মেট্রোরেলে টিকিট সংকট: ২ লাখ ৪০ হাজার একক টিকিট উধাও

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুন ১২ ০৯:২৮:৩৪
মেট্রোরেলে টিকিট সংকট: ২ লাখ ৪০ হাজার একক টিকিট উধাও

রাজধানীবাসীর স্বপ্নের যাতায়াতব্যবস্থা মেট্রোরেল এখন টিকিট সংকটে। প্রায় ২ লাখ ৪০ হাজার একক যাত্রার টিকিট হারিয়ে যাওয়ায় ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) পড়েছে বড় ধরনের সমস্যায়। ফলে প্রতিদিন স্টেশনে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট কিনতে গিয়ে ভোগান্তিতে পড়ছেন যাত্রীরা, বিশেষ করে অফিস ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ব্যস্ত সময়ে।

মেট্রোরেল লাইন-৬ চালুর সময় ৩ লাখ ২০ হাজার পুনর্ব্যবহারযোগ্য একক যাত্রার টিকিট সরবরাহ করা হয়েছিল। যাত্রীদের একটি বড় অংশ সেই টিকিট ব্যবহারের পর তা নির্ধারিত গেটের মেশিনে ফেরত না দিয়ে নিজেদের কাছে রেখে দিয়েছে বা ফেলে দিয়েছে, ফলে ৭৫ শতাংশেরও বেশি টিকিট হারিয়ে গেছে।

টিকিট সংকটে যাত্রীদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা স্টেশনে অপেক্ষা করতে হচ্ছে। এক যাত্রী জানান, “যানজটের শহরে মেট্রোরেল আমাদের জন্য স্বস্তি নিয়ে এসেছিল। কিন্তু টিকিট সংকটে সেই স্বস্তি এখন ভোগান্তিতে পরিণত হয়েছে।”

ঢাকা ট্রান্সপোর্ট কো-অর্ডিনেশন অথরিটি (ডিটিসিএ) ইতিমধ্যে একটি কিউআর কোডভিত্তিক টিকিটিং সিস্টেম তৈরি করে ডিএমটিসিএলকে প্রস্তাব দিয়েছে। তবে মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ এটি গ্রহণ না করে নতুন একটি ‘ইউনিভার্সাল টিকেটিং সিস্টেম (UTS)’ চালুর জন্য ২৮ মে দরপত্র আহ্বান করেছে।

ডিএমটিসিএলের দাবি, ডিটিসিএর কিউআর কোড সিস্টেম মূলত বাসের জন্য উপযোগী, এবং এটি মেট্রোর স্বয়ংক্রিয় গেট ব্যবস্থায় কার্যকর নয়। এ নিয়ে মেট্রো প্রকল্প পরিচালক মো. জাকারিয়া বলেন, “ডিটিসিএর প্রযুক্তি ব্যবহারে প্রতিটি গেটে নতুন যন্ত্র বসাতে হবে, যা ব্যয়বহুল ও জনবলনির্ভর। এছাড়া এতে নিরাপত্তা ফাঁকও থেকে যাবে।”

এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ ও বুয়েটের অধ্যাপক ড. মো. হাদিউজ্জামান। তিনি বলেন, “সরকারি অর্থে যখন একটি কার্যকর ব্যবস্থা তৈরি হয়েছে, তখন সেটি ব্যবহার না করে নতুন পদ্ধতি চালু করাটা সম্পদের অপচয়। একই শহরে ভিন্ন ভিন্ন টিকিটিং সিস্টেম থাকলে যাত্রীরা বিভ্রান্ত হবে এবং একীভূত গণপরিবহন ব্যবস্থার লক্ষ্য বাধাগ্রস্ত হবে।”

তিনি প্রশ্ন তোলেন, “ডিএমটিসিএল কেন শুরু থেকেই আধুনিক কিউআর কোড টিকিটিং ব্যবস্থায় যায়নি? কেন পরিকল্পনায় এত গলদ থাকে?”

বর্তমানে মেট্রোরেলে যাতায়াতের তিনটি পদ্ধতি চালু রয়েছে—একক টিকিট, এমআরটি পাস কার্ড, ও এমআরটি অ্যাপ। কিন্তু একক টিকিটের চাহিদা বেশি হওয়ায় এই সঙ্কট প্রকট হয়েছে। দ্রুত টিকিট পুনর্মুদ্রণ অথবা কিউআর কোড পদ্ধতি চালুর মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের দাবি জানিয়েছেন যাত্রীরা।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

স্টারমারের নীরবতা: কূটনৈতিক শিষ্টাচার বনাম রাজনৈতিক সংকোচ

স্টারমারের নীরবতা: কূটনৈতিক শিষ্টাচার বনাম রাজনৈতিক সংকোচ

একজন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ, সামাজিক ব্যবসার পথপ্রদর্শক এবং গণতান্ত্রিক উত্তরণের নেতৃত্বদানকারী রাষ্ট্রনায়ক—এই তিনটি পরিচয়ই এখন সমভাবে প্রযোজ্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের... বিস্তারিত