অভাব জয় করে পুলিশের চাকরি, ১২০ টাকায় স্বপ্ন ছোঁয়া

সারাদেশ ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ মে ১৬ ২০:১৫:৩৭
অভাব জয় করে পুলিশের চাকরি, ১২০ টাকায় স্বপ্ন ছোঁয়া

সত্য নিউজ: টাঙ্গাইল জেলায় পুলিশের ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদে মাত্র ১২০ টাকার সরকারি আবেদন ফি দিয়ে স্বপ্ন পূরণ করেছেন ৫০ জন তরুণ-তরুণী। সম্পূর্ণ মেধাভিত্তিক ও স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় নির্বাচিত এসব প্রার্থীর মধ্যে অধিকাংশই প্রান্তিক গ্রামীণ পরিবারের সন্তান। এই নিয়োগ প্রক্রিয়া নতুন এক উদাহরণ সৃষ্টি করেছে, যেখানে অর্থ বা প্রভাব নয় যোগ্যতা ও নিষ্ঠাই ছিল মূল মাপকাঠি।

কালিহাতী উপজেলার ভুক্তা গ্রামের ক্ষুদ্র দোকানি ইউসুফ আলীর ছেলে আছাদুজ্জামান অনিক জানান, “আমি মা-বাবার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করবো। দেশের জন্য কাজ করাই এখন আমার লক্ষ্য।”

মির্জাপুর উপজেলার তরফপুর ইউনিয়নের আদর্শ নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরি মর্জিনা বেগমের মেয়ে সাবিহা আক্তার বিথি বলেন, “১২০ টাকায় চাকরি পাওয়াটা আমার কাছে স্বপ্নের মতো। এখন মায়ের পাশে দাঁড়াতে পারব।”

বিথির বাবা বহু আগেই পরিবার ছেড়ে চলে গেছেন। অভাবের ঘর থেকে উঠে আসা বিথি এখন কেবল পুলিশের পোশাকই নয়, ধরেছেন জীবনের দৃঢ় হালও।

টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান জানান, “এই নিয়োগে কোনো কোটার স্থান ছিল না। লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে সর্বোচ্চ মেধাবীদের বেছে নেওয়া হয়েছে। নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা বজায় রেখে প্রার্থীদের প্রতি সুবিচার করা হয়েছে।”

এই নিয়োগ বোর্ডে দায়িত্ব পালন করেন নরসিংদীর শিবপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রায়হান সরকার ও মানিকগঞ্জ সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সালাউদ্দিন।

জেলা পুলিশের তথ্যমতে, টাঙ্গাইলে এবার ২,৭৭১ জন প্রার্থী আবেদন করেন। তাদের মধ্যে ৯৩৭ জন লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেন এবং ১৮৬ জন ভাইভা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। শেষপর্যন্ত ৫০ জন চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত হন।

এদেরই একজন, ঘাটাইল উপজেলার ধলাপাড়া গ্রামের রাখী সূত্রধর বলেন, “পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর সুযোগ পেয়েছি। দেশের জন্য কাজ করতে চাই।”

একইভাবে কৃষক পরিবারের সন্তান ফয়সাল জানান, “নিজের জীবন বাজি রেখে দেশের সেবা করতে চাই। আজ আমার পরিবারের মুখে হাসি।”

টাঙ্গাইল জেলার এই নিয়োগ প্রক্রিয়া প্রমাণ করেছে, ন্যূনতম ব্যয়ে এবং সম্পূর্ণ স্বচ্ছভাবে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের সুযোগ এখন বাস্তবায়িত হচ্ছে। এই ৫০ জন তরুণ-তরুণী শুধু চাকরি নয়, বরং সমাজ ও রাষ্ট্রের প্রতি দায়বদ্ধতা নিয়েও এগিয়ে যাচ্ছেন।

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

স্টারমারের নীরবতা: কূটনৈতিক শিষ্টাচার বনাম রাজনৈতিক সংকোচ

স্টারমারের নীরবতা: কূটনৈতিক শিষ্টাচার বনাম রাজনৈতিক সংকোচ

একজন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ, সামাজিক ব্যবসার পথপ্রদর্শক এবং গণতান্ত্রিক উত্তরণের নেতৃত্বদানকারী রাষ্ট্রনায়ক—এই তিনটি পরিচয়ই এখন সমভাবে প্রযোজ্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের... বিস্তারিত