“গণতান্ত্রিক রূপান্তরে সারা বিশ্বের সমর্থন”—মির্জা ফখরুল

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০৪ ১০:৫৮:১২
“গণতান্ত্রিক রূপান্তরে সারা বিশ্বের সমর্থন”—মির্জা ফখরুল
ছবিঃ বি এস এস

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বাংলাদেশে নির্বাচনকে ঘিরে যে গণতান্ত্রিক রূপান্তরের প্রক্রিয়া চলছে, তা আজ সারা বিশ্বের সমর্থন পাচ্ছে। তিনি দাবি করেন, বিশেষত গণতান্ত্রিক বিশ্বের পূর্ণ সমর্থন এ প্রক্রিয়ার পাশে রয়েছে।

শুক্রবার গভীর রাতে এমিরেটস এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে যুক্তরাষ্ট্র সফর শেষে দেশে ফিরে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের টার্মিনালে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন। ফখরুল বলেন, “আমাদের একটাই বার্তা—গণতন্ত্রে ফিরে যাওয়া। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান যেভাবে নির্দেশনা দিয়েছেন, আমরা ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের জন্য সেই অনুযায়ী প্রস্তুতি নেব।”

বিএনপির এই অভিজ্ঞ নেতা গত ২৩ সেপ্টেম্বর প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন প্রতিনিধি দলের অংশ হিসেবে নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে যোগ দিতে যান। প্রধান উপদেষ্টা ২ অক্টোবর দেশে ফিরলেও ফখরুল এক দিন পর দেশে ফেরেন, কারণ তিনি সেখানে দলের একটি কর্মসূচিতে অংশ নেন।

প্রধান উপদেষ্টার প্রতিনিধি দলে আরও ছিলেন বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা হুমায়ুন কবীর, জামায়াতে ইসলামী নায়েবে আমীর সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের, এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন এবং যুগ্ম আহ্বায়ক তাসনিম জারা।

সফর প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, “সম্মানিত প্রধান উপদেষ্টার আমন্ত্রণে আমরা জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে যোগ দিয়েছি এবং প্রয়োজন অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করেছি। আমি মনে করি আমাদের সফর সফল হয়েছে।”

তিনি আরও যোগ করেন, “এটি প্রথমবারের মতো সরকার প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোকে সঙ্গে নিয়ে জাতীয় ঐক্য প্রদর্শন করেছে। সে দিক থেকে সফরটি নিঃসন্দেহে সফল হয়েছে। বাংলাদেশের বার্তা বিশ্ববাসীর কাছে পৌঁছেছে।”

এছাড়াও বিএনপি মহাসচিব মনে করেন, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের আনুষ্ঠানিক অধিবেশন ছাড়াও নিউ ইয়র্কে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন সাইড মিটিং বাংলাদেশের জন্য যেমন ফলপ্রসূ হয়েছে, তেমনি গণতন্ত্রের জন্যও তা ছিল ইতিবাচক।

বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে অবতরণের পর হয়রানির ঘটনার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন, “আমরা এসবকে বড় কিছু মনে করি না। এটাই আওয়ামী লীগের সংস্কৃতি—এ ধরনের ঘটনা সৃষ্টি করা।”

-নাজমুল হাসান


“বিবেকের গর্জন”—গাজা ফ্লোটিলায় শহিদুল আলমকে প্রশংসা করলেন তারেক রহমান

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০৪ ১০:৫২:০৭
“বিবেকের গর্জন”—গাজা ফ্লোটিলায় শহিদুল আলমকে প্রশংসা করলেন তারেক রহমান
ছবিঃ বি এস এস

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আন্তর্জাতিক মানবাধিকারকর্মী ও খ্যাতিমান আলোকচিত্রী শহিদুল আলমের সাহসী উদ্যোগকে গভীরভাবে স্বাগত জানিয়েছেন। যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় ইসরায়েলি অবরোধ ভাঙার লক্ষ্যে চলমান গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা অভিযানে অংশ নিয়ে শহিদুল আলম শুধু মানবিক সহমর্মিতার বার্তাই দেননি, বরং তিনি বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ন্যায় ও মানবতার পক্ষে এক দৃপ্ত অবস্থান বিশ্বমঞ্চে তুলে ধরেছেন।

শনিবার ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে তারেক রহমান লিখেছেন— “গাজা ফ্লোটিলায় শহিদুল আলমের সাহসী পদক্ষেপ কেবল সংহতির প্রকাশ নয়, এটি বিবেকের গর্জন। বাংলাদেশের পতাকা বহন করে তিনি বিশ্বকে মনে করিয়ে দিয়েছেন, এই জাতি কখনো অন্যায় ও নিপীড়নের কাছে মাথা নত করে না। বিএনপি তাঁর সঙ্গে এবং ফিলিস্তিনের জনগণের পাশে আছে—আজও, ভবিষ্যতেও।”

তারেক রহমানের এই মন্তব্য আসে ঠিক কয়েক ঘণ্টা পর, যখন শহিদুল আলম যাত্রা করা নৌযানটি আটকানো হয়। এর মাধ্যমে বিএনপির সর্বোচ্চ নেতৃত্ব আবারও ফিলিস্তিনি জনগণের ন্যায়সঙ্গত অধিকারের প্রতি দৃঢ় সমর্থন প্রকাশ করল।

উল্লেখ্য, শহিদুল আলম প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশনের (FFC) মিডিয়া ফ্লোটিলাতে যোগ দিয়েছেন। তাঁর এই পদক্ষেপের মূল লক্ষ্য—গাজার তথ্য অবরোধ ভাঙা এবং আন্তর্জাতিক মহলে ফিলিস্তিনের মানবিক সঙ্কটকে নতুন করে তুলে ধরা। বহু আন্তর্জাতিক মানবাধিকারকর্মী, সাংবাদিক ও কর্মী এই অভিযানে যুক্ত হলেও একজন বাংলাদেশির সক্রিয় অংশগ্রহণ এ উদ্যোগকে আরও ঐতিহাসিক গুরুত্ব দিয়েছে।

বাংলাদেশ দীর্ঘদিন ধরে ফিলিস্তিনের ন্যায্য অধিকারের প্রশ্নে নীতিগত অবস্থান বজায় রেখে আসছে। শহিদুল আলমের ফ্লোটিলায় অংশগ্রহণকে অনেকেই বাংলাদেশের মানবিক মূল্যবোধ ও আন্তর্জাতিক সংহতির প্রতীক হিসেবে দেখছেন। আর বিএনপি নেতার প্রকাশ্য সমর্থন এই অবস্থানকে রাজনৈতিক ক্ষেত্রেও আরও জোরদার করেছে।

-সুত্রঃ বি এস এস


ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন: প্রস্তুতির সার্বিক চিত্র ও টাইমলাইন

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০৩ ১২:৪০:৩০
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন: প্রস্তুতির সার্বিক চিত্র ও টাইমলাইন

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে নির্বাচন কমিশন (ইসি) প্রায় সব মৌলিক প্রস্তুতি চূড়ান্ত করেছে। খসড়া ভোটকেন্দ্র তালিকা প্রণয়ন, ভোটার তালিকা হালনাগাদ, নির্বাচনি উপকরণ সংগ্রহ ও বিতরণ, নতুন রাজনৈতিক দল নিবন্ধন, দেশি পর্যবেক্ষক অনুমোদন এবং মাঠপর্যায়ের প্রশিক্ষণ—সবকিছু এখন নির্দিষ্ট টাইমলাইনে এগোচ্ছে। ইসির পরিকল্পনা অনুযায়ী, ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে। আর সে লক্ষ্যেই ডিসেম্বরের প্রথমার্ধেই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করার প্রস্তুতি নিচ্ছে কমিশন।

ভোটকেন্দ্র ও ভোটকক্ষ

ইসির প্রকাশিত খসড়া অনুযায়ী, আসন্ন নির্বাচনে ভোটগ্রহণের জন্য মোট ৪২,৬১৮টি ভোটকেন্দ্র প্রস্তাব করা হয়েছে। গড়ে প্রতি তিন হাজার ভোটারের জন্য একটি কেন্দ্র রাখা হয়েছে। পুরুষদের জন্য প্রতি ৬০০ জনে একটি ভোটকক্ষ এবং নারীদের জন্য প্রতি ৫০০ জনে একটি ভোটকক্ষ ধরে মোট ২,৪৪,০৪৬টি ভোটকক্ষ নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে পুরুষদের জন্য ১,১৪,৯৩৯টি এবং নারীদের জন্য ১,২৯,১০৭টি কক্ষ। খসড়ার ওপর আসা দাবিআপত্তি নিষ্পত্তির পর ২০ অক্টোবর চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে।

ভোটার তালিকা হালনাগাদ

হালনাগাদ প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পর ১৮ নভেম্বর চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে। খসড়া তালিকা মুদ্রণ ও প্রকাশিত হবে ১ নভেম্বর, এবং সংশোধন ও আপত্তি দাখিলের শেষ সময় ১৬ নভেম্বর। এভাবে ধাপে ধাপে আপডেট শেষে নতুন ভোটারসহ সম্পূর্ণ ভোটার তালিকা প্রকাশ করবে নির্বাচন কমিশন।

উপকরণ সংগ্রহ ও বিতরণ

নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের প্রায় ৮০ শতাংশ ইতোমধ্যেই হাতে এসেছে। স্থানীয় বাজার থেকে সংগ্রহ করা হচ্ছে গালা, ব্যালট বাক্সের লক, অফিসিয়াল সিল, মার্কিং সিল, ব্রাশ সিল, হেসিয়ান বড় ও ছোট ব্যাগ, গানি ব্যাগসহ মোট আটটি উপকরণ। পাশাপাশি স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স, ব্যালট পেপার ও কালিও মজুদ করা হচ্ছে। আন্তর্জাতিক সহযোগিতায় স্ট্যাম্প প্যাড ও ইন্ডেলিবল ইঙ্ক সরবরাহ করা হবে। ১৬ নভেম্বরের মধ্যে মাঠ পর্যায়ে সব উপকরণ পৌঁছে দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে ইসি।

কর্মকর্তা নিয়োগ ও প্রশিক্ষণ

ভোটগ্রহণে নিয়োজিত কর্মকর্তাদের তালিকা প্রস্তুত এবং ধাপে ধাপে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু করেছে ইসি। প্রশিক্ষণের মধ্যে থাকছেভোটগ্রহণ পদ্ধতি, আইনশৃঙ্খলা সমন্বয়, এবং নতুন প্রযুক্তি বা সরঞ্জামেরব্যবহারএসবপ্রশিক্ষণশেষ করা হবে ডিসেম্বরের তফসিল ঘোষণার আগেই, যাতে ভোটের দিন কোনো ধরনের জটিলতা না থাকে।

নতুন দল ও পর্যবেক্ষক নিবন্ধন

নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন প্রক্রিয়া চলমান। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি নতুন দল নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছে। একইসঙ্গে দেশি পর্যবেক্ষক সংস্থাগুলোরও নিবন্ধন দেওয়া হচ্ছে, যাতে তারা ভোটের সময় মাঠপর্যায়ে কার্যক্রম চালাতে পারে।

সময়রেখা (টাইমলাইন)

  • ২০ অক্টোবর: ভোটকেন্দ্রের চূড়ান্ত তালিকা
  • ১ নভেম্বর: খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ
  • ১৬ নভেম্বর: আপত্তি ও সংশোধনের শেষ তারিখ
  • ১৭ নভেম্বর: সংশোধনী নিষ্পত্তি
  • ১৮ নভেম্বর: চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ
  • ১৬ নভেম্বরের মধ্যে: মাঠপর্যায়ে সব সরঞ্জাম বিতরণ সম্পন্ন
  • ডিসেম্বরের প্রথমার্ধ: তফসিল ঘোষণা
  • ফেব্রুয়ারি ২০২৬ (প্রথমার্ধ): ভোটগ্রহণ

সবকিছু মিলিয়ে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে ইসির প্রস্তুতি প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছেকেন্দ্রকক্ষ চূড়ান্তকরণ, ভোটার তালিকা হালনাগাদ, উপকরণ সংগ্রহবিতরণ ও মাঠপর্যায়ের প্রশিক্ষণ নির্দিষ্ট সময়রেখা মেনে এগোচ্ছে। এখন মূল নজর থাকবে শেষ মাইলের লজিস্টিক্স বিতরণ, সংবেদনশীল কেন্দ্রের নিরাপত্তা পরিকল্পনা, প্রশিক্ষণসিমুলেশনের গুণগত মান এবং আপিলআপত্তি নিষ্পত্তির স্বচ্ছতায়। তফসিল ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই মনোনয়ন, যাচাইবাছাই, প্রতীক বরাদ্দ ও প্রচারণাসব ধাপ দ্রুতগতিতে চলবে; সেক্ষেত্রে আন্তঃসংস্থার সমন্বয়, সাপ্লাইচেইনের ধারাবাহিকতা ও মাঠকর্মীদের সক্ষমতাই হবে সুষ্ঠু ভোটের নির্ণায়ক। বয়স্ক, নারী, প্রতিবন্ধী ও দূরবর্তী এলাকার ভোটারদের জন্য সহজপ্রাপ্য সেবা ও তথ্যসহায়তা নিশ্চিত করা সমান গুরুত্বপূর্ণ। পরিকল্পিত প্রস্তুতি, সময়মতো বাস্তবায়ন ও জবাবদিহির মানদণ্ড বজায় থাকলেডিসেম্বরে তফসিল ও ফেব্রুয়ারিতে ভোটএই দুই মাইলস্টোনই একটি অংশগ্রহণমূলক, স্বচ্ছ ও নির্ভরযোগ্য নির্বাচনের দিকে দেশকে এগিয়ে নেবে।


আগামী ৪৮ ঘণ্টায় ৭ জেলার নিম্নাঞ্চলে বন্যার শঙ্কা

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০২ ১৫:১৪:৫৯
আগামী ৪৮ ঘণ্টায় ৭ জেলার নিম্নাঞ্চলে বন্যার শঙ্কা
ছবি: সংগৃহীত

দেশের সাতটি জেলার নিম্নাঞ্চলে ভারী বৃষ্টির কারণে বন্যার শঙ্কা তৈরি হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, আগামী ৪৮ থেকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে এসব অঞ্চলে নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে, ফলে স্বল্পমেয়াদি বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিতে পারে।

বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) নদনদীর বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরে এক পূর্বাভাসে এই তথ্য জানানো হয়।

কোন কোন জেলায় বন্যা এবং ঝড়ের পূর্বাভাস

চট্টগ্রাম বিভাগ

গত ২৪ ঘণ্টায় গোমতী, মুহুরী, সেলোনিয়া ও ফেনী নদীর পানি সমতল বেড়েছে এবং আগামী দুদিনে এসব নদীর পানি আরও বাড়তে পারে।

বিপদসীমার শঙ্কা: মুহুরী, সেলোনিয়া ও ফেনী নদীর পানি ফেনী জেলায় বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এতে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে এসব নদীসংলগ্ন নিম্নাঞ্চলে স্বল্পমেয়াদি বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিতে পারে।

প্লাবনের সম্ভাবনা: চট্টগ্রাম জেলায় ফেনী নদীর পানি সতর্কসীমায় প্রবাহিত হতে পারে, ফলে নিম্নাঞ্চলগুলো সাময়িকভাবে প্লাবিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

রংপুর বিভাগ

আগামী তিন দিনে তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার নদীর পানি আবারও বাড়তে পারে। এর ফলে তিস্তা নদীর পানি সতর্কসীমায় প্রবাহিত হয়ে লালমনিরহাট ও নীলফামারী জেলার নিম্নাঞ্চল সাময়িকভাবে প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

ময়মনসিংহ বিভাগ

আগামী তিন দিনে সোমেশ্বরী, ভুগাই ও কংস নদীর পানি সমতল বৃদ্ধি পেতে পারে। এতে সোমেশ্বরী, ভুগাই ও কংস নদীর শেরপুর, ময়মনসিংহ ও নেত্রকোনা জেলার অংশে পানি সতর্কসীমায় প্রবাহিত হয়ে নিম্নাঞ্চলে সাময়িক বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে।

নদীবন্দরে সতর্কতা জারি

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরের জন্য ১ নম্বর (পুনঃ) সতর্কসংকেত জারি করা হয়েছে।

আবহাওয়াবিদ মো. তরিকুল নেওয়াজ কবির স্বাক্ষরিত পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ঢাকা, ফরিদপুর, মাদারীপুর, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজার অঞ্চলের ওপর দিয়ে দক্ষিণ/দক্ষিণপূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে।


ভারত কি হাসিনাকে সমর্থন করছে? জানালেন ড. ইউনূস

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০১ ২০:৪৯:২৭
ভারত কি হাসিনাকে সমর্থন করছে? জানালেন ড. ইউনূস
ছবি: সংগৃহীত

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে যোগ দিতে নিউইয়র্কে অবস্থানকালে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস মন্তব্য করেছেন, ভারত বরাবরই শেখ হাসিনাকে সমর্থন করে এসেছে এবং তারা হয়তো এখনো আশা করছে যে তিনি ‘পূর্ণ গৌরবের সঙ্গে’ বাংলাদেশে ফিরে আসবেন।

ডিজিটাল সংবাদমাধ্যম জিটিও’র সাংবাদিক মেহদি হাসানের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।

শেখ হাসিনাকে নিয়ে উদ্বেগ

আওয়ামী লীগের সঙ্গে শেখ হাসিনার ভার্চুয়াল বৈঠক নিয়ে উদ্বেগের প্রশ্নে অধ্যাপক ইউনূস জানান, বাইরের কিছু শক্তি শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে ফিরে আসতে সহায়তা করবে এবং অন্তর্বর্তী সরকার সবসময়ই এ নিয়ে উদ্বিগ্ন।

ড. ইউনূস ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, “আমি মোদির সঙ্গে কথা বলেছি। তাকে অনুরোধ করেছি, যদি হাসিনাকে (ভারতে) রাখেন, সে বাংলাদেশের মানুষ বা সরকারের বিষয়ে যেন কথা না বলে।” তিনি আরও জানান, মোদি তাকে বলেছিলেন যে, তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেন না।

ড. ইউনূসের এই সাক্ষাৎকারে জুলাই গণঅভ্যুত্থান, আওয়ামী লীগ সরকারের পতন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব, শেখ হাসিনার ভারতে অবস্থান, আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধকরণ এবং আগামী নির্বাচনের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোও উঠে এসেছে।

সূত্র: জিটিও


সাবেক মন্ত্রীর হাতকড়া পরিহিত ছবিটি ভুয়া: স্বরাষ্ট্র সচিব নাসিমুল গণি

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০১ ১৯:৪৯:৩৭
সাবেক মন্ত্রীর হাতকড়া পরিহিত ছবিটি ভুয়া: স্বরাষ্ট্র সচিব নাসিমুল গণি
স্বরাষ্ট্র সচিব নাসিমুল গণি

স্বরাষ্ট্র সচিব নাসিমুল গণি বলেছেন, সদ্যপ্রয়াত সাবেক শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূনের হাতকড়া পরিহিত অবস্থায় হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে থাকা যে ছবিটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে, তা সম্পূর্ণ ভুয়া। বুধবার (১ অক্টোবর) দুপুরে যশোরের কেশবপুর ত্রিপল্লী সার্বজনীন পূজামণ্ডপ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

নাসিমুল গণি বলেন, “সাবেক মন্ত্রীর মৃত্যুর পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। হাসপাতালে চিকিৎসার সময়ে সাবেক মন্ত্রীর স্বজন ও চিকিৎসকরা উপস্থিত ছিলেন। তারপরেও কোনো অভিযোগ থাকলে তদন্ত করলে আসল ঘটনা বের হবে।”

খাগড়াছড়ি ও দুর্গাপূজা প্রসঙ্গে

খাগড়াছড়ির গুইমারায় আদিবাসী ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ এবং পরবর্তী সংঘর্ষ-উত্তেজনা প্রসঙ্গে সিনিয়র এই সচিব বলেন, “চিকিৎসকরা আদিবাসী মেয়েটির ধর্ষণের আলামত পাননি। খাগড়াছড়ির ঘটনা পূর্বপরিকল্পিত হতে পারে। বিষয়টি নিয়ে ইনভেস্টিগেশন চলছে এবং তদন্ত করে ঘটনার রহস্য উদঘাটন হবে।”

তিনি মন্তব্য করেন, হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ জাঁকজমকপূর্ণ ও আনন্দের সঙ্গে দুর্গাপূজা উদযাপন করছে। তিনি বলেন, “দুর্গাপূজায় কোনো শঙ্কা নেই। সুষ্ঠু ও নির্বিঘ্নে এ উৎসব পালনে আমাদের পর্যাপ্ত প্রস্তুতি ছিল। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যত শক্তি রয়েছে, সেটা প্রয়োগ করা হচ্ছে।”

এ সময় খুলনা রেঞ্জ ডিআইজি মো. রেজাউল হক, যশোরের জেলা প্রশাসক আজাহারুল ইসলাম এবং পুলিশ সুপার রওনক জাহান উপস্থিত ছিলেন।


‘ঐতিহাসিক মাইলফলক’: আধুনিক প্রযুক্তিতে এবার প্রবাসীরাও ভোট দিতে পারবেন

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০১ ১৪:৩৩:১৭
‘ঐতিহাসিক মাইলফলক’: আধুনিক প্রযুক্তিতে এবার প্রবাসীরাও ভোট দিতে পারবেন
ছবি: সংগৃহীত

দেশের গণতান্ত্রিক অভিযাত্রায় এক ঐতিহাসিক মাইলফলক হিসেবে চিহ্নিত হতে যাচ্ছে প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটদানের সুযোগ। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন জানিয়েছেন, বিশ্বের যেখানেই থাকুন না কেন, আধুনিক প্রযুক্তির সহায়তায় প্রবাসীরা এবার ভোট দেওয়ার সুযোগ পাবেন। মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) রাতে ইসির অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে এক ভিডিও বার্তায় তিনি এই ঘোষণা দেন।

যেভাবে ভোট দেবেন প্রবাসীরা

সিইসি বলেন, প্রথমবারের মতো প্রবাসে বসবাসরত বাংলাদেশিদের ভোট প্রদানের সুযোগকে আধুনিক প্রযুক্তির সহায়তায় অনেক সহজ ও কার্যকর করা হচ্ছে। এর জন্য খুব শিগগির ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ নামের একটি মোবাইল অ্যাপ চালু করা হবে।

রেজিস্ট্রেশনের প্রক্রিয়া:

মোবাইল ফোনে এই অ্যাপটি ডাউনলোড করতে হবে।

অ্যাপে এনআইডি কার্ড, পাসপোর্টের বিস্তারিত তথ্য এবং প্রবাসের ঠিকানা দিয়ে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করতে হবে।

রেজিস্ট্রেশনের সময় ফেস আইডেন্টিফিকেশন এবং লাইভনেস ডিটেকশন সম্পন্ন করতে হবে।

রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হলে প্রবাসের ঠিকানায় ব্যালট পেপার পৌঁছে যাবে। ভোট দেওয়ার পরে সেই ব্যালট পেপার শুধু খামে ভরে পোস্ট অফিসে পোস্ট করতে হবে।

ঐতিহাসিক পদক্ষেপে অংশগ্রহণের আহ্বান

সিইসি বলেন, “এটা আমাদের প্রবাসী ভোটের জন্য একটা প্রথম পদক্ষেপ, এটা একটা ঐতিহাসিক সূচনা।” তিনি আশা প্রকাশ করেন, প্রবাসীরা এই সুযোগ কাজে লাগাবেন এবং এই ঐতিহাসিক অভিযাত্রায় তাদের সক্রিয় অংশগ্রহণে নির্বাচন আরও কার্যকরভাবে বাস্তবায়িত হবে। তিনি বলেন, "আসুন আমরা একসঙ্গে নিশ্চিত করি, বিশ্বের যেখানেই থাকি না কেন, সব বাংলাদেশির কণ্ঠস্বর যাতে শোনা যায়।"

ভোট সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ অ্যাপের ইন্স্ট্রাকশনাল ভিডিও, দূতাবাস এবং ইসির ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে বলেও সিইসি জানিয়েছেন।


বিসিবি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়ে ক্ষুব্ধ তামিম,  নেপথ্যে  কি?

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০১ ১৪:১১:০৩
বিসিবি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়ে ক্ষুব্ধ তামিম,  নেপথ্যে  কি?
মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে সংবাদ সম্মেলনে তামিম ইকবাল। ছবি- প্রথম আলো

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) আসন্ন নির্বাচন ঘিরে চলমান গুঞ্জন অবশেষে সত্যি হলো। সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবাল মনোনয়নপত্রপ্রত্যাহার করে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। শুধু তামিম নন, সরকারি হস্তক্ষেপ ও অস্বচ্ছ প্রক্রিয়ার অভিযোগ তুলে আরও বেশ কয়েকজন হেভিওয়েট প্রার্থীও নিজেদের সরিয়ে নিয়েছেন।

মঙ্গলবার দুপুরে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তামিম ইকবাল ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “আমিসহ প্রায় ১৪ থেকে ১৫ জন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছি। কেন করেছি সেটা সবারই স্পষ্ট বোঝা উচিত। নির্বাচন কোন দিকে যাচ্ছে, তা সবার চোখের সামনে। যখন যেমন মনে হচ্ছে, তখন তাই করা হচ্ছে। এটা কোনো নির্বাচন নয়, এটি ক্রিকেটের সঙ্গে এক ধরনের প্রহসন।”

তামিম আরও যোগ করেন, “আমরা বড় গলায় বলি বাংলাদেশে ফিক্সিং বন্ধ করতে হবে। আগে নির্বাচনের ফিক্সিং বন্ধ করুন, তারপর মাঠের ফিক্সিং বন্ধ করার কথা ভাবুন। আজকের এই নির্বাচন বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য একটি কালো দাগ হয়ে রইল।”

তামিমের সঙ্গে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমেদের ছেলে সাইদ ইবরাহিম, বিএনপি নেতা আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীর ছেলে ইসরাফিল খসরু, বিএনপি নেতা মির্জা আব্বাসের ছেলে মির্জা ইয়াসির আব্বাসসহ আরও অনেকে। তাঁদের মধ্যে অধিকাংশই ছিলেন শক্তিশালী ভোটব্যাংকের মালিক, যাদের সরে দাঁড়ানোকে প্রতীকি প্রতিবাদ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

ইন্দিরা রোড ক্লাবের প্রার্থী রফিকুল ইসলামও আজ মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। তিনি বলেন, “আমরা প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ একটি নির্বাচন চাইছিলাম। যেমনটা ২০০৫ সালে হয়েছিল। কিন্তু এবার যা ঘটছে তা তার উল্টো। সমঝোতার কথাটা কেবল গুজব ছিল, বাস্তবে কোনো তথ্যপ্রমাণ ছিল না।”

এখন পর্যন্ত তিন ক্যাটাগরিতে মোট ১১ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। এর মধ্যে ক্যাটাগরি১ থেকে মির হেলাল, ক্যাটাগরি৩ থেকে সিরাজ উদ্দিন আলমগীর এবং ক্যাটাগরি২ থেকে তামিম ইকবালসহ আরও আটজন সরে দাঁড়িয়েছেন।

তবে সরকারি প্রভাবের অভিযোগের মধ্যেই নির্বাচন কমিশন আজ বেলা দুইটায় চূড়ান্ত প্রার্থীর তালিকা প্রকাশকরবেঅনেকেরমতে, এতজন হেভিওয়েট প্রার্থীর সরে দাঁড়ানো বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড নির্বাচনের প্রতি আস্থাকে বড় ধাক্কা দিয়েছে।


রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান কেবল মিয়ানমারেই সম্ভব: জাতিসংঘে ফিলিপ্পো গ্রান্ডি

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০১ ১৪:০৮:১৯
রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান কেবল মিয়ানমারেই সম্ভব: জাতিসংঘে ফিলিপ্পো গ্রান্ডি
ছবি: সংগৃহীত

মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী ও অন্য সংখ্যালঘুদের পরিস্থিতিবিষয়ক উচ্চপর্যায়ের সম্মেলনে জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনার (ইউএনএইচসিআর) ফিলিপ্পো গ্রান্ডি মন্তব্য করেছেন, রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান কেবল মিয়ানমারের ভেতরেই সম্ভব। তিনি বলেন, “সাহসী পদক্ষেপ ছাড়া রোহিঙ্গাদের দুর্দশার অবসান হবে না। এই সংকটের উৎপত্তি মিয়ানমারে, আর সমাধানও সেখানেই।”

মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) জাতিসংঘ সদর দপ্তরে আয়োজিত এই সম্মেলনে তিনি এই মন্তব্য করেন।

রাখাইনে রোহিঙ্গাদের বর্তমান পরিস্থিতি

ফিলিপ্পো গ্রান্ডি বলেন, আট বছর আগে মিয়ানমারের সেনাদের নৃশংস সহিংসতার কারণে প্রায় ৭ লাখ ৫০ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছিল। তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, বর্তমানে আরাকান আর্মি রাখাইনের বেশিরভাগ এলাকা নিয়ন্ত্রণে নিলেও রোহিঙ্গাদের অবস্থার কোনো উন্নতি ঘটেনি।

তিনি বলেন, “তাদের প্রতিদিনের জীবন কাটছে গ্রেপ্তার ও আটক হওয়ার ভয়ে। স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষায় সীমিত প্রবেশাধিকার, চলাফেরায় নানা বিধিনিষেধ, জোরপূর্বক শ্রম ও নিয়োগের শিকার হচ্ছেন রোহিঙ্গারা। প্রতিনিয়ত তারা বৈষম্য ও আতঙ্কের মুখোমুখি হচ্ছে।”

বাংলাদেশের মানবিক ভূমিকা ও তহবিলের ঘাটতি

ইউএনএইচসিআর প্রধান বাংলাদেশের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, দেশটি ইতোমধ্যে প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে এবং ২০২৪ সালে নতুন করে শুরু হওয়া সংঘাতের পর আরও দেড় লাখ রোহিঙ্গাকে গ্রহণ করেছে। তিনি বলেন, “বহু চ্যালেঞ্জের মধ্যেও বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে বিশ্বের সামনে একটি অনন্য উদাহরণ স্থাপন করেছে।”

তিনি বিশ্বব্যাংক ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের ১.২৫ বিলিয়ন ডলারের সহায়তার প্রশংসা করেন। তবে একই সঙ্গে তিনি উদ্বেগ জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশে মানবিক সহায়তা তহবিলে ঘাটতি এখনো বিদ্যমান।

স্থায়ী সমাধান ও আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপের আহ্বান

ফিলিপ্পো গ্রান্ডি সতর্ক করে বলেন, পর্যাপ্ত তহবিল না পেলে জরুরি সহায়তা কমাতে হতে পারে। এতে শিশুদের মধ্যে পুষ্টিহীনতা বাড়বে এবং আরও বেশি রোহিঙ্গা বিপজ্জনক সমুদ্রপথে জীবন ঝুঁকিতে ফেলতে বাধ্য হবে।

তিনি জোর দিয়ে বলেন যে, শুধুমাত্র মানবিক সহায়তা দিয়ে এই সংকটের স্থায়ী সমাধান আনা যাবে না। তিনি প্রভাবশালী দেশগুলোকে আহ্বান জানান, মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ ও আরাকান আর্মির সঙ্গে আরও সক্রিয়ভাবে সম্পৃক্ত হতে, যাতে মানবিক সহায়তার প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করা যায়। গ্রান্ডি মন্তব্য করেন, রাখাইন উপদেষ্টা কমিশনের সুপারিশগুলো এখনো সমানভাবে প্রাসঙ্গিক হওয়া উচিত এবং রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছায়, নিরাপদ ও টেকসই প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে তা দিকনির্দেশক হিসেবে কাজ করতে পারে।


ড. ইউনূসের নেতৃত্বে রোহিঙ্গা সম্মেলন: মূল এজেন্ডা স্বেচ্ছায় প্রত্যাবাসন

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ৩০ ২১:২৩:০৬
ড. ইউনূসের নেতৃত্বে রোহিঙ্গা সম্মেলন: মূল এজেন্ডা স্বেচ্ছায় প্রত্যাবাসন
ছবি: সংগৃহীত

নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলিম এবং অন্যান্য সংখ্যালঘুদের পরিস্থিতিবিষয়ক উচ্চ পর্যায়ের সম্মেলনে যোগ দিয়েছে বাংলাদেশের প্রতিনিধিদল। আজ মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সময় সকাল ১০টার দিকে (বাংলাদেশ সময় রাত ৮টা) শুরু হওয়া এই সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বক্তব্য দেবেন।

জাতিসংঘ আয়োজিত এই সম্মেলনে কমপক্ষে ৭৫টি দেশ ও সংগঠনের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ নিশ্চিত করেছেন। সম্মেলনের মূল লক্ষ্য হলো রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে রাজনৈতিক সমর্থন জোগাড় করা, আন্তর্জাতিক দৃষ্টি ধরে রাখা এবং সংকটের সামগ্রিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করা।

সম্মেলনে বাংলাদেশের অগ্রাধিকার

সম্মেলনে মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছায়, নিরাপদে ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের বিষয়টি মূল অগ্রাধিকার হিসেবে উঠে আসবে। অংশগ্রহণকারীরা মাঠ পর্যায়ের বাস্তব চিত্র তুলে ধরার পাশাপাশি একটি পূর্ণাঙ্গ, উদ্ভাবনী, বাস্তবমুখী ও সময়-নির্ধারিত পরিকল্পনা প্রণয়নের প্রস্তাব দেবেন।

এর আগে সোমবার প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপো গ্রান্ডি, জাতিসংঘের মিয়ানমার বিষয়ক বিশেষ দূত জুলি বিশপ এবং ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক ক্যাথরিন রাসেলের সঙ্গে পৃথক বৈঠক করেন।

বৈঠকগুলোতে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গার জন্য মানবিক কার্যক্রমে তীব্র অর্থ সংকটের বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। তহবিল হ্রাসের ফলে শরণার্থী শিশুদের শিক্ষাসেবা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার বিষয়টিও আলোচনায় ছিল।

পাঠকের মতামত: