তিন বছরেও শেষ হয়নি নীলফামারীর সড়ক, গা ঢাকা ঠিকাদার!

নীলফামারীর সৈয়দপুর থেকে রংপুরের তারাগঞ্জ পর্যন্ত প্রায় ১৮ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কটি সংস্কার ও পাকা করার লক্ষ্যে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে শুরু হয় একটি বহুল প্রত্যাশিত প্রকল্প। ২০২৩ সালের আগস্টের মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তিন বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো সম্পূর্ণ হয়নি নির্মাণ। এদিকে, মূল ঠিকাদার আওয়ামী লীগ নেতা মিজানুর রহমানের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান ‘মেসার্স ইসলাম ব্রাদার্স’ দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়ে কার্যত গা ঢাকা দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
সড়কটির ৬৫ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হলেও বরাদ্দকৃত অর্থের ৬২ শতাংশ, অর্থাৎ ১৩ কোটি ৫৩ লাখ টাকা ইতিমধ্যে উত্তোলন করা হয়েছে। অথচ বাকি ৩৫ শতাংশ কাজ থমকে রয়েছে দীর্ঘদিন। প্রকল্পটি বিশ্বব্যাংকের আর্থিক সহায়তায় বাস্তবায়িত হচ্ছে, যার মোট বরাদ্দ ২১ কোটি ৩৪ লাখ ৯৬ হাজার টাকা।
চুক্তি অনুযায়ী, ২০২৩ সালের আগস্টের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা থাকলেও পরে দুই দফায় সময় বাড়িয়ে ২০২4 সালের এপ্রিল পর্যন্ত সুযোগ দেওয়া হয়। কিন্তু সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান শেষ পর্যন্ত কাজ বন্ধ করে দেয়। স্থানীয় প্রকৌশল দপ্তরের পক্ষ থেকে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও ঠিকাদারের কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। ফলে প্রকল্প কার্যত স্থগিত হয়ে পড়েছে।
সৈয়দপুর উপজেলা প্রকৌশলী এম এম আলী রেজা রাজু জানান, ঠিকাদার চুক্তি ভঙ্গ করায় ৭০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এখন নতুনভাবে দরপত্র আহ্বান করে অবশিষ্ট কাজ শেষ করার প্রক্রিয়া চলছে।
মাঠ পর্যায়ের খোঁজখবর ও স্থানীয় বাসিন্দাদের ভাষ্যে জানা যায়, সড়কের যেসব অংশে কাজ শুরু হয়েছিল, তা এখন ভাঙাচোরা ও ধসে পড়া অবস্থায় রয়েছে। কোথাও কেবল ইট ফেলা, কোথাওবা খোয়া বিছানো হলেও কার্পেটিং না হওয়ায় যান চলাচল চরম ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। বর্ষায় কাদা, শুকনো মৌসুমে ধুলার যন্ত্রণা নিত্যদিনের ভোগান্তি।
হাজারিহাট গ্রামের বাসিন্দা ফয়সাল হোসেন বলেন, “রাস্তা খারাপ থাকাকালীনও এত দুর্ভোগ ছিল না, যতটা এখন কাজ শুরু করেও ফেলে রাখার কারণে হচ্ছে।”ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের রাকিবুল ইসলাম জানান, “রাস্তায় শিশুরা স্কুলে যেতে পারছে না ঠিকমতো। বহু বছর ধরে এই সমস্যা চলছে, কিন্তু সুরাহা হচ্ছে না।”
এই প্রকল্প ঘিরে শুধু স্থানীয় দুর্ভোগই নয়, উঠেছে প্রশাসনিক জবাবদিহি ও ঠিকাদার নিয়ন্ত্রণব্যবস্থার স্বচ্ছতা নিয়েও প্রশ্ন। বিশেষত কোনো রাজনৈতিক সংযোগ থাকা ঠিকাদার দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হলে তার বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণে প্রশাসনিক নিষ্ক্রিয়তা দৃষ্টিগোচর হচ্ছে।
এলাকাবাসীর দাবি, দ্রুত নতুনভাবে প্রকল্পটি চালু করে অবশিষ্ট কাজ শেষ করতে হবে এবং জনদুর্ভোগ কমাতে কার্যকর তদারকি নিশ্চিত করা জরুরি।
-শরিফুল ইসলাম, নিজস্ব প্রতিবেদক
পাঠকের মতামত:
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- ভবিষ্যতের গণতন্ত্র না পুরাতনের পুনরাবৃত্তি? ইউনুস-তারেক সাক্ষাৎ পর্যালোচনা
- শেয়ারবাজারে এল বড় সুখবর!
- স্টারমারের নীরবতা: কূটনৈতিক শিষ্টাচার বনাম রাজনৈতিক সংকোচ
- রিজার্ভের দাপট: বিদ্যুৎ খাতের ১৪ কোম্পানি বিনিয়োগের নতুন ঠিকানা
- ইউনূস-তারেক ঐতিহাসিক ও সফল বৈঠক: সংস্কার, একতা ও ন্যায়বিচার— এই তিন স্তম্ভে গড়ে উঠুক নতুন বাংলাদেশ
- নারায়ণগঞ্জে বিএনপি নেতার বাড়িতে সেনা অভিযান:উদ্ধার ইয়াবা ও ধারালো অস্ত্র!
- তিন মাসেই যে ১০ বেসরকারি ব্যাংকে ৩২ হাজার কোটি টাকার আমানত বৃদ্ধি!
- তারেক রহমানের দেশেফেরার সম্ভাব্য সময় জানালেনমির্জা ফখরুল
- মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন ভূ-রাজনৈতিক আধিপত্যের নতুন কৌশল: চীন ও রাশিয়া কী করবে?
- তারেক-ইউনূস বৈঠক: উত্তপ্ত রাজনীতিতে সম্ভাব্য টার্নিং পয়েন্ট?
- লন্ডনে তারেক-ইউনূসের বৈঠকের পরে পর পর ২টি স্ট্যাটাসে কি বললেন পিনাকী?
- ইসরায়েলে ইরানি মিসাইল, নিহত অন্তত ৭
- উত্তর-পূর্ব ভারতের ক্ষোভ কি ভারতের কেন্দ্রীয় কূটনীতি পাল্টাবে?
- সাক্ষাৎ চাইলেন শেখ হাসিনার ভাগ্নি, মুখ ফিরিয়ে নিলেন ড. ইউনূস
- ডিএসইতে সাধারণ বীমা খাতের প্রান্তিক বিশ্লেষণ:মুনাফা বৃদ্ধির শীর্ষে কারা?