৪০ কোটি ডলারের উড়োজাহাজ নিয়ে বিপাকে ট্রাম্প

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ মে ২৩ ১২:৫৫:৫২
৪০ কোটি ডলারের উড়োজাহাজ নিয়ে বিপাকে ট্রাম্প

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে কাতারের রাজপরিবারের দেওয়া প্রায় ৪০ কোটি মার্কিন ডলারের একটি বিলাসবহুল বোয়িং ৭৪৭ উড়োজাহাজ উপহার হিসেবে গ্রহণের ঘটনা। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বাধীন প্রশাসন এই উপহার গ্রহণ করলেও এর আইনগত বৈধতা ও নৈতিকতা নিয়ে তীব্র বিতর্ক শুরু হয়েছে।

২১ মে পেন্টাগনের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র সরকার এই বিমানটি গ্রহণ করে, এবং জানানো হয় এটি পরবর্তীতে প্রেসিডেন্ট পরিবহনের উপযোগী করে ‘এয়ার ফোর্স ওয়ান’ হিসেবে ব্যবহারের উপযোগী করা হবে। যদিও ট্রাম্প নিজে দাবি করেছেন, বিমানটি তার ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য নয় এবং তিনি ক্ষমতা ছাড়ার পর এটি ব্যবহার করবেন না, তথাপি বিতর্ক থামছে না।

আইনগত ও নৈতিক প্রশ্ন

হোয়াইট হাউস ও প্রতিরক্ষা দপ্তর (পেন্টাগন) দাবি করছে, পুরো প্রক্রিয়াটি আইন মেনেই সম্পন্ন হয়েছে। তবে মার্কিন সংবিধানে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, কংগ্রেসের অনুমতি ছাড়া কোনো সরকারি কর্মকর্তা বা সরকার বিদেশি রাষ্ট্র বা সরকারের কাছ থেকে উপহার গ্রহণ করতে পারে না। এই বিমানের ক্ষেত্রে কংগ্রেসের আনুষ্ঠানিক সম্মতি এখনও মিলেনি বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন একাধিক আইনপ্রণেতা।

সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্পের প্রতিদ্বন্দ্বী হিলারি ক্লিনটন কটাক্ষ করে বলেছেন, “কেউ বিনা স্বার্থে ৪০ কোটি ডলারের উপহার দেয় না। এর পেছনে নিশ্চয়ই কোনো প্রত্যাশা রয়েছে।”

সমালোচনা এসেছে ট্রাম্পের নিজ দল রিপাবলিকান পার্টি থেকেও। সিনেটর র‌্যান্ড পল বলেন, “যদিও বিষয়টি আইনগতভাবে বৈধ হতে পারে, তবু এটি একটি বড় নৈতিক প্রশ্ন তোলে। কাতারের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে ভবিষ্যতে আমাদের অবস্থান কতটা নিরপেক্ষ থাকবে?”

আরেক রিপাবলিকান সিনেটর টেড ক্রুজ আরও কড়া ভাষায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন “বিমানটি প্রযুক্তিগতভাবে গুপ্তচরবৃত্তির জন্য ব্যবহৃত হতে পারে। এমন উপহার জাতীয় নিরাপত্তার ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।”

বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, এই উপহার শুধু প্রতীকী নয়, এর মাধ্যমে কাতার হয়তো যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তাদের কৌশলগত সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করতে চাইছে। কিন্তু একইসঙ্গে প্রশ্ন উঠছে এটি কি পরোক্ষ প্রভাব বিস্তারের কৌশল?

যুক্তরাষ্ট্রে এমন সময় এই বিতর্ক সৃষ্টি হলো যখন দেশটির অভ্যন্তরীণ রাজনীতি গভীর বিভক্ত, এবং ট্রাম্পের আগাম নির্বাচনী প্রস্তুতি ঘিরে আলোচনা তুঙ্গে। ফলে এই উপহার গ্রহণকে ঘিরে আইনি বিতর্ক ছাড়িয়ে তা এক বড় রাজনৈতিক বিতর্কে রূপ নিচ্ছে, যার প্রভাব শুধু ট্রাম্প নয়, যুক্তরাষ্ট্র-কাতার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কেও পড়তে পারে।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

স্টারমারের নীরবতা: কূটনৈতিক শিষ্টাচার বনাম রাজনৈতিক সংকোচ

স্টারমারের নীরবতা: কূটনৈতিক শিষ্টাচার বনাম রাজনৈতিক সংকোচ

একজন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ, সামাজিক ব্যবসার পথপ্রদর্শক এবং গণতান্ত্রিক উত্তরণের নেতৃত্বদানকারী রাষ্ট্রনায়ক—এই তিনটি পরিচয়ই এখন সমভাবে প্রযোজ্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের... বিস্তারিত