গণঅধিকার পরিষদ ছেড়ে বিএনপিতে রাশেদ খাঁনের নাটকীয় যোগদান

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২৭ ১৫:২১:৪৩
গণঅধিকার পরিষদ ছেড়ে বিএনপিতে রাশেদ খাঁনের নাটকীয় যোগদান
ছবি : সংগৃহীত

দীর্ঘদিনের রাজপথের লড়াই ও আন্দোলনের সঙ্গী গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খাঁন আজ শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপিতে যোগদান করেছেন। দুপুরে রাজধানীর গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ তাঁকে ফুলের তোড়া দিয়ে স্বাগত জানান। আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাশেদ খাঁন বিএনপির মনোনীত প্রার্থী হিসেবে ‘ধানের শীষ’ প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।

দলীয় বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে যে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা শরিক দলগুলোর সাথে আসন সমঝোতার অংশ হিসেবে বিএনপি রাশেদ খাঁনের জন্য ঝিনাইদহ-৪ আসনটি ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মূলত তৃণমূল পর্যায়ে তাঁর জনপ্রিয়তা এবং তরুণ ভোটারদের মাঝে তাঁর গ্রহণযোগ্যতাকে পুঁজি করেই বিএনপি এই কৌশলগত পদক্ষেপ নিয়েছে। আজ বিএনপিতে যোগদানের আগে রাশেদ খাঁন গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে পদত্যাগ করেন। তাঁর এই দলবদলকে কেন্দ্র করে ঝিনাইদহ এলাকায় দলীয় নেতাকর্মীদের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা লক্ষ্য করা গেছে।

নিজের পদত্যাগপত্রে রাশেদ খাঁন উল্লেখ করেছেন যে ২০১৮ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকে শুরু করে দীর্ঘ সময় তিনি রাজপথের সহযোদ্ধা হিসেবে রাজনীতি করেছেন। ব্যক্তিগত কারণে পদত্যাগ করলেও আন্দোলনের দীর্ঘদিনের বন্ধুদের সাথে তাঁর ভ্রাতৃত্বের বন্ধন অটুট থাকবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। বিএনপিতে যোগদান শেষে তিনি সাংবাদিকদের জানান যে ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে বিএনপি যে নেতৃত্ব দিচ্ছে, সেই শক্তির সাথে একাত্ম হয়ে তিনি জনগণের সেবা করতে চান। ঝিনাইদহ-৪ আসনের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠাই তাঁর মূল লক্ষ্য।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন যে রাশেদ খাঁনের মতো তরুণ ও উদীয়মান নেতার বিএনপিতে যোগদান দলটিকে ভোটের মাঠে অতিরিক্ত সুবিধা দেবে। বিশেষ করে ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের পর তরুণ প্রজন্মের একটি বড় অংশ রাশেদ খাঁনের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। বিএনপির হাইকমান্ড মনে করছে যে ধানের শীষ প্রতীকে রাশেদ খাঁনের লড়াই ঝিনাইদহ এলাকায় দলটির অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করবে। আগামী ২৯ ডিসেম্বরের মধ্যে তিনি তাঁর মনোনয়ন দাখিলের যাবতীয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবেন বলে জানা গেছে।


সংসদ নির্বাচনে লড়তে আর বাধা নেই তারেক রহমানের

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২৭ ১৫:১১:৪৯
সংসদ নির্বাচনে লড়তে আর বাধা নেই তারেক রহমানের
ছবি : সংগৃহীত

বাংলাদেশের নাগরিকত্বের পূর্ণতা এবং আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করতে আজ শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) ভোটার তালিকায় নাম নিবন্ধন করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। দুপুর ১টায় তিনি রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অবস্থিত নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (ইটিআই) ভবনে উপস্থিত হন। সেখানে অত্যন্ত গোপনীয়তা ও নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে তিনি নিজের আঙুলের ছাপ, আইরিশের প্রতিচ্ছবি এবং প্রয়োজনীয় বায়োমেট্রিক তথ্য প্রদান করেন। দীর্ঘ ১৭ বছর বিদেশে অবস্থানের কারণে তিনি দেশের বর্তমান ছবিসহ ভোটার তালিকায় ছিলেন না, যা আজ পূর্ণ হলো।

নিবন্ধন প্রক্রিয়া শেষে দুপুর ১টা ১৭ মিনিটে তিনি ইটিআই ভবন ত্যাগ করেন এবং সরাসরি ধানমন্ডিতে তাঁর শ্বশুরবাড়ির উদ্দেশে রওনা হন। জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) উইংয়ের মহাপরিচালক এ এস এম হুমায়ুন কবীর সাংবাদিকদের জানিয়েছেন যে তারেক রহমানের দেওয়া তথ্যগুলো যাচাই-বাছাই শেষে সর্বোচ্চ একদিনের মধ্যেই তাঁর এনআইডি কার্ড ইস্যু করা হতে পারে। সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার জন্য ভোটার হওয়া একটি আবশ্যিক শর্ত এবং তারেক রহমান সেই শর্ত পূরণ করতেই আজ দ্রুততার সাথে এই কাজ সম্পন্ন করেছেন।

নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠেয় ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণে আগ্রহীদের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ সময় আগামী ২৯ ডিসেম্বর। ইতিমধ্যে বিএনপির পক্ষ থেকে তাঁর পৈতৃক এলাকা বগুড়া-৬ (সদর) আসনের জন্য মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করা হয়েছে। বগুড়ার স্থানীয় নেতাকর্মীরা দীর্ঘদিন ধরেই তাঁর ফেরার অপেক্ষায় ছিলেন এবং আজ ভোটার হওয়ার খবরের পর সেখানে আনন্দের জোয়ার বইছে। তবে তিনি আরও কোনো আসন থেকে প্রার্থী হবেন কি না, তা নিয়ে এখনও চূড়ান্ত কোনো ঘোষণা আসেনি।

তারেক রহমানের এই ভোটার হওয়ার বিষয়টি দেশের রাজনীতিতে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। এক-এগারো পরবর্তী সময়ে দেশ ছাড়ার পর এবারই প্রথম তিনি রাষ্ট্রীয় কোনো নথিতে নিজের নাম ও তথ্য যুক্ত করলেন। ২৯ ডিসেম্বরের সময়সীমা শেষ হওয়ার আগেই এনআইডি হাতে পেয়ে তিনি মনোনয়নপত্র দাখিল করতে পারবেন। আজ আগারগাঁও এলাকায় তাঁর আগমনকে কেন্দ্র করে সাধারণ মানুষ ও বিএনপি সমর্থকদের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা লক্ষ্য করা গেছে।


জোটের গলার কাঁটা দুই সাবেক উপদেষ্টা: জামায়াত-এনসিপি দরকষাকষিতে নতুন মোড়

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২৭ ১১:৪৪:০৫
জোটের গলার কাঁটা দুই সাবেক উপদেষ্টা: জামায়াত-এনসিপি দরকষাকষিতে নতুন মোড়
ছবি : সংগৃহীত

অন্তর্বর্তী সরকারের সাবেক দুই হেভিওয়েট উপদেষ্টা মাহফুজ আলম ও আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়াকে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) প্রার্থী হিসেবে মেনে নিতে নারাজ জামায়াতে ইসলামী। জামায়াত নেতাদের মতে, এই দুই সাবেক উপদেষ্টাকে জোটের ছায়ায় প্রার্থী করলে তাঁদের সরকারের সময়কার নানাবিধ ‘বিতর্কিত’ কাজের দায়ভার জোটের ওপর বর্তাবে। বিশেষ করে আসিফ মাহমুদ উপদেষ্টা থাকাকালীন জামায়াত ও এর আদর্শিক গুরু মওদুদীর মতবাদ নিয়ে একাধিকবার আক্রমণাত্মক বক্তব্য দেওয়ায় তৃণমূল কর্মীদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ রয়েছে। ফলে তাঁকে জোটের মনোনয়ন দিলে দলীয় শৃঙ্খলা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা করছে জামায়াত।

এনসিপি সূত্র জানিয়েছে, দুই সাবেক উপদেষ্টাকে ছাড়াই তারা নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে চায় না। মাহফুজ ও আসিফও নিজেদের প্রার্থিতা ও দলে জোরালো অবস্থান নিশ্চিত করা ছাড়া জোটে যেতে আগ্রহী নন। এই টানাপোড়েনের মাঝে এনসিপির ভেতরেও বিভক্তি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্থা শারমিনসহ অন্তত পাঁচজন নারী নেত্রী ধর্মভিত্তিক দল জামায়াতের সাথে জোট বাঁধার তীব্র বিরোধিতা করেছেন। তাঁদের অভিযোগ, এনসিপি তারুণ্যের রাজনীতির স্বপ্ন জলাঞ্জলি দিয়ে জামায়াতের স্বার্থ রক্ষা করছে।

এদিকে আসন বণ্টন নিয়ে জামায়াত ও এনসিপির মধ্যে ৩০টি আসন নিয়ে সমঝোতা চললেও এনসিপি অন্তত ৫০টি আসন দাবি করছে। জামায়াতের শর্ত হলো, ছেড়ে দেওয়া আসনের বাইরে এনসিপি কোনো স্বতন্ত্র প্রার্থী দিতে পারবে না। অন্যদিকে, এনসিপির জোটসঙ্গী এবি পার্টি ও রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের মাঝেও এই জোট নিয়ে অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সভাপতি হাসনাত কাইয়ূম মনে করছেন যে এনসিপি ও এবি পার্টি জোটের মূল আকাঙ্ক্ষাকে প্রাধান্য দিচ্ছে না।

জামায়াতের আপত্তির মুখে আসিফ মাহমুদ ইতিমধ্যে ঢাকা-১০ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। তিনি প্রথমে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী হতে চেয়েছিলেন বলে গুঞ্জন রয়েছে, তবে বিএনপি তাতে সায় দেয়নি। অন্যদিকে, চরমোনাই পীরের নেতৃত্বাধীন ইসলামী আন্দোলন এবং মামুনুল হকের বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসও আসন ভাগাভাগি নিয়ে জামায়াতের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে। ইসলামী আন্দোলন অন্তত ১০০টি আসন দাবি করলেও জামায়াত তাদের ৩০-৩৫টির বেশি দিতে রাজি নয়। এই জটিল সমীকরণের সমাধান খুঁজতে আজ শনিবার আট দলীয় জোটের শীর্ষ নেতাদের এক বিশেষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।


হাদির কবর জিয়ারতে তারেক রহমান

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২৭ ১১:৪০:১২
হাদির কবর জিয়ারতে তারেক রহমান
ছবি : সংগৃহীত

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আজ শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ‘শহীদ’ শরিফ ওসমান হাদির কবর জিয়ারত করেছেন। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তিনি সরাসরি আগারগাঁওস্থ নির্বাচন ভবনের দিকে রওনা হয়েছেন। সেখানে তিনি ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার লক্ষ্যে ভোটার তালিকায় নিজের নাম অন্তর্ভুক্ত করবেন এবং জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সংক্রান্ত যাবতীয় দাপ্তরিক কাজ সম্পন্ন করবেন। ২০০৮ সালে ছবিসহ ভোটার তালিকা তৈরির সময় বিদেশে চিকিৎসাধীন থাকায় তিনি ভোটার হতে পারেননি, যা দীর্ঘ ১৭ বছর পর আজ সম্পন্ন হতে যাচ্ছে।

বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে তারেক রহমান তাঁর পৈতৃক এলাকা বগুড়া-৬ (সদর) আসন থেকে নির্বাচন করবেন এবং ইতিমধ্যে তাঁর পক্ষে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করা হয়েছে। তবে রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন রয়েছে যে তিনি ঢাকার গুলশান-বনানী সংলগ্ন ঢাকা-১৭ আসন থেকেও প্রার্থী হতে পারেন। যদিও ওই আসনটি জোটের শরিক আন্দালিব রহমান পার্থের জন্য ছেড়ে দেওয়ার একটি আলোচনাও দলে বিদ্যমান। উল্লেখ্য যে নির্বাচন কমিশনের নতুন নিয়ম অনুযায়ী কোনো ব্যক্তি সর্বোচ্চ তিনটি আসনে প্রার্থী হতে পারবেন এবং মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ সময় আগামী ২৯ ডিসেম্বর।

তারেক রহমানের এই ভোটার হওয়া এবং নির্বাচনী আসনে লড়াই করার বিষয়টি বিএনপির রাজনীতিতে এক নতুন উদ্দীপনার সৃষ্টি করেছে। আজ আগারগাঁও এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে এবং বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মীর সমাগম লক্ষ্য করা গেছে। নির্বাচন কমিশন আগেই জানিয়েছিল যে আইনের বিশেষ ক্ষমতাবলে তারা যেকোনো যোগ্য নাগরিককে যেকোনো সময় ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে পারে, সেই প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই আজ তারেক রহমানের নাগরিক অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হচ্ছে।

দিনের শেষভাগে তারেক রহমানের আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচি রয়েছে। ভোটার নিবন্ধন শেষে তিনি শেরেবাংলা নগরের পঙ্গু হাসপাতালে যাবেন জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আহতদের দেখতে। তাঁদের চিকিৎসার খোঁজখবর নেওয়া এবং আর্থিক সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে তিনি আজ তাঁর মানবিক কর্মসূচির সমাপ্তি টানবেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন যে আজকের এই দাপ্তরিক ও সামাজিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে তারেক রহমান নিজেকে আগামীর রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে জনগণের আরও কাছাকাছি নিয়ে যাওয়ার বার্তা দিচ্ছেন।


জামায়াত-চরমোনাই দ্বিমুখী লড়াই: সংকটে ইসলামী জোট

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২৭ ০৯:০৭:১৬
জামায়াত-চরমোনাই দ্বিমুখী লড়াই: সংকটে ইসলামী জোট
ছবি : সংগৃহীত

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগহীন ভোটের মাঠে বড় শক্তির জানান দিতে জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী আন্দোলনসহ আটটি দল নিয়ে গঠিত হয়েছে নতুন নির্বাচনী জোট। তবে জোটের প্রাথমিক আনন্দ এখন ম্লান হতে বসেছে বরিশাল বিভাগের আসন বণ্টন নিয়ে সৃষ্ট জটিলতায়। বিশেষ করে বরিশাল-৫ (সদর) আসনটি নিয়ে জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী আন্দোলনের মধ্যে চলছে তীব্র রশি টানাটানি। আসনটি ইসলামী আন্দোলনের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীমের নিজস্ব এলাকা হওয়ায় দলটি এখানে কোনোভাবেই ছাড় দিতে নারাজ। অন্যদিকে, জামায়াতের দাবি—১৯৭০ সাল থেকে এই অঞ্চলে তাদের শক্ত রাজনৈতিক ভিত্তি রয়েছে এবং তাদের প্রার্থী অ্যাডভোকেট মুয়ায্যম হোসাইন হেলাল অনেক আগে থেকেই মাঠে সক্রিয়।

জোটের সূত্রগুলো জানাচ্ছে, সমঝোতার নীতি অনুযায়ী পিরোজপুরের দুটি আসন জামায়াতকে ছেড়ে দিয়েছে ইসলামী আন্দোলন। সেখানে প্রয়াত আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর দুই ছেলে মাসুদ সাঈদী ও শামীম সাঈদী জোটের প্রার্থী হিসেবে লড়বেন। এছাড়া পটুয়াখালীর বাউফল আসনটিও জামায়াতের ডা. শফিকুল ইসলাম মাসুদকে ছেড়ে দেওয়ার প্রাথমিক ইঙ্গিত দিয়েছে ইসলামী আন্দোলন। বিনিময়ে তারা বরিশাল বিভাগের অন্তত ১৫টি আসন নিজেদের অনুকূলে চাইছে। কিন্তু ঝালকাঠি-২ এবং বরিশাল সদর আসন নিয়ে দুই দলের অনড় অবস্থান জোটের হাইকমান্ডকে বিপাকে ফেলেছে।

ঝালকাঠি-২ আসনে ইসলামী আন্দোলনের মাওলানা সিরাজুল ইসলাম সিরাজী এবং জামায়াতের শেখ নেয়ামুল করীম উভয়েই মনোনয়নপ্রত্যাশী। জামায়াতের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, কেবল পিরোজপুর বা বাউফল দিয়ে সন্তুষ্ট থাকা সম্ভব নয়, কারণ বিভাগের ২১টি আসনেই তাদের যোগ্য প্রার্থী রয়েছে। পাল্টা জবাবে ইসলামী আন্দোলনের নেতারা বলছেন, বরিশাল বিভাগ হলো হাতপাখার ‘ভোট ব্যাংক’। পিরোজপুর ও বাউফল বাদে বাকি ১৯টি আসনেই তাদের অবস্থান জামায়াতের চেয়ে শক্তিশালী। চরমোনাই পীরের ভাই মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন যে আমিরের আসনে অন্য শরিকের ভাগ চাওয়া ‘বোকামি’ এবং এমনটা হলে জোটের কার্যকারিতা হারাবে।

আটদলীয় এই জোটে জামায়াত ও ইসলামী আন্দোলন ছাড়াও রয়েছে খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস এবং বিডিপির মতো দলগুলো। যদিও ভোলার একটি আসন বিডিপিকে ছেড়ে দেওয়ার আলোচনা চলছে, তবে মূল সংঘাত এখন দুই বড় শক্তির মধ্যে সীমাবদ্ধ। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, যদি বরিশাল সদর এবং ঝালকাঠির মতো গুরুত্বপূর্ণ আসনগুলোতে দ্রুত সমঝোতা না হয়, তবে এই মহাজোট ভোটের আগে ভেঙে যাওয়ার ঝুঁকিতে পড়তে পারে। ইসলামী ভোট এক করার যে স্বপ্ন নিয়ে এই জোট গঠিত হয়েছিল, তা এখন আঞ্চলিক স্বার্থ ও ইগোর লড়াইয়ে হোঁচট খাচ্ছে।


 ১৭ বছর পর স্বদেশে তারেক, নির্বাচনী বৈতরণি পার হতে বিএনপির নতুন ছক

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২৭ ০৯:০০:১৫
 ১৭ বছর পর স্বদেশে তারেক, নির্বাচনী বৈতরণি পার হতে বিএনপির নতুন ছক
ছবি : সংগৃহীত

দীর্ঘ দেড় যুগ লন্ডনে নির্বাসিত থাকার পর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে দলটির সাংগঠনিক ও রাজনৈতিক কাঠামোতে এক অভাবনীয় জোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার তাঁর অবতরণের পর বিমানবন্দর থেকে পূর্বাচল এবং পরবর্তীতে জিয়া উদ্যান ও সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে যে অভূতপূর্ব জনসমাগম দেখা গেছে, তা বিএনপির তৃণমূল নেতাকর্মীদের মনোবল বহুগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, তারেক রহমানের এই সশরীরে উপস্থিতির ফলে দলের দীর্ঘদিনের নেতৃত্বের শূন্যতা পূরণ হয়েছে এবং ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচনের প্রাক্কালে এটি বিএনপির জন্য একটি বড় ‘বুস্টার’ হিসেবে কাজ করছে।

নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় আনুষ্ঠানিকভাবে অংশগ্রহণের লক্ষ্যে আজ শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) ভোটার তালিকায় নাম লেখাবেন তারেক রহমান। তিনি এদিন ভোটার নিবন্ধন এবং জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) প্রয়োজনীয় সব দাপ্তরিক কাজ সম্পন্ন করবেন। যদিও দল থেকে এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয়নি তিনি কোন আসন থেকে লড়বেন, তবে বগুড়া-৬ (সদর) আসন থেকে তাঁর প্রার্থী হওয়ার বিষয়টি প্রায় নিশ্চিত। এছাড়া ঢাকার গুলশান, বনানী ও ক্যান্টনমেন্ট এলাকা নিয়ে গঠিত ঢাকা-১৭ আসন থেকেও তাঁর নির্বাচনের সম্ভাবনা নিয়ে গুঞ্জন রয়েছে। তবে কৌশলগত কারণে এই আসনটি জোটের শরিক বিজেপি চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থের জন্য ছেড়ে দেওয়া হতে পারে বলেও আলোচনা আছে।

রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক কাজী মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমানের মতে, তারেক রহমানের এই প্রত্যাবর্তন কেবল বিএনপির জন্য নয়, দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্যও ইতিবাচক। তাঁর উপস্থিতির ফলে দলীয় শৃঙ্খলা প্রায় ৯০ শতাংশ নিশ্চিত হবে এবং বিভিন্ন আসনে মনোনয়ন ঘিরে সৃষ্ট ছোটখাটো অসন্তোষ নিমেষেই মিটে যাবে। এছাড়া বিদেশে বসে ভার্চুয়ালি দল পরিচালনার চেয়ে সরাসরি জনসম্পৃক্ত হয়ে মাঠের রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করা অনেক বেশি কার্যকর হবে। তারেক রহমান শীঘ্রই দেশের বিভিন্ন বিভাগীয় শহরে নির্বাচনী জনসভায় যোগ দিয়ে বিএনপির রাষ্ট্র মেরামতের ‘৩১ দফা’ রূপরেখা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেবেন।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই প্রত্যাবর্তনকে ‘নতুন অধ্যায়ের সূচনা’ বলে অভিহিত করেছেন। তাঁর মতে, তারেক রহমান এখন কেবল বিএনপির নেতা নন, বরং আগামীর গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা। দীর্ঘ লড়াই-সংগ্রামের পর তাঁর এই উপস্থিতি নেতাকর্মীদের মাঝে যে নির্বাচনী স্পৃহা জাগিয়েছে, তা ধানের শীষের বিজয়কে ত্বরান্বিত করতে সহায়ক হবে। আজ ভোটার হিসেবে নিবন্ধিত হওয়ার মাধ্যমেই তাঁর সরাসরি সংসদীয় রাজনীতিতে ফেরার আইনি ও আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে যাচ্ছে।


শিবিরে ক্ষমতার হস্তান্তর, নেতৃত্বে সাদ্দাম–সিবগা

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২৬ ১৯:০৯:৪০
শিবিরে ক্ষমতার হস্তান্তর, নেতৃত্বে সাদ্দাম–সিবগা

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সদ্যসমাপ্ত কেন্দ্রীয় সদস্য সম্মেলনের মাধ্যমে সংগঠনটির নেতৃত্বে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন এসেছে। ২০২৬ সেশনের জন্য নূরুল ইসলাম সাদ্দাম কেন্দ্রীয় সভাপতি এবং সিবগাতুল্লাহ সিবগা সেক্রেটারি জেনারেল হিসেবে নির্বাচিত ও মনোনীত হয়েছেন।

শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) রাজধানীর বাংলাদেশ–চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় সদস্য সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনের ফল ঘোষণা করা হয়। দেশজুড়ে অনলাইনে অনুষ্ঠিত ভোটগ্রহণের মাধ্যমে সভাপতি নির্বাচিত হন নূরুল ইসলাম সাদ্দাম। এরপর সংগঠনের সংবিধান অনুযায়ী নবনির্বাচিত সভাপতি কার্যকরী পরিষদের সঙ্গে পরামর্শক্রমে সিবগাতুল্লাহকে সেক্রেটারি জেনারেল হিসেবে মনোনয়ন দেন।

সম্মেলনের প্রথম অধিবেশন চলে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান ছাত্রশিবিরকে দেশের ছাত্রসমাজের একটি গুরুত্বপূর্ণ নৈতিক ও সাংগঠনিক শক্তি হিসেবে উল্লেখ করেন।

দ্বিতীয় অধিবেশনে নির্বাচন কমিশনের প্রধান ও সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ ফল ঘোষণা করেন। এ সময় সহকারী নির্বাচন কমিশনার ও সাবেক সভাপতি সেলিম উদ্দিন অধিবেশন পরিচালনা করেন। ফল ঘোষণার পর নবনির্বাচিত সভাপতিকে শপথবাক্য পাঠ করানো হয়।

নবনির্বাচিত সভাপতি নূরুল ইসলাম সাদ্দাম খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন। পাশাপাশি নর্দান বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স বিভাগ থেকে ডিগ্রি অর্জন করেন। বর্তমানে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা (HRM) বিভাগে মাস্টার্স পর্যায়ে অধ্যয়নরত।

অন্যদিকে সেক্রেটারি জেনারেল মনোনীত সিবগাতুল্লাহ সিবগা এর আগে সংগঠনের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক, সাহিত্য সম্পাদক, প্রকাশনা সম্পাদক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট থেকে বিএসএস ও এমএসএস সম্পন্ন করেছেন এবং বর্তমানে ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগে মাস্টার্সে অধ্যয়ন করছেন।

সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ২০২৬ সেশনের জন্য কেন্দ্রীয় সভাপতি নির্বাচন ও সেক্রেটারি জেনারেল মনোনয়ন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। কেন্দ্রীয় কমিটির অন্যান্য সদস্যদের নাম শিগগিরই ঘোষণা করা হবে।


বাবার কবরের সামনে দাঁড়িয়ে নীরবে কেঁদেছেন তারেক রহমান

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২৬ ১৮:২৩:০৫
বাবার কবরের সামনে দাঁড়িয়ে নীরবে কেঁদেছেন তারেক রহমান

দীর্ঘ সতেরো বছরের নির্বাসিত জীবনের অবসান ঘটিয়ে দেশে ফেরার পরদিনই আবেগঘন মুহূর্তের সাক্ষী হলো রাজধানীর জিয়া উদ্যান। দেড় যুগের বেশি সময় পর শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান–এর সমাধির সামনে দাঁড়ালেন তার জ্যেষ্ঠ পুত্র ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। জলভেজা চোখে বাবার রুহের মাগফিরাত কামনা করে দীর্ঘ সময় নীরবে মোনাজাতে মগ্ন থাকেন তিনি।

লন্ডনে টানা ১৭ বছর নির্বাসনে থাকার পর দেশে প্রত্যাবর্তনের পর শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) বিকেলে তিনি রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের জিয়া উদ্যানে যান। সঙ্গে ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল–এর কেন্দ্রীয় পর্যায়ের নেতারা। প্রথমে শহীদ রাষ্ট্রপতির কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়, এরপর অনুষ্ঠিত হয় দোয়া ও মোনাজাত।

মোনাজাতে শুরুতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দ্রুত সুস্থতা এবং ২০২৪ সালের গণ–অভ্যুত্থানে শহীদদের আত্মার শান্তি কামনা করা হয়। এরপর বাবার কবরের সামনে একা দাঁড়িয়ে দুই হাত তুলে দোয়া করেন তারেক রহমান। কিছু সময় তিনি নিশ্চুপ দাঁড়িয়ে থাকেন, এ সময় বারবার চোখ মুছতে দেখা যায় তাকে।

১৯৮১ সালে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান নিহত হওয়ার সময় তারেক রহমানের বয়স ছিল মাত্র ১৬ বছর। পরবর্তী জীবনে তিনি একাধিক ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক ট্র্যাজেডির মুখোমুখি হন। ২০১৫ সালে নির্বাসনে থাকা অবস্থায় ছোট ভাই আরাফাত রহমান কোকোর মৃত্যু, ২০০৭ সালে জরুরি অবস্থার সময় গ্রেপ্তার, কারাভোগ এবং পরবর্তী সময়ে বিদেশে চলে যেতে বাধ্য হওয়া তার জীবনের গভীর ক্ষতচিহ্ন হয়ে আছে।

শুক্রবারের এই কর্মসূচিকে ঘিরে জিয়া উদ্যানে বিপুলসংখ্যক নেতা–কর্মীর উপস্থিতি দেখা যায়। গুলশান থেকে কড়া নিরাপত্তায় বুলেটপ্রুফ বাসে করে জিয়া উদ্যানে পৌঁছান তারেক রহমান। পথজুড়ে বাসের ভেতর দাঁড়িয়ে হাত নেড়ে নেতা–কর্মীদের শুভেচ্ছার জবাব দেন তিনি।

বিকেল সাড়ে চারটার দিকে বাস থেকে নেমে হেঁটে বাবার কবরে যান তারেক রহমান। অতিরিক্ত ভিড় সামাল দিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বেশ বেগ পেতে হয়। প্রায় দশ মিনিট সেখানে অবস্থানের পর তিনি সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে রওনা হন।

দলীয় সূত্র জানায়, আগামী দিনগুলোতে তারেক রহমানের কর্মসূচি আরও বিস্তৃত হবে। তিনি নির্বাচন কমিশনে ভোটার হিসেবে নিবন্ধন কার্যক্রম সম্পন্ন করবেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শহীদ শরিফ ওসমান হাদির কবর জিয়ারত করবেন এবং জুলাই আন্দোলনে আহতদের দেখতে পঙ্গু হাসপাতালে যাওয়ারও পরিকল্পনা রয়েছে।

১৭ বছরের নির্বাসন শেষে তারেক রহমানের দেশে ফেরা এবং বাবার কবর জিয়ারতকে সামনে রেখে বিএনপির সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের মধ্যে নতুন করে উদ্দীপনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটকে সামনে রেখে তার প্রত্যাবর্তন দলটির রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।


এবার ‘হাঁস’ প্রতীক নিয়ে ভোটের ময়দানে রুমিন ফারহানা

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২৬ ১১:৫৪:১৪
এবার ‘হাঁস’ প্রতীক নিয়ে ভোটের ময়দানে রুমিন ফারহানা
ছবি : সংগৃহীত

জাতীয় রাজনীতির পরিচিত মুখ এবং বিএনপির সাহসী কণ্ঠস্বর ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা আসন্ন নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। দলীয় প্রতীক ‘ধানের শীষ’ জোটের অন্য প্রার্থীর ভাগ্যে যাওয়ায় তিনি এই কঠিন পথ বেছে নিয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। গত বুধবার তাঁর পক্ষ থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করা হয়েছে এবং তিনি নির্বাচন কমিশনে তাঁর কাঙ্ক্ষিত প্রতীক হিসেবে ‘হাঁস’ চেয়ে আবেদন করবেন বলে জানিয়েছেন। বৃহস্পতিবার বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার ইসলামপুরে নিজের পৈতৃক ভিটায় পূর্বপুরুষদের কবর জিয়ারত করে আনুষ্ঠানিকভাবে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করেন তিনি।

রুমিন ফারহানা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন যে দীর্ঘ ১৭ বছর তিনি রাজপথে এবং জাতীয় রাজনীতিতে সাধারণ মানুষের হয়ে কথা বলেছেন, অথচ তাঁর প্রতি চরম অন্যায় করা হয়েছে। তিনি দাবি করেন যে জোটের প্রার্থী মনোনয়নের ক্ষেত্রে জনগণের আকাঙ্ক্ষাকে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করা হয়েছে। রুমিন আত্মবিশ্বাসের সাথে জানান যে ভোটাররা ব্যালটের মাধ্যমে এই অন্যায়ের দাঁতভাঙা জবাব দেবে। উল্লেখ্য যে তাঁর এলাকাটি বর্তমানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় তিনি এই এলাকা থেকেই গণসংযোগ শুরু করেছেন।

ব্যারিস্টার রুমিনের এই স্বতন্ত্র লড়াইয়ের প্রেক্ষাপটে ফিরে আসছে তাঁর বাবা প্রখ্যাত ভাষা সৈনিক ও কিংবদন্তি রাজনীতিবিদ অলি আহাদের স্মৃতি। ১৯৭৩ সালের নির্বাচনে অলি আহাদ তৎকালীন কুমিল্লা-২ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন। যদিও সেই নির্বাচনে তাঁকে পরাজিত ঘোষণা করা হয়েছিল, কিন্তু রাজনৈতিক মহলে আজও সেই পরাজয় নিয়ে নানা বিতর্ক ও কারচুপির অভিযোগ রয়েছে। এখন কয়েক দশক পর মেয়ে রুমিন ফারহানাও বাবার মতোই দলের বাইরে গিয়ে জনসমর্থনের পরীক্ষায় নামতে চলেছেন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে রুমিন ফারহানার এই স্বতন্ত্র প্রার্থিতা স্থানীয় রাজনীতিতে মেরুকরণ ঘটিয়ে দিয়েছে। তৃণমূলের অনেক নেতাকর্মী তাঁর প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়ায় এই আসনে ভোটের হিসাব-নিকাশ পাল্টে যেতে পারে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন যে ‘হাঁস’ প্রতীক নিয়ে রুমিন ফারহানা নির্বাচনে অবতীর্ণ হলে তা কেবল দলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ নয়, বরং তাঁর ব্যক্তিগত জনপ্রিয়তার এক বড় অগ্নিপরীক্ষা হয়ে দাঁড়াবে। শেষ পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সাধারণ মানুষ বাবার অপূর্ণ স্বপ্ন মেয়ের মাধ্যমে পূরণ করে কি না, সেটিই এখন দেখার বিষয়।


ফ্যামিলি কার্ড থেকে বেকার ভাতা: তারেক রহমানের রূপরেখায় যা আছে

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২৬ ১১:১২:৩০
ফ্যামিলি কার্ড থেকে বেকার ভাতা: তারেক রহমানের রূপরেখায় যা আছে
দেশ নিয়ে তারেক রহমানের কী সেই ‘প্ল্যান’

রাজধানীর পূর্বাচলের ৩০০ ফিট এলাকায় আয়োজিত এক বিশাল গণসংবর্ধনায় দেওয়া বক্তব্যে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আধুনিক রাষ্ট্র পরিচালনার এক নতুন বার্তা প্রদান করেছেন। ১৯৬৩ সালে মার্কিন নাগরিক অধিকার নেতা মার্টিন লুথার কিং জুনিয়রের দেওয়া বিশ্ববিখ্যাত ‘আই হ্যাভ অ্যা ড্রিম’ ভাষণের প্রসঙ্গ টেনে তারেক রহমান ঘোষণা করেন—‘আই হ্যাভ অ্যা প্ল্যান ফর দ্য পিপল অব মাই কান্ট্রি’ (আমার দেশের মানুষের জন্য আমার একটি পরিকল্পনা আছে)। তাঁর এই বক্তব্য কেবল আবেগ নয় বরং জ্ঞানভিত্তিক ও কাঠামোগত পরিবর্তনের ইঙ্গিত হিসেবে দেখছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে তারেক রহমানের এই ‘প্ল্যান’ বা পরিকল্পনার মূল ভিত্তি হলো রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা রূপরেখা। বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি জানিয়েছেন যে আগামীতে বিএনপি ক্ষমতায় গেলে মানুষের দৈনন্দিন অভাব দূর করতে ফ্যামিলি কার্ড, কৃষকদের জন্য কৃষক কার্ড, সবার জন্য স্বাস্থ্য কার্ড এবং বেকার যুবকদের জন্য ভাতার ব্যবস্থা করা হবে। মূলত সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই এই পরিকল্পনার প্রধান স্তম্ভ। এছাড়া ধর্মীয় নেতাদের উন্নয়ন এবং শিক্ষা-ক্রীড়া-পরিবেশ খাতের আধুনিকায়নও এই রূপরেখার অন্তর্ভুক্ত।

তারেক রহমান কেন মার্টিন লুথার কিংয়ের উদাহরণ দিলেন—তা নিয়ে কৌতূহল দেখা দিয়েছে জনমনে। মার্টিন লুথার কিং ছিলেন অহিংস আন্দোলনের অগ্রদূত যিনি কৃষ্ণাঙ্গদের অধিকার আদায়ে আজীবন লড়েছেন এবং ১৯৬৪ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। তারেক রহমান সম্ভবত বাংলাদেশে নাগরিক অধিকার পুনরুদ্ধার এবং সমতা প্রতিষ্ঠার লড়াইকে সেই বৈশ্বিক সংগ্রামের সাথে তুলনা করতে চেয়েছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খানের মতে তারেক রহমানের এই রূপরেখাটি সম্পূর্ণ নীতিনির্ভর এবং এটি সরকার গঠনের সাথে সাথে বাস্তবায়নযোগ্য করে সাজানো হয়েছে।

উল্লেখ্য যে তারেক রহমান ঘোষিত এই পরিকল্পনায় শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ‘১৯-দফা’ এবং বেগম খালেদা জিয়ার ‘ভিশন-২০৩০’-এর মূল সুর বজায় রাখা হয়েছে। রাষ্ট্র পরিচালনায় আমূল পরিবর্তন আনার লক্ষ্যে বিএনপি ইতোমধ্যেই আটটি বিশেষ খাতভিত্তিক কর্মপরিকল্পনা প্রস্তুত করেছে। তারেক রহমানের এই ‘আই হ্যাভ অ্যা প্ল্যান’ বক্তব্য তৃণমূল কর্মীদের মাঝে যেমন আশার আলো দেখাচ্ছে, তেমনি দেশের শিক্ষিত ও সচেতন সমাজকেও আগামীর বাংলাদেশের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন করে ভাবতে বাধ্য করছে।

পাঠকের মতামত:

ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গড়তে হলে রাষ্ট্রকে অবশ্যই তার সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা পুনরুদ্ধার করতে হবে

ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গড়তে হলে রাষ্ট্রকে অবশ্যই তার সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা পুনরুদ্ধার করতে হবে

রাষ্ট্রের ধারণাটি একসময় কেবল প্রশাসনিক ক্ষমতা, আইনের শাসন এবং নিরাপত্তা প্রদানের সঙ্গে সম্পর্কিত ছিল। কিন্তু আধুনিক বিশ্বে রাষ্ট্রের ভূমিকা এখন... বিস্তারিত