উটাহে চার্লি কার্ক হত্যা: রাজনৈতিক সহিংসতার নতুন ধাক্কায় আমেরিকার গণতন্ত্র ও নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা

যুক্তরাষ্ট্রেরউটাহভ্যালিইউনিভার্সিটি (UVU) ক্যাম্পাসেপ্রকাশ্য অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেওয়ার সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন কনজারভেটিভ অ্যাক্টিভিস্ট ও টার্নিং পয়েন্ট ইউএসএ–র সহ–প্রতিষ্ঠাতা চার্লি কার্ক (৩১)। তিনি সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক মিত্র হিসেবেও পরিচিত ছিলেন। বুধবার দুপুরে ওরেম শহরে আউটডোর এক প্রশ্নোত্তর পর্বে অংশ নেওয়ার সময় ছাদের দিক থেকে ছোঁড়া একক গুলি তাঁর গলায় লাগে। ভিডিও ফুটেজে তাঁকে মঞ্চে চেয়ার থেকে পড়ে যেতে দেখা যায় এবং দর্শকেরা আতঙ্কে ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়।
ঘটনার পরপরই বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস খালি করে দেওয়া হয় এবং ক্লাস স্থগিত করা হয়। ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই), অঙ্গরাজ্য ও স্থানীয় আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলো যৌথভাবে হামলাকারীকে খুঁজে বের করার জন্য মানবহান্ট চালাচ্ছে। ডোর–টু–ডোর তল্লাশি চলছে এবং জনসাধারণের কাছে ছবি বা ভিডিওসহ যেকোনো তথ্য সরবরাহের আহ্বান জানানো হয়েছে। প্রাথমিকভাবে দুজনকে আটক করা হলেও পরে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়। ফলে হামলাকারী এখনও পলাতক, যদিও তদন্তকারীরা নিশ্চিত হয়েছেন যে এটি একক হামলাকারীর কাজ ছিল।
উটাহ গভর্নর স্পেন্সার কক্স ঘটনাটিকে সরাসরি “টার্গেটেড অ্যাটাক” হিসেবে বর্ণনা করেছেন এবং অপরাধীর জন্য সর্বোচ্চ শাস্তির হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তিনি বলেন, “আমরা হামলাকারীকে খুঁজে বের করব, বিচার করব এবং সর্বোচ্চ আইনি শাস্তি নিশ্চিত করব।” এফবিআই এবং অন্যান্য ফেডারেল সংস্থা যৌথভাবে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে। নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ওপেন–এয়ার ক্যাম্পাস ইভেন্টে ছাদ থেকে এমন আক্রমণ ঠেকানো কঠিন, যা ভবিষ্যতে নিরাপত্তা প্রটোকল নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে।
ঘটনার পর রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট—উভয় শিবির থেকেই নিন্দা জানানো হয়েছে। সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শোক প্রকাশ করে বলেন, চার্লি কার্ক ছিলেন “একজন মহান ও কিংবদন্তি মানুষ”। প্রেসিডেন্টের নির্দেশে যুক্তরাষ্ট্রে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করা হয়েছে। ডেমোক্র্যাট নেতারাও রাজনৈতিক সহিংসতার কঠোর নিন্দা করেছেন এবং এটিকে গণতন্ত্রের জন্য গুরুতর হুমকি হিসেবে উল্লেখ করেছেন। আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও শোক ও সমবেদনা এসেছে। যুক্তরাজ্য, কানাডা, ইতালি ও ইসরায়েলের শীর্ষ নেতারা কার্কের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু তাঁকে “ইসরায়েলের প্রকৃত বন্ধু” আখ্যা দিয়েছেন।
চার্লি কার্ক মাত্র ১৮ বছর বয়সে টার্নিং পয়েন্ট ইউএসএ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এর মাধ্যমে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসগুলোতে কনজারভেটিভ তরুণদের সংগঠিত করেছিলেন। সংগঠনটি বর্তমানে প্রায় চার হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সক্রিয় বলে দাবি করে। ২০১৬ সালের পর তিনি ট্রাম্প রাজনীতির অন্যতম মুখপাত্রে পরিণত হন এবং ধারাবাহিকভাবে টেলিভিশন, পডকাস্ট ও ক্যাম্পাস ট্যুরের মাধ্যমে কনজারভেটিভ ভোটার ও তরুণদের প্রভাবিত করেছেন।
এই হত্যাকাণ্ড যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক সহিংসতা ও প্রকাশ্য ইভেন্টের নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে বিতর্ক উসকে দিয়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে একাধিক উচ্চ–প্রোফাইল রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনার পর এবার UVU–তে কার্কের মৃত্যুর ঘটনায় প্রশ্ন উঠছে—বিশ্ববিদ্যালয় ও জনসমাবেশে ফ্রি স্পিচ–এর নিরাপত্তা কীভাবে আরও কার্যকরভাবে নিশ্চিত করা যায়। বর্তমানে তদন্তকারীরা ব্যালিস্টিক্স, সিসিটিভি ফুটেজ ও ডিজিটাল ফরেনসিকস বিশ্লেষণ করছেন এবং জনসাধারণের সহযোগিতা প্রত্যাশা করছেন।
গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সহযোগী চার্লি কার্ক
যুক্তরাষ্ট্রে ডানপন্থি রাজনীতির অন্যতম পরিচিত মুখ এবং সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার চার্লি কার্ক (Charlie Kirk) গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন। বুধবার স্থানীয় সময় উটা ভ্যালি ইউনিভার্সিটির প্রাঙ্গণে ভাষণ দেওয়ার সময় এ হামলার ঘটনা ঘটে।
সাক্ষীদের বর্ণনা ও ছড়িয়ে পড়া ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, মঞ্চে উপস্থিত থেকে তাবুর নিচে বসা অবস্থায় হঠাৎ গুলির শব্দে চেয়ার থেকে লুটিয়ে পড়েন চার্লি কার্ক। দর্শকদের মধ্যে সঙ্গে সঙ্গে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এবং মুহূর্তেই তারা প্রাণ বাঁচাতে দৌড়াতে শুরু করেন। পরে পুলিশ নিশ্চিত করে, তার গলায় গুলি লেগেছিল এবং ঘটনাস্থলেই মৃত্যু ঘটে।
এখনও হামলাকারীকে শনাক্ত বা আটক করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ঘটনাস্থলে ব্যাপক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে এবং নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে পুরো এলাকা জুড়ে। কর্তৃপক্ষ বলছে, হামলার প্রকৃত কারণ ও উদ্দেশ্য তদন্ত করা হচ্ছে।
ঘটনার পরপরই উটা’র রিপাবলিকান সিনেটর মাইক লি সামাজিক মাধ্যমে লিখেছেন, “আমি পরিস্থিতির ওপর নিবিড়ভাবে নজর রাখছি। চার্লি কার্ক এবং সেখানে উপস্থিত ছাত্রছাত্রীদের নিরাপত্তা ও শান্তির জন্য প্রার্থনা করুন।”
চার্লি কার্কের মৃত্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক অঙ্গনে গভীর শোক নেমে এসেছে। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার সামাজিক মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে শোক প্রকাশ করে লিখেছেন, “চার্লি যুক্তরাষ্ট্রের তরুণ প্রজন্মকে বোঝার ক্ষেত্রে ছিলেন অসাধারণ। তিনি শুধু আমার কাছে প্রিয় ছিলেন না, বরং অত্যন্ত শ্রদ্ধেয় একজন মানুষ। মেলানিয়া ও আমি তার স্ত্রী এরিকা এবং পুরো পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাই।”
-রাফসান
নেপালে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের জন্য প্রধান পছন্দ সুশিলা কার্কি, বলছে ‘জেন জেড’ আন্দোলন
প্রচণ্ড বিক্ষোভে প্রধানমন্ত্রীকে ক্ষমতাচ্যুত করা ও সংসদ ভবনে অগ্নিসংযোগের পর রাজনৈতিক শূন্যতায় পড়েছে নেপাল। এই সংকটময় সময়ে দেশটির সাবেক প্রধান বিচারপতি ও প্রথম নারী সুপ্রিম কোর্ট প্রধান সুশিলা কার্কিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নেতৃত্বে দেখতে চাইছে তরুণদের নেতৃত্বাধীন আন্দোলন ‘জেন জেড’-এর একটি অংশ।
বুধবার সেনাপ্রধান জেনারেল অশোক রাজ সিগদেল গুরুত্বপূর্ণ অংশীদারদের সঙ্গে বৈঠক করেন এবং ‘জেন জেড’ প্রতিনিধিদের সঙ্গেও আলোচনা করেন বলে জানায় সেনাবাহিনী। ৩০ মিলিয়ন জনসংখ্যার হিমালয়কন্যা দেশটিতে দুই দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ সহিংসতার পর সেনাবাহিনী আইন-শৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠার চেষ্টা চালাচ্ছে।
বিক্ষোভকারীদের প্রতিনিধি রক্ষ্যা বাম বলেন, “সুশিলা কার্কির নামই এখন অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্বের জন্য সবচেয়ে আলোচিত। এখন রাষ্ট্রপতির সিদ্ধান্তের অপেক্ষা।” তিনি আরও জানান, সেনাপ্রধানের সঙ্গে আলোচনায় শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষার বিষয়টি গুরুত্ব পেয়েছে।
৭৩ বছর বয়সী সুশিলা কার্কি এএফপিকে বলেন, “বর্তমান সংকট মোকাবিলায় বিশেষজ্ঞদের একসঙ্গে বসা জরুরি। সংসদ এখনো বহাল রয়েছে এবং সেখান থেকেই সমাধান বের করতে হবে।”
তবে আন্দোলনের ভেতরেই নেতৃত্ব নিয়ে মতপার্থক্য স্পষ্ট। ডিসকর্ড প্ল্যাটফর্মে হাজারো তরুণ ভার্চুয়াল আলোচনায় যোগ দিয়ে নিজেদের এজেন্ডা ও সম্ভাব্য নেতৃত্ব নিয়ে তর্ক-বিতর্ক করেছেন। সাংবাদিক প্রণয় রানা বলেন, “এ ধরনের বিকেন্দ্রীভূত আন্দোলনে মতবিরোধ থাকা স্বাভাবিক। এখানে নানা স্বার্থ ও কণ্ঠস্বর কাজ করছে।”
এদিকে, বৃহস্পতিবারও সেনারা রাজধানীর রাস্তায় টহল দিয়েছে। পরিস্থিতি আপাতত শান্ত থাকলেও শহরের বিভিন্ন জায়গায় চেকপোস্ট বসানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত সোমবার সরকার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিষেধাজ্ঞা দিলে এবং দুর্নীতির অভিযোগে ক্ষুব্ধ হয়ে রাজধানী কাঠমাণ্ডুতে তরুণরা বিক্ষোভ শুরু করে। পরে আন্দোলন সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ে এবং সহিংস রূপ নেয়। সরকার কঠোর দমন অভিযান চালালে অন্তত ১৯ জন নিহত হয়। এরপর ক্রুদ্ধ জনতা সরকারি ভবনগুলোতে অগ্নিসংযোগ করে, যার পর প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগে বাধ্য হন।
-সুত্রঃ এ এফ পি
মার্কিন রাজনীতিতে নতুন বিভাজনের আশঙ্কা
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী ডানপন্থি কর্মী এবং টার্নিং পয়েন্ট ইউএসএ-এর প্রতিষ্ঠাতা চার্লি কার্ককে উটাহ বিশ্ববিদ্যালয়ে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় দেশটির রাজনৈতিক অঙ্গন উত্তাল হয়ে উঠেছে। সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পসহ রিপাবলিকান নেতারা কার্ককে “মার্কিন রক্ষণশীল মূল্যবোধের শহীদ” হিসেবে অভিহিত করেছেন।
৭৯ বছর বয়সী ট্রাম্প তাঁর সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ট্রুথ সোশ্যাল-এ দেওয়া ভিডিও বার্তায় বলেন, চার্লি কার্ক স্বাধীনতা, গণতন্ত্র ও আমেরিকান জনগণের জন্য লড়াই করেছেন। তাঁর মৃত্যু সত্য ও স্বাধীনতার জন্য এক ধরনের ত্যাগ। কার্কের মৃত্যুতে শোক জানিয়ে রক্ষণশীল মহলে নতুন করে সংগঠিত হওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। জনপ্রিয় ইনফ্লুয়েন্সার জ্যাক পোসোবিয়েক বলেন, কার্ক যে আন্দোলন শুরু করেছিলেন, তা থামবে না। স্টিভ ব্যানন বলেন, এটি এক ধরনের যুদ্ধক্ষেত্রের ক্ষতি, তাই এখন আরও দৃঢ় হওয়ার সময়।
কার্কের মৃত্যু তরুণ রক্ষণশীলদেরও নড়েচড়ে বসিয়েছে। ব্রেইটবার্ট নিউজের সাংবাদিক ম্যাট বয়েল বলেছেন, আমেরিকায় নতুন আগুন জ্বলে উঠেছে, তরুণরা এই হত্যাকাণ্ড চুপচাপ মেনে নেবে না। পডকাস্টার বেনি জনসন এক্স-এ লিখেছেন, কার্ক একজন আমেরিকান শহীদ। হারিটেজ ফাউন্ডেশনের প্রেসিডেন্ট কেভিন রবার্টস বলেন, এই ঘটনা দেশের জন্য এক মোড় ঘোরানোর মুহূর্ত।
এদিকে হত্যার তদন্ত চলছে। পুলিশ এক সন্দেহভাজনকে আটক করলেও পরে ছেড়ে দিয়েছে। এখনো মূল হত্যাকারী পলাতক। এর মধ্যেই ট্রাম্প ও তাঁর সমর্থকরা হত্যার জন্য রাজনৈতিক বামপন্থীদের দায়ী করেছেন। এলন মাস্ক এক্স-এ লিখেছেন, “বামপন্থীরা হত্যার দল।” ট্রাম্প বলেন, র্যাডিক্যাল বামদের সহিংসতায় বহু নিরপরাধ মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। অভিনেতা জেমস উডস আরও এক ধাপ এগিয়ে মন্তব্য করেছেন, “এটি বন্দুক সহিংসতা নয়, এটি ডেমোক্র্যাট সহিংসতা।”
রক্ষণশীল টিভি হোস্ট গ্রেগ গুটফেল্ড সতর্ক করে বলেছেন, যদি কেউ মনে করে এই হত্যাকাণ্ড আন্দোলনকে থামিয়ে দেবে, তবে তারা ভুল করছে। এর রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া ভয়াবহ হতে পারে। বিশ্লেষকদের মতে, এই হত্যাকাণ্ড মার্কিন রাজনীতিতে নতুন বিভাজন তৈরি করতে পারে এবং আসন্ন নির্বাচনে রিপাবলিকানদের আরও ঐক্যবদ্ধ করতে পারে।
-সুত্রঃ এ এফ পি
নেপালে রাজনৈতিক শূন্যতা: সেনা তত্ত্বাবধানে উত্তাল দেশ, নতুন নেতৃত্ব কে?
প্রাণঘাতী সহিংসতা, তীব্র বিক্ষোভ এবং প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগের পর নেপাল এক অনিশ্চিত রাজনৈতিক মোড়ে দাঁড়িয়ে। মঙ্গলবার শুরু হওয়া সহিংসতায় দেশটির পার্লামেন্ট ভবন পর্যন্ত অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এর পরপরই সেনাবাহিনী ক্ষমতার ভার নেয়। ৩ কোটি মানুষের এই হিমালয়ি দেশটি এখন প্রশ্নের মুখে—কে নেবে নেতৃত্ব, কেমন হবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার?
সেনা তত্ত্বাবধানে অস্থির পরিস্থিতি
সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল অশোক রাজ সিগডেল বুধবার গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং তরুণ প্রজন্মের প্রতিনিধি—যাদের Gen Z নামে অভিহিত করা হচ্ছে—এর সঙ্গে বৈঠক করেছেন। যদিও বৈঠকের বিস্তারিত জানানো হয়নি। সেনারা আপাতত শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব নিয়েছে, কিন্তু বিশ্লেষকদের মতে সেনা তত্ত্বাবধান দীর্ঘ হলে রাজনৈতিক বৈধতা প্রশ্নবিদ্ধ হবে।
সংবিধান ও অন্তর্বর্তী সমাধান
সংবিধান অনুযায়ী, ৮০ বছর বয়সী প্রেসিডেন্ট রামচন্দ্র পাউডেলকে বৃহত্তম দলের নেতাকে সরকার গঠনের আমন্ত্রণ জানাতে হবে। তবে বর্তমান রাজনৈতিক নেতৃত্ব কার্যত অদৃশ্য। সাবেক প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কি—যাকে সম্ভাব্য অন্তর্বর্তী নেতা হিসেবে দেখা হচ্ছে—বলেছেন,
“সব রাজনৈতিক দল ও বিশেষজ্ঞদের একসঙ্গে বসে সমাধান খুঁজে বের করতে হবে। পার্লামেন্ট এখনো বিদ্যমান, সেটিই হতে পারে সংলাপের মঞ্চ।”
কিন্তু সমস্যার গভীরতা শুধু প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগে সীমাবদ্ধ নয়। সংকটগোষ্ঠী ক্রাইসিস গ্রুপের বিশ্লেষক আশীষ প্রধানের ভাষায়,
“এবারের জনরোষ পুরো রাজনৈতিক শ্রেণির প্রতি। সাধারণ মানুষ কেবল একজন নেতাকে নয়, পুরো ব্যবস্থাকেই প্রত্যাখ্যান করছে।”
যুবশক্তির উত্থান
Gen Z নামের ব্যানারে তরুণরা বেকারত্ব, দুর্নীতি ও সুযোগের অভাবে ক্ষুব্ধ হয়ে রাস্তায় নেমেছে। সরকারের স্বল্পমেয়াদি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিষেধাজ্ঞা আন্দোলনের স্ফুলিঙ্গ হিসেবে কাজ করে। আন্দোলনের অন্যতম অনুপ্রেরণা কাঠমান্ডুর মেয়র, র্যাপার-থেকে-প্রকৌশলী বালেন্দ্র শাহ এবং যুব অধিকার সংগঠন হামি নেপালের নেতা সুধান গুরুং। তারা দাবি করছে, সহিংসতার জন্য তরুণরা দায়ী নয়; বরং আন্দোলনকে শান্তিপূর্ণ রাখাই তাদের লক্ষ্য।
সাংবাদিক প্রণয় রানা সতর্ক করে বলেন,
“যুব আন্দোলনকে ছায়ায় থাকা সুযোগসন্ধানীদের হাতে চলে যেতে দেওয়া যাবে না। এখন দরকার ঐক্যবদ্ধ পরিকল্পনা ও নেতৃত্ব।”
পুরনো প্রজন্মের পতন
কমিউনিস্ট পার্টির প্রবীণ নেতা ও চারবারের প্রধানমন্ত্রী কে.পি. শর্মা ওলি পদত্যাগের পর থেকে গা-ঢাকা দিয়েছেন। তাঁর সাবেক মিত্র ও পাঁচবারের প্রধানমন্ত্রী শের বাহাদুর দেউবাকেও দেখা যায়নি। দুই নেতার ক্ষমতা ভাগাভাগির চুক্তিও জনরোষে ভেসে গেছে।
রাজতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার সম্ভাবনা ক্ষীণ
২০০৮ সালে নেপাল রাজতন্ত্র বিলুপ্ত করে প্রজাতন্ত্রে রূপ নেয়। ক্ষমতাচ্যুত রাজা জ্ঞানেন্দ্র শাহের প্রতি কিছু জনসমর্থন ফিরে এলেও বিশ্লেষকরা মনে করছেন, তাঁর প্রত্যাবর্তনের সম্ভাবনা খুব কম। ক্রাইসিস গ্রুপ সতর্ক করে বলেছে,
“রাজতন্ত্র ফিরিয়ে আনা হলে তা স্বৈরতান্ত্রিক ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।”
-সুত্রঃ এ এফ পি
যুক্তরাষ্ট্রে আটক কোরীয় শ্রমিকদের দেশে ফেরাতে চার্টার্ড ফ্লাইট
যুক্তরাষ্ট্রে বৃহৎ পরিসরের অভিবাসন অভিযানে আটক হওয়া শতাধিক দক্ষিণ কোরীয় শ্রমিককে দেশে ফিরিয়ে আনতে বুধবার সিউল থেকে একটি চার্টার্ড বিমান ছাড়বে। কোরিয়ান এয়ার কর্তৃপক্ষ জানায়, তাদের বোয়িং ৭৪৭-৮আই উড়োজাহাজ সকাল ১১টায় (স্থানীয় সময়) সিউল থেকে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে যাত্রা করবে।
গত বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যে হুন্ডাই ও এলজি এনার্জি সলিউশনের যৌথ উদ্যোগে নির্মাণাধীন ৪.৩ বিলিয়ন ডলারের ব্যাটারি কারখানায় ব্যাপক অভিবাসন অভিযান চালানো হয়। এতে মোট ৪৭৫ জনকে আটক করা হয়, যাদের মধ্যে শতাধিক দক্ষিণ কোরীয় শ্রমিক রয়েছেন। ট্রাম্প প্রশাসনের অভিবাসনবিরোধী কঠোর অভিযানে এটাই একক স্থানে সবচেয়ে বড় ধরপাকড় বলে মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
ইতোমধ্যে দক্ষিণ কোরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী চো হিউন জরুরি বৈঠকে অংশ নিতে সোমবার ওয়াশিংটন গেছেন। তিনি আটক শ্রমিকদের বিষয়টিকে “গুরুতর পরিস্থিতি” আখ্যা দিয়ে দ্রুত ও নিরাপদ প্রত্যাবর্তনের আশ্বাস দিয়েছেন। সংসদ সদস্যদের তিনি জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে প্রাথমিকভাবে এমন একটি চুক্তি হয়েছে যাতে আটক শ্রমিকদের ওপর পাঁচ বছরের পুনঃপ্রবেশ নিষেধাজ্ঞার মতো শাস্তি আরোপ করা হবে না। তার ভাষায়, “আলোচনা ইতিবাচকভাবে এগোচ্ছে।”
ইয়োনহাপ সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে, কূটনৈতিক সূত্রের বরাত দিয়ে বলা হয়েছে যে, আটক শ্রমিকদের নিয়ে ফেরার ফ্লাইটটি যুক্তরাষ্ট্র থেকে বৃহস্পতিবার ভোর ৩টা ৩০ মিনিটে (স্থানীয় সময়) উড্ডয়ন করবে।
অভিবাসন বিশেষজ্ঞদের মতে, আটক দক্ষিণ কোরীয় শ্রমিকদের অনেকে এমন ভিসায় যুক্তরাষ্ট্রে ছিলেন যা সরাসরি নির্মাণ কাজে অংশ নেওয়ার অনুমতি দেয় না। এ কারণেই তারা অভিযানে ধরা পড়েন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
দক্ষিণ কোরিয়া যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ নিরাপত্তা মিত্র, একই সঙ্গে এশিয়ার চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতি ও প্রধান গাড়ি ও ইলেকট্রনিক্স উৎপাদনকারী দেশ। তাদের একাধিক কারখানা যুক্তরাষ্ট্রে স্থাপিত হয়েছে। এছাড়া শুল্কবিষয়ক আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগ আহ্বানেও সাড়া দিয়েছে সিউল। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই ঘটনার প্রভাব দুই দেশের অর্থনৈতিক সম্পর্কেও কিছুটা প্রতিফলিত হতে পারে।
-সুত্রঃ এ এফ পি
মাত্র ২৪ ঘণ্টায় নতুন প্রধানমন্ত্রী
প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ফ্রান্সের নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মনোনীত করেছেন সেবাস্তিয়ান লেকর্নুকে। ৩৯ বছর বয়সী এই তরুণ রাজনীতিবিদ এর আগে প্রতিরক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন এবং দীর্ঘদিন ধরেই প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁর ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে পরিচিত।
বিবিসি জানিয়েছে, আস্থা ভোটে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ফ্রাসোয়া বায়রো ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার মাত্র ২৪ ঘণ্টা পরই লেকর্নুর নাম ঘোষণা করা হয়। এ নিয়োগের মাধ্যমে ম্যাক্রোঁ তাঁর দ্বিতীয় মেয়াদে পঞ্চম প্রধানমন্ত্রী পেলেন।
এলিসি প্রাসাদের এক বিবৃতিতে জানানো হয়, আসন্ন বাজেট অনুমোদন নিশ্চিত করতে লেকর্নুকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সমঝোতার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। বাজেট পরিকল্পনা নিয়ে ব্যাপক মতভেদ ও বিরোধিতা সৃষ্টি হওয়ায় দেশ রাজনৈতিক অচলাবস্থার মুখে পড়ে।
এরই প্রেক্ষাপটে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ফ্রাসোয়া বায়রো আকস্মিকভাবে আস্থাভোট আহ্বান করেন। তবে পার্লামেন্টে ৩৬৪-১৯৪ ভোটে পরাজিত হয়ে তিনি ক্ষমতা হারান।
পরাজয়ের পর বায়রো প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁর কাছে গিয়ে পদত্যাগপত্র জমা দেন। তার এই পদত্যাগই সেবাস্তিয়ান লেকর্নুর জন্য প্রধানমন্ত্রীর আসনে বসার পথ প্রশস্ত করে। দায়িত্ব পাওয়ার পর লেকর্নু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে লেখেন, প্রেসিডেন্ট তাকে একটি স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছেন ফ্রান্সের স্বাধীনতা ও শক্তি রক্ষা করা, জনগণের সেবা করা এবং দেশের ঐক্য ও প্রাতিষ্ঠানিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা তাঁর সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার।
-শরিফুল
ইসরায়েলের হামলা, কাতারের প্রধানমন্ত্রীর ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া
দোহায় ইসরায়েলের বিমান হামলার ঘটনাকে ঘিরে মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুলরহমান বিন জসিম আল-থানি এ হামলার ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে একে সরাসরি রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসবাদ হিসেবে অভিহিত করেছেন। তাঁর মতে, এটি কেবল একটি সামরিক আক্রমণ নয়, বরং সমগ্র অঞ্চলের জন্য এক অশুভ বার্তা। তিনি স্পষ্ট ভাষায় বলেন, এই হামলার মধ্য দিয়ে স্পষ্ট হলো যে, এখানে একটি বেপরোয়া শক্তি সক্রিয় রয়েছে, যারা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতাকে ধ্বংস করতে চায়।
প্রধানমন্ত্রী বিস্তারিতভাবে জানান, হামলা শুরুর মাত্র দশ মিনিটের মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্র কাতারের সঙ্গে যোগাযোগ করে। এটি প্রমাণ করে যে হামলার ঘটনা পূর্বপরিকল্পিত ছিল এবং আন্তর্জাতিক শক্তিগুলোর কাছে এ বিষয়ে তাৎক্ষণিক বার্তা পৌঁছে যায়। তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, ইসরায়েল এই হামলায় অত্যাধুনিক এমন অস্ত্র ব্যবহার করেছে যা প্রচলিত রাডার সিস্টেমে ধরা পড়েনি। এর ফলে কাতারের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাও ব্যর্থ হয়ে পড়ে। এ বিষয়টি তিনি বিশেষভাবে উদ্বেগজনক হিসেবে চিহ্নিত করে বলেন, ভবিষ্যতে এমন হামলা গোটা উপসাগরীয় অঞ্চলের নিরাপত্তার জন্য ভয়াবহ পরিণতি বয়ে আনতে পারে।
অন্যদিকে, ইসরায়েলি কর্মকর্তারা হামলার সত্যতা অস্বীকার না করে বরং স্বীকার করেছেন যে অভিযানে ১০টিরও বেশি যুদ্ধবিমান ব্যবহার করা হয়েছে। এই স্বীকারোক্তি কাতারের অভিযোগকে আরও দৃঢ় করেছে। সামরিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইসরায়েলের এই হামলা ছিল এক ধরনের “ক্ষমতা প্রদর্শন”, যার উদ্দেশ্য কাতারসহ আঞ্চলিক শক্তিগুলোর ওপর চাপ সৃষ্টি করা।
কাতারের প্রধানমন্ত্রী তাঁর ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়ায় আরও বলেন, এটি শুধু কাতারের সার্বভৌমত্বের ওপর আঘাত নয়, বরং গোটা অঞ্চলের শান্তি ও স্থিতিশীলতাকে ঝুঁকির মুখে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান, দ্রুত এ ধরনের রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হোক। বিশেষত তিনি জাতিসংঘ, আরব লীগ ও ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি)–কে এ ঘটনার প্রতি কার্যকর প্রতিক্রিয়া জানানোর আহ্বান জানান।
এই হামলার পর দোহায় সাধারণ নাগরিকদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোও বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশ করছে। কাতারের প্রধানমন্ত্রী স্পষ্ট করেছেন, তাঁর দেশ কোনোভাবেই নীরব থাকবে না। প্রয়োজনে আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক মঞ্চে এ ঘটনার বিরুদ্ধে কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক চাপ সৃষ্টি করা হবে।
-রফিক
নিরাপদ কাতারেও হামলা! দোহায় ইসরাইলি হামলায় তোলপাড় আরব বিশ্ব
কাতারের রাজধানী দোহায় হামাসের শীর্ষ নেতাদের লক্ষ্য করে ইসরাইল বিমান হামলা চালিয়েছে বলে জানিয়েছে ইসরাইলি সেনাবাহিনী। মঙ্গলবার স্থানীয় সময় দুপুরে একাধিক বিস্ফোরণে শহরের কূটনৈতিক ও আবাসিক এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। কাতারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দোহায় হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর কয়েকজন সদস্যের আবাসিক স্থাপনাকে লক্ষ্য করে এ হামলা চালানো হয়েছে। তবে মন্ত্রণালয় দাবি করেছে, বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
হামাস সূত্র আল জাজিরাকে জানিয়েছে, হামলার সময় সংগঠনের আলোচনাকারী প্রতিনিধিদল যুক্তরাষ্ট্রের নতুন যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব নিয়ে বৈঠক করছিল। এর মধ্যেই হঠাৎ হামলা চালানো হয়। হামাস বলছে, এটি মূলত শান্তি প্রচেষ্টা ব্যাহত করার উদ্দেশ্যেই করা হয়েছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একদিন আগেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দাবি করেছিলেন, ইসরাইল তাঁর প্রস্তাব মেনে নিয়েছে এবং এবার হামাসকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তিনি আরও হুঁশিয়ারি দেন, “এটাই হামাসের জন্য শেষ সতর্কবার্তা।” তবে দোহায় হামলার পর হোয়াইট হাউস আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি। মার্কিন দূতাবাস অবশ্য স্থানীয়দের সতর্ক করে জানিয়েছে, নাগরিকদের নিরাপদ স্থানে অবস্থান করতে।
কাতার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হামলাকে “cowardly” আখ্যা দিয়ে বলেছে, এটি আন্তর্জাতিক আইন ও কাতারের সার্বভৌমত্বের নগ্ন লঙ্ঘন এবং কাতার ও বাসিন্দাদের নিরাপত্তার জন্য গুরুতর হুমকি। একই সুরে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইরান ও ফিলিস্তিনি মুক্তি সংস্থা (পিএলও) এ হামলার নিন্দা জানিয়েছে। সৌদি আরব সতর্ক করেছে, ইসরাইলের এ ধরনের “অপরাধমূলক আগ্রাসন” আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য ভয়াবহ পরিণতি বয়ে আনতে পারে।
এদিকে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, “এ হামলা সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে ইসরাইল পরিচালনা করেছে এবং এর পূর্ণ দায়ভার ইসরাইল নিচ্ছে।” ইসরাইলি বিরোধীদলীয় নেতা ইয়াইর লাপিদ এবং কট্টর ডানপন্থী অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোত্রিচ এ অভিযানের প্রশংসা করেছেন।
হামলার লক্ষ্যবস্তু ছিল দোহা শহরের একটি আবাসিক এলাকা, যেখানে বিদেশি দূতাবাস ও বিদ্যালয়ও অবস্থিত। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বিস্ফোরণের শব্দ গোটা শহরে ছড়িয়ে পড়ে এবং মুহূর্তেই আতঙ্ক দেখা দেয়। যুক্তরাষ্ট্রসহ একাধিক দেশ ইতোমধ্যেই দোহায় অবস্থানরত নাগরিকদের নিরাপদে থাকার নির্দেশ দিয়েছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ইসরাইল এ হামলার মাধ্যমে শুধু কাতারের সার্বভৌমত্বকেই লঙ্ঘন করেনি, বরং চলমান আলোচনাকে ভণ্ডুল করার বার্তাও দিয়েছে। আল জাজিরার বিশ্লেষক মারওয়ান বিশারা একে “গ্যাংস্টার আচরণ” হিসেবে আখ্যা দিয়ে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি এ হামলার অনুমোদন না দিয়ে থাকে, তবে অবিলম্বে নিন্দা জানানো উচিত।
ইসরাইল এর আগে গাজা, লেবানন, সিরিয়া, ইয়েমেন, তিউনিসিয়া এবং ইরানেও হামলা চালিয়েছে। এবার কাতারে হামলা মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাতকে আরও জটিল করে তুলতে পারে বলে আন্তর্জাতিক মহল আশঙ্কা করছে।
বিক্ষোভে রক্তক্ষয়, নেপালের প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ
নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি মঙ্গলবার পদত্যাগ করেছেন। এর মাত্র একদিন আগে দেশজুড়ে বিক্ষোভ দমনে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে অন্তত ১৯ জন নিহত হয়, যা সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ দমন-পীড়নের ঘটনা।
রাষ্ট্রপতির কাছে জমা দেওয়া পদত্যাগপত্রে ৭৩ বছর বয়সী ওলি লিখেছেন, “আজ থেকে প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগ করছি, যাতে রাজনৈতিক সমাধানের পথে আরও অগ্রসর হওয়া যায় এবং বিদ্যমান সংকট নিরসনের উপায় খোঁজা সম্ভব হয়।”
সোমবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরকারের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপের দাবিতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। যদিও পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম অ্যাপগুলো চালু করা হয়, তবুও বিক্ষোভ থামেনি। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের তথ্যমতে, বিক্ষোভকারীদের ওপর সরাসরি গুলি চালানো হয়, যাতে হতাহতের সংখ্যা বেড়ে যায়।
ওলি গত বছর চতুর্থবারের মতো ক্ষমতায় আসেন, যখন তার কমিউনিস্ট পার্টি মধ্য-বামপন্থি নেপালি কংগ্রেসের সঙ্গে জোট গঠন করে সরকার গড়ে। তবে দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, দুর্নীতি ও ধীর অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিয়ে জনঅসন্তোষ ক্রমেই বাড়ছিল।
হিমালয়ের এই দেশটির জনসংখ্যা প্রায় তিন কোটি। এর মধ্যে ১৫ থেকে ৪০ বছর বয়সী তরুণরা মোট জনসংখ্যার প্রায় ৪৩ শতাংশ। কিন্তু বেকারত্বের হার ১০ শতাংশের কাছাকাছি এবং মাথাপিছু আয় মাত্র ১,৪৪৭ ডলার। ফলে তরুণ প্রজন্ম ক্রমেই হতাশ হয়ে পড়ছে।
২০০৮ সালে এক দশকব্যাপী গৃহযুদ্ধের পর নেপাল রাজতন্ত্র বিলুপ্ত করে ফেডারেল প্রজাতন্ত্রে পরিণত হয়। মাওবাদীদের শান্তি চুক্তির মাধ্যমে রাজনীতিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। কিন্তু এরপর থেকে বয়স্ক রাজনীতিবিদদের ক্ষমতা দখলের পালাবদল, দলাদলি ও ঘনঘন সরকার পরিবর্তন জনগণের কাছে রাজনৈতিক নেতৃত্বকে আরও অবিশ্বস্ত করে তুলেছে।
গত শুক্রবার থেকে টিকটকে ভাইরাল হওয়া কিছু ভিডিওতে দেখা যায়, সাধারণ নেপালিদের দুঃখ-দুর্দশার বিপরীতে রাজনীতিবিদদের সন্তানরা বিলাসবহুল সামগ্রী ও বিদেশ ভ্রমণ প্রদর্শন করছে। এসব দৃশ্য বিক্ষোভকে আরও উসকে দিয়েছে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
ওলির পদত্যাগ নিঃসন্দেহে নেপালের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন সমীকরণ তৈরি করবে। তবে এই অস্থিরতা থেকে উত্তরণের পথ এখনো অনিশ্চিত।
-সুত্রঃ এ এফ পি
পাঠকের মতামত:
- উটাহে চার্লি কার্ক হত্যা: রাজনৈতিক সহিংসতার নতুন ধাক্কায় আমেরিকার গণতন্ত্র ও নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা
- শিবিরের অভিযোগ, ছাত্রদলের বর্জন—প্রশ্নের মুখে ৩৩ বছর পর জাকসু নির্বাচন
- শির্কের ভয়াবহতা বুঝতে সহজ উদাহরণ
- দিনের বেলা ভাতঘুম: উপকারী নাকি ক্ষতিকর?
- সপ্তাহের শেষ দিনে ডিএসইতে সূচকের মিশ্র প্রতিক্রিয়া
- জাকসুতে নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন সাদীর
- গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সহযোগী চার্লি কার্ক
- ডাকসুতে শিবিরের নিরঙ্কুশ জয়ের পেছনে যত কৌশল
- অস্থির নেপাল থেকে দেশে ফিরছে বাংলাদেশ ফুটবল দল
- নেপালে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের জন্য প্রধান পছন্দ সুশিলা কার্কি, বলছে ‘জেন জেড’ আন্দোলন
- মার্কিন রাজনীতিতে নতুন বিভাজনের আশঙ্কা
- নেপালে রাজনৈতিক শূন্যতা: সেনা তত্ত্বাবধানে উত্তাল দেশ, নতুন নেতৃত্ব কে?
- ৩৩ বছর পর জাকসু নির্বাচন: নিরাপত্তা, অনিয়ম ও বিতর্কে সরগরম ক্যাম্পাস
- ১০ সেপ্টেম্বর শেয়ারবাজারের সার্বিক চিত্র ও বিশ্লেষণ
- ডিএসই ব্লক মার্কেট: বড় লেনদেনে যেসব কোম্পানি
- ১০ সেপ্টেম্বর ডিএসইতে লেনদেনের শীর্ষ ১০ শেয়ার
- জলবায়ু ইস্যুতে গণমাধ্যমের দায়িত্ব বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন পিকেএসএফ চেয়ারম্যান
- ১০ সেপ্টেম্বর ডিএসইতে দর পতনের শীর্ষ ১০ শেয়ার
- ৪৭তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষা: নিরাপত্তায় ১২০ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ
- ১০ সেপ্টেম্বর ডিএসইতে দর বৃদ্ধির শীর্ষ ১০ শেয়ার
- ডেঙ্গুতে আরও দুইজনের মৃত্যু, একদিনে আক্রান্ত ৬২৫
- ভাঙ্গায় ১১ ঘণ্টা অবরোধ শেষে ফের নতুন ঘোষণা
- জাতীয় পরিচয়পত্র হারালে আর জিডি করতে হবে না: ইসি
- ডাকসুতে জয়ীদের উদ্দেশ্যে জামায়াত আমিরের বার্তা
- কর ফাঁকি তদন্তে শেখ হাসিনার ব্যাংক লকার সিলগালা
- "ষড়যন্ত্র ভেদ করে ধানের শীষের জয় নিশ্চিত করতে হবে"
- ভেনিস চলচ্চিত্র উৎসব ২০২৫: কারা পেলেন সেরা সম্মাননা
- যুক্তরাষ্ট্রে আটক কোরীয় শ্রমিকদের দেশে ফেরাতে চার্টার্ড ফ্লাইট
- কাপ্তাই বাঁধে ১৬ গেট খোলা: কর্ণফুলীতে তীব্র পানি প্রবাহ
- জরায়ুর যত্নে সচেতনতা: নারীর সুস্থ জীবনের অপরিহার্য শর্ত
- মহেশখালী-মাতারবাড়ি: পর্যটন ও অর্থনীতির নতুন দিগন্ত
- ডোপ টেস্ট কী, কেন করা হয়, কেন এত এখন জরুরি
- একীভূতকরণ প্রসঙ্গে এক্সিম ব্যাংকের ব্যাখ্যা
- বিজয়ের পর শিবিরের তিনটি কাজের নির্দেশ
- ডাকসু ভিপি সাদিক কায়েমকে নিয়ে জুলকারনাইন সায়েরের বার্তা
- স্বাস্থ্য জটিলতায় স্ত্রীকে নিয়ে বিদেশে বিএনপি মহাসচিব
- মাত্র ২৪ ঘণ্টায় নতুন প্রধানমন্ত্রী
- আসন পুনর্বিন্যাসে উত্তাল ফরিদপুরের ভাঙ্গা
- ইসরায়েলের হামলা, কাতারের প্রধানমন্ত্রীর ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া
- ঢাবি ডাকসু: ভিপি–জিএস–এজিএস পদে শিবিরের দাপট
- ডাকসু নির্বাচনের ভোট শেষ, ফলাফলের আগে অস্থির ঢাবি—পাল্টাপাল্টি অভিযোগে উত্তপ্ত পরিবেশ
- নিরাপদ কাতারেও হামলা! দোহায় ইসরাইলি হামলায় তোলপাড় আরব বিশ্ব
- ইইউ সংলাপ: ঢাকার অগ্রাধিকার বাণিজ্য, ইউরোপের নজর অনিয়মিত অভিবাসনে
- খুনের পরিসংখ্যানে বৃদ্ধি: দেরিতে দায়ের হওয়া মামলার প্রতিফলন
- নেপালে অস্থিরতা: বাংলাদেশি নাগরিকদের ঘরে থাকার নির্দেশ দূতাবাসের
- বিক্ষোভে রক্তক্ষয়, নেপালের প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ
- ৭০ শতাংশ ভোট পড়েছে, নির্বাচন স্বচ্ছ দাবি ঢাবি ভিসির
- টিএসসি কেন্দ্রে তিন ঘণ্টায় ৩৫% ভোট
- অল্প সময়েই ছয় দফা বৃদ্ধি: স্বর্ণের বাজারে আগুন
- আবারও যুদ্ধের প্রস্তুতিতে ইরান: সেনাপ্রধান হাতামির হুঁশিয়ারি
- ডাকসু নির্বাচনের ভোট শেষ, ফলাফলের আগে অস্থির ঢাবি—পাল্টাপাল্টি অভিযোগে উত্তপ্ত পরিবেশ
- ডিএসইতে আজকের লেনদেন শেষে টপ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- গোয়ালন্দে কবর অবমাননার ঘটনায় অন্তর্বর্তী সরকারের তীব্র নিন্দা
- “তারেক রহমানের নেতৃত্বেই ঐক্য সম্ভব”
- ডিএসইতে বৃহস্পতিবার লেনদেন শেষে টপ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- ডাকসু নির্বাচন: ৪৭১ প্রার্থী, ৩৯ হাজার ভোটার, টানটান নিরাপত্তায় উৎসবমুখর ভোটযুদ্ধ
- প্রথমবার আস্থা ভোটে প্রধানমন্ত্রী বিদায়, ইতিহাস গড়ল ফ্রান্স
- নেপালে অস্থিরতা: বাংলাদেশি নাগরিকদের ঘরে থাকার নির্দেশ দূতাবাসের
- চাকরির প্রলোভনে কোটি টাকা হাতিয়ে ৩ প্রতারক গ্রেপ্তার
- শেখ হাসিনার উত্তরাধিকার প্রশ্ন: আওয়ামী লীগের সামনে এক অমীমাংসিত সংকট
- ডিএসইতে বৃহস্পতিবার লেনদেন শেষে টপ লুজার তালিকা প্রকাশ
- জাকসু নির্বাচন: প্রার্থীদের জন্য আজ বাধ্যতামূলক ডোপ টেস্ট
- নিরাপদ কাতারেও হামলা! দোহায় ইসরাইলি হামলায় তোলপাড় আরব বিশ্ব
- জ্বর, মাথাব্যথা, আর্থ্রাইটিস—ভিন্ন ভিন্ন সমস্যায় ভিন্ন ডোজ প্যারাসিটামল
- শেয়ারদর বৃদ্ধি নিয়ে ডিএসইকে যে ব্যাখ্যা দিল বিডিকম অনলাইন