মধ্যপ্রাচ্য কূটনীতি

ইরানে মার্কিন হামলার গোপন প্রতিবেদনে চাঞ্চল্য

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুন ২৫ ১১:৩১:১৫
ইরানে মার্কিন হামলার গোপন প্রতিবেদনে চাঞ্চল্য

যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী সম্প্রতি ইরানের গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর ওপর একাধিক বিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালেও এসব হামলা ইরানের পরমাণু কর্মসূচিকে কেবল “কয়েক মাসের জন্য বিলম্বিত” করতে পেরেছে—সম্পূর্ণ ধ্বংস নয়। এমনটাই বলা হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থা (ডিফেন্স ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি–ডিআইএ) কর্তৃক প্রস্তুত একটি গোপন প্রাথমিক প্রতিবেদনে, যা সম্প্রতি মার্কিন সংবাদমাধ্যমে ফাঁস হয়েছে।

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের বাংকার-বাস্টার বোমা এবং টমাহক ক্রুজ মিসাইল দিয়ে পরিচালিত বিমান হামলায় ইরানের নাতান্জ, ইসফাহান এবং ফোরদুতে অবস্থিত পরমাণু স্থাপনাগুলোর প্রবেশপথগুলো বন্ধ করে দেওয়া হলেও, ভূগর্ভস্থ ভবন ও মূল সেন্ট্রিফিউজগুলো সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়নি। এ তথ্য প্রকাশ্যে আসতেই ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি তাঁর সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম 'ট্রুথ সোশ্যাল'-এ লেখেন: "ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলো সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস!"

তবে হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট ডিআইএর প্রতিবেদনটির সত্যতা স্বীকার করলেও এটিকে “ভুল ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ফাঁস” বলে অভিহিত করেন। তাঁর ভাষায়, “একাধিক ৩০,০০০ পাউন্ড ওজনের বোমা নির্ভুলভাবে নির্ধারিত লক্ষ্যে ফেলার পর যা হয়, সেটাই হয়েছে—সম্পূর্ণ ধ্বংস।”

ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক বিশেষ দূত স্টিভেন উইটকফ ফক্স নিউজকে বলেন, “আমরা যা অর্জন করেছি, তা নিয়ে সন্দেহ তোলা হাস্যকর।” তিনি দাবি করেন, নাতান্জ, ইসফাহান ও ফোরদুর প্রতিটি স্থাপনায় অধিকাংশ, যদি না হয় সমস্ত, সেন্ট্রিফিউজই ধ্বংস হয়ে গেছে এবং এই কর্মসূচি পুনরায় সচল করতে ইরানের কয়েক বছর সময় লেগে যাবে।

প্রতিরক্ষা মন্ত্রী পিট হেগসেথ একে ‘সেনাবাহিনীর অসাধারণ সাফল্য’ বলে অভিহিত করেন, যদিও শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা জেনারেল ড্যান কেইন কিছুটা সতর্ক স্বরেই বলেন, “স্থাপনাগুলোতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে, তবে পুরোপুরি ধ্বংস হয়নি।”

অন্যদিকে, ইরান সরকার তাদের প্রতিক্রিয়ায় জানায়, “পরমাণু কার্যক্রমের ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।” ইরানের পরমাণু শক্তি সংস্থার প্রধান মোহাম্মদ ইসলামী এক বিবৃতিতে বলেন, “পুরনো পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ পুনরায় শুরু হবে। উৎপাদন ও সেবাদানে কোনো বিঘ্ন ঘটবে না।”

এদিকে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির এক উপদেষ্টা জানান, “ইরানের কাছে এখনও সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের মজুত রয়েছে এবং খেলা এখনও শেষ হয়নি।”

মার্কিন প্রতিরক্ষা বাহিনী জানায়, অভিযানে ১২৫টিরও বেশি বিমান, স্টেলথ বোমার, রিফুয়েলিং ট্যাংকার, গাইডেড মিসাইল সাবমেরিন এবং নজরদারি ও গোয়েন্দা বিমান অংশ নেয়।

যদিও ট্রাম্প প্রশাসনের দাবি অনুযায়ী এটি ছিল এক "বিস্ময়কর সামরিক সাফল্য", কিন্তু বিশ্লেষকরা বলছেন—আন্তর্জাতিক রাজনীতির এই জটিল খেলার পরিণতি নির্ভর করবে ভবিষ্যতের কৌশল ও প্রতিক্রিয়াগুলোর ওপর।

-আলমগীর হোসেন, নিজস্ব প্রতিবেদক

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

আমেরযত কাহিনি

আমেরযত কাহিনি

নিজস্ব প্রতিবেদক: স্বাদ, গন্ধ ও পুষ্টিগুণে পরিপূর্ণ ‘আম’ শুধু একটি ফল নয়, বরং এটি ইতিহাস, সংস্কৃতি ও অর্থনীতিতে গভীরভাবে প্রোথিত এক... বিস্তারিত