দাবদাহে শরীর শীতল ও সতেজ রাখতে খাদ্যতালিকায় রাখুন এই ৭টি খাবার

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ মে ১২ ১১:১৬:১৭
দাবদাহে শরীর শীতল ও সতেজ রাখতে খাদ্যতালিকায় রাখুন এই ৭টি খাবার

সত্য নিউজ: গ্রীষ্মের তীব্র দাবদাহে আমাদের শরীর স্বাভাবিকভাবেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এই সময় শরীরকে পানিশূন্যতা থেকে রক্ষা করতে আমরা প্রচুর পরিমাণে পানি পান করি, যা অনেক সময় ক্ষুধামান্দ্যের কারণও হয়ে দাঁড়ায়। কিন্তু প্রচণ্ড গরমের সঙ্গে মোকাবিলা করে দৈনন্দিন কার্যক্রমে সচল থাকতে হলে শরীরের জন্য পর্যাপ্ত শক্তি অপরিহার্য। অন্যথায়, ক্লান্তি ও দুর্বলতা গ্রাস করতে পারে। তাই এই গরমে খাদ্যতালিকায় এমন কিছু খাবার অন্তর্ভুক্ত করা উচিত যা শরীরকে স্বাভাবিকভাবে শীতল রাখতে সাহায্য করে। পর্যাপ্ত পানির পাশাপাশি এসব পানিজাতীয় ও পুষ্টিকর খাবার আমাদের সতেজ থাকতে সহায়তা করবে। জেনে নিন গ্রীষ্মের তাপদাহে শরীর ঠান্ডা রাখতে কোন খাবারগুলো আপনার নিত্যসঙ্গী হতে পারে:

১. ডাবের পানি: প্রাকৃতিক শীতলতার উৎস
প্রাকৃতিক উপায়ে শরীরকে ঠান্ডা রাখতে ডাবের পানির জুড়ি মেলা ভার। প্রতিদিন ডাবের পানি পান করলে এতে থাকা বিভিন্ন খনিজ উপাদান, যেমন - পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, শরীরের ইলেকট্রোলাইটের ভারসাম্য বজায় রাখে এবং পানিশূন্যতা দূর করে। এটি হজম প্রক্রিয়াকেও সহজ করে তোলে।

২. রসালো তরমুজ: গ্রীষ্মের তৃষ্ণা নিবারক
বাজারে এখন রসালো তরমুজের সমাহার। এই ফলটি গ্রীষ্মকালে শরীরের জন্য এক অসাধারণ আরামদায়ক উপাদান। তরমুজে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন (বিশেষত ভিটামিন এ ও সি) এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, তরমুজের প্রায় ৯২ শতাংশই পানি, যা শরীরকে স্বাভাবিকভাবে শীতল রাখতে কার্যকর ভূমিকা পালন করে।

৩. টক দই বা বাটারমিল্ক: প্রোবায়োটিকের শক্তি
গরমে শরীরকে ঠান্ডা রাখতে টক দই অথবা বাটারমিল্ক (ঘোল) খুবই উপকারী। ক্যালসিয়াম, প্রোটিন এবং উপকারী প্রোবায়োটিকে ভরপুর এই দুগ্ধজাত খাবারগুলো হজম সংক্রান্ত সমস্যা দূর করতেও সহায়ক। টক দইয়ের সঙ্গে সামান্য জিরার গুঁড়া, পুদিনা পাতা এবং বিট লবণ মিশিয়ে একটি সতেজকারক ও স্বাস্থ্যকর পানীয় তৈরি করা যেতে পারে, যা গরমে দেবে অনাবিল প্রশান্তি।

৪. আমলকী: ভিটামিন সি ও রোগ প্রতিরোধে সহায়ক
ভিটামিন সি এবং ফাইবারের এক চমৎকার প্রাকৃতিক উৎস হলো আমলকী। গ্রীষ্মের প্রচণ্ড গরমে শরীরকে সুস্থ ও রোগমুক্ত রাখতে নিয়মিত আমলকী গ্রহণ করা যেতে পারে। এটি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে বিশেষভাবে সাহায্য করে। আমলকী সরাসরি চিবিয়ে খাওয়া যায়, আচার তৈরি করে কিংবা পানিতে ফুটিয়ে, ছেঁকে, ব্লেন্ড করে সামান্য মধু মিশিয়ে একটি সতেজ পানীয় হিসেবেও গ্রহণ করা যেতে পারে।

৫. শসা: পানির আধার ও পটাশিয়ামের ভাণ্ডার
শরীরকে ঠান্ডা ও আর্দ্র রাখতে প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় শসা অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন। শসায় প্রায় ৯৫ শতাংশই পানি থাকে। এছাড়াও, এতে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে পটাশিয়াম, যা হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে এবং মস্তিষ্কের কার্যকারিতাও উন্নত করে।

৬. আপেল: পানিশূন্যতা ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূরীকরণে কার্যকর
আপেলের প্রায় ৮৬ শতাংশই পানি দ্বারা গঠিত। তাই, শরীরের অতিরিক্ত পানির চাহিদা মেটাতে প্রতিদিন একটি করে আপেল খাওয়া যেতে পারে। আঁশসমৃদ্ধ এই ফলটি কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যা দূর করতেও বেশ কার্যকর।

৭. তালশাঁস: খনিজ ও ফাইবারের অপূর্ব সমন্বয়
গ্রীষ্মকালীন ফল তালশাঁস পুষ্টি উপাদানে ভরপুর। এতে রয়েছে ভিটামিন এ, বি, সি এবং ক্যালসিয়াম, আয়রন, পটাশিয়াম, ফসফরাসের মতো গুরুত্বপূর্ণ খনিজ উপাদান। এছাড়াও, তালশাঁসে পর্যাপ্ত পরিমাণে ফাইবার থাকায় এটি হজম প্রক্রিয়াকে সুস্থ রাখে এবং সামগ্রিকভাবে শরীরকে নানাভাবে উপকৃত করে।

এই গরমে সুস্থ ও সতেজ থাকতে উপরিউক্ত খাবারগুলো আপনার খাদ্যতালিকায় যোগ করুন এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুন। পাশাপাশি, অতিরিক্ত তৈলাক্ত ও ভাজাপোড়া খাবার এড়িয়ে চলুন।

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ