বাস্তবায়নের পক্ষে বিএনপি। তাদের মতে, সাংবিধানিক আদেশ জারি বা গণভোটের মতো প্রস্তাবগুলো অগ্রহণযোগ্য। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, “এখন সনদ কার্যকর হলে দেশে দুটি সংবিধান চলমান থাকবে, যা আইনগতভাবে টেকসই নয়।”
জামায়াত ও এনসিপি: জামায়াত ইসলামী ও এনসিপিসহ কিছু দল চায় আগামী নির্বাচনের আগেই রাষ্ট্রপতির বিশেষ আদেশ বা গণভোটের মাধ্যমে সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়ন হোক। জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, “সংস্কার আগামী সংসদের হাতে ছেড়ে দিলে গণঅভ্যুত্থানের প্রতি অবিচার করা হবে।” এনসিপি গণপরিষদ গঠনের মাধ্যমে সনদের বাস্তবায়ন চায়।
অন্যান্য দল: বাংলাদেশ এলডিপির চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সেলিম বলেন, সংস্কার প্রস্তাবগুলো টেকসই ও আইনসম্মতভাবে বাস্তবায়ন হওয়া উচিত, যা সংসদ বা অধ্যাদেশ দ্বারা করা যেতে পারে। অন্যদিকে, আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার যুবায়ের আহমেদ ভূঁইয়া গণভোট বা গণপরিষদ গঠনের মাধ্যমে এই সনদের বাস্তবায়ন চান।
জুলাই সনদের চূড়ান্ত খসড়া
সনদের চূড়ান্ত খসড়ার পটভূমি এবং অঙ্গীকারনামায় বেশকিছু নতুন বিষয় যুক্ত হয়েছে। এতে বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান, সত্তর সালের নির্বাচনসহ বিভিন্ন ঐতিহাসিক ঘটনাপ্রবাহের উল্লেখ রয়েছে। তবে সনদ বাস্তবায়নের আইনি বাধ্যবাধকতার সুপারিশ চূড়ান্ত খসড়ায় নেই।
ঐকমত্য কমিশন জানিয়েছে, বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়ে সনদের বাস্তবায়ন পদ্ধতি নির্ধারণ করে সরকারকে সুপারিশ করা হবে। সরকারই সিদ্ধান্ত নেবে, কোন পদ্ধতিতে সনদ বাস্তবায়ন হবে। শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পলিটিক্যাল স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. সাহাবুল হক বলেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়ন হবে বাংলাদেশের জন্য একটি যুগান্তকারী রাজনৈতিক মাইলফলক, যদি এটিকে রাজনৈতিক দলগুলোর সুবিধাবাদী সমঝোতার বাইরে নিয়ে গিয়ে আইনি ও প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর মধ্যে আবদ্ধ করা যায়।
লন্ডনে মাহফুজ আলমকে লক্ষ্য করে হামলার চেষ্টা
যুক্তরাজ্যের লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশনের সহযোগিতায় আয়োজিত একটি সেমিনার থেকে বের হওয়ার সময় তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলমকে লক্ষ্য করে হামলার চেষ্টা চালান আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা–কর্মীরা। এ ঘটনা ঘটে শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭টার দিকে, কেন্দ্রীয় লন্ডনের ব্লুমসবারি এলাকায় অবস্থিত সোয়াস ইউনিভার্সিটি অব লন্ডন (দ্য স্কুল অব অরিয়েন্টাল অ্যান্ড আফ্রিকান স্টাডিজ) ক্যাম্পাসের পেছনের সড়কে।
বাংলাদেশ হাইকমিশন ও সোয়াস বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ উদ্যোগে ওই সেমিনারের আয়োজন করা হয়। এতে অংশ নেওয়ার কথা ছিল মাহফুজ আলমেরও। অনুষ্ঠান শেষে হাইকমিশনের একটি কালো বিএমডব্লিউ গাড়ি ক্যাম্পাস থেকে বের হওয়ার সময় আওয়ামী লীগের কর্মীরা সেটির ওপর ডিম নিক্ষেপ করেন। একই সঙ্গে কয়েকজন গাড়ির সামনে শুয়ে পড়ার চেষ্টা করেন। তবে দ্রুত পুলিশ হস্তক্ষেপ করায় তাদের প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়।
লন্ডন হাইকমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, হামলাকারীরা মনে করেছিলেন গাড়ির ভেতরে মাহফুজ আলম অবস্থান করছেন। কিন্তু বাস্তবে তিনি নিরাপত্তাজনিত কারণে অন্য একটি গাড়িতে ভিন্ন রাস্তায় করে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা ত্যাগ করেছিলেন।
এ প্রসঙ্গে লন্ডনে নিযুক্ত বাংলাদেশ হাইকমিশনের প্রেস মিনিস্টার আকবর হোসেন গণমাধ্যমকে জানান, “স্থানীয় আওয়ামী লীগ কর্মীরা যে গাড়িটিতে ডিম ছুড়েছে, তারা ভেবেছিলেন সেখানে তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম রয়েছেন। কিন্তু তিনি অন্য গাড়িতে এবং অন্য রুটে ক্যাম্পাস ত্যাগ করেন।”
ঘটনার পর লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের এক বছর’ শীর্ষক আলোচনা সভায় উপস্থিত হয়ে মাহফুজ আলম বলেন, “আজ আমি আওয়ামী লীগের আক্রমণের একেবারেই কাছাকাছি চলে গিয়েছিলাম।”
-রফিক
এফটির তথ্যচিত্র: শেখ হাসিনার আমলে বাংলাদেশের হারানো বিলিয়ন ডলারের গল্প
লন্ডনভিত্তিক প্রভাবশালী দৈনিক ফিন্যান্সিয়াল টাইমস (এফটি) গত বৃহস্পতিবার প্রকাশ করেছে একটি নতুন তথ্যচিত্র— “বাংলাদেশের হারানো বিলিয়ন: চোখের সামনেই চুরি”। এতে মূলত শেখ হাসিনার শাসনামলে (২০০৯–২০২৩) সংঘটিত দুর্নীতি, বিপুল অর্থ পাচার এবং সেই অর্থ পুনরুদ্ধারের চ্যালেঞ্জকে ঘিরে বিশদ অনুসন্ধান তুলে ধরা হয়েছে। তথ্যচিত্রে রাজনীতিক, আন্দোলনকারী, ব্যবসায়ী ও বিশেষজ্ঞদের সাক্ষাৎকারের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটও আলোচিত হয়েছে।
দুর্নীতির ব্যাপ্তি ও অভিযোগ
এফটির ভাষ্যে, শেখ হাসিনার ১৫ বছরের শাসনামলে প্রায় ২৩৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বাংলাদেশ থেকে পাচার হয়েছে—যার পরিমাণ বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ২৮ লাখ ৫৪ হাজার ৮০০ কোটি টাকা। বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ অর্থ পাচারের ঘটনা। তথ্যচিত্রে উল্লেখ করা হয়, “বাংলাদেশে দুর্নীতির পরিমাণ বিশ্বের অন্য যেকোনো দেশের তুলনায় নজিরবিহীন”।
বড় প্রকল্পে দুর্নীতি, ব্যাংক খাতে জালিয়াতি, ভুয়া ঋণ এবং হুন্ডি নেটওয়ার্কের মাধ্যমে এই অর্থ বিদেশে পাচার করা হয়েছে। উল্লেখযোগ্যভাবে, যুক্তরাজ্যকে এই পাচারকৃত অর্থের প্রধান গন্তব্য হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
যুক্তরাজ্যের ভূমিকা ও সম্পদ পুনরুদ্ধার
তথ্যচিত্রে বলা হয়, যুক্তরাজ্যের রিয়েল এস্টেট খাত ও আর্থিক বাজার বাংলাদেশি দুর্নীতিবাজদের কাছে সবচেয়ে আকর্ষণীয় ছিল। জাতীয় অপরাধ দমন সংস্থা (NCA) ইতোমধ্যেই যুক্তরাজ্যে অন্তত ৩৫০টি সম্পদ চিহ্নিত ও ফ্রিজ করেছে, যার অধিকাংশের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রভাবশালী রাজনৈতিক পরিবার ও ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর যোগসূত্র রয়েছে।
উদাহরণ হিসেবে সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর নাম উঠে এসেছে, যিনি একাই যুক্তরাজ্যে ৩০০টিরও বেশি সম্পত্তির মালিক বলে এফটির তদন্তে দাবি করা হয়।
ছাত্র আন্দোলন ও হাসিনার পতন
তথ্যচিত্রে বলা হয়, ২০২৪ সালের জুলাই–আগস্টে কোটা সংস্কার আন্দোলন শেখ হাসিনা সরকারের পতনের টার্নিং পয়েন্টে পরিণত হয়। পুলিশের গুলি, নিখোঁজ, দমননীতি এবং হাজারো হতাহতের ঘটনায় সরকারের প্রতি জনগণের ক্ষোভ বিস্ফোরিত হয়। আগস্টের ৫ তারিখে যখন পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালাতে অস্বীকৃতি জানায়, তখন হাসিনা দেশত্যাগে বাধ্য হন। জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, আন্দোলনে অন্তত ১,৪০০ জন নিহত হন।
পারিবারিক প্রভাব ও আন্তর্জাতিক বিতর্ক
তথ্যচিত্রে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানার পরিবারের সদস্যদের নামও উঠে এসেছে। বিশেষত যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত শেখ রেহানার কন্যা ও লেবার পার্টির সাবেক মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিককে নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে পরোক্ষভাবে দুর্নীতির অর্থে অর্জিত সম্পদ গ্রহণের অভিযোগ ওঠে, যদিও তিনি তা দৃঢ়ভাবে অস্বীকার করেছেন এবং রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র বলে অভিহিত করেছেন।
ব্যাংক খাত দখল ও অর্থ পাচার কৌশল
এফটির অনুসন্ধানে দেখা যায়, আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী অংশ গোয়েন্দা সংস্থা ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স (ডিজিএফআই)-এর সহায়তায় একাধিক ব্যাংক দখল করে নেয়। ব্যাংক পরিচালনা পর্ষদকে বন্দুকের মুখে পদত্যাগে বাধ্য করা হয়, পরে নিজেদের লোক দিয়ে বোর্ড পুনর্গঠন করা হয়। এরপর ভুয়া ঋণ অনুমোদন দিয়ে হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করা হয়।
হুন্ডি বা অবৈধ মানি ট্রান্সফার নেটওয়ার্ক ছিল এ অর্থ পাচারের অন্যতম প্রধান মাধ্যম। আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে ওভার ইনভয়েসিং ও আন্ডার ইনভয়েসিংয়ের মাধ্যমেও বিপুল অর্থ বিদেশে চলে গেছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের ভূমিকা ও সম্পদ পুনরুদ্ধার
শেখ হাসিনার পতনের পর নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নেন। তিনি প্রাক্তন আইএমএফ কর্মকর্তা আহসান মন্সুরকে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ও অ্যাসেট রিকভারি টাস্কফোর্সের প্রধান করেন। তাঁদের নেতৃত্বে ইতোমধ্যেই দেউলিয়া ব্যাংকগুলো পুনর্গঠন এবং বিদেশে পাচার হওয়া অর্থের খোঁজে অভিযান শুরু হয়েছে।
তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এত বিপুল অর্থ ফেরত আনা একটি “ঐতিহাসিকভাবে জটিল প্রক্রিয়া”। প্রমাণ সংগ্রহ, আন্তর্জাতিক সহযোগিতা এবং আইনি প্রক্রিয়াই নির্ধারণ করবে কতটা অর্থ দেশে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে।
ফিন্যান্সিয়াল টাইমস-এর এই তথ্যচিত্র বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে শেখ হাসিনা শাসনামলের দুর্নীতি ও অর্থ পাচারের চিত্রকে নতুনভাবে সামনে এনেছে। এতে যেমন অভ্যন্তরীণ দুর্বলতা ও প্রশাসনিক ব্যর্থতা তুলে ধরা হয়েছে, তেমনি আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে যুক্তরাজ্য ও বৈশ্বিক আর্থিক ব্যবস্থার ভূমিকার দিকেও ইঙ্গিত করা হয়েছে।
বাংলাদেশের জনগণ একটি দীর্ঘ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে যে পরিবর্তন এনেছে, তা এখন পরীক্ষার মুখে—এই হারানো বিলিয়ন ফেরত আনার মাধ্যমে কি সত্যিই দেশ একটি টেকসই ও জবাবদিহিমূলক পথে অগ্রসর হতে পারবে?
১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে জাতীয় নির্বাচন: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানিয়েছেন যে, আসন্ন জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি ইতোমধ্যেই শুরু হয়েছে এবং এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সব প্রতিষ্ঠান কাজ করছে। তার ভাষায়, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে পুরো জাতি প্রস্তুত এবং সরকার আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে জাতীয় নির্বাচন সম্পন্ন করার ব্যাপারে আশাবাদী।
শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) সকালে মাগুরায় ইসলামী রেনেসাঁর কবি ফররুখ আহমদের পৈতৃক বাড়ি পরিদর্শন শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, বর্ষা শেষ হলেই গ্রাম থেকে শহর—সব জায়গায় নির্বাচনী আবহ তৈরি হবে। দীর্ঘ ১৭ বছর যারা ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন, তারাও এবার নতুন প্রজন্মের সঙ্গে উৎসাহ ও উদ্দীপনার সঙ্গে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে নিজেদের মত প্রকাশ করবেন।
তিনি আরও জানান, জুলাই সনদ বাস্তবায়নকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে নিয়মিত আলোচনা চলছে। সমঝোতার ভিত্তিতে সংস্কার কার্যক্রম এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে, আর এই সংস্কার এখন দৃশ্যমান রূপ পাচ্ছে। এ প্রসঙ্গে তিনি আশ্বস্ত করেন যে, সংস্কারের কাজ অব্যাহত রয়েছে এবং তা দ্রুত অগ্রসর হচ্ছে।
শফিকুল আলম সম্প্রতি অনুষ্ঠিত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচন নিয়েও মন্তব্য করেন। তার মতে, ডাকসু নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে সম্পন্ন হয়েছে এবং কোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেনি।
সামগ্রিকভাবে প্রেস সচিবের বক্তব্য থেকে প্রতীয়মান হয় যে, ফেব্রুয়ারির জাতীয় নির্বাচন শুধু রাজনৈতিক প্রক্রিয়া নয়, বরং তা জাতির জন্য একটি গণতান্ত্রিক উৎসব হিসেবে অনুষ্ঠিত হবে। একই সঙ্গে সংস্কারের ধারাবাহিকতা ও রাজনৈতিক ঐক্যমতের ভিত্তিতে এই নির্বাচনকে একটি নতুন সূচনার প্রতীক হিসেবে দেখতে চাইছে অন্তর্বর্তী সরকার।
দুর্বল পাঁচ ব্যাংক একীভূতকরণ, উদ্যোক্তাদের সব শেয়ার বাজেয়াপ্ত
বাংলাদেশের ব্যাংক খাতে নজিরবিহীন সংস্কার উদ্যোগ হিসেবে পাঁচটি দুর্বল ইসলামী ব্যাংককে একীভূত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী উদ্যোক্তাদের মালিকানাধীন সব শেয়ার বাজেয়াপ্ত করা হবে এবং এর বিপরীতে কোনো ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে না। কারণ এই ব্যাংকগুলোর নিট সম্পদ বর্তমানে ঋণাত্মক অবস্থায় রয়েছে। নতুনভাবে গঠিত ব্যাংক শতভাগ সরকারি মালিকানায় পরিচালিত হবে এবং এর জন্য নতুন পরিচালনা পর্ষদ ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হবে।
একীভূত হওয়ার তালিকায় রয়েছে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (এসআইবিএল), ইউনিয়ন ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক এবং এক্সিম ব্যাংক। এর মধ্যে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক দীর্ঘদিন ধরে এস আলম গ্রুপের মালিকানায় ছিল। তবে বাকি চারটি ব্যাংক ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে যায়। নিয়ন্ত্রণে যাওয়ার পর এসব ব্যাংকে শুরু হয় ব্যাপক অনিয়ম ও লুটপাট, যার বড় অংশ পাচার হয়ে যায় বিদেশে। ফলস্বরূপ ব্যাংকগুলো দুর্বল হয়ে পড়ে এবং গ্রাহকদের আমানত ফেরত দিতে ব্যর্থ হয়।
পরিস্থিতি সামাল দিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক দীর্ঘদিন ধরে নীতি সহায়তা দিয়ে আসছিল এবং ব্যাংকগুলোর জন্য গ্যারান্টি দিয়েছিল। তবুও ব্যাংকগুলো স্বাভাবিক কার্যক্রমে ফিরতে পারেনি। এই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ ব্যাংক একীভূতকরণের সিদ্ধান্ত নেয় এবং সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠকে প্রস্তাব অনুমোদন পেয়েছে। এখন এটি ওয়ার্কিং কমিটির আসন্ন বৈঠকে চূড়ান্ত করা হবে এবং পরে বাস্তবায়নের কাজ শুরু হবে।
নতুন ব্যাংকের পরিশোধিত মূলধন নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৫ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকার থেকে আসবে ২০ হাজার কোটি টাকা, আমানত বিমা তহবিল থেকে প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকা এবং প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে আসবে ৩ হাজার কোটি টাকা। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিজস্ব তহবিল থেকে কোনো অর্থ দেওয়া হবে না। নতুন ব্যাংক কার্যক্রম শুরু করার পর কেন্দ্রীয় ব্যাংক ঋণ সরবরাহ ও নীতি সহায়তা প্রদান করবে।
একীভূত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পাঁচ ব্যাংকের সব সম্পদ ও দায় নতুন ব্যাংকের নামে হস্তান্তর করা হবে। বর্তমানে এই ব্যাংকগুলোর রয়েছে ৭৬০টি শাখা ও ৬৯৮টি উপশাখা। অনেক এলাকায় একাধিক শাখা থাকায় সেগুলোকে পুনর্বিন্যাস করা হবে। সুবিধাজনক শাখা রাখা হবে এবং বাকি শাখাগুলো অন্য এলাকায় স্থানান্তর করা হবে যাতে ব্যাংকটির কার্যক্রম লাভজনক হয়। একইভাবে, কাছাকাছি অবস্থিত শাখাগুলো সমন্বয় করে কার্যকর অবস্থানে আনা হবে।
বর্তমানে পাঁচ ব্যাংকের পাঁচজন সিইও আছেন। তবে নতুন ব্যাংকে থাকবেন একজন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, যিনি নতুনভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত হবেন। বিদ্যমান কোনো এমডি ওই পদে যেতে পারবেন না। তবে নিচের স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছাঁটাই করা হবে না, প্রয়োজনে তাদের পদ বা কর্মস্থলে পরিবর্তন আনা হতে পারে।
উদ্যোক্তাদের সব শেয়ার বাজেয়াপ্ত করা হবে, কারণ ব্যাংকগুলোর নিট সম্পদ ঋণাত্মক এবং শেয়ারের বিপরীতে কোনো সম্পদ অবশিষ্ট নেই। বরং তারা লোকসানে রয়েছে। তাই উদ্যোক্তারা কোনো ক্ষতিপূরণ পাবেন না। তবে সাধারণ শেয়ারহোল্ডারদের আংশিক ক্ষতিপূরণ দেওয়া হতে পারে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক তথ্য সংগ্রহ করছে।
অন্যদিকে, আমানতকারীদের অর্থ ফেরত দেওয়ার বিষয়ে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে সাময়িক মোরাটোরিয়াম আরোপ হতে পারে, যার ফলে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য আমানতকারীরা নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে অর্থ তুলতে পারবেন। তবে এটি সাময়িক ব্যবস্থা। কারণ সরকারি মালিকানায় নতুন ব্যাংক গঠনের পর গ্রাহকদের আস্থা বাড়বে এবং নতুন আমানতের প্রবাহ বৃদ্ধি পাবে। সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে নতুন ব্যাংকে আমানত রাখতে উৎসাহিত করা হবে যাতে দ্রুত তারল্য সংকট কেটে যায়।
প্রাতিষ্ঠানিক আমানতকারীদের ক্ষেত্রেও সমাধান রাখা হয়েছে। যেসব প্রাতিষ্ঠানিক গ্রাহকের বিপুল অঙ্কের অর্থ ফেরত দেওয়া যাচ্ছে না, তাদের নতুন ব্যাংকের শেয়ার প্রদান করা হবে। যেহেতু ব্যাংকটি সরকারি মালিকানায় থাকবে, তাই তারা এ শেয়ার নিতে আগ্রহী হবেন বলে ধারণা করছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
-রাফসান
ফাউন্ডেশনাল ইলেকশন সামনে: জুলাই সনদ বাস্তবায়নে জোর দিলেন ড. ইউনূস
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, নতুন সরকারের দায়িত্ব শুধু নির্বাচন আয়োজন বা বিচারকাজের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়; সমান গুরুত্ব দিতে হবে সংস্কার কার্যক্রম ও জুলাই সনদের বাস্তবায়নকে। তাঁর মতে, অন্তর্বর্তী সরকারের তিনটি প্রধান ম্যান্ডেটের অন্যতম হচ্ছে সংস্কার, যা ভবিষ্যতের জন্য পথনির্দেশক হবে।
বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশনের বৈঠকে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বৈঠকে রাজনৈতিক দলগুলোর দেওয়া প্রস্তাবনা এবং কমিশনের সুপারিশ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। বৈঠক শেষে জানানো হয়, কমিশন খুব শিগগির তাদের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন অন্তর্বর্তী সরকারের হাতে জমা দেবে।
ড. ইউনূস বলেন, আগামী ফেব্রুয়ারির জাতীয় নির্বাচন বাংলাদেশের জন্য একটি ফাউন্ডেশনাল ইলেকশন। এটি শুধু সাধারণ ভোট নয়, বরং আগামীর বাংলাদেশ কোন পথে এগোবে তা নির্ধারণের অন্যতম মোড় ঘোরানো ঘটনা। তাই নির্বাচনকে সামনে রেখে মৌলিক সংস্কারগুলো দ্রুত সম্পন্ন করতে হবে। তিনি স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেন, ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচন আয়োজনের বিকল্প কোনো পথ নেই।
জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে বৈঠকে জানানো হয়, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের জন্য ইতিমধ্যেই ছয় সদস্যবিশিষ্ট কমিটি প্রস্তাবনা তৈরি করেছে। এসব প্রস্তাব বৈঠকে উপস্থাপন করা হয়। কমিশন আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আবারও বৈঠকে বসবে, যাতে বিষয়টি সামনে এগিয়ে নেওয়া যায়।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. মো. আইয়ুব মিয়া এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার। এছাড়া অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, আইনবিদ আসিফ নজরুল, পরিবেশবিদ সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমানও বৈঠকে যোগ দেন।
ড. ইউনূসের বক্তব্য ও কমিশনের আলোচনার প্রেক্ষাপটে স্পষ্ট, জুলাই সনদ বাস্তবায়ন এখন জাতীয় অগ্রাধিকারের তালিকায় শীর্ষে উঠে এসেছে। নির্বাচন, বিচার ও সংস্কার—এই তিন ম্যান্ডেট সমান্তরালভাবে বাস্তবায়ন করতে পারলেই অন্তর্বর্তী সরকারের গ্রহণযোগ্যতা এবং আগামীর বাংলাদেশ নতুন দিগন্তে পৌঁছাবে।
জুলাই সনদ বাস্তবায়নে রাজনৈতিক দলের অঙ্গীকার জরুরি: বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, রাজনৈতিক দলগুলোকেই জুলাই সনদের সমস্ত সুপারিশ বাস্তবায়নে অঙ্গীকারবদ্ধ থাকতে হবে। তাঁর মতে, এই সনদে অন্তর্ভুক্ত প্রস্তাবগুলোই ভবিষ্যতে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থার ভিত্তি শক্তিশালী করার প্রধান নির্দেশনা হতে পারে।
বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, বিএনপি মনে করে অন্তর্বর্তী সরকার সাংবিধানিকভাবে গঠিত হয়েছে। তবে দলটি আহ্বান জানিয়েছে, সংবিধান নিয়ে কোনো প্রশ্ন ওঠে এমন কোনো সিদ্ধান্ত বা পদক্ষেপ না নিতে।
সালাহউদ্দিন আহমেদ জানান, ইতোমধ্যে ২৯টি রাজনৈতিক দল লিখিত মতামত জমা দিয়েছে। এর মধ্যে নির্বাহী আদেশ, অধ্যাদেশ জারি এবং অফিস আদেশসহ ছয় ধরনের মতামত পাওয়া গেছে। তিনি আরও বলেন, সংবিধান সংশোধনের জন্য ১৯টি মৌলিক বিষয় চিহ্নিত করা হয়েছে, যা ভবিষ্যতে রাজনৈতিক ঐকমত্যের ভিত্তিতে বাস্তবায়ন করতে হবে।
এর আগে সকালে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে এক গোলটেবিল আলোচনায় অংশ নেন বিএনপির এই নেতা। সেখানে তিনি বলেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে একটি সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন করা জাতির জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। তাঁর মতে, নির্বাচন কমিশন যে রোডম্যাপ ঘোষণা করেছে, সে অনুযায়ী কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। সরকারের ইতিবাচক কিছু অর্জন থাকলেও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে ব্যর্থ হলে সেই অর্জনের মূল্য থাকবে না অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য।
তিনি স্পষ্ট করে বলেন, শুধুমাত্র নির্বাচিত জাতীয় সংসদই সংবিধান সংশোধনের অনুমোদন দিতে পারে। ভিন্ন কোনো প্রক্রিয়ায় গেলে তা আদালতে চ্যালেঞ্জ হতে পারে এবং গণতান্ত্রিক বৈধতা হারানোর ঝুঁকি তৈরি হবে।
জাতীয় পরিচয়পত্র হারালে আর জিডি করতে হবে না: ইসি
জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) হারানোর ক্ষেত্রে আর জেনারেল ডায়েরি (জিডি) করতে হবে না বলে আজ এক বিজ্ঞপ্তিতে নিশ্চিত করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
ইসির এনআইডি উইংয়ের সহকারী পরিচালক (ভ্যালিড অ্যান্ড ভেরিফাই) মোহাম্মদ সরওয়ার হোসেন স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিটি মঙ্গলবার জারি করা হয়। এতে বলা হয়, প্রথম এনআইডি হারালে দ্বিতীয় এনআইডি পেতে জিডি জমা দেওয়ার শর্ত আর থাকছে না। এই সিদ্ধান্তের ফলে নাগরিকদের জন্য এনআইডি সেবা হবে আরও সহজ ও ঝামেলামুক্ত।
এনআইডি সংশোধন ক্র্যাশ প্রোগ্রামের আওতায় চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে ৯ লাখ ৭ হাজার ৬৬২টি সংশোধন আবেদন নিষ্পত্তি করেছে ইসি। একই সময়ে মোট ৯ লাখ ৮৪ হাজার ৩৫৬টি আবেদন জমা পড়েছিল।
ইসি সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ বলেন, এই উদ্যোগ নাগরিকদের এনআইডি সংশোধন সংক্রান্ত ভোগান্তি উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়েছে এবং সেবার গতি ও মান বাড়িয়েছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, এই নতুন নীতি নাগরিকদের দ্রুত এনআইডি পুনঃপ্রাপ্তি নিশ্চিত করবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জিডি বাধ্যবাধকতা তুলে নেওয়ায় এনআইডি হারানোর পর নাগরিকদের সময় ও খরচ দুটোই বাঁচবে। তাছাড়া, প্রশাসনিক প্রক্রিয়া সহজ হওয়ায় সেবা গ্রহণকারীর সংখ্যা আরও বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।
-নাজমুল হোসেন
কর ফাঁকি তদন্তে শেখ হাসিনার ব্যাংক লকার সিলগালা
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) অধীনস্থ সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স সেল (সিআইসি) আজ রাজধানীর মতিঝিল একটি শাখায় বহিষ্কৃত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে থাকা একটি ব্যাংক লকার নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে।
সকালে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে সিআইসি এ অভিযান চালায় বলে নিশ্চিত করেছেন ব্যাংকের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা। তিনি জানান, বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালা অনুযায়ী পরবর্তী আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে লকারটি উন্মুক্ত করা হবে।
এনবিআরের এই পদক্ষেপ এসেছে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে কর ফাঁকির অভিযোগে শুরু হওয়া বিস্তৃত তদন্তের অংশ হিসেবে। গণঅভ্যুত্থানের পর তিনি ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর থেকেই কর কর্তৃপক্ষ তার আর্থিক কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করছে।
ইতোমধ্যে এনবিআর শেখ হাসিনার ব্যাংক হিসাবগুলোও ফ্রিজ করেছে। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, কর ফাঁকির পাশাপাশি সম্পদের উৎস সম্পর্কেও তদন্ত চলছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই পদক্ষেপ বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে, কারণ এটি উচ্চপর্যায়ের আর্থিক জবাবদিহির নতুন অধ্যায় সূচনা করেছে।
এনবিআর সূত্র জানিয়েছে, তদন্তের স্বচ্ছতা বজায় রাখতে প্রতিটি ধাপ বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা মেনে সম্পন্ন করা হচ্ছে। কর ফাঁকি ও অঘোষিত সম্পদ উদ্ধারের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় রাজস্ব আহরণ এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করাই এর মূল লক্ষ্য।
-সুত্রঃবি এস এস
কাপ্তাই বাঁধে ১৬ গেট খোলা: কর্ণফুলীতে তীব্র পানি প্রবাহ
কাপ্তাই হ্রদের পানির স্তর হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় অতিরিক্ত পানি ছাড়তে কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ বাঁধের ১৬টি স্পিলওয়ে গেট একযোগে খুলে দিয়েছে। ফলে বিপুল পরিমাণ পানি এখন কর্ণফুলি নদীতে প্রবাহিত হচ্ছে এবং এর প্রভাবে রাঙামাটি শহর ও আশপাশের নিম্নাঞ্চল ইতোমধ্যেই প্লাবিত হতে শুরু করেছে।
জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মাহমুদ হাসান জানান, বুধবার ভোররাত ৩টায় প্রতিটি গেট সাড়ে তিন ফুট উঁচু করে খোলা হয়। বর্তমানে প্রতি সেকেন্ডে প্রায় ৬৩ হাজার কিউসেক পানি কর্ণফুলীতে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, বুধবার সকাল ৮টায় কাপ্তাই হ্রদের পানির উচ্চতা রেকর্ড করা হয় ১০৮ দশমিক ৯০ ফুট মীন সি লেভেল (এমএসএল)। অথচ হ্রদের সর্বোচ্চ ধারণক্ষমতা ১০৯ ফুট এমএসএল। পানির স্তর যাতে বিপদসীমা অতিক্রম না করে, সেজন্যই গেটগুলো খুলে দেওয়া হয়েছে। তবে পাহাড়ি ঢলের পানির প্রবাহ আরও বাড়লে পানির নিষ্কাশনের মাত্রাও সমন্বয় করা হবে।
এদিকে, বাড়তি পানির প্রবাহে রাঙামাটি শহরের বেশ কয়েকটি নিচু এলাকা এবং আশপাশের উপজেলাগুলো আংশিকভাবে জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, হ্রদের পানি বাড়তে থাকায় অনেক পরিবার ঘরবাড়ি ও জমিজমা ডুবে যাওয়ার শঙ্কায় রয়েছেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বর্ষা মৌসুমে হঠাৎ পাহাড়ি ঢল নামলে কাপ্তাই হ্রদের পানির উচ্চতা দ্রুত বেড়ে যায়। এ সময় বাঁধের নিরাপত্তা রক্ষায় ও নিচের দিকে নদীর প্রবাহ নিয়ন্ত্রণে রাখতে স্পিলওয়ে গেট খোলা ছাড়া বিকল্প থাকে না। তবে অতিরিক্ত পানি প্রবাহে পার্বত্য চট্টগ্রামের নিম্নাঞ্চলের মানুষের ভোগান্তি বাড়ে।
-সুত্রঃ বি এস এস
পাঠকের মতামত:
- জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতি নিয়ে সংকট
- জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভোট গণনা নিয়ে অনিশ্চয়তা
- গণপরিষদ বা হ্যাঁ-না ভোটের দাবি এবি পার্টির ফুয়াদের
- বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচন নিয়ে ভারতের জটিল সমীকরণ
- ঢাকা ও বিভাগীয় শহরের নামাজের সময় ঘোষণা
- বায়তুল মোকাররমে শুরু হলো মাসব্যাপী ইসলামি বইমেলা
- কুরআন, উপহার ও দিকনির্দেশনা: ভিন্নধর্মী নবীনবরণ বেরোবিতে
- বাংলাদেশে চীনা বিনিয়োগে রেকর্ড প্রবৃদ্ধি
- লন্ডনে মাহফুজ আলমকে লক্ষ্য করে হামলার চেষ্টা
- নেপালে অন্তর্বর্তী সরকার, নেতৃত্বে সাবেক প্রধান বিচারপতি সুশীলা কারকি
- উন্নয়ন, নিরাপত্তা ও ভূরাজনীতি: জাপান–বাংলাদেশ সম্পর্কের ভবিষ্যৎ সমীকরণ
- এফটির তথ্যচিত্র: শেখ হাসিনার আমলে বাংলাদেশের হারানো বিলিয়ন ডলারের গল্প
- ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে জাতীয় নির্বাচন: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব
- হাসিনা, রাজাপাকসে, শর্মা–এর পর কি এবার মোদি? মণিপুরের অস্থিরতায় দিল্লিতে কাঁপন
- ডাকসু নির্বাচন কি জাতীয় রাজনীতির পূর্বাভাস? জানালেন পিনাকী ভট্টাচার্য
- ঢাকার বাজারে নিত্যপণ্যের দাম: কোন পণ্য বেড়েছে, কোথায় মিলছে স্বস্তি
- জাহাঙ্গীরনগরে রাতভর ভোট গণনা, বিক্ষোভ ও বর্জনে উত্তপ্ত ক্যাম্পাস
- নেপালে রক্তক্ষয়ী বিক্ষোভ: নিহত ৩৪, আহত দেড় হাজারের বেশি
- জাকসু ভোট গণনায় ট্র্যাজেডি: দায়িত্ব পালনে এসে সহকারী অধ্যাপকের মৃত্যু
- UNHRC-তে মুখোমুখি ভারত–সুইজারল্যান্ড, পাকিস্তানকে আক্রমণ দিল্লির
- দুর্বল পাঁচ ব্যাংক একীভূতকরণ, উদ্যোক্তাদের সব শেয়ার বাজেয়াপ্ত
- জাকসু নির্বাচনী দায়িত্বে শিক্ষকের মৃত্যু
- লিটনের ব্যাটে স্মার্ট জয়: হংকংকে উড়িয়ে দিল বাংলাদেশ
- ফাউন্ডেশনাল ইলেকশন সামনে: জুলাই সনদ বাস্তবায়নে জোর দিলেন ড. ইউনূস
- ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে ঝড়ের উত্থান: ২৮২ শেয়ার দাম বাড়ল, লেনদেনে রেকর্ড ৭৭৮ কোটি টাকা!
- জুলাই সনদ বাস্তবায়নে রাজনৈতিক দলের অঙ্গীকার জরুরি: বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন
- উটাহে চার্লি কার্ক হত্যা: রাজনৈতিক সহিংসতার নতুন ধাক্কায় আমেরিকার গণতন্ত্র ও নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা
- শিবিরের অভিযোগ, ছাত্রদলের বর্জন—প্রশ্নের মুখে ৩৩ বছর পর জাকসু নির্বাচন
- শির্কের ভয়াবহতা বুঝতে সহজ উদাহরণ
- দিনের বেলা ভাতঘুম: উপকারী নাকি ক্ষতিকর?
- সপ্তাহের শেষ দিনে ডিএসইতে সূচকের মিশ্র প্রতিক্রিয়া
- জাকসুতে নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন সাদীর
- গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সহযোগী চার্লি কার্ক
- ডাকসুতে শিবিরের নিরঙ্কুশ জয়ের পেছনে যত কৌশল
- অস্থির নেপাল থেকে দেশে ফিরছে বাংলাদেশ ফুটবল দল
- নেপালে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের জন্য প্রধান পছন্দ সুশিলা কার্কি, বলছে ‘জেন জেড’ আন্দোলন
- মার্কিন রাজনীতিতে নতুন বিভাজনের আশঙ্কা
- নেপালে রাজনৈতিক শূন্যতা: সেনা তত্ত্বাবধানে উত্তাল দেশ, নতুন নেতৃত্ব কে?
- ৩৩ বছর পর জাকসু নির্বাচন: নিরাপত্তা, অনিয়ম ও বিতর্কে সরগরম ক্যাম্পাস
- ১০ সেপ্টেম্বর শেয়ারবাজারের সার্বিক চিত্র ও বিশ্লেষণ
- ডিএসই ব্লক মার্কেট: বড় লেনদেনে যেসব কোম্পানি
- ১০ সেপ্টেম্বর ডিএসইতে লেনদেনের শীর্ষ ১০ শেয়ার
- জলবায়ু ইস্যুতে গণমাধ্যমের দায়িত্ব বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন পিকেএসএফ চেয়ারম্যান
- ১০ সেপ্টেম্বর ডিএসইতে দর পতনের শীর্ষ ১০ শেয়ার
- ৪৭তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষা: নিরাপত্তায় ১২০ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ
- ১০ সেপ্টেম্বর ডিএসইতে দর বৃদ্ধির শীর্ষ ১০ শেয়ার
- ডেঙ্গুতে আরও দুইজনের মৃত্যু, একদিনে আক্রান্ত ৬২৫
- ভাঙ্গায় ১১ ঘণ্টা অবরোধ শেষে ফের নতুন ঘোষণা
- জাতীয় পরিচয়পত্র হারালে আর জিডি করতে হবে না: ইসি
- ডাকসুতে জয়ীদের উদ্দেশ্যে জামায়াত আমিরের বার্তা
- এফটির তথ্যচিত্র: শেখ হাসিনার আমলে বাংলাদেশের হারানো বিলিয়ন ডলারের গল্প
- উন্নয়ন, নিরাপত্তা ও ভূরাজনীতি: জাপান–বাংলাদেশ সম্পর্কের ভবিষ্যৎ সমীকরণ
- ডাকসু নির্বাচনের ভোট শেষ, ফলাফলের আগে অস্থির ঢাবি—পাল্টাপাল্টি অভিযোগে উত্তপ্ত পরিবেশ
- ডিএসইতে আজকের লেনদেন শেষে টপ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- নেপালে অন্তর্বর্তী সরকার, নেতৃত্বে সাবেক প্রধান বিচারপতি সুশীলা কারকি
- গোয়ালন্দে কবর অবমাননার ঘটনায় অন্তর্বর্তী সরকারের তীব্র নিন্দা
- জুলাই সনদ বাস্তবায়নে রাজনৈতিক দলের অঙ্গীকার জরুরি: বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন
- ডাকসু নির্বাচন: ৪৭১ প্রার্থী, ৩৯ হাজার ভোটার, টানটান নিরাপত্তায় উৎসবমুখর ভোটযুদ্ধ
- নেপালে অস্থিরতা: বাংলাদেশি নাগরিকদের ঘরে থাকার নির্দেশ দূতাবাসের
- প্রথমবার আস্থা ভোটে প্রধানমন্ত্রী বিদায়, ইতিহাস গড়ল ফ্রান্স
- লিটনের ব্যাটে স্মার্ট জয়: হংকংকে উড়িয়ে দিল বাংলাদেশ
- শেখ হাসিনার উত্তরাধিকার প্রশ্ন: আওয়ামী লীগের সামনে এক অমীমাংসিত সংকট
- উটাহে চার্লি কার্ক হত্যা: রাজনৈতিক সহিংসতার নতুন ধাক্কায় আমেরিকার গণতন্ত্র ও নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা
- ফাউন্ডেশনাল ইলেকশন সামনে: জুলাই সনদ বাস্তবায়নে জোর দিলেন ড. ইউনূস
- জাকসু নির্বাচন: প্রার্থীদের জন্য আজ বাধ্যতামূলক ডোপ টেস্ট