৩৩ দফা পেছাল  জিকে শামীমের জামিন শুনানি

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ মে ২৯ ১৩:০৮:২১
৩৩ দফা পেছাল  জিকে শামীমের জামিন শুনানি

আলোচিত ব্যবসায়ী এস এম গোলাম কিবরিয়া শামীম ওরফে জিকে শামীমের জামিন আবেদন নিয়ে উচ্চ আদালতে দীর্ঘদিন ধরে অস্থিরতা চলছে। মামলার শুনানির জন্য ৩৩ বার দিন ধার্য হলেও এখন পর্যন্ত কোনোবারই শুনানি অনুষ্ঠিত হয়নি। সর্বশেষ আবারও শুনানির তারিখ পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে।

জানা গেছে, ২০১৯ সালের ২০ সেপ্টেম্বর গুলশানের নিকেতনের নিজ বাসা থেকে র‌্যাবের অভিযানে গ্রেপ্তার হন জিকে শামীম। ওই সময় তার বাসা থেকে নগদ এক কোটি ৮১ লাখ ২৮ হাজার টাকা, ৯ হাজার ইউএস ডলার, ১৬৫ কোটি ২৭ লাখ ৬০ হাজার টাকার ১০টি এফডিআর, ৩২টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের চেকবই, আগ্নেয়াস্ত্র এবং মদ উদ্ধার করার দাবি করে র‍্যাব। এরপরদিন র‍্যাব-১ এর নায়েব সুবেদার মিজানুর রহমান গুলশান থানায় অর্থপাচার প্রতিরোধ আইনে মামলা দায়ের করেন।

২০২৩ সালের ১৭ জুলাই ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১০ এই মামলায় রায় ঘোষণা করে। রায়ে বলা হয়, জিকে শামীম মানিলন্ডারিংয়ের চেষ্টা করেছিলেন। যদিও তার আইনজীবীদের দাবি, রাষ্ট্রপক্ষ এই অভিযোগ প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। তারা উল্লেখ করেন, আদালতে উপস্থাপিত তথ্য অনুযায়ী, শামীমের স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ মিলিয়ে ২৯৭ কোটি টাকার সম্পদ পাওয়া গেছে। পরে আদালত সংশ্লিষ্ট ২৯টি প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে এসব সম্পদ, ব্যাংক হিসাব ও এফডিআর অবমুক্ত করার জন্য চিঠি ইস্যু করে।

আইনজীবীরা আরও জানান, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) কর্তৃক যাচাই-বাছাই ও সার্টিফাইড কপি ইস্যুর মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে, জিকে শামীমের বৈধ অস্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ ৩৫৩ কোটি টাকা, যা মামলায় উল্লেখিত অর্থের চেয়েও ৫৬ কোটি টাকা বেশি। তা সত্ত্বেও তাকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এ রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল ও জামিন আবেদন করলে প্রাথমিকভাবে জামিন দেওয়া হলেও পরে চেম্বার আদালতের আদেশে তা স্থগিত হয়।

বর্তমানে তিনি পুনরায় জামিন আবেদন করেছেন, কিন্তু আদালতে তার শুনানি বারবার পিছিয়ে যাচ্ছে। এই বিলম্বকে রহস্যজনক ও ন্যায়বিচার পরিপন্থি হিসেবে উল্লেখ করেছেন তার আইনজীবীরা। তারা বলেন, মামলাটি সম্পূর্ণ খালাসযোগ্য এবং ফ্যাসিস্ট সরকারের সময় দায়ের করা হয়েছে। কিন্তু অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে ৩৩ বার শুনানির তারিখ নির্ধারণ করা হলেও কোনো কার্যকর শুনানি হয়নি।

উল্লেখযোগ্য, গ্রেপ্তারের সময় জিকে শামীমের প্রতিষ্ঠান ‘জিকে বিল্ডার্স’ সরকারি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ নির্মাণ প্রকল্পের ঠিকাদারি কাজ করছিল, যার মোট ব্যয় বরাদ্দ ছিল প্রায় ৪ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। র‌্যাবের অভিযানের পর এসব প্রকল্পের কার্যাদেশ বাতিল করা হয়, যা জিকে শামীমের ব্যবসার ওপর বড় ধরনের প্রভাব ফেলে। এখন তার আইনজীবীরা আশাবাদী যে, অবশেষে একটি নিরপেক্ষ বিচার হলে তিনি মামলা থেকে অব্যাহতি পাবেন।

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ