"বয়স বাড়লেও মস্তিষ্ক থাকবে তরতাজা—জেনে নিন কিভাবে"

স্বাস্থ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুন ২৯ ১৬:৩৩:৪২
"বয়স বাড়লেও মস্তিষ্ক থাকবে তরতাজা—জেনে নিন কিভাবে"

মানব মস্তিষ্ক এক জটিল ও চমৎকার অঙ্গ। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মস্তিষ্কের কিছু কার্যক্ষমতা কমে যাওয়া স্বাভাবিক হলেও, হঠাৎ করে কথা ভুলে যাওয়া, বারবার একই প্রশ্ন জিজ্ঞেস করা, বা মনোযোগ ধরে রাখতে সমস্যা হওয়া—এগুলো কিন্তু সাধারণ পরিবর্তনের আওতায় পড়ে না। এমন লক্ষণ হলে সেটি হতে পারে গভীর কোনো জটিলতার ইঙ্গিত, বলে সতর্ক করেছেন ক্লিনিক্যাল নিউরোসাইকোলজিস্ট ড. জুডি হো। তবে আশার কথা হলো, কিছু সহজ অভ্যাস দৈনন্দিন জীবনে যুক্ত করলে বয়সজনিত এই অবনতির গতি কমানো সম্ভব। নিচে তেমনই পাঁচটি কার্যকর অভ্যাস তুলে ধরা হলো।

প্রথমত, শারীরিকভাবে সক্রিয় থাকা অত্যন্ত জরুরি। জেরোনটোলজিস্ট ড. লেকেলিন আইচেনবার্গার জানান, শরীরচর্চা শুধু শারীরিক সুস্থতার জন্য নয়, মস্তিষ্কের জন্যও উপকারী। হাঁটা, সাঁতার, নাচ—আপনার পছন্দের যেকোনো শারীরিক কর্মকাণ্ড রক্ত চলাচল বাড়ায় এবং মস্তিষ্কে অক্সিজেন সরবরাহ করে। এতে মনোযোগ, মেজাজ ও স্মৃতিশক্তি উন্নত হয়।

দ্বিতীয় অভ্যাস হলো পর্যাপ্ত ও গভীর ঘুম নিশ্চিত করা। ঘুমের সময় মস্তিষ্ক স্মৃতি সংরক্ষণ করে ও বর্জ্য পদার্থ দূর করে। ঘুমের ঘাটতি মস্তিষ্কের সমস্যা বাড়িয়ে দিতে পারে। ঘুমের আগে বই পড়া, ডায়েরি লেখা বা হালকা যোগব্যায়াম যেমন সহায়ক হতে পারে, তেমনি মোবাইল বা স্ক্রিন ব্যবহার এড়িয়ে চলাও গুরুত্বপূর্ণ, কারণ স্ক্রিনের ব্লু লাইট ঘুমের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।

তৃতীয়ত, মস্তিষ্ককে চ্যালেঞ্জ করুন। নতুন কিছু শেখার চেষ্টা—যেমন ভাষা শেখা, বাদ্যযন্ত্রে পারদর্শী হওয়া, ধাঁধাঁ বা ক্রসওয়ার্ড খেলা—মস্তিষ্ককে সজীব রাখে। ড. হো বলেন, নতুন কিছু শেখা মানেই নতুন নিউরোন সংযোগ তৈরি হওয়া, যা মস্তিষ্কের গঠনগত ও কার্যগত বিকাশ ঘটায়।

চতুর্থত, সামাজিক যোগাযোগ বজায় রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। একাকীত্ব ও মানসিক নিঃসঙ্গতা মস্তিষ্কের জন্য বিপজ্জনক। নিয়মিত বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করা, ফোনে কথা বলা, অথবা একসঙ্গে সময় কাটানো—এসব ছোট ছোট সম্পর্কই বড় ভূমিকা রাখে স্মৃতি ও মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নয়নে।

পঞ্চম ও শেষ অভ্যাস হলো পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ। ড. হো বলেন, সবুজ শাকসবজি, বেরি, বাদাম, সম্পূর্ণ শস্য, জলপাই তেল এবং সামান্য পরিমাণ ডার্ক চকলেট মস্তিষ্কের জন্য দারুণ উপকারী। এই খাবারগুলো অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ওমেগা-৩, ভিটামিন ও ফাইটোনিউট্রিয়েন্টে ভরপুর, যা স্মৃতিশক্তি বাড়ায় এবং প্রদাহ কমায়। রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখতেও এসব খাদ্য সহায়ক।

সবশেষে বলা যায়, বয়স যতই বাড়ুক না কেন, সঠিক অভ্যাস ও সচেতনতা মেনে চললে আপনার মস্তিষ্কও থেকে যেতে পারে তরতাজা ও কর্মক্ষম।

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

প্রেস সচিবের বক্তব্যে বাকস্বাধীনতা, মব কালচার ও সাংবাদিকতার দ্বন্দ্ব: পাঠবিশ্লেষণ

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রেস সচিব শফিকুল আলম সম্প্রতি এক দীর্ঘ বক্তব্যে দেশের সাংবাদিকতা, সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং সরকারের অবস্থান নিয়ে বিস্তারিত... বিস্তারিত