তাসনিম জারার পর এবার তাজনূভা: এনসিপিতে বিদ্রোহের আগুন থামছেই না

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২৮ ১৩:৫৮:৩১
তাসনিম জারার পর এবার তাজনূভা: এনসিপিতে বিদ্রোহের আগুন থামছেই না
ছবি : সংগৃহীত

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দীর্ঘদিনের অভ্যন্তরীণ অসন্তোষ এবার প্রকাশ্য বিচ্ছেদে রূপ নিয়েছে। দলের সিনিয়র যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারার পদত্যাগের রেশ কাটতে না কাটতেই আজ রোববার দুপুরে দল ছাড়ার ঘোষণা দিলেন যুগ্ম আহ্বায়ক তাজনূভা জাবীন। ঢাকা-১৭ আসনের এই মনোনীত প্রার্থী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পদত্যাগের কথা জানিয়ে বলেন, দলের বর্তমান রাজনৈতিক গতিপথ ও জামায়াতের সাথে সমঝোতার সিদ্ধান্তের সাথে তিনি একমত হতে পারছেন না। নির্বাচনী ডামাডোলের মাঝে দুই প্রভাবশালী নারী নেত্রীর প্রস্থান এনসিপির সাংগঠনিক শক্তিকে বড় চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে।

অন্যদিকে, এনসিপির শীর্ষ নেতৃত্ব জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে জোট গঠনের সিদ্ধান্তে অনড় অবস্থানে রয়েছে। আজ বিকেলের মধ্যেই এই আলোচিত জোটের আনুষ্ঠানিক আত্মপ্রকাশ হতে পারে বলে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। এনসিপি সূত্রমতে, দলের ২১৬ জন কেন্দ্রীয় নেতার মধ্যে ১৮৪ জনই জামায়াতের সাথে সমঝোতার পক্ষে মত দিয়েছেন। তবে ৩০ জন কেন্দ্রীয় সদস্য এই জোটের বিরুদ্ধে এনসিপি আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামকে আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি দিয়ে তাঁদের উদ্বেগ জানিয়েছেন। তা সত্ত্বেও দলের মূল অঙ্গসংগঠনগুলো—জাতীয় যুব শক্তি, শ্রমিক শক্তি এবং ছাত্র সংগঠন জাতীয় ছাত্র শক্তিকে বর্তমান নেতৃত্বের পক্ষেই শক্ত অবস্থান নিতে দেখা গেছে।

জানা গেছে, জামায়াত-এনসিপির এই জোটে ‘আমার বাংলাদেশ পার্টি’ (এবি পার্টি) সহ আরও কয়েকটি ছোট দল যুক্ত হতে পারে। এনসিপি এই বৃহত্তর সংস্কার জোটের অধীনে অন্তত ৫০টি আসন দাবি করলেও শেষ পর্যন্ত ৪০টি আসনে সমঝোতা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এই সমঝোতা হলে এনসিপি নিজেদের ১২৫ জন প্রাথমিক প্রার্থীর তালিকা থেকে সরিয়ে এনে কেবল চূড়ান্ত ৪০টি আসনেই লড়াই করবে এবং বাকি আসনগুলোতে জোটের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করবে। দলের শীর্ষ নেতারা মনে করছেন, এককভাবে লড়াই করার চেয়ে বৃহত্তর জোটের অংশ হওয়া নির্বাচনী কৌশলের দিক থেকে বেশি ফলপ্রসূ হবে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এনসিপির এই ভাঙন এবং নতুন জোটের সমীকরণ আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এক নতুন মাত্রা যোগ করবে। একদিকে আদর্শিক কারণে পদত্যাগ এবং অন্যদিকে নির্বাচনী সফলতার জন্য কৌশলগত ঐক্য—এই দুইয়ের লড়াইয়ে এনসিপি শেষ পর্যন্ত কতটা সফল হবে, তা সময়ই বলে দেবে। তবে দলের ভেতরের এই বিদ্রোহ নির্বাচনী প্রচারণায় বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।


জামায়াত নির্ভরযোগ্য মিত্র নয়: এনসিপি নেত্রী সামান্তা

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২৮ ১১:১৯:০১
জামায়াত নির্ভরযোগ্য মিত্র নয়: এনসিপি নেত্রী সামান্তা
সামান্তা শারমিন- ফাইল ছবি

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে জামায়াতে ইসলামীর সাথে জোটবদ্ধ হওয়া নিয়ে যে অস্থিরতা চলছে, তাতে নতুন মাত্রা যোগ করেছেন দলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন। আজ রোববার (২৮ ডিসেম্বর) সকালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে তিনি জামায়াতকে ‘অনির্ভরযোগ্য মিত্র’ হিসেবে চিহ্নিত করেন। তাঁর মতে, জামায়াতের রাজনৈতিক দর্শন ও অবস্থানের সঙ্গে সমঝোতা করলে এনসিপিকে ভবিষ্যতে কঠিন মাশুল দিতে হবে। সামান্তার এই অবস্থান মূলত দলের গত দেড় বছরের আদর্শিক লড়াইয়েরই প্রতিফলন বলে তিনি দাবি করেছেন।

সামান্তা শারমিন তাঁর পোস্টে উল্লেখ করেন, এনসিপি গঠিত হয়েছিল বিচার, সংস্কার এবং গণপরিষদ নির্বাচনের মাধ্যমে ‘সেকেন্ড রিপাবলিক’ বা দ্বিতীয় প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য নিয়ে। অথচ জামায়াত নিম্নকক্ষে পিআর (আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব) ব্যবস্থার আওয়াজ তুলে সংস্কার প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করার চেষ্টা করছে। তিনি মনে করিয়ে দেন যে, এনসিপির আহ্বায়ক নিজেই একসময় বলেছিলেন—যারা সংস্কারের পক্ষে নয়, তাদের সঙ্গে জোট সম্ভব নয়। এই নীতির ওপর ভিত্তি করেই সারা দেশ থেকে প্রার্থীদের আহ্বান করে ৩০০ আসনে এককভাবে লড়ার ঘোষণা দিয়েছিল এনসিপি। এখন সেই অবস্থান থেকে সরে আসা মানেই সাধারণ মানুষ ও প্রার্থীদের সঙ্গে প্রতারণা করা।

এনসিপির এই প্রভাবশালী নেত্রী আরও বলেন, জামায়াতের সঙ্গে জোটের বিরোধিতা করার অর্থ এই নয় যে তিনি বিএনপির পক্ষে। বরং বিএনপি কিংবা জামায়াত—যেকোনোটির সঙ্গে জোট গঠন করা এনসিপির মৌলিক সাংগঠনিক ও রাজনৈতিক পলিসি থেকে বিচ্যুত হওয়া। তিনি নিজেকে এনসিপির আদি আদর্শের ‘সৈনিক’ দাবি করে বলেন, একটি নতুন রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে স্বতন্ত্র পরিচয় টিকিয়ে রাখা এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। জামায়াতের জুলাইয়ের স্পিরিট এবং বাংলাদেশ নিয়ে পরিকল্পনার বিষয়ে একমত হওয়ার যে দাবি, তার সঙ্গে এনসিপির রাষ্ট্রকল্পের মৌলিক পার্থক্য রয়েছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

সামান্তা শারমিনের এই প্রকাশ্য বিদ্রোহের ফলে এনসিপির শীর্ষ নেতৃত্বে ফাটল এখন স্পষ্ট। গতকাল দলের ৩০ জন কেন্দ্রীয় নেতা জামায়াত-জোটের বিরুদ্ধে স্মারকলিপি দেওয়ার পর সামান্তার এই কঠোর বার্তা দলটিকে বড় ধরনের ভাঙনের মুখে ঠেলে দিতে পারে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, তরুণ নেতৃত্বের এই অংশটি যদি জোটের সিদ্ধান্তে অনড় থাকে, তবে নির্বাচনী ময়দানে এনসিপির সাংগঠনিক কাঠামো তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।


জামায়াত সমঝোতা নিয়ে মুখ খুললেন এনসিপি সদস্যসচিব

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২৮ ০৯:৩১:৪২
জামায়াত সমঝোতা নিয়ে মুখ খুললেন এনসিপি সদস্যসচিব
ছবি : সংগৃহীত

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেন জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে নির্বাচনী সমঝোতা ও সম্ভাব্য জোটের বিষয়ে অবশেষে নীরবতা ভেঙেছেন। শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) মধ্যরাতে দলের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক বিশেষ বার্তায় তিনি এই ইস্যুতে দলের নীতিগত অবস্থান স্পষ্ট করেন। আখতার হোসেনের মতে, রাষ্ট্র সংস্কার এবং নতুন একটি রাজনৈতিক কাঠামো গড়ে তোলার যে অঙ্গীকার এনসিপি করেছে, সেই বৃহত্তর স্বার্থেই জামায়াতসহ সমমনা দলগুলোর সাথে নির্বাচনী সমঝোতা বিবেচনা করা হচ্ছে।

ফেসবুক বার্তায় তিনি উল্লেখ করেন, ঐকমত্য কমিশনের সংস্কার প্রস্তাবগুলো নিয়ে প্রধান দলগুলোর (বিএনপি ও অন্যান্য) মধ্যে দৃষ্টিভঙ্গির পার্থক্য থাকলেও এনসিপি ও জামায়াতসহ আরও কয়েকটি দল সংস্কারের সুনির্দিষ্ট বিষয়গুলোতে একমত হয়েছে। তাঁর ভাষায়, কেবল নির্বাচনী পাটিগণিত নয়, বরং দীর্ঘমেয়াদি রাষ্ট্র সংস্কারের লক্ষ্যেই এই সমঝোতা বা জোটের বিষয়টি সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে। তিনি মনে করেন, পুরাতন রাজনৈতিক দ্বিমেরুকরণ ভেঙে একটি নতুন ধারা তৈরি করতে হলে এই কৌশলগত ঐক্য প্রয়োজন।

তবে সদস্যসচিব এই বার্তা দিলেও এনসিপির অভ্যন্তরীণ চিত্র বেশ টালমাটাল। জামায়াতের সাথে এই জোটের বিরোধিতায় দলের কেন্দ্রীয় কমিটির অন্তত ৩০ জন নেতা ইতিমধ্যে আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের কাছে একটি স্মারকলিপি জমা দিয়েছেন। তাঁদের দাবি, জামায়াতের সাথে জোট করা এনসিপির মৌলিক আদর্শের পরিপন্থী। এই বিরোধের জের ধরে দলের অন্যতম জ্যেষ্ঠ নেত্রী ও ঢাকা-৯ আসনের মনোনীত প্রার্থী ডা. তাসনিম জারা গতকালই পদত্যাগ করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, আখতার হোসেনের এই মধ্যরাতের বার্তা মূলত দলের ভেতরে এবং বাইরে ওঠা সমালোচনার জবাব দেওয়ার একটি প্রচেষ্টা। একদিকে সংস্কারের দোহাই দিয়ে জামায়াতের সাথে জোটের যৌক্তিকতা প্রমাণের চেষ্টা চলছে, অন্যদিকে এনসিপির তৃণমূল ও একটি বড় অংশ জামায়াত বিরোধিতায় অনড়। এই রশি টানাটানির মধ্যে এনসিপি শেষ পর্যন্ত জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচনে অংশ নেবে নাকি বড় ধরনের ভাঙনের মুখে পড়বে, তা আগামী কয়েক দিনেই স্পষ্ট হবে।


ভোটের আগে রাজনীতিতে চলছে ভাঙাগড়ার নতুন খেলা

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২৮ ০৯:০০:৩৩
ভোটের আগে রাজনীতিতে চলছে ভাঙাগড়ার নতুন খেলা
ছবি : সংগৃহীত

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র সংগ্রহের শেষ সময়ের ঠিক আগেই দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোতে বড় ধরনের ওলটপালট শুরু হয়েছে। দীর্ঘদিনের মিত্রদের অনেকে এখন বিএনপির মূল দলে বিলীন হয়ে যাচ্ছেন অথবা ‘ধানের শীষ’ প্রতীক পেতে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত দল বিলুপ্ত করছেন। এর মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত ঘটনাটি ঘটেছে গণঅধিকার পরিষদে। দলটির সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ রাশেদ খান গতকাল শনিবার আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপিতে যোগ দিয়েছেন এবং তিনি ঝিনাইদহ-৪ আসন থেকে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে লড়বেন। তবে এই দলবদলের পরপরই গণঅধিকার পরিষদ থেকে তাঁকে ‘দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থি’ কাজের দায়ে বহিষ্কার করা হয়েছে। তাঁর সাবেক সহযোদ্ধা মো. ফারুক হাসান এই পদক্ষেপকে ‘দুই নৌকায় পা দেওয়া’র সাথে তুলনা করে কড়া সমালোচনা করেছেন।

অন্যদিকে, আসন সমঝোতায় ব্যর্থ হয়ে বিএনপির ২০ বছরের পুরনো মিত্র বাংলাদেশ লেবার পার্টি জোট ছেড়ে বেরিয়ে গেছে। দলটির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান এখন জামায়াতে ইসলামীর সাথে নতুন করে সখ্য গড়ে তুলছেন বলে গুঞ্জন রয়েছে। একইভাবে, এলডিপি প্রধান কর্নেল (অব.) অলি আহমদও বিএনপির সঙ্গ ত্যাগ করে এককভাবে নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন। যদিও তাঁর মহাসচিব রেদোয়ান আহমেদ ইতিমধ্যে বিএনপিতে যোগ দিয়ে কুমিল্লা-৭ আসনে ধানের শীষের টিকিট নিশ্চিত করেছেন। অলি আহমদ এখন জামায়াতের সাথে জোটবদ্ধ হওয়ার চেষ্টা করছেন বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে।

জোটের এই সংকট কেবল বিএনপিতেই সীমাবদ্ধ নয়। জামায়াতে ইসলামীর সাথে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আসন সমঝোতা নিয়েও দলের ভেতরে তুমুল বিতর্ক শুরু হয়েছে। জোটের এই রাজনৈতিক সমীকরণের প্রতিবাদে ঢাকা-৯ আসনে এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব ডা. তাসনিম জারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়াই করার ঘোষণা দিয়েছেন। এছাড়া, জেএসডি-র আ স ম আবদুর রবও আসন না পেয়ে এককভাবে নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন, যেখানে তাঁর স্ত্রী তানিয়া রব বিএনপির প্রতি ‘অসম্মান প্রদর্শনের’ অভিযোগ তুলেছেন।

ববি হাজ্জাজের মতো নেতারা নিজের দল এনডিএম-কে সচল রেখেও সরাসরি বিএনপিতে যোগ দিয়ে ঢাকা-১৩ আসন থেকে ধানের শীষ প্রতীকে লড়ছেন। নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না ও গণসংহতি আন্দোলনের জোনায়েদ সাকি বিএনপির সমর্থনে নিজেদের দলীয় প্রতীকেই নির্বাচন করবেন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। সব মিলিয়ে এবারের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আদর্শের চেয়ে ‘আসন’ এবং প্রতীকের লড়াই অনেক বেশি প্রবল হয়ে উঠেছে, যা বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতির এক নতুন মোড় নির্দেশ করছে।


অত্যন্ত জটিল ও সংকটময় মুহূর্তে খালেদা জিয়া

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২৮ ০৮:৩৮:৫৮
অত্যন্ত জটিল ও সংকটময় মুহূর্তে খালেদা জিয়া
ছবি : সংগৃহীত

বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা বর্তমানে অত্যন্ত স্থিতিশীল নয় এবং তিনি এক সংকটময় মুহূর্ত পার করছেন। শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) রাতে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের গেটে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তাঁর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন এই তথ্য জানান। তিনি উল্লেখ করেন যে, বেগম জিয়ার শারীরিক পরিস্থিতির বিশেষ কোনো উন্নতি হয়নি এবং তিনি হাসপাতালের ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) নিবিড় তত্ত্বাবধানে রয়েছেন।

এর আগে রাতে দীর্ঘ প্রবাস জীবন শেষে দেশে ফেরা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তাঁর স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমান এভারকেয়ার হাসপাতালে যান। সেখানে তাঁরা দীর্ঘ সময় বেগম খালেদা জিয়ার শয্যাপাশে অবস্থান করেন এবং তাঁর চিকিৎসার সার্বিক খোঁজখবর নেন। ডা. জাহিদ জানান, গত ২৩ নভেম্বর হাসপাতালে ভর্তির পর থেকে বেগম জিয়ার শারীরিক অবস্থার বেশ অবনতি ঘটে। পরিস্থিতির গুরুত্ব বিবেচনায় তাঁকে সাধারণ কেবিন থেকে দ্রুত সিসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে একটি উচ্চপর্যায়ের দেশি-বিদেশি মেডিকেল বোর্ড সার্বক্ষণিকভাবে তাঁর চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।

চিকিৎসক জাহিদ হোসেন আরও বলেন যে, তারেক রহমান ও জিয়া পরিবারের পক্ষ থেকে দেশবাসীর কাছে বেগম জিয়ার আরোগ্যের জন্য বিশেষভাবে দোয়া চাওয়া হয়েছে। দেশবাসী এবং চিকিৎসক-নার্সদের অক্লান্ত পরিশ্রম ও ভালোবাসার জন্য তারেক রহমান সবার প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। একই সাথে হাসপাতালে অন্য রোগীদের চিকিৎসার যেন কোনো ধরনের ব্যাঘাত না ঘটে, সে বিষয়ে দলীয় নেতাকর্মীদের প্রতি কঠোর নির্দেশনা দিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।

বর্তমানে বেগম জিয়ার লিভার সিরোসিসসহ বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতা ধরা পড়েছে বলে মেডিকেল বোর্ড সূত্রে জানা গেছে। ডা. জাহিদ আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন যে, আল্লাহ যদি মেহেরবানি করেন এবং চিকিৎসা সঠিক পথে এগোয়, তবে এই সংকটকাল কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে। বিএনপি চেয়ারপারসনের বর্তমান পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছে পুরো দেশ, এবং তাঁর দ্রুত সুস্থতার কামনায় সারা দেশে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করছেন দলীয় নেতাকর্মীরা।


এনসিপি কি দুই ভাগ হচ্ছে: জামায়াত জোট ঠেকাতে ৩০ নেতার কঠোর বার্তা

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২৭ ২১:৩০:৫১
এনসিপি কি দুই ভাগ হচ্ছে: জামায়াত জোট ঠেকাতে ৩০ নেতার কঠোর বার্তা

নির্বাচন সামনে রেখে জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বাধীন ৮ দলীয় জোটে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যোগ দেওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে দলটির ভেতরেই এখন আগ্নেয়গিরির মতো অসন্তোষ ফেটে পড়েছে। আজ শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) দলের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামকে এক যৌথ চিঠির মাধ্যমে কেন্দ্রীয় কমিটির ৩০ জন প্রভাবশালী সদস্য এই জোটের বিরুদ্ধে তাঁদের স্পষ্ট ও কঠোর অবস্থান ব্যক্ত করেছেন। চিঠিতে স্বাক্ষরকারী নেতাদের মধ্যে রয়েছেন যুগ্ম আহ্বায়ক খালেদ সাইফুল্লাহ, নুসরাত তাবাসসুম, যুগ্ম সদস্য সচিব মুশফিক উস সালেহীন এবং কেন্দ্রীয় সংগঠক আরমান হোসাইনসহ আরও অনেকে। তাঁদের মতে, জামায়াতের সাথে জোটবদ্ধ হওয়া মানেই এনসিপির ঘোষিত আদর্শ ও জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ঐতিহাসিক দায়বদ্ধতার সাথে বেইমানি করা।

চিঠিতে জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবিরের বিরুদ্ধে একাধিক বিস্ফোরক অভিযোগ তোলা হয়েছে। নেতারা দাবি করেছেন, গত এক বছর ধরে জামায়াত-শিবির অন্যান্য দলের ভেতরে গুপ্তচরবৃত্তি ও স্যাবোটাজ চালিয়েছে। এমনকি এনসিপি ও তাদের ছাত্রসংগঠনের নারী সদস্যদের চরিত্র হনন এবং অনলাইন ফোর্সের মাধ্যমে অপপ্রচার চালানোর মতো নিকৃষ্ট কাজও করেছে তারা। এছাড়া একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে জামায়াতের স্বাধীনতাবিরোধী ভূমিকা এবং গণহত্যার সহযোগিতার বিষয়টি উল্লেখ করে নেতারা বলেন, এমন কোনো দলের সাথে জোট গঠন এনসিপির গণতান্ত্রিক চেতনার সাথে মৌলিকভাবে সাংঘর্ষিক।

বিক্ষুব্ধ নেতারা মনে করিয়ে দিয়েছেন যে, দলের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম ও মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বারবার ৩০০ আসনে এককভাবে লড়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। প্রায় দেড় হাজার মনোনয়ন ফরম বিক্রি করে ইতিমধ্যে ১২৫ জন প্রার্থীও ঘোষণা করা হয়েছে। এমতাবস্থায় মাত্র কয়েকটি আসনের লোভে জামায়াতের মতো দলের সাথে সমঝোতা করাকে তাঁরা 'জাতির সঙ্গে প্রতারণা' বলে অভিহিত করেছেন। চিঠিতে আরও বলা হয়েছে যে, জোটের খবর প্রকাশ হওয়ার পর থেকেই দলের মধ্যপন্থী সমর্থক ও নতুন প্রজন্মের কর্মীরা এনসিপি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে শুরু করেছেন।

নেতৃত্বের এই বিশাল অংশের আপত্তির ফলে এনসিপি এখন বড় ধরনের ভাঙনের মুখে পড়েছে। চিঠিতে পরিষ্কার বলা হয়েছে, নীতিগত অবস্থান বিসর্জন দিয়ে কোনো কৌশলগত জোট গ্রহণ করা হবে না। রাজনৈতিক বিশ্বাসযোগ্যতা হারানোর আশঙ্কায় ৩০ জন নেতা আহ্বায়ককে অনুরোধ করেছেন যাতে জামায়াতের সাথে কোনো ধরনের রাজনৈতিক জোটে না যাওয়ার বিষয়ে দ্রুত স্পষ্ট অবস্থান নেওয়া হয়। এখন দেখার বিষয়, দলের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম এই ৩০ নেতার দাবি মেনে নিয়ে একক লড়াইয়ের পথে ফেরেন, নাকি জামায়াত জোটের সিদ্ধান্তেই অটল থাকেন।


গোপালগঞ্জের নৌকার ১৭ মাঝি এখন ধানের শীষের সারথি

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২৭ ২১:১৩:৩৭
গোপালগঞ্জের নৌকার ১৭ মাঝি এখন ধানের শীষের সারথি
ছবি : সংগৃহীত

আওয়ামী লীগের শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলায় আজ শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) এক নজিরবিহীন রাজনৈতিক পটপরিবর্তন ঘটেছে। সন্ধ্যায় উপজেলা বিএনপির কার্যালয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে পিঞ্জুরী ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক ইউপি সদস্য আনোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে ১৭ জন নেতাকর্মী আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপিতে যোগদান করেন। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে এবং বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের সুযোগ্য নেতৃত্বে আস্থা রেখে তাঁরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন।

বিএনপিতে যোগ দেওয়া উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন— আবুল কাসেম, রাজিব শেখ, জাহাঙ্গীর শেখ, সদানন্দ বৈদ্য, স্বপন বৈদ্য, শ্রীনাথ বৈদ্য, সুশান্ত বৈদ্য, নীলকন্ঠ দেড়রী, ধলু বৈদ্য, লায়েক শেখ, শাহিন শেখ, জসিম শেখ, রফিক শেখ, রসুল শেখ, খোকন শেখ এবং হাবি শেখ। যোগদান অনুষ্ঠানে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল বশার হাওলাদার ও সভাপতি ইউসুফ আলী দাড়িয়াসহ স্থানীয় যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ তাঁদের ফুলের তোড়া দিয়ে বরণ করে নেন।

আওয়ামী লীগ ছেড়ে আসা নেতা আনোয়ার হোসেন বলেন যে, তাঁরা স্বেচ্ছায় এবং দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপট বিবেচনা করে বিএনপিতে যোগ দিয়েছেন। তাঁরা আগামীতে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা এস এম জিলানীর হাতকে শক্তিশালী করতে মাঠপর্যায়ে একযোগে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। অন্যদিকে, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল বশার হাওলাদার নবাগতদের স্বাগত জানিয়ে মন্তব্য করেন যে, কোটালীপাড়ায় আরও অনেক আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী বিএনপিতে যোগদানের অপেক্ষায় রয়েছেন, যা আগামী নির্বাচনে বিএনপির অবস্থানকে আরও সুসংহত করবে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন যে, গোপালগঞ্জের মতো জেলায় আওয়ামী লীগের ভেতর থেকে এভাবে নেতাকর্মীদের বিএনপিতে চলে যাওয়া শাসক দলটির স্থানীয় সাংগঠনিক দুর্বলতাকে স্পষ্ট করছে। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে এই দলবদল কোটালীপাড়ার নির্বাচনী সমীকরণে বড় প্রভাব ফেলতে পারে। নবাগত এই ১৭ কর্মীর যোগদানকে কেন্দ্র করে স্থানীয় বিএনপি শিবিরে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে।


কেন স্বতন্ত্র প্রার্থী হচ্ছেন তাসনিম জারা: নিজেই জানালেন নেপথ্য কারণ

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২৭ ২০:২০:১৪
কেন স্বতন্ত্র প্রার্থী হচ্ছেন তাসনিম জারা: নিজেই জানালেন নেপথ্য কারণ
ছবি : সংগৃহীত

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা আজ শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) এক দীর্ঘ ফেসবুক স্ট্যাটাসে ঘোষণা করেছেন যে, তিনি আসন্ন সংসদ নির্বাচনে কোনো রাজনৈতিক দল বা জোটের হয়ে লড়বেন না। বরং খিলগাঁও, সবুজবাগ ও মুগদা এলাকা নিয়ে গঠিত ঢাকা-৯ আসনে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। দলীয় প্ল্যাটফর্ম থেকে সরে দাঁড়ানোর কারণ হিসেবে তিনি ‘বাস্তবিক প্রেক্ষাপট’ ও ‘নতুন রাজনৈতিক সংস্কৃতি’ গড়ার প্রতিশ্রুতির কথা উল্লেখ করেছেন। তাঁর এই ঘোষণা এনসিপি ও জামায়াত জোটের বর্তমান অস্থির রাজনৈতিক পরিস্থিতির এক নতুন প্রতিফলন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে দাঁড়ানোর আইনি বাধ্যবাধকতা অনুযায়ী, ঢাকা-৯ আসনের অন্তত ৪ হাজার ৬৯৩ জন ভোটারের সমর্থনযুক্ত স্বাক্ষর প্রয়োজন। আগামীকাল থেকেই তাসনিম জারা এই স্বাক্ষর সংগ্রহের বিশাল কর্মযজ্ঞ শুরু করতে যাচ্ছেন। তিনি জানিয়েছেন যে, একটি রাজনৈতিক দলের সাংগঠনিক শক্তি ও কর্মী বাহিনী তাঁর পাশে থাকবে না, তাই সাধারণ ভোটারদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণই এখন তাঁর একমাত্র ভরসা। স্থানীয় বাসিন্দাদের সহযোগিতা চেয়ে তিনি একটি ফেসবুক গ্রুপও খুলেছেন, যেখানে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করার আহ্বান জানানো হয়েছে।

সবচেয়ে আলোচিত বিষয় হলো তাঁর নির্বাচনী তহবিলের স্বচ্ছতা। কিছুদিন আগে তিনি এনসিপির প্রার্থী হিসেবে যে ফান্ডরেইজিং করেছিলেন, সেখান থেকে পাওয়া অর্থ তিনি ফেরত দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন যে, যেহেতু তিনি তাঁর সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেছেন (স্বতন্ত্র হিসেবে লড়া), তাই যারা ডোনেট করেছিলেন তাঁরা চাইলে নির্দিষ্ট ফরম পূরণ করে তাঁদের অর্থ ফেরত নিতে পারবেন। রাজনীতির মাঠে টাকার অঙ্কের চেয়ে আদর্শ ও নৈতিকতাকে প্রাধান্য দেওয়ার এই নজির ইতিবাচক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

তাসনিম জারা তাঁর পোস্টে উল্লেখ করেছেন যে, খিলগাঁওয়েই তাঁর জন্ম ও বেড়ে ওঠা এবং তিনি এলাকার মানুষের সেবা করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। যদিও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রচার চালানো ও প্রশাসনের সাথে সমন্বয় করা চ্যালেঞ্জিং হবে, তবুও তিনি তাঁর সততা ও নিষ্ঠার ওপর ভর করে ভোটারদের ভালোবাসা পাবেন বলে আশাবাদী। এনসিপি বা জামায়াত জোটের সাথে তাঁর বর্তমান সম্পর্ক কোন পর্যায়ে আছে, সে বিষয়ে তিনি সরাসরি কিছু না বললেও তাঁর এই ‘একা পথ চলা’ দেশের নির্বাচনী ময়দানে এক নতুন রোমাঞ্চের সৃষ্টি করেছে। আগামীকালের গণস্বাক্ষর সংগ্রহ কর্মসূচিই বলে দেবে ঢাকা-৯ আসনের মানুষ তাঁদের ‘ঘরের মেয়ে’র পাশে কতটা আছেন।


চট্টগ্রামের ৩ আসনে বিএনপির চূড়ান্ত চমক

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২৭ ১৯:১৫:৫৬
চট্টগ্রামের ৩ আসনে বিএনপির চূড়ান্ত চমক
ছবি : সংগৃহীত

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রণকৌশল সাজাতে চট্টগ্রামের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ আসনে বড় ধরনের পরিবর্তন এনেছে বিএনপি। চট্টগ্রাম-১০, চট্টগ্রাম-১১ এবং চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুণ্ড) আসনে দলীয় সমীকরণ ও মাঠের বাস্তবতা বিবেচনায় প্রার্থীদের নাম চূড়ান্ত করেছে দলের উচ্চ পর্যায়। এই পরিবর্তনের মাধ্যমে বন্দরনগরীতে দলীয় কোন্দল মিটিয়ে একযোগে নির্বাচনী মাঠে নামার ইঙ্গিত দিচ্ছে দলটি।

সবচেয়ে বড় চমক এসেছে চট্টগ্রাম-১০ আসনে। এখানে ধানের শীষের কান্ডারি করা হয়েছে সদ্য প্রয়াত বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী আবদুল্লাহ আল নোমানের ছেলে সাঈদ আল নোমান তুর্যকে। দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় জনসংযোগ ও সাংগঠনিক কার্যক্রমে সক্রিয় থাকায় তুর্যের ওপরই আস্থা রেখেছে হাই কমান্ড। যদিও চট্টগ্রাম-১১ আসনের প্রভাবশালী নেতা আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী এই আসনটি তাঁর ছেলে ইস্রাফিল খসরুর জন্য চেয়েছিলেন, কিন্তু জনপ্রিয়তার মাপকাঠিতে শেষ পর্যন্ত নোমান তনয় তুর্যকেই মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী তাঁর নিজের পুরনো দুর্গ চট্টগ্রাম-১১ আসনেই পুনরায় মনোনয়ন পেয়েছেন।

চট্টগ্রাম-৪ তথা সীতাকুণ্ড আসনে দেখা গেছে নাটকীয় মোড়। গত ৩ নভেম্বর এই আসনে কাজী মোহাম্মদ সালাউদ্দিনকে প্রাথমিক প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছিল। এর প্রতিবাদে আসলাম চৌধুরীর সমর্থকরা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ও রেলপথ অবরোধ করে ব্যাপক বিক্ষোভ দেখান। পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে এবং আসলাম চৌধুরীর বিশাল ত্যাগ ও কারাবরণকে সম্মান জানিয়ে শেষ পর্যন্ত তাঁকেই চূড়ান্ত মনোনয়ন দিয়েছে বিএনপি। ভাটিয়ারীর নিজ বাড়িতে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় তিনি দলীয় মনোনয়নের চিঠি হাতে নেন এবং সকল ভেদাভেদ ভুলে নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।

দলীয় সূত্রের দাবি, এই তিন আসনে প্রার্থী পুনর্বিন্যাসের মাধ্যমে বিএনপির সাংগঠনিক শক্তি আরও সুসংহত হবে। বিশেষ করে আবদুল্লাহ আল নোমানের উত্তরাধিকার হিসেবে তুর্যের আগমন এবং অভিজ্ঞ আমির খসরুর সাথে আসলাম চৌধুরীর সমন্বয় চট্টগ্রামের নির্বাচনী মাঠে ধানের শীষকে নতুন গতি দেবে। মনোনয়ন নিয়ে প্রাথমিক যে অসন্তোষ ছিল, চূড়ান্ত এই তালিকার পর তা কেটে যাবে বলে মনে করছেন স্থানীয় জ্যেষ্ঠ নেতারা। এখন বন্দরনগরীজুড়ে পুরোদমে নির্বাচনী প্রচারণার প্রস্তুতি শুরু করেছেন প্রার্থীরা।


গণঅধিকার পরিষদ ছেড়ে বিএনপিতে রাশেদ খাঁনের নাটকীয় যোগদান

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২৭ ১৫:২১:৪৩
গণঅধিকার পরিষদ ছেড়ে বিএনপিতে রাশেদ খাঁনের নাটকীয় যোগদান
ছবি : সংগৃহীত

দীর্ঘদিনের রাজপথের লড়াই ও আন্দোলনের সঙ্গী গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খাঁন আজ শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপিতে যোগদান করেছেন। দুপুরে রাজধানীর গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ তাঁকে ফুলের তোড়া দিয়ে স্বাগত জানান। আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাশেদ খাঁন বিএনপির মনোনীত প্রার্থী হিসেবে ‘ধানের শীষ’ প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।

দলীয় বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে যে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা শরিক দলগুলোর সাথে আসন সমঝোতার অংশ হিসেবে বিএনপি রাশেদ খাঁনের জন্য ঝিনাইদহ-৪ আসনটি ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মূলত তৃণমূল পর্যায়ে তাঁর জনপ্রিয়তা এবং তরুণ ভোটারদের মাঝে তাঁর গ্রহণযোগ্যতাকে পুঁজি করেই বিএনপি এই কৌশলগত পদক্ষেপ নিয়েছে। আজ বিএনপিতে যোগদানের আগে রাশেদ খাঁন গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে পদত্যাগ করেন। তাঁর এই দলবদলকে কেন্দ্র করে ঝিনাইদহ এলাকায় দলীয় নেতাকর্মীদের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা লক্ষ্য করা গেছে।

নিজের পদত্যাগপত্রে রাশেদ খাঁন উল্লেখ করেছেন যে ২০১৮ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকে শুরু করে দীর্ঘ সময় তিনি রাজপথের সহযোদ্ধা হিসেবে রাজনীতি করেছেন। ব্যক্তিগত কারণে পদত্যাগ করলেও আন্দোলনের দীর্ঘদিনের বন্ধুদের সাথে তাঁর ভ্রাতৃত্বের বন্ধন অটুট থাকবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। বিএনপিতে যোগদান শেষে তিনি সাংবাদিকদের জানান যে ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে বিএনপি যে নেতৃত্ব দিচ্ছে, সেই শক্তির সাথে একাত্ম হয়ে তিনি জনগণের সেবা করতে চান। ঝিনাইদহ-৪ আসনের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠাই তাঁর মূল লক্ষ্য।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন যে রাশেদ খাঁনের মতো তরুণ ও উদীয়মান নেতার বিএনপিতে যোগদান দলটিকে ভোটের মাঠে অতিরিক্ত সুবিধা দেবে। বিশেষ করে ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের পর তরুণ প্রজন্মের একটি বড় অংশ রাশেদ খাঁনের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। বিএনপির হাইকমান্ড মনে করছে যে ধানের শীষ প্রতীকে রাশেদ খাঁনের লড়াই ঝিনাইদহ এলাকায় দলটির অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করবে। আগামী ২৯ ডিসেম্বরের মধ্যে তিনি তাঁর মনোনয়ন দাখিলের যাবতীয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবেন বলে জানা গেছে।

পাঠকের মতামত:

ব্যক্তিগত দায় বনাম প্রাতিষ্ঠানিক দায়: দায়মুক্তির এক রাজনৈতিক সংস্কৃতি

চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জের ঘটনা কাগজে পড়লে প্রথমে মনে হয় এটা যেন কোনো যুদ্ধের খবর। এক তরুণকে বিদ্যুতের খুঁটিতে বেঁধে হাত–পা প্রায়... বিস্তারিত