‘তিনটি জিনিস’ ছাড়া নির্বাচনে যাবে না এনসিপি—সরকারকে কঠোর বার্তা

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ০৬ ১৫:২৬:৩২
‘তিনটি জিনিস’ ছাড়া নির্বাচনে যাবে না এনসিপি—সরকারকে কঠোর বার্তা

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেছেন, চলতি বছর ঘোষিত ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ এখনো পূর্ণতা পায়নি এবং সরকার শহীদের প্রকৃত সংখ্যা নির্ধারণে ব্যর্থ হয়েছে। বুধবার (৬ আগস্ট) রাজধানীর বাংলা মোটরের রূপায়ন টাওয়ারে আয়োজিত দলীয় সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব মন্তব্য করেন।

আখতার হোসেন জানান, ঘোষণাপত্রে আন্দোলনে শহীদদের ‘জাতীয় বীর’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে এবং শহীদ পরিবারের সদস্য ও আহতদের আইনি সুরক্ষার প্রতিশ্রুতি রয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলো ঘোষণাপত্রে বৈষম্যহীন, দুর্নীতিমুক্ত এবং ফ্যাসিবাদবিরোধী রাষ্ট্র কাঠামোর কথা পুনর্ব্যক্ত করেছে।

তবে এনসিপির দীর্ঘদিনের দাবির আলোকে ঘোষণাপত্রে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় অনুপস্থিত বলে দাবি করেন আখতার। তিনি বলেন, “এই ভূখণ্ডে ১৯৪৭ সালের আন্দোলনের প্রসঙ্গটি ঘোষণাপত্রে স্থান পায়নি। একইভাবে শহীদ সংখ্যা ‘প্রায় এক হাজার’ উল্লেখ করায় বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। অথচ জাতিসংঘের প্রতিবেদন অনুসারে, এই সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৪০০ জন। সরকার গত এক বছরে এই সংখ্যা নির্ধারণে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারেনি।”

এছাড়াও ঘোষণাপত্রে পিলখানা হত্যাকাণ্ড, শাপলা চত্বরের ঘটনা, কোটা সংস্কার আন্দোলন, নিরাপদ সড়ক আন্দোলন, আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ড এবং মোদিবিরোধী আন্দোলনের প্রসঙ্গ বাদ পড়ায় একে অসম্পূর্ণ হিসেবে আখ্যা দেন এনসিপি নেতা।

তিনি বলেন, “ঘোষণাপত্রের ২৫ ও ২৭ নম্বর দফায় নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত সরকারের অধীনে সংস্কারকৃত সংবিধানে এই ঘোষণাপত্র অন্তর্ভুক্তির কথা বলা হয়েছে। কিন্তু এনসিপির দাবির অন্যতম মূল বিষয় ছিল গণপরিষদ নির্বাচনের মাধ্যমে একটি নতুন সংবিধান প্রণয়ন। ঘোষণাপত্রের বর্তমান কাঠামোতে সে দাবিকে উপেক্ষা করা হয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, “ঐকমত্য কমিশনে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংস্কার নিয়ে আলোচনা হয়েছে এবং কিছু বিষয়ে একমতও হয়েছে। কিন্তু এখনো পর্যন্ত সেগুলোর বাস্তবায়নের রূপরেখা স্পষ্ট নয়।”

সংবাদ সম্মেলনে আখতার হোসেন দাবি করেন, জুলাই সনদের ভিত্তিতে গৃহীত সংস্কারসমূহকে আগামী জাতীয় নির্বাচনের পূর্বেই বাস্তবায়ন করতে হবে এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মেয়াদকাল থেকেই তা কার্যকর হওয়া জরুরি।

তিনি বলেন, “প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনের সময় হিসেবে ফেব্রুয়ারির কথা উল্লেখ করেছেন—এ নিয়ে আমাদের আপত্তি নেই। তবে নির্বাচনের আগে সরকারের কিছু দায়িত্ব রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে গণহত্যার বিচার এবং কাঠামোগত সংস্কার। সরকার এ লক্ষ্যে যাত্রা শুরু করায়, এই সংস্কারগুলো দৃশ্যমান করাই তাদের দায়িত্ব।”

এছাড়াও আখতার হোসেন নির্বাচন পূর্ব সময়ে মাঠ প্রশাসনের নিরপেক্ষতা এবং সবার জন্য সমান সুযোগ (লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড) নিশ্চিত করার দাবি জানান। তিনি সরকারের কাছে প্রতিশ্রুতি চান, নির্বাচনের আগে সংস্কার কার্যকর হবে এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনের পরিবেশ নিশ্চিত করা হবে।

/আশিক

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ