একদিনেই ইয়েমেন, লেবানন, সিরিয়া ও গাজায় ইসরায়েলের সামরিক হামলা

সত্য নিউজঃ ইসরায়েল মধ্যপ্রাচ্যে তাদের সামরিক অভিযানকে নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দিয়েছে। আল জাজিরা জানায়, সোমবার ইসরায়েলি বাহিনী একদিনেই ইয়েমেন, লেবানন, সিরিয়া ও গাজায় সমন্বিত হামলা চালিয়েছে। এই বহুমুখী হামলা চলমান সংঘাতের গভীরতা ও জটিলতাকে আরও বাড়িয়ে তুলছে এবং পুরো অঞ্চলজুড়ে উত্তেজনা সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে।
গাজায় চালানো সর্বশেষ বিমান হামলায় অন্তত ৫৪ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। যুদ্ধের ৬৫তম দিনে এসে এই হামলা গাজার ক্রমবর্ধমান মানবিক বিপর্যয়কে আরও ভয়াবহ করে তুলেছে।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু নতুন করে স্থল অভিযান চালানোর ঘোষণা দিয়েছেন এবং বলেন, গাজার ২০ লাখেরও বেশি বাসিন্দাকে "পুনর্বাসন" করা হবে। তার এই মন্তব্য আন্তর্জাতিক মহলে গভীর উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে, কারণ এতে গাজার জনগণকে জোরপূর্বক স্থানান্তরের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে, যা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন অনুযায়ী গুরুতর লঙ্ঘন হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।
৬৫ দিন ধরে গাজায় সম্পূর্ণ অবরোধ চলমান রয়েছে। এই অবরোধের ফলে খাদ্য, পানি, জ্বালানি এবং জরুরি চিকিৎসা সরঞ্জাম সরবরাহ সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে মানবিক সংকট চরম আকার ধারণ করেছে। গাজা মিডিয়া অফিস সতর্ক করেছে যে উপত্যকার হাসপাতালগুলো আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কার্যত অচল হয়ে পড়তে পারে। চিকিৎসা সরঞ্জাম, ওষুধ এবং জ্বালানি ফুরিয়ে আসায় হাজার হাজার আহত ও অসুস্থ মানুষের জীবন এখন সরাসরি হুমকির মুখে।
গাজা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ তথ্যে জানা গেছে, এই যুদ্ধে এখন পর্যন্ত ৫২,৫৬৭ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং আহতের সংখ্যা ১,১৮,৬১০ জনে পৌঁছেছে। তবে গাজা সরকারের মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, নিহতের প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে; তারা জানায়, মৃতের সংখ্যা ইতিমধ্যে ৬১,৭০০ ছাড়িয়েছে। এছাড়া ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে থাকা বহু মানুষ এখনো নিখোঁজ, যাদের বেঁচে থাকার আশা ক্ষীণ।
সংঘাতের সূত্রপাত হয়েছিল ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর, যখন হামাসের নেতৃত্বাধীন এক বিস্ফোরক হামলায় দক্ষিণ ইসরায়েলে ১,১৩৯ জন নিহত হন এবং ২০০’রও বেশি মানুষকে অপহরণ করা হয়। ওই হামলার পরই ইসরায়েল হামাসের বিরুদ্ধে পূর্ণমাত্রার যুদ্ধ ঘোষণা করে, যা এখন শুধু গাজা নয়, ইয়েমেন, লেবানন ও সিরিয়াতেও বিস্তার লাভ করেছে।
অঞ্চলজুড়ে ইসরায়েলের এই সম্প্রসারিত হামলা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নতুন করে উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, এই সংঘাত দীর্ঘায়িত হলে তা পুরো মধ্যপ্রাচ্যের স্থিতিশীলতা বিপর্যস্ত করতে পারে এবং বৃহত্তর আঞ্চলিক যুদ্ধের ঝুঁকি বাড়তে পারে।
জাতিসংঘ, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা এবং বিভিন্ন দেশ বারবার ইসরায়েল ও হামাসের প্রতি যুদ্ধবিরতি ঘোষণার আহ্বান জানিয়ে আসছে। তারা বলছে, গাজায় জরুরি মানবিক সহায়তার প্রবেশ নিশ্চিত করতে হবে এবং আন্তর্জাতিক মানবিক আইন মেনে চলতে হবে। তবে সব কূটনৈতিক উদ্যোগ এখন পর্যন্ত ব্যর্থ হয়েছে এবং সংঘাতের ভয়াবহতা দিন দিন বেড়েই চলেছে।
বিশ্বব্যাপী সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে রাষ্ট্রনেতারা পর্যন্ত গাজায় চলমান মানবিক বিপর্যয় নিয়ে শোক ও ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। বিশেষ করে শিশু, নারী ও বৃদ্ধদের ওপর এই সংঘাতের প্রভাব ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে।
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- শেয়ারবাজারে গেম্বলারদের দৌরাত্ম্য: আস্থা ফেরাতে চাই কঠোর শাস্তি ও কাঠামোগত সংস্কার
- বাংলাদেশে সেনা-সরকার উত্তেজনা ও ‘কু’ এর গুঞ্জন: নেপথ্যে কি?
- নতুন রাজনৈতিক সমীকরণে কারা টিকে থাকবে, কারা হারিয়ে যাবে?
- জবি’র সাবেক অধ্যাপক আনোয়ার বেগম হত্যাচেষ্টা মামলায় সুত্রাপুরে আটক
- শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান: রাষ্ট্র নির্মাণের এক উজ্জ্বল প্রতিমূর্তি
- তারকা পরিচিতি: রক্ষাকবচ না কি সমাজবিমুখ অব্যাহতি?
- সড়ক দুর্ঘটনায় সেনা কর্মকর্তা নিহত
- দেশের ৬ জেলায় ৮০ কিলোমিটার বেগে ঝড়-বৃষ্টির শঙ্কা, নদীবন্দরে ২ নম্বর সতর্কতা
- নাহিদের স্পষ্ট বার্তা: এনসিপিতে নেই দুই উপদেষ্টা আসিফ ও মাহফুজ
- বিএনপির সালাউদ্দিনকে নিয়ে কি লিখলেন প্রেস সচিব শফিকুল?
- "ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি সব রাজনৈতিক দল অকুণ্ঠ সমর্থন জানিয়েছে"
- “ভারতের দালালরা ঘাপটি মেরে বসে আছে”: মুফতি রেজাউল করিম
- মুহাম্মদ ইউনূস প্রশাসনের ভবিষ্যৎ কেন অনিশ্চিত
- জেনে নিন ঈদের ছুটিতে কোন কোন এলাকায় ব্যাংক খোলা থাকবে
- নতুন নোটের ছবি প্রকাশ করলো বাংলাদেশ ব্যাংক