রাজনীতি

চীন সফরে যাচ্ছে বিএনপি প্রতিনিধি দল, সম্পর্ক আরও গভীর করার লক্ষ্যে

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুন ২২ ১১:০৯:৪৭
চীন সফরে যাচ্ছে বিএনপি প্রতিনিধি দল, সম্পর্ক আরও গভীর করার লক্ষ্যে

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দল আজ রাতে চীনের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করবে। চায়না কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিসি) আমন্ত্রণে এই সফরের আয়োজন করা হয়েছে, যার লক্ষ্য দুই দলের মধ্যে সম্পর্ক আরও জোরদার করা। বিএনপি মিডিয়া সেলের সদস্য শ্যরুল কবির খান নিশ্চিত করেছেন যে প্রতিনিধি দলটি শনিবার রাতেই ঢাকা ছাড়বে।

এই প্রতিনিধিদলে রয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, সেলিমা রহমান ও এজেএম জাহিদ হোসেন। তাদের সঙ্গে থাকছেন চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য জহির উদ্দিন স্বপন, ইসমাইল জাবিউল্লাহ এবং অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া। সফরে অংশ নিচ্ছেন বিএনপি মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক মোদুদ আহমেদ পাভেলও।

সফরের আগের দিন বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় প্রতিনিধি দলটি ঢাকায় অবস্থিত চীনা দূতাবাসে চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। দলীয় সূত্র জানায়, সফরটির প্রধান উদ্দেশ্য হলো চীনা কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে বিএনপির কূটনৈতিক সম্পর্ক এবং রাজনৈতিক বোঝাপড়াকে আরও শক্তিশালী করা।

উল্লেখ্য, এর আগে গত মাসেই বিএনপির একটি দল সিপিসির আমন্ত্রণে বেইজিংয়ে একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অংশ নিয়েছিল। এবারকার সফর সেই ধারাবাহিকতায় আরও একধাপ অগ্রসর পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। সফরের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ-চীন রাজনৈতিক সম্পর্কের নতুন মাত্রা যোগ হওয়ার পাশাপাশি ভবিষ্যতে দ্বিপাক্ষিক সংলাপ, কৌশলগত সহযোগিতা এবং আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মে দুই দলের কার্যক্রম আরও ঘনিষ্ঠ হতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।

- সুত্র বি এস এস


৮১ বছরে বেগম খালেদা জিয়া: গণতন্ত্রের আপোষহীন কণ্ঠস্বর ও রাজনৈতিক উত্তরাধিকার

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ১৫ ২১:৩০:৫১
৮১ বছরে বেগম খালেদা জিয়া: গণতন্ত্রের আপোষহীন কণ্ঠস্বর ও রাজনৈতিক উত্তরাধিকার

বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে এমন কিছু নাম আছে যাদের জীবন ও কর্ম দেশের গণতান্ত্রিক অভিযাত্রার সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িয়ে আছে। বেগম খালেদা জিয়া সেই তালিকার শীর্ষে। আজ তাঁর ৮১তম জন্মদিন। চার দশকের বেশি সময় ধরে তিনি ক্ষমতা, বিরোধিতা, আন্দোলন, কারাবাস এবং গৃহবন্দিত্বের ভেতর দিয়ে গেছেন। প্রতিটি অধ্যায় তাঁকে যেমন দৃঢ় করেছে, তেমনি রাজনৈতিক বিরোধিতার কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে।

১৯৮১ সালে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের হত্যাকাণ্ডের পর বিএনপির নেতৃত্বে আসেন খালেদা জিয়া। তখন তিনি রাজনীতিতে নতুন ছিলেন, কিন্তু সেনাশাসক হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের কর্তৃত্ববাদী শাসনের বিরুদ্ধে তিনি দ্রুত বিরোধী শক্তির অন্যতম প্রধান মুখে পরিণত হন। ১৯৮০-এর দশকে তাঁর নেতৃত্বে বিএনপি স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় থাকে এবং ১৯৯০ সালের গণঅভ্যুত্থানে বিরাট ভূমিকা রাখে, যা শেষ পর্যন্ত এরশাদের পতন ঘটায়। তাঁর নেতৃত্বের বৈশিষ্ট্য ছিল আপোষহীনতা, সরাসরি আন্দোলনে অংশগ্রহণ এবং বিরোধী শিবিরকে ঐক্যবদ্ধ করার ক্ষমতা।

১৯৯১ সালের নির্বাচনে বিএনপি জয়লাভ করলে তিনি বাংলাদেশের প্রথম গনতান্ত্রীকভাবে জনগনের ভোটে নির্বাচিত নারী প্রধানমন্ত্রী হন। দীর্ঘ ১৬ বছরের রাষ্ট্রপতি শাসনের অবসান ঘটিয়ে সংসদীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা ছিল তাঁর সরকারের সবচেয়ে বড় অর্জন। সংবিধানের দ্বাদশ সংশোধনের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর হাতে নির্বাহী ক্ষমতা ফিরিয়ে দিয়ে জনগণের প্রত্যক্ষ প্রতিনিধিত্বের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়। তাঁর প্রথম মেয়াদে প্রাথমিক শিক্ষা বাধ্যতামূলক ও বিনামূল্যে চালু, নারীশিক্ষায় বিশেষ প্রণোদনা, ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রমে সহায়তা এবং গ্রামীণ স্বাস্থ্যসেবা সম্প্রসারণের মতো উদ্যোগগুলো দীর্ঘমেয়াদে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। একই সঙ্গে, তিনি সার্কসহ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সক্রিয় ছিলেন এবং বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের নীতি গ্রহণ করেন। যদিও ১৯৯৪ সালে রাজনৈতিক অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়, তিনি ১৯৯৬ সালে বিরোধী দলের দাবিতে নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তন করেন, যা শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তরের এক নতুন সংস্কৃতি গড়ে দেয়।

২০০১ সালে বিপুল বিজয়ে ক্ষমতায় ফিরে খালেদা জিয়ার সরকার অবকাঠামো উন্নয়ন, বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি, কৃষি উৎপাদন সম্প্রসারণ এবং তথ্যপ্রযুক্তি খাতে প্রাথমিক অগ্রগতি সাধন করে। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ৯/১১-পরবর্তী সময়ে চরমপন্থা ও জঙ্গিবাদ মোকাবিলায় তাঁর দৃঢ় অবস্থান প্রশংসিত হয়। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অব্যাহত রাখা, দারিদ্র্য হ্রাস এবং গ্রামীণ উন্নয়ন তাঁর দ্বিতীয় মেয়াদের সাফল্য হিসেবে বিবেচিত হয়। ২০০৬ সালে মেয়াদ শেষে তিনি সাংবিধানিক প্রক্রিয়ায় ক্ষমতা হস্তান্তর করেন।

২০০৭ সালের জানুয়ারিতে রাজনৈতিক অচলাবস্থার প্রেক্ষাপটে সেনা-সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় আসে। দুর্নীতির অভিযোগে ৩ সেপ্টেম্বর ২০০৭ খালেদা জিয়াকে গ্রেফতার করা হয়। “মাইনাস টু” পরিকল্পনার আওতায় তাঁকে রাজনীতি থেকে সরিয়ে দেওয়ার প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়, কারণ কারাগার থেকেও তিনি দলের নেতৃত্বে অবিচল থাকেন। প্রায় এক বছর কারাবাস শেষে তিনি মুক্তি পান।

২০০৯ সালে শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর রাজনৈতিক বিরোধিতা দমনে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়। এর মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত ঘটনা ছিল ঢাকার সেনানিবাসে অবস্থিত শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের স্মৃতি বিজরিত বাড়ি থেকে খালেদা জিয়াকে উচ্ছেদ। এটি ছিল শুধু তাঁর ব্যক্তিগত বাসস্থান নয়, বরং একটি ঐতিহাসিক ও পারিবারিক স্মৃতিচিহ্ন। উচ্ছেদের পরপরই বাড়িটি ভেঙে ফেলা হয়, যা বিএনপি সমর্থকদের কাছে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ও শহীদের স্মৃতি মুছে ফেলার প্রচেষ্টা হিসেবে ধরা পড়ে।

২০১১ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল হওয়ার পর ২০১৪ সালের নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা দেন খালেদা জিয়া। তাঁর নেতৃত্বে বিএনপি ৭ দফা প্রস্তাব দেয়, যার মধ্যে ছিল নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন, নির্বাচনকালীন সংসদ ভেঙে দেওয়া, সেনা মোতায়েন, রাজনৈতিক বন্দীদের মুক্তি এবং গণমাধ্যমের স্বাধীনতা। কিন্তু এসব প্রস্তাব সরকার প্রত্যাখ্যান করে এবং একতরফা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এরপর আন্দোলন দমনে সরকারের দমননীতি তীব্র হয়। খালেদা জিয়া বারবার গৃহবন্দী হন, দলের বহু নেতা-কর্মী গ্রেফতার হন, এবং বিএনপির রাজনৈতিক কার্যক্রম সীমিত হয়ে পড়ে।

২০১৮ সালে বহুল আলোচিত জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াকে দণ্ডিত করে কারাগারে পাঠানো হয়। বিএনপি এবং আন্তর্জাতিক মহল এই মামলাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে আখ্যা দেয়। কারাগারে থাকাকালীন তাঁর স্বাস্থ্য দ্রুত অবনতি ঘটে। তিনি গুরুতর আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি জটিলতা এবং অন্যান্য রোগে আক্রান্ত হন। উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার অনুরোধ করা হলেও সরকার তা অনুমোদন করে না। সীমিত চিকিৎসাসুবিধায় তিনি হাসপাতালে থাকেন, যা দেশ-বিদেশে সমালোচিত হয়। ২০২০ সালের মার্চে করোনা মহামারির সময় মানবিক বিবেচনায় দণ্ড স্থগিত করে মুক্তি দেওয়া হলেও শর্ত ছিল তিনি বাসায় থাকবেন এবং বিদেশে যেতে পারবেন না। কার্যত গুলশানের বাসায় তিনি দীর্ঘ গৃহবন্দী জীবন কাটান, যা তাঁর রাজনৈতিক সক্রিয়তাকে স্থবির করে দেয়।

খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক দর্শনের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল জনগণের ক্ষমতায়ন ও জবাবদিহিমূলক শাসন। তাঁর প্রস্তাবিত ধারণাগুলো ২০২৩ সালে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ৩১ দফা রাষ্ট্রসংস্কার রূপরেখা হিসেবে প্রকাশ করেন। এতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনর্বহাল, দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সংসদ, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদসীমা, অনুচ্ছেদ ৭০ সংস্কার, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা এবং প্রশাসনিক সংস্কারের প্রস্তাব অন্তর্ভুক্ত ছিল। মূলত এই প্রস্তাবই পরবর্তীতে জনমনে রাষ্ট্রসংস্কার আকাঙ্খার সৃষ্টি করে।

২০২৪ সালে রাজনৈতিক পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে শেখ হাসিনা সরকার ক্ষমতাচ্যুত হলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে খালেদা জিয়ার কারামুক্তি ঘটে। দীর্ঘ কারাবাস ও গৃহবন্দী জীবনের পর জনতার উদ্দেশ্যে ভাষণে তিনি বলেন, “আমরা যে সংগ্রাম করেছি, তা প্রতিহিংসার জন্য নয়। এটি একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ার জন্য, যেখানে গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার ও সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হবে।” এই বক্তব্যে তাঁর রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও ক্ষমতার রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে জনগণের স্বার্থে কাজ করার অঙ্গীকার ফুটে ওঠে।

৮১ বছরে বেগম খালেদা জিয়ার জীবন বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে এক অনন্য অধ্যায়। তিনি সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে আপোষহীন লড়াই করেছেন, গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেছেন, জাতীয় উন্নয়নে অবদান রেখেছেন এবং রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়ে বছরের পর বছর কারাবাস ও গৃহবন্দী জীবন কাটিয়েছেন। আজ তাঁর জন্মদিনে তাঁকে শুধু বিএনপির নেতা হিসেবে নয়, বরং গণতন্ত্রের প্রতীক, নারীর সাহসিকতার মডেল এবং রাজনৈতিক দৃঢ়তার উদাহরণ হিসেবে স্মরণ করা হচ্ছে। তাঁর সংগ্রাম ও ত্যাগ প্রমাণ করে, প্রতিকূলতার মুখেও ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়ানো সম্ভব, যদি নেতৃত্বে থাকে অদম্য সাহস, দৃঢ় বিশ্বাস এবং জনগণের প্রতি অবিচল দায়বদ্ধতা।


‘জাতির পিতা’ নয়, মুজিববাদ ফ্যাসিবাদ: নাহিদ ইসলাম

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ১৫ ১৮:১৯:০৬
‘জাতির পিতা’ নয়, মুজিববাদ ফ্যাসিবাদ: নাহিদ ইসলাম
ছবিঃ সংগৃহীত

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, তাদের সংগ্রাম কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে নয়, বরং ফ্যাসিস্ট আদর্শ ও শাসনব্যবস্থার বিরুদ্ধে। শুক্রবার (১৫ আগস্ট) বিকেলে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজে ইংরেজি ভাষায় প্রকাশিত এক পোস্টে তিনি এই মন্তব্য করেন।

নাহিদ ইসলাম লিখেছেন, বাংলাদেশ কোনো ব্যক্তির সম্পত্তি নয়, এটি জনগণের রাষ্ট্র। শেখ মুজিবুর রহমানকে ‘জাতির জনক’ হিসেবে স্বীকৃতি না দেওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, স্বাধীনতা অর্জনে মুজিবুর রহমানের ভূমিকা ও ত্যাগকে স্বীকার করলেও, তার শাসনামলে সংঘটিত জাতীয় ট্র্যাজেডিও সমানভাবে স্মরণ করা জরুরি। তার ভাষায়, মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ ভারতের একটি কার্যত উপনিবেশে পরিণত হয়েছিল; ১৯৭২ সালে জনগণের ওপর জনবিরোধী সংবিধান চাপিয়ে দেওয়া হয়, যা লুটপাট, রাজনৈতিক হত্যা, একদলীয় বাকশাল প্রতিষ্ঠা ও একনায়কতন্ত্রের ভিত্তি স্থাপন করে।

তিনি আরও উল্লেখ করেন, আওয়ামী লীগের ফ্যাসিস্ট রাজনীতির আড়ালে ‘মুজিব পূজা’ ও ‘মুক্তিযুদ্ধ পূজা’ আসলে রাজনৈতিক মূর্তি পূজার একটি রূপ, যা জনগণের ওপর দমন-পীড়ন চালায়, রাষ্ট্রের সম্পদ লুট করে এবং নাগরিকদের শ্রেণিভুক্ত করে। নাহিদ ইসলামের মতে, এটি গণতন্ত্রের ছদ্মবেশে আধুনিক জমিদারির উদাহরণ ছাড়া আর কিছু নয়। মুক্তিযুদ্ধ ছিল সবার সংগ্রাম, কিন্তু কয়েক দশক ধরে আওয়ামী লীগ বাংলাদেশকে নিজেদের পৈতৃক সম্পত্তি হিসেবে ব্যবহার করেছে এবং মুজিবুর রহমানের নামকে দুর্নীতি ও দমননীতির ন্যায্যতা দেওয়ার হাতিয়ার বানিয়েছে।

২০২৪ সালের জনগণের বিদ্রোহ প্রসঙ্গে নাহিদ ইসলাম বলেন, এই গণআন্দোলনই দেশের জমিদারি ব্যবস্থা ধ্বংস করেছে। ভবিষ্যতে আর কোনো ব্যক্তি, পরিবার বা মতাদর্শ যেন নাগরিকদের অধিকার কেড়ে নিতে বা বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদ চাপিয়ে দিতে না পারে, সেটিই এখন প্রধান লক্ষ্য। তার ভাষায়, ‘জাতির পিতা’ শিরোনাম কোনো ইতিহাস নয়, বরং এটি বৈষম্য ও রাষ্ট্রের একচেটিয়া শাসনের একটি প্রতীক। বাংলাদেশ সকল নাগরিকের, এখানে কোনো ব্যক্তির জন্ম বা রাজনৈতিক উত্তরাধিকারের কারণে মালিকানা দাবি করার সুযোগ নেই।

নাহিদ ইসলাম তার পোস্টে ‘মুজিববাদ’কে একটি ফ্যাসিস্ট মতাদর্শ হিসেবে বর্ণনা করে বলেন, এর মাধ্যমে গুম, হত্যা, ধর্ষণ, মানবাধিকার লঙ্ঘন, রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুটপাট করে বিদেশে পাচার, ইসলামোফোবিয়া, সাম্প্রদায়িকতা, সংখ্যালঘুদের ভূমি দখল এবং জাতীয় সার্বভৌমত্ব বিক্রির মতো কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে। তার দাবি, ১৬ বছর ধরে মুজিবকে রাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে এবং মূর্তি ও প্রতীকীর আড়ালে অপহরণ, গণহত্যা, হত্যা ও লুটপাটের সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।

তিনি সতর্ক করে বলেন, মুজিববাদ একটি জীবন্ত বিপদ, যা রাজনৈতিক, আদর্শিক ও সাংস্কৃতিক প্রতিরোধের মাধ্যমে পরাজিত করতে হবে। নাহিদ ইসলামের মতে, তাদের সংগ্রাম একটি সমঅধিকারভিত্তিক গণপ্রজাতন্ত্র গড়ার জন্য, যেখানে কোনো দল, বংশ বা নেতা জনগণের উপরে অবস্থান করবে না।

-রফিক


শেখ মুজিবুর রহমানের ৫০তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ 

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ১৫ ১৪:২২:০৬
শেখ মুজিবুর রহমানের ৫০তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ 

আজ ১৫ আগস্ট, বাংলাদেশের ১ম রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানের ৫০তম মৃত্যুবার্ষিকী। ১৯৭৫ সালের এই দিনে মুক্তিযোদ্ধা সেনা কর্মকর্তাদের একাংশের নেতৃত্বে সংঘটিত অভ্যুত্থানে সপরিবারে নিহত হন তিনি। ওই দিনের হত্যাযজ্ঞে তার নিকটাত্মীয়সহ মোট ২৬ জন প্রাণ হারান। বিদেশে অবস্থান করায় তার দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা, প্রাণে বেঁচে যান।

১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতাযুদ্ধ শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বেই সংঘটিত হয়। তবে পুরো মুক্তিযুদ্ধকাল তিনি পশ্চিম পাকিস্তানে বন্দি ছিলেন। মুক্তির পর ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি দেশে ফিরে তিনি স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

তবে স্বাধীনতার মাত্র তিন বছর পর, ১৯৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারি তিনি দেশের সব রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করে বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগ (বাকশাল) প্রতিষ্ঠা করেন। এর মাধ্যমে বহুদলীয় গণতন্ত্রের ধারা বন্ধ হয়ে যায় এবং অতীত জীবনে গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রামকারী এই নেতা নিজেকে কার্যত আজীবনের জন্য রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, একদলীয় শাসনব্যবস্থা, সীমাহীন দুর্নীতি এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ভয়াবহ অবনতি ১৫ আগস্টের ঘটনার পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এমনকি শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে নিহত হওয়ার পর দেশের কোথাও তাৎক্ষণিক কোনো গণবিক্ষোভ বা প্রতিবাদ দেখা যায়নি, যা সে সময়ের রাজনৈতিক পরিস্থিতির জটিলতাকে স্পষ্ট করে। তবে স্বাধীনতা সংগ্রামে তাঁর সীমাহীন ত্যাগ ও বলিষ্ঠ্য নেতৃত্ব, বাংলাদেশের অভ্যূদয়ের ইতিহাসে তাকে অমর করে রাখবে।


৮১ বছরে খালেদা জিয়া: সংগ্রাম, কারাবাস ও রাজনৈতিক ইতিহাস

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ১৫ ১৩:৪০:২৪
৮১ বছরে খালেদা জিয়া: সংগ্রাম, কারাবাস ও রাজনৈতিক ইতিহাস
ছবি: সংগৃহীত

সংগ্রাম, ত্যাগ, শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার পথ পেরিয়ে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর চেয়ারপারসন ও তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া আজ ৮১ বছরে পদার্পণ করলেন। শুক্রবার তার জন্মদিন উপলক্ষে ঢাকাসহ সারা দেশে বিএনপির কার্যালয় ও মসজিদে মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। দলীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বিগত কয়েক বছরের মতো এবারও কেক কাটার কোনো আনুষ্ঠানিকতা থাকছে না।

বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, মিলাদ ও দোয়া মাহফিলে মুক্তিযুদ্ধে, ১৯৯০ সালের গণ-আন্দোলনে এবং ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানে নিহতদের আত্মার মাগফিরাত ও আহতদের সুস্থতা কামনা করা হবে। কেন্দ্রীয়ভাবে নয়াপল্টনের দলীয় কার্যালয়ে বেলা ১১টায় প্রধান দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে।

১৯৪৫ সালের ১৫ আগস্ট দিনাজপুরের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন বেগম খালেদা জিয়া। তার পিতা ফেনীর ফুলগাজির ইস্কান্দার মজুমদার এবং মাতা চন্দনবাড়ির তৈয়বা মজুমদার। দিনাজপুরের সুরেন্দ্রনাথ কলেজে পড়ার সময় তিনি তৎকালীন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন জিয়াউর রহমানের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। এই দম্পতির দুই সন্তান বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকো।

১৯৮১ সালের ৩১ মে দলের প্রতিষ্ঠাতা ও তার স্বামী প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান কিছু বিপথগামী সেনাসদস্যের হাতে নিহত হন। সে সময় পর্যন্ত গৃহবধূর জীবনযাপন করা খালেদা জিয়া দলীয় নেতা-কর্মীদের আহ্বানে রাজনীতির ময়দানে নামেন। ১৯৮২ সালের ৩ জানুয়ারি বিএনপির প্রাথমিক সদস্যপদ গ্রহণ এবং ১৯৮৪ সালের ১০ মে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারপারসন নির্বাচিত হওয়ার মধ্য দিয়ে তার রাজনৈতিক যাত্রা আনুষ্ঠানিক রূপ পায়।

১৯৯০ সালের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় নেতৃত্ব দিয়ে ‘আপসহীন নেত্রী’ হিসেবে খ্যাতি পান তিনি। ১৯৯১ সালে বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন খালেদা জিয়া। পরবর্তীতে তিন দফায় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এবং ১৯৯৩ সালে সার্কের প্রথম নারী চেয়ারপারসন হওয়ার গৌরব অর্জন করেন। ২০০১ সালের নির্বাচনে তার নেতৃত্বে চারদলীয় জোট জয়ী হয়ে সরকার গঠন করে।

২০০৭ সালের ওয়ান-ইলেভেন পর্বে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ৩ সেপ্টেম্বর তিনি গ্রেপ্তার হন এবং ২০০৮ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কারাভোগ করেন। একই বছরের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি প্রত্যাশিত ফল না পেয়ে ক্ষমতায় ফিরতে ব্যর্থ হয়।

পরবর্তীতে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি দুর্নীতি দমন কমিশনের মামলায় মাত্র দুই কোটি টাকার অভিযোগে ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসামূলক’ সাজানো রায়ে তাকে কারারুদ্ধ করে শেখ হাসিনার সরকার। কারাগারের স্যাঁতসেঁতে পরিবেশ ও বিনা চিকিৎসায় থাকার ফলে তার শারীরিক অবস্থা দ্রুত অবনতি ঘটে। উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেয়ার আবেদন বারবার নাকচ করে সরকার।

২০২০ সালের ২৫ মার্চ করোনা পরিস্থিতিতে ছয় মাসের জন্য শর্তসাপেক্ষে মুক্তি পেয়ে তিনি গুলশানের ‘ফিরোজা’ বাসায় গৃহবন্দী থাকেন। শুধু হাসপাতাল ও বাসার মধ্যেই সীমাবদ্ধ জীবনযাপন করেন তিনি। কয়েকবার অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন এবং চিকিৎসা নেন।

২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরদিন রাষ্ট্রপতি তার সাজা মওকুফ করেন। দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিস, কিডনি, হৃদরোগ, ডায়াবেটিস ও আর্থ্রাইটিসসহ নানা জটিল রোগে ভুগতে থাকা খালেদা জিয়া গত ৮ জানুয়ারি কাতারের আমিরের পাঠানো বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডনে যান। লন্ডন ক্লিনিকে অধ্যাপক প্যাট্রিক কেনেডি ও অধ্যাপক জেনিফার ক্রসের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন থাকার পর ২৫ জানুয়ারি থেকে তিনি বড় ছেলে তারেক রহমানের বাসায় ছিলেন। চার মাস পর, ৬ মে একই এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে দেশে ফেরেন তিনি।

-রফিক


ফ্রান্স থেকে ফিরে ‘ইন্টার্ন’ উপদেষ্টা দিয়ে দেশ চালাচ্ছেন ইউনূস: রাশেদ খান

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ১৫ ১০:৪৬:২৭
ফ্রান্স থেকে ফিরে ‘ইন্টার্ন’ উপদেষ্টা দিয়ে দেশ চালাচ্ছেন ইউনূস: রাশেদ খান
ছবি: সংগৃহীত

গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ছাত্রনেতা রাশেদ খান কয়েকদিন আগেই দৃঢ়ভাবে ঘোষণা দিয়েছিলেন “শতভাগ গ্যারান্টি দিয়ে বলছি, প্রধান উপদেষ্টার ঘোষিত সময়েই নির্বাচন হবে।” কিন্তু বুধবার (১৩ আগস্ট) সকালে নিজের ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এবার প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং তার উপদেষ্টা পরিষদের প্রতি তীব্র সমালোচনা করেন।

পোস্টে তিনি প্রথমে ড. ইউনূসের নির্বাচনের সময়সীমা ঘোষণার প্রশংসা করলেও, পরে উপদেষ্টা পরিষদকে ‘ইন্টার্ন চিকিৎসক’ হিসেবে তুলনা করেন। তার ভাষায়, “তিনি (ড. ইউনূস) ফ্রান্স থেকে ফিরে এসে যাদের নিয়ে উপদেষ্টা পরিষদ গঠন করেছেন তারা ইন্টার্ন চিকিৎসকের মত। ১৬ বছর ধরে তৈরি হওয়া হাসিনার ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার (যাকে তিনি ক্যান্সার হিসেবে আখ্যা দেন) চিকিৎসা করাতে তিনি এই ইন্টার্ন উপদেষ্টাদের ব্যবহার করছেন। এর ফলে ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা পুরো রাষ্ট্রযন্ত্রে ছড়িয়ে পড়েছে বা বহাল থেকেছে।”

রাশেদ খানের দাবি, উপদেষ্টাদের অদক্ষতা ও অভিজ্ঞতার অভাবে আওয়ামী লীগ আমলের ‘ফ্যাসিবাদী সেটাপ’ সচিবালয়, পুলিশ, র‍্যাব, বিজিবি, এবং অন্যান্য সরকারি দপ্তর ও সেক্টরে শুধু টিকে নেই, বরং অনেক ক্ষেত্রেই আরও শক্তিশালী হয়েছে।

তিনি মনে করেন, গণঅভ্যুত্থানের পর অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম দায়িত্ব ছিল আওয়ামী লীগের সুবিধাভোগীদের যারা প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে ফ্যাসিবাদী কাঠামো গড়ে তুলেছিল তাদের চাকরিচ্যুত ও শাস্তির আওতায় আনা। কিন্তু ড. ইউনূস সেই পুরোনো কাঠামো অপরিবর্তিত রেখেই দেশ পরিচালনা করছেন।

রাশেদ খান উপদেষ্টা পরিষদের এনজিও-প্রভাবিত চরিত্রের দিকেও ইঙ্গিত করেন। তার ভাষায়, “উপদেষ্টা পরিষদের এনজিও সার্কেলটা মিষ্টি কথায় পটু, কিন্তু বাস্তবায়নে কার্যত উদাসীন ও অনভিজ্ঞ। বিচার ও সংস্কারের মিষ্টি কথা বললেও, তাদের কার্যকলাপ আমার কাছে অবিশ্বাস্য মনে হয়।”

পোস্টের শেষ অংশে তিনি হতাশা প্রকাশ করে বলেন, “বছরের শেষেও আমরা মিষ্টি কথার ধোঁকায় নতুন স্বপ্ন দেখছি। মূলত আমাদের ভাগ্যই খারাপ বারবার পরিবর্তনের স্বপ্ন দেখে আমাদের যোদ্ধারা জীবন দেয়, কিন্তু রাষ্ট্রের গুণগত ও পদ্ধতিগত পরিবর্তন কখনো হয় না।”

-রফিক


১৫ আগস্টের আগে ঢাবি হলে শেখ হাসিনা-আ.লীগ ব্যঙ্গ করে নৃত্য-উল্লাস

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ১৫ ১০:৩৯:২৭
১৫ আগস্টের আগে ঢাবি হলে শেখ হাসিনা-আ.লীগ ব্যঙ্গ করে নৃত্য-উল্লাস
ছবি: সংগৃহীত

১৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ ঘোষিত শোক দিবসের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হওয়ার আগ মুহূর্তে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কবি জসীম উদদীন হলে এক ভিন্নধর্মী ও বিতর্কিত আয়োজন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) দিবাগত মধ্যরাতে হলটির আড়াই তলা খ্যাত স্থানে কয়েকজন শিক্ষার্থী ডিজে গান বাজিয়ে নৃত্য ও উল্লাসে অংশ নেন, যা রাজনৈতিক বার্তাবাহী ব্যঙ্গাত্মক পরিবেশনা হিসেবে সামাজিক মাধ্যমে আলোচনায় আসে।

চোখে পড়ার মতো বিষয় ছিল, নৃত্যের সময় স্পিকারে বারবার বাজানো হচ্ছিল “শেখ হাসিনার সালাম নিন, নৌকা মার্কায় ভোট দিন; জয় বাংলা” এই গানটি। যদিও এই স্লোগান ঐতিহ্যগতভাবে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রচারণার অংশ, শিক্ষার্থীরা তা ব্যঙ্গাত্মক ভঙ্গিতে উপস্থাপন করে নৃত্য ও উল্লাসে মেতে ওঠেন। অনুষ্ঠানের ফাঁকে শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে নানা স্লোগানও শোনা যায়, যা পুরো আয়োজনের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটকে আরও তীব্র করে তোলে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হল সংস্কৃতিতে ‘আড়াই তলা’ একটি সুপরিচিত স্থান, যেখানে প্রায়শই ছাত্রদের অনানুষ্ঠানিক জমায়েত হয়। তবে এবারের আয়োজনটি বিশেষভাবে দৃষ্টি কাড়ে কারণ এটি অনুষ্ঠিত হয় ১৫ আগস্টের শোক দিবস পালনের মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে।

উল্লেখ্য, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানকে তার ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাসভবনে সপরিবারে হত্যা করা হয়। আওয়ামী লীগ এ দিনটিকে জাতীয় শোক দিবস হিসেবে পালন করে এবং প্রতিবছর দলীয় ও রাষ্ট্রীয়ভাবে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করে থাকে।

-রাফসান


ঢাবির হলে রাজনীতি নিষিদ্ধ হলেও বহাল থাকবে ছাত্রদলের কমিটিঃ রাকিব

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ১৪ ২১:২৩:০৫
ঢাবির হলে রাজনীতি নিষিদ্ধ হলেও বহাল থাকবে ছাত্রদলের কমিটিঃ রাকিব
ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ থাকলেও ছাত্রদলের ঘোষিত কমিটিগুলো বহাল থাকবে। ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব এমনটাই জানিয়েছেন। বৃহস্পতিবার উপাচার্যের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোয় ‘গুপ্ত ছাত্র রাজনীতি’ বন্ধে প্রশাসন কাজ করবে বলে তাদের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।

এর আগে গত ৯ আগস্ট ছাত্রদল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮টি হল শাখার নতুন কমিটি ঘোষণা করে। ওইদিনই শিক্ষার্থীরা হলের রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে জড়ো হয়। বিক্ষোভের মুখে উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান হলে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের পূর্বের সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে বলে জানান।

তবে ছাত্রদল সভাপতি রাকিব অভিযোগ করে বলেন, ‘ছাত্রলীগ যেভাবে হলগুলো দখল করেছিল, ছাত্রশিবিরও গুপ্ত রাজনীতির মাধ্যমে হলগুলো দখল করে নিচ্ছে।’ তিনি ছাত্রলীগের চিহ্নিত নেতাকর্মীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।

এদিকে, ক্যাম্পাসে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রেখে গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি চর্চার জন্য ছাত্র রাজনীতির রূপরেখা প্রণয়নে একটি পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এই কমিটি দ্রুততম সময়ের মধ্যে ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠন ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করে সুপারিশ দেবে।


জানে আলম অপুর ভাইরাল ভিডিও নিয়ে রহস্য, কেন ইশরাকের বিরুদ্ধে অভিযোগ?

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ১৪ ২০:৩০:১০
জানে আলম অপুর ভাইরাল ভিডিও নিয়ে রহস্য, কেন ইশরাকের বিরুদ্ধে অভিযোগ?
ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর গুলশানে চাঁদাবাজির ঘটনায় গ্রেপ্তার জানে আলম অপুর স্ত্রী কাজী আনিশা দাবি করেছেন যে, অপুর ভাইরাল হওয়া স্বীকারোক্তিমূলক ভিডিওটি মহানগর বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন জোর করে আদায় করেছেন। বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) জাতীয় জাদুঘরে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।

অপুর স্ত্রী বলেন, তার স্বামীকে ইশরাকের বাসার সামনে থেকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তিনি অভিযোগ করেন, ইশরাক অপুকে দিয়ে জোর করে এই বক্তব্য আদায় করিয়েছেন। কাজী আনিশার দাবি, অপুকে ফাঁসানো হয়েছে এবং তাকে দিয়ে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদের নাম বলানোর চেষ্টা করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ঘটনার দিন অপু ঢাকায় ছিলেন না, তিনি কিশোরগঞ্জে ছিলেন। তার ধারণা, একটি পক্ষ নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিল করতে অপুকে ব্যবহার করে অন্যদের ফাঁসানোর চেষ্টা করেছে। তিনি অবিলম্বে তার স্বামীর মুক্তি এবং ঘটনার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানান।

গত ১ আগস্ট গুলশানে সাবেক সংসদ সদস্য শাম্মী আহমেদের বাসায় চাঁদাবাজির ঘটনায় জানে আলম অপুকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এই মামলায় এর আগেও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক নেতা আবদুর রাজ্জাক বিন সোলাইমান ওরফে রিয়াদসহ মোট পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।


গুলশান চাঁদাবাজি ঘটনায় উপদেষ্টার সম্পৃক্ততা খোলাসা করা জরুরি: সালাহউদ্দিন আহমদ

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ১৪ ১৫:৫৫:৪৯
গুলশান চাঁদাবাজি ঘটনায় উপদেষ্টার সম্পৃক্ততা খোলাসা করা জরুরি: সালাহউদ্দিন আহমদ
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ

রাজধানীর গুলশানে সংঘটিত চাঁদাবাজির সাম্প্রতিক ঘটনায় অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো উপদেষ্টা জড়িত আছেন কি না এ বিষয়ে স্পষ্ট তদন্ত দাবি করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, এই অভিযোগের সত্যতা যাচাই এবং জনগণের সামনে সঠিক তথ্য উপস্থাপন করা জরুরি, নইলে উপদেষ্টাদের ভাবমূর্তি নিয়ে আরও প্রশ্ন তৈরি হবে।

বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) নিজের গুলশান বাসভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, “গুলশানে চাঁদাবাজির ঘটনায় কোনো উপদেষ্টা সম্পৃক্ত কি না, সেটি খোলাসা করা প্রয়োজন। নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ তদন্ত ছাড়া এই প্রশ্নের অবসান হবে না।” তিনি উল্লেখ করেন, জনগণকে বিভ্রান্তি থেকে মুক্ত রাখতে এবং অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আস্থা বজায় রাখতে এই ধরনের তদন্ত অপরিহার্য।

আসন্ন জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গেও বিএনপির এই নেতা সতর্কবার্তা উচ্চারণ করেন। তিনি রাজনৈতিক দলগুলোকে বিভ্রান্তিকর বক্তব্য ও প্রোপাগান্ডা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “যারা নির্বাচনী প্রক্রিয়া বানচাল করার চেষ্টা করবে কিংবা নির্বাচনে অংশগ্রহণ থেকে সরে দাঁড়াবে, তারা জাতীয় রাজনীতি থেকে ধীরে ধীরে মাইনাস হয়ে যাবে।”

এর আগে বুধবার (১৩ আগস্ট) রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি স্বীকারোক্তিমূলক ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে, যা নতুন বিতর্কের জন্ম দেয়। ভিডিওতে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক জানে আলম অপুকে দেখা যায় ভোররাতে গুলশানের একটি হোটেলের সামনে এক উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাতের কথা বলতে। এই বক্তব্য দ্রুত সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে এবং ঘটনাটি নিয়ে নানা গুঞ্জন শুরু হয়।

এ বিষয়ে পরদিন বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) জাতীয় জাদুঘরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে অপুর স্ত্রী কাজী আনিশা গুরুতর অভিযোগ করেন। তিনি দাবি করেন, তার স্বামীর ওই স্বীকারোক্তি জোরপূর্বক আদায় করা হয়েছে এবং এর পেছনে একজন বিএনপি নেতার সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। এই অভিযোগের পর ঘটনাটি আরও জটিল রূপ নেয় এবং রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন বিতর্কের জন্ম দেয়।

-রাফসান

পাঠকের মতামত:

১৪ আগস্ট সেরা দশ লেনদেনকারী শেয়ার

১৪ আগস্ট সেরা দশ লেনদেনকারী শেয়ার

সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনের তালিকায় শীর্ষস্থান দখল করেছে ওরিয়ন ইনফিউশন... বিস্তারিত