বিবাহিত ব্যক্তির নামাজ অবিবাহিত ব্যক্তির চেয়ে ৭০ গুণ উত্তম—কথাটা কি সত্যি?

বিয়ে মানুষকে শালীন, পবিত্র ও পরিপূর্ণ জীবনযাপনের পথে নিয়ে যায়। ইসলামে বিয়েকে একটি গুরুত্বপূর্ণ ও বরকতময় ইবাদত হিসেবে গণ্য করা হয়। নবী কারিম (সা.) বলেছেন, “হে যুবসমাজ, তোমাদের মধ্যে যার বিয়ের সামর্থ্য আছে, তার বিয়ে করা উচিত... আর যার সামর্থ্য নেই, সে যেন রোজা রাখে।” (বোখারি : ৫০৬৫, মুসলিম : ১৪০০) এই হাদিস থেকে বোঝা যায়, সামর্থ্য হলে দেরি না করে বিয়ে করা উত্তম।
বিয়ের কথা সামনে এলেই আমাদের সমাজে একটি বহুল প্রচলিত কথা শোনা যায়—‘বিবাহিত ব্যক্তির নামাজ অবিবাহিত ব্যক্তির চেয়ে ৭০ গুণ উত্তম।’ অনেক ওয়াজ মাহফিলেও কিছু বক্তা এমনটা বলে থাকেন। কিন্তু এই কথাটি কি আসলেই হাদিস-সম্মত? চলুন, এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ আলেমদের বক্তব্য জেনে নিই।
বিশেষজ্ঞ আলেমদের বক্তব্য
ফুকাহায়ে কেরাম (ইসলামী আইনজ্ঞরা) বলেন, নামাজ হলো দ্বীনের স্তম্ভ এবং ইবাদতের শ্রেষ্ঠতম রূপ। তবে, ‘বিবাহিত ব্যক্তির ২ রাকাত নামাজ অবিবাহিত ব্যক্তির ৭০ রাকাত নামাজের চেয়েও উত্তম’—এই কথাটি সঠিক নয়। হাদিসে এর কোনো ভিত্তি নেই।
জনপ্রিয় ইসলামি স্কলার মুফতি রেজাউল করীম আবরার বলেন, সমাজে প্রচলিত এই কথাটি ‘চরম আপত্তিকর’ এবং এটি সম্পূর্ণ জাল হাদিস (বিশুদ্ধ নয়)।
আলেমদের মত: তিনি বলেন, “হাদিসে বিয়ের অনেক ফজিলতের কথা বলেছেন রাসুল (সা.)। কিন্তু কোনো জিনিসের ফজিলত বর্ণনা করতে গিয়ে কখনোই কোনো জাল বর্ণনা দিয়ে দলিল দেওয়া যাবে না।” ইমাম উকাইলি (রাহি.), ইমাম ইবনুল জাওজি, ইমাম তাহের পাটনি এবং ইমাম আল্লামা শাওকানিসহ সব উলামায়ে কেরাম এই বর্ণনাকে জাল হাদিস বলে আখ্যায়িত করেছেন।
অতএব, বিয়ে করা গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত হলেও, এর ফজিলত ব্যাখ্যা করতে জাল হাদিস দিয়ে দলিল দেওয়া উচিত নয়।
জানাজার নিয়ত, দোয়া ও তাকবির: সহজ নির্দেশনা
ইসলামের দৃষ্টিতে মানুষের জীবন যেমন পবিত্র, তেমনি মৃত্যুর পর তার মর্যাদাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কোনো মুসলমান মৃত্যুবরণ করলে তার গোসল, কাফন, জানাজা ও দাফনের দায়িত্ব জীবিত মুসলমানদের ওপর ফরজে কিফায়া হিসেবে বর্তায়। অর্থাৎ সমাজের কিছু মানুষ এই দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করলে অন্যরা দায়মুক্ত হয়, কিন্তু কেউ এগিয়ে না এলে পুরো সমাজ গুনাহের অংশীদার হয়। এ কারণে জানাজার কাজ বিলম্ব না করে দ্রুত সম্পন্ন করার ওপর শরিয়তে বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মুসলমানদের পারস্পরিক সম্পর্ককে দায়িত্ব ও সহানুভূতির ভিত্তিতে গড়ে তুলেছেন। হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (সা.) ছয়টি মৌলিক অধিকারের কথা উল্লেখ করেন। এর মধ্যে মৃত্যুর পর জানাজায় শরিক হওয়াকে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধিকার হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এতে বোঝা যায়, জানাজায় অংশগ্রহণ শুধু সামাজিক সৌজন্য নয়, বরং একটি স্পষ্ট ধর্মীয় দায়িত্ব।
জানাজার নামাজ অন্যান্য নামাজের মতো নয়। এতে রুকু, সিজদা বা কায়দা নেই। চার তাকবিরের মাধ্যমে এই নামাজ আদায় করা হয়। প্রথম তাকবিরে হাত তুলে নিয়ত বাঁধা হয়, এরপর বাকি তাকবিরগুলোতে হাত তোলা হয় না। জানাজার নামাজে মূলত তিনটি বিষয় গুরুত্ব পায়—আল্লাহ তায়ালার প্রশংসা, রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর ওপর দরুদ পাঠ এবং মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া।
নিয়ত জানাজার নামাজের একটি অপরিহার্য অংশ। আরবি ভাষায় নিয়ত করা উত্তম হলেও কেউ আরবি না জানলে নিজের ভাষায় নিয়ত করলেও নামাজ শুদ্ধ হয়ে যায়। নিয়তের মূল বিষয় হলো, চার তাকবিরের সঙ্গে ফরজে কিফায়া জানাজার নামাজ আদায় করা এবং নির্দিষ্ট মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া করা। মৃত ব্যক্তি পুরুষ হলে নিয়তে ‘লিহাযাল মাইয়্যেতি’ এবং নারী হলে ‘লিহাযিহিল মাইয়্যেতি’ বলা হয়—এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পার্থক্য।
প্রথম তাকবিরের পর ‘সানা’ পাঠ করা হয়, যেখানে আল্লাহ তায়ালার পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করা হয়। দ্বিতীয় তাকবিরের পর দরুদ শরিফ পাঠ করা হয়, যা সাধারণ নামাজে তাশাহুদের পর পড়া দরুদের মতোই। এটি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর প্রতি সম্মান ও ভালোবাসার প্রকাশ।
তৃতীয় তাকবিরের পর জানাজার মূল দোয়া পাঠ করা হয়। এই দোয়ায় জীবিত ও মৃত সকল মুসলমানের জন্য ক্ষমা, রহমত ও ঈমানের ওপর মৃত্যুর আবেদন জানানো হয়। এটি জানাজার নামাজের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ, কারণ পুরো নামাজের উদ্দেশ্যই হলো মৃত ব্যক্তির জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করা।
নাবালক ছেলে বা মেয়ের জানাজার ক্ষেত্রে দোয়ার ভাষা ভিন্ন। শিশুদের জন্য পড়া দোয়ায় তাদেরকে পিতা-মাতার জন্য সওয়াবের উৎস, অগ্রদূত এবং কিয়ামতের দিন সুপারিশকারী হিসেবে কবুল করার প্রার্থনা করা হয়। এটি ইসলামে শিশুর প্রতি বিশেষ করুণা ও মানবিক দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন।
চতুর্থ তাকবিরের পর সামান্য নীরবতা পালন করে ডান ও বাম দিকে সালাম ফিরিয়ে জানাজার নামাজ শেষ করা হয়। উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, জানাজার নামাজ জামাতে আদায় করা হয় এবং এর কোনো কাজা নেই। কেউ দেরিতে এলে ইমামের সঙ্গে যে অবস্থায় পান সেখান থেকেই নামাজে শরিক হবেন এবং ইমামের সালামের সঙ্গে নামাজ শেষ করবেন।
ইসলামী বিধান অনুযায়ী জানাজার নামাজের পর দাফন দ্রুত সম্পন্ন করা সুন্নত। অহেতুক বিলম্ব করা অনুচিত। দাফনের সময় মৃত ব্যক্তিকে কিবলামুখী করে কবরে শোয়ানো হয় এবং দোয়ার মাধ্যমে তার জন্য আল্লাহর রহমত কামনা করা হয়।
জানাজার নিয়ত, দোয়া ও তাকবির: সহজ নির্দেশনা
ইসলামের দৃষ্টিতে মানুষের জীবন যেমন পবিত্র, তেমনি মৃত্যুর পর তার মর্যাদাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কোনো মুসলমান মৃত্যুবরণ করলে তার গোসল, কাফন, জানাজা ও দাফনের দায়িত্ব জীবিত মুসলমানদের ওপর ফরজে কিফায়া হিসেবে বর্তায়। অর্থাৎ সমাজের কিছু মানুষ এই দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করলে অন্যরা দায়মুক্ত হয়, কিন্তু কেউ এগিয়ে না এলে পুরো সমাজ গুনাহের অংশীদার হয়। এ কারণে জানাজার কাজ বিলম্ব না করে দ্রুত সম্পন্ন করার ওপর শরিয়তে বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মুসলমানদের পারস্পরিক সম্পর্ককে দায়িত্ব ও সহানুভূতির ভিত্তিতে গড়ে তুলেছেন। হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (সা.) ছয়টি মৌলিক অধিকারের কথা উল্লেখ করেন। এর মধ্যে মৃত্যুর পর জানাজায় শরিক হওয়াকে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধিকার হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এতে বোঝা যায়, জানাজায় অংশগ্রহণ শুধু সামাজিক সৌজন্য নয়, বরং একটি স্পষ্ট ধর্মীয় দায়িত্ব।
জানাজার নামাজ অন্যান্য নামাজের মতো নয়। এতে রুকু, সিজদা বা কায়দা নেই। চার তাকবিরের মাধ্যমে এই নামাজ আদায় করা হয়। প্রথম তাকবিরে হাত তুলে নিয়ত বাঁধা হয়, এরপর বাকি তাকবিরগুলোতে হাত তোলা হয় না। জানাজার নামাজে মূলত তিনটি বিষয় গুরুত্ব পায়—আল্লাহ তায়ালার প্রশংসা, রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর ওপর দরুদ পাঠ এবং মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া।
নিয়ত জানাজার নামাজের একটি অপরিহার্য অংশ। আরবি ভাষায় নিয়ত করা উত্তম হলেও কেউ আরবি না জানলে নিজের ভাষায় নিয়ত করলেও নামাজ শুদ্ধ হয়ে যায়। নিয়তের মূল বিষয় হলো, চার তাকবিরের সঙ্গে ফরজে কিফায়া জানাজার নামাজ আদায় করা এবং নির্দিষ্ট মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া করা। মৃত ব্যক্তি পুরুষ হলে নিয়তে ‘লিহাযাল মাইয়্যেতি’ এবং নারী হলে ‘লিহাযিহিল মাইয়্যেতি’ বলা হয়—এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পার্থক্য।
প্রথম তাকবিরের পর ‘সানা’ পাঠ করা হয়, যেখানে আল্লাহ তায়ালার পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করা হয়। দ্বিতীয় তাকবিরের পর দরুদ শরিফ পাঠ করা হয়, যা সাধারণ নামাজে তাশাহুদের পর পড়া দরুদের মতোই। এটি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর প্রতি সম্মান ও ভালোবাসার প্রকাশ।
তৃতীয় তাকবিরের পর জানাজার মূল দোয়া পাঠ করা হয়। এই দোয়ায় জীবিত ও মৃত সকল মুসলমানের জন্য ক্ষমা, রহমত ও ঈমানের ওপর মৃত্যুর আবেদন জানানো হয়। এটি জানাজার নামাজের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ, কারণ পুরো নামাজের উদ্দেশ্যই হলো মৃত ব্যক্তির জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করা।
নাবালক ছেলে বা মেয়ের জানাজার ক্ষেত্রে দোয়ার ভাষা ভিন্ন। শিশুদের জন্য পড়া দোয়ায় তাদেরকে পিতা-মাতার জন্য সওয়াবের উৎস, অগ্রদূত এবং কিয়ামতের দিন সুপারিশকারী হিসেবে কবুল করার প্রার্থনা করা হয়। এটি ইসলামে শিশুর প্রতি বিশেষ করুণা ও মানবিক দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন।
চতুর্থ তাকবিরের পর সামান্য নীরবতা পালন করে ডান ও বাম দিকে সালাম ফিরিয়ে জানাজার নামাজ শেষ করা হয়। উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, জানাজার নামাজ জামাতে আদায় করা হয় এবং এর কোনো কাজা নেই। কেউ দেরিতে এলে ইমামের সঙ্গে যে অবস্থায় পান সেখান থেকেই নামাজে শরিক হবেন এবং ইমামের সালামের সঙ্গে নামাজ শেষ করবেন।
ইসলামী বিধান অনুযায়ী জানাজার নামাজের পর দাফন দ্রুত সম্পন্ন করা সুন্নত। অহেতুক বিলম্ব করা অনুচিত। দাফনের সময় মৃত ব্যক্তিকে কিবলামুখী করে কবরে শোয়ানো হয় এবং দোয়ার মাধ্যমে তার জন্য আল্লাহর রহমত কামনা করা হয়।
আজ ৩১ ডিসেম্বরের নামাজের সময়সূচি
আজ বুধবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫। বছরের শেষ এই দিনে আমাদের চারপাশের ব্যস্ততার মাঝেও আধ্যাত্মিক প্রশান্তি ও সময়মতো ইবাদত পালনের জন্য নামাজের সঠিক সময়সূচি জানা অত্যন্ত জরুরি। আজ ১৬ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ এবং ১০ রজব ১৪৪৭ হিজরি। রাজধানী ঢাকা ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকার জন্য ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার (বসুন্ধরা, ঢাকা) কর্তৃক নির্ধারিত নামাজের সময়সূচি প্রকাশিত হয়েছে।
বছরের শেষ এই দিনটিতে ঢাকায় জোহরের নামাজের সময় শুরু হবে ১২টা ০৫ মিনিটে। বিকেলের আসরের নামাজ শুরু হবে ৩টা ৪৬ মিনিটে। সূর্যাস্তের পরপরই মাগরিবের সময় শুরু হবে ৫টা ২৬ মিনিটে এবং রাতের শেষ ফরজ নামাজ এশার সময় শুরু হবে ৬টা ৪৪ মিনিটে। ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের জন্য বছরের এই শেষ রাতটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ, যা ইবাদত ও আত্মসমালোচনার মধ্য দিয়ে কাটানো শ্রেয়।
আজকের দিনের শেষ সূর্য বিদায় নেবে বিকেল ৫টা ২২ মিনিটে। বছরের শেষ সূর্যাস্তের পর আগামীকাল ২০২৬ সালের প্রথম সূর্যোদয় হবে সকাল ৬টা ৪০ মিনিটে। যারা আগামীকাল বছরের প্রথম ফজরের নামাজ আদায় করতে ইচ্ছুক, তাদের জন্য সময় শুরু হবে ভোর ৫টা ২৪ মিনিটে। উল্লেখ্য যে, দেশের বিভিন্ন স্থানে ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে এই সময়ের সাথে কয়েক মিনিট যোগ বা বিয়োগ হতে পারে। তাই স্থানীয় মসজিদের সাথে সময় মিলিয়ে নেওয়া বুদ্ধিমানের কাজ হবে।
থার্টি ফার্স্ট নাইটে মুসলিমদের করণীয় নিয়ে যা বলেন ইসলামি স্কলাররা
খ্রিস্টীয় ক্যালেন্ডার বা গ্রেগরিয়ান বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী ৩১ ডিসেম্বর দিবাগত রাতে 'থার্টি ফার্স্ট নাইট' উদযাপন আধুনিক বিশ্বে একটি প্রচলিত সংস্কৃতিতে পরিণত হয়েছে। তবে ইসলামি জীবনদর্শনে এই বিজাতীয় সংস্কৃতি অনুসরণ করাকে সরাসরি 'হারাম' ও 'অপসংস্কৃতি' হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন বিশিষ্ট ওলামায়ে কেরাম ও গবেষকরা। ইসলামি শরিয়তের বিধান অনুযায়ী, অন্য কোনো ধর্মের ধর্মীয় বা সাংস্কৃতিক রীতিনীতি মুসলিমদের জন্য পালন করা সম্পূর্ণ অবৈধ।
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেছেন, “যে ব্যক্তি ইসলাম (ইসলামী রীতিনীতি) ছাড়া অন্যকোনো ধর্মের অনুসরণ করবে, কখনো তার সেই আমল গ্রহণ করা হবে না। আর পরকালে সে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে।” (সুরা আল ইমরান, আয়াত ৮৫)। এই আয়াতের আলোকে ইসলামি স্কলাররা বলছেন, থার্টি ফার্স্ট নাইটের মতো উৎসবগুলো মূলত পৌত্তলিক বা বিজাতীয় ধর্মবিশ্বাস থেকে উদ্ভূত, যা একজন মুমিনের বিশ্বাসের সাথে সাংঘর্ষিক। রাসুলুল্লাহ (সা.) এই বিষয়ে কঠোর সতর্কবার্তা দিয়ে বলেছেন, “যে ব্যক্তি অন্য জাতির সঙ্গে আচার-আচরণে, সভ্যতা-সংস্কৃতিতে সামঞ্জস্য গ্রহণ করবে, সে তাদের দলভুক্ত বলে বিবেচিত হবে।” (সুনানে আবু দাউদ, ৪০৩১)।
সম্প্রতি এক জুমার আলোচনায় জনপ্রিয় ইসলামি ব্যক্তিত্ব শায়খ আহমাদুল্লাহ এই উৎসবের ঐতিহাসিক ও নৈতিক ক্ষতির দিকগুলো তুলে ধরেছেন। তিনি জানান যে, প্রাচীন পারস্যের সম্রাট জামশিদ এবং পরবর্তীতে রোমান সম্রাট জুলিয়াস সিজারের হাত ধরে এই নববর্ষের প্রচলন হয়। এটি মূলত খ্রিস্টীয় পোপ গ্রেগরির নামানুসারে প্রবর্তিত একটি উৎসব। শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন, “প্রাচীনকালে পারস্যের প্রকৃতি পূজারিরা বিশ্বাস করত যে বছরের প্রথম দিনটি আনন্দ-ফুর্তিতে কাটালে সারা বছর ভালো যাবে। অথচ এই ধরনের অযৌক্তিক কুসংস্কার আজও আমাদের বিজ্ঞানমনস্ক সমাজের মানুষের মধ্যে গেঁথে আছে।”
ইসলামি দৃষ্টিভঙ্গিতে কোনো উৎসব পালন করতে হলে কোরআন, সুন্নাহ এবং সাহাবায়ে কেরামের আমলের প্রামাণ্যতা থাকা জরুরি। শায়খ আহমাদুল্লাহর মতে, থার্টি ফার্স্ট নাইট উদযাপনে শরিয়তের দুটি মৌলিক শর্ত চরমভাবে লঙ্ঘিত হয়। প্রথমত, এটি একটি বিজাতীয় সংস্কৃতির অন্ধ অনুকরণ। দ্বিতীয়ত, এর মাধ্যমে মানুষের হক বা নাগরিক শান্তি বিঘ্নিত হয়। বিকট শব্দে আতশবাজি ও সাউন্ডবক্স ব্যবহারের ফলে শিশু, বৃদ্ধ ও অসুস্থ রোগীরা চরম স্বাস্থ্যঝুঁকির মুখে পড়েন। এমনকি ফানুসের আগুনে দগ্ধ হওয়ার মতো মর্মান্তিক ঘটনাও প্রতিবছর ঘটে থাকে। এছাড়া পবিত্র কোরআনে অপচয়কারীকে শয়তানের ভাই বলা হয়েছে, অথচ এই রাতে কোটি কোটি টাকা অনর্থক কাজে ব্যয় করা হয়।
নতুন বছরকে স্বাগত জানানো নিয়ে শায়খ আহমাদুল্লাহ মুসলিমদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন যে, একটি নতুন বছর আসা মানে নতুন কিছু পাওয়া নয়, বরং আমাদের জীবন থেকে একটি বছরের পাতা ঝরে যাওয়া এবং মৃত্যুর দিকে আরও এক ধাপ এগিয়ে যাওয়া। তিনি মুমিনদের উদ্দেশ্যে বলেন যে, থার্টি ফার্স্ট নাইটের রাতে নেশা ও উন্মাদনায় মত্ত না হয়ে বরং বিগত জীবনের গুনাহের জন্য মহান আল্লাহর দরবারে তওবা করা এবং আগামী দিনগুলোর জন্য নেক পরিকল্পনা করাই প্রকৃত বুদ্ধিমানের কাজ।
রাতে ঘুমানোর আগে শক্তিশালী আমল জেনে নিন
ইসলামে রাতের ঘুম শুধু শারীরিক বিশ্রাম নয়; এটি আত্মিক নিরাপত্তা, ইমানি সংরক্ষণ এবং আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের এক গুরুত্বপূর্ণ সময়। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঘুমানোর আগে কিছু নির্দিষ্ট আমলের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন, যা বান্দাকে শয়তানের কুমন্ত্রণা, অদৃশ্য বিপদ এবং দুশ্চিন্তা থেকে হেফাজত করে। নিয়মিত এসব আমল পালনের মাধ্যমে একজন মুমিন শান্ত ঘুম, অন্তরের প্রশান্তি এবং আল্লাহর রহমত লাভ করতে পারেন।
ঘুমের আগে সর্বপ্রথম যে আমলটি গুরুত্বপূর্ণ, তা হলো আয়াতুল কুরসি একবার পাঠ করা। হাদিসে এসেছে, যে ব্যক্তি এটি পড়ে ঘুমায়, তার ওপর আল্লাহর পক্ষ থেকে একজন ফেরেশতা পাহারা দেন এবং শয়তান সকাল পর্যন্ত তার কাছে আসতে পারে না।
এরপর ইস্তেগফার অন্তত ১০০ বার পাঠ করা উত্তম। “আস্তাগফিরুল্লাহ” বান্দার গুনাহ মোচন করে, অন্তর পরিষ্কার করে এবং দিনের অজান্তে হওয়া ভুলের জন্য আল্লাহর ক্ষমা প্রার্থনার সুযোগ দেয়। অনেক আলেম ঘুম না আসা পর্যন্ত ইস্তেগফারে লিপ্ত থাকার পরামর্শ দিয়েছেন।
ঘুমানোর আগে সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক ও সূরা নাস প্রতিটি তিনবার পড়ে শরীরে ফুঁ দেওয়া সুন্নত। এটি জাদু, হিংসা, বদনজর ও অশুভ শক্তি থেকে সুরক্ষার জন্য অত্যন্ত কার্যকর আমল।
এরপর দরুদ শরিফ অন্তত ১০ বার পাঠ করা হৃদয়কে নরম করে এবং রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সঙ্গে আত্মিক সংযোগ দৃঢ় করে। দরুদের মাধ্যমে দোয়া কবুলের সম্ভাবনাও বৃদ্ধি পায়।
রাতে ঘুমানোর আগে তাসবিহে ফাতিমা আদায় করা সুন্নত। অর্থাৎ সুবহানাল্লাহ ৩৩ বার, আলহামদুলিল্লাহ ৩৩ বার এবং আল্লাহু আকবার ৩৩ বার পাঠ করা। এটি দৈহিক ক্লান্তি দূর করে এবং অন্তরে শক্তি সঞ্চার করে।
অনেক আলেম ঘুমের আগে বিসমিল্লাহ ২১ বার পাঠ করার কথা উল্লেখ করেছেন, যা অশুভ প্রভাব থেকে রক্ষাকবচ হিসেবে কাজ করে। পাশাপাশি লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ ১০০ বার পাঠ করা ইমানকে নবায়ন করে।
রাতে শুয়ে সূরা মুলক সম্পূর্ণ পাঠ করলে কবরের আজাব থেকে রক্ষা পাওয়ার সুসংবাদ রয়েছে। এ ছাড়া সূরা কাফিরুন একবার পাঠ করা শিরকের প্রভাব থেকে মুক্ত থাকার প্রতীক।
ঘুমানোর আগে সূরা ফাতিহা ও কালেমা তামজিদ চারবার এবং সূরা ইখলাস ও দরুদ শরিফ তিনবার পাঠ করাও আত্মিক প্রশান্তির জন্য উপকারী।
বিশেষ একটি ক্ষমাপ্রার্থনার দোয়া-
“আস্তাগফিরুল্লাহাল্লাজি লা ইলাহা ইল্লা হুয়াল হাইয়্যুল কাইয়্যুম ওয়া আতুবু ইলাইহি, লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহিল আলিয়্যিল আজিম”
এটি ১০ বার পাঠ করলে অন্তরের ভার হালকা হয় এবং আল্লাহর দিকে প্রত্যাবর্তনের অনুভূতি জাগ্রত হয়।
ঘুমানোর শারীরিক সুন্নতের মধ্যে রয়েছে ডান কাতে শোয়া, ওজু করে ঘুমাতে যাওয়া এবং ঘুমের নির্দিষ্ট দোয়া পাঠ করা। এসব আমল একজন মুসলমানকে ইবাদতের অবস্থায় ঘুমাতে সহায়তা করে।
সবশেষে, ঘুমানোর আগে মৃত মুসলিমদের জন্য দোয়া করা এবং সবার প্রতি অন্তর থেকে ক্ষমা করে দেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি হৃদয়ের হিংসা, বিদ্বেষ ও রাগ দূর করে এবং শান্তিপূর্ণ ঘুম নিশ্চিত করে।
আজ ২৯ ডিসেম্বরের নামাজের সময়সূচি
ইসলামের পাঁচটি রুকনের মধ্যে নামাজ অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। মহানবী (সা.) এর হাদিস অনুযায়ী, কিয়ামতের দিন বান্দার আমলের মধ্যে সর্বপ্রথম নামাজের হিসাব নেওয়া হবে। পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ নামাজ নির্দিষ্ট সময়ে আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যিক। আজ সোমবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫ (১৪ পৌষ ১৪৩২ বাংলা, ৮ রজব ১৪৪৭ হিজরি)—আপনার ইবাদতকে সহজ করতে ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার জন্য আজকের নামাজের সময়সূচি নিচে দেওয়া হলো।
ঢাকার জন্য আজকের নামাজের সময়:
জোহর: দুপুর ১২:০৪ মিনিট
আসর: বিকেল ৩:৪৬ মিনিট
মাগরিব: সন্ধ্যা ৫:২২ মিনিট
এশা: সন্ধ্যা ৬:৪২ মিনিট
ফজর (আগামীকাল মঙ্গলবার): ভোর ৫:২০ মিনিট
বিভাগীয় সময়ের ব্যবধান: ঢাকার সময়ের সঙ্গে আপনার এলাকার নামাজের সময় সমন্বয় করে নিতে নিচের নিয়মটি অনুসরণ করুন।
বিয়োগ করতে হবে: চট্টগ্রাম থেকে ৫ মিনিট এবং সিলেট থেকে ৬ মিনিট।
যোগ করতে হবে: খুলনা থেকে ৩ মিনিট, রাজশাহী থেকে ৭ মিনিট, রংপুর থেকে ৮ মিনিট এবং বরিশাল থেকে ১ মিনিট।
নামাজ শুধু একটি ধর্মীয় বাধ্যবাধকতা নয়, এটি আত্মার শান্তি এবং শৃঙ্খলার মূল চাবিকাঠি। তাই যতই কাজ থাকুক না কেন, আজানের পরপরই নামাজের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া মুমিনের পরিচয়।
আজ ২৮ ডিসেম্বরের নামাজের সময়সূচি
ইসলামের পঞ্চস্তম্ভের মধ্যে নামাজ দ্বিতীয় এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। পবিত্র কোরআন ও হাদিসে নামাজের গুরুত্ব বারবার উল্লেখ করা হয়েছে। কিয়ামতের দিন বান্দার আমলনামার মধ্যে সর্বপ্রথম নামাজেরই হিসাব নেওয়া হবে। তাই একজন প্রকৃত মুসলমান হিসেবে পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ নামাজ নির্ধারিত সময়ে আদায় করা ইমানি দায়িত্ব। আজ ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫ ইংরেজি, ১৩ পৌষ ১৪৩২ বাংলা এবং ৭ রজব ১৪৪৭ হিজরি। রাজধানী ঢাকা ও এর আশপাশের এলাকার মুসুল্লিদের সুবিধার্থে আজকের নামাজের সময়সূচি নিচে দেওয়া হলো।
ঢাকার নামাজের সময়সূচি (২৮ ডিসেম্বর ২০২৫):
জোহর: দুপুর ১২:০৫ মিনিট
আসর: বিকেল ৩:৪৩ মিনিট
মাগরিব: সন্ধ্যা ৫:২৫ মিনিট
এশা: সন্ধ্যা ৬:৪২ মিনিট
ফজর (আগামীকাল সোমবার): ভোর ৫:২০ মিনিট
ঢাকার সময়ের সঙ্গে অন্যান্য প্রধান বিভাগীয় শহরগুলোর সময়ের পার্থক্য নিচে দেওয়া হলো। নিজ নিজ এলাকার নামাজের সঠিক সময় জানতে এই মিনিটগুলো সমন্বয় করে নিতে হবে।
যেসব এলাকার সময় বিয়োগ করতে হবে:
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট
যেসব এলাকার সময় যোগ করতে হবে:
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট
ইসলামি বিধান অনুযায়ী ফরজ নামাজের পাশাপাশি সুন্নত, ওয়াজিব এবং নফল নামাজেরও বিশেষ ফজিলত রয়েছে। তবে শত প্রতিকূলতা কিংবা ব্যস্ততার মধ্যেও ফরজ নামাজ সঠিক সময়ে আদায় করাই হলো প্রকৃত কামিয়াবি। শীতের এই ভোরে এবং দিনভর পবিত্রতার সাথে ইবাদত সম্পন্ন করতে এই সময়সূচিটি আপনাকে সাহায্য করবে।
আজ ২৭ ডিসেম্বরের নামাজের সময়সূচি
পবিত্র ইমানের পর ইসলামে নামাজের গুরুত্ব অপরিসীম। মহান আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহর ওপর দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ করেছেন। আজ শনিবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫ ইংরেজি (১২ পৌষ ১৪৩২ বাংলা ও ৬ রজব ১৪৪৭ হিজরি)—এই দিনের জন্য ঢাকা ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকার নামাজের সময়সূচি ইসলামিক ফাউন্ডেশন ও সংশ্লিষ্ট সূত্র অনুযায়ী নির্ধারিত হয়েছে। নির্দিষ্ট সময়ে নামাজ আদায় করা কেবল ধর্মীয় বাধ্যবাধকতা নয়, বরং এটি আত্মিক প্রশান্তিরও মূল উৎস।
আজকের নির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী, ঢাকা ও এর আশেপাশে জোহরের ওয়াক্ত শুরু হবে দুপুর ১২টা ০১ মিনিটে। আসরের নামাজ আদায়ের সময় নির্ধারণ করা হয়েছে বিকেল ৩টা ৪০ মিনিট। সূর্যাস্তের সাথে সাথেই ৫টা ২০ মিনিটে মাগরিবের ওয়াক্ত শুরু হবে এবং এশার নামাজের সময় হবে সন্ধ্যা ৬টা ৩৮ মিনিট। যারা আগামীকালের ফজরের নামাজের প্রস্তুতি নেবেন, তাদের জন্য জানিয়ে রাখা ভালো যে রোববার (২৮ ডিসেম্বর) ফজরের ওয়াক্ত শুরু হবে ভোর ৫টা ১৭ মিনিটে।
বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে ঢাকার সময়ের সাথে বিভিন্ন বিভাগের সময়ের কিছুটা তারতম্য রয়েছে। ঢাকার সময়ের সাথে চট্টগ্রামের বাসিন্দাদের ৫ মিনিট এবং সিলেটের বাসিন্দাদের ৬ মিনিট বিয়োগ করতে হবে। অন্যদিকে, যারা দেশের উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলে বসবাস করছেন, তাদের ক্ষেত্রে সময় যোগ করতে হবে। খুলনার জন্য ৩ মিনিট, রাজশাহীর জন্য ৭ মিনিট, রংপুরের জন্য ৮ মিনিট এবং বরিশালের জন্য ১ মিনিট যোগ করে নামাজের সময় নির্ধারণ করতে হবে।
ইসলামিক স্কলারদের মতে, কিয়ামতের কঠিন দিনে মানুষের আমলনামার মধ্যে নামাজের হিসাবই সবার আগে নেওয়া হবে। তাই দৈনন্দিন কর্মব্যস্ততার মাঝেও সময়মতো মসজিদে উপস্থিত হয়ে জামাতের সাথে নামাজ আদায় করা প্রতিটি মুসলমানের আবশ্যিক কর্তব্য। নামাজের এই সময়সূচি মূলত ওয়াক্ত শুরুর সময়কে নির্দেশ করে, তাই স্থানীয় মসজিদের জামাতের সময়ের সাথে সমন্বয় করে নামাজ আদায় করাই উত্তম।
নারীরা কি মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়তে পারবেন?
ঘর বা বাসা থেকে মসজিদে গিয়ে নামাজ আদায় করলে সাওয়াব অধিক হয় এ কথা ইসলামে সুপ্রতিষ্ঠিত। প্রাপ্তবয়স্ক, স্বাধীন, সুস্থ ও নিরাপদ পুরুষের জন্য জামাতের সঙ্গে মসজিদে নামাজ আদায় করা বিশেষভাবে গুরুত্ববহ। তবে একটি প্রশ্ন প্রায়ই উঠে আসে নারীরা কি মসজিদে গিয়ে নামাজ আদায় করতে পারবেন?
ইসলামের দৃষ্টিতে নারীদের নামাজ আদায় কখনোই নিষিদ্ধ নয়। বরং নারী-পুরুষ উভয়ের জন্যই নামাজ ফরজ ইবাদত। তবে নারীদের মসজিদে গিয়ে নামাজ আদায়ের ক্ষেত্রে শরিয়ত কিছু বাস্তবসম্মত শর্ত ও সতর্কতার কথা উল্লেখ করেছে। এর মধ্যে অন্যতম হলো মসজিদে আসা-যাওয়ার পথ নিরাপদ হওয়া, পর্দা রক্ষার নিশ্চয়তা থাকা এবং মসজিদে নারীদের জন্য আলাদা ও সুশৃঙ্খল নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা থাকা।
নারীদের মসজিদে নামাজ আদায় নিয়ে বিভিন্ন সমাজে মতভেদ ও আলোচনা থাকলেও ইসলামের মৌলিক অবস্থান স্পষ্ট। ইসলাম নারীদের মসজিদে যেতে বাধা দেয় না। তবে যদি মসজিদে যাওয়ার কারণে বেপর্দা হওয়ার আশঙ্কা থাকে, বা নিরাপত্তা ও শালীনতা বিঘ্নিত হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেয়, তাহলে সে ক্ষেত্রে ঘরে নামাজ আদায় করাই নারীদের জন্য অধিক উত্তম বলে বিবেচিত হয়।
এ বিষয়ে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের স্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, নবী করিম (সা.) বলেছেন, “যখন নারীরা তোমাদের কাছে মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়ার অনুমতি চায়, তখন তাদের সে অনুমতি দেবে।” (বুখারি ও মুসলিম)। এই হাদিস প্রমাণ করে যে, নীতিগতভাবে নারীদের মসজিদে নামাজ আদায় করার অধিকার ইসলাম স্বীকার করেছে।
বর্তমান বাস্তবতায় দেখা যায়, আরব দেশগুলো ছাড়া মুসলিম বিশ্বের অধিকাংশ দেশে নারীদের জন্য মসজিদে নামাজ আদায়ের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেই। খুব অল্পসংখ্যক মসজিদে নারীদের জন্য পৃথক ও নিরাপদ স্থান রাখা হয়। তবে যেখানে এমন সুব্যবস্থা বিদ্যমান এবং যাতায়াতের পথ নিরাপদ, সেখানে নারীদের মসজিদে গিয়ে নামাজ আদায়ে শরিয়তের কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই।
এই ক্ষেত্রে কিছু বিষয় বিশেষভাবে লক্ষ্য রাখা জরুরি। যে মসজিদে নারীদের নামাজের ব্যবস্থা রয়েছে, সেখানে প্রবেশ ও বের হওয়ার পথ নিরাপদ কি না, পুরুষ ও নারীর মধ্যে ফেতনার সম্ভাবনা আছে কি না—এসব বিষয় বিবেচনা করা অপরিহার্য। যদি আশঙ্কা থাকে যে মসজিদে যাওয়ার ফলে শালীনতা বা সামাজিক নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে, তবে নারীদের জন্য ঘরে নামাজ আদায় করাই অধিক নিরাপদ ও উত্তম পন্থা।
প্রকৃতপক্ষে, নারীদের মসজিদে গিয়ে নামাজ আদায় পুরোপুরি নির্ভর করে সমাজ ও রাষ্ট্র কতটা নিরাপদ, শালীন ও ফেতনামুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করতে পারে তার ওপর। যদি পূর্ণ পর্দা বজায় রেখে নির্বিঘ্নে নামাজ আদায়ের সুযোগ তৈরি করা যায়, তবে নারীরা মসজিদে গিয়ে ইবাদত করতে পারবে এটাই ইসলামের ভারসাম্যপূর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি।
সর্বোপরি, প্রতিটি মহল্লা বা এলাকায় মসজিদ নির্মাণের সময় নারীদের নামাজ আদায়ের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা মুসলিম সমাজের একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। আলাদা প্রবেশপথ, নিরিবিলি নামাজের স্থান এবং প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হলে নারীরা আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে মসজিদে গিয়ে ইবাদত করতে পারবে।
আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে এমন একটি নিরাপদ, শালীন ও ফেতনামুক্ত সমাজ গড়ে তোলার তাওফিক দান করুন, যেখানে নারী-পুরুষ উভয়েই পর্দা ও সম্মানের সঙ্গে ইবাদত আদায় করতে পারবে। আমিন।
পাঠকের মতামত:
- আয়ের দৌড়ে শীর্ষ নেতাদের পেছনে ফেললেন নুর, হলফনামায় নতুন চমক
- কেন ১ জানুয়ারি নতুন বছর? জানুন এর পেছনের রোমাঞ্চকর ইতিহাস
- প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে পাকিস্তান ও নেপালের প্রতিনিধিদের সাক্ষাৎ
- হাড়কাঁপানো শীতের ইতিহাস, দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা কবে কত ছিল?
- ভারসাম্য হারাচ্ছে জলবায়ু তবে কি ধেয়ে আসছে পরবর্তী তুষারযুগ?
- শীতে সংক্রমণের ঝুঁকি কমাতে সেরা ৫ টিপস
- বছর শেষে স্বর্ণের দামে বড় ধস, কাল থেকে কার্যকর নতুন রেট
- ঠাকুরগাঁওয়ে ফখরুলের সম্পদের পাহাড়? হলফনামায় মিলল বড় তথ্য
- টাঙ্গাইলে খোলস পাল্টে ভোটের মাঠে আওয়ামী লীগের তিন নেতা
- খালেদা জিয়ার মৃত্যুর দায় থেকে হাসিনা মুক্তি পাবেন না: নজরুল
- কবে পর্যাপ্ত সূর্যের আলো পাওয়া যাবে, জানাল আবহাওয়া অধিদপ্তর
- দেশজুড়ে খালেদা জিয়ার গায়িবানা জানাজা
- কেন তিনি ‘আপসহীন’? খালেদা জিয়ার জীবনের অজানা অধ্যায়
- জনসেবা ত্যাগ ও সংগ্রামের এক অবিস্মরণীয় ইতিহাস রেখে গেলেন তিনি
- নগরকান্দায় এলজিইডি প্রকৌশলীর ঘুষের ভিডিও ভাইরাল
- জানুয়ারি–জুন: ২০২৬ সালের ক্রীড়া সূচি
- কত টাকার মালিক হাসনাত? সম্পদের হিসাব প্রকাশ
- প্রাকৃতিক উপায়ে ওজন বাড়ানোর সেরা খাবার
- মৃত্যুর পর মানবদেহে কী ঘটে, জানাচ্ছে বিজ্ঞান
- জাতীয় পতাকায় মোড়ানো কফিন: মানিক মিয়ার পথে বেগম জিয়া
- ২০২৬ শিক্ষাবর্ষে কলেজে দীর্ঘ ছুটির নতুন সূচি
- মালয়েশিয়ায় বিদেশি কর্মীর ব্যাপক চাহিদা: নতুন আবেদনের সময় জানুন
- পুঁজিবাজারে তিন প্রতিষ্ঠানের রেটিং আপডেট
- মাতৃতুল্য অভিভাবক: ক্রীড়াঙ্গনে খালেদা জিয়ার না বলা সব গল্প
- বিনিয়োগকারীদের জন্য জরুরি বার্তা: আজ ডিএসই বন্ধ
- যুদ্ধের দাবদাহ ও ক্ষমতার রদবদল: ২০২৫ সালের আলোচিত সব ঘটনা
- জাতি এক মহান অভিভাবককে হারাল: প্রধান উপদেষ্টা
- ৩১ ডিসেম্বরের হালনাগাদ বৈদেশিক মুদ্রার দর
- হাড়কাঁপানো ঠান্ডায় রেকর্ড গড়ল গোপালগঞ্জ
- সোনার বাজারে সুখবর! কমল দাম যত
- প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার নতুন তারিখ জানুন
- শেষবারের মতো একনজর দেখার জন্য তারেক রহমানের বাসায় নেতাকর্মীদের ভিড়
- ফুলকপি খাওয়ার যত উপকারিতা
- ২০২৬ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের আশঙ্কা
- জানাজার নিয়ত, দোয়া ও তাকবির: সহজ নির্দেশনা
- জানাজার নিয়ত, দোয়া ও তাকবির: সহজ নির্দেশনা
- জনসমুদ্রে পরিণত সংসদ ভবন,চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি
- আজ ঢাকার যেসব রাস্তা এড়িয়ে চলবেন
- আজ ৩১ ডিসেম্বরের নামাজের সময়সূচি
- জানাজায় নারীদের অংশগ্রহণ নিয়ে বিশেষ ঘোষণা
- জেনে নিন আজকের আবহাওয়ার হালচাল
- আজ দিনভর গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকবে যেসব এলাকায়
- টিভির পর্দায় আজকের সব খেলার সূচি
- কুয়াশা না কি বৃষ্টির ঝাপটা? রাজশাহীতে শীতের কামড়ে ঘরবন্দি লাখো মানুষ
- খালেদা জিয়াকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে আজ ঢাকায় আসছেন যেসব দেশের মন্ত্রী
- বাদ জোহর স্বামীর কবরের পাশেই শায়িত হচ্ছেন খালেদা জিয়া
- স্ট্রোক হওয়ার কয়েক দিন আগেই পাওয়া যায় সিগন্যাল: ৫টি লক্ষণ চিনুন
- প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত: নতুন সম্ভাব্য তারিখ জানাল অধিদপ্তর
- খালেদা জিয়া শুধু দলের নয় বরং পুরো দেশের নেতা: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
- মেঘ আর কুয়াশায় ঢাকা সূর্য: কবে দেখা দেবে সোনালী রোদ জানাল অধিদপ্তর
- আজ ঢাবির ভর্তি যুদ্ধ: আছে এমআইএসটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ খবর
- আজকের স্বর্ণের দাম: ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫
- আজ থেকে কার্যকর স্বর্ণের নতুন মূল্য
- পাঁচ ব্যাংকের আমানতকারীদের জন্য বড় সুখবর
- আজ থেকে শুরু বিপিএলের দ্বাদশ আসর, জানুন পূর্ণাঙ্গ সময়সূচী
- সাধারণের নাগালের বাইরে সোনার বাজার: মধ্যবিত্তের সোনা কেনার স্বপ্ন কি তবে শেষ
- আজকের স্বর্ণের দাম: ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫
- ঢাকা-১৫ জামায়াত আমিরের বিপক্ষে নামলেন যে বিএনপি প্রার্থী
- বাবার কবরের সামনে দাঁড়িয়ে নীরবে কেঁদেছেন তারেক রহমান
- এমবিবিএস-বিডিএস ভর্তি পিছাল, নতুন তারিখ ঘোষণা
- ২০২৬ সালে স্কুলে ছুটি কমলো ১২ দিন, দেখে নিন তালিকা
- ই-রিটার্ন দাখিলে আর বাধা নেই: বড় সুখবর দিল রাজস্ব বোর্ড আজ
- ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে অষ্টম শ্রেণির বৃত্তি পরীক্ষা: আজই দেখে নিন রুটিন
- হাড়কাঁপানো শীত ও ঘন কুয়াশা থেকে মুক্তি কবে? যা জানাল আবহাওয়া অফিস
- জামায়াত-চরমোনাই দ্বিমুখী লড়াই: সংকটে ইসলামী জোট








