"আবু সাঈদ হত্যার বিচার পিছিয়ে গেল, তদন্তে বেরিয়ে এলো ৩০ জনের নাম!"

সারাদেশ ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুন ২৯ ১৪:৩৫:০০
"আবু সাঈদ হত্যার বিচার পিছিয়ে গেল, তদন্তে বেরিয়ে এলো ৩০ জনের নাম!"

রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) শিক্ষার্থী ও জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানে প্রথম শহীদ আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ডে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ গঠনের শুনানি আজ (রবিবার) অনুষ্ঠিত হচ্ছে না। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২–এ আজকের দিনটি শুনানির জন্য নির্ধারিত থাকলেও রাষ্ট্রীয় ব্যস্ততার কারণে প্রধান প্রসিকিউটর গোলাম আরিফ তাজুল উপস্থিত থাকতে পারছেন না বলে শুনানি পেছানো হয়েছে।

সূত্রে জানা গেছে, অভিযোগ গঠনের শুনানি আগামী জুলাইয়ের যেকোনো দিন নতুন করে নির্ধারণ করা হতে পারে। এরইমধ্যে গত বৃহস্পতিবার মামলার তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পেয়েছে প্রসিকিউশন টিম। তদন্তে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ডে সরাসরি বা পরোক্ষভাবে জড়িত ৩০ জনের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে।

এর আগে গত ২৬ জুন তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা থাকলেও আন্দোলনের কারণে তা পিছিয়ে যায়। ওই দিন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একাংশ শিক্ষার্থী সাবেক প্রক্টর শরিফুল ইসলামের মুক্তির দাবিতে আন্দোলনে নামেন। আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, প্রকৃত হত্যাকারী পুলিশ হলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ওপর দায় চাপানোর চেষ্টা হচ্ছে, যা অনৈতিক।

তবে এই আন্দোলনের মধ্যে আওয়ামীপন্থী শিক্ষক ও নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের সক্রিয় উপস্থিতি ঘিরে ক্যাম্পাসে ব্যাপক সমালোচনা সৃষ্টি হয়। শহীদ আবু সাঈদের পরিবার এই পরিস্থিতিতে প্রকাশ করেছেন গভীর হতাশা। শহীদ সাঈদের বড় ভাই আবু হোসেন বলেন, “আমরা কোনো রাজনৈতিক প্রতিহিংসা দেখাইনি। ১০০–২০০ জনকে আসামি করিনি, কেবল যাদের বিরুদ্ধে প্রমাণ আছে, শুধু তাদের নামই তদন্তে দেওয়া হয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, “তদন্ত সংস্থার কাছে সাবেক প্রক্টরের কল রেকর্ডসহ গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট রয়েছে। আমরা বিচার চেয়েছি, প্রতিহিংসা নয়। কেউ যদি নির্দোষ হন, আদালত অবশ্যই ন্যায়বিচার করবেন।” আন্দোলনকারীদের উদ্দেশে তিনি প্রশ্ন তোলেন, “আপনারা কি জানেন গোপনে কী ষড়যন্ত্র চলেছে? অনেকে মুখে শান্তির কথা বলেন, অথচ অন্তরে ভিন্ন খেলা চালান।”

আবু হোসেন আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, “এইভাবে বিচার প্রক্রিয়ায় বাধা এলে হয়তো একদিন আমাদের একমাত্র আশ্রয় হয়ে থাকবে আল্লাহর দরবার।”

আন্দোলনকারীদের একাংশের মতে, প্রক্টর শরিফুল ইসলামের বিরুদ্ধে যদি সত্যিই কোনো অপরাধের প্রমাণ থাকে, তাহলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ব্যবস্থা নিক। তবে তাঁরা দাবি করেন, আবু সাঈদ পুলিশের গুলিতেই নিহত হয়েছেন—এক্ষেত্রে প্রশাসনকে দায়ী করাটা অন্যায়।

প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালের ১৬ জুলাই বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে অংশ নেওয়ার সময় পুলিশের গুলিতে নিহত হন আবু সাঈদ। এরপর ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ১৮ আগস্ট আবু সাঈদের পরিবার ১৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। পরবর্তীতে আরও ৭ জনের নাম সংযুক্ত করার আবেদন করা হয়। মামলাটি গড়ায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে। একাধিকবার রংপুরে গিয়ে সরেজমিনে তদন্ত চালায় প্রসিকিউশনের প্রতিনিধিদল।

—সত্য প্রতিদিন/আশিক

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

প্রেস সচিবের বক্তব্যে বাকস্বাধীনতা, মব কালচার ও সাংবাদিকতার দ্বন্দ্ব: পাঠবিশ্লেষণ

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রেস সচিব শফিকুল আলম সম্প্রতি এক দীর্ঘ বক্তব্যে দেশের সাংবাদিকতা, সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং সরকারের অবস্থান নিয়ে বিস্তারিত... বিস্তারিত