জেনে নিন ৩রা অক্টোবরের সেহরি, ইফতার ও নামাজের সময়

ধর্ম ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০২ ২২:৩৮:৪০
জেনে নিন ৩রা অক্টোবরের সেহরি, ইফতার ও নামাজের সময়
ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার জন্য আগামী শুক্রবার, ৩রা অক্টোবর, ২০২৫-এর সেহরি, ইফতার এবং পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের সময়সূচী নিচে প্রদান করা হলো। দিনটি শুক্রবার হওয়ায় যোহরের সময় জুম'আর নামাজের প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা হলো।

ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকা: ৩রা অক্টোবর, ২০২৫-এর পূর্ণাঙ্গ সময়সূচী

সেহরির শেষ সময়: ভোর ৪:৩১ AM

ফজর: ভোর ৪:৩৭ AM

যোহর (জুম'আ): দুপুর ১১:৫১ AM

আসর: বিকাল ৪:০৬ PM

ইফতার ও মাগরিব: সন্ধ্যা ৫:৪৯ PM

ইশা: সন্ধ্যা ৭:০২ PM

বিশেষ দ্রষ্টব্য:

যেহেতু দিনটি শুক্রবার, যোহরের নামাজের সময় মসজিদে জুম'আর নামাজ অনুষ্ঠিত হবে।

আপনার স্থানীয় মসজিদের আজানের সময়ের সাথে এক বা দুই মিনিটের সামান্য পার্থক্য থাকতে পারে। সবচেয়ে সঠিক সময়ের জন্য স্থানীয় মসজিদের সময়সূচী অনুসরণ করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।


জুলকারনাইন: দুই শিং–ওয়ালা বাদশার রহস্য

ধর্ম ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৭ ১২:০৬:৫৪
জুলকারনাইন: দুই শিং–ওয়ালা বাদশার রহস্য
ছবি: সংগৃহীত

ইসলামের ইতিহাসে বাদশা জুলকারনাইন এমন এক ব্যক্তিত্ব যিনি রহস্য, প্রজ্ঞা, নেতৃত্ব ও ন্যায়বিচারের সমন্বিত প্রতীক। পবিত্র কোরআনে সূরা কাহফে তাঁর ইতিহাস বর্ণিত হলেও, তাঁর সুনির্দিষ্ট পরিচয় নিয়ে আলেমদের মধ্যে এখনও মতভেদ রয়েছে। তিনি নবী ছিলেন নাকি একজন ন্যায়পরায়ণ শক্তিশালী শাসক ছিলেন এ প্রশ্নে বিভিন্ন ঐতিহাসিক ও ধর্মীয় ব্যাখ্যা পাওয়া যায়। তবে কোরআনের বর্ণনাগুলোতে তাঁর চরিত্র যে উচ্চ নৈতিক মূল্যবোধ ও আল্লাহর প্রতি আনুগত্যের অনন্য উদাহরণ, এতে কোনো সন্দেহ নেই।

পরিচিতি ও ‘জুলকারনাইন’ নামের অর্থ

“জুলকারনাইন” শব্দটি আরবি, যার অর্থ “দুই শিং–ওয়ালা” বা “দুই যুগের অধিকারী।” এই নামের ব্যাখ্যায় দুটি প্রধান মত রয়েছে।

একদিকে বলা হয়, তিনি পৃথিবীর পূর্ব এবং পশ্চিম দু’প্রান্ত পর্যন্ত শাসন বিস্তার করেছিলেন। অন্যদিকে কিছু ঐতিহাসিকের মতে, তাঁর মুকুটে দুই শিং–এর প্রতীক ছিল, যা প্রাচীন রাজকীয় শক্তির প্রতীক হিসেবে ব্যবহৃত হতো।

ঐতিহাসিক পরিচয় নিয়ে মতভেদ

জুলকারনাইনের প্রকৃত পরিচয় কী এ নিয়ে ইসলামী ও পাশ্চাত্য গবেষক, উভয় মহলে বহু আলোচনা হয়েছে।

আলেকজান্ডার দ্য গ্রেট- প্রচলিত ঐতিহ্যগত পরিচয়

অনেক মুসলিম ও পাশ্চাত্য ঐতিহাসিক মনে করেন, জুলকারনাইন হচ্ছেন আলেকজান্ডার দ্য গ্রেট। কারণ তাঁর প্রাচীন মুদ্রাগুলোতে তাঁকে ভেড়ার শিং–যুক্ত হিসেবে দেখানো হয়েছে, যা দেবতা আমুন–রার প্রতীক। বহু যুগ ধরে এই মতটিই সবচেয়ে জনপ্রিয় ছিল।

সাইরাস দ্য গ্রেট-আধুনিক গবেষকদের শক্তিশালী মতবাদ

বর্তমান সময়ের আলেম ও গবেষকদের বড় অংশ বিশ্বাস করেন যে, জুলকারনাইন আসলে পারস্যের সম্রাট সাইরাস দ্য গ্রেট। বাইবেলের বর্ণনায় সাইরাসকে “দুই শিংওয়ালা মেষ” হিসেবে চিত্রিত করা হয়েছে। আরও গুরুত্বপূর্ণ হলো সাইরাস ছিলেন ন্যায়পরায়ণ, ঈমানদার ও একত্ববাদী শাসক। কোরআনের বর্ণনার সাথে তাঁর ব্যক্তিত্বের বহু মিল পাওয়া যায়।

অন্যান্য ধারণা

কিছু গবেষক জুলকারনাইনকে আরবের হিমিয়ার রাজ্যের রাজা আফ্রিকিশ আল–হিমিয়ারী বা অন্য কোনো অজ্ঞাত শাসক হিসেবেও বিবেচনা করেন।

তিনি নবী ছিলেন নাকি রাজা?

অধিকাংশ ইসলামি আলেমের মতে, জুলকারনাইন ছিলেন একজন ন্যায়পরায়ণ এবং আল্লাহভীরু রাজা। তাঁর কাছে আল্লাহ অসাধারণ ক্ষমতা, সামরিক শক্তি এবং ভূখণ্ড পরিচালনার দক্ষতা দান করেছিলেন। যদিও কিছু মত অনুযায়ী তিনি নবীও হতে পারেন, তবে কোরআনে তাঁর নবুয়ত সম্পর্কে স্পষ্ট উল্লেখ নেই।

জুলকারনাইনের প্রাচীর, ইয়াজুজ–মাজুজ থেকে রক্ষার মহাগঠন

জুলকারনাইনের নির্মিত প্রাচীরের অবস্থান নিয়েও মতভেদ রয়েছে। কোরআনে বলা হয়েছে, এটি দুই পর্বতের মধ্যবর্তী সরু পথে নির্মিত হয়েছিল, যেখানে বসবাসকারী জনগোষ্ঠী ইয়াজুজ–মাজুজের হামলায় অতিষ্ঠ ছিল।

কাস্পিয়ান সাগর ও ককেশাস অঞ্চল-সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য মত

অনেক ঐতিহাসিক মনে করেন, প্রাচীরটি কাস্পিয়ান সাগর এবং ককেশাস পর্বতমালার মধ্যবর্তী এলাকায় ছিল। রাশিয়ার দারিয়াল এবং দারবেন্ত অঞ্চলে আজও লৌহনির্মিত প্রাচীরের ধ্বংসাবশেষ দেখা যায়, যা জুলকারনাইনের প্রাচীর বলে বিবেচনা করা হয়।

অন্যান্য ব্যাখ্যা

কিছু ব্যাখ্যায় বলা হয় প্রাচীরটি পূর্ব দিকে ছিল। বিখ্যাত ভ্রমণকারী ইবনে বতুতা চীনের মহাপ্রাচীরকে ভুল করে জুলকারনাইনের প্রাচীর ভেবেছিলেন।

আব্বাসীয় খলিফার তদন্ত অভিযান

আব্বাসীয় খলিফা ওয়াসিক বিল্লাহর নির্দেশে একদল বিশেষ দূত প্রাচীরটি প্রত্যক্ষ পরিদর্শনে গিয়েছিল। তাদের পর্যবেক্ষণ পরবর্তীতে ‘আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া’ গ্রন্থে সংরক্ষিত রয়েছে। প্রতিবেদনে উল্লেখ আছে, প্রাচীরটি ছিল লোহা ও তামা দিয়ে নির্মিত এক বিশাল দুর্গসদৃশ কাঠামো।

কোরআনে বর্ণিত জুলকারনাইনের তিন মহাঅভিযান

সূরা কাহফের ৮৩–৯৯ নং আয়াতে জুলকারনাইনের তিনটি বিশাল ভ্রমণ অভিযানের বিস্তারিত উল্লেখ আছে। এ অভিযানের প্রতিটিতেই তাঁর নেতৃত্ব, ন্যায়বিচার এবং আল্লাহর প্রতি আনুগত্য ফুটে ওঠে।

১. পশ্চিমমুখী অভিযান

তিনি পৃথিবীর পশ্চিম প্রান্তে পৌঁছে দেখলেন সূর্য যেন কর্দমাক্ত ঝর্ণায় অস্ত যাচ্ছে। সেখানে তিনি এক জাতির মুখোমুখি হন। আল্লাহ তাকে এই জাতির ওপর ন্যায়বিচার প্রয়োগের ক্ষমতা দেন। তিনি সৎকর্মশীলদের প্রতি দয়া প্রদর্শন করেন এবং অপরাধীদের শাস্তি দেন।

২. পূর্বমুখী অভিযান

তিনি পূর্ব দিকে যাত্রা করে এমন এক জাতির সন্ধান পান যারা সূর্যের আলো থেকে বাঁচার জন্য কোনো প্রাকৃতিক আড়াল পেত না। এখানেও তিনি ন্যায়বিচারের আদেশ প্রতিষ্ঠা করেন।

৩. উত্তরের অভিযান—ইয়াজুজ ও মাজুজের প্রাচীর নির্মাণ

সবশেষে তিনি দুই পাহাড়ের মধ্যবর্তী এলাকায় পৌঁছান, যেখানে লোকেরা ইয়াজুজ–মাজুজ নামক হানাদার জাতির নিপীড়নে ক্লান্ত ছিল। তারা জুলকারনাইনের কাছে সহায়তা চাইলে তিনি কোনো পারিশ্রমিক গ্রহণ না করে আল্লাহর পক্ষ থেকে অনুপ্রাণিত শক্তিতে লোহা ও গলিত তামা দিয়ে বিশাল প্রাচীর নির্মাণ করেন এবং তাদের আক্রমণ থেকে অঞ্চলটিকে সুরক্ষিত করেন।

জুলকারনাইনের জীবনী থেকে শিক্ষা

জুলকারনাইনের চরিত্র ইতিহাস ও ধর্মীয় নৈতিকতার এক অনুপম উদাহরণ। তাঁর জীবন থেকে পাওয়া প্রধান শিক্ষাগুলো হলো:

১. ক্ষমতা ও নেতৃত্ব আল্লাহর দান, এটি অহংকারের জন্য নয়, ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য।২. ভূখণ্ড, সম্পদ ও শক্তি থাকা সত্ত্বেও তিনি বিনয়ী ছিলেন।৩. প্রতি সিদ্ধান্ত ও কাজে তিনি আল্লাহর নির্দেশ অনুসরণ করেছেন।৪. তিনি পৃথিবীজুড়ে ন্যায় ও সৌহার্দ্য প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।৫. ইয়াজুজ–মাজুজের প্রাচীর কেয়ামতের আগ পর্যন্ত স্থায়ী থাকবে এটি ইসলামি বিশ্বাসের অংশ।


ঢাকা ও আশপাশে আজ নামাজের নির্ধারিত সময় জানুন

ধর্ম ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৬ ১০:০৪:০৮
ঢাকা ও আশপাশে আজ নামাজের নির্ধারিত সময় জানুন
ফাইল ছবি

আজ রবিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৫; বাংলা সনের ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ এবং হিজরি ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭। দিনটি শীতের শুরুতে রাজধানী ঢাকায় নতুন ঋতুর আমেজ নিয়ে এসেছে। ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার, বসুন্ধরা, ঢাকার প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, আজ ঢাকা ও আশপাশের এলাকায় নামাজের সময়সূচি নির্ধারণ করা হয়েছে।

আজকের দিনে জোহরের সময় শুরু হবে সকাল ১১টা ৪৭ মিনিটে। দিনের দ্বিতীয়াংশে বিকেল ৩টা ৩৭ মিনিটে আসরের নামাজের সময় প্রবেশ করবে। সন্ধ্যার অন্ধকার নামার আগে মাগরিবের আজান হবে ৫টা ১৬ মিনিটে, তবে আজ ঢাকায় সূর্যাস্ত হবে ৫টা ১২ মিনিটে। রাতের শুরুতে এশার নামাজের সময় নির্ধারণ করা হয়েছে ৬টা ৩২ মিনিট।

আগামীকাল সোমবার ফজরের নামাজের সময় শুরু হবে ভোর ৫টা ০০ মিনিটে, আর নতুন দিনের সূর্যোদয় হবে সকাল ৬টা ১৪ মিনিটে। দৈনন্দিন ইবাদতের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে মু‌স‌ল্লিদের জন্য এ সময়সূচি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা হিসেবে বিবেচিত।

-রাফসান


সন্তানদের প্রতি ইনসাফ: রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর অনুপম শিক্ষা

ধর্ম ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৫ ১১:২৭:৫১
সন্তানদের প্রতি ইনসাফ: রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর অনুপম শিক্ষা
ছবি: সংগৃহীত

ইসলাম পরিবারে ন্যায়, সাম্য এবং দয়ার যে নীতি প্রতিষ্ঠার কথা বলে, তার সর্বোচ্চ প্রতিফলন দেখা যায় সন্তান প্রতিপালনের নির্দেশনায়। পুত্র ও কন্যা উভয়ের ক্ষেত্রে ইসলামে সমান আচরণ, সমঅধিকার এবং সমান স্নেহপ্রদর্শনকে অত্যন্ত গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। সন্তানদের মধ্যে সামান্য কোনো পার্থক্যও ইসলাম নিরুৎসাহিত করেছে, কারণ বৈষম্য প্রায়ই পারিবারিক অস্থিরতা, মানসিক ক্ষত এবং প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে ছড়িয়ে পড়া সামাজিক ফিতনার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা ঘোষণা করেছেন যে তিনি ইনসাফ, দয়া এবং আত্মীয়স্বজনকে তাদের ন্যায্য অধিকার প্রদান করার নির্দেশ দেন। অশ্লীলতা, মন্দ কাজ এবং জুলুম থেকে তিনি কঠোরভাবে নিষেধ করেন। সুরা নাহল-এর ৯০ নম্বর আয়াতের এই শিক্ষাটি শুধু সমাজের জন্য নয়, বরং পরিবার‐পর্যায়ের নৈতিক কাঠামোর জন্যও অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। সন্তানের মাঝে ন্যায়বিচার রক্ষার মাধ্যমে পরিবারের অভ্যন্তরীণ শান্তি এবং মানসিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ইসলামের অপরিহার্য নীতি।

হাদিসে নোমান ইবনে বশির (রা.) বর্ণনা করেন যে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন সন্তানদের মধ্যে সমান আচরণ করো এবং তাদের প্রতি ইনসাফ করো। এতে বোঝা যায়, সন্তানদের উপহার দেওয়া, আচরণে স্নেহ প্রদর্শন করা কিংবা সাধারণ আচার–আচরণ সবক্ষেত্রেই পুত্র–কন্যার প্রতি সমান আচরণ অপরিহার্য। এই নির্দেশ কেবল একটি নৈতিক শিক্ষা নয়, বরং সমাজে ন্যায় প্রতিষ্ঠার প্রথম ধাপ।

একবার এক সাহাবি তাঁর পুত্রকে কোলে নিয়ে আপন ঊরুর ওপর বসালেন এবং কন্যাকে পাশে বসালেন। তখন নবী করিম (সা.) বিষয়টি লক্ষ্য করে তাঁকে সতর্ক করেন এবং জিজ্ঞেস করেন কেন তুমি উভয়ের সঙ্গে সমান আচরণ করলে না? সাহাবি পরে তাঁর কন্যাকে অন্য ঊরুতেও বসালে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন এখন তুমি ইনসাফ করলে। এতে স্পষ্ট বোঝা যায়, নবী করিম (সা.) চাননি সন্তানদের মনে সামান্যতম বৈষম্যের বোধও তৈরি হোক।

আমাদের সমাজে কন্যাসন্তানকে অনেক সময় অবহেলার দৃষ্টিতে দেখা হয়, যা ইসলামী ন্যায়ের সম্পূর্ণ বিপরীত। অথচ ইসলামে কন্যাসন্তান লালন–পালন, তাদের প্রতি দয়া ও দায়িত্ব পালনকে জান্নাতের নিশ্চয়তার সুসংবাদ দিয়ে সম্মানিত করা হয়েছে। জাবের ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন যার তিনটি কন্যাসন্তান রয়েছে, এবং সে তাদের সুরক্ষা দেয়, ব্যয়ভার বহন করে এবং তাদের সঙ্গে দয়ালু আচরণ করে তার জন্য জান্নাত অবধারিত। কোনো সাহাবি যখন জিজ্ঞেস করেন, কারো যদি দুই কন্যা থাকে? তখন নবী (সা.) বলেন দুই কন্যা হলেও একই প্রতিশ্রুতি।

ইসলাম শুধু কন্যার প্রতি কোমল আচরণ নয়, বরং কঠিন পরিস্থিতিতে কন্যার পাশে দাঁড়ানোকে সর্বোচ্চ সদকা হিসেবে ঘোষণা করেছে। যখন কোনো মেয়ে বিবাহের পর স্বামীর গৃহে সমস্যার কারণে ফিরে আসে, তখন তার বাবা যদি তাকে আশ্রয় দেয়, ব্যয়ভার বহন করে ও যত্ন করে রাসুলুল্লাহ (সা.) এটিকে শ্রেষ্ঠতম দান হিসেবে উল্লেখ করেছেন। সুরাকা ইবনে মালেক (রা.)-কে নবী করিম (সা.) বলেন, স্বামী–পরিত্যক্তা কন্যার দায়িত্ব গ্রহণ করা সবচেয়ে উত্তম দান কারণ তার উপার্জনকারী আর কেউ থাকে না।

সন্তানের লালন–পালনে বৈষম্য, পক্ষপাত অথবা আলাদা আচরণ সমাজে অস্থিরতার বীজ বপন করে। সন্তানেরা মনে করে তারা অবহেলিত বা প্রিয় নয় এই অনুভূতি তাদের ব্যক্তিত্বে দীর্ঘমেয়াদি ক্ষত তৈরি করতে পারে। ইসলামের দৃষ্টিতে পরিবার মানুষের প্রথম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, তাই সেখানে সমান আচরণ নিশ্চিত করা একটি ধর্মীয় ও নৈতিক দায়িত্ব।

এই নির্দেশনাগুলো পরিবারকে আরও মানবিক, ন্যায়ভিত্তিক এবং আদর্শিক সামাজিক কাঠামোতে পৌঁছে দেওয়ার পথ দেখায়। পুত্র–কন্যার প্রতি সমান আচরণ শুধু একটি ধর্মীয় আদর্শ নয়, বরং মানবিকতার সর্বোচ্চ নীতির প্রতিফলন।


ঢাকার আজকের নামাজের সময়সূচি প্রকাশ

ধর্ম ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৫ ১১:০৯:১২
ঢাকার আজকের নামাজের সময়সূচি প্রকাশ
ছবি: সংগৃহীত

আজ শনিবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৫; বাংলা সনের ৩০ কার্তিক ১৪৩২ এবং হিজরি ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭। রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের এলাকার জন্য আজকের নামাজের নির্ধারিত সময়সূচি ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার, বসুন্ধরা, ঢাকার তথ্য অনুযায়ী প্রকাশ করা হলো।

আজকের জুমার নামাজ শুরু হবে সকাল ১১টা ৪৭ মিনিটে। বিকেলের আসরের নামাজের সময় শুরু ৩টা ৩৭ মিনিটে। সন্ধ্যার মাগরিবের আজান হবে ৫টা ১৬ মিনিটে। রাতের ইশা শুরু হবে ৬টা ৩২ মিনিটে। আগামীকাল রবিবার ফজরের সময় শুরু হবে ভোর ৪টা ৫৯ মিনিটে।

এ ছাড়া আজ ঢাকায় সূর্যাস্ত হবে ৫টা ১৫ মিনিটে এবং আগামীকাল সূর্যোদয় হবে সকাল ৬টা ০৯ মিনিটে।


১৪ নভেম্বরের নামাজের পূর্ণ সময়সূচি: জানুন আজকের সব ওয়াক্ত

ধর্ম ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৪ ১০:৪২:২৮
১৪ নভেম্বরের নামাজের পূর্ণ সময়সূচি: জানুন আজকের সব ওয়াক্ত
ছবি: সংগৃহীত

রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের এলাকার আজ শুক্রবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৫-এর দৈনিক নামাজের সময়সূচি প্রকাশ করেছে বসুন্ধরাস্থ ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার। ইসলামিক ক্যালেন্ডার অনুযায়ী আজ ২৯ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ এবং ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭ হিজরি। মুসল্লিদের সুবিধার্থে কেন্দ্রটি দিনের পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের নির্ধারিত সময়সূচি জানিয়েছে।

আজ জুমার নামাজ শুরু হবে সকাল ১১টা ৪৬ মিনিটে। আসরের ওয়াক্ত শুরু হবে বিকেল ৩টা ৩৭ মিনিটে। মাগরিবের সময় নির্ধারিত হয়েছে সন্ধ্যা ৫টা ১৭ মিনিটে। এশার নামাজ শুরু হবে সন্ধ্যা ৬টা ৩৩ মিনিটে। পরবর্তী দিনের প্রথম নামাজ ফজর শুরু হবে ভোর ৪টা ৫৯ মিনিটে।

আবহাওয়ার তথ্য অনুযায়ী, আজ ঢাকায় সূর্যাস্ত হবে সন্ধ্যা ৫টা ১৫ মিনিটে এবং আগামীকাল সূর্যোদয় হবে সকাল ৬টা ০৯ মিনিটে। সময়সূচিটি দৈনিক ধর্মীয় পালন, মসজিদ পরিচালনা, নামাজের প্রস্তুতি ও দৈনন্দিন জীবনযাত্রার সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ বলে জানিয়েছে ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার।


মি‘রাজ রজনীতে নবী (সা.)-এর বাহন বুরাকের বিস্ময়কর কাহিনি

ধর্ম ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১২ ১৮:৫১:২৬
মি‘রাজ রজনীতে নবী (সা.)-এর বাহন বুরাকের বিস্ময়কর কাহিনি
ছবি: সংগৃহীত

বুরাক (আরবি: البُراق) শব্দটি এসেছে আরবি শব্দ “বারক” (برق) থেকে। এর অর্থ বিদ্যুৎ বা বিজলী। বিদ্যুতের মতোই বুরাকের গতি ছিল অতুলনীয় দ্রুত। ইসলামী বিশ্বাস অনুযায়ী, এই স্বর্গীয় প্রাণীটিই ছিল সেই বাহন, যার ওপর আরোহন করেছিলেন প্রিয় নবী মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মি‘রাজের রজনীতে।

এই রাতে নবী (সা.) পৃথিবী থেকে আকাশে যাত্রা করেছিলেন, মক্কা থেকে বায়তুল মুকাদ্দাস (জেরুজালেম), এবং সেখান থেকে ঊর্ধ্বাকাশে আল্লাহর সান্নিধ্যে পৌঁছেছিলেন। এই অলৌকিক যাত্রার বাহন হিসেবেই বুরাকের নাম ইতিহাসে অমর হয়ে আছে।

‘বুরাক’ শব্দের তাৎপর্য ও কুরআনিক ইঙ্গিত

“বারক” শব্দটি আল-কুরআনে পাঁচবার উল্লেখ করা হয়েছে। এই আয়াতগুলো পাওয়া যায় সূরা বাকারাহ (১৯ ও ২০ আয়াত), সূরা রা‘দ (১২ আয়াত), সূরা রূম (২৪ আয়াত) এবং সূরা নূর (৪৩ আয়াতে)। প্রতিটি জায়গায় “বারক” শব্দটি আলোর ঝলক বা বিদ্যুতের গতির প্রতীক হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে।

অনেকে মনে করেন, মহানবী (সা.)-এর নাম “মুহাম্মদ”-এ যেমন পাঁচটি বর্ণ আছে, তেমনি “বারক” শব্দটিও পাঁচবার এসেছে এ যেন এক আধ্যাত্মিক ইঙ্গিত। সূরা ইনশিরাহে আল্লাহ তাআলা ঘোষণা করেছেন: “আর আমি তোমার যিকিরকে উচ্চ মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করেছি” (সূরা ইনশিরাহ: ৪)।

এ থেকে বোঝা যায়, আল্লাহ তাআলা তাঁর প্রিয় নবীর সম্মানকে এমনভাবে বর্ধিত করেছেন যে, এমনকি বুরাকের নামের সঙ্গেও রয়েছে সেই ঐশ্বরিক সাদৃশ্য।

বুরাকের আকার-আকৃতি ও বৈশিষ্ট্য

হাদীস শরীফে বুরাকের চেহারা ও গঠন সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা পাওয়া যায়। সহিহ বুখারী ও সহিহ মুসলিমে আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত- “আমার নিকট বুরাক নিয়ে আসা হলো। বুরাক এক সাদা চতুষ্পদ প্রাণী, গাধার চেয়ে বড় এবং খচ্চর থেকে ছোট। তার দৃষ্টির শেষ সীমায় সে তার পা রাখে।” এই হাদিস থেকে বোঝা যায়, বুরাকের গতি বিদ্যুতের মতোই দ্রুত। সে যতদূর দেখতে পারে, ততদূর পর্যন্ত এক পদক্ষেপেই পৌঁছে যায়।

বুরাকের গতি ও চলার ধরন

ইসলামী বর্ণনায় বুরাককে বর্ণনা করা হয়েছে এমন এক প্রাণী হিসেবে, যার গতি আলোর গতির কাছাকাছি। অর্থাৎ, তার এক পদক্ষেপ পৃথিবী থেকে আকাশ পর্যন্ত পৌঁছে যায়। এই বর্ণনা আধুনিক কালের আলোচনায়ও প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে, কারণ “বারক” বা বিদ্যুৎ-শব্দটি বুরাকের গতির সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত। বুরাকের নামের মধ্যেই আছে সেই গতি ও শক্তির ধারণা যা আল্লাহর সৃষ্টি ক্ষমতারই প্রকাশ।

বুরাকের সৃষ্টি ও অস্তিত্ব সম্পর্কে আলেমদের মত

অনেক ইসলামি পণ্ডিতের মতে, বুরাক কোনো সাধারণ প্রাণী নয়। এটি এক বিশেষ সৃষ্ট প্রাণী, যাকে শুধুমাত্র মি‘রাজের রাতে সৃষ্টি করা হয়েছিল। এই মত অনুসারে, বুরাকের অস্তিত্ব কেবল সেই অলৌকিক ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কিত, এবং অন্য কোনো নবী বা রাসূলের জীবনে এর কোনো উল্লেখ নেই। অর্থাৎ, এটি নবী (সা.)-এর জন্যই বিশেষভাবে নির্ধারিত এক ঐশ্বরিক বাহন।

ইমাম সুহাইলীর ব্যাখ্যা ও বুরাকের লজ্জা

ইমাম সুহাইলী (রহ.) তাঁর ব্যাখ্যায় উল্লেখ করেছেন, যখন নবী (সা.) বুরাকে আরোহণ করতে চাইলেন, তখন বুরাক লজ্জায় সামান্য ইতস্তত করেছিল। তখন ফেরেশতা জিবরাঈল (আঃ) বুরাককে উদ্দেশ্য করে বলেন, “হে বুরাক, তুমি কি জানো, আজ তোমার পিঠে যিনি আরোহণ করবেন, আল্লাহর কাছে তাঁর চেয়ে মর্যাদাবান আর কেউ নেই?”

এই কথা শুনে বুরাক ঘর্মাক্ত হয়ে শান্ত হয়ে যায়। এতে বোঝা যায়, বুরাক কোনো নির্জীব বস্তু নয় বরং এক অনুভূতিশীল ও বুদ্ধিদীপ্ত সত্তা, যা আল্লাহর নির্দেশে নিয়ন্ত্রিত।

মি‘রাজের যাত্রা ও বুরাকের ভূমিকা

নবী করিম (সা.) বুরাকের পিঠে চড়ে প্রথমে মক্কা থেকে বায়তুল মুকাদ্দাসে যান। সেখানে নবীগণের সঙ্গে নামাজ আদায় করেন, এরপর ঊর্ধ্বলোকে যাত্রা করেন। বায়তুল মুকাদ্দাসে পৌঁছে তিনি বুরাককে সেই খুঁটির সঙ্গে বেঁধেছিলেন, যেখানে পূর্ববর্তী নবীরাও তাঁদের বাহন বেঁধেছিলেন। এটি নবুওতের ঐক্য ও ধারাবাহিকতার প্রতীক হিসেবে ইসলামী ঐতিহ্যে অমর হয়ে আছে।

বুরাকের আধ্যাত্মিক ব্যাখ্যা ও রুহানী প্রতীক

অনেক সুফি ও ইসলামী পণ্ডিত বুরাককে এক ধরনের “আলোর বাহন” হিসেবে ব্যাখ্যা করেছেন। তাদের মতে, বুরাক ছিল সেই নূরের মাধ্যম, যার দ্বারা নবী (সা.)-এর আত্মা ও দেহ উভয়ই আল্লাহর সান্নিধ্যে পৌঁছেছিল। এ ধারণা অনুযায়ী, বুরাক কেবল এক বাস্তব প্রাণী নয় বরং আত্মার ঊর্ধ্বগতির প্রতীক। এটি মানুষের আধ্যাত্মিক উত্থান ও আল্লাহর নিকটে পৌঁছার প্রতীকী বাহন হিসেবেও দেখা হয়।

‘পাঁচ’ সংখ্যার রহস্য ও মি‘রাজের প্রতীকী তাৎপর্য

মি‘রাজ ও বুরাকের ঘটনাবলিতে “পাঁচ” সংখ্যার এক রহস্যময় সাদৃশ্য রয়েছে। “বারক” শব্দটি কুরআনে পাঁচবার এসেছে। নবী (সা.)-এর নাম “মুহাম্মদ”-এ রয়েছে পাঁচটি বর্ণ। “মি‘রাজ” শব্দেও রয়েছে পাঁচটি অক্ষর।

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, এই মি‘রাজের রাতেই মুসলমানদের ওপর ফরজ করা হয় পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ। যেন প্রতিটি নামাজই মানুষের জন্য এক এক মি‘রাজ আল্লাহর সঙ্গে আত্মিক যোগাযোগের এক পবিত্র মাধ্যম।

বুরাক ও মি‘রাজ: নবুওতের মহিমা

মি‘রাজ ছিল এমন এক ঘটনা, যা কোনো নবী বা রাসূলের জীবনে আগে কখনও ঘটেনি। তাই বুরাকের উপস্থিতি নবী (সা.)-এর মর্যাদারই প্রতীক। এই যাত্রা ছিল দেহ ও আত্মা উভয়ের মিলিত উত্থান। বুরাক ছিল সেই মাধ্যম, যা নবীকে দুনিয়ার সীমা ছাড়িয়ে আকাশের সীমানা পর্যন্ত পৌঁছে দিয়েছিল।

বুরাক ইসলামী ইতিহাসে এক অলৌকিক নাম। এটি কেবল এক প্রাণী নয়, বরং বিশ্বাস, আধ্যাত্মিকতা এবং নবুওতের গৌরবের প্রতীক। যেমন বিদ্যুৎ মুহূর্তে আকাশ চিরে আলোর রেখা ফেলে, তেমনি বুরাকও সেই “আলোর বাহন” যা মাটির সীমা ভেঙে আকাশের সীমানা ছুঁয়েছিল।

তাই মুসলমানদের কাছে বুরাক শুধু ইতিহাস নয়, বরং ঈমানের অংশ—যা মনে করিয়ে দেয়, আল্লাহর ইচ্ছা হলে অসম্ভবও সম্ভব।


মিসরের কায়রোতে আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় প্রথম বাংলাদেশের হুমায়রা মাসুদ

ধর্ম ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১২ ১৮:১৪:৩৬
মিসরের কায়রোতে আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় প্রথম বাংলাদেশের হুমায়রা মাসুদ
অন্য বিজয়ীদের সঙ্গে বাংলাদেশি তরুণী হুমায়রা মাসুদ | ছবি : সংগৃহীত

বাংলাদেশের তরুণী হুমায়রা মাসুদ মিসরের রাজধানী কায়রোতে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় মেয়েদের বিভাগে প্রথম স্থান অর্জন করে ইতিহাস গড়েছেন। ছেলেরা যেমন বৈশ্বিক পরিসরে কোরআন তেলাওয়াত ও হিফজ প্রতিযোগিতায় লাল-সবুজের পতাকা ওড়াচ্ছেন, সেই ধারাবাহিকতায় এবার সুনাম অক্ষুণ্ন রাখলেন হুমায়রা।

মঙ্গলবার ১১ নভেম্বর কায়রোতে 'ইন্দোনেশিয়ান কোরআন রিসাইটারস অ্যাসোসিয়েশন' আয়োজিত প্রতিযোগিতার সমাপনী অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে মেয়েদের গ্রুপে প্রথম স্থান অধিকারী হিসেবে হুমায়রার নাম ঘোষণা করে আয়োজক কমিটি।

প্রতিযোগিতার ফলাফল

প্রতিযোগিতায় ১২টি দেশের মোট ১৪৩ জন প্রতিযোগী অংশ নেন। মেয়েদের জন্য নির্ধারিত বিভাগে প্রথম হন হুমায়রা মাসুদ।

প্রথম স্থান: হুমায়রা মাসুদ (বাংলাদেশ)

দ্বিতীয় স্থান: আয়েশা ইজ্জত মুসলিমা (ইন্দোনেশিয়া)

তৃতীয় স্থান: কায়রানি নফসুল মুতমাইন্না (ইন্দোনেশিয়া)

অন্যদিকে, ছেলেদের বিভাগে প্রথম স্থান অর্জন করেন বশির উসমান ইমাম (নাইজেরিয়া)। বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন আল-আজহার মসজিদের ইমাম ও ক্বারী শায়খ ফাওযী আল-বারবারী আজহারি।

হুমায়রার পরিচিতি ও অর্জন

হুমায়রা মাসুদের বাড়ি চাঁদপুর জেলার হাইমচর থানার চর ভৈরবী গ্রামে। বর্তমানে তিনি মিসরের বিখ্যাত আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক থিওলজি অনুষদে অধ্যয়নরত। মেধাবী এই তরুণী নারায়ণগঞ্জের উম্মে আইমান (রা) আন্তর্জাতিক বালিকা মাদ্রাসা থেকে হিফজ এবং জামিয়া ইব্রাহিমিয়া আমিনিয়া মহিলা মাদ্রাসা থেকে দাওরা হাদিস সম্পন্ন করেছেন।

এর আগেও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে উজ্জ্বল সাফল্য পেয়েছেন হুমায়রা মাসুদ। ২০১০ সালে জর্ডানে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় তিনি দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেন। আর ২০২৫ সালে মিসরের ওয়াক্ফ মন্ত্রণালয় আয়োজিত ৩১তম আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় অনারবদের জন্য নির্ধারিত বিভাগে পঞ্চম হন তিনি।

স্বামীর উচ্ছ্বাস ও মন্তব্য

স্ত্রীর এমন ঐতিহাসিক সাফল্যে উচ্ছ্বসিত হুমায়রার স্বামী মাওলানা মাসুম বিল্লাহ গুলজার আজহারি। তিনি বলেন:

"তার এই অর্জন নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের জন্য গৌরবের। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে কোরআন তেলাওয়াতে বাংলাদেশের মেয়েদের এমন সাফল্য আমাদের ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের উজ্জ্বল প্রতিফলন।"

তিনি আরও বলেন, হুমায়রা প্রমাণ করেছেন, বাংলাদেশের মেয়েরাও বৈশ্বিক পরিসরে কোরআনের খেদমতে অগ্রণী ভূমিকা রাখতে পারেন।


আজ বুধবার ১২ নভেম্বর: ঢাকার নামাজের সময়সূচি

ধর্ম ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১২ ০৯:৪১:৫৯
আজ বুধবার ১২ নভেম্বর: ঢাকার নামাজের সময়সূচি
ছবি: সংগৃহীত

আজ বুধবার, ১২ নভেম্বর ২০২৫, বাংলা তারিখ অনুযায়ী ২৭ কার্তিক ১৪৩২ এবং হিজরি ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭। রাজধানী ঢাকা ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকার মুসল্লিদের জন্য আজকের নামাজের সময়সূচি প্রকাশ করেছে ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার, বসুন্ধরা, ঢাকা।

আজকের নামাজের সময় অনুযায়ী, জোহর শুরু হবে সকাল ১১টা ৪৬ মিনিটে, আসর শুরু হবে বিকেল ৩টা ৩৮ মিনিটে, মাগরিবের আজান হবে ৫টা ১৭ মিনিটে, এবং এশার নামাজের সময় শুরু হবে সন্ধ্যা ৬টা ৩৩ মিনিটে। অন্যদিকে, আগামীকাল বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) ফজরের নামাজ শুরু হবে ভোর ৪টা ৫৮ মিনিটে।

আজ সূর্যাস্তের সময় ৫টা ১৫ মিনিট, আর আগামীকাল সূর্যোদয় হবে সকাল ৬টা ০৯ মিনিটে।

ইসলামিক রিসার্চ সেন্টারের দিকনির্দেশনা অনুযায়ী, এই সময়সূচি শুধু ঢাকা ও আশপাশের এলাকাগুলোর জন্য প্রযোজ্য। দেশের অন্যান্য অঞ্চলে নামাজের সময় ভৌগোলিক অবস্থান অনুসারে কয়েক মিনিট তারতম্য হতে পারে। বিশেষ করে উত্তরাঞ্চলে সূর্যাস্ত কিছুটা আগে হয়, আর দক্ষিণাঞ্চলে পরে। তাই মুসল্লিদের অনুরোধ করা হয়েছে স্থানীয় মসজিদ বা ইসলামিক কেন্দ্রের ঘোষণার সঙ্গে সময় মিলিয়ে নামাজ আদায় করতে।


জেনে নিন বৃহস্পতিবারের সদাকাহর গোপন রহমত

ধর্ম ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১০ ১৮:৪৫:০২
জেনে নিন বৃহস্পতিবারের সদাকাহর গোপন রহমত
ছবি: সংগৃহীত

ইসলামে সদাকাহ বা দান কেবল অর্থ ব্যয়ের বিষয় নয়, এটি আত্মাকে পরিশুদ্ধ করার এক মহান ইবাদত। পবিত্র কুরআন ও হাদীসে বারবার উল্লেখ আছে, সদাকাহ মানুষকে গুনাহ থেকে মুক্তি দেয়, রিজিক বৃদ্ধি করে, দুঃখ-দুর্দশা দূর করে এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের অন্যতম মাধ্যম। বিশেষত বৃহস্পতিবার রাতে বা বৃহস্পতিবার দিনে সদাকাহ প্রদান ইসলামী ঐতিহ্যে অতিরিক্ত ফজিলতপূর্ণ বলে বিবেচিত।

রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন “সোমবার ও বৃহস্পতিবার দিনে বান্দাদের আমলসমূহ আল্লাহর দরবারে পেশ করা হয়।” (তিরমিযী, হাদীস: ৭৪৭) অর্থাৎ এই দুই দিনে বান্দার আমলসমূহ আল্লাহর সামনে উপস্থাপিত হয়, এবং যাদের মধ্যে দ্বেষ, হিংসা বা সম্পর্কচ্ছেদ নেই, তাদের ক্ষমা ঘোষণা করা হয়। ফলে বৃহস্পতিবার রাতে সদাকাহ করা মানে নিজের আমলকে আল্লাহর দরবারে উপস্থাপনের আগে পবিত্র করা যেন তা রহমত ও মাফের যোগ্য হয়।

কুরআনের ভাষায়, “তোমরা যা কিছু আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় করো, তিনি তার বদলা দেবেন।” (সূরা সাবা: ৩৯) এই আয়াতে আল্লাহ আশ্বাস দিয়েছেন যে তাঁর রাস্তায় ব্যয় করা প্রতিটি দানই বহুগুণে প্রতিদান লাভ করে। বৃহস্পতিবার রাতের সদাকাহ তাই শুধু অর্থনৈতিক সাহায্য নয়, বরং এটি আত্মার প্রশান্তি, জীবনের সংকট থেকে মুক্তি এবং রিজিক বৃদ্ধির দোয়ার এক মাধ্যম।

ইসলামী পণ্ডিতগণ বলেন, সদাকাহ আল্লাহর রাগ প্রশমিত করে, বিপদ ও রোগ থেকে রক্ষা করে, আর মানবসম্পর্কে করুণা ও ভ্রাতৃত্ববোধ জাগিয়ে তোলে। বৃহস্পতিবার রাতে সদাকাহর এই গুরুত্ব আরও বৃদ্ধি পায় কারণ এটি এমন এক সময়, যখন আল্লাহর দরবারে আমল উপস্থাপনের প্রস্তুতি চলে যেন বান্দার নাম আমলনামায় কল্যাণের চিহ্নে উজ্জ্বল হয়।

তাছাড়া, বৃহস্পতিবার রাতে দান করলে তা পরের শুক্রবারের জুমা দিবসের প্রস্তুতিও হিসেবে ধরা হয়। কারণ, ইসলামী দৃষ্টিতে জুমার আগের রাত আত্মসমালোচনা ও ইবাদতের জন্য বিশেষ সময়। তাই এ রাতে দান করা মানে সপ্তাহের সেরা দিনে নিজের আত্মাকে ও সম্পদকে কল্যাণে উৎসর্গ করা।সদাকাহ কেবল ধনীদের দায়িত্ব নয়; সামর্থ্য অনুযায়ী প্রতিটি মানুষই দান করতে পারে তা অর্থ, খাদ্য, পোশাক কিংবা সদয় আচরণ যাই হোক না কেন। হাদীসে এসেছে, “হাসিমুখে ভাইয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করাও সদাকাহ।” (তিরমিযী) অর্থাৎ সদাকাহর পরিধি বিস্তৃত, এবং এর মাধ্যমে সমাজে ভালোবাসা, সহযোগিতা ও ন্যায়বোধ প্রতিষ্ঠিত হয়।

অতএব, বৃহস্পতিবার রাতে সদাকাহর ফজিলত শুধু দুনিয়াবি বরকতের নয়, বরং আখিরাতের সওয়াবেরও নিশ্চয়তা। এটি এমন এক ইবাদত যা অদৃশ্যভাবে বান্দার জন্য মঙ্গল বয়ে আনে, মন থেকে হিংসা ও স্বার্থপরতা দূর করে, এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের পথ উন্মুক্ত করে।

পাঠকের মতামত:

ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গড়তে হলে রাষ্ট্রকে অবশ্যই তার সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা পুনরুদ্ধার করতে হবে

ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গড়তে হলে রাষ্ট্রকে অবশ্যই তার সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা পুনরুদ্ধার করতে হবে

রাষ্ট্রের ধারণাটি একসময় কেবল প্রশাসনিক ক্ষমতা, আইনের শাসন এবং নিরাপত্তা প্রদানের সঙ্গে সম্পর্কিত ছিল। কিন্তু আধুনিক বিশ্বে রাষ্ট্রের ভূমিকা এখন... বিস্তারিত

মনোস্পুলের ইপিএসে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি

মনোস্পুলের ইপিএসে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি

তালিকাভুক্ত কোম্পানি মনোস্পুল প্রথম প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। ২০২৫ সালের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর সময়ের প্রতিবেদনে দেখা যায়, কোম্পানির... বিস্তারিত