ই-বাইক তৈরিতে দশ শর্ত, বাজেটে কর ছাড়ের সুবর্ণ সুযোগ!

অর্থনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুন ১১ ১৭:১৪:০৯
ই-বাইক তৈরিতে দশ শর্ত, বাজেটে কর ছাড়ের সুবর্ণ সুযোগ!

পরিবেশবান্ধব ও জ্বালানি-সাশ্রয়ী পরিবহনের প্রসার নিশ্চিত করতে দেশে ইলেকট্রিক বাইকের (ই-বাইক) উৎপাদনে বড় ধরনের কর সুবিধার প্রস্তাব করেছে সরকার। ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে দেশীয়ভাবে ই-বাইক উৎপাদনে উৎসাহ দিতে শুল্ক ও ভ্যাটে ব্যাপক ছাড়ের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

জাতীয় সংসদে বাজেট উপস্থাপনকালে প্রধান অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ই-বাইক উৎপাদনে ৫ শতাংশের বেশি কর আরোপ করা হবে না। একইসঙ্গে এই খাতে ব্যবহৃত যন্ত্রাংশ আমদানিতে ভ্যাট, সম্পূরক শুল্ক এবং অগ্রিম কর সম্পূর্ণভাবে অব্যাহতির আওতায় আনার প্রস্তাব করা হয়েছে।

শর্তসাপেক্ষে মিলবে কর সুবিধা

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্রে জানা গেছে, এই কর ছাড় উপভোগ করতে হলে বিনিয়োগকারীদের নির্ধারিত কিছু শর্ত পূরণ করতে হবে। এসব শর্তের মাধ্যমে সরকার দেশীয়ভাবে প্রযুক্তিগত সক্ষমতা, কর্মসংস্থান ও পরিবেশবান্ধব শিল্পের উন্নয়ন নিশ্চিত করতে চায়।

প্রস্তাবিত শর্তগুলোর মধ্যে রয়েছে—

১. বিনিয়োগ নিবন্ধন: বিডা, ইকোনমিক জোন অথরিটি বা হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের অধীনে নিবন্ধন বাধ্যতামূলক।

২. বিআরটিএ অনুমোদন: ই-বাইক উৎপাদনে বিআরটিএ থেকে মেকারস কোড এবং টাইপ অ্যাপ্রুভাল নেওয়া আবশ্যক।

৩. চেসিস উৎপাদন: কারখানায় আধুনিক যন্ত্রপাতিসহ চেসিস তৈরি ও প্রক্রিয়াজাতকরণের সক্ষমতা থাকতে হবে।

৪. প্লাস্টিক যন্ত্রপাতি স্থাপন: ই-বাইকের প্লাস্টিক অংশ তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি স্থাপন করতে হবে।

৫. রংকরণ সুবিধা: নিজস্ব পেইন্ট শপ থাকতে হবে এবং রংয়ের কাজ কারখানায় সম্পন্ন করতে হবে।

৬. ইলেকট্রিক মোটর উৎপাদন: ইলেকট্রিক মোটরের যন্ত্রাংশ নিজস্বভাবে উৎপাদনের সক্ষমতা থাকতে হবে।

৭. ব্যাটারি উৎপাদন: নিজস্বভাবে ব্যাটারি উৎপাদন অথবা দেশীয় সরবরাহকারীর সঙ্গে আনুষ্ঠানিক চুক্তি আবশ্যক।

৮. পরিবেশ ছাড়পত্র: পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ও আইএসও সনদ অর্জন করতে হবে।

৯. মানবসম্পদ: কমপক্ষে ২৫০ জন কর্মী কারখানায় নিয়োজিত থাকতে হবে।

১০. সেবা: সার্ভিস সেন্টার, যন্ত্রাংশ সরবরাহ ও গ্রাহকসেবার পূর্ণাঙ্গ ব্যবস্থা থাকতে হবে।

শিল্পায়নে নতুন সম্ভাবনার দ্বার

বিশ্লেষকদের মতে, সরকার প্রস্তাবিত এই উদার করনীতির মাধ্যমে দেশীয়ভাবে ই-বাইক শিল্পের বিকাশে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হচ্ছে। এতে করে দেশে পরিবেশবান্ধব ও টেকসই পরিবহন ব্যবস্থা গড়ে উঠবে, কর্মসংস্থান বাড়বে এবং আমদানি নির্ভরতা হ্রাস পাবে। যথাযথভাবে শর্ত পূরণ ও কার্যকর বাস্তবায়ন হলে এই খাতটি ভবিষ্যতে দেশের অর্থনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভে পরিণত হতে পারে।

-অনন্যা, নিজস্ব প্রতিবেদক

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

স্টারমারের নীরবতা: কূটনৈতিক শিষ্টাচার বনাম রাজনৈতিক সংকোচ

স্টারমারের নীরবতা: কূটনৈতিক শিষ্টাচার বনাম রাজনৈতিক সংকোচ

একজন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ, সামাজিক ব্যবসার পথপ্রদর্শক এবং গণতান্ত্রিক উত্তরণের নেতৃত্বদানকারী রাষ্ট্রনায়ক—এই তিনটি পরিচয়ই এখন সমভাবে প্রযোজ্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের... বিস্তারিত