শীতে খুশকি বাড়ছে? লেবুপাতা হতে পারে সহজ সমাধান

শীতের শুরুতেই অনেকেই মাথার ত্বকে নানা ধরনের সমস্যা অনুভব করেন। বাড়তি চুলকানি, আঁচড়ালেই খুশকির ঝরঝর পতন, সঙ্গে চুল পড়ার প্রবণতা সব মিলিয়ে শীতকাল হয়ে ওঠে উদ্বেগের সময়। এ অবস্থায় প্রাকৃতিক উপাদান হিসেবে লেবুপাতা উল্লেখযোগ্য উপকার এনে দিতে পারে। এতে থাকা সাইট্রিক অ্যাসিড, অ্যান্টি–অক্সিড্যান্ট এবং এসেনশিয়াল অয়েল মাথার ত্বকের খুশকি কমানোর পাশাপাশি চুলকে করে আরও সুস্থ ও প্রাণবন্ত।
লেবুপাত্র উপকারিতা
১. অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল ও অ্যান্টিফাঙ্গাল গুণ
লেবুপাতে থাকা অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল উপাদান মাথার ত্বকে জমে থাকা ফাঙ্গাস কমাতে সাহায্য করে। যেহেতু খুশকির মূল কারণ প্রায়ই ফাঙ্গাল গ্রোথ, তাই নিয়মিত ব্যবহারে এটি খুশকি নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ভূমিকা রাখে।
২. অতিরিক্ত তেল নিয়ন্ত্রণে সহায়তা
লেবুপাতা তেলতেলে স্ক্যাল্পের জন্য প্রাকৃতিক অ্যাস্ট্রিনজেন্ট হিসেবে কাজ করে। এটি অতিরিক্ত তেল শোষণ করে খুশকি বৃদ্ধির সহায়ক পরিবেশকে ব্যাহত করতে পারে।
৩. চুলে প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা আনে
লেবুপাতে স্ক্যাল্প পরিষ্কার থাকে এবং চুলে ফিরে আসে স্বাভাবিক ঔজ্জ্বল্য। চুলের গোড়া থেকে অগ্রভাগ পর্যন্ত ময়লা দূর হয়, ফলে চুল হয় নরম ও মসৃণ।
৪. স্ক্যাল্পের পিএইচ ভারসাম্য রক্ষা
স্ক্যাল্পের স্বাভাবিক পিএইচ নষ্ট হয়ে গেলে খুশকি দ্রুত বাড়তে থাকে। লেবুপাতা সেই ভারসাম্য পুনরুদ্ধারে সহায়তা করে, যা চুল ও স্ক্যাল্পকে রাখে স্বাস্থ্যকর।
যেভাবে ব্যবহার করবেন
১. লেবুপাতা রিন্স
চুলে চমক আনার পাশাপাশি খুশকি কমাতে এই রিন্স সহজ ও কার্যকর।
উপকরণ: এক মুঠো লেবুপাতা, তিন কাপ পানি
প্রণালী: পানি ফুটে উঠলে তাতে লেবুপাতা দিন। পানি অর্ধেকে নেমে আসা পর্যন্ত জ্বাল দিন। ঠান্ডা হলে শ্যাম্পুর পর এই পানি দিয়ে চুল ধুয়ে নিন। আবার বাড়তি পানি দিয়ে ধোয়ার প্রয়োজন নেই।
২. লেবুপাতা হেয়ার প্যাক
খুশকি ছাড়া চুল পড়া বা ত্বকের জ্বালাভাবেও এই প্যাক উপকারী।
উপকরণ: ৫–৬টি লেবুপাতা, ১–২ চামচ নারকেল তেল বা টক দই
প্রণালী: লেবুপাতা বেটে তেল বা দই মেশান। মাথার ত্বকে ভালোভাবে লাগিয়ে ২০–৩০ মিনিট রেখে দিন। এরপর শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন।
প্রাকৃতিক উপাদান হওয়ায় লেবুপাতা চুল ও মাথার ত্বকের জন্য নিরাপদ হলেও কেউ চাইলে ব্যবহারের আগে অ্যালার্জি টেস্ট করে নিতে পারেন।
কেন রাত ৮টার পর খাবার খাওয়া হজমে সমস্যা তৈরি করে
রাত ৮টার পর খাবার গ্রহণ করলে শরীরের স্বাভাবিক হজমপ্রক্রিয়া ব্যাহত হয় এবং বিভিন্ন পाचन–সমস্যার ঝুঁকি বেড়ে যায়। কারণ, রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শরীরের বিপাকক্রিয়া স্বাভাবিকভাবেই ধীর হয়ে পড়ে, ফলে খাবার দ্রুত ভাঙতে পারে না। এর ফলে এসিডিটি, গ্যাস, বুকজ্বালা, অস্বস্তি এমনকি ওজন বৃদ্ধির মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। ঘুমের সময় শরীর যখন বিশ্রামের প্রস্তুতি নেয়, তখন অপরিপাক খাবার পাকস্থলীতে থেকে যাওয়ায় অ্যাসিড রিফ্লাক্স বা GERD হওয়ার প্রবণতাও বাড়ে।
কেন ঘটে এই সমস্যা?
বিপাকক্রিয়া ধীর হয়ে যায়
রাতের দিকে শরীরের মেটাবলিক রেট কমে, তাই ভারী বা তেল–চর্বিযুক্ত খাবার হজম হতে বেশি সময় লাগে। এতে পেটে চাপ বাড়ে এবং হজমে অস্বস্তি দেখা দেয়।
অ্যাসিড রিফ্লাক্সের ঝুঁকি বাড়ে
খাওয়ার পরপরই শুয়ে গেলে পাকস্থলীর অ্যাসিড সহজেই খাদ্যনালীতে উঠে আসে। এতে বুকজ্বালা, টক ঢেকুর এবং অ্যাসিডিটির মাত্রা বৃদ্ধি পায়।
পাকস্থলীতে অতিরিক্ত চাপ পড়ে
দেরিতে খাওয়া খাবার দীর্ঘ সময় পেটে থেকে গ্যাস ও বদহজম সৃষ্টি করে। এতে পেট ফাঁপা কিংবা জ্বালাপোড়া অনুভূত হতে পারে।
ওজন বৃদ্ধি ও ঘুমের ব্যাঘাত
দেহ অপরিপাক খাবারকে সহজেই চর্বিতে রূপান্তরিত করে। একইসঙ্গে অস্বস্তির কারণে গভীর ঘুম ব্যাহত হয়, যা স্বাস্থ্যঝুঁকি আরও বাড়িয়ে তোলে।
কী করলে উপকার মিলবে?
হালকা খাবার বেছে নিন
রাতে খাবার খাওয়ার প্রয়োজন হলে ভাত, ভাজাপোড়া বা মশলাদার খাবার না খেয়ে সহজপাচ্য ও হালকা খাবার খান।
ঘুমানোর আগে অন্তত ২-৩ ঘণ্টার বিরতি
খাবার ও ঘুমের মধ্যে সময় রাখলে শরীর খাবার আংশিকভাবে হলেও হজম করতে পারে, ফলে অ্যাসিড রিফ্লাক্সের ঝুঁকি কমে।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী, রাতের খাবারের সময় এগিয়ে আনা এবং খাবারের ধরনের প্রতি সচেতন হওয়া হজমপ্রক্রিয়া সুস্থ রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
শীতে রোগ প্রতিরোধে ১০ সুপারফুড
শীতের মওসুমে সাধারণত সর্দি, কাশি, জ্বর, গলা খুসখুসে হওয়া, ফ্লু কিংবা অন্যান্য সংক্রামক রোগের প্রকোপ বেড়ে যায়। বিশেষত তাপমাত্রা কমে যাওয়ার কারণে শরীরের বিপাকক্রিয়া ধীর হয়ে পড়ে এবং রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা সহজেই দুর্বল হয়ে যায়। ফলে সামান্য আবহাওয়ার পরিবর্তনেই অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। বিশেষজ্ঞদের মতে, শীতের সময়ে খাদ্যতালিকায় নির্দিষ্ট কিছু পুষ্টিকর খাবার যুক্ত করলে শরীর স্বাভাবিকভাবেই সংক্রমণ প্রতিরোধে সক্ষমতা অর্জন করে। ভিটামিন সি, অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট, প্রোবায়োটিকস এবং প্রদাহরোধী উপাদানসমৃদ্ধ খাবার এ সময়ে শরীরের সবচেয়ে বড় অস্ত্র হিসেবে কাজ করে।
এই প্রেক্ষাপটেই পুষ্টিবিদরা শীতকালে ইমিউনিটি বাড়াতে বিশেষ গুরুত্ব দেন কয়েকটি ‘সুপারফুড’-এর ওপর, যেগুলো নিয়মিত খেলে শরীর স্বাভাবিকভাবেই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলে, ভাইরাস–ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ কমে এবং সার্বিক স্বাস্থ্য উন্নত হয়।
১. কমলালেবু ও অন্যান্য সাইট্রাস ফল
সাইট্রাস জাতীয় ফল দীর্ঘদিন ধরেই শীতের রোগ মোকাবিলার সবচেয়ে জনপ্রিয় উৎস। এসব ফলে প্রচুর ভিটামিন সি থাকে, যা শরীরে শ্বেত রক্তকণিকা তৈরির গতি বাড়ায় এবং ভাইরাসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। সকালে খালি পেটে কমলালেবু বা লেবুর পানি পান করলে শরীর দ্রুত অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট শোষণ করে এবং শক্তি বাড়ায়।
২. আদা
আদার অ্যান্টি–ইনফ্ল্যামেটরি বৈশিষ্ট্য প্রদাহ কমায়, গলা ব্যথা নিরাময়ে সাহায্য করে এবং শ্বাসযন্ত্রে জমে থাকা শ্লেষ্মা দূর করে। শীতের সকালে আদা–চা শরীর গরম রাখার পাশাপাশি সংক্রমণের ঝুঁকি কমায়। আদায় থাকা জিঞ্জারল নামক উপাদান রোগ প্রতিরোধ কোষগুলোকে সক্রিয় রাখে।
৩. রসুন
প্রাকৃতিক অ্যান্টিবায়োটিক হিসেবে রসুনের সুনাম বহু পুরোনো। এতে অ্যালিসিন নামক রাসায়নিক উপাদান রয়েছে, যা ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া ও ফাঙ্গাসের বিরুদ্ধে কার্যকর। নিয়মিত রসুন খেলে রক্ত সঞ্চালন ভালো থাকে, শ্বাসযন্ত্র শক্তিশালী হয় এবং সর্দি–কাশির প্রকোপ কমে যায়।
৪. হলুদ
হলুদে থাকা কারকিউমিন শক্তিশালী অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট, যা শীতকালে শরীরের রোগ প্রতিরোধ কোষগুলোকে সক্রিয় রাখে। ‘হলুদ–দুধ’ বা গরম পানিতে হলুদ মিশিয়ে খেলে শরীর গরম থাকে এবং ভাইরাসজনিত রোগ প্রতিরোধে সহায়ক ভূমিকা রাখে।
৫. পালং শাক ও অন্যান্য সবুজ শাকসবজি
পালং শাক, কলমি শাক, লাল শাকসহ সব ধরনের সবুজ শাকে ভিটামিন এ, সি, কে এবং আয়রন–ম্যাগনেসিয়াম সহ নানা খনিজ রয়েছে। এগুলো শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা শক্তিশালী করে, রক্তশূন্যতা দূর করে এবং শক্তি বাড়ায়। শীতকালে নিয়মিত সবুজ শাক খেলে শরীর সহজে ঠান্ডা–জ্বরের আক্রমণ থেকে সুরক্ষিত থাকে।
৬. দই
দইয়ে থাকা প্রোবায়োটিকস অন্ত্রের উপকারী ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি করে, যা শরীরের সামগ্রিক ইমিউন সিস্টেমকে কার্যকর রাখে। বিশেষজ্ঞরা বলেন, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার ৭০%ই নির্ভর করে স্বাস্থ্যকর অন্ত্রের ওপর। তাই শীতে প্রতিদিন দই খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।
৭. বাদাম ও বীজ
কাঠবাদাম, কাজু, চিনাবাদাম, সূর্যমুখীর বীজ, কুমড়ার বীজ—এসব খাবারে থাকে ভিটামিন ই, স্বাস্থ্যকর ফ্যাট, জিঙ্ক ও ম্যাগনেশিয়াম। এগুলো কোষ মেরামত করে, শরীরে প্রদাহ কমায় এবং ভাইরাস প্রতিরোধে সহায়ক হয়।
৮. বেরি জাতীয় ফল
ব্লুবেরি, স্ট্রবেরি, রাস্পবেরি এসব বেরিতে উচ্চমাত্রার অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট থাকে, যা শরীরের ক্ষতিকর ফ্রি–র্যাডিক্যাল দূর করে। শীতকালে নিয়মিত বেরি খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দ্রুত বাড়ে এবং ত্বকও সতেজ থাকে।
৯. মিষ্টি আলু
মিষ্টি আলুতে থাকা বিটা–ক্যারোটিন শরীরে ভিটামিন এ-তে রূপান্তরিত হয়, যা শ্লেষ্মা ঝিল্লিকে মজবুত করে এবং ফুসফুসকে সংক্রমণ থেকে সুরক্ষা দেয়। এটি শীতের শুষ্ক আবহাওয়ার কারণে সৃষ্ট শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা কমাতেও সাহায্য করে।
১০. আনারস
আনারসে থাকা ব্রোমেলাইন এনজাইম শরীরের প্রদাহ কমায়, গলা ব্যথা ও সংক্রমণ নিরাময়ে ভূমিকা রাখে। শীতের সকালে আনারস খেলে শরীরের ইমিউন সাড়া আরও উন্নত হয়।
কোন সবজি অজান্তেই বাড়িয়ে দেয় ওজন? জানুন এখনই
স্বাস্থ্যকর খাবারের তালিকায় সবজি সাধারণত শীর্ষস্থানীয় হলেও সব সবজিই সমানভাবে ক্যালরি নিয়ন্ত্রিত নয়। বিশেষত যেসব সবজিতে শর্করা এবং কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ বেশি, সেগুলো অল্প বেশি পরিমাণে খেলেই দেহে অতিরিক্ত ক্যালরি জমতে শুরু করে। ফলস্বরূপ, নিয়মিত খাওয়া হলেও অজান্তেই বাড়তে পারে ওজন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আলু, মিষ্টি আলু, কচু, গাজর, মুলা, মিষ্টি কুমড়া, মটরশুঁটি এবং ভুট্টার মতো শর্করা–সমৃদ্ধ সবজি দেহে দ্রুত শক্তি যোগ করলেও অতিরিক্ত গ্রহণ ওজন বাড়ার অন্যতম কারণ হতে পারে। শর্করার পাশাপাশি প্রস্তুত প্রণালীও ওজন বৃদ্ধিতে বড় ভূমিকা রাখে।
যে সবজিগুলো বেশি খেলে ওজন বাড়ার ঝুঁকি থাকে
অনেক জনপ্রিয় সবজি থাকলেও সেগুলো উচ্চ কার্বোহাইড্রেটের কারণে ক্যালরি বৃদ্ধি করে।
আলু ও মিষ্টি আলু
এই দুই সবজিতেই স্টার্চ, শর্করা ও ক্যালরি বেশি, যা অতিরিক্ত গ্রহণে দেহে চর্বি জমার প্রবণতা বাড়ায়।
কচু (লতি, মুখি)
মাটির নিচে জন্মানো সবজিগুলোর মধ্যে কচুতে কার্বোহাইড্রেট ও স্টার্চের পরিমাণ তুলনামূলক বেশি। ফলে বেশি খেলে ওজন বাড়তে পারে।
গাজর ও মুলা
স্বাস্থ্যকর হলেও এগুলোও রুট ভেজিটেবল। অতিরিক্ত খেলে শর্করা দেহে জমা হয়, যা ক্যালরি ব্যালান্স নষ্ট করে।
মিষ্টি কুমড়া
মিষ্টি স্বাদের কারণে এই সবজিতে প্রাকৃতিক চিনি বেশি থাকে। যার ফলে এটি দ্রুত শক্তি দেয়, আবার ওজন বৃদ্ধিতেও ভূমিকা রাখে।
মটর ও ভুট্টা
উভয়ই পুষ্টিকর কিন্তু উচ্চ কার্বোহাইড্রেটের উৎস। নিয়মিত বেশি পরিমাণে খেলে ক্যালরি বেড়ে যায়।
কেন এসব সবজি ওজন বাড়াতে সহায়তা করে
প্রধান কারণ হলো উচ্চ শর্করা ও ক্যালরির উপস্থিতি। এসব সবজি দেহে দ্রুত গ্লুকোজ বাড়ায়, যা শক্তি ব্যবহার না হলে চর্বি আকারে জমতে থাকে।
প্রস্তুত প্রণালীতে লুকিয়ে থাকে বাড়তি ক্ষতি
সবজি হলেও ভাজা, মাখন দিয়ে রান্না করা, ভারী সস বা উচ্চ ফ্যাটযুক্ত ড্রেসিং ব্যবহার করলে ক্যালরি আরও বেশি বেড়ে যায়। ফলে ওজন বৃদ্ধির হার অনেক দ্রুত হয়ে ওঠে।
উচ্চ শর্করাযুক্ত এসব সবজি সম্পূর্ণ বাদ দেওয়ার প্রয়োজন নেই। বরং পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ ও স্বাস্থ্যসম্মত রান্নাই মূল বিষয়। সুষম খাদ্যাভ্যাসের অংশ হিসেবে মাপমতো খেলে এগুলো স্বাস্থ্যকরই থাকে।
শীতে যেসব উপাদান স্কিনকেয়ারে ব্যবহার করা বিপজ্জনক
শীতে ত্বক আরও শুষ্ক করে এমন স্কিনকেয়ার উপাদানগুলোর তালিকা, যা এড়ানো জরুরি
শীতের ঠান্ডা আবহাওয়া ত্বককে স্বাভাবিকভাবেই শুষ্ক, রুক্ষ ও সংবেদনশীল করে তোলে। এর সঙ্গে যদি স্কিনকেয়ারে ব্যবহৃত কিছু উপাদান ভুলভাবে যুক্ত হয়, তবে ত্বকের অবস্থার আরও অবনতি ঘটতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শীতকালে এমন কিছু কেমিক্যাল রয়েছে যা ত্বকের প্রাকৃতিক আর্দ্রতা কমিয়ে দেয়, ত্বকের বাধা স্তর দুর্বল করে এবং জ্বালাপোড়া সৃষ্টি করে। তাই এই মৌসুমে স্কিনকেয়ারের পণ্য বেছে নিতে বাড়তি সচেতনতা অত্যন্ত প্রয়োজন।
শীতে যেসব উপাদান ত্বকের ক্ষতি বাড়ায়
অ্যালকোহলযুক্ত স্কিনকেয়ার (Isopropyl Alcohol)
অনেক টোনার বা ক্লিনজারে থাকা আইসোপ্রোপাইল অ্যালকোহল ত্বকের প্রাকৃতিক লিপিড স্তরকে সরিয়ে ফেলে, ফলে ত্বক দ্রুত শুষ্ক ও টানটান হয়ে যায়। শীতকালে এই শুষ্কতা আরও বেশি অনুভূত হয়।
সোডিয়াম লরিল সালফেট (SLS)
ফেসওয়াশ ও সাবানে ব্যবহৃত SLS ত্বকের তেল শোষণ করতে পারে অতিরিক্ত মাত্রায়। এর ফলে ত্বক রুক্ষ হয়ে ফেটে যেতে পারে এবং সংবেদনশীল ত্বকে জ্বালাপোড়া বাড়তে পারে।
থ্যালেটযুক্ত সুগন্ধি
সুগন্ধিযুক্ত পণ্যে থাকা থ্যালেটস ত্বকে অ্যালার্জি, লালভাব এবং ইরিটেশন তৈরি করতে পারে। শীতকালের শুষ্ক ত্বক এ ধরনের সমস্যা আরও দ্রুত প্রতিক্রিয়া দেখায়।
খনিজ তেল ও প্যারাফিনসমৃদ্ধ পণ্য
মিনারেল অয়েল বা প্যারাফিন কিছু ত্বকে ছিদ্র বন্ধ করে দিতে পারে, যা ত্বকের আর্দ্রতা ভারসাম্যকে ব্যাহত করে। ফলে ত্বক পর্যাপ্ত শ্বাস নিতে পারে না এবং শুষ্কতা স্থায়ী হয়ে যায়।
ক্ষারধর্মী সাবান
অতিরিক্ত ক্ষারযুক্ত সাবান ত্বকের স্বাভাবিক pH নষ্ট করে, ত্বকের আর্দ্রতা কমায় ও প্রতিরক্ষা স্তর দুর্বল করে ফেলে। এর ফলে বিশেষত হাত–পায়ের ত্বক সহজেই ফেটে যেতে পারে।
AHA/BHA বা রেটিনল একসঙ্গে ব্যবহার
শীতের শুষ্ক অবস্থায় ত্বক সংবেদনশীল হয়ে পড়ে। AHA/BHA জাতীয় অ্যাসিড বা রেটিনল একসঙ্গে ব্যবহার করলে ত্বকে লালভাব, পোড়া অনুভূতি ও অতিরিক্ত শুষ্কতা দেখা দিতে পারে। তাই এসব উপাদান আলাদা দিনে বা রাতে ব্যবহার করাই উচিত।
শীতে ত্বক রক্ষার সঠিক নিয়ম
ময়েশ্চারাইজার অপরিহার্য
গোসলের পর যখন ত্বক সামান্য ভেজা থাকে, তখন ময়েশ্চারাইজার লাগালে ত্বকে আর্দ্রতা ধরে রাখার ক্ষমতা বাড়ে। দিনে অন্তত দুইবার ব্যবহার করলে শুষ্কতা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যায়।
সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন
শীতের রোদ নরম মনে হলেও UVA ও UVB রশ্মি একইভাবে সক্রিয় থাকে। তাই সানস্ক্রিন ব্যবহার করলে ত্বক রোদে পোড়া, দাগ ও বলিরেখা থেকে সুরক্ষিত থাকে।
প্রাকৃতিক তেল ব্যবহার
অলিভ অয়েল, নারকেল তেল বা বাদাম তেল শুষ্ক ত্বকে ভালো কাজ করে। এগুলো ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে সহায়তা করে।
অতিরিক্ত গরম পানি পরিহার
খুব গরম পানি ত্বকের প্রাকৃতিক তেল দ্রুত সরিয়ে দেয়। তাই গোসলে হালকা গরম পানি ব্যবহার করাই উত্তম।
মাত্র ৭ মিনিটে ফিটনেস, ঘরে বসেই পুরো ওয়ার্কআউট
ব্যস্ত জীবনযাত্রায় দীর্ঘ সময় ধরে ব্যায়াম করার সুযোগ অনেকেরই থাকে না। তাই বিশেষজ্ঞদের কাছে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে মাত্র সাত মিনিটে সম্পূর্ণ শরীরে কার্যকর এক বিশেষ ওয়ার্কআউট। এই ব্যায়ামটি মূলত উচ্চতীব্রতার HIIT বা High Intensity Interval Training পদ্ধতির উপর ভিত্তি করে তৈরি, যেখানে মাত্র কয়েক মিনিটেই কার্ডিও, শক্তি ও সহনশীলতা একসঙ্গে বাড়ানো যায়।
মাত্র সাত মিনিটের এই রুটিনে রয়েছে ১২টি ধারাবাহিক ব্যায়াম। প্রতিটি ব্যায়াম ৩০ সেকেন্ড করে করতে হয় এবং এর মাঝে থাকে মাত্র ১০ সেকেন্ড বিশ্রাম। উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, রুটিনটি করার জন্য জিমে যাওয়ার দরকার নেই। শরীরের ওজন, একটি চেয়ার এবং একটি দেয়ালই যথেষ্ট সরঞ্জাম হিসেবে ব্যবহার করা যায়।
ফিটনেস বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, এই স্বল্পসময়ের ব্যায়াম রক্তসঞ্চালন বাড়ায়, হৃদযন্ত্রকে সক্রিয় রাখে এবং শরীরের বিভিন্ন বড় পেশিকে একসঙ্গে কাজে লাগিয়ে দ্রুত ক্যালোরি পোড়ায়। ফলে চর্বি কমা এবং শক্তি বৃদ্ধি দুটি পরিবর্তনই খুব অল্প সময়ে অনুভব করা যায়।
১২টি ব্যায়ামের মধ্যে রয়েছে জাম্পিং জ্যাক, ওয়াল সিট, পুশ-আপ, অ্যাব ক্রাঞ্চেস, চেয়ারের ওপর ওঠা–নামা, স্কোয়াট, ট্রাইসেপস ডিপ, প্ল্যাঙ্ক, হাই-নিজ রান, লাঞ্জেস, রোটেশনসহ পুশ-আপ এবং দুই পাশের সাইড প্ল্যাঙ্ক। প্রতিটি ব্যায়ামই শরীরের আলাদা অংশে কাজ করে এবং দ্রুত হার্ট রেট বাড়ায়।
এই রুটিন অনুসরণ করতে চাইলে একটি সহজ কৌশল মনে রাখা জরুরি প্রতিটি ব্যায়ামে পূর্ণ উদ্যমে ৩০ সেকেন্ড কাজ এবং পরের ১০ সেকেন্ড পুরো বিশ্রাম। সপ্তাহে কয়েক দিন ৭ মিনিট সময় দিলেই এ রুটিন শরীরে দৃশ্যমান পরিবর্তন আনে বলে দাবি করেছেন অনেক ফিটনেস ট্রেইনার।
বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দেন, ওয়ার্কআউটের আগে হালকা ওয়ার্ম–আপ এবং শেষে কুল–ডাউন করলে ফল আরও ভালো পাওয়া যায়। চাইলে ‘Johnson & Johnson 7 Minute Workout’ বা ‘7M Fit’–এর মতো অ্যাপ ব্যবহার করে সময়, ব্যায়ামের ধরন ও অগ্রগতি আরও সহজে নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
প্রতিদিন যে খাবারগুলো আপনার মেটাবলিজমকে ধীর করে
শরীরের মেটাবলিজম বা বিপাকক্রিয়া মানবস্বাস্থ্যের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া। এই মেটাবলিজম ঠিকমতো কাজ না করলে ওজন বৃদ্ধি, ক্লান্তি, হজম সমস্যা থেকে শুরু করে হরমোনজনিত অসামঞ্জস্য পর্যন্ত নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, আমাদের দৈনন্দিন খাদ্যাভ্যাসের বহু উপাদানই অজান্তে মেটাবলিজমকে দুর্বল করে দিচ্ছে।
বিপাক ক্রিয়া ধীর হয়ে যাওয়ার মূল অপরাধী হিসেবে যেসব খাবারকে চিহ্নিত করা হচ্ছে, তার মধ্যে প্রথমেই রয়েছে রিফাইন্ড কার্বোহাইড্রেট। সাদা রুটি, পাস্তা, সাদা চাল বা অন্যান্য প্রক্রিয়াজাত শস্য খুব দ্রুত ভেঙে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। এতে শরীর অতিরিক্ত ইনসুলিন নিঃসরণ করতে বাধ্য হয় এবং ক্যালোরি পোড়ার হার কমে যায়।
তদ্রূপ অতিরিক্ত চিনিযুক্ত খাবার যেমন কোমল পানীয়, কেক, বিস্কুট, মিষ্টি শরীরের মেটাবলিজমকে আরও ধীর করে দিতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলেন, চিনি শরীরে প্রবেশ করার সঙ্গে সঙ্গেই ইনসুলিন বাড়ায় এবং ফ্যাট স্টোরেজ বৃদ্ধি করে, যা বিপাক ক্রিয়াকে মন্থর করে দেয়।
এছাড়া প্রোটিন ও ফাইবার কম থাকা খাবারও বিপাকের জন্য ক্ষতিকর। কারণ প্রোটিন ও ফাইবার হজম করতে শরীরকে বেশি শক্তি ব্যয় করতে হয়। তাই কম প্রোটিনযুক্ত ডায়েট মেটাবলিজমকে উল্লেখযোগ্যভাবে ধীর করে দেয়। একইভাবে দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকা বা মিল বাদ দেওয়ার অভ্যাস শরীরকে সংকেত দেয় যে খাবার কম। ফলে সেভিং মোডে গিয়ে বিপাকক্রিয়া আরও ধীর হয়ে যায়।
স্বাস্থ্য গবেষণায় দেখা গেছে, পর্যাপ্ত পানি না খাওয়াও মেটাবলিজম কমার একটি বড় কারণ। পানি শরীরের রাসায়নিক প্রক্রিয়াকে সচল রাখে। পানিশূন্যতা হলে হজম ও ক্যালোরি পোড়ার হার কমে যায়। প্রক্রিয়াজাত খাবারে থাকা অতিরিক্ত লবণ, ট্রান্স ফ্যাট, চিনি ও রাসায়নিক সংযোজকও দীর্ঘমেয়াদে মেটাবলিক সমস্যার সৃষ্টি করে।
তবে ভালো খবর হলো নির্দিষ্ট কিছু খাবার এবং অভ্যাস মেটাবলিজম বাড়াতে কার্যকর। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা প্রতিদিন পর্যাপ্ত পানি পান, মাছ–ডিম–ডাল–মাংসের মতো প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার খাওয়া এবং আস্ত শস্য, শাকসবজি ও ফলমূল অন্তর্ভুক্ত করার পরামর্শ দিয়েছেন। দারুচিনি ও কাঁচা মরিচের মতো প্রাকৃতিক মশলাও শরীরের তাপ উৎপাদন বাড়িয়ে ক্যালোরি দ্রুত পোড়াতে সাহায্য করে।
গবেষকরা আরও বলেন, দিনের শুরুতে নাস্তা বাদ না দেওয়া এবং দীর্ঘক্ষণ না খেয়ে থাকা এড়িয়ে চলা বিপাক সক্রিয় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। স্বাস্থ্যকর অভ্যাসগুলো অনুসরণ করলে মেটাবলিজমকে স্বাভাবিক ও সক্রিয় রাখা সম্ভব।
পিরিয়ডের সময়ে কোন ফল এড়িয়ে চলবেন
সাধারণভাবে ফলমূলকে স্বাস্থ্যরক্ষার অন্যতম সেরা খাবার হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তবে সব পরিস্থিতিতে সব ফল শরীরের জন্য সমান উপকারী নয়, বিশেষ করে ঋতুস্রাবকালীন সময় ও শীতের মৌসুমে ফল বাছাইয়ে বাড়তি সতর্কতা প্রয়োজন। নারীদের শরীরে মাসিক চলাকালে বিভিন্ন শারীরবৃত্তীয় পরিবর্তন ঘটে, যার প্রভাবে কিছু ফল উপকারের বদলে অস্বস্তি বাড়িয়ে দিতে পারে।
মাসিকের সময় বহু নারী তলপেটের টান, মাথা ঘোরা, ক্লান্তি, বমিভাব, পেটফাঁপা কিংবা গ্যাসের মতো সমস্যায় ভোগেন। কিছু ফল এসব উপসর্গ কমাতে সহায়ক হলেও কিছু ফল হজমে সমস্যা সৃষ্টি করে ব্যথা ও অস্বস্তি আরও বাড়িয়ে দিতে পারে। বিশেষ করে শীতের ঠান্ডা আবহাওয়ায় শরীরের অভ্যন্তরীণ তাপমাত্রা স্বাভাবিক রাখা গুরুত্বপূর্ণ।
কেন কিছু ফল মাসিকের সময় অস্বস্তি বাড়ায়
ঋতুচক্র চলার সময় নারীদের শরীরে ইস্ট্রোজেন ও প্রোজেস্টেরনের মাত্রা ওঠানামা করে। হরমোনের এই পরিবর্তন হজমতন্ত্রকে সংবেদনশীল করে তোলে, শরীরের ভেতরে পানি জমার প্রবণতা বাড়ায় এবং ঠান্ডা সহনশীলতা কমিয়ে দেয়। এ সময় অত্যধিক ঠান্ডা, অতিরিক্ত অ্যাসিডিক বা ফার্মেন্টেড ধরনের ফল খেলে শরীরের অভ্যন্তরীণ তাপমাত্রা আরও কমে গিয়ে ব্যথা, ক্র্যাম্প ও অস্বস্তি তীব্র হতে পারে। তাই ফল বাছাইয়ে সচেতনতা জরুরি।
আনারস
আনারসে থাকা এনজাইম ব্রোমেলেন কিছু নারীর ক্ষেত্রে জরায়ুর পেশিতে দ্রুত সংকোচন তৈরি করতে পারে। এতে তলপেটের ক্র্যাম্প বাড়তে পারে এবং পিরিয়ডজনিত ব্যথা আরও গুরুতর হতে পারে। যাদের ক্র্যাম্প বেশি হয় তাদের জন্য এই সময়ে আনারস উপযুক্ত নাও হতে পারে।
পেঁপে
অধপাকা পেঁপে জরায়ুর কার্যক্রমকে উদ্দীপ্ত করতে পারে। বেশি পরিমাণে খেলে পেটফাঁপা, হজমে অসুবিধা কিংবা অতিরিক্ত অস্বস্তি দেখা দিতে পারে। তাই এই সময়ে সীমিত পরিমাণে পেঁপে খাওয়া উত্তম।
আঙুর
শীতের সময় সহজলভ্য আঙুরে ফ্রুক্টোজের পরিমাণ তুলনামূলক বেশি, যা অনেকের জন্য গ্যাস ও পেটফাঁপার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। পিরিয়ডের সময় যেহেতু হজমতন্ত্র অতিসংবেদনশীল থাকে, আঙুর খেলে অস্বস্তি আরও বাড়তে পারে।
সাইট্রাস ফল
কমলা, মাল্টা, লেবুর মতো সাইট্রাস ফলে ভিটামিন সি-র পরিমাণ অনেক বেশি। কিন্তু অতিরিক্ত খেলে অম্লত্ব বেড়ে বুকজ্বালা, পেটব্যথা ও বমিভাবের মতো উপসর্গ দেখা দিতে পারে। তাই পরিমিত পরিমাণে খাওয়া উচিত।
আপেল ও নাশপাতি
ফল দুটো নিয়মিত খাদ্যতালিকায় অত্যন্ত উপকারী হলেও শীতকালে ফ্রিজ থেকে বের করে ঠান্ডা অবস্থায় খেলে হজমে সমস্যা, পেটফাঁপা ও অস্বস্তি দেখা দিতে পারে। তাই মাসিকের সময়ে এগুলো খেতে হলে আগে কিছুক্ষণ ঘরের তাপমাত্রায় রেখে খাওয়াই শ্রেয়।
নামিদামি ক্রিম নয় বরং গরম পানির ভাপেই মিলবে শীতের শুষ্ক ত্বক থেকে মুক্তি
শীতকালে শুষ্ক ত্বকের সমস্যা কয়েকগুণ বেড়ে যায় এবং যাদের ডায়াবেটিস রয়েছে এই সময়ে তাদের ত্বকের সমস্যা আরও গুরুতর আকার ধারণ করে। দীর্ঘদিন ধরে ডায়াবেটিস বা থাইরয়েডের মতো রোগ থাকলে ত্বক মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তার ওপর শীতের শুষ্ক আবহাওয়ায় ত্বক থেকে পানির পরিমাণ অনেকটাই কমে যায় এবং ঠান্ডার কারণে পানি খাওয়ার পরিমাণও হ্রাস পায়। এর প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়ে মুখের ত্বকে যার ফলে জেল্লা হারিয়ে যায় এবং শুরু হয় জ্বালাভাব ও রুক্ষতা। এমনকি বাজারের নামিদামি প্রসাধন ব্যবহার করেও অনেক সময় ত্বকের সঠিক সুরক্ষা মেলে না।
তবে বিশেষজ্ঞদের মতে এই সমস্যার সহজ সমাধান হতে পারে গরম পানির ভাপ বা স্টিম থেরাপি। নিয়মিত গরম পানির ভাপ নিলে শুধু ফুসফুসের সংক্রমণ প্রতিরোধ হয় না বরং ত্বকের নানা সমস্যাও দূর হয়। উজ্জ্বল ত্বকের জন্য কেন ভাপ নেওয়া জরুরি তা নিচে আলোচনা করা হলো।
শীতে ত্বক আর্দ্র রাখা অত্যন্ত জরুরি। স্টিমিং থেরাপি ত্বকে আর্দ্রতা বজায় রাখতে দারুণ কার্যকর ভূমিকা রাখে। ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করে ফেস স্টিমিং করলে তা ত্বকের গভীরে প্রবেশ করে এবং ত্বক নরম ও কোমল হয়। এছাড়া স্টিমিং থেরাপি মুখের ত্বকের রন্ধ্র খুলে দেয় এবং মৃত কোষ ও ময়লা দূর করতে সাহায্য করে। যাদের ব্ল্যাকহেডস ও হোয়াইটহেডসের সমস্যা রয়েছে তারা নিয়মিত গরম পানির ভাপ নিলে সেগুলো নরম হয়ে যায় এবং সহজেই পরিষ্কার করা সম্ভব হয়।
শীতের সময়ে ত্বক সাধারণত নিস্তেজ ও ক্লান্ত দেখায়। স্টিম থেরাপি মুখের রক্তসঞ্চালন স্বাভাবিক রাখতে সহায়তা করে। এর ফলে ত্বকে অক্সিজেনের সরবরাহ বাড়ে এবং স্বাভাবিক জেল্লা ফিরে আসে। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ত্বকের চামড়া কুঁচকে যাওয়া বা অল্প বয়সেই মুখে বয়সের ছাপ পড়ার সমস্যা সমাধানেও এটি কার্যকর। নিয়মিত ভাপ নিলে ত্বকে কোলাজেন ও এলাস্টিন উৎপাদন বৃদ্ধি পায় যা ত্বককে মসৃণ ও টানটান রাখতে সাহায্য করে।
ব্রণের সমস্যা থাকলে গরম পানির মধ্যে নিমপাতা দিয়ে ভাপ নেওয়া বেশ উপকারী। আবার ত্বকের হারানো জেল্লা ফিরিয়ে আনতে গরম পানির মধ্যে এক চামচ হলুদ মিশিয়ে ভাপ নিলে ভালো ফল পাওয়া যায়। চিকিৎসকদের মতে শীতকালে ত্বকের নিয়মিত যত্ন এবং পর্যাপ্ত পানি পান ও গরম পানির ভাপ নেওয়ার অভ্যাস ত্বককে সুস্থ উজ্জ্বল ও প্রাণবন্ত রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
কীভাবে দেহ তাপমাত্রা ঠিক রাখে জানুন বিস্তারিত
মানুষসহ সকল স্তন্যপায়ী প্রাণীর অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো উষ্ণ রক্তধারী হওয়া। অর্থাৎ, পরিবেশের তাপমাত্রা পরিবর্তিত হলেও দেহ তার অভ্যন্তরীণ তাপমাত্রাকে প্রায় স্থির রাখে। এই অবিশ্বাস্য ক্ষমতা গড়ে তোলে হোমিওস্টেসিস একটি স্বয়ংক্রিয় জৈব-ব্যবস্থা যা দেহকে স্থিতিশীল অবস্থায় ধরে রাখতে নানা সমন্বিত প্রক্রিয়া পরিচালনা করে।
মানবদেহের স্বাভাবিক তাপমাত্রা প্রায় ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস (৯৮.৬°F)। তবে আবহাওয়া, হরমোনের ওঠানামা, বিপাকক্রিয়া বা অসুস্থতা তাপমাত্রায় পরিবর্তন আনতে পারে। অত্যধিক গরম বা ঠান্ডা দুই-ই দেহের জীবনীশক্তিকে বিপন্ন করতে পারে। তাই দেহ প্রতিটি পরিস্থিতিতে দ্রুত প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে নিজের তাপমাত্রা ঠিক রাখার চেষ্টা করে।
দেহের এই নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা পরিচালনা করে মস্তিষ্কের হাইপোথ্যালামাস। স্নায়ুতন্ত্র এবং রক্তসংবহন ব্যবস্থার মাধ্যমে দেহের বিভিন্ন অঙ্গ থেকে পাওয়া সংকেত বিশ্লেষণ করে হাইপোথ্যালামাস শ্বাস-প্রশ্বাসের হার, রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা এবং বিপাকক্রিয়ার গতি সামঞ্জস্য করে। এতে দেহ প্রয়োজন অনুযায়ী তাপ বাড়ায় বা কমায়।
তাপমাত্রা বেশি হলে দেহ পেশির কাজ কমায়, ঘাম উৎপন্ন করে এবং চামড়ার কাছে রক্ত সঞ্চালন বাড়ায় যেন তাপ বাইরে বেরিয়ে যেতে পারে। অপরদিকে, ঠান্ডা অনুভূত হলে দেহ রক্ত সঞ্চালন কমিয়ে দেয়, মেদস্তরের মাধ্যমে তাপ ধরে রাখে এবং প্রয়োজনে কাঁপুনি বা শিভারিংয়ের মাধ্যমে তাপ উৎপন্ন করে।
এই সমন্বিত প্রক্রিয়াগুলোর মাধ্যমে দেহ একটি স্থিতিশীল “হোমিওস্ট্যাটিক প্লাটো” বজায় রাখে। তাপমাত্রা দুই চরম সীমার যেকোনো একটির দিকে গেলে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া (negative feedback) প্রক্রিয়া সক্রিয় হয়ে দেহকে পুনরায় স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরায়।
জীবন রক্ষায় এই সূক্ষ্ম জৈব-ব্যবস্থার ভূমিকা অপরিসীম এটি ছাড়া মানুষ পরিবেশগত পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে সক্ষম হতো না।
সূত্র: ব্রিটানিকা
পাঠকের মতামত:
- শীতে খুশকি বাড়ছে? লেবুপাতা হতে পারে সহজ সমাধান
- যেভাবে জানা যাবে স্কুল ভর্তি লটারির ফল
- রাজশাহীতে নলকূপে আটকে পড়া শিশুকে বের করতে সুরঙ্গ খনন
- আজকের পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের সময় প্রকাশ
- পঞ্চগড়ে আরও নামতে পারে তাপমাত্রা:আবহাওয়া অফিস
- বৃহস্পতিবার কোন এলাকায় দোকানপাট বন্ধ? তালিকা দেখুন
- আল-আকসাকে ভাগ করার ইসরায়েলি পরিকল্পনা নিয়ে উদ্বেগ
- ইউরোপা লিগ ও টি২০, আজকের সব ম্যাচ কখন কোথায়
- কেন রাত ৮টার পর খাবার খাওয়া হজমে সমস্যা তৈরি করে
- প্রাথমিক প্রধান শিক্ষকদের বেতন কাঠামো নিয়ে সুখবর!
- দুই উপদেষ্টার পদত্যাগ গ্রহণ, ড. ইউনূসের আবেগঘন বার্তা
- ভারতের আধিপত্যের জবাব: নতুন প্ল্যাটফর্ম গড়তে চায় পাকিস্তান
- পদত্যাগ–নির্বাচন দুটিতেই মুখ খুললেন আসিফ মাহমুদ
- ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার সময় প্রকাশ
- ব্লক মার্কেটে বড় লেনদেন আজ, শীর্ষে যে শেয়ার
- ১০ ডিসেম্বর শেয়ারবাজারের পূর্ণাঙ্গ বিশ্লেষণ
- ১০ ডিসেম্বর ডিএসইতে শীর্ষ দরপতনের ১০ শেয়ার
- ১০ ডিসেম্বর ডিএসই টপ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- ডিএসইতে মিউচুয়াল ফান্ডগুলোর এনএভি বিশ্লেষণ প্রতিবেদন
- সিলকো ফার্মা দিল বিনিয়োগকারীদের জন্য সুখবর!
- রেকর্ড ডেট শেষে তিন সিকিউরিটির লেনদেন পুনরায় শুরু
- ১৫ বছর মেয়াদি দুই বন্ডে লেনদেন বন্ধ, জানুন বিস্তারিত
- ১৬ বছরের নিচে সামাজিক মাধ্যম নিষিদ্ধ
- মার্জিন ফাইন্যান্সে যেসব শেয়ার যোগ হলো, সম্পূর্ণ তালিকা
- নাহিদ, সারজিস, তাসনিম, নাসীরুদ্দীন-কোন আসনে কে লড়ছেন
- ডিএসই–৩০ সর্বশেষ আপডেট, বিনিয়োগকারীর জন্য জরুরি তথ্য
- ত্রয়োদশ নির্বাচনে এনসিপির বড় প্রার্থী তালিকা প্রকাশ, কারা আছেন
- ১৬ বছরের ভয়–নির্যাতনের বর্ণনা দিলেন তারেক রহমান
- শীতে রোগ প্রতিরোধে ১০ সুপারফুড
- ঢাকায় আজকের পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ কখন? দেখে নিন
- আজ রিয়াল–সিটির মহারণ, দেখুন পুরো স্পোর্টস সূচি
- বুধবার ঢাকায় কোন মার্কেট বন্ধ আজই জেনে নিন
- বায়ুদূষণে শীর্ষে আবার ঢাকা, AQI ২০২ ছুঁইছে
- রাজধানীতে দিনের গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচি, যানজটের শঙ্কা
- দেশের সবচেয়ে ঠান্ডা তেঁতুলিয়া, কেমন আজকের তাপমাত্রা
- শীতকালীন ছুটি বাতিল, বার্ষিক পরীক্ষার নির্দেশনা
- ২০ ডিসেম্বর থেকে ট্রেনের নতুন ভাড়া, দেখে নিন রুটভিত্তিক হার
- কোন সবজি অজান্তেই বাড়িয়ে দেয় ওজন? জানুন এখনই
- শীতে যেসব উপাদান স্কিনকেয়ারে ব্যবহার করা বিপজ্জনক
- আইজিপি শাস্তির দাবিতে শাহবাগে পিন্টু স্মৃতি সংসদ
- ১২ কোটি টাকার অভিযোগ, এনামুরের কর ফাইল জব্দ
- মাত্র ৭ মিনিটে ফিটনেস, ঘরে বসেই পুরো ওয়ার্কআউট
- প্রতিদিন যে খাবারগুলো আপনার মেটাবলিজমকে ধীর করে
- ব্লক মার্কেট দাপাল যে শেয়ারটি আজ!
- ৯ ডিসেম্বর শেয়ারবাজারের পূর্ণাঙ্গ বিশ্লেষণ
- ৯ ডিসেম্বর ডিএসইতে শীর্ষ ক্ষতিগ্রস্ত ১০ শেয়ার
- ৯ ডিসেম্বর ডিএসই টপ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- তফসিল ঘোষণার দিন প্রকাশ করল ইসি
- পুরুষ কমে যাওয়ায় স্বামী ভাড়া করছেন নারীরা
- কারাবন্দিদের জন্য দেশে চালু হচ্ছে নতুন যোগাযোগ সুবিধা
- দেশে ফেরা নিয়ে যা জানালেন সাকিব আল হাসান
- আজকের রাশিফল: ৭ ডিসেম্বর ২০২৫ জেনে নিন আপনার দিনটি কেমন কাটবে
- প্রবৃদ্ধির সুফল গরিবের ঘরে পৌঁছাচ্ছে না বরং ধনীরা আরও ধনী হচ্ছে
- ব্যবসায়ীদের দাবির মুখে সরকারের নতি স্বীকার, বাড়ল ভোজ্যতেলের দাম
- ব্যথানাশক নিয়েই খেলতে নেমে হ্যাটট্রিক করলেন ব্রাজিলিয়ান সুপারস্টার নেইমার
- আজকের রাশিফল: ৬ ডিসেম্বর ২০২৫ জেনে নিন আপনার দিনটি কেমন কাটবে
- সপ্তাহের শুরুতে স্বর্ণের বাজার দর ও বিস্তারিত মূল্য তালিকা
- কর্মবিরতি নিয়ে ফার্মাসিস্ট টেকনোলজিস্টদের কঠোর হুঁশিয়ারি দিল সরকার
- টিভিতে আজকের খেলা: ভোর থেকে রাত পর্যন্ত খেলার ঠাসা সূচি
- ৭ ডিসেম্বর ডিএসই টপ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- ৭ ডিসেম্বর শেয়ারবাজারের পূর্ণাঙ্গ বিশ্লেষণ
- লন্ডন থেকে দেশে ফিরেই বিমানবন্দর থেকে সোজা এভারকেয়ারে ডা. জুবাইদা রহমান
- ডিএসই ডেট মার্কেটে নীরব দিন, দাম বাড়ল একটি বন্ডে
- বৃহস্পতিবার রাজধানীর যেসব জনপ্রিয় মার্কেট আজ খোলা পাবেন না
- দেশে টাকা পাঠানোর আগে দেখে নিন ৪ ডিসেম্বরের মুদ্রা বিনিময় হার








