কোস্টগার্ডের কাছে হস্তান্তর, ফেরত আসা ৭৮ জনের শরীরে নির্যাতনের ছাপ

সত্য নিউজ: পশ্চিম সুন্দরবনের দুর্গম মান্দারবাড়িয়া চরে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)–এর রেখে যাওয়া ৭৮ জন বাংলাদেশিকে কোস্টগার্ডের কাছে হস্তান্তর করেছে বন বিভাগ। বন বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, এদের মধ্যে অনেকেই গুরুতর অসুস্থ এবং কয়েকজনের শরীরে স্পষ্ট নির্যাতনের চিহ্ন রয়েছে।
কোস্টগার্ডের কাছে হস্তান্তর করেছে বন বিভাগ। বন বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, এদের মধ্যে অনেকেই গুরুতর অসুস্থ এবং কয়েকজনের শরীরে স্পষ্ট নির্যাতনের চিহ্ন রয়েছে।
বিএসএফের হাতে পড়া এই বাংলাদেশিরা মূলত শ্রমের খোঁজে দেশের সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে গিয়েছিলেন বলে জানা গেছে। পরে সেখানকার বিভিন্ন এলাকা থেকে ভারতীয় পুলিশ তাঁদের আটক করে সন্দেশখালীতে বিএসএফের কাছে হস্তান্তর করে। দুই দিন বিএসএফ হেফাজতে থাকার পর তাঁদের শুক্রবার ভোরে স্পিডবোটে করে এনে ফেলে রাখা হয় বাংলাদেশ সীমান্তের ভেতরে সুন্দরবনের মান্দারবাড়িয়া চরে।
উদ্ধারের পর পরই মান্দারবাড়িয়া বন ক্যাম্পে তাঁদের আশ্রয় দেওয়া হয়। সেখানে দেখা যায়, বেশির ভাগ মানুষই ক্লান্ত, অপুষ্ট এবং চিকিৎসাহীনতায় আক্রান্ত। একজনের হাত ভাঙা ছিল, অন্যদের শরীরে ছিল রক্তাক্ত ও নীলচে দাগ। খাদ্য ও পানির তীব্র সংকটে থাকা অবস্থায় বন বিভাগ তাৎক্ষণিকভাবে স্থানীয় প্রশাসন ও র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নসহ (আরজিবি) যৌথভাবে ব্যবস্থা নিয়ে তাঁদের জন্য খাবার, স্যালাইন ও প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করে।
বন বিভাগের সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক মো. মশিউর রহমান বলেন, "উদ্ধারের সময় আমরা দেখি, তাঁরা প্রায় সবাই শারীরিকভাবে ভীষণ দুর্বল। একপ্রকার অনাহারে ছিলেন কয়েক দিন। তাঁদের মধ্যে একজনের হাত ভাঙা ছিল এবং আরও কয়েকজনের শরীরে নির্যাতনের চিহ্ন পাওয়া গেছে।"
এরপর শনিবার রাত ১১টার দিকে মান্দারবাড়িয়া ক্যাম্প থেকে তাঁদের হস্তান্তর করা হয় বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের কাকা-দোবেকী ক্যাম্পে। কোস্টগার্ড জানায়, তাঁদের মোংলার প্রধান ঘাঁটিতে নিয়ে যাওয়া হবে এবং সেখান থেকে বিস্তারিত যাচাই-বাছাই শেষে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
তাঁদের মধ্যে নড়াইলের কালিয়ার বাসিন্দা সাইদুল মোল্লা (২৭) এবং আবু বকর (২২) জানান, তাঁরা দুই বছর আগে কাজের খোঁজে ভারতে যান এবং সেখানে নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। ভারতীয় পুলিশ তাঁদের ৬ মে আটক করে এবং পরে বিএসএফের হেফাজতে দেয়। তাঁদের ভাষ্য অনুযায়ী, সন্দেশখালীতে বিএসএফ সদস্যদের দ্বারা তাঁরা শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত হন এবং সেখান থেকে চোখ বেঁধে স্পিডবোটে করে বাংলাদেশের ভেতরে এনে ফেলে রাখা হয়।
বিষয়টি নিয়ে কোস্টগার্ডের মোংলা সদর দপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও মিডিয়া বিভাগের পক্ষ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
এই ঘটনায় সীমান্ত নিরাপত্তা ও মানবাধিকারের প্রশ্ন আবারও সামনে চলে এসেছে। বিশেষ করে কোনও প্রক্রিয়া ছাড়াই বিদেশি বাহিনীর দ্বারা এভাবে বাংলাদেশি নাগরিকদের ফেলে যাওয়া এবং তাঁদের শরীরে নির্যাতনের চিহ্ন পাওয়া গভীর উদ্বেগের বিষয় বলে মনে করছেন স্থানীয় মানবাধিকারকর্মীরা।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই ঘটনার দ্রুত তদন্ত, মানবিক সহায়তা এবং ভুক্তভোগীদের পুনর্বাসন নিশ্চিত করার পাশাপাশি ভারত সরকারের কাছে কূটনৈতিকভাবে বিষয়টি উত্থাপন করা উচিত, যাতে ভবিষ্যতে এমন পরিস্থিতির পুনরাবৃত্তি না ঘটে।
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান: রাষ্ট্র নির্মাণের এক উজ্জ্বল প্রতিমূর্তি
- নতুন রাজনৈতিক সমীকরণে কারা টিকে থাকবে, কারা হারিয়ে যাবে?
- জবি’র সাবেক অধ্যাপক আনোয়ার বেগম হত্যাচেষ্টা মামলায় সুত্রাপুরে আটক
- তারকা পরিচিতি: রক্ষাকবচ না কি সমাজবিমুখ অব্যাহতি?
- দেশের ৬ জেলায় ৮০ কিলোমিটার বেগে ঝড়-বৃষ্টির শঙ্কা, নদীবন্দরে ২ নম্বর সতর্কতা
- সড়ক দুর্ঘটনায় সেনা কর্মকর্তা নিহত
- সোনাক্ষীর ‘নিকিতা রায়’-এর মুক্তি পেছাল, ঘোষণা দিলেন নতুন তারিখ
- ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের ৪০৫ কোটি টাকার লোকসান
- “ভারতের দালালরা ঘাপটি মেরে বসে আছে”: মুফতি রেজাউল করিম
- নাহিদের স্পষ্ট বার্তা: এনসিপিতে নেই দুই উপদেষ্টা আসিফ ও মাহফুজ
- বিএনপির সালাউদ্দিনকে নিয়ে কি লিখলেন প্রেস সচিব শফিকুল?
- জেনে নিন ঈদের ছুটিতে কোন কোন এলাকায় ব্যাংক খোলা থাকবে
- "ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি সব রাজনৈতিক দল অকুণ্ঠ সমর্থন জানিয়েছে"
- নারীকে লাথি মারা আকাশ চৌধুরী জামায়াতের কর্মী ছিলেন, বহিষ্কার করল দল
- মুহাম্মদ ইউনূস প্রশাসনের ভবিষ্যৎ কেন অনিশ্চিত